লালমনিরহাট
ইউপি নির্বাচন: লালমনিরহাটে স্বামী-স্ত্রীর লড়াই
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বামী ও স্ত্রী দুজনই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
তৃতীয় ধাপের এই ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়নের শ্রুতিধ্বর গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোছা. শামীমা আকতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই প্রচার চালাচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন। স্বামী-স্ত্রীর একই পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ওই ইউনিয়নের ভোটারদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী সহিংসতায় মেহেরপুরে ২ ভাই ‘খুন’
ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ফরহাদ মাস্টার ও তার স্ত্রী শামীমা দুজনই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন শুনেছি। আগামী ১১ তারিখ প্রার্থী বাছাইয়ে বোঝা যাবে তারা দু’জনেই থাকেন কি না। ’
আইরিন বেগম নামে ওই ইউনিয়নের এক ভোটার বলেন, ‘তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই ভোট করছেন শুনেছি। তবে স্বামী ফরহাদ হোসেন ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করলেও তার স্ত্রী শামিমাকে ভোট চাইতে দেখিনি।’
চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি পরপর দুবার চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছি। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদী।’
স্ত্রীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ‘বিকল্প প্রার্থী হিসেবে তিনি স্ত্রীকে প্রার্থী করিয়েছেন। এটি একধরনের নির্বাচনী কৌশল।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবা রহমানের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৮ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে যাচাইবাছাই শেষে মোট ৫৪ জন প্রার্থী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী সহিংসতায় মেহেরপুরে ২ ভাই ‘খুন’
নির্বাচনে ভোটমারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আহাদুল হোসেন চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আলিফ উদ্দিন, স্বতন্ত্র হিসেবে শামিমুল ইসলাম ও ওই স্বামী-স্ত্রীসহ মোট পাঁচ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামী ১১ নভেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।
স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় তিস্তাপাড়ের কৃষকেরা
তিস্তা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বাড়ছে দুর্ভোগ। অসময়ের বন্যা কৃষকের সোনালি ফসল কেড়ে নিয়েছে। এ কারণে তিস্তাপাড়ের লাখো কৃষকের চোখে মুখে এখন অজানা আতঙ্কের ছাপ। পরিবার পরিজন নিয়ে বাকি দিনগুলো কীভাবে কাটবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।
জেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত লালমনিরহাট সদর, আদিতমারি, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে সৃষ্ট এ বন্যায় বেশি ক্ষতির সম্মুখীন কৃষকেরা। কার্তিকে পানিশূন্যে তিস্তার বুকে শীতকালীন শাকসবজি ছাড়াও ভুট্টা, বাদাম, রসুন, পেঁয়াজ, আলু, মসুর ডাল, ধান ও অন্যান্য ফসল বুনেছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ ভারতের উজান থেকে ভাটিতে আসা পানিতে সবকিছু যেন শেষ হয়ে গেছে। নদী তীরবর্তী গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় ফসলের চরম ক্ষতি হয়েছে।
বন্যায় ফসল হারিয়ে দিশেহারা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চর রুদ্রেশ্বর গ্রামের সাইদুর রহমান। কয়েক বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছিলেন তিনি। একদিনের বন্যায় তার সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে কীভাবে বছরের বাকিটা সময় তিনি পার করবেন তা নিয়ে পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়।
আরও পড়ুন: তিস্তায় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
তিস্তার ঢলে লালমনিরহাট-রংপুর সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
তিস্তার প্রবল স্রোতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা-রংপুর সংযোগ সড়কের পাকা রাস্তা ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে দুই জেলার সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার কাকিনা রুদ্রশ্বর মিলনবাজার এলাকার গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর থেকে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর গতিপথ পরির্বতন হয়ে কাকিনার রুদ্রেশ্বর গ্রামে ঢুকে যায়। গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে চাপ পেয়ে তা ধসে যায়। ফলে লালমনিরহাট জেলার সাথে রংপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এদিকে রাত থেকে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। উদ্ধার কার্যক্রমে উপজেলা প্রসাশনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহায়তা করছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, সড়ক ধসে যাওয়ায় কাকিনা-রংপুর যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
পড়ুন: তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, রেড অ্যালার্ট জারি
তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, রেড অ্যালার্ট জারি
ভারতে বন্যার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের তিস্তা নদীতেও। এতে এরইমধ্যে ভেঙে গেছে তিস্তা ব্যারাজের লালমনিরহাট অংশের একটি বাঁধ। হুমকির মুখে অন্য বাঁধগুলোও। এদিকে ব্যারাজ রক্ষার্থে রেড এলার্ট জারি করে তিস্তার তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বুধবার (২০ অক্টোবর) দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই প্রবাহ আরও কি পরিমাণ বাড়তে পারে তার ধারণা নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
এদিকে উজানের ঢলে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েও পানি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় বড়খাতা টু হাতীবান্ধা বাইপাস সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। এতে তার ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ডুবে গেছে লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী হাজার হাজার একর ফসলি জমি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, পানির চাপে তিস্তা ফ্লাড বাইপাস ভেঙে গেছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবার বন্যার আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বন্যার আগাম পূর্বাভাস জানানো হলেও এবার তা জানানো হয়নি। ফলে বন্যার পানিতে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
আর পড়ুন: তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিল ভারত, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া’র নির্বাহী প্রকৌশলী আসফুদ্দৌলা বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে ইতোমধ্যে ব্যারজের ফ্লাড বাইপাসটি পানির চাপে ভেঙে গেছে। তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসতে পারে তা ধারণা করা যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলে, ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেও পানি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। আমরা তিস্তা অববাহিকায় লাল সংকেত দিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছি।
আরও পড়ুন: তিস্তা-ধরলা পাড়ে ভাঙন, সরকারি ভাতার বদলে বাঁধ চায় এলাকাবাসী
তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিল ভারত, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
