ঠাকুরগাঁও
শ্বশুরবাড়ির টয়লেট থেকে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর যুবকের লাশ উদ্ধার
ঠাকুরগাঁও সদরে শ্বশুরবাড়ির টয়লেট থেকে ২৫ বছর বয়সী ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কমল কিসকু উপজেলার জগনাথপুর ইউনিয়নের বড় খোচাবাড়ি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী মার্কেট এলাকার সম কিসকুর ছেলে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে আবর্জনা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চন্দন কুমার জানান, গত এক সপ্তাহ আগে কৃষ্ণপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি আসেন কমল কিসকু। সোমবার রাতে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল তার। তাই তিনি ব্যাগও গুছিয়ে রেখেছিলেন। এক সময় শ্বশুরবাড়ির স্বজনরা তার সেই ব্যাগটি বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। এদিকে, দীর্ঘক্ষণ টয়লেটের দরজা বন্ধ থাকায় ও গেট ধাক্কাধাক্কি করেও সাড়া না পাওয়া টয়লেটের দরজা ভেঙে কমল কিসকুর সেখানে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।
লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় ৩ মামলা, আসামি ৮০০
জেলার রাণীশংকৈলের বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতা ও শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ৮০০ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে।
শনিবার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. খতিবর রহমান থানায় অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু হয়। উক্ত মামলায় আসামি ৩৫০ জন। পরে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ৪৫০ জনকে আসামি করে আরও দুটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত বুধবার রাতে ভোট গ্রহণের পর আসার পথে মীরডাঙ্গী বাজারের দক্ষিণে পুলিশের ওপর হামলা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এই ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার এএসআই বিলাশ চন্দ্র রায় ২০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। একই ঘটনায় রাণীশংকৈল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আহাদুল জামান আলী ২৫০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে আর একটি মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে শিশু নিহত
এছাড়া প্রিজাইডিং অফিসারের দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিবেসে রুজু করা হয়েছে বলে জানান এসপি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন। বেশিরভাগ লোক দোকান-পাট বন্ধ রেখেছেন।
তবে পুলিশ সুপার জানান, যারা এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত নন তাদের কোনো ভয় নেই।
এর আগে, গত বুধবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পুলিশের ছোড়া বুলেটের আঘাতে রানীশংকৈল উপজেলার মীরডাঙ্গী গুচ্ছ গ্রামের মোহাম্মদ বাদশার আট মাসের কন্যা শিশু সুরাইয়া মারা যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী সহিংসতায় মেহেরপুরে সহোদর ‘খুন’
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামকৃষ্ণ বর্মণ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পীরগঞ্জ সার্কেল) আহসান হাবীবসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে গোরস্থান থেকে ১৯ টি কঙ্কাল চুরি
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে একটি গোরস্থানের ১৯টি কবর থেকে রহস্যজনকভাবে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার পৌর-শহরের পীরডাঙ্গী গোরস্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। এলাকাবাসী ফোনে ৯৯৯ এর কলের মাধ্যমে পুলিশে খবর দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
গোরস্থানে কবর দিতে আসা প্রত্যক্ষদর্শী ময়নুল ইসলাম জানান, আমি আমার আত্মীয়ের দাফন সম্পন্ন করার জন্য গোরস্থানে আসি। দাফন সম্পন্ন করে যাওয়ার সময় আমিসহ অন্যান্যরা দেখতে পাই একসাথে অনেকগুলো সাদা কাফনের কাপড় পড়ে আছে। আমরা আরও কিছু লোককে ডেকে নিয়ে আসি এবং কাছাকাছি গিয়ে দেখি অনেকগুলি কাফনের কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় পড়ে রয়েছে আর কবরগুলির ঘেরাও দেয়া বাঁশের বেড়া ভাঙ্গা। এছাড়াও প্রতিটি কবরই প্রায় খোড়া অবস্থায় রয়েছে। এভাবে ১৯ টি কবর খোড়া অবস্থায় রয়েছে। তখন আমরা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানাই।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে লোকজন দ্রুত কবরস্থানে এসে নিজ নিজ স্বজনের কবর দেখার জন্য গোরস্থানে ভিড় করছেন। চুরি হওয়া কবর গুলোর পাশে গামছা, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট ও টি শার্ট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কংকাল চুরি করার উদ্দেশ্যে কবরে গর্ত করা হয়েছে এবং কবরে ঢুকার সময় এসব কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে।
শনিবার অপরাহ্নে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন, পীরগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুল হাসান, পীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিব ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে পৌর কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
ইউপি নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে শিশু নিহত
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থামাতে গিয়ে পুলিশের ছোড়া গুলিতে দুই বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে।
বুধবার উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ভাংবাড়ি কেন্দ্রে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম আশা। সে উপজেলার মিডডাঙ্গী বাজার এলাকার বাদশাহের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভোটের ফলাফল দেখতে শিশুটিকে কোলে নিয়ে ওই কেন্দ্রে যান তার মা। এসময় ফলাফলকে কেন্দ্র করে মেম্বার প্রার্থী জলিল-ফয়জুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এসময় গুলিটি শিশুর মাথায় লাগে। এতে তার মাথার খুলি উড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি।
পরে বিক্ষুব্ধ জনতা শিশুর লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে একটি শিশু মারা গেছে। স্থানীয়রা ভোটের ফলাফল আনতে বাধা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে আহত আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু
বগুড়ায় পুলিশের গুলিতে ২ ডাকাত আহত, অস্ত্রসহ আটক ৬
ঠাকুরগাঁওয়ে বস্তাবন্দি মাদরাসাছাত্রী উদ্ধার
ঠাকুরগাঁওয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাহফুজা খাতুন (১৫) নামে এক মাদরাসাছাত্রীকে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার সময় ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের টাঙন নদীর পাড় থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া মাহফুজা খাতুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের ক্বারী মৃত মোস্তফা কামালের মেয়ে। তিনি ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের খাতুনে জান্নাত কামরুন্নেছা কওমী মহিলা মাদরাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, সকালে টাঙন ব্রিজের নিচে বস্তাটি মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেলে স্থানীয়দের মনে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বস্তাবন্দি লাশ ভেবে এগিয়ে গিয়ে বস্তার মুখ খোলে। এসময় ওই কিশোরী নড়াচড়া করলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। টাঙন নদী সংলগ্ন খালপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয় মহন্ত অলক বলেন, নদীর ব্রিজের নীচে একটি বস্তার ভিতরে একটি মেয়েসহ পড়ে থাকতে দেখে আমাকে একজন মোবাইলে ফোন করে জানান। আমরা প্রথমে মনে করেছিলাম মেয়েটি মারা গেছে। পরে ছবি তোলার জন্য একটু কাছে গিয়ে দেখি বস্তাটি নড়ে উঠল। তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের বস্তাটি খুলতে বললাম। বস্তা খোলার পর দেখা গেল মেয়েটি বেঁচে আছে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: উজিরপুরে নিখোঁজের ৪ দিন পর শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
মাহফুজা খাতুনের বড় বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমার বোন টাঙন নদীর পাশে এক মাদরাসায় পড়াশোনা করে। ঘটনা কি ঘটেছে জানি না।
মাহফুজার মা সালমা খাতুন জানান, এর আগে গুলজার নামের এক ছেলে আমার মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল। কিন্তু পরে সেই ছেলে আমার মেয়েকে ছেড়ে চলে যায়। সেই ছেলেই আমার মেয়ের ক্ষতি করার জন্যে এমনটা করতে পারে।
খাতুনে জান্নাত কামরুন্নেছা কওমী মহিলা মাদরাসার মুহতামিম হযরত আলী বলেন, স্বাভাবিক নিয়মের মতো রাত ১১টায় সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। ফজরের নামাজের সময় তাকে রুমে দেখতে না পেয়ে সহপাঠীরা তাকে খোঁজাখুঁজি করে। তার অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়। সকালে টাঙন নদীর পাড়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় তাকে পাওয়া গেলে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানতে পারি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার পরিদর্শক (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, মাহফুজা শহরের একটি মাদরাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করে। মেয়েটির সাবেক স্বামী তার দলবল নিয়ে রাত আনুমানিক ২-৩টার দিকে কৌশলে মাদরাসা থেকে তাকে বের করে নিয়ে আসে। পরে নির্যাতন করে তাকে বস্তাবন্দি করে টাঙন নদীর পাড়ে বাঁধের ঢালে ফেলে রাখে। কয়েক ফুট দূরেই ছিল গভীর নদী। সকালে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি কামাল হোসেনে আরও বলেন, বস্তার ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া মেয়েটি বলছেন যে, তার সাবেক স্বামীসহ আরও কয়েকজন তাকে প্রলোভন দেখিয়ে রাতে মাদরাসা থেকে বের করে আনে ও টাঙ্গন ব্রিজের নীচে বস্তায় ভরে রেখে চলে যায়। কিন্তু তারা তাকে কোন প্রকার নির্যাতন করেনি। ওই মেয়েটির এমন স্বীকারোক্তি বা বক্তব্য রহস্যজনক। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে তরুণের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
অল্প বৃষ্টিতে উদ্বিগ্ন ঠাকুরগাঁওয়ের পাট ও আমন চাষিরা
ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির অভাবে খরার মতো পরিস্থিতির কারণে সময়মতো পাট কাটা ও আমন চাষ ব্যাহত হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জেলার আমন ও পাট চাষিরা।
উর্বর মাটির কারণে এ জেলায় ধান, পাট, ভুট্টা, গম ও আখের প্রচুর চাষ হয়। কিন্তু এ বছর বর্ষাকালেও বৃষ্টি না হওয়ায় প্রাকৃতিক আঁশ পচানো ও প্রক্রিয়াজাত করতে সমস্যায় পড়েছেন পাট চাষিরা।
পর্যাপ্ত পানি না থাকায় জাগ দিতে না পারায় পাট চাষিরা তাদের পাট কাটাচ্ছেন না। প্রতি বছর এই মৌসুমে তারা পাট কাটান এবং পচানোর জন্য পানির নিচে রাখেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
তারা জানান, এখন পাট না কাটা হলে আমন চাষিরা একই জমিতে সময় মতো আমন ধান চাষ করতে পারবে না। এতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা: হাটের জন্য প্রস্তুত ঠাকুরগাঁওয়ের ‘বারাকাত’
জেলার আমন চাষিরা অনেকাংশেই বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ আমনের জমিতে সেচের ব্যবস্থা নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে যা গত বছর ছিল ১ হাজার ২২২ হেক্টর।
সাধারণত কৃষকরা ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই আমন ধান চাষ করলেও এ বছর জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারেননি।
সদর উপজেলার কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘জুন মাসে বৃষ্টি হয়েছে। আমন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি কিন্তু এখন বৃষ্টির কোনো লক্ষণ নেই।’
রহমত নামে এক পাট চাষি বলেন, সব খাল-বিল শুকিয়ে গেছে এবং পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় পাট কাটাতে ব্যর্থ হয়েছি।
ঠাকুরগাঁওয়ে রূপান্তরিত নারীর লাশ উদ্ধার
ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার কহরপাড়া থেকে বৃহস্পতিবার ৩৯ বছর বয়সী এক রূপান্তরিত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতের নাম বৃষ্টি। তিনি ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য নির্মিত ‘উত্তরণ আশ্রয়ণ’ গুচ্ছগ্রামের একটি ঘরে থাকতেন।
আরও পড়ুন: বরগুনায় সমুদ্রসৈকতে নিখোঁজ এনএসআই কর্মকর্তা ও ভাগনির লাশ উদ্ধার
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।
‘তিনি তার জীবন শেষ করেছেন নাকি আত্মহত্যা করে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্তের পরই স্পষ্ট হবে’ বলেও জানান ওসি।
ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু’জন।
শনিবার সকালে বালিয়াডাঙ্গী-লাহিড়ী সড়কের গোয়ালকারী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মুন্নি আকতার ওই এলাকার সাদেকুল ইসলামের মেয়ে ও বালিয়াডাঙ্গী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আহত দু’জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম ডন জানান, সকালে একটি মোটরসাইকেল লাহিড়ী থেকে বালিয়াডাঙ্গী যাওয়ার পথে পেছন থেকে শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী দুজন গুরুতর আহত হয়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বেলচার আঘাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাঙামাটিতে বজ্রপাতে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
গ্রীষ্মে ফলে ভরা মৌসুমে খেতে সুস্বাদু তালশাঁসেরও চাহিদা রয়েছে। তীব্র গরমে তালশাঁস প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। তবে দেশের অনেক জেলায় তালের চাহিদা বেশি না থাকায় তাল ছোট থাকতেই শাঁস বিক্রির জন্য এগুলো ঠাকুরগাঁওসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে নিয়ে আসে ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, তালশাঁসের চাহিদা প্রচুর থাকায় প্রত্যেক ব্যবসায়ী তা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হন। এ বছরও শহরের আমতলীর মোড়ে তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার খালাতো ভাই নাদিম বগুড়া আদমদিঘি থেকে এসেছি। সেখানে আমরা প্রতি বছর তালের বাগান কিনে থাকি। বাগানে প্রায় ১৩০-১৫০টি তালগাছ থাকে। এক থেকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাগান কিনে তা থেকে তাল ছোট থাকতেই আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা অনুসারে বিক্রি করে থাকি। এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি। প্রতি পিস বড় তাল ৩০ টাকা ও ছোট তাল ২০ টাকা বিক্রি করছি। বিক্রিও হচ্ছে ভালো।
শহরের হাজীপাড়া মহল্লার গৃহিণী ক্রেতা শাহনাজ পারভীন বলেন, প্রতি বছর এ সময়ে এটা পাওয়া যায়। খেতে অনেক সুস্বাদু ও ভালো লাগে। প্রতি পিস তাল থেকে দুই থেকে তিনটি শাঁস পাওয়া যায়। প্রতি পিস বড় তাল ৩০ টাকা ও ছোটগুলো ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছর দামটা একটু বেশি।
আরও পড়ুন: বাড়িরপাশে মরিচের আড়ৎ, ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক
পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার ছাত্রী সুবাহ তাহসিন বলেন, তালশাঁস আমাদের পরিবারের সকলে পছন্দ করে। প্রত্যেক আটি গত বছর ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দামটা আরেকটু কম হলে আরও বেশি পরিমাণে কেনা যেত।
তালশাঁস বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী নাদিম বলেন,বেশ কয়েকদিন হলো বগুড়া থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি। বগুড়ার আদমদিঘি এলাকায় বেশ কয়েকটি তাল বাগান থেকে তাল কিনে এখানে বিক্রি করছি। পর্যাপ্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রচুর ক্রেতা সমাগমও হচ্ছে। প্রতিদিন তাল বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে ৭০০ টাকা লাভ হয়।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল তালশাঁসের উপকারের বিষয়ে বলেন, এটি অনেক ভালো একটি জনপ্রিয় ফল। তালশাঁসে এমন কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তালশাঁস পানিশুন্যতা দূর করতে সহায়তা হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করে, হাড়ের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
এছাড়াও তালশাঁসে ভিটিামিন এ, সি ও বি কমপ্লেক্স রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। সর্বোপরি ত্বক সুন্দর, উজ্জ্বল ও দীপ্তময় করে তুলতে নিয়ম করে তালের শাঁস খাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা, আটক ১
ঠাকুরগাঁওয়ে তিনটি অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় শনিবার (২৮মে) বিকেলে এ অভিযান পরিচালনার সময় একজনকে আটক করা হয়।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে এ ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান।
এসময় জেলা শহরের পাঁচটি ক্লিনিকে তারা অভিযান পরিচালনা করেন। পরে বিভিন্ন অনিয়ম ও নিবন্ধনহীন ক্লিনিকে কাগজপত্র না থাকায় মেডিনোভা ডক্টরস জোন এন্ড ডায়াগস্টিক সেন্টার, নিউরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও উত্তরা ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই তিনটি প্রতিষ্ঠানে সিলগালা করা হয়। সে সময় আটক করা হয় একজনকে।
অভিযান চলাকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিবন্ধনহীন এবং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই চলছে রমরমা ব্যবসা। স্বাস্থ্য সেবার নামে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে রোগীরা। সরকার স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পর থেকেই জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার তদারকিতে স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করাসহ বন্ধ করা হবে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনিবন্ধিত ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের