ডেঙ্গু
ডেঙ্গুতে মৃত্যু একশ’ ছাড়াল
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা একশ’ ছাড়াল। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৬ জনে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৬৪ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গু সংক্রান্ত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার ৫৬৫ জন ও ঢাকার বাইরের ২৯৯ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: মৃত্যু মিছিলে আরও যুক্ত হলো ৩ জন
বুলেটিনে আরও বলা হয়, বর্তমানে সারাদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিন হাজার ৩০৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় দুই হাজার ২৪৭ জন। আর ঢাকার বাইরে এক হাজার ৫৭ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট ২৭ হাজার ৮০২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ঢাকায় ২০ হাজার ৬৩ জন আর ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হন সাত হাজার ৭৩৯ জন আক্রান্ত হন।
এছাড়া একই সময়ে সারাদেশে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ২৪ হাজার ৩৯২ জন রোগী। এরমধ্যে ঢাকায় ১৭ হাজার ৭৫৪ জন আর ঢাকার বাইরের ছয় হাজার ৬৩৮ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন।
এ নিয়ে গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১০৬ জনের।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
ডেঙ্গু: দেশে আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৫৭
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
ডেঙ্গুর ভয়াবহতা গত ২ দশক জুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মরণকালের সবচেয়ে মারণাত্মক কীটপতঙ্গ জনিত মানব রোগে পরিণত হয়েছে এই ডেঙ্গু, যা সবচেয়ে বেশি আঘাত হানছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। বিশেষ করে বাংলাদেশে পেছনের সব রেকর্ড ভেঙে ডেঙ্গু প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই অনতিবিলম্বে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া আবশ্যক।
ডেঙ্গু কি
ডেঙ্গু হলো এডিস গোত্রের স্ত্রী মশাবাহিত এক ধরনের ভাইরাস, যা ডেঙ্গি নামে পরিচিত। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু জীবাণু মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। কোন আক্রান্ত মানুষ থেকে আরেক মানুষে এই রোগ ছড়ায় না। তবে সংক্রমিত মানুষটিকে কামড়ানোর ফলে আক্রান্ত মশা অন্য মানুষকে কামড়ালে তখন সেই মানুষটি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। ডেঙ্গি ভাইরাসে সংক্রমণের ফলে ডেঙ্গু জ্বর হয়। সংক্রমিত মশার সংস্পর্শে আসা সব বয়সের মানুষই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এই ডেঙ্গু একটি বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও উপকান্ত্রিয় অঞ্চল বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার শহুর এবং মফস্বল শহরগুলোতে বেশি দেখা যায়। প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার মানুষ মারা যায় ডেঙ্গু জ্বরে।
পড়ুন: নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে: বিশেষজ্ঞরা
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো হলো- হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, পেশি ও অস্থিসন্ধিতে গুরুতর ব্যথা, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, বমি, ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠা (যা জ্বর শুরু হওয়ার ২ থেকে ৫ দিন পরে দেখা দেয়) এবং হালকা রক্তপাত (যেমন নাক ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া)।
এই লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রমণের ৪ থেকে ৬ দিন পরে শুরু হয় এবং ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কখনও কখনও লক্ষণগুলো এতটাই হালকা হয় যে ফ্লু বা অন্য কোনও ভাইরাল সংক্রমণের মত মনে হতে পারে।
ডেঙ্গুর গুরুতর মাত্রাগুলোর মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর, রক্তনালীগুলোর ক্ষতি, নাক এবং মাড়ি থেকে অধিক রক্তপাত, লিভার এবং সংবহনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়া। এই লক্ষণগুলো এতটাই ভয়াবহ যে তা মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম (ডিএসএস) বলা হয়।
পড়ুন: চোখ উঠা রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল এবং সেইসাথে যাদের দ্বিতীয়বারের মত ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে, তাদের ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয়ের প্রক্রিয়া
২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার ডেঙ্গু চিকিৎসার খরচ কমানোর প্রয়াসে সারাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার পূর্বে এবং চিকিৎসা সময়কালীন প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য হার নির্ধারণ করে।
জ্বরের তিন দিনের মধ্যে ডেঙ্গু নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এনএস-১ অ্যান্টিজেন টেস্টের সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। পরবর্তী পর্যায়ে ডেঙ্গু নির্ণয় করার জন্য অন্য দুটি পরীক্ষা - আইজিজি এবং আইজিএম-এর ফি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত মূল্য সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা।
পড়ুন: মশা কেন আপনাকেই কামড়ায়?
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা
ডেঙ্গু সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য আসলে কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য এর লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সাহায্য করার জন্য সাধারণত চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি পান ও স্বাস্থ্যকর পানীয় খাবার খাওয়া, প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নেয়া। তাৎক্ষণিক ব্যথা উপশমের জন্য ডাক্তাররা টাইলেনল বা প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করে থাকেন, যা অনেক সময় জ্বর কমাতেও সাহায্য করে।
অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেনের মতো ননস্টেরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধগুলো উপযুক্ত নয়, কারণ এতে অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের ঘরোয়া প্রতিকার
ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এগুলোর উপর চূড়ান্তভাবে নির্ভর করা উচিত নয়। ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথেই উচিত অবিলম্বে ডেঙ্গু টেস্ট করানো এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।
গিলয় জ্যুস
গিলয় আয়ুর্বেদিক ওষুধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এক প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ, সংস্কৃত ভাষায় যার নাম অমৃত; অর্থ অমরত্বের শিকড়। গিলয়ের শিকড় গুঁড়ো করে বা স্যুপে সিদ্ধ করে খাওয়া হয়। ডেঙ্গু জ্বর প্রতিকারে গিলয় জ্যুসের বেশ খ্যাতি আছে। এটি বিপাকে সাহায্য করে এবং অনাক্রম্যতা তৈরি করে।
পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?
শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ডেঙ্গু জ্বর থেকে আরোগ্য লাভের প্রথম শর্ত। এই জ্যুস প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে এবং রোগীকে স্বস্তি দেয়। এক গ্লাস পানিতে গিলয় গাছের দুটি ছোট কান্ড সিদ্ধ করে তা খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া এক কাপ ফুটানো পানিতে কয়েক ফোটা গিলয়ের রস যোগ করে দিনে ২বার পান করা যেতে পারে। তবে গিলয় রস বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
পেঁপে পাতার জ্যুস
যেহেতু ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে প্লেটলেটের পরিমাণ কমে যায়, তাই এই সমস্যা সমাধানে পেঁপে পাতার জ্যুস একটি দুর্দান্ত প্রতিকার। এই জ্যুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। ডেঙ্গু জ্বরের সময় কিছু পেঁপে পাতা পিষে রস বের করে দিনে ২বার অল্প পরিমাণে পান করা যেতে পারে।
পেয়ারার জ্যুস
পেয়ারার জ্যুসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক কাপ পেয়ারার রস দিনে ২বার পান করা যেতে পারে। এছাড়া জ্যুসের বদলে তাজা পেয়ারাতেও ভালো প্রতিকার পাওয়া যায়।
পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
মেথি বীজ
এক কাপ গরম পানিতে কিছু মেথির বীজ ভিজিয়ে রেখে তা ঠান্ডা করতে হবে। অতঃপর এই পানীয় দিনে ২বার করে পান করলে জ্বর কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উপকার পাওয়া যাবে। ভিটামিন সি, কে এবং ফাইবার সমৃদ্ধ মেথির পানি অনেক স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকলে ডেঙ্গুর থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। দেহকে রোগ প্রতিরোধক্ষম রাখার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে লেবু, কমলা, জাম্বুরার মত সাইট্রাস জাতীয় ফল, রসুন, বাদাম, এবং হলুদ রাখা যেতে পারে।
বাংলাদেশে কখন ডেঙ্গু জ্বর হয়
বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণের ঝুঁকি সারা বছরব্যাপীই বিদ্যমান থাকে। তবে বর্ষাকাল তথা জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ঝুঁকির মাত্রাটা সবচেয়ে বেশি থাকে।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
এই রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হলো সংক্রামিত মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা। এর জন্য মশার বংশ বিস্তারের সব রকম পরিবেশ সমূলে ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়গুলো হলো-
- বর্ষার মৌসুমে বাড়ির ভিতরেও মশা নিরোধক ব্যবহার করা
- বাইরে বেরলে লম্বা-হাতা শার্ট, লম্বা প্যান্ট এবং পায়ে মুজা পড়ে পুরো শরীর ঢেকে রাখার চেষ্টা করা
- সন্ধ্যার আগে আগেই জানালা ও দরজা লাগিয়ে দেয়া। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।
- মশার বংশবৃদ্ধির সম্ভাব্য সব জায়গাগুলো ধ্বংস করা। সাধারণত পুরানো টায়ার, বাড়ির সানশেড, ক্যান বা ফুলের টবে বৃষ্টির পানি জমে থাকে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা। ঘরের বাইরে পোষা পশু ও পাখির বাসার বিশেষ করে খাবারের পাত্রগুলো নিয়মিত পরিবর্তন করে দেয়া।
- বাড়িতে কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে মশার কামড় থেকে রক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা। এ সময় ঘর ও ঘরের আঙ্গিনা থেকে মশা নির্মুলের দিকে অধিক নজর দিতে হবে।
পড়ুন: টেক্সট নেক সিন্ড্রোম: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল
শেষাংশ
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ব্যাপারে বিশদ জ্ঞানার্জন ডেঙ্গু প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রতিটি জনসাধারণকে সচেষ্ট হতে হবে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে। শুধু নিজেদের সুস্বাস্থ্যের জন্যই নয়; ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে হলে এখনি প্রয়োজন ডেঙ্গু নির্মূলে সোচ্চার হওয়া।
ডেঙ্গু: দেশে আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৫৭
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সোবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৯৬ জন প্রাণ হারালেন। এছাড়া এ সময়ে ৮৫৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ৫২৩ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ৩৩৪ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে: বিশেষজ্ঞরা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত তিন হাজার চার জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে দুই হাজার ১৫ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৯৮৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৬ হাজার ৩৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৮ হাজার ৯৭০ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন সাত হাজার ৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২২ হাজার ৯৩৮ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৬ হাজার ৯০২ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ছয় হাজার ৩৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৫৫
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু: আরও এক শিশুর মৃত্যু
দেশে ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৫৫
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৯৪ জন প্রাণ হারালেন।
এছাড়া এ সময়ে ৮৫৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ৫২৩ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ৩৩২ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: তাকেদার টিকার অনুমোদনের সুপারিশ ইএমএ’র
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৮৪৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৯৫৭ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৮৯০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৫ হাজার ১৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৮ হাজার ৪৪৭ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৭৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২২ হাজার ২৪০ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৬ হাজার ৪৩৮ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ৮০২ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে: বিশেষজ্ঞরা
ডেঙ্গু: একদিনে ৬ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৭৩৪
নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে: বিশেষজ্ঞরা
ডেঙ্গু প্রতিদিন যেভাবে বাড়ছে তাতে মানুষরে মধ্যে এখন ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাসপাতালগুলোতে আলাদা ওয়ার্ড তৈরি করেও চাপ সামলাতে পারছে না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে আক্রান্তরা।
চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৮৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা বলছে, মশা নিধনে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। লার্ভা নিধনে নামকাওয়াস্তে অভিযান ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী।
সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। শিশু হাসপাতালে ঘুরে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচুর পানি ও জুস খাওয়ার পরামর্শ
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, চলতি মাস অক্টোবরে প্রথম ১২ দিনে ১১৯ শিশু ডেঙ্গি নিয়ে ভর্তি হয়েছে। তেমনি ঢাকা মেডিকেল, মুগদা জেনারেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে রোগীরা শয্যা সংকটে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির ইউএনবিকে বলেন, দিন দিন ডেঙ্গু যেভাবে বাড়ছে তাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। ডেঙ্গু চিকিৎসার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা আরও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে ঢাকার বাইরেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করছেন ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষের। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে আক্রান্তরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সবুর খান ইউএনবিকে বলেন, ডেঙ্গু বিস্তার সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি কমে আসে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি অন্য রকম মনে হচ্ছে, অক্টোবর মাস এখন প্রকোপ বাড়ছে। যা উদ্বেগজনক দিকে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এবার ডেঙ্গু প্রকোপ নভেম্বর মাঝামাঝি বা মাসের শেষ পর্যন্ত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে করণীয়
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। ড্রামসহ বিভিন্ন কৌটা আর খানাখন্দে পানি জমে। এগুলো খুব বেশি তদারকি হয় না। ফলে ওই সব স্থানে ডেঙ্গু মশার উৎপত্তি হয়। সিটি করপোরেশন বাসাবাড়িতে অভিযান চালাচ্ছেন। কিন্তু কনস্ট্রাকশনের জায়গাগুলো তো টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। সেখানে সাধারণ মানুষ যায় না, সিটি করপোরেশনও যায় না। যে কারণে সবসময় ডেঙ্গু মশা আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
মশার নিধনে সিটি করপোরেশনের কোনো গাফিলতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব মশা নিয়ন্ত্রণ করা। মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের গাফিলতি অবশ্যই আছে। মশা নিধনে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। লার্ভা নিধনে নামকাওয়াস্তে অভিযান ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু রোধে দুটি কাজ করে। প্রথমত, হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দেয়ার জন্য তৈরি করা। সেই ক্যাপাসিটি আমাদের আছে। আমাদের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী যারা আছেন, তাদের ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে আমরা আপডেটেড রাখছি। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন মৌসুমে আমরা ঢাকা মহানগরীতে সার্ভে করি। সেই রিপোর্ট আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে হস্তান্তর করি। আমাদের নতুন সার্ভে অনুযায়ী, উত্তর-দক্ষিণ দুই সিটিতেই সমানভাবে মশার উপদ্রব রয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে ছাদ বাগানিদের সতর্ক হতে বললেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনি বলেন, ডেঙ্গুর সংক্রমণ তখন বাড়ে, যখন মশার সংখ্যা বাড়ে। সিটি করপোরেশন এভাবে তো অভিযান পরিচালনা করে কোনো লাভ নেই। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। ভালো করে দেখবেন, এগুলোতেই কিন্তু মশা ডিম পাড়ে। নতুন নতুন মশা জন্ম নিচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৩২৬ জন। যা গত বছর ছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন, ২০২০ সালে ছিল ১৪০৫ জন। তবে সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১৯ সালে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে ছাদ বাগানিদের সতর্ক হতে বললেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ডেঙ্গু বিষয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ইউএনবিকে বলেন, এবার যেহেতু ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমণও চলছে, তাই প্রথম পরামর্শ হলো জ্বরের শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। জ্বর অল্প, সমস্যা হবে না, এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা যে কোনো মুহূর্তে খারাপ হতে পারে। ফলে শেষ সময়ে হাসপাতালে এলেও চিকিৎসকদেরও কিছু করার থাকে না। জ্বর হলেই ডেঙ্গু টেস্ট করাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী অফিসার (সিইও) অতিরিক্ত সচিব সেলিম রেজা ইউএনবিকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমাদের বছরব্যাপী অভিযান অব্যাহত আছে। এখন ডেঙ্গু সিজন সেজন্য আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি। আমরা আশা করছি এ মাসের মধ্যেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
কনস্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ে অভিযান হয় না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়ির নিচে ও কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং পানি জমে ডেঙ্গু সৃষ্টি হয়। আমরা নোটিশ করছি, অনেক সময় কনস্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ে যাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: ৫ দিনব্যাপী দক্ষিণ সিটির ৫ ওয়ার্ডে বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু আজ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আহাম্মদ ইউএনবিকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা হার্ড লাইনে আছি, অভিযানে অনেক বাড়ির মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযানের পাশাপাশি সকলকে আরও সচেতন হতে হবে। সচেতন থাকলে ডেঙ্গু জন্ম হবে না।
ডেঙ্গু: একদিনে ৬ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৭৩৪
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৮৯ জন প্রাণ হারালেন।
এছাড়া এ সময়ে ৭৩৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ৪৬৮ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ২৬৬ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: ৩১০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৮৮৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৯৯২ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৮৯৭ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৪ হাজার ৩২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৭ হাজার ৯২৪ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৪০২ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২১ হাজার ৩৪৮ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৮৮১ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ৪৬৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ৮ জনের মৃত্যু
ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গু: তাকেদার টিকার অনুমোদনের সুপারিশ ইএমএ’র
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) শুক্রবার জাপানি ফার্মাসিউটিক্যাল তাকেদা’র তৈরি ডেঙ্গু টিকার অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। যা ভয়াবহ এ রোগের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী কয়েক লাখ মানুষের জন্য লড়াইয়ে নতুন কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।
শুক্রবার ইইউ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইএমএ এক বিবৃতিতে বলেছে, চার ধরনের ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে চার বছর বা তার বেশি বয়সের যে কেউ এই টিকা নিতে পারে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৩৯০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভাইরাল এই রোগে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে কমপক্ষে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যার বেশিরভাগই শিশু।
ইএমএ জানায়, ‘বর্তমান টিকার সুবিধা ও নিরাপত্তা ১৯টি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে মূল্যায়ন করা হয়েছে, যা ১৫ মাস থেকে ৬০ বছর বয়সী ২৭ হাজারেরও বেশি লোককে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’
গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে বিরত রাখতে তাকেদা’র টিকা প্রায় ৮৪ শতাংশ কার্যকরী এবং টিকা দেয়ার চার বছর পর পর্যন্ত সংক্রমণ রোধে প্রায় ৬১ শতাংশ কার্যকর থাকে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: ৩১০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
ল্যাটিন আমেরিকার ১২০টি এবং এশিয়ার অনেক দেশে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ ডেঙ্গু। এ রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। যদিও প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীর সংক্রমণ মৃদু। অধিকাংশ রোগীর জানানো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা ও পেশী ব্যথা।
মশার মাধ্যমে ছড়ানো এ রোগ গুরুতর হলে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত, অঙ্গহানি এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
২০১৭ সালে সানোফি পাস্তুরের ডেঙ্গু ভ্যাকসিন ‘ডেঙ্গুভ্যাক্সিয়া’ ফিলিপাইনে জনস্বাস্থ্য সঙ্কট শুরু করার পরে তাকেদা ভ্যাকসিনের সুপারিশ করা হয়। ডেঙ্গুভ্যাক্সিয়া টিকা এমন লোকেদের দেহে গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যারা আগে ডেঙ্গুতে সংক্রমিত হয়নি। এমনকি এর ফলে ১০০টিরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়।
সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, সানোফি ভ্যাকসিনটি ফিলিপাইনজুড়ে প্রায় আট লাখ অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। অনেক বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাকে ‘অযথা তাড়াহুড়ো করে’ ভ্যাকসিনটি সুপারিশ করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
প্রসিকিউটররা বলেছিলেন যে এর ফলেই এই মৃত্যু ঘটে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগে একবার সানোফি পাস্তুর ভ্যাকসিনটি নিরাপদ বলে উপসংহারে পৌঁছেছিল। কিন্তু পরে বলেছে যে পরীক্ষা করে শুধুমাত্র আগে যে শিশুদের ডেঙ্গু হয়েছিল, শুধুমাত্র সেসব শিশুকেই এই টিকা দেয়া উচিত।
ইএমএ বলেছে, তাকেদা ভ্যাকসিনের অনুমোদনের অর্থ হল ‘বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের ওপর সৃষ্ট হুমকি মোকাবিলার করা’।
সংস্থাটি আরও জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোর আস্থা থাকা উচিত যে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর।
ম্যালেরিয়ার পরে, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে ফিরে আসা ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি।
ইন্দোনেশিয়া তাকেদা ভ্যাকসিনের লাইসেন্স দেয়া প্রথম দেশ। সেপ্টেম্বর মাসে দেশটি তাকেদা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ৮ জনের মৃত্যু
ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গু: ৩১০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত, ২৪ ঘণ্টায় ৩১০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ১৯৭ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ১১৩ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৭১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৯১৬ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৭৯৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ৮ জনের মৃত্যু
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৩ হাজার ৫৯২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৭ হাজার ৪৫৬ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ১৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২০ হাজার ৭৯৪ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৪৯৫ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ২৯৯ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যায়নি। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৩ জন মারা গেছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গু: এ বছর ৭৫ জনের মৃত্যু
ডেঙ্গুতে চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ৮ জনের মৃত্যু
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৮৩ জন প্রাণ হারালেন। এছাড়া এসময়ে ৭৬৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৬৯৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৯১৫ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৭৮০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: এ বছর ৭৫ জনের মৃত্যু
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৩ হাজার ২৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৭ হাজার ২৫৯ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২০ হাজার ৫০৪ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ২৯৯ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ২০৫ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গুতে একদিনে ৪ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৬৭৭
ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সারা দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬২৪
তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৮ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে ১৮ জন, ছয় থেকে নয় দিনের মধ্যে ছয় জন এবং ৯-৩০ দিনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
আহমেদুল কবির বলেন, ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত ২০ বছরের বেশি বয়সীরা। মৃত্যু বেশি ৪০-৫০ বছরের মধ্যে। বেশি মারা যাচ্ছেন ঢাকার বাইরে। হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছেন।
ডেঙ্গু চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বলেও তিনি জানান।
এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৫ জন প্রাণ হারালেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: এ বছর ৭৫ জনের মৃত্যু
এছাড়া এসময়ে ৬৪৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪১৫ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ২৩২ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৪৮১ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৮১২ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৬৬৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১২ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২২ হাজার ৫১৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৬ হাজার ৭৬২ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭৫৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ১৯ হাজার ৯৬১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৪ হাজার ৯০৮ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ৫৩ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে একদিনে ৪ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৬৭৭