মশা
মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে পারবে কিন্তু মশা মারতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিতে পারবে ঠিকই, কিন্তু এডিশ মশা মারতে পারবে না।
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ‘আবুল হোসেন রেসপাইরেটরি ও নিউমোনিয়া রিসার্চ সেন্টার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু রোগী বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার চিকিৎসা দিতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশন হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ’র নতুন হাসপাতাল ইউনিট এবং লালকুঠি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে এখন সুবাতাস বইছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতের পক্ষ থেকে এডিশ মশা নিধনে নিজেদের বাসা বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করতে ও মশার কামড় থেকে বাঁচাতে পরামর্শমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু মশা মারার কাজ তো স্বাস্থ্যখাতের নয়। মশা মারার গুরুত্ব তুলে ধরে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার প্রতিনিধিদেরকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এখন মশা কমলে ডেঙ্গু রোগীও কমে যাবে; হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপও কমে যাবে।’
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম আমিরুল মোর্শেদ, অর্থদাতা আবুল হোসেন, অর্থদাতা অধ্যাপক রুহুল আমীন, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য, রিসার্স সেন্টারটি করতে অর্থদাতা আবুল হোসেন এক কোটি টাকা এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমীন ২০ লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে অর্থ অনুদান প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ফি নির্ধারণ করবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে লাইসেন্স বাতিল: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মশা কেন আপনাকেই কামড়ায়?
কোথাও ঘুরতে যেয়ে বা আড্ডাতে অন্যান্যরা যখন দীর্ঘ সময় ধরে আনন্দ-উৎসবে ব্যস্ত থাকে, তখন আপনাকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে হয় মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য। এত মানুষ থাকতে মশা যেন বেছে বেছে আপনাকেই খুঁজে পায়। আপনার রক্ত মিষ্টি-বন্ধুদের কাছে এ কথা শুনতে শুনতে আপনি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কথাটা যদিও একদম ফেলে দেয়ার মত নয়। মশারা সত্যিই মিষ্টি জিনিসের পেছনে ছুটে। তবে এটি তাদের রক্ত চোষার আসল কারণ নয়। মশা মানুষকে কামড়ায় কারণ মানুষের রক্তে মশার ডিম তৈরির প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে। আর তার জন্যে রক্ত মিষ্টি হওয়ার প্রয়োজন নেই। মশা কেন আপনাকে কামড়ায় তা যাচাই করার জন্য চলুন, আগে খুঁজে বের করা যাক- ঠিক কিভাবে এত মানুষের ভীড়ে মশা আপনাকেই খুঁজে নেয়।
বেছে বেছে মশা কিভাবে আপনাকেই খুঁজে নেয়
শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় নিঃসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইড
মশা তার ম্যাক্সিলারি প্যাল্প নামক প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শনাক্ত করতে পারে। শ্বাস ছাড়ার সময় মানুষ বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত করে। আর গ্যাস নির্গত হওয়ার অনুপাত আরো বেড়ে যায় অত্যধিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের সময়। মশা পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের তারতম্য বুঝতে পারে। আর এভাবে সে শনাক্ত করতে পারে বেশি পরিমাণের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণটা ঠিক কোন উৎস থেকে আসছে। এগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কাছাকাছি থাকা হোস্টের দিকে মশা অগ্রসর হয়। একটি মশা ১৬৪ ফুট দূর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণকারিকে শনাক্ত করতে পারে।
শরীরের গন্ধ
মশা কিছু নির্দিষ্ট যৌগের প্রতি আকৃষ্ট হয় যা মানুষের ত্বক এবং ঘামে থাকে। এগুলোর মধ্যে ল্যাকটিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়ার, ইউরিক অ্যাসিড এবং কোলেস্টেরলের প্রভাব বেশি। এই কেমিক্যাল গুলোর তারতম্য মানুষের জীনগত বৈশিষ্ট্য এবং ত্বকে থাকা নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভরশীল। ল্যাকটিক অ্যাসিডের উপস্থিতি মশাদের প্রিয় মানব গন্ধ হিসেবে মনে করা হয়। ব্যায়াম করার সময় প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। তাই ব্যায়াম করার পর পরই সাবান দিয়ে গোসল করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।
মানুষের ত্বক আসলে বেশ কিছু আণুবীক্ষণিক ব্যাকটেরিয়ার আশ্রয়স্থল। এই ব্যাকটেরিয়া ঘামের সাথে মিশে একটি স্বতন্ত্র গন্ধ তৈরি করে। কখনো কখনো ত্বকের জীবাণুর উচ্চ বৈচিত্র্য শরীরে গন্ধের উপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে শরীরটির প্রতি মশাদের আকর্ষণ কমে যায়। প্রভাবের এই ভালো-খারাপটি আসলে নির্ভর করে ব্যক্তির ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার ধরনের উপর। কখনো কখনো এই ব্যাকটেরিয়াই মানুষের গোড়ালি এবং পায়ের পাতার প্রতি মশাদের বিশেষ আকর্ষণটা নির্ধারণ করে দেয়।
পড়ুন: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু কম, তবুও আমরা উদ্বিগ্ন: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
দেহের তাপ
মশা আপনার যত কাছাকাছি হয়, এটি ততই আপনার শরীরের তাপ অনুভব করতে পারে। মশার পায়ে এক ধরনের সেন্সর আছে, যা ব্যবহার করে সে যে কারো শরীরের অধিক তাপ উৎপাদনকারি অংশ খুঁজে বের করতে পারে। প্রতিটি মানুষের শরীরই নির্দিষ্ট পরিমাণে তাপ উৎপন্ন করে। তাই কোন ভাবে একবার আপনার শরীরের উপর বসতে পারলেই মশা কামড়ানোর জন্য আপনার শরীরের সবচেয়ে সেরা জায়গাটি খুঁজে নিতে পারে। আর পরিশ্রম ও ব্যায়াম তাপ ও জলীয় বাষ্পের উৎপাদনশীলতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া তাপ উৎসের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রতি স্বাভাবিকভাবেই ছোট-উড়ন্ত কীটপতঙ্গগুলোর এক ধরনের বাতিক আছে।
অন্যদের তুলনায় মশা কেন আপনাকেই বেশি কামড়ায়
রক্তের গ্রুপ
আপনার রক্তের গ্রুপ মশা কেন আপনাকেই কামড়ায়-এর ঊত্তর অনেকটাই নিশ্চিত করে দেয়। যাদের রক্তের গ্রুপ এ, তাদের প্রতি মশারা তেমন একটা আকৃষ্ট হয় না। অন্যদিকে ও গ্রুপের রক্ত মশাদের জন্য সুস্বাদু পানীয় হিসেবে দেখা হয়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, যে মশাটি আপনাকে কামড়ায় সে যদি ম্যালেরিয়া জীবাণু বহনকারী হয়, তবে অন্যান্য রক্তের গ্রুপের লোকদের তুলনায় আপনার ম্যালেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
স্ত্রী মশারা ডিম উৎপাদনের জন্য মানুষের রক্তের প্রোটিনের উপর নির্ভর করে। এই রক্তের ধরন নির্ধারিত হয় মানুষের জীনগত বৈশিষ্ট্য দ্বারা। প্রতিটি রক্তের ধরন নির্ভর করে লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠে অ্যান্টিজেন নামক প্রোটিনের উপর। তবে রক্তের এই প্রোটিন সংগ্রহের ব্যাপারটা একেক মশার জন্য একেক রকম। যেমন এডিস মশা ও গ্রুপ থেকে প্রোটিন নেয়, যেখানে অ্যানোফিলিস পছন্দ করে এবি গ্রুপকে।
পড়ুন: ডেঙ্গুতে আজও ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩৯৯
শরীরের স্থুলতা
মশারা সাধারণত মোটা, লম্বা বা দীর্ঘদেহী লোকদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কারণ জায়গা যেহেতু বিশাল, সঞ্চালিত রক্ত ও পরিবহনকৃত তাপের পরিমাণও তাই একটু বেশিই হয়। এর সাথে সেই স্থুল শরীরের মানুষটি যত বেশি শ্বাস ছাড়বেন, তত বেশি মশারা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠবে। যেহেতু নাক ও মুখ দিয়েই সাধারণত কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়া হয়, তাই মশা বিশেষ করে মাথাকে টার্গেট করে।
পরিধেয় কাপড়ের রঙ
মশারা কালো রঙের দিকে বেশি অগ্রসর হয়। তাই পরিধেয়ের ক্ষেত্রে যারা কালো বা অন্যান্য গাঢ় রঙ পছন্দ করেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। আসলে রক্ত চোষার জন্য সঠিক দেহ খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে মশারা অত্যন্ত পাকা শিকারী। তাই যারা বেশি উপদ্রবে ভুগছেন, তাদের অবশ্যই গাঢ় রঙের পোশাক যেমন কালো, নেভি এবং লাল এড়িয়ে চলা জরুরি।
গর্ভাবস্থা
সাধারণ মহিলাদের তুলনায় গর্ভবতী মহিলারা বেশি মশার উৎপাতের শিকার হন। এর কারণ গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের তাপমাত্রা অন্যান্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডও বেশি নিঃসরণ করে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রক্তের পরিমাণ এবং বিপাকীয় হার বেশি থাকে। এটি গর্ভবতী মহিলাদেরকে মশার কামড়ের জন্য সংবেদনশীল করে তুলে।
পড়ুন: তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়
নানা ধরনের রোগ-জীবাণু
মানুষের দেহে নানান প্রজাতির ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর সংক্রমণের সাথে মশার প্রতিক্রিয়ার তারতম্য ঘটে। ডেঙ্গি এবং জিকা ভাইরাস মানবদেহের গন্ধে বেশ পরিবর্তন আনে, যা তাদেরকে মশার কামড়ের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। এটি বেশ ফলপ্রসূ পরিস্থিতি, কারণ এটি মশাকে পোষককে কামড় দিতে, সংক্রামিত রক্ত বের করতে এবং তারপর জীবাণুটি অন্য ব্যক্তিতে ছড়াতে সহায়তা করে।
কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো অ্যাসিটোফেনন নামের সুগন্ধযুক্ত কিটোনের নির্গমনকে পরিবর্তন করে দেহকে মশার জন্য উপযুক্ত পোষকে পরিণত করে।
মানুষের ত্বক সাধারণত একটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড তৈরি করে যা ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার করে। ডেঙ্গ বা জিকা দ্বারা সংক্রমিত মানুষের ক্ষেত্রে, এই পেপটাইডের ঘনত্ব কমে যায় এবং কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে অ্যাসিটোফেনন উৎপাদনকে সহায়তা করে। ডেঙ্গু রোগীদের শরীরের গন্ধে সুস্থ মানুষের তুলনায় বেশি অ্যাসিটোফেনন থাকে।
কিছু জীবাণু মানবদেহকে সংক্রমনযোগ্য করে তোলার পাশাপাশি দেহের গন্ধেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে। ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী পরজীবী প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপ্যারাম দ্বারা সংক্রমিত ব্যক্তিরা রোগের বাহক অ্যানোফিলিস মশার জন্য প্রিয় পোষক দেহ।
এই পরজীবিটি মশার রক্ত-সন্ধান, রক্ত চোষা এবং সংক্রমণের সংবেদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে মানুষের লোহিত রক্ত কণিকাকে সক্রিয় করার মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, অ্যালডিহাইড এবং মনোটারপিনের নির্গমন বাড়িয়ে তোলে। এতে পুরো শরীরটা মশা কামড়ানোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে দুর্বল হয়ে পড়ে। ম্যালেরিয়া ছাড়াও এই পরজীবী অ্যানোফিলিস ও এডিস প্রজাতির মশাকে তীব্র ভাবে আকর্ষণ করে।
পড়ুন: হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
শেষাংশ
আপনার দেহের উপর উপরোক্ত কারণগুলোর প্রভাব পৃথকভাবে যাচাই না করে সবগুলো একসাথে মিলিয়ে বা কয়েকটি একসাথে পর্যবেক্ষণ করুন। তবেই মশা কেন কামড়ায়- তার সঠিক উত্তরটি আপনি পেয়ে যাবেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে-এমনো কিছু লোক আছেন যারা অস্বাস্থ্যকর জায়গা বা উপদ্রবের সময়ের বাইরে স্বাভাবিক অবস্থায় মশার উৎপাতের বাইরে থাকেন। এদেরকে আসলে মশা কামড়ের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায় না। ঘন ঘন না চুলকানোর কারণে এদের শরীরে ফোলা ফোলা ভাব বা যখম হয়ে যায় না। এই মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারটির বাইরেও ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে মশার কামড় সাধারণত এদের উপর তেমন কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে না।
ডেঙ্গুতে একদিনে ৪ জনের প্রাণহানি
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে আরও ৩৪৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ২২৮ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ১১৭ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: একদিনে আরও ২৭৫ জন হাসপাতালে ভর্তি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ১১২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৩ জন ঢাকার মধ্যে এবং ২৫৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৯ হাজার ৯৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় সাত হাজার ২৯৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে চিকিৎসা শেষে সাত হাজার ৯৪৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ছয় হাজার ৪২৯ জন ঢাকার এবং বাকি এক হাজার ৫১৭ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
সোমবার চারজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৩৭ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: একদিনে আরও ১৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি
ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের প্রাণহানি
মশা নির্মূলে ডিএনসিসির বিশেষ অভিযান, জরিমানা ৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে সাত দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। রবিবার থেকে সপ্তাহ ব্যাপী এই বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে।
অভিযানের প্রথম দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই অভিযান পরিচালনা করেছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির নতুন ১৮ ওয়ার্ড: নাগরিক সেবায় নেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড
অভিযানে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় চৌদ্দটি (১৪) মামলায় মোট ৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর উত্তরায় আজমপুর এলাকায় এডিস ও ডেঙ্গু বিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানে অংশ নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসি এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে সাত (০৭) দিনের বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দেন।
অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন গুলশান-২ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে ৩টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় তিনটি মামলায় মোট ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন ৫১ নং ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর-১২ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন।
উত্তরা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে ৩টি ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভা প্রাপ্তি স্থানসমূহের লাভা ধ্বংস করে লার্ভা প্রাপ্ত তিনজন ভবন মালিককে ৩টি মামলায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান: প্রায় ৮ লাখ টাকা জরিমানা
এছাড়াও অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ১নং ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর নং ১, ৩ ও ৫ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন অভিযান পরিচালনার করেন। অভিযান পরিচালনাকালে বাসা বাড়ী ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাঁড়ে কিউলেক্স মশক বিরোধী অভিযান ও সমন্বিততভাবে এডিশ বিরোধী অভিযানে ৩টি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩টি মামলায় মোট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৯ এর আওতাধীন ৩৯নং ওয়ার্ডের খিলবাড়িরটেক এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন। এডিসে লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে এডিস মশা নির্মূলে সতর্ক করে দেয়া হয়। সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন করেন।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান এবং উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা লে. কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার কয়েকটি অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: মশক নিধনে ডিএনসিসির বিশেষ অভিযান শুরু
ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান: সপ্তম দিনে ৩.৪৫ লাখ টাকা জরিমানা
ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে আরও ২০৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ: আট মাসে মৃত্যু ২২
এদের মধ্যে ১৫৭ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ৫১ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮০৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৬৭৪ জন ঢাকার মধ্যে এবং ১৩২ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ২১৩ রোগী হাসপাতালে
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট সাত হাজার ১১৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় পাঁচ হাজার ৮২৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে চিকিৎসা শেষে ছয় হাজার ২৮১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে পাঁচ হাজার ১৩৯ জন ঢাকার এবং বাকি এক হাজার ১৪২ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন তিনজন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২৬ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৪৫
ডেঙ্গু: একদিনে আরও ২৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ১৯৬ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ৪১ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: একদিনে আরও ২০১ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭১২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৬০১ জন ঢাকার মধ্যে এবং ১১১ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট পাঁচ হাজার ৯৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় চার হাজার ৮৮৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে চিকিৎসা শেষে পাঁচ হাজার ১৯৮ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে চার হাজার ২৭৮ জন ঢাকার এবং বাকি ৯২০ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যায়নি। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: একদিনে আরও ১৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি
ডেঙ্গু: একদিনে আরও ১৭৬ জন হাসপাতালে ভর্তি
ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১৭ রোগী হাসপাতালে
এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়ছে। সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১৪ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং নতুন আক্রান্ত আরও ১৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ১৭ জনই ঢাকা বিভাগের।
ঢাকার ৪৭টি সরকরি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১০৫ জন ভর্তি আছেন। ঢাকার বাইরে ভর্তি আছেন ৯জন ডেঙ্গু রোগী।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৯৫৯ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৮৫৪ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাছাড়া এই বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ৩২ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২৭
বৃষ্টির পর ঢাকা শহরে এডিস মশার আতঙ্ক বেড়েছে
রাজধানী ঢাকায় এডিস মশার ঘনত্ব আগের বছরের তুলনায় বেশি। আসন্ন বর্ষাকালে যা আরও বাড়তে পারে, ফলে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটতে পারে।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) এর গবেষকরা আশঙ্কা করেছেন, রাজধানীতে বৃষ্টির পরে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের হার উদ্বেগজনক পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত বছর ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবে দেশে ১০৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ২৮ হাজার ৪২৯ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই রাজধানী ঢাকার নাগরিক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস ট্রান্সমিশন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের সাম্প্রতিক এক জরিপে ভয়াবহ পরিস্থিতির তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি সাইটে ১০ দিনের তথ্য নিয়ে এই কীটতত্ত্ব জরিপটি পরিচালিত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুসারে, জরিপ করতে ২১ সদস্যের একটি দল সিটি করপোরেশনের অধীনে প্রায় তিন হাজার বাড়ি পরিদর্শন করেছে। এতে ১৫০টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে, যা মোট সংখ্যার ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।
জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস ট্রান্সমিশন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের আরেকটি দলও ঢাকায় বসবাসকারী মশার প্রজাতির সংখ্যা এবং অন্যান্য জীবাণু শনাক্ত করতে মশা ধরতে কাজ করছে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকায় মারাত্মক পোকামাকড়ের অঞ্চল ভিত্তিক ঘনত্ব জানতে ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) গবেষণা পরিচালনার পর মশার ঘনত্ব দ্বারা জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ম্যাপিং সম্পন্ন করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরামর্শ দিয়েছে যে ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনকে এখনই মশা নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের জন্য মশার আতঙ্ক রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা উচিত।
এতে আরও বলা হয়েছে, নগরবাসীকেও এই অভিযানে সম্পৃক্ত করা উচিত।