উজানের ঢল ও ভারতের গজলডোবার সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় বাড়ছে তিস্তার পানি। তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।
বুধবার (২০ অক্টোবর) ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধানক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট। ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তিস্তা ব্যারেজের ফ্লাট বাইপাস সড়কও হুমকির মুখে পড়েছে।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তিস্তা শুকিয়ে জেগে উঠেছিল চর। হঠাৎ তিস্তার পানিতে সব ডুবে গেছে। কার্তিক মাসে এমনভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় ওই পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপরে। তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে নিহত ২১
এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির, সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন
একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির। এক পাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে চলছে জিকির। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে পৃথক দু’টি ধর্মীয় উপাসনালয়।
ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দিরটি একই উঠানে রয়েছে। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন। এখন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় লালমনিরহাট শহরে কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার এলাকায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ করার জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। আর সেটির নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ হিসেবে। ওই সময় থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কাজ। পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেন। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এই মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, আজানের সময় থেকে নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে। নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না। শালীনতা বজায় রেখে একই উঠানে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন উভয় ধর্মের মানুষ।
পড়ুন: চট্টগ্রামে ৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজয় কুমারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত বাবু বিজয় কুমার রায়ের আত্মার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায় গতরাতে নিজ বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
এদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক শোক বিবৃতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার মারা গেছেন
জাপা নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার মারা গেছেন
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনেশ্যাম (ঝন্টুর মোড়) এলাকার গ্রামের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘ডিজিটাল সনদ’ পাবেন: মন্ত্রী
তার ছেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার রায় অজয় জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, বেশ কয়েকমাস ধরেই বার্ধক্যজনিত অনেক রোগে ভুগছিলেন তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা বাবু বিজয় কুমার।
আরও পড়ুন: ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ কালু মারা গেছেন
অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায় বর্ণাঢ্য জীবনে দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়াও কর্মজীবনে তিনি জলঢাকা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপনা করেছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও জনপ্রিয়।
আর পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ
এদিকে, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বাবু বিজয় কুমার রায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ।
তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানীতে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের পাশে দোয়ানী এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল মালেক (৪২) গড্ডিমারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দোয়ানী এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে।
আরও পড়ুন:শাহরাস্তিতে নারীকে কুপিয়ে হত্যা
লালমনিরহাট সিনিয়ন সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) তাপস সরকার জানান, আব্দুল মালেক বাড়ির সামনে একটু অন্ধকারে একা বসেছিলেন। এ সময় পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে আব্দুল মালেকের পরিবারের সাথে কথা বলে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন: কাঁটাতারে বাঁধা শিক্ষক-শিক্ষার্থী!
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে ‘ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড’ সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাঁটাতারে দিয়ে ঘিরে ফেলায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী শৌলমারী ও কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঝুকিঁ নিয়ে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। শুধু শিক্ষকরাই নন, শিক্ষার্থীসহ শৌলমারী চরে বসবাসকারী মানুষজনও এ অবস্থায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এনিয়ে তারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে তিস্তা চরবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন: মামলা জটিলতায় স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিস্তা নদীতে শৌলমারী চরে অবস্থিত কালিকাপুর ও শৌলমারী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যায়লের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপজেলা শহর থেকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের যাওয়া একমাত্র রাস্তাটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে ‘ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড’ সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। ফলে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া এই রাস্তা দিয়েই মূলত চরবাসীর যোগাযোগ উপজেলার শহররের সাথে। সরকারিভাবে প্রতিবছরই রাস্তাটি মেরামত করা হয় বলেও জানান স্থানীয়রা। অথচ সেই রাস্তাটিও দখলে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শৌলমারী চরে শিক্ষার আলো জ্বালানোর দায়িত্বে যেসব শিক্ষক রয়েছেন তাদের প্রায় সবার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা সদরের আশপাশে। প্রতিদিন স্কুলে যেতে প্রথমে নৌকা যোগে পরে দীর্ঘ পথ হেটেঁ শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছতে হয় তাদের। কিন্তু নদীর ঘাট থেকে যে রাস্তাটা সরাসরি গিয়ে স্কুলে ঠেকেছে, সেটি যে কাঁটাতারে ঘিরে ফিলবে বেসরকারি কোন কোম্পানি তা হয়তো জানা ছিল না তাদের। তাই বাধ্য হয়ে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে স্কুল যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: হাতছানি দিয়ে ডাকছে রূপবতী ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’
শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইতি মনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যাওয়া আসা করছি। এখন সেই রাস্তাটি বন্ধ হওয়ায় বাধ্য হয়েই কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। একজন নারী শিক্ষক হয়ে ওই কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে যাতায়াত কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো মুশকিল। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।’