খালেদা জিয়া
সরকার অমানবিকভাবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার তাদের দলের চেয়ারপার্সন অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা বারবার তার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার কথা বলেছি। কিন্তু তারা (সরকার) কতটা অমানবিক এবং মধ্যযুগীয় বর্বর হতে পারে যে তারা তাকে যথাযথ চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বক্তৃতাকালে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম অবদান রাখা শারীরিকভাবে অসুস্থ বিএনপি নেত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য সরকারের নিন্দা করেন ফখরুল।
খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার মতো হয়নি: ব্যক্তিগত চিকিৎসক
পরে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৯ আগস্ট খালেদাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
মেডিকেল বোর্ডের মতে, বিএনপি প্রধানকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে একটি উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো প্রয়োজন। কারণ বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালেই তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে তার চিকিৎসা করা মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘খুব ধীরগতিতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তিনি বেশ কিছু জটিল রোগে ভুগছেন। আমরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দিচ্ছি, কিন্তু তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার ওঠানামা করছে। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত।’
আরও পড়ুন: বিদেশে খালেদার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির পদযাত্রা
খালেদার অবস্থা আশঙ্কাজনক, বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান ড্যাবের
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুল
রাজধানীতে বিএনপির নির্ধারিত মহাসমাবেশের মাত্র ২ দিন আগে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাত ৮টায় তিনি রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে যান এবং তার সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত মির্জা ফখরুল
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ফখরুল বিএনপি চেয়ারপার্সনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি মহাসচিব বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে অবহিত করেন। এ বিষয়ে ফখরুলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
মির্জা ফখরুল সর্বশেষ গত ৮ জুলাই বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করে এক দফা দাবির কথা জানান।
গত ২২ জুলাই এক দফা দাবিতে রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব।
সমাবেশস্থলের জন্য নয়াপল্টন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করেছে দলটি।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য `অপ্রত্যাশিত’: মির্জা ফখরুল
আ.লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৬ ঘণ্টার অনশন
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানীতে ছয় ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
সোমবার (২৪ জুলাই) বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগসহ বিরোধী দলের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন দলের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আ. লীগ দেশে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
বেলা ১১টায় প্রায় দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, যৌবনে মাতৃভূমির মুক্তির জন্য লড়াই করা বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং এক দফা আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে সরকারের পতনের দাবিতে এখানে দিনব্যাপী অনশন শুরু করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও এ সরকার গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে এবং মানুষের কণ্ঠস্বরকে দমন করেছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। পাকিস্তানিরা আমাদের অধিকার দিতে চায়নি। সেই অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’
বিকাল ৫টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান মুক্তিযোদ্ধাদের অনশন ভাঙতে পানি পান করান।
এর আগে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান ‘দখলকারী’ সরকার গণতন্ত্র ও জনগণের ভোট ও অন্যান্য অধিকার হরণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার স্বপ্নকে নস্যাৎ করেছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা চাইনি জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্রবিহীন এই বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দেশ ও জনগণের দুর্ভোগ ও উন্নয়ন নিয়ে ন্যূনতম মাথা ঘামাচ্ছেন না বলে ব্যাপক দুর্নীতি, লুটপাট ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের দল বর্তমান ‘অগণতান্ত্রিক’ ও ‘অবৈধ’ সরকারকে উৎখাত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেমেছে।
আরও পড়ুন: সুজনের হাফিজ-বদিউলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার আবেদন
চট্টগ্রামে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ: ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া মামলার অভিযোগ গঠন পেছাল
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির তারিখ আগামী ৮ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে মামলাটি অভিযোগ শুনানির জন্য ধার্য ছিলো। কিন্তু মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি।
আরও পড়ুন: খালেদার অবস্থা এখন স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ
তার পক্ষে মাসুদ আহমেদ তালুকদার হাজিরা দেন। এদিন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামিদের পক্ষে সময় আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ৮ আগস্ট অভিযোগ শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম ও ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল আলম শাহবাগ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্ত আসামির সংখ্যা ১৩ জন। বিভিন্ন সময় ছয় আসামি মারা যান। বর্তমানে আসামির সংখ্যা সাত জন।
আরও পড়ুন: খালেদার সঙ্গে দেখা করলেন ফখরুল
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা
খালেদা জিয়া সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন
হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার (১৭ জুন) বিকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে
তিনি বলেন, ‘তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) আজ বিকাল ৫টায় নিজ বাসভবনে ফিরবেন। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলবে।’
তিনি আরও বলেন, হঠাৎ জ্বর ও পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে নগরীর বসুন্ধরা এলাকার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তার বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না এই শর্তে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
আরও পড়ুন: খালেদার অবস্থা এখন স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ
গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন খালেদা জিয়া: ফখরুল
গভীর রাতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের বাসা থেকে রাত ১টা ২০ মিনিটে বের হন এবং ১টা ৪০ মিনিটের দিকে হাসপাতালে পৌঁছান।
তিনি বলেন, তার মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবর শুনে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা তার বাসায় যান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে নিবিড় পর্যবেক্ষণে: ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ
পরে তার চিকিৎসার জন্য আগে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার তাকে প্রাইভেটকারে করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল একই হাসপাতালে যান এবং সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসা নেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে সাতবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
গত বছরের ১০ জুন তার বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লক থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং পরদিন একই হাসপাতালে ওই ব্লক অপসারণ করে সেখানে স্টেন্ট বসানো হয়।
ডাক্তাররা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তারা সেগুলো অপসারণ করতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে, সরকার২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা
জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়, এই শর্তে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন: ৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
হাসপাতাল থেকে ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পাঁচ দিনের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে নিজ বাসভবনে ফিরবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে বলেন, ‘আজ বিকাল ৩টার পর গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশে হাসপাতাল ছাড়বেন খালেদা জিয়া।’
কিছু মেডিকেল পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তার মেডিকেল টিমের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কেবিনে রাখা হয়েছে এবং মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
এর আগে ৬ এপ্রিল তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একই হাসপাতালে যান।
সর্বশেষ গত বছরের ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি, যেখানে তার লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়ে।
লিভার সিরোসিসের কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে ৮১ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে প্রাপ্য উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে জেলে পাঠানো হয়েছে। তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ওনার অবস্থা ভালো না। বিদেশের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত চিকিৎসা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খসরু এ মন্তব্য করেন।
চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর কথা বললেও সরকার তা উপেক্ষা করে আসছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে নিম্নস্তরের রাজনীতিকরা প্রায়ই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। ‘কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে ভর্তি
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে শনিবার রাতে কিছু শারিরীক পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার মূল উদ্দেশ্য নিয়েই বিদেশে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’
খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রেখে ক্ষমতাসীন দল আবারও ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা অবশ্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ এবার সরকারকে যোগ্য জবাব দেবে।
সরকারের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের অভিযোগও করেন তিনি। ‘বর্তমান সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করা। তারা কোনোভাবেই জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজি নয়।’
বিএনপি ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে খসরু বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে নিবিড় পর্যবেক্ষণে: ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ
নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও একটি মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
রবিবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা দেন।
মামলার আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
এছাড়া অপর আসামি সেলিম ভূঁইয়ার আইনজীবী মো. জাকারিয়া হায়দার আদালতে সময়ের আবেদন করলে আদালত সময়ের আবেদন না-মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এসেছে
আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে।
তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আবেদনে দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে। এই অবস্থায় কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এসেছে
অনুকূল পরিবেশ থাকলে রাজনীতি করবেন খালেদা জিয়া: বিএনপি