ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার, হাসপাতাল সিলগালা
ঠাকুরগাঁওয়ের একটি হাসপাতাল থেকে একজন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
শনিবার দুপুরে পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ‘আমাদের হাসপাতাল’ নামের এক হাসাপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে ওই হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমান আদালত।
গ্রেপ্তার ভুয়া চিকিৎসকের নাম শরিফুল ইসলাম (৩৯)।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শামছুজ্জামান আসিফ তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
শরিফুল ইসলাম নিজেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বেলঘরিয়া থানার নন্দনপুর আমতলা গ্রামের আমির শেখের ছেলে বলে তথ্য দেয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার দেওয়া ভারতের ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব না হয়নি। তবে তার কথা-বার্তায় ধারণা করা হচ্ছে শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার অধিবাসী।
আরও পড়ুন: বরিশালে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক
জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবত ঠাকুরগাঁওয়ের আমাদের হাসপাতালে জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ব্রেইন স্পাইন নার্ভ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন তিনি। ওই ভুয়া চিকিৎসক তার নেমপ্লেটে ভারতের রাজীব গান্ধী স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করেন। সেখানে নাম কিছুটা পাল্টিয়ে ডা. শারিফুল ইসলাম উল্লেখ করে প্রতারণা করে আসছিলেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শামছুজ্জামান আসিফের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁও আনসার ব্যাটালিয়ন-১, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর তাকে আটক করা হয়।
মেডিকেল অফিসার ইফতেখারুল ইসলাম জানান, আটককৃত ব্যক্তির সকল সনদ ভুয়া। তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। আটক ভুয়া ডাক্তারের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তার এসএ সি ও এইসএসসি সনদ ভিন্ন নামে রেজিষ্ট্রেশন করা। তাকে দুই বছরের জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে কারাদণ্ড
ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টাখেত থেকে মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি ভুট্টাখেত থেকে এক মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ মে) সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. মুরাদ হোসেন (১১) সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের গিলাবাড়ি গ্রামের দারুল ইসলামের ছেলে এবংমাদারগঞ্জ হাফেজিয়া মাদরাসা ‘খররা’ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের ছাত্র ।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে নারীসহ দুইজনের লাশ উদ্ধার
পুলিশ জানায়, মুরাদ ওই মাদরাসার আবাসিক শাখার ছাত্র। বুধবার আসরের নামাজ আদায় করে সে। এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা। মাদরাসার লোকজন তার বাড়িতে খবর দেয় এবং সকলে মিলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার লোকজন ভুট্টাখেতে কাজ করার সময় তার লাশ দেখতে পায়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আলামত সংগ্রহ করে।
মাদরাসার পাশের একটি বাঁশঝাড়ে তার পরনের রক্তাক্ত কাপড়-চোপর পড়ে ছিল। সেখানেই তাকে হত্যা করে পাশের ভুট্টাখেতে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। তদন্ত চলছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে আকদ এর ১৫ দিনের মাথায় তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার!
তিউনিসিয়া উপকূল থেকে ৪১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর লাশ উদ্ধার
‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
দেশের উত্তরের কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার আবহাওয়া অন্য জেলার তুলনায় আলাদা বলে প্রায় সব ধরনের শস্য, সবজি ও ফলের আবাদ হয় এখানে।
এছাড়া এখানকার উৎপাদিত খাদ্য শস্য ও সবজিসহ নানা রকম ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো।
এবার মধ্যপ্রাচ্যের ফল শাম্মাম চাষে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল ইসলাম।
কৃষক মণ্ডল ইসলাম জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করেন তিনি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো। মূলত লাভের আশায় তিনি এই ফলটি চাষ শুরু করেন। তিন বিঘা জমিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের আশা করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে ‘শাম্মাম’ বিক্রি করতেন, এখন খেত থেকেই পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মণ্ডল ইসলামের খেত থেকে ‘শাম্মাম’ কিনতে আসা পাইকার মইদুল বলেন, এ বছর প্রথমবার আমি শাম্মাম ফলের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। এখনও স্থানীয়ভাবে এই ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে নতুন এই ফলটি ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শাম্মাম বা রকমেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে চার কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ফলটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে খেত থেকে এই ফলটি কিনেছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন, অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদাও পুরণ হবে। বাজারেও যুক্ত হবে এই নতুন ফলটির। আমাদের দেশে এটি নতুন হলেও সুপারশপ গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও ‘শাম্মাম’ চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া ‘শাম্মাম’ চাষে উপযোগী।
এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চিয়া সিড
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয় একটি ফলের নাম ‘শাম্মাম।’ অনেকেই এই ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন।
ইউটিউবে দেখে এই শাম্মাম ফলটি বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মণ্ডল ইসলাম।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই মণ্ডল ইসলাম।
পীরগঞ্জের তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলটির চাষ শুরু করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবছর সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক প্রথম শাম্মাম চাষ শুরু করেন।
এছাড়া এবার জেলায় মোট দুই একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।
‘শাম্মাম’ নামের এই ফলটির চাষ সচরাচর ঠাকুরগাঁও জেলায় করতে দেখা যায় না। এই ফলটি চাষ করতে খরচ একটু বেশি হয়। মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলের চারা রোপণ করা হয়।
আর ছিদ্রকরা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠে ‘শাম্মাম’ ফলের গাছ। চারা রোপণের মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ‘রকমেলন বা শাম্মাম’ ফল কর্তন (হারভেস্ট) করে বাজারে নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বোরো চাষের আওতায় ২০০ বিঘা জমি
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের এমডিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
লিজ নেওয়া খেজুর বাগানের মেয়াদকাল শেষ না হতেই একই বাগান পুনরায় দরপত্র আহ্বান করায় ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহজাহান কবির ও খামার পরিচালক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মনিরুজ্জামান মনির নামে এক ব্যক্তি।
গত বছরের ২৫ শে এপ্রিল ঠাকুরগাঁও সুগার মিল সদরের নারগুন ইউনিয়নের মোহন কৃষি খামারের বোচাপুকুর শাখার ৪৭০টি খেজুর গাছের রস আহরণের জন্য ভ্যাট ও আয়করসহ এক লাখ ৮২ হাজার ১১০ টাকায় বাগানটি লিজ নেন ওই এলাকার রমিজ উদ্দিনের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির।
যার মেয়াদকাল ছিলো চলতি বছরের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কিন্তু সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির বাগানের মেয়াদ শেষ না হতেই আট মাস আগেই পুনরায় ওই বাগানের দরপত্র আহ্বান করেন চলতি মাসের ৪ এপ্রিল।
গত বুধবার মনিরুজ্জামান মনির এ মামলাটি করেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা জানিয়েছে এমএসএফ
আদালত বাদির অভিযোগটি আমলে নিয়ে সুগার মিল কর্তৃপক্ষের চলতি মাসের ৪ এপ্রিলের ঘোষিত দরপত্রটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং সেই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে বিবাদিকে দরপত্রের বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেন।
কিন্তু আদালতের এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমডি তার মতো করে টেন্ডার সিডিউল বিক্রি ও গ্রহণ করেন।
মনিরুজ্জামান মনির জানান, ঠাকুরগাঁও সুগার মিল কর্তৃপক্ষ কোন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে আমার লিজ নেয়া খেজুর বাগানটি নতুন করে লিজ প্রদানে দরপত্র আহ্বান করে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিষয়টি আমি জানতে পেরে মিল কর্তৃপক্ষকে বন্ধের অনুরোধ করা হলেও কর্ণপাত করেননি তারা।
তিনি আরও বলেন, ধার-দেনা করে বাগান লিজ নিয়েছি। সময়ের আগেই অন্য কাউকে লিজ দিলে চরম ক্ষতির মুখে পড়বো আমি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি এবং ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও খামার পরিচালক এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম জানান, সুগার মিল কর্তৃপক্ষ নতুন করে যেন লিজ প্রদান করতে না পারে সে কারণে আদালত একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পাশাপাশি মামলাটি চলমান রয়েছে।
সুগারমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহজাহান কবির দরপত্র আহ্বানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আদালতের কাগজটি দুই দিন আগে হাতে পাওয়ায় টেন্ডার প্রক্রিয়াটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে লিজ দেওয়া হবে কি না তা পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সাবেক ডাকসু ভিপি নূরের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলা খারিজ
ফেনীতে বিদ্যুৎ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০০ জনের নামে মামলা, আটক ১
দাম ভালো থাকলেও তাপদাহে চিন্তিত ঠাকুরগাঁওয়ের মিষ্টিকুমড়া চাষীরা
উত্তরের কৃষি প্রধান এবং কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। আশেপাশের অন্য জেলাগুলোর তুলনায় এ জেলায় সব ধরনের ফসল ও সবজির চাষ হয় অনেক ভালো। মিষ্টিকুমড়ার চাষের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনা। এ জেলার মিষ্টিকুমড়া আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা রয়েছে সারা দেশব্যাপী।
তবে চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে মিষ্টিকুমড়া চাষ। দাম ভাল থাকলেও গাছের পাতা ও গাছ হলদে বর্ণ ধারণ করায় আশাতীত ফলন নিয়ে ভাবছেন কৃষকেরা। চলমান তাপদাহে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার মিষ্টিকুমড়া কৃষকেরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, এ বছর জেলায় মোট ৩ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যার মধ্যে শুধু মিষ্টিকুমড়ার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি। রবি জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ শেষে বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। গত বছরে ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছিল। এ জেলায় প্রধানত দুই ধরনের মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। এরমধ্যে রবি জাতের কুমড়া ইতোমধ্যে বাজারজাত হয়ে গেছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া খেতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওরে ৭০ ভাগ বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন কহরপাড়া এলাকার সফল চাষি ময়নুল ইসলাম জানান, গত মৌসুমের শুরুর দিকে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছেন তিনি। এ মৌসুমে ৩০ একর জমিতে কুমড়া লাগিয়েছেন তিনি। আর প্রায় এক মাসের মধ্যে মিষ্টিকুমড়া বিক্রি শুরু হবে। বর্তমানে বাজারে মণপ্রতি মিষ্টি কুমড়া সাতশ’ টাকা থেকে নয়শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার গড়েয়া এলাকার কৃষক মজিবর বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষ করেছি। গাছে ফুল এসেছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে কিছু কিছু গাছ হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য। আশা করছি, ফলন ভাল হলে ন্যায্য মূল্য পাব।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ জেলায় মিষ্টিকুমড়ার ভাল ফলন হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে খরিপ-১ জাতের মিষ্টিকুমড়ার আবাদ চলমান রয়েছে। বাজারে দামও ভাল রয়েছে। কৃষকদের মাঝে চলমান তাপদাহ নিয়ে সৃষ্ট নানা সমস্যা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে বেড়েছে খুলনার দাকোপের তরমুজের চাহিদা
ঠাকুরগাঁওয়ে গমের আবাদ কমেছে, বেড়েছে ভুট্টা চাষ
ঠাকুরগাঁওয়ে গমের আবাদ কমেছে, বেড়েছে ভুট্টা চাষ
দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এক সময় ব্যাপকহারে গম চাষ হলেও বর্তমানে অন্যান্য ফসলের তুলনায় গমের ফলন ও লাভ কম হওয়ায় গম চাষে কৃষকরা দিন দিন উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। এতে জেলায় গমের আবাদ কমে যাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ভালো হওয়ায় ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের আবাদ ভালো হলেও, গমের তুলনায় ভুট্টার ফলন এবং দাম বেশি পাওয়ায় বেশি করে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
আরও পড়ুন: খুলনায় লবণাক্ত পানির পতিত জমিতে ভুট্টা চাষে সাফল্য
চলতি বছরে দেখা যায় যে জেলার যে জমিগুলোতে অন্যান্যবার গম চাষ হয়েছিল, সেই জমিগুলোর অধিকাংশে এবার চাষ করা হয়েছে ভুট্টা।
জেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২০ সালে জেলায় গম চাষ হয়েছিল ৫০ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে, উৎপাদন হয়েছিল দুই লাখ ৭ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন এবং ২০২২ সালে চাষ হয়েছিল ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে আর উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৭১ মেট্রিক টন।
তা কমে এবছর ২০২৩ সালে চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৬৫৭ হেক্টর জমিতে ও উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৭৯ মেট্রিক টন গম।
ঠাকুরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নুনতোর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃত শিশুরা হলো-মুকবুল হোসেনের ছেলে সিয়াম (১০) এবং তাদের প্রতিবেশি মুক্তার হোসেনের ছেলে আল আমিন (১২)। ওই দুই শিশু হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: নাটোরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ধর্মগড় ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, পুকুরে পাশে খেলা করার সময় একজনের জুতা পানিতে পড়ে গেলে জুতা তুলতে গেলে একজন গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। অপরজন গামছার সাহায্যে বন্ধুকে পানি থেকে তুলে আনার চেষ্টা করে, কিন্তু সেও পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে পুকুরে নেমে তাদের খোঁজাখুঁজি করে। স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের চেষ্টায় দুই জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গুলফামুল ইসলাম মণ্ডল জানান, আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বালতির পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
মাদারীপুরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
হরিপুরে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- দিলগাঁও গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে সোহাগ (৩০), খতিবের ছেলে দুলাল হোসেন (২৭), মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে ফজিল উদ্দিন(৫০), ফজিল উদ্দিনের ছেলে মোকলেসুর রহমান(২৩), মৃত শফিউল্লাহর ছেলে আব্দুল্লাহ (৪৯), ফজিল উদ্দিনের ছেলে রুবেল ইসলাম (২৯) ও মৃত আফতাব উদ্দিনের ছেলে হামিদুর রহমান(৫২)।
জানা যায়, গত বুধবার (১২ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের দিলগাঁও গ্রামে উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক মামলার এজাহার নামীয় আসামি মাইনুদ্দিন ওরফে ছোটনকে (২৯) তার বাড়ি থেকে আটক করার সময় সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছোটন চিৎকার করে লোকজনকে ডাকতে থাকে ও পুলিশের হাত থেকে তাকে রক্ষা করার জন্য চেঁচামেচি করে। এসময় এজাহার নামীয় ২৫ জন আসামিসহ আরও ৩০/৪০ স্থানীয় লোক পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ের ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
এঘটনায় এসআই রাশেদুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্য আব্দুর রশিদ আহত হয়। খবর পেয়ে হরিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় হরিপুর থানায় রাতেই ২৫ জনের নাম উল্লেখ এবং ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দিলগাঁও গ্রাম থেকে এজাহার নামীয় সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। চিরুনি অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগ, ৪ যুবক গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁওয়ে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আটক ১
ঠাকুরগাঁওয়ের ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪ বছর করাদণ্ডপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন ধরে পলাতক আসামি আবুল কালাম আজাদকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে সোমবার (৩ এপ্রিল) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আবুল কালাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগ, ৪ যুবক গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চন্দন কুমার ঘোষ জানান, আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় আটটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ মামলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা।
তিনি আরও জানান, একটি মাদক মামলায় আদালত তার ১৪ বছরের সাজা তিলে তিনি ঢাকায় পালিয়ে যান এবং সেখনেই বসবাস করে আসছিলেন।
পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঠাকুরগাঁও নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে বিদেশি পিস্তল ও মাদক জব্দ, যুবক গ্রেপ্তার
র্যাব হেফাজতে সুলতানার মৃত্যু: কথিত সহযোগী আল আমিন গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ, দাম আকাশচুম্বী
ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ উঠেছে। তবে মৌসুমি এ ফলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারছেন না।
পৌর শহরের কালিবাড়ি, কোট চত্বর, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, সত্যপীর ব্রিজ, গোধূলি বাজার, মন্দিরপাড়া, ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায় তরমুজের অস্থায়ী বাজার।
পৌর শহরের বিভিন্ন বাজারে তরমুজের বাজারদর ছিল কেজি প্রতি প্রায় ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। এখন দাম কিছুটা কমে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে কেজি দরে গোটা তরমুজ।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনা
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় উৎপাদনকৃত তরমুজ এখনও বাজারে ওঠেনি। ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রমজানকে টার্গেট করে তরমুজ ঠাকুরগাঁওয়ে এনে বিক্রি করছেন। প্রতিটি তরমুজ ১০ থেকে ১৫ কেজি বা এর চেয়েও বেশি ওজনের। ফলে প্রতি ১০ কেজির তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। এই দামে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা কিনতে পারছেননা। আর তাই বাজারে তরমুজের বেচা-কেনাও কম।