দুর্ভোগ
বন্যা: কিশোরগঞ্জে পানিবন্দি লাখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলসহ সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। মঙ্গলবার জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার ৬২ ইউনিয়নের ৪৭৩টি গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৭৪৮ পরিবার।
বন্যার পানি ঢুকছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ইটনা, অষ্টগ্রাম, তাড়াইল, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর ও ভৈরব উপজেলার মানুষ।
অষ্টগ্রামের আটটি, মিঠামইনের সাতটি, করিমগঞ্জের আটটি, নিকলীর ছয়টি, কটিয়াদীর চারটি, বাজিতপুরের আটটি ও ভৈরবের পাঁচটি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। স্কুল কলেজ, বসতবাড়ি, উপাসনালয় ও হাট-বাজার প্লাবিত। তিন উপজেলার ২০টি গ্রামে নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাড়িঘর ছেড়ে অনেক পরিবার নৌকা ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। বসতবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নদ-নদীতে প্রবল বেগে পানি এখনও বাড়ছে। এ অবস্থায় মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন। পানি না কমলে নতুন করে আরও ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে রয়েছে। দুর্গত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি দুর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা প্লাবিত গ্রামে চাল বরাদ্দ করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বানভাসি মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন, বাড়ছে দুর্ভোগ
পাউবো সুত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১১.৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বিশেষ করে মেঘনা নদীর পানি ভৈরবে বিপদ সীমার ৫.৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, হাওরের পানি কালনী ঘোড়াউত্রা হয়ে মেঘনা নদীতে ভৈরব সেতু দিয়ে নেমে যাবার কথা। মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিপরীতমুখী প্রচন্ড স্রোতের কারণে পানি নামতে না পেরে কিশোরগঞ্জের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বন্যার সার্বিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় এক হাজার ৫০৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৬২ ইউনিয়নে মোট ১৫৪ আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মোট ১২ হাজার ৭৪৮ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। দুই হাজার ৪৭ গবাদি পশুকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার বলেন, উপজেলার সিংহভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।
বানভাসি মানুষের জন্য ইতোমধ্যে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৪৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু হাসান জানান, ইতোমধ্যে নতুন করে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছাতিরচর, সিংপুর, দামপাড়া ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি আরও বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ গোটা হাওরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে বৃষ্টি হলে নিকলী উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জ হাওরের ওপর প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় এক ফুট বেড়েছে। বিশেষ করে কালনী-কুশিয়ারার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখেছি।
তিনি বলেন, অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। সেখানকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। অবস্থা বুঝে এবং গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক
লালমনিরহাটে বানভাসি মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন, বাড়ছে দুর্ভোগ
উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লালমিনরহাটে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত তিনদিন ধরে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন বাঁধে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় হাতীবান্ধার দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫২.৬০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদ দৌলা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (২০ জুন) সন্ধা ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৯০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে বানভাসি মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
সোমবার (২০ জুন) রাত ১০টায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর লালমনিরহাট সদর এবং আদিতমারী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ প্রায় ১৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র-ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
চলমান বন্যার প্রকোপ মোকাবিলা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এবার (বন্যার) প্রকোপ কিছুটা তীব্র। এটি কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো দেখা করতে গেলে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার সব কিছু করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রকৃতির সঙ্গেই বাঁচতে হবে। বন্যা দুর্গতদের সব ধরনের সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে জাপান উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে আসছে।
দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, এটা দীর্ঘদিন ধরে সেনানিবাসে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তারা (সামরিক শাসকরা) শাসন করেছে। সেখান থেকে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি।
তিনি বলেন, দেশে গণমাধ্যম স্বাধীন। বাংলাদেশে ৩৩টি টিভি চ্যানেল চালু আছে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে শুধু রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশনই কাজ করত।’
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের ৪ জুলাই তিনি প্রথম সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত কাজটি এগোয়নি।
কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত থাকায় তার সরকার কক্সবাজারকে পর্যটনের জন্য উন্নত করতে চায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি এই বছরের নভেম্বরের কোনো সময় জাপানে সফর করেন তাহলে তারা খুশি হবেন।
তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি
আগামী বছর থেকে জাপানি কোম্পানি আড়াইহাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ শুরু করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাপান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চায়।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার উন্নত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।
এ সময় মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে ক্লাস-পরীক্ষায় সহনশীল শাবিপ্রবি প্রশাসন
ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট নগরীতে বন্যার্ত মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এই ভোগান্তি থেকে বাদ পড়েনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে ক্লাস-পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সহনশীল আচরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে শাবিপ্রবি প্রশাসন।বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা অধ্যাপক আমিনা পারভীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সিলেটে চলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সহনশীলতার মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীরা যারা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এক্ষেত্রে বিভাগগুলো যদি বিবেচনা করে মনে করেন শিক্ষার্থীদের চলমান চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী পেছানো সম্ভব সেক্ষেত্রে নিজ নিজ বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। একইসঙ্গে যেসকল অনাবাসিক শিক্ষার্থী বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সেগুলোতে অবস্থান করছে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আবাসিক হল প্রাধ্যক্ষদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও স্বশরীরে চলমান ক্লাস ব্যবস্থাপনায় বিঘ্নতা তৈরি হলে বিভাগগুলো স্বশরীরের পরিবর্তে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, সিলেটে বর্তমান পরিস্থিতিতে যে মানবিক বিপর্যয় চলছে তা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ জায়গা থেকেই মোকাবিলা করতে চায়। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার মধ্য দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা সুনিশ্চিত করতে চায়।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় দুর্ভোগে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
শাবিপ্রবিতে সুমন হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পাসপোর্ট প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের আহ্বান সাংবাদিকদের
পাসপোর্ট সকল নাগরিকের অধিকার উল্লেখ করে পাসপোর্ট পেতে দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েন সাংবাদিক নেতারা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে একটি রেস্তোরাঁয় পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (পিআইআরএফ) আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তারা এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট থাকা প্রয়োজন। তবে ঝামেলা ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: নিউমার্কেটে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে: তথ্যমন্ত্রী
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শফিকুল করিম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে পিআইআরএফ পাসপোর্ট প্রার্থী ও বিভাগের মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করছে।
পিআইআরএফের সভাপতি আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মনোজ কান্তি রায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু ও ডিআরইউ-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের ডাটাবেজ তৈরির রোডম্যাপ করছে প্রেস কাউন্সিল: তথ্যমন্ত্রী
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৯ সাংবাদিক
বাম জোটের হরতালে নাশকতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ২৮ মার্চ বাম জোটের হরতালে নাশকতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেছেন, ‘হরতাল, ধর্মঘট, রাজনৈতিক চর্চা। রাজনৈতিক দলগুলো এগুলো করতেই পারে। আমরা মনে করি যে, রাজনৈতিক দলগুলো সহনশীলতার পরিচয় দিবে। তারা কোনো ভাংচুরে যাবে না, ধংসাত্মক কাজ করবে না। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে না। করলে যেটা হয় সেটাই হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের নবনির্মিত 'পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।তিনি বলেছেন, নির্বাচন এলে অনেকেই অনেক কৌশল অবলম্বন করে। জনগণের ভোট ছাড়া অন্যভাবে ক্ষমতায় আসা যায় কি-না, এ ধরনের কৌশল অনেকেই করে।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভরসায় চলেন, জনগণের শক্তিকে নিজের শক্তি মনে করেন। কাজেই জনগণের শক্তিতেই তিনি রাজনীতি করেন। জনগণের আস্থায় রাজনীতি করেন। যারা অপচেষ্টা করবেন, তারা জনগণ দ্বারা ধিকৃত হবেন এবং জনগণ থেকে দূরে সরে যাবেন।
আরও পড়ুন: গাড়ি চালকদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে হরতাল ডেকেছে। এটা শুধু বাংলাদেশে বাড়েনি। সারাবিশ্বেই বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পরিবহন ব্যয় তিনগুণ হয়ে গেছে। আমাদের দেশ তেল আমদানি করে, অনেক কিছুই আমদানি নির্ভর। কাজেই আমদানির ক্ষেত্রে দাম যে অস্বাভাবিক বেড়েছে তার প্রভাব কিছুটা দেশের বাজারে পড়েছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট ও ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছেন। পিঁয়াজ ও তেলের দাম এখন নিম্নমুখী। আমাদের প্রচেষ্টা কোনো কমতি নেই, তারপরও যদি কেউ হরতাল ডাকে, আমাদের কিছু বলার নেই। আমাদের আবেদন থাকবে, যারা হরতাল ডেকেছে তারা যেন ধ্বংসাত্মক কোনও কাজ না করে এবং জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। এর আগে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রামের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এসময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. শামসুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামিনুর রহমান, উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. আমির জাফর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হকসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আসাদুজ্জামান খাঁনের সৌজন্য সাক্ষাত
পুলিশকে বিশ্বমানের করে তৈরি করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অস্বাভাবিক যানজটে দুর্ভোগে ঢাকাবাসী
রাজধানী ঢাকা মঙ্গলবার কয়েক ঘন্টার তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছিল। এর ফলে স্কুল শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ইউএনবির প্রতিবেদক রাজধানীর আসাদগেট, খিলগাঁও, মগবাজার, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে প্রতিটি প্রধান সড়ক ও গলিতে দীর্ঘ যানজটের সারি দেখতে পান। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের সামনে তীব্র যানজট দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক বিভাগের একজন সিনিয়র অফিসার বলেছেন, ‘মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর সব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস আজ আবার শুরু হয়েছে। ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী এখন তাদের ক্লাসে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপও বেশি। কারণ অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের দিতে ও নিতে স্কুলে আসেন। এর ফলে যানজট সৃষ্টি হয়।’
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এনামুল হক হিমু জানান, যানজটের কারণে সেগুনবাগিচা থেকে ৩০০ ফিট পর্যন্ত যেতে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে।
আরও পড়ুন: দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকা দ্বিতীয়
মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মশিন আলী বলেন, তার পাঁচ বছরের মেয়ে রেহেমার আজ স্কুলে প্রথম দিনটি খুব খারাপ ছিল। করোনার কারণে বন্ধের দুই বছর পরে শারীরিকভাবে ক্লাসে যাওয়া নিয়ে সে খুব উত্তেজিত ছিলেন। কিন্তু অস্বাভাবিক যানজটের কারণে তার আজ একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। এদিকে মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা জামান মন্টু জানান, গত দুই বছরে এত বেশি যানবাহন রাস্তায় দেখেননি তিনি।
যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকায় অফিসগামী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নিত্যযাত্রীরা এদিন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন।
এছাড়া রাস্তা মেরামত কাজ ও মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজও নগরবাসীর দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৬ মার্চ থেকে প্রতিদিন ইউএস-বাংলার ঢাকা-কলকাতা ফ্লাইট
সড়ক দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার যানজট
সারাদিন দুর্ভোগ শেষে সিলেটে রাতে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত
সিলেটে সোমবার দিনভর দুর্ভোগের পর রাতে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সাথে বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধর্মঘট স্থগিতের কথা জানান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সরকার।
তিনি বলেন, ‘ আমাদের পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আমরা তাদের উপর বিশ্বাস রেখে ধর্মঘট স্থগিত করেছি। অর্থাৎ বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে আবার ধর্মঘট ডাকা হবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও স্থবির বেনাপোল বন্দর
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ফেডারেশন নেতাদের সাথে সিলেটের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান জরুরি বৈঠকে বসেন। এতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার বিকালে নগরীর দক্ষিণ সুরমাস্থ সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
সোমবার সকাল থেকে সিলেটে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে পুরো সিলেট বিভাগে বাস ট্রাক, অটোরিকশাসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ ছিল। এমনকি নগরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলেও বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি। হেঁটেই অনেককে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়।
এর আগে সিলেটে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সড়ক
পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি। কিন্তু তাদের পাঁচ দফা দাবি আদায় হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ফলে সোমবার থেকে কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম না কমলে চলবে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট
তাদের দাবিগুলো হলো- সিলেট জেলা অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক জোটের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা, ‘প্রহসনের নির্বাচন’ ও ‘বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায়’ ঘোষিত কমিটি বাতিল করা ও মনোনয়ন ফি বাবত আদায়কৃত সকল টাকা ফেরত দেয়া, সিলেটের আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপপরিচালককে প্রত্যাহার, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ওপর দায়েরকৃত মামলাসমূহ প্রত্যাহার, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, মেয়াদ উত্তীর্ণ শেরপুর, শেওলা, লামাকাজী, শাহপরাণ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ এবং চৌহাট্টাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে কার, মাইক্রোবাস, লেগুনা, সিএনজি অটোরিকশসহ সকল প্রকার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা করা।
সড়ক খুঁড়ে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ, পথচারীদের দুর্ভোগ
সড়ক খুঁড়ে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের কাজ চলায় খুলনা মহানগরীর খালিশপুর নতুন বিআইডিসি সড়কের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই খানা খন্দে কারণে বর্ষায় মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে এবং কাদা মাটির কারণে পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। আর এই কারণে প্রায় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাময়িকভাবে সড়কটির বিভিন্ন বড় বড় গর্তগুলো ইটের টুকরো দিয়ে সংস্কার করলেও ভারি যানবহন চলাচলের সময়ে আবারও গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে সড়কে চলাচলে প্রায় সময়ে ইজিবাইক, অটোরিকশসহ ছোট ছোট যানবহন উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে।
আরও পড়ুন: সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন: কাঁটাতারে বাঁধা শিক্ষক-শিক্ষার্থী!
স্থানীয় বাসিন্দা ইমন মোল্লা জানান, খুলনার মধ্যে ব্যস্ততম একটি সড়ক হচ্ছে এই নতুন রাস্তা থেকে বিআইডিসি সড়ক। তবে বর্তমান সময়ে সড়কটির মধ্য খানে কাটা থাকায় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এই বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে সড়ক জুড়ে পিচলা কাদামক্ত হয়ে আছে। সড়কটি আগে ভালোই ছিল। তবে সড়কটি খুড়ে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ স্থাপন করার জন্য পুরো সড়ক গর্তে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আকমল আহসান বলেন, ‘এই বিআইডিসি সড়কটি একটি গুরুত্বপুর্ণ সড়ক। বাজার, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পাটকলসহ এখানে তিনটি তেলের ডিপো রয়েছে। যার কারণে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক ট্যাংক লড়ি ও বিভিন্ন যানবহন চলাচল করে। খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবারাহের জন্য জ্বালানি তেলবহনকারী যান এই রুট ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া বেশ কয়েকটি স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ পাটকল শ্রমিকরা এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে। যে কারণে সড়কটি সব সময়ে ব্যস্ত থাকে অথচ বর্তমানে সড়কটি অবস্থা খুবই বেহাল দশা।
আরও পড়ুন: মামলা জটিলতায় স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই কাদা-পানিসহ নানা ধরনের সমস্যা হয়। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে সড়কটিতে ধুলো বালি উড়তে থাকে। আমরা এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করারা জন্য মেয়রের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ (পিন্টু) বলেন, বিআইডিসি সড়কটির অবস্থা খুবই বেহাল। তবে বর্তমান বর্ষা মৌসুমে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বর্ষার পানিতে যা করব, সেসব নষ্ট হয়ে যাবে। তবে একটু বর্ষা কমলে সাময়িকভাবে সংস্কার করা হবে। সড়কটি নতুনভাবে স্থায়ী সংস্কারের জন্য মেয়র খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।
আরও পড়ুন: ৫০০ পরিবারের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো!
এ ব্যাপারে কেসিসির প্যানেল মেয়র-১ আমিনুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘সড়কটি বেহাল ছিল তবে কিছুদিন আগে ইট দিয়ে রোলিং করেছি তারপরও আমি বিষয়টি দেখছি। দ্রুত সংস্কার করার জন্য বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সাথে কথা বলে সাময়িকভাবে চলাচলের জন্য একটি ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তীতে নতুন দরপত্র করে একটি মডেল সড়ক তৈরি করা হবে।’
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী
চট্টগ্রামে রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সকাল থেকে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ এবং প্রয়োজনে ঘরের বের হওয়া নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
বুধবার (২৫ আগস্ট) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালিশহর, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ সিডিএ, বহদ্দারহাট, ষোলশহর, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার ও এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। অফিসগামীরা পায়ে হেঁটে ও রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে কয়েক স্থানে পাহাড় ধস
আবহাওয়া অফিস বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত। যা আরও দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
সকালে ষোলশহর এলাকায় অফিসগামী ইদ্রিস আলী বলেন, চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে যায়। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক ঘণ্টা পানিতে দাড়িয়ে আছি কোন গাড়ি পাচ্ছি না। জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনার কারণে চট্টগ্রাম নগরবাসীর এ দু:খ যাচ্ছে না।
এদিকে জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কর্মজীবী নারীরা। সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় হাঁটুপানি মাড়িয়ে যেতে হয় কর্মস্থলে।
জলাবদ্ধতার কারণে ঘর থেকে বের হওয়া নগরবাসীর চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি ঢুকে সিএনজি নষ্ট হয়ে যেতে দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায়। অফিসমুখী মানুষকে হাঁটু পর্যন্ত পানি দিয়ে হেটে বা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে দুই নম্বর গেইট এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা চায় চাষিরা
দুর্ভোগের কথা জানিয়ে নাছিমা আখতার নামে এক গার্মেন্ট কর্মী বলেন, কারখানায় যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে আটকে গেছি। যে পরিমাণ পানি, কোনোভাবেই চলাফেরা করা যাচ্ছে না। রিকশা ভাড়াও বেশি নিয়েছে। সড়কে সকালে ছিল না পর্যাপ্ত বাসও।
এই বৃষ্টি আরও দুদিন থাকতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, আজ বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি হচ্ছে।