আরও পড়ুন: মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর বসুন্ধরা, বাড্ডা, ভাটারা, কুড়িল, মিরপুর, আগারগাঁও, শ্যামলী, বনশ্রী, যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, ধানমন্ডিসহ পুরান ঢাকার অনেক এলাকা মশার উৎপাতের কেন্দ্রস্থল।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, বসুন্ধরা এলাকায় সারা বছরই মশা থাকলেও সিটি করপোরেশন খুব কমই লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড স্প্রে করে।
তিনি বলেন, ‘মশার কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা সন্ধ্যায় ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারে না। আমরা মশার উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পেতে মশারি এবং কয়েল ব্যবহার করি।’
মিরপুরের বাসিন্দা মাইনুল হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন মাঝেমধ্যে কীটনাশক স্প্রে করে, যা মশার বংশবৃদ্ধি রোধে পর্যাপ্ত নয়। সিটি করপোরেশনের উচিত এ বিষয়ে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া।
মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র
চট্টগ্রাম মহানগরীতে মশার উৎপাতে বিড়ম্বনায় আছেন বলে মন্তব্য করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে। পানি যাচ্ছে না। কয়েকদিন আগে পরিদর্শনে গিয়ে খালে একটি ঢিল ছুঁড়ে মারলাম। কয়েক হাজার মশা বেরিয়ে এলো। তিনদিন আগে স্প্রে করেছিল। দিনেও মশা, রাতেও মশা, অস্বীকার করছি না। মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি।’
বুধবার নগর ভবনে মেয়র পদে এক বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম সিটি মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন রেজাউল করিম
সংবাদ সম্মেলনে খাল-নালার অবৈধ দখলকারীরা যত প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিটি মেয়র বলেন, সাফল্য-ব্যর্থতা নিজে পরিমাপ করতে পারবো না। সেটা জনগণ করবে। তবে আমি নিরন্তর চেষ্টা করে গেছি। আমি এক হাজার কোটি টাকার দেনা ও নানাবিধ সমস্যা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সেখান থেকে বের হয়ে চট্টগ্রাম নগরীকে নান্দনিক নগরী হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপি সহিংস আচরণ করেছে: তথ্যমন্ত্রী
২৭ জানুয়ারী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মশা তাড়ানোর ধোঁয়ার আগুনে পুড়ল ২৭টি গরু
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে মশা তাড়ানোর ধোঁয়া থেকে আগুন লেগে ২৭টি গরু মারা গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার কসবা ইউনিয়নের আখিলা গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
আগুনে পুড়ে আখিলা গ্রামের মৃত আলহাজ্ব সমির উদ্দিনের ছেলে আলহাজ্ব সলেমানের খামারে থাকা ২৭টি গরুর সবগুলোই মারা গেছে।
মারা যাওয়া গরুর মধ্যে রয়েছে- ৩টি বড় ষাড় গরু,, ২২টি শাহীওয়াল বড় বকনা ও ২টি বাছুর। আগুনে পুড়ে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি, স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বাড়ির সঙ্গে লাগানো আলহাজ্ব সলেমানের খামারে আগুন লেগে সবগুলো গরু মারা যায়। গরুর খামারে মশা তাড়ানোর ধোঁয়া থেকেআগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জের শান ফেব্রিক্সে আগুন
আরও জানা যায়, মশা তাড়ানোর ধোঁয়া থেকে পরবর্তীতে বৈদ্যুতিক সংযোগের সঙ্গে সূত্রপাত ঘটে আগুন লাগে। পরে স্থানীয়রা খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোমস্তাপুর সার্কেল) শামছুল আজম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহম্মেদ, নাচোল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মিন্টু রহমানসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোমস্তাপুর সার্কেল পরিদর্শন করেছেন। আগুনে ২৭টি গরু মারা যাবার পর বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নাচোল থানায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নাচোল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার ইব্রাহিম আলী জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম পাঠানো হয়। পরে ২০ মিনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে গরু ছাড়া আর কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি৷ মশা তাড়ানোর ধোঁয়ার আগুনের সাথে বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভৈরবে আগুনে পুড়ে শিশুর মৃত্যু
মিরপুরে পাঁচ তলা ভবনে আগুন