ঈদুল আজহা
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসবে পশুরহাট: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনলাইনের পাশাপাশি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি অন্যান্য নির্দেশনা মেনে সারাদেশে কোরবানির পশুর হাট বসানো হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুরহাট ব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি ও পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি পর্যালোচনায় আন্তমন্ত্রণালয় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
আরও পড়ুনঃ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকায় তিন পশুর হাট বাতিল
মন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এর সাথে মানুষের আবেগ-অনুভূতি জড়িত। তাই বিভিন্ন প্রতিকূলতা, দুর্যোগ-দুর্বিপাকেও এগুলোকে পরিহার করা সম্ভব হয় না। গত বছর করোনা মহামারির মধ্যেও সরকার থেকে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এ বছর করোনার প্রাদূর্ভাব বেশি থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, কুরবানীর পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের একমুখী চলাচল থাকতে হবে অর্থাৎ প্রবেশপথ এবং বহির্গমনের পৃথক করতে হবে। পাশাপাশি হাটে আগত সকলে যাতে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতা প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র এবং হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত বেসিন, পানি এবং জীবাণুনাশক সাবান রাখার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে ১৭ শর্তে বসবে পশুর হাটএছাড়া, পশু কোরবানির পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে মানুষকে উৎসাহী করার আহবান জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে পশু কেনা-বেচার জন্য সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে অনলাইনের পাশাপাশি স্বশরীরে পশুর হাট যেন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এমন স্থানে পশুর হাট বসানো যাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুনঃ গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রীতিনি বলেন, পশু ক্রয়-বিক্রয়ের পদ্ধতি জানতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জনগণকে সচেতন করার জন্য টিভিতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া, পশু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থাপনা, কোরবানি এবং বর্জ্য অপসারণের বিষয়েও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গাইড লাইন যথাযথ অনুসরণ করে এই কাজগুলো নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে স্বশরীরে পশুর হাটগুলোতে সার্বিক বিষয় তদারকির জন্য জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সাধারণ মানুষের নিবিড় সম্পর্ক এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকে। তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সরকারি নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করার আহ্ববান জানান।
আরও পড়ুনঃ যত্রতত্র পশুর হাট নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গতবছরও করোনা মহাসংকটে পশুর হাট বসানো হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ বছর করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও কিন্তু পশুর হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয় হবে। কোরবানি যতটা সম্ভব নির্বিঘ্নে করা যায় সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে সভায় জানান মো. তাজুল ইসলাম।
অনলাইন সভায়, সকল সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ১৫ জুলাই থেকে চলবে ট্রেন
৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে আগামী ১৫ জুলাই থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। আসন্ন ঈদুল আজহায় মানুষের চলাচলের জন্য আগামী ১৫ জুলাই থেকে ২২জুলাই পর্যন্ত সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুনঃ বিশেষ ট্রেনে ঢাকায় আসবে কোরবানির পশু
সোমবার রেলমন্ত্রী মো. নরুল ইসলাম সুজন বলেন, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপনে বিস্তারিত জানানো হবে। এক্ষেত্রে টিকেট শুধুমাত্র অনলাইনে পাওয়া যাবে। কাউন্টারে কোন টিকেট দেয়া হবে না। মঙ্গলবার বিকেল থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
আরও পড়ুনঃ ঢাকা গাজীপুর রুটে বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেনসহ সকল প্রকার গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে লকডাউন দিয়েছে। গত ৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে নতুন করে আরোপ করা লকডাউন আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেড় লক্ষাধিক কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশু বিক্রয়ের শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খামারিরা৷ প্রতিবছরই কোরবানির ঈদের অন্তত ১৫দিন আগে পশুর বাজারগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি থাকলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনে পশু বিক্রয় নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলার খামারিরা।
জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার ১২ হাজার ৩৭০টি পশুর খামার করা হয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য এক লাখ ৭৭ হাজার পশু লালন পালন করা হচ্ছে।
জেলা শহরের দাতিয়ারায় ‘রূপচান্দ বিবি ডেইরি’ নামে একটি খামার রয়েছে। খামারটিতে দেশীয় শতাধিক গরু লালন-পালনে ১২জন শ্রমিক পর্যায়ক্রমে কাজ করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গরু পাচারকারীদের তৎপরতায় করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক
এই খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, 'খামারটিতে অনেক টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি কারণে আমরা চিন্তিত কিভাবে গরুগুলো বিক্রয় করবো। যদি এইবার হাট না বসে তাহলে অনেকটা লোকসান গুণতে হবে আমাদের।’
দক্ষিণ পৈরতলার তিন রাস্তার মোড়ে আলী আযম ডেইরি খামার। খামারটিতে বড় ছোট মিলিয়ে প্রায় ৪০টির মতো গরু রয়েছে। রয়েছে অসংখ্য মহিষ ও গাড়ল। এই খামারে সর্বোচ্চ গরুর মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। প্রতি বেলায় পাঁচ জন শ্রমিক খামারটিতে কাজ করেন। এই খামারের প্রায় ৩০ বছর ধরে কাজ করছেন তাজু মিয়া
তিনি বলেন, ‘গরুগুলোকে তিন বেলায় খাবারে খড়, ঘাস, চিটা, গুড়, খৈল, ভুষি পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়। অনেক শ্রম দেয়া হচ্ছে গরু-মহিষগুলোর প্রতি। গত বছর করোনার মাঝেও পশুর হাট বসেছিল। কিন্তু এবার ঈদের আগে যে পরিস্থিতি তাতে হাট না বসলে মালিকের অনেক টাকা লোকসান হবে।’
খামারটির মালিক আলী আযম বলেন, ‘ঈদের ছয় মাস আগে থেকেই পশুগুলোকে অধিক যত্ন সহকারে লালন পালন করা হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এইবার গরু কম তুলেছি। দেশের যে অবস্থা করোনার মহামারিতে সব খামারিরা একটা চাপা আতঙ্কের মাঝে রয়েছেন। সরকারকে আমাদের দিক বিবেচনা করে একটা পরিকল্পনা নিতে হবে।’
জেলা শহরের উত্তর পৈরতলার কাউসার এগ্রো ফার্মের মালিক শিল্পপতি কাউসার আহমেদ। খামারটির দায়িত্বে আছেন হাজী জালাল উদ্দীন। এই খামারে জেলার বড় বড় গরু রয়েছে৷ এখানে সর্বোচ্চ ১০ লাখ থেকে সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকার গরু রয়েছে। রয়েছে ফাইটার, খাসা, শাহিওয়াল, হারিয়ানা, নেপালী প্রজাতির ষাড় ও বলদ।
খামারে দায়িত্বে থাকা হাজী জালাল উদ্দীন জানান, খামারে এইবার তারা কম গরু তুলেছেন। তবে সবগুলো গরুই আকর্ষণীয়। খামারের বড় দু’টি বলদ রয়েছে, যা জেলার মধ্যে উচ্চতায় সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি তার।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনলাইনে গরুগুলো বিক্রয়ের প্রচারণা চালাচ্ছি। কিন্তু বাজারে দরদাম করে বিক্রয়ে আরও সুবিধা হয়। অন্যান্য বছর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা গরু কিনতে আসতেন খামারে। এই বছরের করোনা পরিস্থিতিতে তারা আসতে পারছেন না। যদি হাট নাও বসে, আমরা যেন গরুগুলো যেকোনও উপায়ে বিক্রয় করতে পারি সরকার সেরকম ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশা করছি।’
আরও পড়ুন: গরু ছিনতাই করতে না পেরে কৃষকের গলায় ছুরিকাঘাত !
এই বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুজ্জান জানান, এই বছর কোরবানি ঈদকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত আরও ১৩/১৪ হাজার পশু থাকবে।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো এবারও আমরা খামারিদের অনলাইনে পশু বিক্রয় করতে উৎসাহিত করছি। আমাদের ফেসবুক পেইজ রয়েছে। সেখানে খামারীরা পশুর ছবি দিচ্ছেন। আমরা এই পেইজ বুস্টিং করছি। গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ৬০ শতাংশ পশু অনলাইনে বিক্রয় হয়।’
হিলি বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।
করোনা ঝুঁকির মধ্যেও তিস্তা ব্যারেজে বিনোদন প্রেমীদের ভিড়
করোনার কারণে দর্শনীয় স্থানের বদলে তিস্তা নদীর তীর প্রকৃতি প্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ঈদ বিনোদনের অংশ হিসেবে করোনা ঝুঁকি উপেক্ষা করে নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ।
সুনামগঞ্জে ঈদের জামাতে করোনা থেকে মুক্তি পেতে দোয়া
সুনামগঞ্জের মসজিদে মসজিদে শনিবার আদায় হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ।
সিলেটে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত
মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মাঝে সিলেটের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মসজিদে আদায় করেছেন ঈদুল আজহার নামাজ। হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের প্রধান জামাত।
বঙ্গভবনে ঈদের নামাজ পড়লেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শনিবার বঙ্গভবন দরবার হলে পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।
গ্রিসে বাংলাদেশ কমিউনিটির ঈদুল আজহা উদযাপন
উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গ্রিসে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারির মাঝে উদযাপিত হচ্ছে ত্যাগের মহিমাময় ঈদুল আজহা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে পালন করা হচ্ছে দেশের মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ঈদ উদযাপনে বিরাজ করছে কিছুটা শঙ্কা।