শেখ হাসিনা
যোগাযোগ জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও শিল্পায়নের জন্য সারাদেশে যোগাযোগ উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা সারাদেশে সড়ক ও সেতু নির্মাণের মাধ্যমে একটি যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। এছাড়া আমরা নদীগুলো ড্রেজিং ও পুনরুজ্জীবিত করছি… আমরা রেল সেবা পুনরুজ্জীবিত করছি (বিভিন্ন রুটে) এবং নতুন রেল লাইন নির্মাণ করছি।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে ৪৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস ব্যাংকগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিদের কাছ থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুন, তরুণদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, একটি শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়নের গতি, শিল্পায়ন ও ব্যবসা ত্বরান্বিত করার বিশাল সুযোগ তৈরি করে। ‘আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি।’
সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সেতুটি ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য বদলে দেবে।
তিনি বলেন, ‘বিশাল দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। কিন্তু এ অঞ্চলে শিল্পায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুটি দক্ষিণাঞ্চলের স্থানীয় কৃষিপণ্য বিপণনের বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং এ অঞ্চলের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ সাহস ও সহযোগিতার মাধ্যমে তার পাশে থাকায় বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছে। ‘আমার দেশের জনগণই আমার বড় শক্তি।’
চাহিদা মূল্যায়নের মাধ্যমে ফসল ও পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানের ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে কুয়েতের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় বাজারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশে করোনার নতুন ঢেউয়ের প্রেক্ষিতে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে, বিশেষ করে মাস্ক পরতে, সকলের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে অনুদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সহায়তা বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুন, তরুণদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের সর্বদা বিজ্ঞান ও বিকশিত প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেটিভ ট্যালেন্ট হান্ট ২০২২’-প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের আধুনিক যুগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য উপযুক্ত জবাব: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে সরকার বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষিসহ অন্যান্য বিষয়ে গবেষণাকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন,‘মূলত গবেষণা আমাদের পথ দেখাতে পারে।’
তরুণ ও নতুন প্রজন্মের মেধা তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও সৃজনশীলতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি নতুন প্রজন্মকে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মেধাবী যুবকদের খুঁজে বের করে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আগামী দিনের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য তরুণদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শিশুরাই বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী। ‘আমি মনে করি আমাদের দেশের শিশুরা সবচেয়ে মেধাবী এবং বুদ্ধিমান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দেশব্যাপী শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন এবং যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন কেউ থামাতে পারবে না: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তার সরকারও শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে; কারণ দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার জন্য এটি অপরিহার্য।
শেখ হাসিনা বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়াতে ও যোগ্য প্রজন্ম তৈরি করতে দেশে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সরকার শিক্ষাকে বহুমুখী করেছে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি তাদের নিয়মিত পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, দেশের উন্নয়নে তাদের কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে ১৫ জন বিজয়ীর মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো.কামাল হোসেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো.আবু বকর সিদ্দিক বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে দুজন পুরস্কার বিজয়ী তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে ট্যালেন্ট হান্টের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে কুয়েতের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কুয়েত সরকারকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ ও স্বল্প-দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির প্রতি আহ্বান জানান।
রবিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আদেল মোহাম্মদ এএইচ হায়াত গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।
এসময় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, তার সরকার চাকরি, জমি ও বাড়িসহ বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ মেয়াদে কাতার থেকে এলএনজি কিনতে চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।
পদ্মা সেতু সফলভাবে সম্পন্ন করায় রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এছাড়া তিনি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে কুয়েতকে তার সরকারের সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কমনওয়েলথ দেশগুলোর সহায়তা চায় ঢাকা
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের জিরো-টলারেন্স নীতির প্রশংসা ভারতের
পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিপুল আস্থার প্রতিফলন: নেপাল
নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা বলেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে এবং এ অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়াবে।
শনিবার সেতুটি উদ্বোধনকারী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘এই নতুন মেগা প্রকল্পের সমাপ্তি আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে বিপুল আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে, তা প্রতিফলিত করে।’
নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোকে সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী ও অন্যান্য এলাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে।
তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রীই প্রথম ব্যক্তি যিনি টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পার হয়েছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশিদের একটি বড় অর্জন: অস্ট্রেলীয় রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশের উন্নয়নে পদ্মা সেতু এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত: ইইউ রাষ্ট্রদূত
পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য উপযুক্ত জবাব: প্রধানমন্ত্রী
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে সফলতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর মাধ্যমে (পদ্মা সেতু নির্মাণ) ষড়যন্ত্রকারীদের উপযুক্ত জবাব দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছিল. তাদের আমরা উপযুক্ত জবাব দিতে পেরেছি।’
শনিবার মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়া প্রান্তে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই সভায় উপস্থিত হন।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে গাড়ি চালানোর আগে দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৭৫০ টাকা টোল দেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আবারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, তিনি দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, ভাগ্য পরিবর্তন করতে আমি যে কোনও ত্যাগ স্বীকার করতে সর্বদা প্রস্তুত। আমি আগেও আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে যদি প্রয়োজন হয়, আমি আপনাদের জন্য আমার নিজের জীবন উৎসর্গ করব।’
উল্লসিত লাখো জনতার করতালি এবং ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানের মধ্যদিয়ে তিনি তার বক্তৃতা শেষ করেন।
আরও পড়ুন: উচ্ছ্বসিত জনতার অভিবাদনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে কাজ করবেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করব যে আমাদের দেশের শিশুরা আরও উন্নত জীবন পাবে। এটা আপনাদের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি।’
প্রধানমন্ত্রী মাওয়া ও জাজিরা উভয় প্রান্তে ফলক ও ম্যুরাল উন্মোচনের মাধ্যমে ডাবল ডেক সড়ক ও রেলসেতু উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।
এসময় উচ্ছ্বসিত জনতা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
এর আগে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বর্ণিল ব্যানার, ফেস্টুন ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা নিয়ে সমাবেশস্থলে ভিড় করলে সমাবেশে উৎসবমুখর রূপ ধারণ করে। এসময় আ.লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের মানুষ ও নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে মাওয়া ও জাজিরায় উৎসবের আমেজ
পুরুষরা রঙিন টি-শার্ট পরে এবং নারীরা রঙিন শাড়ি পরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বড় বড় প্রতিকৃতি, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে সমাবেশে আসেন।
বর্ণিল ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, ডিজিটাল ব্যানারে সজ্জিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকা। সমাবেশের কার্যক্রম সম্প্রচারের জন্য সমাবেশের বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিন বসানো হয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ২০০১ সালে এই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে এর কাজ বন্ধ করে দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে পুনরায় এর কাজ শুরু করে। অথচ বিএনপি নেতারা বলেছিলেন আওয়ামী লীগ কখনো পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না।
খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আসুন, দেখুন পদ্মা সেতু হয়েছে কি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতিবিদ ও সাবেক আমলাসহ স্থানীয় লোকজনের একাংশ মন্তব্য করেছিলেন বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে এবং তার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের আনা দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কোনো অর্থ দেয়নি, কিন্তু দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুটি আমাদের হৃদয়ের এবং সেতুটির সঙ্গে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত। এখানে দুর্নীতি হবে কেন?
তিনি বলেন, সরকার যখন এই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলো তখন তাকে এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে অসম্মান ও মানহানি করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়াও তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে মিথ্যা অভিযোগ এনে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাশাপাশি শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিকও এ ব্যাপারে চরম মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা আমাদের যতোই মানসিক যন্ত্রণা দিক না কেনো, আমরা ফিরে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে সেতু নির্মাণের সাহস ও শক্তি দিয়েছেন। আমি আপনাদের পাশে আছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সেতুটি নির্মাণ করায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে উত্তাল পদ্মা নদী পারাপারে আর দুর্ভোগ পোহাতে ও প্রিয়জনকে হারাতে হবে না।
তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্প কারখানা ও কলকারখানা গড়ে উঠবে। এখানে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠবে এবং এ অঞ্চলের মানুষ তাদের প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্তত ২১ জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। আমরা এটা করতে সক্ষম হব।
উচ্ছ্বসিত জনতার অভিবাদনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের আরেকটি সোনালি অধ্যায় লিখল বাংলাদেশ।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুর মাওয়া প্রান্তে ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করায় উচ্ছ্বসিত জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানিয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লাখ লাখ মানুষ জমকালো এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে টিভি স্ক্রিনের সামনে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে বসে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক: রাষ্ট্রপতি
প্রথম নাগরিক হিসেবে টোল পরিশোধ করে সেতুটি অতিক্রম করেন প্রধানমন্ত্রী।
ঐতিহাসিক এই মুহূর্ত উপলক্ষে এবং নিজস্ব অর্থায়নে দেশের বৃহত্তম মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধনের অংশ হিসেবে তিনি স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, ওপেনিং ডে কভার, সীলমোহর ও ১০০ টাকার একটি নোট উন্মোচন করেন।
সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক সাহসী বার্তা দিয়েছে যে এই উদীয়মান শক্তিকে আর উপেক্ষা করতে পারবে না বিশ্ব।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
সরকারি হিসাব মতে, সেতুটি রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চললের ২১ জেলাকে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। এটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করবে এবং বার্ষিক শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য দূর করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন, পদ্মা সেতু শুধু ইট, সিমেন্ট, ইস্পাত ও লোহার একটি ভৌত অবকাঠামো নয়; এটি জাতির গর্ব, সম্মান ও যোগ্যতার প্রতীক।
তিনি বলেন, ‘সেতুটি বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে আমাদের আবেগ, সৃজনশীলতা, সাহস, সহনশীলতা ও আমাদের অধ্যবসায় জড়িত।’
শনিবার মাওয়া প্রান্তে উত্তাল পদ্মা নদীর ওপর দেশের বৃহত্তম সেতুর-পদ্মা সেতু- উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বহু প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে ষড়যন্ত্রের জাল ভেঙ্গে উত্তাল পদ্মা নদীর ওপর বহুল প্রতিক্ষিত সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ আমি দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে আনন্দিত, গর্বিত ও অভিভূত।’
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের মানের সঙ্গে কোনো আপস করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সেতু। সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতুর ভিত্তি এখনো বিশ্বের সবচেয়ে গভীরে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবারের জন্য দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘জনগণের শক্তি হৃদয়ে ধারণ করে আজ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। বাঙালিরা দুর্নীতিমুক্ত বীর জাতি হিসেবে বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ জুন বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় ঐতিহাসিক দিন। তিনি বলেন, “প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দেশের বