গাইবান্ধা
গাইবান্ধা-৫ আসনের স্থগিত নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের স্থগিত উপনির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় যে অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি এটা সত্য, কিন্তু আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আমরা বৈঠকে বসতে পারিনি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনাদের জানানো হবে।’
বুধবার নির্বাচন কমিশন সদর দপ্তর থেকে বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণকালে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
রবিবার তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ইসি সচিব হুমায়ুন কবির খন্দকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
আরও পড়ুন: জেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল হয়েছে: সিইসি
কিন্তু ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনের বিস্তারিত কিছু জানাননি সিইসি।
১২ অক্টোবর নির্বাচনের দিন ব্যাপক অনিয়মের কারণে নির্বাচন স্থগিত করে ইসি।
এটি গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা তিন মাস বা ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
২০২২ সালের ২২ জুলাই গাইবান্ধা-৫-এর সংসদ সদস্য ও সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর ২০২২ সালের ২০ অক্টোবরের মধ্যে সংসদীয় আসনের জন্য নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন কোনো চাপে নেই: সিইসি
গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্বাচন স্থগিত করা কমিশনের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নয়: সিইসি
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন: ৯০ দিন সময় বাড়ালো ইসি
গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ২০ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।
এর আগে আসনটিতে ১২ অক্টোবর ভোটগ্রহনের সময় অনিয়মের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করে ইসি। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলমান অবস্থায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না থাকলেও নির্বাচন কমিশন বলেছে যে একটি আসন খালি হওয়ার পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিয়ম অনুসরণ করে সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন কোনো চাপে নেই: সিইসি
বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৩(৪) ধারা অনুযায়ী, সংসদীয় আসন শূন্য হলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।
গাইবান্ধা-৫ এর ঘটনা ‘অনাকাঙ্খিত, অকল্পনীয় এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ উল্লেখ করে ইসি বলেছে আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন সময়সীমা দেয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ২২ জুলাই গাইবান্ধা-৫-এর সংসদ সদস্য ও সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর ২০২২ সালের ২০ অক্টোবরের মধ্যে সংসদীয় আসনের জন্য নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন: দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে ইসি
জেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল হয়েছে: সিইসি
গাইবান্ধার মতো খুলনায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ!
খুলনায় ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ।
শনিবার খুলনা বিএমএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান প্রার্থী চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম এ অভিযোগ করেন।অভিযোগে তিনি বলেন, ভোটারদের মধ্যে কালো টাকা বিতরণ করা হচ্ছে এবং খুলনার মেয়র, হুইপ ও সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মার্কেটে আগুন, ১৬টি দোকান পুড়ে গেছেআগামী ১৭ অক্টোবর খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে না বলে সতর্ক করে এই প্রার্থী গাইবান্ধার মতো নির্বাচনে কারচুপি না করতে প্রশাসনের প্রতি সজাগ থাকার আহ্বান জানান।তিনি সব ভোটকেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরা নজরদারির আওতায় আনার দাবি জানান।আসন্ন খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত তিন প্রার্থী হলেন- খুলনা আ’লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ বাহারুল আলম ও মুর্তজা রশিদী দারা।এবারের নির্বাচনে ১০টি ভোট কেন্দ্র থেকে মোট ৯৩৭ জন ভোটার তাদের ভোট দেয়ার কথা রয়েছে।গত ১২ অক্টোবর বুধবার ভোট কারচুপি ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আরও পড়ুন: খুলনায় যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
জলবায়ু পরিবর্তন: খুলনায় চিংড়ি চাষ বিপন্ন
গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্বাচন স্থগিত করা কমিশনের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নয়: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্বাচন স্থগিত করা নির্বাচন কমিশনের ‘বেপরোয়া’ সিদ্ধান্ত নয়।
