শেখ হাসিনা
যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কেনার অর্থ শিশুদের কল্যাণে সঞ্চয় করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কল্যাণের স্বার্থে চলমান যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধে এগিয়ে আসতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
বুধবার(১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ এর উদ্বোধনী ও শেখ রাসেল পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডির অন্যতম শহীদ ছিলেন রাসেল।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিশু ও নারীরা। ইসরায়েল এখন ফিলিস্তিনের ওপর হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবার একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অনেক শিশু নিহত হয়েছে। সেখানে শিশুদের রক্তাক্ত ছবি দেখা গেছে। ইসরায়েলেও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা যুদ্ধে বাবা-মা ও সন্তানদের হারানো মানুষের বেদনা ও কষ্ট বুঝতে পারেন। কারণ ১৯৭৫ সালের রক্তপাতের পর বিদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করতে হয়েছে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি আহ্বান জানাচ্ছি যুদ্ধ বন্ধের।’
তিনি আরও বলেন, অস্ত্র উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিশ্বের শিশুদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে হবে। ‘এটা আমাদের দাবি। আমিও এই দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সবসময় শান্তির জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা শান্তি চাই। কারণ, শান্তি উন্নয়ন নিয়ে আসে এবং যুদ্ধ ধ্বংস ডেকে আনে। আমরা ধ্বংস চাই না, বরং উন্নয়ন ও শান্তি চাই।’
শিশুদের কল্যাণ ও সাফল্যে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের উন্নয়নে তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সুতরাং শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের পাশাপাশি তাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুরা যাতে শৈশব থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সম্পৃক্ত হয়ে সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। আমরা দেশের শান্তি ও অগ্রগতি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাবা-মা ও প্রিয়জনদের অনুগত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'শিক্ষাই একজন মানুষের প্রধান শক্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ও তার ছোট বোন রেহানা তাদের সন্তানদের বলেছিলেন যে তারা তাদের জন্য অর্থ ও সম্পদের মতো কিছুই রেখে যেতে পারবেন না এবং তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। তারা (তাদের সন্তানরা) প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা গ্রহণ করেছে এবং বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, এখন তাদের সন্তানরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়ন ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির মতো দেশের উন্নয়নে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা সামনে আসে না। তারা নেপথ্যে থেকে দেশ ও দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের কল্যাণে আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে শেখ রাসেলকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক থেকে দূরে থেকে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশকে এগিয়ে নিতে শিশুদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষী হতে আহ্বান জানান।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকারের ভিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু-কিশোররা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হবে এবং সে সময় দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি স্কুলে একটি করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন, শিশু বক্তা আমিরা নায়ের চৌধুরী বক্তব্য দেন।
পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ভারতীয় কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার একটি ভিডিও বার্তা, শেখ রাসেলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উপলক্ষে একটি ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট কার্ড বিনিময়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং আইসিটি বিভাগের আরও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
রাসেলের শৈশব নিয়ে লেখা 'শ্রাবণের আবরণ শেখ রাসেল' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
'শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩।
রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল পদক-২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সমাপনী পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে) এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
জনগণ যতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবে, কোনো আলটিমেটাম বা বার্তা দিয়ে লাভ হবে না: কাদের
জনগণ যতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবে, কোনো আলটিমেটাম বা বার্তা দিয়ে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন, ততদিন কোনো আলটিমেটাম বা বার্তা দিয়ে লাভ হবে না। সংবিধান থেকে একচুলও সরবে না সরকার।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি শর্ত প্রত্যাহার করলে সরকার সংলাপের বিষয়ে বিবেচনা করবে: ওবায়দুল কাদের
এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের ঢাকায় এনে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। এই নাশকতার সমুচিত জবাব দিতে আওয়ামী লীগ সরকার প্রস্তুত আছে।’
বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম শিগগিরই কমবে: ওবায়দুল কাদের
মৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে টানাটানি করে কোনো লাভ নেই: ওবায়দুল কাদের
স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তার সরকারের পদক্ষেপ উপলক্ষে সোমবার (১৬ অক্টোবর) ১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকার ফার্স্ট ডে কভার এবং ৫ টাকার ডাটা কার্ড প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সদস্যতার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ৫০ টাকার একটি স্মারক ডাকটিকিট, একটি ১০-টাকার উদ্বোধনী দিনের কভার এবং ৫ টাকার একটি ডাটা কার্ডও প্রকাশ করেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী দিনের কভার, ডাটা কার্ড ও স্যুভেনির অবমুক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড এভিয়েশন নেভিগেশন সার্ভিসের জন্য আইসিএওর সহায়তা কামনা প্রধানমন্ত্রীর
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ ক্যানসেলার ব্যবহার করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি সিকদার উপস্থিত ছিলেন।
ডাকটিকিট, প্রথম দিনের কভার এবং ডেটা কার্ড, ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে বিক্রি করা হবে এবং পরবর্তীতে সারা দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান পোস্ট অফিসগুলোতেও পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নদী-খালের ক্ষতি করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী
আগামী নির্বাচনে আ. লীগ ক্ষমতায় এলে ঢামেক হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
আগামী নির্বাচনে আ. লীগ ক্ষমতায় এলে ঢামেক হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (১৬ অক্টোবর) প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে আগামী সাধারণ নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য তার দল জয়ী হলে রাষ্ট্র পরিচালিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালকে অত্যাধুনিক সুবিধা দিয়ে উন্নীত করা হবে।
পানিসম্পদ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আগামীতে সুযোগ পেলে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালকে উন্নত করব।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ডাক্তার, নার্স ও দক্ষ জনবল দরকার; আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার জন্য আলাদা তহবিল বরাদ্দ করেছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য সরকার বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, ঢামেক হাসপাতালকে ৪০০০-৫০০০ শয্যার অতি আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নদী-খালের ক্ষতি করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বর্তমান মেয়াদে সরকার এটা করতে পারত।
তিনি বলেন, ‘...কিন্তু করোনা মহামারি এবং ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ব্যয় এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিশাল ব্যয়ের কারণে আমরা এটা করতে পারিনি।’
তিনি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় টিকাদান কর্মসূচির জন্য ভ্যাকসিন আনার জন্য সরকারের বিভিন্ন ব্যয় সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মহামারি থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলাম, যদিও বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ এতে মারা গিয়েছিল, যার মধ্যে অনেক ধনীও ছিল। কিন্তু, এই লক্ষ্যে আমাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ৩২ শয্যার প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালকে ৫০ শয্যার এবং ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করেছেন এবং বড় জেলা হাসপাতালগুলোকে ৫০০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করেছে।
তিনি বলেন, তারা তাদের আবাসনের জন্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করার পাশাপাশি ৪০ হাজার নার্স এবং ২২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলো যাতে কোনও অবহেলার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তারা সারাদেশে কমিউনিটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন। কমিউনিটি সেন্টারগুলো বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ বিতরণ করছে।
তিনি বলেন, সুবিধাগুলো বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে।
তিনি বলেন, ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পরও ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত সরকার যারা সেগুলোতে কাজ করছেন এবং তাদের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন; তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন বলে দাবি করে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ তারা (ইমিউনিটি ক্লিনিক) রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সকলের সেবা দেয়।
আরও পড়ুন: যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট জনগণের কল্যাণের কথা ভাবে না, বরং নিজেদের ভাগ্য তৈরিতে ব্যস্ত। তাদের মানসিকতা সংকীর্ণ।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহেদ ফারুক।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর দুটি পৃথক ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশের প্রতিটি উপজেলায় সুবিধা স্থাপনের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা চতুর্থ ধাপে ২৮টি জেলার ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কার্যত ‘৬৫টি কমিউনিটি চক্ষু কেন্দ্র’ উদ্বোধন করেন।
একই কর্মসূচি থেকে তিনি ৮০টি উন্নত স্কিম ও ৪৩০টি ছোট নদী, খাল ও জলাশয়ের পুনঃখনন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০টি নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
যশোরের শার্শা উপজেলা, পাবনার সাথিয়া উপজেলা এবং মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে বাস্তবায়িত উন্নয়ন পরিকল্পনা সমন্বিত ‘জয়যাত্রা’ শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
পরে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এসে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর, বিশেষ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদান সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে জানান।
আরও পড়ুন: পাঠদান পদ্ধতিকে আন্তর্জাতিক মানের করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নির্বাচন বানচালের জন্য জনগণ বিএনপির আন্দোলন উপেক্ষা করে অবাধে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
তিনি আরও বলেন, এ দেশে যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে এবং জনগণ অবাধে ভোট দেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর কাওলার সিভিল এভিয়েশন মাঠে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মানুষের সেবা করার মানসিকতা গড়ে তুলুন: সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
এ ছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং উপলক্ষে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির মতো লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, খুনি, ডাকাত ও চোরেরা ক্ষমতায় এলে তারা শুধু দেশকে ধ্বংস করে দেবে।
তিনি বলেন, ‘তারা যেন দেশকে ধ্বংস না করে, এজন্য একমাত্র নৌকা প্রতীকই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দিন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের নেতা কে হবেন? তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? সেই দুর্নীতিবাজ পলাতক অপরাধী নাকি এতিমদের টাকা আত্মসাৎকারী তা স্পষ্ট নয়।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা খুব ভালো করেই জানে, নির্বাচনে নৌকামার্কায় ভোট দিলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এবং দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন বানচাল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমি জনগণকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করব, যাতে তারা (বিএনপি) তা করতে না পারে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণ যদি নৌকার পক্ষে ভোট দেয়, তাহলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, তা না হলে থাকবেন না। ‘তবে আমি জনগণের কল্যাণে আমার কাজ চালিয়ে যাব।’
আওয়ামী লীগকে আগামীবার দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ দিতে সবাইকে নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যে আলোচনা চলছে
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যদি উন্নয়ন চান তাহলে ভোট দিন, যদি ধ্বংস চান তাহলে বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দিন।’
বিএনপির বিদেশে যাওয়ার আন্দোলনের বিষয়ে তিনি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, এই আন্দোলন কোনো ফল বয়ে আনবে না।
তিনি বলেন, জনগণের ক্ষমতাই শ্রেষ্ঠ শক্তি, আমি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি, জনগণের ওপর আমার আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঢাকা-১৮) হাবিব হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
সকাল থেকেই রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডসহ বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট ও টুপি পরিহিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য সমাবেশস্থলে জড়ো হন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদিকে স্যুভেনির উপহার দিলেন সায়মা ওয়াজেদ
চলতি মাসে ব্রাসেলসে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এ যোগ দিতে চলতি মাসের শেষের দিকে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফর করবেন।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলস ত্যাগ করবেন এবং ২৭ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।
তিনি বলেন, ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
মোমেন আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, অনেক দেশ বাংলাদেশের কাছে তাদের পণ্য বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন সম্প্রতি জি-২০ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না- জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘তিনি এখনও জানেন না।’
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫-২৬ অক্টোবর। দুই দিনব্যাপী এআলোচনায় অংশ নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ই্ইউ), বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধি, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একত্রিত করছে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম।
আরও পড়ুন: আসন্ন সফরে নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন মার্কিন কর্মকর্তা আফরিন আখতার: মোমেন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গ্লোবাল গেটওয়ে কৌশল পরিবহন ও সরবরাহ চেইন, গ্রিন এনার্জি, আধুনিক টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা ও গবেষণার একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে বিশ্বের দেশ এবং অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করে। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন ও ইউরোপীয় মূল্যবোধের উপর জোর দেয়। যেমন- সুশাসন, স্বচ্ছতা ও সমান অংশীদারিত্ব।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্দেশ্য হলো সরকারি ও বেসরকারি খাতের চ্যালেঞ্জ, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতাসহ অবকাঠামোতে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কের জন্য নেতাদের একত্র করা।
এটি গ্রিন এনার্জি স্থানান্তর এবং সবুজ হাইড্রোজেন; শিক্ষা ও গবেষণা; ক্রিটিকাল কাঁচামাল; পরিবহন করিডোর; স্বাস্থ্য পণ্য উৎপাদন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো থিমের উপর ফোকাস করা হবে।
এটি গ্লোবাল অবকাঠামো ও বিনিয়োগের জন্য জি৭ অংশীদারিত্ব প্রদর্শনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্মও তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গুজবে কান দেবেন না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
শক্তিশালী, স্থিতিশীল, স্বনির্ভর বাংলাদেশ ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে পারে: মোমেন
শেখ হাসিনা একজন মর্যাদাবান দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক: মতিয়া চৌধুরী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সারাবিশ্বে একজন মর্যাদাবান দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে অভিষিক্ত করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, পঁচাত্তরের ষড়যন্ত্রকারীরা আজও কালচক্রের চক্রান্ত চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই চক্রান্ত সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক পরিবার, একটি মহীরুহ-যা খরতপ্ত দুপুরে মানুষকে বার বার ছায়া দিয়েছে এবং ঝড়-বৃষ্টিতে মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। এই মহীরুহের অনেক ডালপালা রয়েছে- এ ডাল পালার মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত জননেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আতাউর রহমান খানের মতো বলিষ্ঠ কিছু ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন: বিএনপি জোট কৃষির উন্নয়নে কাজ করেনি: মতিয়া চৌধুরী
সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রামেমর কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মরহুম জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, কখনো জনবিচ্ছিন্ন হবেন না। আপনারা মনে রাখবেন শেখ হাসিনার একমাত্র চিন্তা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের সকলের একমাত্র লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর। তাহলে উন্নত দেশ হিসেবে আমাদের স্বপ্ন ও প্রাপ্তির ষোলকলা পূর্ণতা পাবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নত হয়েছে, আজকে গ্রামাঞ্চলে ফকিরেরা পান্তা ভাত দিলে খেতে চায়না। আমরা অনেক উৎসব শুনেছি, কিন্তু বছরের শুরুতে বই উৎসব হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকে ২২ রকমের ঔষধ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার নজির স্থাপন করেছে। আজকে আমরা দেখতে পায় বাংলাদেশ দূর্দান্তনীয়ভাবে এগিয়ে চলেছে। এখান থেকে পিঁছনে যাওয়ার কোন অবকাশ নেই। যদিও ষড়যন্ত্র হচ্ছে, শত্রুর মুখে চাই দিয়ে আমাদের গতি কেউ রোদ করতে পারে নাই, শেখ হাসিনার গতি কেউ রোদ করতে পারবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যেভাবে ৭১’র সদ্য স্বাধীন দেশের অগ্রযাত্রাকে তারা রুদ্ধ করে দিয়েছিল। কারণ, ’৭৫-এর ঘাতকরা এখনো নানাভাবে দেশের ক্ষতি, শেখ হাসিনার ক্ষতি ও আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি সমঝোতার সুযোগ রাখেনি: মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে ওবায়দুল কাদের
ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীরা মতলববাজ: মতিয়া চৌধুরী
মানুষের সেবা করার মানসিকতা গড়ে তুলুন: সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
সরকারি চাকরিজীবীদের জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়ে মানুষের সেবা করার মানসিকতা গড়ে তুলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আপনাকে জনগণের দোরগোড়ায় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে, জনগণের জন্য জনগণকে (এই প্রক্রিয়ায়) জড়িত করতে হবে।’
রবিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাদের ৭৫তম ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সের সার্টিফিকেট প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সে ৬০২ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৩০ জন সেরা পারফরমারের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি নতুন বাস্তবায়িত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (জিইএমএস) সফটওয়্যার উন্মুক্ত করেন।
শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের সর্বদা জনগণের সেবক মনে করে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সেবাকে নিছক চাকরি মনে করবেন না, বরং দেশ সেবা করার সুযোগ। আপনাকে এই জিনিসটি সর্বদা মনে রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৮ সময়কে বাংলাদেশের ইতিহাসে দুটি কালো অধ্যায় বলে অভিহিত করেন কারণ ২৯ বছরেও দেশ এগিয়ে যেতে পারেনি।
আরও পড়ুন: কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয় সে বিষয়ে জ্ঞান দেওয়ার প্রয়োজন নেই: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক চাপ কমাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান অর্থনৈতিক চাপ এবং বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রশমিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কাজ করতে বলেন।
তিনি বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে আজ আমাদের অর্থনীতি কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। সবাইকে ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে সবাই উৎপাদন বাড়ায় এবং কোনো জমি অনাবাদি না থাকে।’
তিনি বলেন, সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারলে কোনো সমস্যা হবে না।
দেশে এখনও বিপুল সংখ্যক অনাবাদি জমি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি কর্মকর্তাদের তাদের সমস্ত অনাবাদি জমি উৎপাদনে আনতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বলেন।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশ কিছু সমস্যায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আজকে অনেকে রিজার্ভ সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। আমি বলেছি রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। দেশে যতক্ষণ খাদ্য থাকবে ততক্ষণ আমরা ভাবি না। আমরা ফসল চাষ করব এবং আমাদের খাদ্য তৈরি করব। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা ব্যয় করব এবং কিছু পরিমাণে কম (আমদানি হ্রাস) ক্রয় করব।’
প্রধানমন্ত্রী খাল, বিল এবং অন্যান্য জলাশয় রক্ষা করে পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুন: লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী
তিনি তাদের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের ফল সঠিকভাবে সঠিক সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছাতে, শুধুমাত্র একক পণ্য- তৈরি পোশাকের উপর নির্ভরতা কমাতে রপ্তানি ঝুড়ির বৈচিত্র্যকরণ, নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান এবং টেকসই উন্নয়ন কাজগুলি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে বলেন।
বিপুল জনসংখ্যার দেশে জমির অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশাল জনসংখ্যাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের মধ্যে এই মনোভাব তৈরি করতে হবে যে জনসংখ্যা একটি মূল্যবান সম্পদ।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। ‘আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে আজকের বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ... বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই।’
তিনি বলেন, তার সরকার রূপকল্প ২০২১ সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন দেশের অর্থনীতি, সরকার ও সমাজকে স্মার্ট করে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের প্রধান কারিগর ও সৈনিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে বলেন।
‘মাই ভিলেজ মাই টাউন প্রোগ্রাম’ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি গ্রামে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা যাতে গ্রামবাসীদের নাগরিক সুবিধা পেতে শহরে যেতে না হয়।
চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং বর্তমান অবস্থান থেকে বাংলাদেশ যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য সবাইকে কাজ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ইভেন্টে তাহসিন বিনতে অনীশ সেরা পারফরমার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে রেক্টর পদক এবং সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন এবং সুমায়া জাহান ঝুলকা ও অঙ্কন পাল যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা অভিনয়শিল্পী হিসেবে সম্মাননা ও ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সটি সর্বকালের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতে ১৯টি ক্যাডার সার্ভিসের ৬০২ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে পরিচালিত হয়।
পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা (৪২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে), সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (জিইএমএস) প্রোগ্রাম, নবনির্মিত ১৫ তলা বিপিএটিসি ডরমেটরি (২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে) এবং কুমিল্লা ও টাঙ্গাইলে দুটি নবনির্মিত সার্কিট হাউস।
বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) গত ছয় মাসের কার্যক্রমের ওপর আলোকপাত করে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন এবং প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী চারজন তাদের অনুভূতির কথা জানান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এবং ৭৫তম ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সের ফলাফল উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রেক্টর মো. আশরাফ উদ্দিন।
পরে ৭৫তম ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সের অংশগ্রহণকারীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: দেশের ভাবমূর্তি আরও উন্নত করতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের কেন্দ্রে পরিণত হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের পর্যটননগর কক্সবাজার বা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শিগগিরই আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনার সফট ওপেনিং উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের বিমানবন্দরগুলোর রূপান্তর করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সময়ে সময়ে বিমান পরিবহন হাব পরিবর্তন হয়। এক সময় ছিল হংকং, তারপর সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও এখন দুবাই।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি একদিন বাংলাদেশ, আমাদের কক্সবাজার বা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হাব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রমবর্ধমান যাত্রী ও ফ্লাইট নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি নতুন রানওয়ে প্রস্তুত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সেই পরিকল্পনা আছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, আকাশপথের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সে কারণে সরকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক রাডার ও নেভিগেশন ব্যবস্থা স্থাপন করতে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসব স্থাপনের কাজ পুরোদমে চলছে।’ ফরাসি কোম্পানি থেলাস এই রাডার স্থাপন করছে।
তিনি বলেন, পুরোনোটিও একই ফরাসি রাডার-উৎপাদনকারী সংস্থা ‘থ্যালেস এলএএস’-এর মাধ্যমে স্থাপন করা, যা পরে সংস্কার করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা থেকে জেলায় বিমান যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে সরকার কিছু নতুন বিমান কিনতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি।’
তিনি আরও বলেন, সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের যোগাযোগ সহজ করতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সড়ক, রেল, নৌ ও বিমান যোগাযোগের উন্নয়ন করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বিমান যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়ের চাহিদা পূরণে তার সরকার এ খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সিলেটের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর বিমানবন্দর এবং রাজশাহী ও বরিশাল বিমানবন্দরের মতো সব বড় বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
এভিয়েশন সেক্টরের আধুনিকায়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিমানবন্দরে সরাসরি জেট ফুয়েল আনার জন্য পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, উন্নত পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
কয়েকটি দেশের চাঁদে অবতরণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ একদিন চাঁদ জয় করবে।
তিনি বলেন, সরকার লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি (বিএসএমআরএইউ) প্রতিষ্ঠা করেছে যা তা করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের মানুষ কিছু পেতে শুরু করেছে এবং বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার নাগরিকদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার মাসাহিরো কোমুরা এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
টার্মিনালে পৌঁছালে বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
ঐতিহ্যবাহী নাচ ও বাংলা গানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানায় একদল ছোট ছোট শিশু। তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে তিনি তৃতীয় টার্মিনালের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন, যেখানে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান তৃতীয় টার্মিনালের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে জানান।
তিনি তার লাগেজ চেক করে ইমিগ্রেশন পাস করার একটি ড্রেস রিহার্সালে অংশ নিয়েছিলেন এবং তাকে পরে বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে তৃতীয় টার্মিনালের উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী একটি বর্ণাঢ্য বিষয়ভিত্তিক নৃত্য উপভোগ করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও