কক্সবাজার
সেন্টমার্টিনে ভেসে এলো অর্ধগলিত ২ লাশ
কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে জোয়ারে ভেসে আসা অজ্ঞাত পরিচয় দুইজনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে হুলবুনিয়ার সমুদ্রসৈকত থেকে অর্ধগলিত লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
একজনের বয়স আনুমানিক ৩৫ ও আরেক জনের ২৮ বছর বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পেকুয়ায় পানিতে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ ৩ শিশুর লাশ উদ্ধার
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দ জুবায়ের।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে জোয়ারের সময় অর্ধগলিত দুইটি লাশ ভেসে আসে। তবে এখনও পরিচয় জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সমুদ্রের কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তারা।
তিনি আরও বলেন, লাশ দুটির ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে নিখোঁজের একদিন পর ডোবা থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
পানি নেমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ায় দুই দিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে এখনও বান্দরবানের সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ ইরফান জানান, পানি নেমে যাওয়ায় সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দুয়েক জায়গায় পানি রয়েছে, বৃষ্টি না হলে দুপুর নাগাদ তাও কমে আসবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর যুবকের লাশ উদ্ধার
গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও লোহাগাড়া উপজেলার রাস্তা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়নের বড়পাড়া কসাইপাড়া থেকে সাতকানিয়ার কেরানী হাট কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়।
চন্দনাইশ কলেজ গেট এলাকা থেকে কেরানিহাট অংশে সড়কে পানি বাড়তে শুরু করলে সোমবার রাতে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়। পরে রাত ৩টার পর থেকে যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়, তাতে দুর্ভোগে পড়েন বয়স্ক ও শিশুসহ অন্য যাত্রীরা।
গত দুই দিন কিছু কিছু যানবাহন বিকল্প সড়ক বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম শহরে আসা-যাওয়া করছিল।গতকাল থেকে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পানি সরে যাওয়ার পর আজ সকাল থেকে স্বাভাবিক হয়েছে যানবাহন চলাচল।
সাতকানিয়ার কেরানী হাটের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এখনও চন্দনাইশ সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ রয়েছে। জনজীবন স্বাভাবিক হতে আরও ২/৩ দিন লাগবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু
চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় উন্নতি হতে পারে: এফএফডব্লিউসি
চকরিয়ায় সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯আগস্ট) রাত ১০টার দিকে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বহদ্দারকাটা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ভাই চকরিয়ার বিএমচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বহদ্দারকাটা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাহাদাত হোসেন (৫০) ও শহিদুল ইসলাম (২২)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মোহাম্মদ জাবেদ।
আরও পড়ুন: বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী চিকিৎসক নিহত
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মোহাম্মদ জাবেদ জানান, ট্যাংক ভর্তি হওয়ায় তারা দুই ভাই পরিষ্কার করতে নামে। প্রথমে ছোট ভাই ট্যাংকে নামেন। কিন্তু অক্সিজেন সংকটে পড়ে তিনি উঠতে পারেননি। তাকে বাঁচাতে নেমে বড় ভাইও অক্সিজেন সংকটে পড়েন।
পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে দুই ভাইকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক গোলাম মাওলা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, দুই ভাইয়ের লাশের সুরাতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় বাইসাইকেল চালক নিহত
কুতুবদিয়ার বিচ্ছিন্ন জীবনে গতি আনছে বিদ্যুৎ
বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা হলো কুতুবদিয়া। প্রায় ২১৫ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে কুতুবদিয়া দ্বীপ।
এপ্রিল মাস থেকে ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২১৫ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুতুবদিয়া দ্বীপের প্রায় ২ লাখ মানুষের জীবনধারা অনেক বদলে গেছে।
যে দ্বীপটি সন্ধ্যার সময় অন্ধকারে ডুবে যেত, সেখানে এখন ঝলমলে বিদ্যুতের আলো রয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপবাসী বিদ্যুৎ সংযোগ সুবিধা পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে: চীনা কর্মকর্তা
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে মগনামা ঘাট পর্যন্ত ৩৩ কেভি লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশে ফাইবার অপটিকসহ পাঁচ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণ করে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে কুতুবদিয়ায় প্রায় ২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি দ্বীপে গিয়ে কুতুবদিয়ার ঘর-বাড়িতে আলোকসজ্জা দেখা গেছে। বিদ্যুতের কারণে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নও হচ্ছে।
স্থানীয় কিশোর রফিক, সেলিম ও আজিজুল এর আগে কখনো আইসক্রিম খায়নি।
কৃষক মনজুর আলমের একটি মোবাইল ফোন ছিল, কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় সেটি চার্জ দিতে পারতেন না।
বিদ্যুৎ-আসায় বর্তমানে কুতুবদিয়ার মানুষের জীবনধারা ‘বিদ্যুতের গতিতে’ বদলে গেছে।
এমনকি কয়েক মাস আগেও সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের ঝুঁকি নিয়ে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে যাওয়া হতো চকরিয়া বা কক্সবাজারে। কিন্তু এখন আর সাগর পাড়ি দিতে হবে না।
দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার পর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে একটি অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়েছে।
এছাড়া লবণ চাষ কুতুবদিয়া উপজেলায় একটি সাধারণ কাজ। এখানে রয়েছে একটি বাতিঘর, সমুদ্র সৈকত এবং কুতুব আউলিয়ার মাজার।
আরও রয়েছে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। যেখান থেকে অবিশ্বাস্য সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
এছাড়া এই দ্বীপের আরেকটি আকর্ষণ হল সি-গাল।
কুতুবদিয়ার বাসিন্দারা জানান, আগে দ্বীপটি আর্থ-সামাজিক অবস্থার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। আধুনিক কৃষি শিক্ষা বা চিকিৎসা সেবার কোনো সুযোগ ছিল না।
তারা জানান, সরকার দ্বীপে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবস্থা করেছে। কুতুবদিয়াবাসী এখন বুঝতে পারছেন বিদ্যুৎ কতটা জরুরি।
এছাড়া শিল্প, কোল্ড স্টোরেজ, ব্যবসাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এদিকে রাস্তার আলো যাতায়াতের পথকে সহজ করে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
তারা আরও জানান, দ্বীপে উৎপাদিত মাছ, শুকনো ফল, লবণ, তরমুজ, সুপারিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হচ্ছে। দ্বীপবাসী আশা করছে পর্যটনের দ্রুত প্রসার ঘটবে।
হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপের জন্য একটি ১০০ শতাংশ নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই বিদ্যুতায়ন প্রকল্প। যা ২০২০ সালে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই কুতুবদিয়া দ্বীপে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১
মনোয়ারখালী গ্রামের কৃষক মনজুর আলম বলেন, আগে তেল দিয়ে জেনারেটর চালিয়ে মোবাইল চার্জ দিতাম। তেল না থাকলে আমাকে অন্যের বাড়িতে গিয়ে সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ করতে হতো। এখন আমার ঘরে বিদ্যুৎ আছে।
আরস সিকদারপাড়ার ৬৪ বছর বয়সী বজল করিমের বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে এক মাস হলো।
তিনি বলেন, আমি এখন আমার বাড়িতে একটি রাইস কুকার ব্যবহার করতে পারি। আমিও একটা ফ্রিজ কিনলাম। আমি এতে মাছ রাখতে পারি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান, গত এপ্রিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র ব্যবসার প্রতিও মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা সদরের বড়ঘোপ বাজারের ব্যবসায়ী করিম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কুতুবদিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেছে।
তিনি বলেন, কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ আসবে তা কখনো ভাবিনি। আমরা ১২ এপ্রিল রাত থেকে বিদ্যুৎ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জীবন দ্রুতই বদলে গেছে।
এদিকে কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশিখালী গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল আলমের বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলছে। এছাড়া বাড়ির লোকজন রঙিন টেলিভিশনে খবর দেখছেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের অভাবে শিশুরা বেশিক্ষণ অন্ধকারে ঘরে বসে লেখাপড়া করতে পারত না। এখন তারা কম্পিউটারও ব্যবহার করতে পারে।
জেলে জালাল আহমদ জানান, এতে অন্তত ৩৪ হাজার জেলে উপকৃত হবে। তিনিসহ কয়েকজন মাছ সংরক্ষণে হিমাগার নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কুতুবদিয়ার প্রবীণরা জানান, কোভিড-১৯ মহামারির সময় সারাদেশের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারলেও কুতুবদিয়ার শিক্ষার্থীরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, দ্বীপের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে রাতে কয়েক ঘণ্টা জেনারেটর দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালানো হয়। যদি জেনারেটর শৃঙ্খলার বাইরে ছিল, মোমবাতির আলোতে বিভিন্ন চিকিৎসা করা হয়েছিল। এখন সে অবস্থা নেই।
দ্বীপের বাসিন্দারা আরও জানান, বিদ্যুৎ পাওয়ায় তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ডিসেম্বরে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী: কর্মকর্তারা
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১
মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার ১১টা ৫৮ মিনিটে এটি জাতীয় গ্রিডে সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট ইউনিট-১ থেকে পরীক্ষামূলক প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধীরে ধীরে প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে।’
