শেখ হাসিনা
জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য যুদ্ধ দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো ধরনের যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটা সর্বদাই জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মঙ্গলবার সফররত ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘এমনকি মার্কিন সরকারও আমেরিকান জনগণকে বার্তা পাঠিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে বলছে।’
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ সবাই দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা আবারও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালির ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার, সশস্ত্র বাহিনী ও ভারতের জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
তিনি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের জীবন দিয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচলের সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যার কারণে এটি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বিশেষ শিশুদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভারতের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে চমৎকার বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত দারিদ্র্যের অবসান এবং এ অঞ্চলের জনগণের অবস্থা দূরীকরণে একসঙ্গে কাজ করা।
ভারতীয় সেনাপ্রধান দুই দেশের মধ্যে চলমান সামরিক সহযোগিতা নিয়ে কথা বলেছেন। আগামীকাল কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে যাবেন বলে জানান তিনি।
মনোজ পান্ডে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে তিনি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। ‘এই জাদুঘরটি ত্যাগের প্রতীক হিসেবে রয়ে গেছে এবং এটি নতুন প্রজন্মকে তাদের দেশকে ভালবাসতে অনুপ্রাণিত করবে।’
জেনারেল পান্ডে বলেন, দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়মিত শীর্ষ পর্যায়ের সফর তাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।
ভারতে বিজয় দিবস উদযাপনের কথা উল্লেখ করে জেনারেল পান্ডে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন, যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিচালিত একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান ‘প্রয়াস’-এরও প্রশংসা করেন। যা বহুমাত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সার্বিক শিক্ষাগত উন্নয়নে সেবা প্রদান করে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
শনিবার শেখ হাসিনার কারবন্দি দিবস পালন করবে আ.লীগ
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস শনিবার।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো দিনটিকে ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করে।
১/১১-এর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ধানমন্ডির সুধা সদনের বাসা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে দলটি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বেলা ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সভা পরিচালনা করবেন উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
এছাড়া আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দিবসটি পালনের জন্য আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এদিকে, কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ এক বিবৃতিতে, যার যার অবস্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে দেশবাসীকে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল বাঙালি হৃদয়ে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজজ্বলিত করে সংকট জয়ের ঐক্যবদ্ধ সুরক্ষা ব্যুহ সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
প্রায় ১১ মাস বন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ সাব-জেল থেকে মুক্তি পান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পড়ুন: দেশের অর্থনীতি নিয়ে জিএম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর
বাংলদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে: জিএম কাদের
বিশেষ শিশুদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী (এনডিডি) বিশেষ শিশুদের মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তার জন্য শিক্ষার সমন্বিত পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ শিশুদের মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য সমন্বিত শিক্ষার পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিসঅ্যাবিলিটিস (এনএএএনডি) কমপ্লেক্স’-এর স্থাপত্য নকশা প্রত্যক্ষ করার সময় এসব কথা বলেন।
অটিজম ও এনডিডি শিশুদের ন্যায্য ও সমান শিক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, অটিজম ও এনডিডি আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে উন্মুক্ত ও প্রাকৃতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি শহরগুলোতে যে কোনও নতুন আবাসিক ভবন নির্মাণে ক্রস ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি অটিজম ও এনডিডি শিশুদের জন্য বিদ্যমান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ আপগ্রেড করার পাশাপাশি নতুন প্রশিক্ষক ও শিক্ষক তৈরির ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী সূর্যের আলো ব্যবহার করা, খোলা বাতাস বা অক্সিজেনের ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় জলাধার সংরক্ষণ, উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ও এনএএএনডি কমপ্লেক্স ডিজাইন করার জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গার আহ্বান জানান।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ঠেকাতে পারবে না: কাদের
কোনো ষড়যন্ত্রই শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ধারাকে থামাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি তার দেশি-বিদেশি দোসরদের নিয়ে যত অপচেষ্টাই করুক, যত ষড়যন্ত্রই করুক; এদেশকে আর কখনো দাবিয়ে রাখা যাবে না।
বিদ্যুৎ খাতে ক্ষতিপূরণের কথা বলার আগে বিএনপি কি ভুলে গিয়েছে যে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষার জন্য তারা ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল উল্লেখ করে কাদের বলেন, খালেদা জিয়াও অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ক্ষতিপূরণ ছিল খুনিদের রক্ষা করার জন্য আর শেখ হাসিনা সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে।
আরও পড়ুন: আগুন নিয়ে খেলবেন না, বিএনপিকে ওবায়দুল কাদেরের হুঁশিয়ারি
বিএনপি এদেশে চিহ্নিত লুটেরা ও অর্থপাচারকারী দল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদেশের আদালত কর্তৃক প্রমাণিত সন্ত্রাসী দল বিএনপি। তারা চায় এদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক, কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দিবে না।’
পবিত্র ঈদের দিনে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বিএনপি নেতারা ঘৃণ্য এবং পরশ্রীকাতর রাজনীতির পরিচয় স্পষ্ট করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন বিএনপি যে মানুষের আনন্দ - বেদনার সাথে একাত্ম হতে পারেনা তার প্রমাণ পবিত্র ঈদের দিনে তাদের মিথ্যাচার এবং বিষোদগার।
তিনি আরও বচলেন, দেশের মানুষ যখন আনন্দমুখর পরিবেশে প্রিয়জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করছেন,তখন বিএনপির মিথ্যাচার আর বিদ্বেষ প্রসূত বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে।
বিএনপি দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে এবং শেখ হাসিনা সরকার দেশকে আলোকিত করেছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করছে: ওবায়দুল কাদের
আ.লীগ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে: কাদের
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল আজহার উপহার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ত্যাগের উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠান প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার তাদের হাতে উপহার তুলে দেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা প্রতিটি জাতীয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবে তাদের স্মরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তারা জাতীয় উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র কাটিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তারা।
এছাড়াও তারা প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
আরও পড়ুন: দেশবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
মালয়েশিয়ার রাজা-প্রধানমন্ত্রীকে আম উপহার শেখ হাসিনার
মালয়েশিয়ার রাজা-প্রধানমন্ত্রীকে আম উপহার শেখ হাসিনার
মালয়েশিয়ার রাজা ইয়াং দি পেরতুয়ান আগাং এবং প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরীর জন্য শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ উন্নতমানের বাংলাদেশি আম পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মালয়েশিয়ার রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যথাক্রমে ইস্তানা নেগারা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা আম গ্রহণ করেন।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে এক হাজার কেজি আম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, রাজনৈতিক দলের প্রধান, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যমকর্মী এবং বিভিন্ন কূটনীতিক উপপ্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
হাইকমিশন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপহার বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ।
হাইকমিশন আশা প্রকাশ করে বলেছে, এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি আম ও কৃষি পণ্যকে একটি সম্ভাবনাময় আইটেম হিসেবে প্রচারে সহায়তা করবে।
পড়ুন: বাংলাদেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি উপার্জনকারী হবে ডিজিটাল ডিভাইস: প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল ডিভাইসকে ভবিষ্যতে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ডিজিটাল ডিভাইস ভবিষ্যতে সবচেয়ে রপ্তানিযোগ্য পণ্য হতে পারে। আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
বুধবার বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরসের দ্বিতীয় সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে যোগ দেন।
তিনি বলেন, সরকার চায় গার্মেন্টস পণ্যের মতো ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ডিজিটাল ডিভাইস সারা বিশ্বে রপ্তানি হোক।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সভায় রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে ডিজিটাল পণ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। এর লক্ষ্য একক রপ্তানি পণ্যের ওপর দেশের নির্ভরতা কমানো।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকার শিক্ষা ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশের জন্য হাই-টেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: ঈদের আগে ২৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করে ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি খাত থেকে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এ খাতে ৩০ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে। ‘আশা করি আমরা এটি করতে সক্ষম হব (দুটি লক্ষ্য পূরণ করতে)।’
জাতীয় উন্নয়নে দেশীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করতে দেশীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রণালয় ও তাদের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশের যা কিছু সম্পদ আছে, দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের সেগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে এবং জনগণ সম্মান অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাঙালিরা এখন মাথা উঁচু করে সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়াবে।
তিনি আবারও বলেন, ‘আমি জানতাম পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আমার সেই বিশ্বাস ছিল। একপর্যায়ে আমি নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করতে পারবে তা দেশ-বিদেশের অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা তা করেছি (পদ্মা সেতু নির্মাণ), এটি কেবল ইট-সিমেন্ট-ইস্পাত-লোহা দিয়ে তৈরি কংক্রিটের অবকাঠামো নয়; এটি আমাদের আত্মমর্যাদার প্রতীক।’
তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতু আমাদের বিজয় ও সম্মানের প্রতীক, কারণ আমরা বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী বিজয়ী জাতি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে হবে হ্যাঁ আমরা পারি। শুধু উন্নত দেশগুলোই পারে না, আমরাও করতে পারি। ইনশাআল্লাহ, আমরা নিজেদেরকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব এবং এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুখী-সমৃদ্ধির দেশ সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার অধিকাংশই তার (আওয়ামীলীগ ) সরকার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ অপচনশীল পণ্য পরিবহন করা হবে।
তিনি এসব পণ্যের ভালো ব্যবস্থাপনার জন্য আমিন বাজার, মহাখালী, সায়েদাবাদ/কাঁচপুর এবং পোস্তগোলা/কেরানীগঞ্জে পাইকারি বাজারের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার এলাকায় চাপ কমাতে আমাদের এগুলো তৈরি করতে হবে।
তিনি রাজধানীর চারপাশে রিং রোড নির্মাণের ওপর জোর দেন, যাতে যানবাহন চলাচল ও পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন হয়।
বন্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ দেশ হওয়ায় জনগণকে এর সঙ্গেই বাঁচতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সব পরিকল্পনা মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য।’
তিনি আবারও সকলকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তার দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে এবং এভাবে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে চাই যার মাধ্যমে আমরা ক্ষমতা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, সরকার ২০২১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করেছে। ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে জাতি দুটি মেগা ইভেন্ট হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত দেশে পরিণত করে জনগণের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সরকার ২০২১-২০৪১ এর জন্য একটি পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
এর আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ও সচিবরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজ নিজ এপিএ-এর অনুলিপি হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এপিএ স্বাক্ষর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এপিএ গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
চুক্তির অধীনে, মন্ত্রণালয়গুলো সরকারের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের ভিশন, মিশন ও কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করবে এবং বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
সরকার প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সম্পদের সঠিক ব্যবহার এবং সর্বোপরি, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য সরকারি খাতের জন্য ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে এপিএ পদ্ধতি চালু করে।
এপিএ প্রবর্তনের প্রধান উদ্দেশ্য হল মন্ত্রণালয়ের ফোকাস প্রক্রিয়া-অভিযোজন থেকে ফলাফল-অভিযোজনে নিয়ে যাওয়া এবং বছরের শেষে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সামগ্রিক কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য একটি উদ্দেশ্যমূলক ও ন্যায্য ভিত্তি প্রদান করা।
এপিএ হল বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ থেকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত একটি অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া, যাতে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়। যার লক্ষ্য তাদের বার্ষিক কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করা এবং দায়িত্বের প্রতি তাদের দায়বদ্ধ করা।
সরকার মন্ত্রণালয় ও তাদের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষর করে। যার মধ্যে সরকারের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিজয়ীদের মধ্যে এপিএ এবং জাতীয় সততা সেবা পুরস্কার তুলে দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে কুয়েতের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
পদ্মা সেতু মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও বলেছেন, সদ্য উদ্বোধন করা পদ্মা সেতু দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে।
রবিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন। এসময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন,‘আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এটি (পদ্মা সেতু্) একটি বিশাল মাইলফলক।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী আবারও কিছু দেশীয় অর্থনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিন্দা জানান। যারা বলেছিলেন পদ্মা সেতু প্রকল্পটি কার্যকর হবে না এবং ব্যয় (সেতু নির্মাণের) টাকা উঠে আসবে না।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু এখন কি দেখা যাচ্ছে? সেতুটি অবশ্যই মানুষের জীবন ও জীবিকা পরিবর্তন করবে।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর মতো পদ্মা বহুমুখী সেতুও দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে গেম চেঞ্জার হবে।
আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ২ বছর পিছিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ দুই বছর পিছিয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি এ কথা বলেন।
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী দেশের দীর্ঘতম, বহু কাঙ্ক্ষিত সেতুটির উদ্বোধন করেন। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক প্রত্যাখ্যান করার পর বাংলাদেশ নিজের অর্থায়নে এই মেগা প্রকল্প নির্মাণ করেছে।
আওয়ামী লীগের সিরাজগঞ্জ জেলার সংসদ সদস্য মেরিনা জাহানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলার একটি সাহসী বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহস, আমাদের সহনশীলতা এবং আমাদের প্রতিশ্রুতি এই পদ্মা সেতুর সঙ্গে জড়িত। সেতুটি নির্মাণে আমরা অনড় ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমরা অন্ধকার ভেদ করে আলো ফুটতে দেখলাম। পদ্মার ওপরে লাল, নীল, সবুজ ও সোনালি আলো জ্বলছে।’
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা এবং আইডিবি প্রকল্পের বিভিন্ন প্যাকেজ নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক সংস্থা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে ঋণ চুক্তি স্থগিত করে।
‘২০১৭ সালে কানাডার টরন্টোতে একটি আদালতে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে, বিশ্বব্যাংক প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়’, প্রধানমন্ত্রী বলেন।
তবে দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমরা বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নিয়ে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বহুল কাঙ্খিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের উদ্বোধন আজ স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা, তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সেতুটি দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্রকে চূর্ণ করে দাঁড়িয়েছে, সব চ্যালেঞ্জকে জয় করেছে এবং হার না মানার দৃঢ় মনোবল দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সেতুটি উদ্বোধনের পর লাখ লাখ বাংলাদেশির সঙ্গে তিনিও খুশি, গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।
তিনি আবারও বলেন, ‘এই সেতুটি শুধু ইট, সিমেন্ট, ইস্পাত, লোহা ও কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়। এটি আমাদের গর্ব, আমাদের ক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। এই সেতুটি বাংলাদেশের জনগণের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেশের দুই অঞ্চলকে একীভূত করে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। বহুমুখী সেতুটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন, কৃষি, ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেকারত্ব কমানোর পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য উপযুক্ত জবাব: প্রধানমন্ত্রী
এছাড়াও, সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ সাধারণ মানুষের কর্মঘণ্টা কমাবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার অর্থনীতির গতি বজায় রেখে পণ্যের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে।
তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
লক্ষ্মীপুরের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নিজস্ব প্রযুক্তিতে একটি ছোট পরিসরের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান এবং মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকল (ইউএভি) তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই প্রচেষ্টার কৌশলগত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বাংলাদেশ একদিন উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং মনুষ্যবিহীন আকাশযান তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: যোগাযোগ জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী