সংখ্যালঘু
সংখ্যালঘুদের জন্য শেখ হাসিনার চেয়ে নির্ভরযোগ্য নেতা আর কেউ নেই: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বাংলাদেশে তাদের সমতা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার চেয়ে নির্ভরযোগ্য নেতা খুঁজে পাবে না।
শনিবার পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’
দেশে সাম্প্রদায়িকতা ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের (হিন্দু ধর্ম) জন্য এ দেশে শেখ হাসিনার চেয়ে নির্ভরযোগ্য আর কেউ নেই। তাই সাম্প্রদায়িকতা রুখতে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
আরও পড়ুন: মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে কাজ করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য অবহিত করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আগের অশুভ ঘটনাগুলো হিন্দুদের কষ্ট দিয়েছে। এ অপকর্মের পুনরাবৃত্তি চাই না। আশা করি দশমী পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।’
জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একটি সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই এটা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘এই চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: যমুনা-বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়ার জন্য বিএনপির রোড মার্চ: তথ্যমন্ত্রী
কাদের বলেন, ক্ষমতা শুধুমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে হাত বদলাবে, এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বারবার সময়সীমা ঘোষণা করায় বিএনপি নেতাদের প্রতি ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের, ‘আর কত দিন দিবেন? আমি বলি, আমাদের সময় নেই। ৪ নভেম্বর ঢাকায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে (৪ নভেম্বর) আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) কখনো কোনো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেনি, বরং 'দেশের সম্পদ লুট করেছে'।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
হিন্দুদের ব্যাপারে বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের সাম্প্রতিক দাবির নিন্দা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সাম্প্রতিক দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দাবি করেন যে বাংলাদেশের বৃহত্তম ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুরা ধীরে ধীরে ‘নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা আরও জানিয়েছেন, বাইডেনের কাছে দেওয়া চিঠিতে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান সম্পর্কে দেওয়া তথ্য ‘ত্রুটিযুক্ত অনুমান’, বিএনপি নেতাদের এধরনের তথ্য সমর্থন করার প্রবণতা, জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
২০১৪ এবং তার আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘুদের ওপর বারংবার হামলার কথা উল্লেখ করে তারা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকেও দায়ী করেছেন।
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠির বিরুদ্ধে তার আগের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে এটিকে ‘সত্যের অপলাপ’ বলে অভিহিত করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন: ‘১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের ছত্রছায়ায় দেশের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নীতিগুলো ধ্বংস হয়ে যায়’।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জেনারেল জিয়া এবং জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বাধীন ধারাবাহিক সরকারগুলো সবাই পাকিস্তানপন্থী সাম্প্রদায়িক শাসনের প্রবর্তন করে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আলিঙ্গন করে একই পথ ধরে হেঁটেছে।’
দাশগুপ্ত বলেন, মানুষের অবশ্যই ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের অধীনে সংখ্যালঘুদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় হামলার ঘটনা বিবেচনা করতে হবে।
আরও পড়ুন: আরেকটি সাজানো নির্বাচন করতে সরকার পুলিশ ও জনপ্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাসের প্রবণতা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে ঘটেছে।
বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, শিক্ষাবিদ এবং যুদ্ধাপরাধ বিরোধী প্রচারকারীরা সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের অনুমান ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তারা আরও বলেছে যে এটি ‘বাংলাদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি।’
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসার পর থেকে হিন্দু জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে... শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান জনসংখ্যাকেও নিপীড়ন করেছে; উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেওয়া ও লুটপাট করা, যাজকদের কারাগারে বন্দী করা এবং ধর্মান্তরিত করার মাধ্যমে পরিবার ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।’
আর্চবিশপ ইমেরিটাস প্যাট্রিক ডি'রোজারিও এর আগে বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে ‘নির্যাতিত’ হিসেবে চিত্রিত করার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
এই ধরনের বক্তব্যকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করে ঢাকার প্রাক্তন আর্চবিশপ জোর দিয়ে বলেছিলেন যে সরকার ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে।
প্রায় ২০০ বিশিষ্ট বাংলাদেশি আমেরিকানদের একটি দল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে যে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে।’
বাংলাদেশি আমেরিকানদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চিঠিতে ২০০১ সালের অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতাকে উপেক্ষা করা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন জোট হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যেসব হামলা করেছিল।’
আরও পড়ুন: ফয়জুল করিমের ওপর হামলার বিষয়ে সিইসি’র মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ফখরুলের
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে জামায়াত: গয়েশ্বর
কংগ্রেসের চিঠিতে উল্লেখিত সংখ্যালঘুদের নিয়ে বক্তব্য সত্য নয়: মোমেন
বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের নিয়ে ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে ভুল তথ্য দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কংগ্রেসম্যানদের দেওয়া সাম্প্রতিক চিঠির বিষয়বস্তুর জন্য সমালোচনা করছে। তারা জানিয়েছে যে তারা (কংগ্রেসম্যানরা) বিএনপির কথার পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই করেননি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে চিঠিতে যে তথ্য আছে, বাস্তবতার সঙ্গে তা মিলছে না।
সোমবার তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এগুলো (সংখ্যালঘুদের নিয়ে চিঠির তথ্য) সত্য নয়।’
মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের চিঠি পাঠানোর আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই প্রয়োজন।
দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে লবিস্টদের সম্পৃক্ত করার সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর দোহাই, দেশকে ধ্বংস করবেন না। এই দেশ সকলের।’
তবে এসময় তিনি কারো নাম বলেননি।
মোমেন দেশের দেশের কল্যাণে লবিস্ট মোতায়েন করার পরামর্শ দেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন যেমন বাংলাদেশে কীভাবে জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানো যায় এবং কীভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো যায় ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: ‘আইওসি-২০২৩’ আয়োজন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুসংহত করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকার অত্যন্ত স্বচ্ছ।
তিনি বলেন, সহিংসতামুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দলকে আন্তরিকতা ও অঙ্গীকার দেখাতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুক্তরাষ্ট্রে একটি রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন, যার মধ্যে ২২ জুন একটি রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ থাকবে।
সেখানে বাংলাদেশ ইস্যু থাকবে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, তাদের যা ভালো লাগবে তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
মন্ত্রী বলেন, ওই বৈঠক নিয়ে তার কথা বলার কিছু নেই। ‘ভারত একটি পরিণত গণতান্ত্রিক দেশ। ভারতের খুব শক্তিশালী নেতৃত্ব রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য চীন সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে যাচ্ছেন এটা ভুল বক্তব্য।
তিনি বলেন, চীনা পক্ষ সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশ জানিয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী সেই সময় নিউইয়র্কে থাকবেন।
সফর পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে আমি জানি না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার খুব ভালো বৈঠক হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমি খুব আনন্দিত. তারা আমাদের অনেক সম্মান দেখিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ একটি মডেল দেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে দিনাজপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মশাল মিছিল
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে দিনাজপুর শহরের প্রধান সড়কে মশাল মিছিল বের করা হয়।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী যৌথভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দিনাজপুর প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে মশাল মিছিল বের করেন তারা।
কর্মসূচিতে অংশ নেন হিন্দু বৌদ্ধ খিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি নেতা সুনিল চক্রবর্ত্তী, সাধারণ সম্পাদক রতন সিং এবং পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায়সহ অন্যান্যরা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ দেশজুড়ে মশাল মিছিলসহ বিক্ষোভ করেছেন তারা। এসময় সাত দফার সমর্থনে বিভিন্ন শ্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে জামায়াত শিবিরের ৭ নেতাকর্মী আটক
দিনাজপুরে ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাক্টর চূর্ণবিচূর্ণ
দিনাজপুরে ৪৬ কেজি ওজনের কষ্টিপাথর উদ্ধার
নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না: দেশের হিন্দুদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দুদের একটি অংশের তীব্র নিন্দা করেছেন, যারা এটা বোঝাতে চান যে তারা বাংলাদেশে খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে একটা কথা বলতে চাই যে, যখনই এখানে কোনো ঘটনা ঘটে, তা দেশে-বিদেশে এমনভাবে প্রচার করা হয় যেন এদেশে হিন্দুদের কোনো অধিকার নেই।’বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পবিত্র জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির ও চট্টগ্রামের জেএম সেন হলে কার্যত হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন।
