যশোর
বিগ বসের দাম ২৫ লাখ!
‘বিগ বস’ ষাড়ের দাম ২৫ লাখ টাকা। কথাটি শুনে অনেকেই অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ারই কথা। যশোরের মনিরামপুরে এবার কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ইসহাক আলী তার আদরের ষাড় বিগ বসের এই দাম হেঁকেছেন।
জেলার মনিরামপুর উপজেলার দেলুয়াবাটি গ্রামের ইসহাক নিজ সন্তানের মতো পরম আদর-যত্নে বড় করে তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাড়কে। বিশাল আকৃতি নিয়ে জন্মানোয় আদর করে এর নাম দিয়েছেন বিগ বস।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ৫২ ডিম দিয়েছে কুমির জুলিয়েট
জানা যায়, বিগ বসের উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি এবং লম্বা সাড়ে ৮ ফুট। এটির ওজন ৩১ মণ বা ১ হাজার ২৪০ কেজি হবে বলে ইসহাক দাবি করেন।
প্রতিদিন বিগ বসের খাদ্য তালিকায় ৪ কেজি ভুসি, ৪ কেজি খুদে ভাত, প্রায় ১ মণ সবুজ ঘাস এবং ১২ মুঠো বিচালি(খড়) থাকে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণী রক্ষায় লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর ৩ মিলিয়ন ডলার
ইসহাক বলেন, তীব্র গরমের সময় রাতে উঠে বিগ বসকে কখনো ২ বার এবং দিনে আরও ২ বার করে গোসল করানো হয়। গোয়াল ঘর থেকে একজন ষাড়টিকে বের করতে পারে না বলে প্রায়ই সময় সেখানেই ওর নাওয়া-খাওয়াসহ গোসল সবই হয়। কয়েক বছরের মধ্যে গতকাল শনিবারই গোয়াল ঘর থেকে বিগ বসকে বাইরে আনা হয়।
খবর পেয়ে ইসহাকের প্রতিবেশীরা বিগ বসকে দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমায়।
এ সময় উপস্থিত প্রতিবেশীরা অনেকেই বলেন অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের বিগ বস নামের এই ষাড়টি হাতির চেয়েও বড়।
আরও পড়ুন: ইনকিউবেটরে জন্ম নিল ২৮ অজগরের বাচ্চা
ইসহাকের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, বছর পাঁচেক আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী কেনা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গাভীটি একটি এঁড়ে বাছুর প্রসব করে। বাছুরটির আকৃতি বড় হওয়ায় ওই সময় এর নাম রাখা হয় বিগ বস। শুরু থেকেই স্বামী ইসহাকের সাথে তিনিও বিগ বসের লালন-পালনে সহযোগিতা করেন। আসন্ন কোরবানি ঈদে এটি বিক্রি করার ইচ্ছা পোষণ করছেন তারা।
তিনি ইউএনবিকে আরও বলেন, ষাড়টির দাম চাচ্ছি ২৫ লাখ টাকা। তবে ক্রেতা দামাদামি করে নিতে পরবেন। গাভির ডাকা (বাচ্চা নেয়া) থেকে এ পর্যন্ত ওষুধ, চিকিৎসা সব কিছু দেখভাল করেন স্থানীয় পল্লী পশু চিকিৎসক ডা. আল-মাহমুদ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কেউ এখন পর্যন্ত ষাড়টির ব্যাপারে কোন খোঁজ নেয়নি বলেও জানান এই দম্পতি।
পল্লী চিকিৎসক ডা. আল মাহমুদ বলেন, জন্মানোর পর থেকে এটি বড় আকৃতির হওয়ায় তাদেরকে ষাড়টি লালন-পলন করার জন্য উৎসাহসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
খুলনা বিভাগে করোনায় আরও ২৮ মৃত্যু, শনাক্ত ১২০২
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাস গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২০২ জন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে খুলনায় পাঁচজন, বাগেরহাটে পাঁচজন, যশোরে চারজন, নড়াইলে চারজন, কুষ্টিয়ায় চারজন, ঝিনাইদহে দুজন, চুয়াডাঙ্গায় দুজন এবং মেহেরপুরে দুজন মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৫২ হাজার ১৬৭ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮১ জনে। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬১৫ জন।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফরম পূরণ স্থগিত
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলার পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা জেলা ও মহানগরীতে ৬৫৪টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ২৯৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। যা মোট নমুনা পরীক্ষার ৪৫ শতাংশ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৩২ জনের। মারা গেছেন ২৪০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫২৮ জন।
এদিকে, খুলনার তিনটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জন, খুলনা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দুজন এবং বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে চিকিৎসাধীন ছিলেন তারা।
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা করোনা হাসপাতালে রেড জোনে নয়জন ও ইয়ালো জোনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন, আবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৯ জন। আর আইসিইউতে রয়েছেন ১৯ জন। খুলনার ১৩০ শয্যার করোনা হাসপাতালে ১৬০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘কঠোর লকডাউন’ পালনে সেনাবাহিনী থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
খুলনা ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালটিতে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ জন। ভর্তি ছিলেন ৬৮ জন, এর মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ৩৫ জন নারী।
গাজী মেডিকেলের স্বত্বাধিকারী গাজী মিজানুর রহমান জানান, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ৮৮জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তার মধ্যে ৬ জন আইসিইউ এবং ৫ জন এইচডিইউতে। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন, নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন।
যশোরে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নিহত ৪
যশোর বেনাপোল মহাসড়কে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।
রবিবার (২৭ জুন) দুপুর সোয়া ১২ দিকে যশোর সদর উপজেলার যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ধোপাখোলা নিমতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের বায়জিদ থানা এলাকার ইকবাল চৌধুরীর ছেলে সাদমান(২৭), ইসমাইলের ছেলে নাইম (৩৫), বাদশার ছেলে সৈয়দ (৪৫) ও একই এলাকার জহির আহম্মেদের ছেলে শাহাবুদ্দিন।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামের রাজাখান চাইবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে আলী নেওয়াজকে (৪০) গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আরও পড়ুন: অভয়নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই আনসার সদস্য নিহত
স্থানীয়রা ও হাইওয়ে পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামে থেকে গরু কেনার উদ্দেশে একটি প্রাইভেটকারে করে পাঁচ জন বেনাপোলে দিকে যাচ্ছিল। দুপুর সোয়া ১২ দিকে যশোর সদর উপজেলার যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ধোপাখোলা নিমতলা পৌঁছালে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা যশোরমুখী একটি ট্রাকের সাথে প্রাইভেটকারটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা চালকসহ চারজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ও অপর একজন গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন: বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
নাভারণ হাইওয়ে থানার এসআই মো. ওয়াহিদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে নাভারণ হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘাতক ট্রাকসহ চালক পালিয়ে যাওয়ায় ট্রাকটি জব্দ করতে পারেনি পুলিশ।
যশোরে ৫৯টি বিষধর গোখরা সাপের ডিম উদ্ধার
যশোরে বিষধর গোখরা (কিং কোবরা) সাপের ৫৯টি ডিম উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে যশোর সদর উপজেলার গাওঘরা গ্রাম থেকে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান ঢাকা থেকে এসে ডিমগুলো সংগ্রহ করেন।
স্থানীয়রা জানান, গাওঘরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম রবিবার তার মাঠের জমিতে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। এসময় কোদালের আঘাতে মারা যায় একটি বিষধর সাপ। পরে সাপটি যেখানে মারা যায় তার পাশে থাকা একটি গাছের শিকড়ের নিচ থেকে ৪৪টি বড় ও ১৫টি ছোট মোট ৫৯টি ডিম উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন : ভালো নেই খুলনার সাপুড়ে সম্প্রদায়
স্থানীয়রা আরও জানান, ওই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইচ্ছেঘুরি ফাইন্ডেশনের কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা ডিমগুলো সংরক্ষণ করে খবর দেন ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহিরউদ্দিন আকন্দকে। তিনি সোমবার ঢাকা থেকে হাফিজুর রহমানকে পাঠান। হাফিজুর রহমান সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে ওই গ্রামে গিয়ে ডিমগুলোকে সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পাওয়া গেল বিরল প্রজাতির রেড কোরাল কুকরি সাপ
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উদ্ধারকৃত ডিমগুলো গোখরা (কিং কোবরা) সাপের ডিম। ডিমগুলো ইনকিউবেটরে রেখে এর থেকে বাচ্চা ফুটানো হবে।
ডিমগুলো থেকে বাচ্চা বের হলে সেগুলোকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ৭৫ কোটি টাকার সাপের বিষসহ আটক ৬
ডিমগুলো উদ্ধারের সময় সামাজিক বন বিভাগ যশোর সদরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল খালেক, যশোর অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম, গ্রীন ওয়ার্ল্ড এনভাইরনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহমুদ সবুজ ও সদস্য নাজমুল হোসেন মিলন উপস্থিত ছিলেন।
আমের ভরা মৌসুমে উচ্চ দামে পকেট গরম করছেন ব্যবসায়ীরা
যশোর, ৩১ মে (ইউএনবি)- বাংলায় চলছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। আর এই সময়টাতে বাজারে রসালো আমের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা।
যশোরের শার্শা উপজেলার বাগুরী বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রেতা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখানে এসে ভিড় জমিয়েছেন। উপস্থিত ক্রেতাদের আম সংগ্রহের ব্যাপারটা সত্যিই দেখার মতোন দৃশ্য। যেন একটা উৎসব।
বিক্রেতারা পর্যাপ্ত মজুদ নিয়েই বসেছেন এবার এবং বেশ ভালো দামও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর আমের দাম বেশি।
আরও পড়ুন: ইউরোপ যাচ্ছে সাতক্ষীরার আম
এলাকার বাগুরী বাজারসহ প্রায় প্রত্যেক বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে হিমসাগর, ল্যাংড়া ও লাক্ষা আম। এসব আম মণ প্রতি (৪০ কেজি) ৮০০ থেকে ২৪০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
গত বছর এই এলাকাতেই প্রতি মণ আম সর্বোচ্চ ২০০০ থেকে ২২০০ টাকাতে বিক্রি হয়েছে।
স্থানীয় আম বিক্রেতাদের সাথে ইউএনবি প্রতিনিধি কথা বললে তারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর আমের উৎপাদন কম হলেও চাহিদা বেশি থাকায় ভাল দাম পাচ্ছেন তারা। এলাকাটিতে ইতিমধ্যেই গোবিন্দ, বোম্বাই, গোপালভোগ আমের বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। এখন বাজারগুলোতে শুধু হিমসাগর আর ল্যাংড়া আমই পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ব্যবসায়ীরা জানান, আর কয়েকদিন পরেই বাজারে আম্রপালি আম পাওয়া যাবে।
এই অঞ্চলের আমের স্বাদ ও সুখ্যাতির জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকেই পর্যটকরা এখানে আমের স্বাদ নিতে আসে বলে জানান এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: রাসায়নিক দিয়ে পাঁকানো হচ্ছে আম, আতঙ্কে ক্রেতারা
এলাকার এক আম চাষী রফিকুল বলেন, ‘ভরা মৌসুমে পুরো দমে আমের বিক্রি চলছে। গতবছর আমি প্রতি মণ আম ১২০০ টাকায় বিক্রি করলেও, এবছর ২০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি।’
অপর এক আম চাষী কোরবান আলী জানান, এবছর আমের বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। বাজার এরকম থাকলে বড় ধরনের মুনাফা করতে পারবেন তারা।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৌতম কুমার শীল জানান, গতবছর আম্পানের প্রভাবে এই অঞ্চলের আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা বেশ ক্ষতির শিকার হয়েছিল। কিন্তু এই ফলন ও চাহিদা ভালো থাকায় বাজারেও ভাল দাম পাচ্ছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
তিনি জানান, এবছর শুধু শার্শা উপজেলাতেই ৬৮০ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে।
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে মাহফুজুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, ১৪ জন আটক
যশোর শহরের রেলরোডে ফুড গোডাউনের বিপরীতে অবস্থিত বেসরকারি যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় ও পূর্নবাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন মাহফুজুর রহমান অসুস্থ হয়ে মারা যায়নি। তাকে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকসহ ১৪ জন মিলে পরিকল্পিত ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
রবিবার দুপুরে নিহত মাহাফুজুর রহমানের পিতা কোতয়ায়ী থানায় মামলা করেন।
মামলায় ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মাসুদ করিম, ও আশরাফুল কবিরসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: সাভারে পোশাক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাড়ির আইসি রকিবুজ্জামান জানান, ঘটনা জানতে পেরে যশোর কোতয়ালী থানার পুলিশ শনিবার রাত থেকে বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে অভিযান চালায়। রবিবার ভোর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয় কেন্দ্রের পরিচালকসহ ১৪ জনকে।
মামলার আসামিরা হলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে মাসুদ করিম, বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আশরাফুল কবির, চৌগাছা উপজেলার বিশ্বাসপাড়া গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে রিয়াদ, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাদপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সাবদার রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান, একই গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে আরিফুজ্জামান, শহরের কাজীপাড়া মসজিদের পাশের বাসিন্দা কামরুজ্জামানের ছেলে ওয়াহিদুজ্জামান, মনিহার নীলগঞ্জ সাহাপাড়ার আব্দুর রশিদ মিয়াজীর ছেলে রেজাউল করিম রানা, আরবপুর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে অহিদুল ইসলাম, হুসতলা বকচর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল শাহরিয়ার রোকন, বেনাপোল পোর্ট থানার শাখারীপোতা গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন, অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামের আসর আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার এস এম জি মুক্তাদিরের ছেলে এস এস সাগর আজিজ, শেখহাটি হাইকোর্ট মোড় এলাকার মৃত ফজর আলীর ছেলে নুর ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার বামখালী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ওয়াহিদুজ্জামান ওরফে সাগর।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নিহতের বাবা মনিরুজ্জামান মামলায় উল্লেখ করেন, তার ছেলে মাহাফুজুর রহমান (১৯) মাদকাসক্ত হওয়ায় ২৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করেন। তারপর থেকে মাহাফুজুর সেখানেই ছিলেন। ২২ মে দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক মাসুদ করিম তাকে মোবাইলে জানায় যে মাহফুজ অসুস্থ, তিনি যেন দ্রুত যশোর আসেন। এ খবর শুনে মনিরুজ্জামানসহ তার এলাকার সাইদুর রহমান ও আক্তার হোসেন যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিছু সময় পর পথিমধ্যে পরিচালক তাকে আবারও মোবাইল করে জানায়, তিনি যেন শক্ত হন তার ছেলে মারা গেছে। লাশ যশোর সদর হাসপাতালে রয়েছে। বাদী মনিরুজ্জামান বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে ছেলে মাহফুজুর রহমানের লাশ দেখতে পান।
মামলায় আরও উল্লেখ করেন, ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে বাদীর সন্দেহ হওয়ায় ছেলের শরীর ভাল ভাবে পরীক্ষা করেন বাদী। মাহফুজুরের শরীরের ডান হাতের কবজির উপর কামড়ানোর দাগ, পিঠের ডান ও বাম পাশে কালচে থেথলানো দাগ, বাম কাঁধের উপরে থেতলোনো দাগসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও অন্ডকোষ ফোলা দেখতে পান। পরে বাদী মনিরুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে নিরাময় কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখেন। ভিডিও ফুটেজ দেখে তারা জানতে পারেন যে মাহফুজুরকে হত্যা করা হয়েছে।
বাদী মনিরুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন থাকা রোগীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, ২২ মে রাত সাড়ে ১২ টায় ঘুমাতে যায় মাহফুজুর রহমান। পরে ভোর ৫টা ২০ মিনিটে মাহফুজুর রহমান প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাহিরে যান। বাহিরে যাওয়ার পরে নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসাধীন কয়েকজন, পরিচালক মাসুদ করিম ও আশরাফুল কবিরের নির্দেশে মাহফুজুরকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে ও নাকে মুখে অতিমাত্রায় পানি ঢালে। আসামিদের নির্যাতনে মাহফুজুর অচেতন হয়ে পড়লে আসামিরা তাকে ভ্যানে করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বারান্দায় রেখে পালিয়ে যায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাহফুজুরকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে চিকিৎসার জন্য ভিতরে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. তন্ময় বিশ্বাস দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি হিসেবে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার ভোর ৫টা ২০ মিনিট থেকে একই দিন দুপুর ১টা ৫০ মিনিটি পর্যন্ত যেকোনো সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করে মাহফুজকে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
শার্শায় ভাতিজার হাতে চাচা খুন
যশোরের শার্শায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাতিজার হাতে চাচা খুন হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শার্শার সীমান্তবর্তী অগ্রভুলোট গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত আব্দুল মজিদ সর্দার (৫০) শার্শার অগ্রভুলোট গ্রামের আব্দুল গফুর সর্দারের ছেলে।
হত্যাকারী দেলোয়ার হোসেন একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে। তারা সম্পর্কে চাচা ভাতিজা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তবিবুর রহমান জানান, ভিটেবাড়ির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল মজিদের সাথে ভাতিজা দেলোয়ার হোসেনের কথা কাটাকটি হয়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার তার হাতে থাকা ধারালো বল্লম ছুড়ে মারলে আব্দুল মজিদের পেটে ঢুকে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই দেলোয়ার পালিয়ে যায়।
পরে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ হত্যাকারী দেলোয়ার হোসেনকে পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম থেকে আটক করে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছুরিকাঘাতে চীনা নাগরিক খুনের ঘটনায় মামলা
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, ‘চাচা ভাতিজার ভিটের সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।'
এ ব্যাপারে শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
যশোরের চৌগাছায় অরক্ষিত ইন্ডিয়াপাড়া, ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়ানোর আশঙ্কা
যশোরের চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার দৌলতপুর গ্রামের মাঝেই রয়েছে ইন্ডিয়াপাড়া। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে তিন পাশে বাংলাদেশ আর এক পাশে ভারত সীমান্ত।
দৌলতপুর গ্রামের সাথে ইন্ডিয়াপাড়ার মানুষের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে এই এলাকা দিয়ে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, সামাজিক সম্পর্কের কারণে সীমারেখা চলাফেরা, লেনদেন ও সামাজিক বন্ধনে বাঁধ সাধতে পারছে না। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে অবাধ চলাফেরা। ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দারা বাগদা বাজারসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকাতে যাতায়াত করে। কিন্তু দেশে করোনার ভারতীয় নতুন ভেরিয়েন্ট দেখা দেয়ায় দৌলতপুর গ্রামবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। তাই এলাকবাসী ইন্ডিয়াপাড়ার চারপাশে বিজিবি টহল জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সীমান্তবর্তী সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম দৌলতপুর। গ্রামটি ভারত ঘেষা। দৌলতপুর গ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব পাশ দিয়ে ভারত থেকে একটি সড়ক প্রবেশ করেছে গ্রামটির মধ্যে। এ গ্রামের একটি অংশে ভারতীয় নাগরিকরা বসবাস করেন। যা ইন্ডিয়া পাড়া বলে পরিচিত। এখানে ৮০-৮৫টি পরিবার রয়েছে। জনসংখ্যা দেড় শতাধিক। ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দারা ভারতের নাগরিক হলেও অবাধে বাংলাদেশ অংশে যাতায়াত করেন।
আরও পড়ুন: দৌলতপুর সীমান্তে আটকের ৪ ঘণ্টা পর কৃষককে ফেরত দিল বিএসএফ
সরেজমিনে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর গ্রামে গিয়ে অবাধ যাতায়াতের প্রমাণও পাওয়া গেছে। সীমান্তবর্তী ৪৩নং পিলার সংলগ্নে বাংলাদেশ অংশের সড়কে বাইসাইকেল চালাতে দেখা যায় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দা ও ভারতের নাগরিক আবুল কাশেমকে। তিনি মুখে মাস্ক পরিধান না করেই ঘোরাফেরা করছেন।
এ সময় আবুল কাশেম বলেন, কয়েক যুগ ধরে ইন্ডিয়া পাড়াতে বসবাস করছি। কেনাকাটা করতে যাই নিজ দেশের (ভারত) বাগদা বাজারে। কিন্তু করোনার কারণে আমরা বাগদা বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।তবে জমি জায়গা সব ভারতের মধ্যে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক আত্মীয় স্বজন আছে। ছোট বেলা থেকেই এভাবেই চলাচল করছি।
আরও পড়ুন: রৌমারী সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
দৌলতপুর গ্রামবাসী তরিকুল ইসলাম ও শরিফা খাতুন জানান, তারা বাগদা বাজারসহ সীমান্ত ঘেষা গ্রামেগুলোতে করোনার বিস্তার লাভ করেছে বলে খবর পেয়েছেন। ফলে ইন্ডিয়াপাড়াতেও করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় আছেন। কারণ বাগদা বাজার এলাকার আশপাশের গ্রামে তাদের আত্মীয় স্বজন রয়েছে।
দৌলতপুর গ্রামের পাশের গ্রাম আন্দুলিয়ার বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, দৌলতপুর ও ইন্ডিয়াপাড়ার পাশে আমাদের জমি আছে। প্রতিদিনই আসতে হয় কাজে।
এ করোনাকালীন সময় ইন্ডিয়াপাড়ার পাশে বিজিবি টহল আরও জোরদার করার দাবি জানান আব্দুল করিম সহ আরও অনেকেই।
আরও পড়ুন: বিএসএফ’র গুলিতে আহত ভারতীয় কিশোরকে হস্তান্তর
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও দৌলতপুর গ্রামবাসী তোতা মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের মধ্যেই ভারতের একটি ছোট গ্রাম রয়েছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট নিয়ে আমরা চিন্তিত। ইন্ডিয়াপাড়া বসবাসকারীদের নিজ পাড়া হতে বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সাথে দৌলতপুর গ্রামবাসীকেও তাদেরকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
৪৯ বিজিবি আন্দুলিয়া ক্যাম্পের সুবেদার শাহীনুর রহমান বলেন, করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের বিষয়ে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। ইতিমধ্যে দৌলতপুর গ্রাম এলাকাতে আমরা টহল জোরদার করেছি।
ঝিকরগাছায় বোমা বিস্ফোরণে ইউপি সদস্য নিহত
যশোরের ঝিকরগাছায় বোমা তৈরির সময় তা বিস্ফোরিত হয়ে নাজমুল আলম লিটন নামে এক ইউপি সদস্য নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নাজমুল আলম লিটন (৪০) ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের পাঁচপোতা গ্রামের হাঁড়িয়া খালীর সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাবের ছেলে ও বর্তমানে পাঁচপোতা আট নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘বোমা’ মেরে ব্যাংক উড়িয়ে দেয়ার হুমকি, যুবক আটক
ঝিকরগাছা হাজারীবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, সোমবার দুপুরে উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামের মৃত রফিক মেম্বারের বাড়িতে লিটন সহ তার কয়েকজন সহযোগী বোমা তৈরী করছিল। এসময় একটি বোমা বিস্ফোরিত হলে সে গুরুতর আহত হয়। তার সাথে থাকা লোকজন তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গোপনে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথেই রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িয়ে পাওয়া বোমায় শিশু নিহত, মা বোন আহত
ঝিকরগাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) মেজবা উদ্দিন আহম্মদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোমবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামের মৃত রফিক মেম্বারের পরিত্যাক্ত বাড়িতে লিটন সহ তার কয়েকজন সহযোগী বোমা তৈরি করছিল। এসময় অসাবধনতা বসত একটি বোমা বিস্ফোরিত হলে লিটন গুরুতর আহত হয়। সাথে সাথে লিটনের সাথে থাকা তার সহযোগীরা তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গোপনে যশোর সিটি হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। সেখানে সন্ধ্যার পর তার অবস্থার অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নেওয়ার পথে মানিকগঞ্জ পৌছালে রাত আড়াইটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সেই তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: রাসায়নিক গুদাম: পুরান ঢাকার মানুষ বাস করছে বোমার ওপর
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিস্ফোরিত বোমার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত লিটনের লাশ থানায় ছিল।
উল্লেখ্য, নিহত লিটন মেম্বার পাঁচপোতা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ওমর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি ছিল।
করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: যশোরে ২ জনের শরীরে শনাক্ত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরণ) শনাক্ত করা হয়েছে।
১৬ জন ভারত ফেরত রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে তিনজন রোগীর করোনা পজিটিভ আসে। পজিটিভ তিনজনের মধ্যে দুজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। গত ৬ মে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে তাদের নমুনাসমূহ যবিপ্রবির ল্যাবে পাঠানো হয়।
যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে গতকাল শুক্রবার রাতে সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে একদল গবেষক সিকোয়েন্সির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেন।
গবেষণাটি সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন যবিপ্রবির উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। ইতোমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইইডিসিআর ও যশোরের স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত: আইইডিসিআর
যবিপ্রবির গবেষক দলটি জানান, ই১.৬১৭.২ নামের ভ্যারিয়েন্ট জিনোম সেন্টারে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ভ্যারিয়েন্টটি বর্তমানে ২০ শতাংশ মোট ভারতীয়দের মধ্যে বিদ্যামান। এ ছাড়া ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্টটি ৫৯ শতাংশ যুক্তরাজ্যের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে। ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্টটি ২০ শতাংশের বেশি সংক্রমনের সক্ষমতা রাখে। ভ্যাকসিন পরবর্তী ‘সেরাম এবং মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ এ ধরণকে কম শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করতে পারে।
গবেষক দলটি ভারত থেকে আগত সবাইকে পরপর দুবার করোনা নেগেটিভ না হওয়া পর্যন্ত আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসাথে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা যে সকল ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে, তাদের অতিদ্রুত পরীক্ষা করা আবশ্যিক বলে মনে করে গবেষক দলটি।
এ ছাড়া ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় সীমানা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, বাণিজ্যিক বা অন্য কোনো কারণে চালক ও সহকারীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও পরীক্ষা করার প্রয়োজন বলেও জানান গবেষক দলটি।
যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার ফলে জরুরি সহায়তা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
উল্লেখ্য গত ৪ পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে এক হাজার ৫৭৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছে। যাদের বেনাপোল, ঝিকরগাছা, যশোর শহর ছাড়াও পাশের চার জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝিনাইদাহ ও নড়াইল জেলার হোটেল সহ বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি স্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এদের মধ্যে গত ৬ মে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে ১৬ জন ভারত ভেরত যাত্রীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। এর মধ্যে ৩ জনের নমুনা পজেটিভ এসেছে। এ তিন জনের মধ্যে দুইজনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেল।