যশোর
শীতের প্রথম বাজার ধরতে ব্যস্ত যশোরের সবজি চাষিরা
যশোরে আগাম শীতের সবজি দ্রুত বাজারে তুলতে, খাবারে বেশি স্বাদ যোগতা এবং বেশি টাকা আয় করার জন্য চাষিরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
জেলার সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, সাতমাইল, চুড়ামনকাটি, বারিনগর, হৈবতপুর, কাশিমপুর, বন্দবিলা, লেবুতলা, নোঙরপুর, ইছালি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জেলার সবজি চাষের কেন্দ্রস্থল। সেখানে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুটি, মুলা, বোতল করলা এবং বিভিন্ন ধরনের পালং শাকের মতো শীতকালীন সবিতে মাঠ সবুজ হয়ে উঠছে।
সরকারি সূত্র জানায়, দেশের চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ সবজিই যশোর থেকে সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সবজি দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাড়ছে খুলনার চুইঝালের কদর, যাচ্ছে থাইল্যান্ডে
যদিও এ বছর দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর তীব্র গরমের জন্য অনেক কৃষক সময়মতো শীতকালীন সবজির চাষ শুরু করতে পারিনি, এ কারণে একটু দেরি হয়েছে। এর মধ্যেও কিছু কৃষক স্থানীয় বাজারে উৎসাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করে ভালো দাম পাচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝিমাঝি সময়ে রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। এ সময় শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু হয় চলবে মার্চ মাসের মাঝিমাঝি পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে জেলায় ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, মূলা, লালশাক- পালংশাক, সবুজ শাকসহ নানা ধরনের সবজি চাষ হয়েছে।
যশোরে ছুরিকাঘাতে তাঁতী লীগের সাবেক নেতা খুন
যশোর শহরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সাবেক তাঁতী লীগের নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার রাত পৌনে ১১ টার দিকে শহরের মোল্লাপাড়া কবর স্থানের পাশে নারাণ ঘোষের চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান কাঁকন (৩৬) ওই এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে ও সাবেক তাঁতী লীগের নেতা।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তন্ময় বিশ্বাস জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী সহিংসতায় মেহেরপুরে সহোদর ‘খুন’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে পুলিশ তা উদঘাটনে চেষ্টা করছে। নিহত কাঁকনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলাসহ থানায় চারটি মামলা রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
এঘটনায় থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি বলেও জানান ওসি তাজুল ইসলাম।
যশোর অঞ্চলে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর প্রত্যাশা
প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হওয়ায় এবার যশোর অঞ্চলে রোপা আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শতকরা ২৩ ভাগ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মাঠের সব ধান চাষিদের ঘরে চলে আসবে। অকাল বর্ষণে আবাদী ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও এবছর ফলন ভালো হওয়ায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের যোগীপোল গ্রামের প্রবীণ কৃষক শচীন্দ্র নাথ দাস বলেন, দেড় বিঘা জমিতে চিকন জাতের হাইব্রিড ধান আবাদ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ধান কাটার কাজ চলছে। এখন বাড়িতে আনার অপেক্ষা। কাঠায় দেড় মণ করে ধান পাবেন বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের আবু তালেব জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবছরও ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তিনি দুই বিঘা জমিতে উপসী ও গুটি স্বর্ণা জাতের ধান চাষ করেছেন। ধান কাটা শুরু করেছেন। এখনও কাটা শেষ হয়নি। তবে এ সপ্তাহেই সব ধান ঘরে চলে আসবে।
পড়ুন: খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সড়কে মরণ ফাঁদ ‘বেইলি সেতু’
মণিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের নাদড়া গ্রামের কৃষিজীবী নেকবার মোড়ল জানান, এ বছর অকাল বর্ষণে উচু এলাকায় ফসল ভালো হলেও নিচু এলাকায় পানি সরে না যাওয়ায় ফসল তেমন ভালো হয়নি। তার চার বিঘা জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তবে তার এলাকার অনেকেরই ধান কাটা হয়নি।
যশোর সদর উপজেলার বড় হৈবৎপুর গ্রামের কৃষিজীবী প্রবীর তরফদার জানান, তিনি উপসী জাতের ধান চাষ করেছেন। কাঠা প্রতি প্রায় মন মণ ধাণ উৎপাদন হয়েছে। ধানের দামও ভালো।
যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর এই ছয় জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে চার লাখ ৫৫ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেলায় হাইব্রিড ধান ৯ হাজার ১১৭ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ২৮ হাজার ৪৪৩ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের এক হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় হাইব্রিড ধান সাত হাজার ৬৫৭ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল ৯৬ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মাগুরা জেলায় হাইব্রিড ধান ১০ হাজার ৩০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ৫০ হাজার ৫৩৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৯০২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
এছাড়া কুষ্টিয়া জেলায় হাইব্রিড ধান ১০ হাজার ৪৭৪ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ৭৭ হাজার ৩৩৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের এক হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় হাইব্রিড ধান দুই হাজার ৬৩৯ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল ৩২ হাজার ২৭৮ হেক্টর জমিতে এবং মেহেরপুর জেলায় উচ্চ ফলনশীল ২৬ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
পড়ুন: হাওরে পানি কমার সাথে সাথে বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত কৃষকরা
কয়লার দাম বৃদ্ধি: খুলনায় ১৫ দিনে ২ শতাধিক ইটভাটা বন্ধ
তিনি জানান, ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আবাদ হওয়া মোট জমির ২৩ শতাংশ ফসল কাটা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফসল কাটার কাজ সম্পন্ন হবে।
অকাল বর্ষণে আবাদী ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও এবছরে চালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ১৭৫ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে উদ্বৃত্ত হবে বলে এই কৃষি কর্মকর্তা জানান।
যশোরে আইস ও ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার ১
যশোরে এক নারী মাদকব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে জেলা শহরের সিটি কলেজ পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৯০ পিস ইয়াবা ও দুই গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ বা আইস জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তার রিনা খাতুন (৪০) কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বেগুন বাড়িয়া সাদিপুর গ্রামের মামুন মন্ডলের স্ত্রী।
যশোর জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিনুর রহমান জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে শহরের সিটি কলেজ পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই গ্রাম ক্রিসটাল মেথ বা আইস ও ৫৯০ পিস ইয়াবাসহ রিনা খাতুনকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা মাদক দ্রব্যের মূল্য দুই লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
উদ্ধার করা মাদকসহ আটক রিনা খাতুনকে মাদক আইনে মামলা দিয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘আইস’ জব্দ, রোহিঙ্গাসহ আটক ২
ফেনীতে ‘আইস’ জব্দ, গ্রেপ্তার ১
ঢাকা বিমানবন্দরে ৮ হাজার ইয়াবা জব্দ, আটক ১
যশোরে জোড়া মাথার নবজাতকের জন্মের কয়েক ঘণ্টার পর মৃত্যু
যশোরে শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে জোড়া মাথার এক ছেলে শিশুর জন্মের খবর পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের আমিন-মুসলিমা আক্তার দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া ওই শিশুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দু’টি মাথা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জন্ম
শিশুটির নানি সাবিনা বেগম বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকে শিশুটির মা মুসলিমাকে একবার আল্ট্রাসনো করিয়ে ছিলাম। তখন ডাক্তার বলেছিলেন মা ও বাচ্চা ভালো আছে। পরে ৯ মাস পার হওয়ায় আবার আল্ট্রাসনো করি। তখন ডাক্তার বলেন জমজ বাচ্চা হবে। এরপর আমরা অন্তঃসত্ত্বা মুসলিমাকে কালিগঞ্জে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে আমাদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর যশোরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকি ভর্তি করি। সেখানে বৃহস্পতিবার বিকালে সিজারের পর দেখি জোড়া মাথাসহ বাচ্চা।
আরও পড়ুন: দুই মাথাওয়ালা শিশু জন্মের তিন ঘণ্টা পর মৃত্যু
যশোর জেনারেল হাসপাতলের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসক ফয়সাল আহম্মেদ জানান, শিশুটিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় আমরা শিশুটিকে ঢাকায় রেফার করি । কিন্তু ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার আগেই রাত ৯টার দিকে শিশুটির মুত্যু হয়।
যশোরে ৬ যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার, ঢাকায় স্থানান্তর
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বহুল আলোচিত অভিযুক্ত ছয় যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পরেই অভিযুক্তদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সোপর্দের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, বাঘারপাড়ার মৃত শুকুর বিশ্বাসের ছেলে আবুল হোসেন বিশ্বাস, সাদে আলীর ছেলে হোসেন আলী, ইন্দা গ্রামের সলীম মোল্লার ছেলে আবু বক্কর, আগড়া গ্রামের মৃত সায়েম উল্লার ছেলে লুৎফর রহমান, মৃত আরশাদ আলী মোল্লার ছেলে খয়বার রহমান ও মৃত করিম মোল্লার ছেলে নূর ইসলাম। তাদের মামলা চলমান ও বিচারাধীন আছে।
আরও পড়ুন: কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যু
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দিন ও যশোর জেলা ডিবি পুলিশের ওসি রুপম কুমার সরকার এ ব্যাপারে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৭ সালে এই ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার পর ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ২৩ অক্টোবর যশোর জেলা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ এসে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে যুদ্ধাপরাধী মাহবুবুর রহমানের মৃত্যু
জেলা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বাঘারপাড়া থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়। গত ২৪ অক্টোবর (রবিবার) সকালে ডিবির ওসি রুপম সরকার ও বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযুক্ত ছয় যুদ্ধাপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধী কায়সারের আপিলের রায় ১৪ জানুয়ারি
যশোরে বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৯
যশোরে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বয়সী মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে (শিশু) জেলার নতুন উপশহর এলাকার মেহেদী হাসান তাঁর তিন বছর বয়সী শিশু পুত্র মামুনকে নিয়ে আসেন। তিনি জানান, এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত তার ছেলে।
সদর উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের জুয়েল রানা পাঁচ দিনের নবজাতক ইয়াসিনকে নিয়ে আসেন বহির্বিভাগে। তিনি জানান, তার কন্যার ঠাণ্ডা লাগার কারণে চিকিৎসকের কাছে এসেছেন।
অপরদিকে ধর্মতলা এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন আব্দুল গফুর (৩৫)। তিনি গত তিন সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। তাই চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ৫২টি জটিল রোগে আর্থিক সুরক্ষা দিতে মেটলাইফ বাংলাদেশের নতুন স্বাস্থ্য বীমা
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের রোগী বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বেড না পেয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শিশু আন্তবিভাগ থেকে চার হাজার ৫২৩ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া শুধু বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) হাসপাতালে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে ৭২৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫০৩ জন শিশু ও ২২৬ জন বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষ রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগের রেজিস্টার খাতা অনুযায়ী, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১২৩ জন শিশু ভর্তি এবং মেডিসিন বিভাগে ও সিসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ৩৬ জন নারী ও পুরুষ।
যশোর মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, এখন শিশুরা ভাইরাল ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। এখন যে আবহাওয়া তা শিশুদের জন্য উপযোগী নয়।
এ পরিস্থিতিতে শিশুদের সুস্থ রাখতে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঠাণ্ডা বা গরম পরিবেশে শিশু ও বয়স্কদের রাখা যাবে না। ঘাম শরীরে শুকানো যাবে না। শিশুদের বুকে ঘাম জমলে দ্রুত তা মুছে ফেলতে হবে। সময়োপযোগী জামা-কাপড় ব্যবহার করতে হবে।’
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে শিশু রোগী বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে বয়স্ক ও শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে (হাসপাতালে) শতাধিক রোগী ভর্তি থাকছেন।’
আরও পড়ুন: যশোর থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরু
যশোরে ট্রেনের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
হত্যা মামলা: যশোরে ছয়জনের যাবজ্জীবন
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আস্তায়খোলা গ্রামের মো. শরীফুল ইসলাম হত্যা মামালায় ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এদের মধ্যে এক আসামিকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বাকিদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় সার্ভেয়ার হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
বৃহস্পতিবার বিভাগীয় (জেলা ও দায়রা) জজ আদালতের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জিয়াউর রহমান জিয়া (পলাতক), আব্দুল্লাহ (পলাতক), ইকবাল (পলাতক), আলম, কামাল ও নাঈম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এনামুল ও শরীফুল বাড়ির কাজ দেখাশুনা করার জন্য ধলগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তাদের কাছে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিল। পথে তকব্বর নামে এক আসামি তাদের গতিরোধ করে। পাশে অবস্থানরত অন্য সন্ত্রাসীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ওই আসামির বাড়ি নিয়ে যায় দেশীয় অস্ত্র ও রড়সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে এনজিওকর্মী ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
আস্তায়খোলা গ্রামের নাইম লোহার রড দিয়ে শরীফুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশে মাথার পিছনে পরপর কয়েকটি আঘাত করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও আক্রমণ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর আসামিরা এনামুল ও শরীফুলের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে গুরুতর আহত দুজনকে নিয়ে যশোরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীফুলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে ঘটনার দিন নিহতের চাচাতো ভাই মো. শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ‘মাদক’ মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনের যাবজ্জীবন
শার্শায় বিদেশি পিস্তল, গুলি, ম্যাগজিন ও ফেনসিডিল জব্দ
যশোরের শার্শায় গোগা সীমান্ত এলাকা থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলি, ম্যাগজিন ও ফেনসিডিল জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। সোমবার দুপুরে গোগা সীমান্তের একটি মাঠ থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের গোগা ক্যাম্পের সুবেদার সালে আহম্মেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোগা বিজিবির সদস্যরা সীমান্তের কালিয়ানি গ্রামের মাঠে অভিযান চালায়। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে একটি ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায় চোরাচালানীরা। পরে ব্যাগ খুলে তার মধ্যে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগজিন ও ২০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করে। জব্দ করা অস্ত্র ও মাদক শার্শা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে থানায়।
আরও পড়ুন: আ’লীগ নেতার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ১৬ সদস্য গ্রেপ্তার
ট্রাকচাপায় যশোরে মামা ভাগ্নে নিহত
যশোরে মালবাহী ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী মামা ও ভাগ্নে নিহত হয়েছেন। এ সময় অপর এক ভাগ্নে আহত হয়।শহরের পালবাড়ী-চাঁচড়া সড়কের গাজীর বাজার এলাকায় শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, শহরের খড়কি দক্ষিণ পাড়ার নূর ইসলামের ছেলে ও উপশহর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি মানবিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রোহান হোসেন (১৯) এবং চাঁচড়া মাধ্যপাড়ার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে ও চাঁচড়া-ভাতুরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী প্লাবন (১৫)। সম্পর্কে তারা মামা ভাগ্নে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ৪
এ ঘটনায় আহত অপর ভাগ্নে হাটগোপালপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ও ঝিনাইদহ উপজেলার মাওলানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র তানজিল হাসমত রাসিক (১৪)।
নিহতের ভাই জসিম উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে দুই ভাগ্নে প্লাবন ও রাসিক দাওয়াত খেয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে ছোট মামা রোহানকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে চাঁচড়ায় প্লাবনের বাড়ি ঘুরতে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্লাবন মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল। পথে চাঁচড়া গাজীরবাজার নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ১০ চাকার একটি মালবোঝাই ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে তারা তিনজন গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বাসের ধাক্কায় সেনা সদস্য নিহত
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রোহানের অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে সন্ধ্যায় সে মারা যায়।
যশোর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং ট্রাক চালক ও সহকারীকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।