তিনি বলেন, যে কোনো ঘটনা ঘটলেই তার সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু হিন্দুদের কোনো অধিকার নেই বলে ওই ঘটনাকে রং চড়ানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর সরকারের পদক্ষেপ যথাযথভাবে নজরে আসে না।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মন্দির রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে বহু মুসলমান নিহত হয়েছেন। ‘এ ধরনের ঘটনাও ঘটেছে।’
তিনি তার মন্তব্যের সমর্থনে কুমিল্লার ঘটনা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে শেখ হাসিনা
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এগুলো ঠিকভাবে প্রচার হয়নি। পরিবর্তে, এটি ছড়িয়ে দেয়া হয় যে দেশে হিন্দুরা খুব কষ্টে বাস করছে।’
তিনি বলেন, ঢাকায় পূজা মণ্ডপের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতার চেয়ে বেশি। এবং সারা বাংলাদেশে দুর্গাপূজা ব্যাপক সমারোহে পালিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার শুধু মসজিদ মেরামত বা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না, মন্দির, মঠ ও গীর্জাও সংস্কার বা মেরামত করছে।
তিনি বলেন, ‘কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কিছু বলা ঠিক নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি ব্যতিক্রমী দেশ, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে।
তিনি বলেন, ‘দেশের এই সহানুভূতিশীল ধর্মীয় পরিবেশকে ধ্বংস করার ব্যাপক চেষ্টা চলছে। প্রতিটি ধর্মের লোকদের একটি অংশ আছে, যারা প্রায়ই সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করে।’
তিনি আরও বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগ কোনো ধর্মকে অবমূল্যায়ন করায় বিশ্বাস করে না।
শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা এটা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি। আমাদের সরকার এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক। আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি।’
তিনি বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।
আরও পড়ুন: সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর উপায় বের করছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই দেশে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। আপনি এই দেশের মানুষ, এখানে আপনার সমান অধিকার আছে, আমার মতো আপনারও একই অধিকার রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী হিন্দুদের নিজেদেরকে সংখ্যালঘু না ভাবতে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সবসময় মনে করবেন যে আপনি এই দেশের নাগরিক, আপনারাও সমান অধিকার ভোগ করবেন এবং আমরাও আপনাদেরকে সেভাবেই দেখতে চাই। অনুগ্রহ করে নিজেদের অবমূল্যায়ন করবেন না। আপনারা এই দেশে জন্মেছেন এবং আপনারা এই দেশেরই নাগরিক।’
তিনি বলেন, এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে সবাই চলতে পারলে সব ধর্মের অশুভ মহল কখনোই দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সেই বিশ্বাস ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আমি আপনাদের সবার কাছ থেকে এটাই চাই।’
করোনাভাইরাস মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এগুলো সবার জন্য বড় সমস্যা তৈরি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছি, ফলে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিছু লোক এর চেয়েও বেশি অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য অযথা দাম বাড়াচ্ছে,।’।
তিনি বলেন, সরকার দাম মনিটরিং ও পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা করছে।
তিনি ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সরকার এক কোটি মানুষকে বিশেষ পরিবার কার্ড দেবে, যার মাধ্যমে তারা ন্যায্যমূল্যে চাল, মসুর, তেল ও চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের ক্রয় ক্ষমতার নিচে দাম রাখার চেষ্টা করছি, যাতে তারা ভোগান্তিতে না পড়ে।’
সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের কথা উল্লেখ করে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি উৎপাদনে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আ.লীগের প্রতি জনগণের আস্থা সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
সংখ্যালঘুদের নিয়ে কাজের জন্য দেয়া হবে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’
দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেসব তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে, পঞ্চমবারের মত তাদের ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়ং বাংলা।
ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিয়ে যেসব সংগঠন কাজ করছে তাদেরকে দেয়া হবে এই ‘জয় বাংলা ইয়ূথ অ্যাওয়ার্ড’।এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডে এবারই প্রথমবারের মতো দেয়া হবে আজীবন সম্মাননা পুরষ্কার।
দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, হিজরা, দলিত ও অনগ্রসর সমাজকে নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনসহ ৩০টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দিতে ইতোমধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন চলছে বলে সিআরআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে: হাইকোর্ট
একমাস ধরে চলা নিবন্ধন রবিবার শেষ হচ্ছে বলে সিআরআইয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপিতে আরও বলা হয়েছে,দেশের প্রতি তরুণদের দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব পালনে নেয়া উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানাতে পঞ্চমবারের মতো ফিরে এসেছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।
সম্প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ ছাড়াও মাঠপর্যায়ে রাস্তায় নেমে ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে বহু যুবক ও যুব সংগঠন।
আ্যাওয়ার্ডে অংশ নিতে আগামী রবিবারের মধ্যে যুব ও যুব সংগঠনগুলোকে আবেদন করার আহ্বান জানিয়েছে ইয়ং বাংলা। ইয়াং বাংলার ওয়েবসাইটে (http://jbya.youngbangla.org) এ পুরস্কারের জন্য আবেদনের করা যাবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা ডকল্যাবে কসমস ফাউন্ডেশন পুরস্কার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,জমা পড়া আবেদনগুলো ২৪ অক্টোবরের পর বাছাই করা হবে। পরে বাছাই করা সংগঠনগুলোর কাজ ও সমাজে তার প্রভাব দেখার জন্য মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণে যাবে ইয়াং বাংলা টিম। সেখান থেকে শীর্ষ ৩০ সংগঠনকে বেছে নেয়া হবে।
সামাজিক অন্তর্ভূক্তি ও সম্প্রদায়ভিত্তিক উন্নয়নে দুটি বৃহৎ ক্যাটগরিতে ১০টি পুরষ্কার দেয়া হবে।
সাংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের সংগঠন,যে সংগঠন নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু অধিকার, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন, পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্ষমতায়ন,যুব উন্নয়ন,অতি দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রেখেছে তারা ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের’ জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া যেসব যুব সংগঠন তাদের কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে কোন সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য কাজ করছে। ‘ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট’ এর অধীনে তারাও আবেদন করতে পারে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শিশুদের জন্য শত পুরস্কার
এতে ছয়টি বিষয়ে আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে,মাদক বিরোধী সচেতনতা অভিযান, পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যক্রম,দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস,জরুরি প্রতিক্রিয়া, স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা,শিক্ষা ও সামাজিক - সাংস্কৃতিক উদ্যোগ।
এছাড়া উন্নয়ন কর্মসূচি ও প্রকল্প,জননীতিতে গবেষণা ও উদ্ভাবন,উদ্যোক্তা ও সৃজনশীলতা এই চার নীতিতে দেয়া হবে আজীবন সম্মাননা।
সাম্প্রদায়িক হামলা: ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ
সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিশ্বাস ফেরাতে ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০২ মামলায় ২০ হাজার ৬১৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৮৩ জনকে।
সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ আর্থিক সহায়তা, খাদ্য, বস্ত্র ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং গৃহ নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে এ জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও এক ভার্চুয়াল সভায় জানান তিনি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সম্ভাব্য যে কোনো হামলা প্রতিরোধে নজরদারি জোরদার করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সহিংসতা: শাহবাগে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ
৩৭টি জেলা ও তিনটি সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ, র্যাব ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাত দিন টহল দিচ্ছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, দলটি সকল ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে ও যে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা প্রতিহত করতে নেতা-কর্মীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, গেল কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, জ্যৈষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা, সাংসদ, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁর কার্যালয়ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কাউকে তা বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না।’
পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন গণমাধ্যমও নজরদারি করা হচ্ছে। ভুয়া তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপকসহ দুই ডজনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা জারি করেছে এবং তাদের নিজ নিজ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে বলেছে। এছাড়া এ বিষয়ে রবিবার মন্ত্রণালয়ে একটি ভার্চুয়াল সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় আনা হয়েছে কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনকে
এলজিআরডিমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কুমিল্লা পরিদর্শন করেছেন। এখান থেকেই কথিত কোরআন অবমাননার গুজব ছড়ানো হয়।
এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধান প্রধান ধর্মের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে মানুষের মাঝে সচেতনা তৈরি ও তাদের অনুপ্রাণিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান রংপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী ৬১টি পরিবারকে নগদ ১০ হাজার করে টাকা, শিশু খাদ্য ও পশু খাদ্য প্রদান করেছেন।
এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গৃহ নির্মাণ করতে ১০০ বান্ডেল ঢেউটিন, চার লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ এবং ১২০০ প্যাকেট মানবিক খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন।
রবিবার রাতে রংপুর জেলা প্রশাসন ৬৫টি ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে ৯ লাখ নগদ অর্থ সহায়তা ও ১০০ বান্ডেল ঢেউ টিন বিতরণ করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যেন খোলা আকাশের নিচে থাকতে না হয় সে জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি তাদের জন্য তাঁবু স্থাপন করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রংপুরের পীরগঞ্জে হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক হিন্দু পরিবারের মাঝে পাঁচ হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন।
ক্ষমতাসীন দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে নগদ টাকা, খাদ্য, বস্ত্র সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি কেন্দ্রীয় দল শিগগিরই সারাদেশ পরিদর্শন করবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী ও হুইপ আবু সায়িদ আল মাহমুদ স্বপনও রংপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: জেএমসেন হল পূজামণ্ডপে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ১০
হিন্দুসহ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত জরুরি: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, তাদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি।
হাম্মাদি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, নিরপেক্ষভাবে ও স্বচ্ছভাবে ঘটনার তদন্ত করতে হবে এবং সহিংসতা ও ভাঙচুরের জন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিচারের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলা: ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
দেশের সবচেয়ে বড় হিন্দু উৎসব দুর্গাপূজার সময় এবং পরে হিন্দু সংখ্যালঘু পরিবার এবং মন্দিরগুলোতে ‘সহিংস হামলার’ বিষয়ে হাম্মাদি বলেন, ‘দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য, তাদের বাড়ি, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার খবর পাওয়া গেছে যেটা ‘ক্রমবর্ধমান সংখ্যালঘু বিরোধী মনোভাবের লক্ষণ।’
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ঠেকাতে ধর্মীয় সংবেদনশীলতাকে লক্ষ্য করা একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবিলম্বে সরকারের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রংপুরে হিন্দুপল্লীতে আগুন: আটক ৪২
ঝিনাইদহে সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্নাবাজার এলাকায় সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন,গান্না ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের সুবোধ রায় ও তার ভাইয়ের ছেলে সুমিত রায়।
অভিযুক্ত হলেন, একই ইউনিয়নের খালকুলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আলাউদ্দিন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পাইকপাড়া গ্রামের সুবোধ রায় ও তার ভাইয়ের ছেলে সুমিত রায় আর্থিক অনটনের কারণে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ১৭ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ৮ শতক জমি খালকুলা গ্রামের আলাউদ্দিনের কাছে বিক্রি করেন।ওই জমিতে সুবোধ রায়ের আরও দুই ভাইয়ের মালিকানা রয়েছে। জমি রেজিস্ট্রি করার সময় জমির দলিলে পূর্বপাশ উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: আদালতের আদেশ অমান্য করে কুড়িগ্রামে জমি দখলের অভিযোগ
স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় জমির ক্রেতা আলা উদ্দিন জমির পশ্চিম পাশ দখলের চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে অমিত রায় ঝিনাইদহ আদালতে গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি পিটিশন দাখিল করে।পরবর্তীতে আদালত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত ভালো রাখতে জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা বা কাজ না করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে নোটিশ দেয়া হয়।
অমিত রায় অভিযোগ,‘আদালত জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।কিন্তু আলাউদ্দিন ক্ষমতার জোরে আদালতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লোকজন নিয়ে জমিতে ঘর নির্মাণ করেছেন। আমরা তাকে কিছু বলতে গেলে আমাদের মারধর ও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।’
আরেক জমি বিক্রেতা সুবোধ রায়ের অভিযোগ,‘আমরা জমি বিক্রি করেছি পূর্বপাশে। কিন্তু আলাউদ্দিন ক্ষমতা দেখিয়ে পশ্চিম পাশ দখল করেছেন। এই জমিতে আমার অন্য ভাইদের মালিকানা রয়েছে। আমরা সংখ্যালঘু পরিবার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছি না।’
আরও পড়ুন: জমি দখলের চেষ্টা ও মারধরের মামলায় সাভারে যুবলীগের ৬ নেতা কারাগারে
অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি জমি কিনেছি, তাই জমি দখল করে নিয়েছি। ১৪৪ ধারা আছে কি না তা আমার জানার দরকার নেই। ওরা বেশি কথা বললে আমি ওদের নামে মামলা করব।’
এ ব্যাপারে বেতাই চন্ডিপুর পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ এস আই) খোরশেদ আলী বলেন,‘আদালত থেকে নোটিশ পাওয়ার পর উভয় পক্ষকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পরও একটি পক্ষ তা অমান্য করে ঘর নির্মাণ করছিল। ঘটনা শোনার পর সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’
সংখ্যালঘুদের কাছে উড়ো চিঠি: মাগুরায় ২১ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৪
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দুটি গ্রামে সংখ্যালঘুদের কাছে শুক্রবার রাতে উড়ো চিঠি পাঠানোর ঘটনায় শ্রীপুর থানায় ২১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।