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে দুটি ইউনিট বিশিষ্ট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) এটি প্রতিষ্ঠা করে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এর অধীনে জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের সুবিধার্থে একটি গভীর সমুদ্র প্রকল্পও তৈরি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে কয়লা খালাসের জন্য ব্যবহৃত জেটির কাজ প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজ চলাচলও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৪ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়ীতে
প্রকল্পের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্লান্টটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ১৩ হাজার ১০৪ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এ জন্য কয়লা খালাসের জেটি ও সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে।
বিশাল সাইলোতে ৬০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা রাখা হয়েছে। ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার মাদার ভেসেল সরাসরি কয়লা জেটিতে প্রবেশ করতে পারে। আর মাদার ভেসেল থেকে কয়লা খালাস করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ বছরের ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক অ্যাশপন্ড রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর, অন্যটি ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড নির্মাণকরা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন এ প্রকল্পের একটি ঋণচুক্তি সই হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা এবং বাকি ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২০২৬ সালে শুরু হবে: খালিদ মাহমুদ
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জেটি ও ভৌত অবকাঠামোর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বোধনের আগে এখান থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে চাই। মাতারবাড়ী কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার কথা রয়েছে, তবে আমরা আশা করছি এই ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।’
তিনি আরও বলেন, আগামী জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু হবে।
তবে উভয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পটির কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেন নির্বাহী পরিচালক।তিনি বলেন, ‘জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করলেই কয়লা দেখা যাবে। এরপর জেটি থেকে কয়লা সরাসরি প্ল্যান্টে যাবে। এটি পরিবেশ দূষিত করবে না।’
চলতি বছরের ২৩ জুন ইন্দোনেশিয়া থেকে মাতারবাড়ি প্ল্যান্টের জন্য ৬৪ হাজার ৩০০টন কয়লা বহনকারী একটি জাহাজ বাংলাদেশে আসে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরে ভিড়েছে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ
নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অব্যাহতি পেলেন কক্সবাজারের দায়রা জজ
মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইনভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একইদিনে জামিন দেওয়ার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে আইন লঙ্ঘন করো জামিন দেওয়া ৯ আসামির জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এ আদেশ দেন।
আদেশের আগে কক্সবাজারের দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘বিচারে কেন তাড়াহুড়া করবেন? বিচার তাড়াহুড়া করার বিষয় নয়। যা হয়ে গেল, তা কারও জন্যই কাম্য নয়।’
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
আজও হাইকোর্টে হাজির হন জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। তার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ। আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন; সঙ্গে ছিলেন মো. আবুল কাশেম ও আরিফ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
জমি দখল নিয়ে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে কক্সবাজারের মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ নয়জনের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন।
এ মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইলে হাইকোর্ট ১১ এপ্রিল তাদের ৬ সপ্তাহের জামিন দিয়ে কক্সবাজারের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের সেই আদেশ মোতাবেক গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে হাকিম আদালতে জামিন চান। আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
কিন্তু একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তখন জেলা ও দায়রা জজ তাদের জামিন দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন রিনা।
এই আবেদনের শুনানিকালে গত ২১ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ব্যাখ্যা জানাতে কক্সবাজারের দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বগুড়ার আলোচিত সেই জজের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত
আইনজীবী বলেন, ২১ মে দুপুর ১২টার দিকে ৯ আসামি মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগেই মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন।
এক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশসহ অন্য কাগজপত্রের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা প্রত্যায়িত অনুলিপির ফটোকপি দাখিল করা হয়নি। আসামির হাজতবাসের মেয়াদসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়- আদেশে উল্লেখ করেছেন জেলা জজ।
অথচ ৯ আসামি এক মুহূর্তও হাজতে ছিলেন না। শুনানিতে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের কীভাবে জামিন দিলেন- এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেন আদালত।
পরে গত ২০ জুলাই আদালতে হাজির হয়ে নিঃর্শত ক্ষমা প্রার্থনা করেন কক্সবাজারের দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। শুনানি নিয়ে আদালত আজ আদেশের জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ তাকে ক্ষমা করে জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল জারির এ আদেশ হয়।
আদেশের পর আইনজীবী আলতাফ হোসেন বলেন, নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার পর কক্সবাজারের দায়রা জজকে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই মামলায় দায়রা জজের দেওয়া জামিন আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন। প্রতিপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শুনানির বিষয়ে জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, দায়রা জজ মন থেকে ক্ষমা চেয়েছেন কি না, তা জানতে চান আদালত। তখন দায়রা জজ বলেন, তিনি মন থেকেই ক্ষমা চেয়েছেন। যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা সবার জন্য লজ্জার বলে শুনানিতে মন্তব্য করেন আদালত।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরের জেলা জজকে স্ট্যান্ড রিলিজ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক নিখোঁজ
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে এক পর্যটক নিখোঁজ হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকাল ৩ টার দিকে সমুদ্র সৈকতে তিনি নিখোঁজ হন।
নিখোঁজ মো. অনিক (৩২) নরসিংদী সদর থানার পূর্ব দত্ত পাড়ার সাজ্জাদের ছেলে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শঙ্খ নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের উপপরিদর্শক (এসআই) ফরমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর আসে সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে এক পর্যটক ভেসে গেছে।
তিনি আরও জানান, আমরা উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
সীতাকুণ্ডে সমুদ্রে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থী নিখোঁজ
কক্সবাজারকে স্মার্ট শহরে রূপান্তরের ২০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান আগামী মাসে শুরু হতে পারে
পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে একটি আধুনিক ও স্মার্ট শহরে রূপান্তরের জন্য ২০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান আগামী মাসে শুরু হতে পারে।
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কক্সডিএ)।
কক্সডিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর (অব.) মোহাম্মদ নুরুল আবছার শনিবার তার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘কক্সবাজারকে স্মার্ট শহরে রূপান্তরের জন্য ২০২৩ সাল থেকে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত ২০ বছরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে আমরা কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষারও মতবিনিময় সভায় কথা বলেন।
আকর্ষণীয় ও পরিবেশবান্ধব কক্সবাজারের পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি বিশদ এলাকা পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খর্ব করা যাবে না: শাহরিয়ার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারকে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত স্মার্ট শহর হিসেবে গড়ে তুলতে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক অখণ্ড সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য অক্ষত রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
কক্সডিএ চেয়ারম্যান বলেন, শেখ হাসিনা বিদেশিদের জন্য একটি নিবেদিত পর্যটন আকর্ষণ এবং দেশের দীর্ঘতম ও একমাত্র সামুদ্রিক রানওয়েসহ একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলার মাধ্যমে কক্সবাজারকে পর্যটন ও বিমান চলাচলের বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চান।
তিনি আরও বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তারা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছেন।
এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগত নীতি পরিকল্পনা প্রণয়ন, কক্সবাজারের সকল উপজেলা ও সৈকত এলাকার বিশদ এলাকা পরিকল্পনা (৬৯০ দশমিক ৬৭ বর্গ কিলোমিটার) এবং পর্যটন ও আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কক্সবাজারের জন্য স্মার্ট সিটি মডেল প্রণয়ন, পরিবহন ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা, ইউটিলিটি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সেক্টরাল প্ল্যানও মাস্টারপ্ল্যানের মূল বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশকে উচ্চ আয়ের উন্নত দেশে পরিণত করতে আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১-কে সমর্থন দিতে কক্সবাজার বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করছে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হবে: রেলমন্ত্রী
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- কক্সবাজার থেকে সাবরাং ও কক্সবাজার থেকে মহেশখালী পর্যন্ত ক্যাবল কার স্থাপন, সমুদ্র সৈকতে ওয়াটারস্পোর্ট ও অন্যান্য বিনোদন সুবিধা চালু, ইনডোর বিনোদন পার্ক, কক্সবাজার মেরিনা বে রিসোর্ট, কক্সডিএ কনডমিনিয়াম প্রকল্প, মহেশখালীতে ইকো-রিসোর্ট, জীবন রক্ষা ও সামুদ্রিক পর্যটন বৃদ্ধি, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে রোডম্যাপ প্রণয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প, সেন্ট্রাল সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন, পানি শোধন পরিকল্পনা এবং সি-প্লেন, ক্রুজ শিপ এবং হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রবর্তন এবং সমন্বিত কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন।
কক্সডিএ চেয়ারম্যান কমোডর (অব.) মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন যে তারা কক্সবাজারে সেন্ট্রাল এসটিপি স্থাপনের জন্য কাজ করছেন, অন্যথায় বঙ্গোপসাগর একটি ডেড জোন হবে এবং বিপুল পরিমাণ পয়ঃনিষ্কাশন সমুদ্রে চলে যাবে।
তিনি বলেন, ‘একবার প্রকল্পগুলো শেষ হয়ে গেলে এগুলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।’
কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী লালদীঘি, গোলদিঘী, বাজার ও পুকুর সংস্কার ও পুনর্বাসন এবং কক্সবাজারের জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মাণসহ বেশ কিছু প্রকল্প ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
কক্সডিএ-এর চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হলো: কক্সবাজারের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ, মহেশখালীতে ভাস্কর্য ও আধুনিক যাত্রী ছাউনি নির্মাণ, কক্সবাজারের প্রধান সড়ক (হলিডে ক্রসিং-বাজতঘাটা-লারপাড়া বাসস্ট্যান্ড) সংস্কার ও সম্প্রসারণ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
কক্সবাজারে নেপালিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২ মাস পর আটক ১
কক্সবাজারে নেপালের নাগরিক রবি কুমারকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক ছিনতাইকারীকে আটক করেছে টুরিস্ট পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঘটনার প্রায় ২ মাস পর কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক ছিনতাইকারী জাকির হোসেন (১৯) কক্সবাজার শহরের ঘোনাপাড়া এলাকার আমজুলের পুত্র।
আরও পড়ুন: ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৮ জনের রিমান্ড মঞ্জুর আদালতের
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ জানান, ২৪ মে নেপালের নাগরিক রবি কুমার পর্যটক হয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন।
এই দিন তিনি গাড়ি থেকে নামতেই একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দল তার সবকিছু কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তাকে উদ্ধারে আশপাশের লোকজন তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতেই পালিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা।
টুরিস্ট পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পরদিন থেকে পুলিশ জড়িত ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান চালিয়ে আসছিল। শহরের যতসব ছিনতাইকারী আছে তাদের ছবি সংগ্রহ করা হয়।
পরে ছবি দেখে মঙ্গলবার রাতে সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে জাকির হোসেন নামে একজনকে সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আটকের পর তার ছবি নেপালি পর্যটককে দেখালে তিনি ছিনতাইকারীকে চিহ্নিত করেন।
এরপর আটক ছিনতাইকারীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটায় পর্যটকদের মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
রাজশাহীতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
কক্সবাজারে গোসলে নেমে ৯ম শ্রেণির ছাত্র নিখোঁজ, উদ্ধার ৩
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে এক স্কুলছাত্র স্রোতে ভেসে নিখোঁজ হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে গোসলে নামা ৩ বন্ধুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টায় সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ৩৮ ঘন্টা পর মাঝির লাশ উদ্ধার
নিখোঁজ স্কুলছাত্র মো. আলী তুহিন (১৫) কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড নুর পাড়া এলাকার মো. হোসেনের ছেলে এবং কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যাটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, ৪ বন্ধু সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গোসল করতে নামে। গোসলে নামার সঙ্গে সঙ্গে তুহিন সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে ভেসে যায়। বাকি ৩ বন্ধু দেখে উদ্ধার করতে গেলে তারাও ভেসে যায়। এ সময় স্রোতের টানে ভেসে যাওয়ায় সি সেফ লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা ৩ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও একজনকে উদ্ধার করতে পারেননি।
সী সেফ লাইফ গার্ড ইনচার্জ ওসমান গনি বলেন, তারা চারবন্ধু গোসল করতে নেমে ভেসে যাওয়ার সময় ৩ বন্ধুকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ তুহিনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন, তারা সাড়ে ৩টার দিকে চারবন্ধু গোসল নামে সাতার না জানায় তুহিন সাগরে ভেসে যায়।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক হক বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ টিম নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের ৪ ঘণ্টা পর পুকুরে মিলল শিশুর লাশ
বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে মাঝি নিখোঁজ