কৃষক
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সমবায় গঠনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি খাতে সমবায় পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমবায় পদ্ধতিতে এগোতে হবে। যদিও সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে, তবে এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যে স্থায়ী উপলব্ধি এখনো গড়ে উঠেনি।’
শুক্রবার বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় সমবায় গঠন করে জমি চাষাবাদে জনগণকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের নেতাদের আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে আমাদের আর খাদ্যের অভাব হবে না।’
সমবায় ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থাপনায় জমি চাষ করা হবে এবং সমবায়ের অধীনে কৃষিযন্ত্র ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
এই ব্যবস্থার আওতায় জমির মালিকরা লাভের একটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন, কৃষক বা শ্রমিকরা আরেকটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন এবং মার্জিনের অবশিষ্ট অংশ মেশিন, সার, বীজ, চাষাবাদ ও সেচসহ কৃষি উপকরণ ব্যবস্থাপনার জন্য সমবায়ের অধীনে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সমবায়ের প্রচার করতে 'আমার বাড়ি আমার খামার' এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে।
কৃষি খাতে তার সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন থেকে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়ে বর্তমানে ৪ কোটি ৯২ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ৭৯ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে, যা তখন মাত্র ২৮ লাখ হেক্টর জমি ছিল।
এ সময়ে মাছের উৎপাদন ২১ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫৩ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। আর গৃহপালিত পশুর সংখ্যা এখন ৭ কোটি ৯৯ লাখ, যা ২০০৬ সালে ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ।
কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এক সময় মানুষ তাদের পরিবারের জন্য শুধু চাল-নুন বা চাল-ডালের ব্যবস্থা করতে উদ্বিগ্ন থাকলেও এখন তারা মাছ, মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, মানুষ এখন মাছ, মাংস, ডিম ও মুরগির কথা বলে, অর্থাৎ উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের সমালোচকদের এটা স্বীকার করতে বলেন তিনি।
সরকার বর্তমানে কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এ খাতে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে এবং সম্পদ ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র গান্ধীর নেতৃত্বে নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কৃষক লীগ নেতাদের গণভবন কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সবজি উপহার দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগ ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় জমি বন্ধক নিয়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মুছা মিয়া নামে এক কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কুটি ইউনিয়নের দক্ষিণ খার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কেরাণীগঞ্জে মাদকাশক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের ছুরিকাঘাতে কর্মচারী নিহত
নিহত মুছা ওই গ্রামের জুজু মিয়ার ছেলে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, ধানি জমি বন্ধক নিয়ে মুছার সঙ্গে দক্ষিণ খার গ্রামের রুহুলের পরিবারের লেনদেন ছিল। এর জেরে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রুহুল আমিন ছুরি দিয়ে মুছাকে ছুরিকাঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: নওগাঁর মান্দায় ছুরিকাঘাতে একজন নিহত
কানাডায় ৬ জনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
বগুড়ায় ভটভটির ধাক্কায় কৃষক নিহত
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ভটভটির ধাক্কায় জাবেদ আলী প্রামাণিক নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার টিপুর মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষক জাবেদ ওই উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের চর রামনগর গ্রামের মৃত আবদুস ছাত্তার প্রামাণিকের ছেলে।
আরও পড়ুন: মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে কর্তৃপক্ষকে দায়ী করতে হবে: দোকান মালিক সমিতি
স্থানীয়রা জানান, জাবেদ সকালে বাইসাইকেল নিয়ে কৃষিকাজ করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। পথে উপজেলার টিপুর মোড়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ভটভটি তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে মারা যান। দুর্ঘটনার পরপরই ভটভটি পালিয়ে যায়।
সারিয়াকান্দি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন দাস জানান, তার লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকার ইফতার বাজার: ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বনাম ‘সব বাপের পোলায় খায়’
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকদের ওপর প্রভাব পড়বে না: খাদ্যমন্ত্রী
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করেন। ভর্তুকি মূল্যেই জমিতে বিদ্যুতের সেচ সুবিধা পায়। ফলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মিল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এক লাইসেন্সে সব ব্যবসা করতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন লাইসেন্সে কোনো ব্যবসা করা যাবে না।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ধান চাল কেনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। খাদ্যবান্ধব ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হয়েছে। ওএমএস-এ ডিজিটাল করা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি এর উদ্বোধন করা হবে।
আরও পড়ুন: অবৈধ মজুতদাররা দেশের শত্রু: খাদ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিকে লক্ষ্য রেখে বাজেটে গম কেনার যে কথা ছিল সেই আলোকে এরই মধ্যে ৭ দিন আগেই সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম কেনা হয়েছে। গুজবে কান না দিয়ে একসঙ্গে বেশি চাল না কেনার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিল্টন চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (রাজশাহী) জহিরুল ইসলাম খান, নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ তানভীর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রমজানে ৫০ লাখ পরিবারকে দেড় লাখ টন চাল দেওয়া হবে: খাদ্যমন্ত্রী
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার কমেছে আমের মুকুল, লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকরা
বৈরী আবহাওয়া ও আম উৎপাদনের জন্য চলতি বছর অনুকূল না হওয়ায় আমের জেলা খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছগুলোতে মুকুল কম হয়েছে। মাঝারি আকারের আমগাছগুলোতে কিছুটা মুকুলের দেখা মিললেও বড় গাছগুলোতে অশানুরূপ নেই। ফলে লোকসানের চিন্তায় পড়েছেন জেলার আম চাষীরা।
কৃষি বিভাগ বলছে ,চলতি বছর একেতো অফ ইয়ার তার উপর শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় গত বছরের তুলোনায় এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মুকুল কম হয়েছে। তবে তাপমাত্রা বাড়ায় কিছু মুকল আসতে পারে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক নিয়মেই এক বছর আমের ফলন ভালো হলে পরের বছর ফলন কম হয়। যে বছর আমের ফলন বেশি হয় সেই বছরকে বলা হয় অন ইয়ার। আর পরবর্তি বছরকে বলা হয় অফ ইয়ার। আর এই নিয়মে চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের অফ ইয়ার। অর্থাৎ আম কম হবার বছর। তার উপর এবার আমের মুকুল ফোটার সময় শীতের প্রকোপ বেশি থাকার কারণে আম গাছে মুকল আসা ব্যাহত হয়েছে। ফলে আম গাছগুলোতে আশানুরূপ মুকুল আসেনি। আর এতেই চিন্তায় পড়েছেন আম চাষীরা।
আরও পড়ুন- জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাচ্ছে ‘খিরসাপাত আম’
নিজেদের উদ্বেগ জানিয়ে কৃষকরা বলছেন, মাঘ মাসের প্রথম থেকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার সময়। কিন্তু সেই সময়ে শীতের প্রকোপ বেশির কারণে আশানুরূপ মুকুল আসেনি। মুকুল কম আসায় দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার আরামবাগ এলাকার এক আম চাষী আব্দুর রাকিব বলেন, গতবার আমের অন ইয়ার গেছে। গতবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাপক মুকুল হয়েছিল এবং আমও ভালো হয়েছিল। এবছর এমনিতেই অফ ইয়ার তার উপর যে সময়টায় মুকুল বের হবে এ সময়টাতে এত শীতের প্রকোপ ছিল। ফলে মুকুলটা পর্যাপ্ত পরিমাণ বের হয়নি।
এর মধ্যে যারা ঠিকমত পরিচর্যা করেছে তাদের কিছু কিছু যেমন আমার গাছে মুকুল মোটামুটি ৫০ শতাংশের উপর হয়েছে। আর যারা পরিচর্যা করতে একটু গড়িমসি করেছে তাদের মুকুল অতিরিক্ত কম হয়েছে এবং বড় গাছগুলোতে মুকুলের পরিমাণ খুবই কম বলে জানান তিনি।
রাকিব আরও বলেন, মাঝারি আকারের যে গাছগুলোতে মুকুল হালকা হালকা হয়েছে। আর পুরো জেলাতেই মুকুলটা এবার কম। যে পরিমাণ মুকুল বের হয়েছে এতে যদি আম হয় তাতে আমরা তেমন লাভের আশা করতে পারছি না, কারণ খরচ বেশি। এখন মুকুল আসার সময় শেষ হয়ে গেছে এবং গাছে কচি পাতা বের হচ্ছে। তারপরও যে মুকুল এসেছে সামনে আবার ঝড় বৃষ্টি কত রকমের বালা আসতে পারে। এখন সেটা আল্লাহর উপর ভরসা করছি যদি আমটা হয় যাদের মোটামুটি মুকুল এসেছে তারা হয়তো জানে বাঁচবে, আর যাদের অনেক কম এসেছে তারা তো ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
একই এলাকার অপর এক আম চাষী মোহাম্মদ আলম বলেন, এবার মুকুলের খবর খুব খারাপ। কারণ গত বছর অনেক মুকুল হয়েছিল আমও অনেক হয়েছিল। কিন্তু এবার মুকুলের অবস্থা খারাপ, অনেক কম মুকুল এসেছে। যে সময়ে মুকুলটা বের হবে ওই সময়ে শীতটা বেশি ছিল। এ কারণে মুকুলটা খুব কম। কিছু ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে মুকুল এলেও বড় গাছগুলোতে তেমন মুকুল আসেনি। এখন গাছে কচি পাতা বের হতে শুরু করেছে। মুকুল আসার আর আশা নাই।
আরও পড়ুন- জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের ‘খিরসাপাত আম’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাঠে মাঠে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাঠে মাঠে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরো চাষিরা। কেউ জমিতে বোরোর চারা রোপণ করছেন, কেউ চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন। কেউ বা জমির আইল ঠিক করতে ব্যস্ত রয়েছেন। বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে এখন।
সদর উপজেলার বিলবৈঠা মাঠ এলাকায় ইউএনবির এই প্রতিবেদকের কথা হয় কৃষক কওসার আলীর সঙ্গে। তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন।
কওসার বলেন, ‘শীতের জন্য লেবার আসছে দেরিতে। কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া গতবারের থেকে এবার সবকিছুর খরচ বেড়েছে। কিন্তু ধানের দাম বাড়েনি।’
একই মাঠে কৃষক ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘হালের দাম বেশি, প্যাঠের দাম বেশি, বিড়ির দাম বেশি। গত বছর হালের প্যাঠ ছিল ৩০০ টাকা, এবার হয়েছে ৩৫০ টাকা। তার উপর খাবার ও বিড়ি দিতে হচ্ছে। সময়ে সময়ে চা খাওয়াতে হচ্ছে। কৃষক মানুষ, কী করব! চাষাবাদ করেই চলতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইউটিউব দেখে চিয়া সিড চাষে উদ্বুদ্ধ, লাভের প্রত্যাশা
কৃষি শ্রমিক মদন (৫৫) জানালেন, ‘শীতকালের সকালে আমাদেরকে কষ্ট করতে হয়। বিছন তুলে আমরা জমিতে চারা লাগাই। আমাদের দেয় ৫০০ টাকা। কাজ করি পেটের দায়ে। কিছু করার নাই।’
১৮ বছর বয়সী আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিক সুসমিতা হাসদা বলেন, সকাল বেলা অনেক ঠান্ডা লাগে। তাও আমরা ধান লাগাতে আসি। ধান লাগিয়ে যে ৪শ’ টাকা পাই তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বেরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩ হাজার ২২০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৫ হাজার ৭২০ হেক্টর, ভোলাহাট উপজেলায় ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৯ হাজর ৬৮০ হেক্টর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় রঙিন ফুলকপি চাষে সফলতা
এর থেকে সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন চাল। বর্তমানে বোরো ধানের আবাদ কার্যক্রম চলছে। ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলবে এ আবাদ কার্যক্রম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, চাষিরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরো আবাদ করছেন। সার, বীজের কোনো সংকাট নেই। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকায় সেচেরও কোনো সংকট নেই।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা
মাছের ঘের দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হাতে কৃষক খুন
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় মাছের ঘের দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ধারলো অস্ত্রের আঘাতে ইসরাফিল মোল্যা নামে এক কৃষক খুন হয়েছেন।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চাচুড়ী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষক ইসরাফিল উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত হক মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জে বাবার হাতে ছেলে খুনের অভিযোগ
স্থানীয়রা জানান, কৃষ্ণপুর গ্রামের মালেক মোল্যার ছেলে নফু মোল্যার সঙ্গে একই গ্রামের আনোয়ার ফকিরের ছেলে প্রিন্সের চাচুড়ী বিলের একটি মাছের ঘের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত এক বছর ধরে এ নিয়ে একাধিক হামলা-পাল্টা হামলা হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের চারটি মামলা চলমান।
সর্বশেষ শনিবার বিকাল থেকে ওই মাছের ঘের দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে রবিবার সকালে প্রিন্সের লোকেরা ওই ঘেরে গেলে নফু মোল্যার লোকজন বাধা দিলে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
একপর্যায়ে নফু মোল্যার সমর্থক ইসরাফিল মোল্যা গুরুতর আহত হন। পরে পরিবার ও স্থানীয়রা ইসরাফিলকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নড়াইর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুজল বকসি বলেন, ইসরাফিল মোল্যা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের দাগ রয়েছে।
কালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শামীম উদ্দিন জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে দাদিকে বাঁচাতে গিয়ে নাতি খুন
সিলেটে প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে যুবক খুনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
বগুড়ায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় কৃষক নিহত
বগুড়ার ধুনট উপজেলার সোনাহাটা-সাতবেকী পাকা সড়ক পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত আব্দুর রশিদ নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সোনাহাটা-সাতবেকী পাকা সড়কের ধামাচামা পশ্চিমপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত ১
আব্দুর রশিদ উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের ধামাচামা গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরের দিকে কৃষক আব্দুর রশিদ মাঠে কাজ করে বাড়ির দিকে রওনা হন। এ সময় সোনাহাটা থেকে সাতবেকীগামী একটি মোটরসাইকেল তাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়।
পরে স্বজনরা আহত আব্দুর রশিদকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, আইনী প্রক্রিয়া শেষে আব্দুর রশিদের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নবাবগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত ২
সিলেট ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ২
বগুড়ায় প্রতিপক্ষের মারধরে কৃষক নিহত, ২ নারী আটক
বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রতিপক্ষের মারধরে আনারুল ইসলাম নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত সোমবার জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন আনারুল।
নিহত আনারুল ইসলাম উপজেলার শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হুদাবালা গ্রামের মরহুম তুফানু প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিনে ৪ দালাল আটক
আটকরা হলেন, হুদাবালা গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী রহিমা বেগম (৪৮) ও মাসুম মিয়ার স্ত্রী রুমা বেগম (২৪)।
স্থানীয়রা জানান, হুদাবালা গ্রামের আবু বক্বর সিদ্দিকের সঙ্গে একই গ্রামের আনারুল ইসলামের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সোমবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
এরমধ্যে গুরুতর আহত হন আনারুল ইসলাম। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর ৬টায় তার মৃত্যু হয়।
শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুল হক বলেন, এ ঘটনায় রুমা ও রহিমা নামের দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: ডেমরায় ট্রাকের ধাক্কায় পথচারী নিহত, চালক আটক
রংপুরে বিল পরিশোধ করতে না পারায় নবজাতক বিক্রি, আটক ৩
আমি পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ বলেছেন, ‘আমি পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক। লেখাপড়া করেছি, অধ্যাপনা করেছি, পিএইচডি ডিগ্রিও আমি নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘সবকিছুতেই মোটামুটি টাচ দিয়ে এসেছি। চিফ হুইপ ছিলাম, সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অ্যাকটিভিটি ছিল আমার। তারপরও বলব আমি এখনো শিখছি। শেখার শেষ নেই। আমি শিখেই কাজ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: নেতৃত্ব অন্যের হাতে চলে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন চায় না তারেক: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর প্রথম দিন রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এটি অবশ্যই একটি বড় মন্ত্রণালয়। আমাদের কৃষকদের উন্নতির জন্য যা প্রয়োজন, আমাদের ক্ষমতার মধ্যে যা আছে করব।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, উদ্যোক্তারা সবাই মিলে যদি কাজ করি, এ শক্তি কিন্তু বড় শক্তি, এর রেজাল্টও কিন্তু আমরা পাব।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের মুক্তি নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত: আইনমন্ত্রী
এর আগে যিনি (ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক) কৃষিমন্ত্রী ছিলেন তিনি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, কৃষিবিদ ছিলেন। আমি আশা করব সব কর্মকর্তা আমাকে সাহায্য করবেন।
আব্দুর রাজ্জাকের মতো কৃষিবিদ যে মন্ত্রণালয় কাজ করে গেছেন, সেই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যই তো আমাদের জীবন। কোনো কাজ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করে ফলাফল অর্জন করা যায় না। এটা একটা বড় মন্ত্রণালয়। এখানে কাজের পরিধিও বেশি। আশা করি মন্ত্রণালয়ের সবাই সহযোগিতা করবেন। সবার সহযোগিতা থাকলে কাজ কেন করা যাবে না? চলছে তো ভালোই। নিশ্চয়ই আমি তাদের অভিজ্ঞতাকে ক্যাশ করার চেষ্টা করব।
এক প্রশ্নের জবাবে নতুন কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমি আগে বুঝে নিই, তারপর ঠিক করব কোন কাজগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে করব।
আরও পড়ুন: আমি যা বলেছি, কোনো ভুল বলিনি: কৃষিমন্ত্রী
সামনে আপনার চ্যালেঞ্জ কী- এ বিষয় তিনি বলেন, কৃষিতে তো উৎপাদনটাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা যদি উৎপাদন না করতে পারি তাহলে বাজার কীভাবে দখল করব, মূল্য কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব কীভাবে ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই চেইনকে কার্যকর করব।
আব্দুস শহীদ আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সিন্ডিকেট সব জায়গায় থাকে। তাদের কীভাবে ভেঙে দিতে হবে, সেটার পদ্ধতি বের করতে হবে। কাউকে গলা টিপে মারার সুযোগ নেই আমাদের। কর্মের মাধ্যমে এগুলোকে কন্ট্রোল করতে হবে। সিন্ডিকেট অবশ্যই দুর্বল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি: কৃষিমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে কাদের