কুমিল্লা
কুরআন অবমাননা: ইকবালসহ ৪ জন আরও ৫ দিনের রিমান্ডে
কুমিল্লা নানুয়া দিঘীর পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালসহ চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার দুপুরে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননা: সন্দেহভাজন ইকবাল ৭ দিনের রিমান্ডে
রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজোয়ান জানান, অভিযুক্ত ইকবালসহ চার আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তারা মুখ খুলতে শুরু করেছে। শুক্রবার আগের সাত দিনের রিমান্ড শেষ হয়। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের নতুন রিমান্ড আবেদন করা হয়।
প্রধান অভিযুক্ত ইকবালসহ কোরআর অবমাননা মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, মণ্ডপে কোরআন পাওয়ার তথ্য ৯৯৯-এ কল করে জানানো ইকরাম হোসেন এবং নগরীর শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারের সহকারী খাদেম হুমায়ুন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় আনা হয়েছে কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনকে
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর পোস্ট: আটক ১
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেয়ার অপরাধে উত্তম মজুমদার (৩১) নামের এক যুবককে খুলনায় আটক করেছে র্যাব-৬।
বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে র্যাব-৬ খুলনার একটি আভিযানিক দল কেএমপি জেলার লবণচরা থানাধীন খুলনা টু সাতক্ষীরা হাইওয়ে সড়কের পাশে বোখারীয়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
আটক উত্তম বাগেরহাট জেলার চিতলমারি থানার অশোক নগর গ্রামের অমল মজুমদারের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উত্তম সাইবার অপরাধের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে জেলা জামায়াতের আমীরসহ আটক ৪
জানা গেছে,উত্তম মজুমদার বরিশাল বিএম কলেজ থেকে এমএ সম্পন্ন করে খুলনায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিল। গত ১৩ অক্টোবর থেকে উত্তম মজুমদার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করছিল। সে নিজে ওই পেইজের এডমিন এবং তার সমমনা আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে এডমিন হিসেবে নিযুক্ত করে। খুব দ্রুতই ওই পেইজের সদস্য ও ফলোয়ার কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই ফেসবুক পেইজ থেকে কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং উসকানিমূলক পোস্ট দেয়া হচ্ছিল এবং বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহিংসতা বিস্তার করার অপতৎপরতা চলছিল। ওই ফেসবুক পেইজে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নৃশংস ঘটনার ভিডিও আপলোড করে জনমনে ভয়-ভীতি তৈরিসহ উসকানি দেয়া হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় অস্ত্রসহ ২ ডাকাত আটক
প্রাথমিকভাবে উত্তম মজুমদারের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
উত্তম মজুমদারকে কেএপি খুলনার লবণচরা থানায় হ্স্তান্তর করা হয়েছে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
কুমিল্লার ঘটনাটি পরিকল্পিত: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করে, তারাই অপশক্তি। কুমিল্লার এ ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত। এ অপশক্তিকে কোন অবস্থাতেই আর ছোবল দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে আমার দলেরও যদি কেউ করে থাকে সেও ওই অপশক্তির আন্ডারে এবং তাকেও ছাড় দেয়া হবে না।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘীরপাড় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
ফরিদুল হক বলেন, দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য অপশক্তি এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। যারা এ ঘটনার সাথে যুক্ত তারা কোন ধর্মের বা দলের হতে পারে না। অপরাধ যেই করুক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এসময় কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার, কুমিল্লা-৭ আসনের এমপি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মন্ত্রী শারদীয় দুর্গাপূজায় ক্ষতিগ্রস্থ বেশ কয়েকটি মন্দির ও পূজামণ্ডপ এলাকা পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মণ্ডপে কোরআন অবমাননার মামলা সিআইডিতে
কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় মাদরাসার ছাত্র নিহত
কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়া বাসস্টেশন এলাকায় ট্রাকচাপায় এক মাদরাসার ছাত্র নিহত হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. সালমান উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে ও চান্দিনার একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলেসহ নিহত ৩
পুলিশ জানায়, যাত্রী উঠানোর জন্য মহাসড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা মারুতিকে ধাক্কা দেয় বালুবাহী একটি ট্রাক। এসময় সালমান তার চাচা তোফাজ্জলের সাথে রাস্তা পারাপারের সময় মারুতির ধাক্কায় মহাসড়কে ছিটকে পড়লে বালুবাহী ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়।
লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত মারুতি ও ট্রাক জব্দ করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
কুমিল্লায় মণ্ডপে কোরআন অবমাননার মামলা সিআইডিতে
কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দিঘীর পাড়ের একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করেছে পুলিশ। রবিবার পুলিশ সদর দপ্তর মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
রাত ১০টার দিকে সিআইডি কুমিল্লার পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে, পূজামণ্ডপের হনুমানের মূর্তির হাত থেকে নিয়ে যাওয়া গদাটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশের একটি দল নগরীর দারোগাবাড়ী মাজারের পাশের চৌধুরী ভিলার প্রাচীরের ভেতর থেকে গদাটি উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ।
পড়ুন: সাম্প্রদায়িক হামলা: ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ
মির্জা ফখরুলই ভালো জানেন কুমিল্লার ঘটনা কিভাবে ঘটেছে: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'মির্জা ফখরুল সাহেবের কথা শুনে মনে হয়, কুমিল্লার ঘটনা কিভাবে ঘটানো হয়েছে, তা তাকে জিজ্ঞাসা করলেই ভালো জানা যাবে।'
শনিবার দুপুরে ঢাকার মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
কুমিল্লার ঘটনায় সরকারকে দোষারোপ করে এবং কক্সবাজারে ইকবালের গ্রেপ্তার হওয়া নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যের জবাবে ড. হাছান বলেন, 'প্রথম থেকেই মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যের ধরণ হচ্ছে, 'ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না' এবং মনে হচ্ছে তিনিই ভালো বলতে পারবেন ইকবালকে কারা কক্সবাজারে পাঠিয়েছে। যারা এ ঘটনায় ইন্ধন দিয়েছে, তারাই ইকবালকে কক্সবাজার পাঠিয়েছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘটনা ঘটিয়ে আবার বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে।'
আরও পড়ুন: হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা দেশের চেতনার বেদীমূলে হামলা: তথ্যমন্ত্রী
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকার কঠোর ও দ্রুততম ব্যবস্থা নিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে এবং সরকার দ্রুততম সময়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। একশ'র বেশি মামলা হয়েছে, কয়েকশ' জন গ্রেপ্তার হয়েছে এবং পূজামণ্ডপে যে কোরআন শরিফ রেখে এসেছিল তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে বাকি তথ্য বেরিয়ে আসবে।'
একইসাথে স্বল্পতম সময়ে পীরগঞ্জে পোড়া ঘরগুলো মেরামত, নতুন ঘর নির্মাণ এবং সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ এবং খাদ্য সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়ে ড. হাছান এসময় তার আইপ্যাড থেকে পীরগঞ্জে নতুন নির্মিত ঘর ও মানুষের রান্নাবান্নাসহ গৃহকর্মের চিত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, সরকার যখন দ্রুততম সময়ে এসকল ব্যবস্থা নিয়েছে, তখন বিএনপি-জামাতসহ ধর্মান্ধগোষ্ঠি যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা ক্রমাগত মিথ্যাচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সত্ত্বেও কোথাও কোথাও রাস্তা অবরোধের খবর পাওয়া গেছে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও আমাদের চেতনার বেদিমূলে আঘাত। আমরাও এর প্রতিবাদ জানাই এবং প্রতিকারে সচেষ্ট। কিন্তু প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে জনগণ যেন ভোগান্তির শিকার না হয় এবং আবেগতাড়িত হলেও যেন কারো বক্তব্য বাস্তবতাবিবর্জিত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।'
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে: তথ্যমন্ত্রী
কোরআন অবমাননা: সন্দেহভাজন ইকবাল ৭ দিনের রিমান্ডে
কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনসহ চারজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিথিলা জাহান নিপা তাদের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলার অন্য তিন আসামি হলেন ইকরাম এবং দরগাবাড়ি মাজারের দুই সহকারী খাদেম হাফেজ হুমায়ুন ও ফয়সাল।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এছাড়া অন্য তিন আসামিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য,গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়াদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির,মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা,ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুই জন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর,লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কুমিল্লায় সহিংসতা: আহত একজনের মৃত্যু
কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত দিলীপ দাস (৬২) অভিনয় শিল্পী অধরা প্রিয়ার বাবা। নগরীর গাঙচর এলাকার বাসিন্দা তিনি।
জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর রাজরাজেশ্বরী কালীবাড়ির পূজামণ্ডপের সামনে মাথায় ইটের আঘাত লেগে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
কুমিল্লা মহানগর পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত দাস টিটু বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। তার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করছি।’
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর হোসেন জানান, আহত দিলীপ দাস মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।
পড়ুন: মাগুরায় স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ২
রংপুরে হিন্দুপল্লীতে আগুন: জয়পুরহাটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ১
রংপুরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কুমিল্লায় আনা হয়েছে কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনকে
কুমিল্লায় পূজা মন্ডপে কোরআন শরীর অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন মূল হোতা ইকবাল হোসেনকে আজ দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে কুমিল্লায় আনা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল তাকে নিয়ে কুমিল্লায় আসে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় ইকবাল হোসেনকে কক্সবাজার সুগন্ধ্যা বীচ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানান, ৬টায় কক্সবাজার থেকে কড়া নিরাপত্তায় পুলিশি পাহারায় ইকবালকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে আনা হয়। ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে খুঁজছিল। কক্সবাজার তার অবস্থান নিশ্চিত হবার পর কুমিল্লা পুলিশ কক্সবাজার পুলিশকে জানালে তারা ইকবালকে গ্রেপ্তার করে।
এর আরগ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘটিয়েছে। দেশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক নেই। এখন সব নিয়ন্ত্রণে আছে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কুমিল্লা ঘটনার দিন রাতে মাজার মসজিদে তিন বার গেছেন এই লোক। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে সুনিশ্চিত যে, মসজিদে থেকে কোরআন শরীফ নিয়ে তিনি এখানে রেখেছেন। প্ল্যান মাফিক করেছেন, কার নির্দেশে করেছে। কারো প্ররোচনায় হয়তো করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে বলা যাবে মোটিভটা কী ছিল? সাজানো ঘটনা থাকতে পারে। জিজ্ঞেস করা হলে সব জানা যাবে।’
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার
কোরআন অবমাননা: বায়তুল মোকাররম এলাকায় মুসল্লি-পুলিশ সংঘর্ষ
কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবালকে গ্রেপ্তার করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার করার পর রাতেই তাকে কুমিল্লা পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, কুমিল্লার সেই ইকবাল কক্সবাজারে পালিয়ে আসেন। আসলে গ্রেপ্তার হওয়া ইকবাল কুমিল্লার সেই ইকবাল কিনা তা নিশ্চিত করবেন কুমিল্লা পুলিশ।
পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবালকে চিহ্নিত করে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়াদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়।
পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা,ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুই জন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে: তথ্যমন্ত্রী