তিনি বলেন, এটি বরং একটি ‘সুচিন্তিত’ সিদ্ধান্ত ছিল, যা সমস্ত কমিশনারের সঙ্গে পরামর্শ করেই নেয়া হয়েছিল।
সিইসি বলেন, সব অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করায় কমিশন তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর উপ-নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইসি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কমিটি সাত দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে ডিসি, এসপিদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকার নির্দেশ সিইসি’র
সিইসি বলেন, কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও ঝিনাইদহ পৌরসভার আগের নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করায় গাইবান্ধায় ঘটে যাওয়া ঘটনার আলোকে আসন্ন নির্বাচনের মূল্যায়ন করা যৌক্তিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় নির্বাচন পরিচালনায় স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়, ভোটের সময় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভোটের সময় বারবার শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু পুরো নির্বাচনী এলাকায কোথাওই শৃঙ্খলা ছিল না।’
ভোট কারচুপি ও ভোটারদের ভয় দেখানোর ব্যাপক অভিযোগের মধ্যে বুধবার গাইনবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করেছে কমিশন। সিইসি বলেন, নির্বাচনের দিন অনিয়মের কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
সিইসি এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ধারা ৯১ অনুযায়ী, কমিশন যদি দেখতে পায় কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না, তবে ইসি আংশিক বা পুরো আসনে নির্বাচন বন্ধ করতে পারে।
এ সিদ্ধান্তের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন কমিশনের সমালোচনা করে ভোটের ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান।
গাইবান্ধা-৫ আসনটি সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
সাবেক সংসদ সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে ডিসি ও এসপিদের সঙ্গে বৈঠকে সিইসি
নির্বাচন বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে রাজনীতি উধাও হয়ে যাবে: সিইসি
গাইবান্ধায় শিশু হত্যা: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ২ জন খালাস
গাইবান্ধায় এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের সংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এএনএম বশির উল্লাহ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও এ কে খান উজ্জল।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
তিনি জানান, তিন আসামির মধ্যে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পাভেল ও রুবেলকে খালাস দিয়েছেন।
২০১০ সালের ২৭ জুলাই সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম রোমেলের ছেলে পাঁচ বছর বয়সী তাছিন মিয়া ওরফে অর্ণব পাশের পীরগাছা গ্রামের নানা নজরুল ইসলাম মধু মিয়ার বাড়ি বেড়াতে যায়।
তাছিনের নানার সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহিদ, পাভেল ও রুবেল ওই দিন তাছিনকে অপহরণ করে। ওই রাতেই তাছিনের মাকে ফোন করে জহিদ ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না পেয়ে তারা তাছিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ওই গ্রামের এক ব্যক্তির পুকুরের কচুরি পানার নিচে তাছিনের লাশ লুকিয়ে রাখেন তারা।
ঘটনার পরদিন ২৮ জুলাই তাছিনের বাবা সদর থানায় ১০ জনের নামে মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক রত্নেশ্বর ভট্টাচার্য। বাকি ৭ জনকে খালাস দেন।
বিচারিক আদালতে দণ্ডিতরা হলেন, গাইবন্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের খামার পীরগাছা গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে জাহিদ, একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে পাভেল ও একই উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিল্টু মিয়ার ছেলে রুবেল।
পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
গাইবান্ধায় ৫ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার মহিমাগঞ্জের বাঙ্গালী নদে পাঁচ দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান। প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৪টি নৌকা অংশ গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা
প্রতিযোগিতাটি উপভোগ করতে গোবিন্দগঞ্জের বাঙ্গালী নদীর তীর জনস্রোতে সৃষ্টি হয়। নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সের মানুষেরা বাঙ্গালীর দুই পাড় কানায় কানায় ভরে যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য কেএম জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান. উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের হামিদুল ইসলাম সহ অন্যরা।
জানা যায়, ৫দিনের নৌকা বাইচ শেষে বিজয়ী দলকে একটি গরু এবং রানার্স আপ দলকে একটি খাসি পুরস্কার হিসেবে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত
ধলেশ্বরীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত
তিস্তার ভাঙন: গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে শতাধিক পরিবার গৃহহীন
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ভাঙন মারাত্মক রূপ নিয়েছে। গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর তীরবর্তী বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কারেন্ট বাজার এলাকায় সাম্প্রতিক ভাঙনে শত শত ঘরবাড়ি ভেসে গেছে এবং তিস্তা নদীর বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র ভাঙনে গৃহহীন পরিবারগুলো আশ্রয় না পেয়ে বর্তমানে খোলা আকাশে অবস্থান করছে। অনেকেই জানেন না তারা কোথায় আশ্রয় নিবেন। ভাঙন কবলিতদের আহাজারীতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। তবে ভাঙন ঠেকাতে পাউবো’র পদক্ষেপ থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এখনও বরাদ্দকৃত জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানো হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙন ঠেকাতে ভাঙনকবলিত এলাকায় কয়েক হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানোর কার্যক্রম প্রক্রিযাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিপদসীমার ২৮ সেমি ওপরে তিস্তার পানি
চিলমারীর পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল আজিজ আকন্দ জানান, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় কেউ আমলে নেয়নি। ফলে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। এখন হুমকির মুখে রয়েছে মন্ডলেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদারীপাড়া মন্ডলেরহাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদরাসা। নদী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিলিন হয়ে যাবে।
নদী ভাঙনের শিকার বাহার উদ্দিন (৫০) বলেন, ‘ শত শত বস্তা বালু ভরি রাখছে। কিন্তু ঠিকাদার বস্তা ফেলায় না। আমাগো শ্যাষ সম্বলটুকু নদী খায়া গেলো। অহন আমরা কই যাই।’
এলাকার সুবলচন্দ্র, নয়া মিয়া ও আব্দুল গনি বলেন, ‘সময়মতো জিও ব্যাগ ফেলানো হলে, এতটা ভাঙত না। আর আমাদের বাড়িঘরও সড়ানো লাগত না।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙনরোধে ওই এলাকায় ৭০ হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গণনা শেষ হলে খুব দ্রুত জিও ব্যাগ নদীতে ফেলানোর কাজ শুরু হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদী থেকে সুন্দরগঞ্জে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
চিরনিদ্রায় শায়িত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি
গাইবান্ধায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলার সাঘাটা উপজেলার গাটিয়া গ্রামে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে দুপুর ২টার দিকে সশস্ত্র বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে গাইবান্ধার বোনারপাড়া কাজী আজহার আলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তার মরদেহ আনা হয়।
নিউইয়র্ক থেকে ফজলে রাব্বির মরদেহ নিয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সোমবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় ঈদগাহ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
তার মরদেহ সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয় যেখানে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুলিশ ও স্থানীয় সরকার তাকে গার্ড অব অনার দেয়।
এরপর তার মরদেহ দাফনের আগে অন্য নামাজে জানাজার জন্য গোটিয়া গ্রামে তার পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডেপুটি স্পিকারকে তার গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তার দুই ছেলের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি ২২ জুলাই নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে বিকাল ৩.৫৫ মিনিটে (নিউইয়র্ক সময়) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৬ বছর।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১১ নম্বর সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের সাতবারের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বি তার তিন মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা রাব্বি ২০২০ সালের মে মাসে মারা যান।
তিনি একজন স্বনামধন্য সংগঠক ছিলেন এবং বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে অনেক অবদান রেখেছেন।
ফজলে রাব্বি ১৯৮০ থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ভলান্টারি স্টেরিলাইজেশন (বিএভিএস), গাইবান্ধার চেয়ারপার্সন ছিলেন।
তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি একজন স্বনামধন্য সংগঠক, যিনি বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে অনেক অবদান রেখেছেন। ফজলে রাব্বী ১৯৪৬ সালের ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা আইন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং ১৯৭৮-৭৯ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা বারের নির্বাচিত সম্পাদক ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী জনগণের আইনজীবী ছিলেন: শেখ তাপস
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে
গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমলেও বেড়েছে রোগব্যাধি
একটু সাহায্যের আশায় বাড়ির সামনে কলাগাছের ভেলায় বসে থাকলেও গাইবান্ধার বন্যা কবলিত খরজানির চরের করিমন বেগমসহ অনেকের মিলছে না কোনো সহায়তা।
করিমন বেগম ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা কীভাবে বেঁচে আছি, আমরা কী খাচ্ছি তা দেখতে এখনও কেউ আসেনি।’
গাইবান্ধার চর উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে বন্যার পানির কারণে সৃষ্ট চর্মরোগ। ডায়রিয়ার মতো পানিবাহিত রোগও উদ্বেগের বিষয়।
আর কোনো সমাধান না পেয়ে ওই এলাকার করিমন ও তার প্রতিবেশী হালিমা, মতিন কোবাজ্জামান, মিঠু মিয়াসহ আরও অনেকে জানান, ক্রমাগত চুলকানি থেকে কিছুটা উপশমের জন্য কেরোসিন তেলের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে লাগাচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন: বন্যা: আরও ২ জনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪
করিমন বলেন, রাত দিন চুলকায়। পায়ে কেরোসিন তেলে হলুদ মেখে কষ্ট নিবারনের চেষ্টা করেন। রাতে ঘুম নেই, কখন সাত বছরের ছোট ছেলেটা পানিতে ভেসে যায় সেই ভয়ে। যেমনটা অন্য অনেক পরিবারের ক্ষেত্রে ঘটেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যা কবলিত অঞ্চলে পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে কিন্তু করিমনরা এখনও সেই সহায়তা পান নি।
করিমন আরও বলেন, এ অঞ্চলে পানীয় জলের সংকট প্রকট। এমনকি এই পরিস্থিতিতেও দিনের বেলা নদীর ওপার থেকে পানীয় জল আনতে আমাদের নৌকা ভাড়া দিতে হয়।
গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রবিবার কিছুটা কমছে।
কামারজানীর চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, সুন্দরগঞ্জ,সাঘাটা,ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার বেশ কয়েকদিন যাবৎ পানি বন্দি কামারজানি, মোল্লারচর, কাপাসিয়া, হরিপুর, ফজলুপুর, উড়িয়া, রতনপুর, ফুলছড়ি,গজারিয়া, এ্যাড়েন্ডাবাড়ি, কঞ্জিপাড়া, শ্রীপুর, তারাপুর, বেলকা সহ ২৫টি চর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যার পানিতে আটকা পড়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি নামায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান
তিনি বলেন, অনেকের ঘরে খাবার আছে। কিন্তু রান্না করার মতো জায়গা নাই। তাই পানিতে নেমে কলার ভেলায় চুলা রেখে তাতে রান্না করছেন। এক বেলার রান্না খাচ্ছেন তিন বেলায়। খাবার পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি কোনো টয়লেটও নেই।
কর্তৃপক্ষের মতে, জেলায় মোট ৬০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে তবে মাত্র ১২টিতে আশ্রয় নিতে পেরেছে মানুষ। কারণ অধিকাংশ কেন্দ্রই পানির নিচে অথবা নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক লোক তাদের একমাত্র আয়ের উৎস, গবাদি পশু নিয়ে লড়াই করছে যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখা যাচ্ছে না।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম ফয়েজ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত পুরুষ, নারী এবং শিশু সহ মাত্র ১৩৫ জন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ১২৫ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় কনসার্ট সোমবার
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, নিচু এলাকা প্লাবিত
গাইবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত না হলেও সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ঘাঘট নদী এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার চার উপজেলার নিচু এলাকার অন্তত ৩৫ চরে হাটু ও কোমর পানিতে ডুবে গেছে।
সোমবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে গাইবান্ধা শহরের ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজজ্জামান জানান, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, শ্রীপুর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, অন্তত পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে পানিতে ডুবে গেছে। অনেকেই নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছে।
তিনি বলেন, বন্যার পানিতে গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ফুলছড়ির কঞ্জিপাড়া, উড়িয়া, ফুলছড়ি, গজারিয়াসহ অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কমতে শুরু করেছে শাবিপ্রবিতে বন্যার পানি
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। চরাঞ্চলে বন্যা শুরু হলেও জানমাল বাঁচাতে লোকজন বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন।