বাগেরহাট
বিদেশের বাজার ধরার স্বপ্ন দেখছে বাগেরহাটের ফল চাষিরা
বাণিজ্যিকভাবে বিদেশি নানা জাতের ফল চাষ করে সাড়া ফেলেছে বাগেরহাটের কচুয়ার শিয়ালকাঠি গ্রামের কামরুল হাসান (৪০) নামের এক ব্যক্তি। তার ২১ বিঘার বাগানে দেশি-বিদেশি নানা ফল চাষ করে, মাত্র একবছরে তিনি ২৭ লাখ টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে তিনি তার বাগানের ফল বিদেশে রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন।
কামরুল হাসান জানান, মাত্র ৪ বছর আগে শখের বসে বাড়িতে ১০টি ড্রাগনের চারা রোপণ করেন। প্রথম বছর ভাল ফলন না পেলেও হাল ছাড়েননি তিনি।
পরের বছর ড্রাগনের ভাল ফলন মেলে। এর পর একে একে ড্রাগন চাষ বাড়াতে থাকেন। সেইসঙ্গে আমেরিকা, জাপান,ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের নানা জাতের ফলগাছ লাগাতে থাকেন। কয়েকটি প্লটে বিভক্ত করে ২১ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি নানা ফল লাগিয়ে গড়ে তোলেন এই ফলবাগান।
পরবর্তীতে কামরুলের দেখাদেখি ওই এলাকার অনেক যুবক বিদেশি ফল চাষে ঝুঁকেছে।
কামরুলের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে বিদেশি নানা জাতের ফলের সমারোহ। গাছে গাছে বিভিন্ন দেশের নানা জাতের ফল ঝুলছে, আর বাতাসে দোল খাচ্ছে। বাগানে ড্রাগন, মাল্টা, আম, পেয়ারা, বাতাবিলেবু (জাম্বুরা), কমলা, আনারস,বেল,আতা,শরিফাসহ বিভিন্ন জাতের বিদেশি ফল দেখা গেছে। আবার কোন গাছে ফুল ধরেছে।
আরও পড়ুন: ফল উৎপাদনে বিশ্বে সফলতার উদাহরণ বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী
বাগেরহাটে ছাত্রাবাস থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের ছাত্রাবাস থেকে থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলেজের হিন্দু হোস্টেল থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সুব্রত তরফদার (২৬) সরকারি পিসি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হাসাবুনিয়া কাটাখালী গ্রামের নির্মল তরফদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: খুলনায় কলেজছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সুব্রত কলেজের হিন্দু ছাত্রাবাসের ৪০৮ নম্বর ঘরে থাকতেন। ওই ঘরের অপর দুই শিক্ষার্থী দুইদিন আগে বাড়ি চলে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ওই ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় অন্য শিক্ষার্থীদের সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে।
তিনি জানান, কি কারণে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে তা জানাতে পারেনি পুলিশ। এঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নথিভূক্ত করে তদন্ত চলছে।
ওসি আরও জানান, বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২ ভাইয়ের লাশ উদ্ধার
বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
বাগেরহাটে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ৮ হাজার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত
বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আট হাজারেরও বেশি মাছের ঘের ডুবে গেছে এবং তিন কোটি টাকার চিংড়ি ও বিভিন্ন মাছ ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, ঘেরের বাঁধ ভেঙ্গে পানি মৎস্য ঘেরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। অনেকে ঘেরের পাড় মাটি দিয়ে উঁচু করে আর জাল দিয়েও শেষ পর্যন্ত চিংড়ি রক্ষা করতে পারেনি। এছাড়া বিভিন্ন ঘের ডুবে মিশে একাকার হয়ে গেছে।
এদিকে ঘেরের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ঘের ডুবে তিন কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বর্ষার শেষ সময়ের বৃষ্টিতে রাজধানীর জনজীবন বিপর্যস্ত
তবে মৎস্য চাষিদের তথ্য মতে, তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নœচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে পাঁচদিন ধরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে বাগেরহাট সদর, রামপাল, মোংলা, শরণখোলা, কচুয়া এবং মোড়েলগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের সময় নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে।
এছাড়া বৃষ্টিতে নিম্নœ আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় মোংলায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করেছে।
অন্যদিকে সুন্দরবনের মধ্যে থেকে জোয়ারের পানি নেমে গেছে। শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিন জোয়ারের সময় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বনের মধ্যে দিয়ে সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।
পানির কারণে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে পড়ে। তবে পানিতে বন্যপ্রাণীর কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না তা জানা যায়নি। সুন্দরবনের মধ্যে থেকে জোয়ারের পানি নেমে গেছে।
এছাড়া বুধবার জোয়ারের সময় পানি সুন্দরবনে প্রবেশ করেনি বলে বন বিভাগ জানায়।
অপর দিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সুন্দরবনসহ উপক‚লে আশ্রয় নেয়া জেলেরা মাছ ধরতে আবারও সাগরে ফিরে যাচ্ছে।
বুধবার ভোর থেকে জেলেদের তাদের ট্রলার নিয়ে সাগরে রওনা হতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল জানান, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি আর সেই সঙ্গে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আট সহস্রাধিক মৎস্য ঘের ডুবে গেছে।
এর মধ্যে বাগেরহাট সদরে ৫০০টি, মোংলায় দুইহাজার, রামপালে দুইহাজার, মোড়েলগঞ্জে দুইহাজার, কচুয়ায ৫০০টি এবং শরণখোলায় এক হাজার মৎস্য ঘের ডুবে যায়।
ক্ষয়ক্ষতির পূণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মোংলার মৎস্য চাষি ফণিভুষণ বিশ্বাস জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে তার এবং তাদের আশেপাশে অধিকাংশ মৎস্যঘের ডুবে গেছে। বিভিন্ন ঘের ডুবে মিশে গেছে। এসব ঘেরের ওপর দিয়ে এক ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। তাদের কয়েক লাখ টাকার চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য চাষি সমিতির সভাপতি সুমন ফকির জানান, বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে জেলায় কয়েক হাজার মৎস্যঘের ডুবে চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছ ভেসে গেছে। মৎস্য চাষিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
চিংড়ি শিল্প বাঁচাতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের প্রণোদনা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় ৬৯ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে ৭৭ হাজার ৬৫৭টি মৎস্যঘের রয়েছে। মৎস্য চাষের সঙ্গে জড়িত চাষির সংখ্যা ৬২ হাজার।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ মজুমদার জানান, বুধবার জোয়ারের সময় সুন্দরবনে পানি প্রবেশ করেনি। এর আগে তিন দিন সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে সাড়ে তিন ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। আশ্রয় নেয়া জেলেরা তাদের ট্রলার নিয়ে আবারও সাগরে মাছ ধরতে ফিরে যাচ্ছে।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, স্থল নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারত প্রদেশের মধ্যে অঞ্চল ও পাশ^বর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। এছাড়া এটি আরও দুর্বল হতে পারে।
বৃহস্পতিবার থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে পারে ।
আরও পড়ুন: তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
প্রথমবার মোংলা বন্দর জেটিতে ৮ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়েছে
ইতিহাসে এই প্রথম মোংলা বন্দর জেটিতে সবচেয়ে বেশি গভীরতার কন্টেইনারবাহী জাহাজ ভিড়েছে। সোমবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে চায়না থেকে আসা এমভি এমসিসি টোকিও নামে এই জাহাজটি বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করে।
জাহাজটিতে সাত হাজার ২৪১ মেট্টিক টন ওজনের বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ২৮৯টি কন্টেইনার রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: গতি ফিরছে বাণিজ্যে, বদলে যাচ্ছে মোংলা বন্দর
বিদেশি এ জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ওসান ট্রেড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাহিদ হোসেন জানান, এমসিসি টোকিও নাম আট মিটার গভীরতা সম্পর্ণ বিদেশি এই জাহাজটি মোংলা বন্দররের জেটিতে ভিড়েছে। ১৯৮৫ সালের পর এটিই জেটিতে ভিড়া অধিক গভীরতা সম্পন্ন কন্টেইনারবাহী জাহাজের নতুন রেকর্ড। সাংহাই বন্দর থেকে কন্টেইনার বোঝাই এ জাহাজটি ছেড়ে আসে। এরপর তাইওয়ন ও মালয়েশিয়া হয়ে সোমবার দুপুরে মোংলা বন্দর জেটিতে ভিড়ে। ১৮৬ মিটার লম্বা এ জাহাজটির গভীরতা আট ফুট।
সোমবার বন্দর জেটিতে ভিড়া এই জাহাজটি বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ। আর এটা বন্দরের জন্য বিশাল অর্জন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমনে রেকর্ড সৃষ্টি
সৈয়দ জাহিদ হোসেন জানান, ১৯৮৫ সালের নভেম্বর থেকে এ বন্দরে কন্টেইনারবাহী জাহাজ আগমন ও কন্টেইনার পণ্য বোঝাই-খালাস শুরু হয়। কিন্ত ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজের আগে কোনদিন বন্দরের নিজস্ব জেটিতে ভিড়েনি। আর আগে যা এসেছে তার সবই ছিল সাত মিটার গভীরতা সম্পন্ন কন্টেইনার জাহাজ। বন্দর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ড্রাফটের জাহাজই হলো এমভি এমসিসি টোকিও। এ জাহাজটিতে আসা আমদানি পণ্য বোঝাই এ কন্টেইনার খালাস শেষে এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার নিয়ে বুধবার আবারো চায়নার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
শিপিং এজেন্ট ওসান ট্রেড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, মূলত বন্দর চ্যানেলের আউটারবারের ড্রেজিং সম্পন্ন ও ইনারবারে ড্রেজিং চলার কারণেই আট মিটার গভীরতার এ জাহাজটি সরাসরি বন্দর জেটিতে আসতে পেরেছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার দুপুরে এম ভি এমসিসি টোকিও বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে ভিড়ে বন্দরের সক্ষমতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এটা অধিক গভীরতার জাহাজ যা জেটিতে ভিড়ে নতুন ইতিহাসের রেকর্ড করেছে। আর এটি মুলত সম্ভব হয়েছে সম্প্রতি আউটারবার ড্রেজিং সম্পন্ন করতে পারায় এবং ইনারবার ড্রেজিং চলমান রাখার কারণে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশ
এখন থেকে এ বন্দরে বড় বড় অধিক গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ অনায়াসে আসা ও যাওয়া করতে পারবে। এখানে সেই ধরনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে। বিদ্যমান সুযোগ সুবিধার কারণে দেশের বড় বড় মেগা প্রকল্পের মালামাল এ বন্দর দিয়ে আমদানি ও নতুন নতুন বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানিও বেড়ে গেছে।
জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা বৃষ্টি, নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে।
সোমবার দুপুরে ভৈরব, বলেশ্বর, পানগুছি, পশুরসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলার রামপাল ও মোংলায় জোয়ারে আর এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে প্রায় দুই হাজার চিংড়িঘের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে ওঠায় কয়েকশ’ ট্রলার নিয়ে জেলেরা বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচর, নারিকেলবাড়িয়া ও কটকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, স্থল নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশে ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পূর্ণিমা ও স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সমূহের নিম্নাঞ্চল এক থেকে দুই ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
বাগেরহাটে ‘ছিনতাইকারী’ চক্রের ৪ সদস্য আটক
বাগেরহাটে ‘ছিনতাইকারী’ চক্রের চার সদস্যকে আটকের দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রবিবার রাতে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব খুলনা-৬ এর সদস্যরা তাদের আটক করে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার রুহুল আমিন (২৬) ও আব্দুল আহাদ (২০) এবং গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিবেক বৈরাগী (৪২) ও আলিম শেখ (২২)।
আরও পড়ুুন:দামুড়হুদায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক
র্যাব জানায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রুহুল আমিন ‘ছিনতাইকারী’ চক্রের মুলহোতা।
খুলনা র্যাব ৬ এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট পৌরসভারহরিণখানা এলাকা থেকে মোটরসাইকেলেকরে আসা দুইজন ছিনতাইকারীর এক নারীর গলা থেকে একটি স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে র্যাব সদস্যরা অভিযোগ পেয়ে পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করে।
রবিবার রাতে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ওই চার সদস্যকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি ছুরি, ছিনতাইকৃত স্বর্ণের চেইন, একটি মোটরসাইকেল, একটি মোবাইল ও নগদ ৪১ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের বাগেরহাট সদর এবং গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুুন:পাবনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত,অভিযুক্ত আটক
মানববন্ধনে যোগ দিতে ঢাকায় আসার পথে সলিমপুরের ৬৩ বাসিন্দা আটক
তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
আমন ধান উৎপাদনে বিপর্যয় বাগেরহাটে আসন্ন খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাগেরহাটে ৪৮৯ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমন মৌসুম প্রায় শেষের দিকে খরার পরিস্থিতির কারণে জেলার প্রায় ৪০ শতাংশ কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে।
পানির অভাব কৃষকদের আমনের চারা রোপণ করা কঠিন হয়ে উঠেছে এবং যারা ইতোমধ্যে চারা রোপণ করেছেন তারা তাদের ফসল হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ধান চাষ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা এবং কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাতের কথা ভাবছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে মোট দুই লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮টি কৃষক পরিবার রয়েছে। ১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন ধান রোপনের মৌসুম। বাগেরহাট জেলায় এ বছর ৭৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পর্যন্ত আবাদ হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় বন্ধ হওয়া ৬ ট্রেন চালু হয়নি, দুর্ভোগে যাত্রীরা
এছাড়া বাগেরহাটে চলতি বছরের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুই হাজার ৫৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে তিন হাজার ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সে হিসাবে জেলায় ৪৮৯ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে।
বাগেরহাটের কচুয়া ও ফকিরহাট উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানকার সব ধান খেতে ফাটল ও আগাছা দেখা দিয়েছে। খাদ্য সংকটে উদ্বিগ্ন কৃষকরা সেচের মাধ্যমে চারা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। জেলার সদর, শরণখোলা ও মোল্লারহাট উপজেলায়ও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় কৃষক শেখ আসাদুর রহমান প্রতি বছর পাঁচ একর জমিতে ধান লাগান। জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তিনি সংসার চালান। এ বছর মৌসুমের শুরুতে জমিতে প্রথমবার যে বীজপাতা তৈরি করেছিল তা বীজতলায় মারা গেছে। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করে অল্প পরিমাণ জমিতে বীজপাতা তৈরি করেছে। দুইবারের চেষ্টার বীজপাতা এখন গরু-ছাগলে খাচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
কৃষক আসাদ বলেন, শুকনো জমিতে চারা রোপণ করা যায় না। এ মৌসুমে পানির অভাবে কোনো চারা রোপন করতে পারিনি। আমন চাষের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে, মানে এ বছর আমি ধান চাষ করতে পারব না। আমি জানি না আমি কীভাবে বাঁচব।
বিভিন্ন দেশে কৃষি সেক্টর ঘুরে দেখা ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ জানান, নেদারল্যান্ডে শতকরা ৬০ শতাংশ পানি নদী-খালে বাষ্পীভূত হয়। কীভাবে ওই বাষ্পীভূতকে রোধ করে সেচের ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে তারা গবেষণা করছে। মাটি এবং পানি নিয়ে গবেষণা করলেও আমরা কিন্তু তা করছি না।
ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাস অনেক দেশের কৃষি পদ্ধতি দেখেছেন। ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি জেলায় চলমান কৃষি সঙ্কট নিরসনে কিছু ধারণা দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘অপরিকল্পিত’ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মরে যাচ্ছে শত শত গাছ
তিনি বলেন, পানি ও মাটি নিয়ে গবেষণা করে ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সৌরশক্তি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বর্তমান সেচ পদ্ধতিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে এবং বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে।
বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান পানি সংকট মোকাবিলায় ধান চাষে পানির পাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর জানান, ক্ষতি কমানোর জন্য, আমরা কৃষকদের বিআর-২৩ জাতের ধান চাষ করতে এবং সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বর্তমানে জেলায় চার হাজার ৫০০ সেচযন্ত্র চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
তিনি জানান, চারা রোপণের সময়সীমা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আজিজুর বলেন, সরকার এ বছর আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হারাবে কি না তা জানতে আমাদের ফসল কাটার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
মোংলা বন্দর এলাকায় সড়ক ও ফেরিঘাট নির্মাণ দু’টি এলপিজি প্লান্টের কার্যক্রম ঝুঁকিতে ফেলবে
মোংলা বন্দর শিল্প এলাকায় দুটি এলপিজি প্ল্যান্টের মাঝখানে একটি ফেরি ঘাট ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ স্পর্শকাতর স্থাপনা দুটি জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) বৃহত্তম দু’টি বেসরকারি অপারেটর - ওমেরা এলপিজি এবং যমুনা এলপিজি মোংলা বন্দর এলাকায় তাদের প্ল্যান্টের মধ্য দিয়ে রাস্তা এবং লাউডোবা ফেরিঘাট নির্মাণের বিরোধিতা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিদেশি এলপিজি পরিবহনের জন্য তাদের প্ল্যান্টে চলাচল যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বিকল্প স্থানে সড়ক ও ফেরি ঘাট নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
এলপিজি অপারেটররা দাবি করছে যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (এমপিএ) ভূমি নীতি লঙ্ঘন করে সড়কটি নির্মাণ করছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, এ ধরনের নির্মাণের ফলে মোংলা বন্দরের নৌ চলাচল এবং সড়কের দুই পাশে স্থাপিত দু‘টি প্ল্যান্টে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষও পশুর চ্যানেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বন্দরের শিল্পাঞ্চল হয়ে এ সড়ক নির্মাণ করা দেখে খুশি নন।
যমুনা ও ওমেরা এলপিজি প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে এই সড়ক নির্মাণের বিরোধিতা করে মোংলা বন্দরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে।
দাকোপ উপজেলা থেকে খুলনা পর্যন্ত স্থানীয় জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এক কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সড়ক ও ফেরিঘাট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মৌখিক অনুমতির নিয়ে আবারও নির্মাণ কাজ শুরু করে।
এদিকে, এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলওএবি) সভাপতি ও ওমেরা পেট্রোলিয়ামের মালিক আজম জে চৌধুরী বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মুসার সঙ্গে দেখা করে বন্দর শিল্প এলাকায় ওমেরা ও যমুনা এলপিজি প্ল্যান্টের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত সড়ক ও ফেরি ঘাট নির্মাণের অনুমতি না দেয়ার জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, বাগেরহাটে বন্দর শিল্প এলাকা দিয়ে কোন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেননি তারা।
তারা বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক ও ফেরিঘাট নির্মাণ করা হলে বন্দরের পশুর নদী চ্যানেলের নৌ চলাচল ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে এবং সেখানকার নাব্যতা কমে যাবে।
বাগেরহাটে ১৫ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার, সুন্দরবনে অবমুক্ত
বাগেরহাটের মোংলায় হাঁস-মুরগির খামার থেকে ১৫ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বন বিভাগের সদস্যরা মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের খরমা-কাটাখালী গ্রামের রুহুল আমিন হাওলাদারের বাড়ির খামার থেকে ওই অজগর সাপটি উদ্ধার করেন।
জানা যায়, বুধবার রাতের কোন এক সময় অজগরটি খামারে ঢুকে পড়ে। উদ্ধার করা অজগরটিকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।
বন কর্মকর্তা জানান, অজগরটির দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট এবং ওজন ২৭ কেজি। পুরুষ প্রজাতির ওই অজগরটির বয়স ১০ থেকে ১২ বছর বলে মনে করা হচ্ছে।
খামারের মালিক রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, ভোরে খামারে হাঁস-মুরগির ডাকাডাকির শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। খামারে গিয়ে দেখে একটি বিশাল সাইজের অজগর খামারের মধ্যে ঢুকে মুরগি ধরে খাচ্ছে। তিনটি মুরগি ও একটি হাঁস অজগর খেয়ে ফেলেছে। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে সুন্দরবন বিভাগকে ঘটনাটি জানান।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে আগুনে ৭ দোকান পুড়ে ছাই
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের জিউধরা স্টেশন কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী জানান, খবর পেয়ে তারা ওই খামার থেকে অজগরটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বড়ইতলা এলাকায় অগরটি অবমুক্ত করা হয়।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সুন্দরবন সন্নিহিত গ্রাম থেকে প্রায় সময় বিভিন্ন ধরণের বণ্যপ্রাণী উদ্ধার করা হচ্ছে। সোমবার জিউধরা রাস্তার পাশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় একটি ভুতুম প্যাঁচা উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়ার পর উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর কয়েকদিন আগে বন সংলগ্ন এলাকা থেকে বানর, সজারু, তক্ক, সাপ এবং অজগর উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ছয়মাসে সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রাম থেকে অর্ধশতাধিক অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অজগর সুন্দরবন ছেড়ে নদী-খাল পাড়ি দিয়ে বনসংলগ্ন লোকালয়ে যায়। তারা খবর পেয়ে অক্ষত অবস্থায় অজগরগুলোকে উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করে।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে পানিতে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু
বাগেরহাটে হাঁসের ঘর থেকে ১২ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার, সুন্দরবনে অবমুক্ত
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় চালান মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে রাশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলায় এসে ভিড়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ‘এমভি ইউনিউইসডম’- নামের এই বিদেশি জাহাজটি বন্দরের ৭নং জেটিতে নোঙ্গর করে।
রাতেই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া থেকে তৃতীয় চালানে আমদানি করা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে ওই জাহাজটি মোংলা বন্দরে আসে। জাহাজ থেকে মালামাল খালাসের পর সড়ক পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নেয়া হবে।
বিদেশি ও জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ম্যাক শিপিংয়ের খুলনার ম্যানেজার আবুল হাশেম শামীম জানান, বেলিজ পতাকাবাহী ‘এমভি ইউনিউইসডম’- নামের জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করার পর খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাহাজটিতে রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা ২৮০টি প্যাকেজে এক হাজার ৪২১ মেট্রিক টন বিভিন্ন মেশিনারিজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুরে কাজাখস্তানের নাগরিক হত্যা: কারাগারে বেলারুশের ৩ নাগরিক
আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ খালাস কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান।
মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন জানান, বিদেশি ওই জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কাজ চলছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা সাংবাদিকদের বলেন, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণেই দেশের বেশিরভাগ মেগা প্রকল্পের মালামাল এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা হচ্ছে। এতে একদিকে বন্দর ব্যবহারকারীদের অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে, অন্যদিকে নিরাপদে অল্প সময়ে মালামাল প্রকল্প এলাকায় মালামাল নিতে পারছে। পদ্মা সেতু চালুর কারণে ঢাকার সঙ্গে দুরত্ব কমে যাওয়ায় মোংলা বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের ক্রমশ আগ্রহ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান নাগরিকের মৃত্যু
সোমবার সন্ধ্যায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে একটি জাহাজ মোংলা বন্দর জেটিতে ভেড়ে। এছাড়া মেট্রোরেল, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ও বঙ্গবন্ধু রেলসেতুসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মেগা প্রকল্পের মালামাল আসছে মোংলা বন্দর দিয়ে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১ আগস্ট রাশিয়ান পতাকাবাহী ‘এমভি কামিল্লা’- নামের জাহাজে তিন হাজার ৩২৮ দশমিক ২৩৭ মেট্রিকটন মেশিনারিজ এবং ৫ আগস্ট লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী এমভি ড্রাগনবল জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুই হাজার ৮৬২ টি প্যাকেজ গুরুত্বপূর্ণ মেশিনারি নিয়ে দুটি জাহাজ মোংলা বন্দরে ভেড়ে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: ১১ দিনে ৫ রুশ নাগরিকের মৃত্যু, তদন্ত করছে পুলিশ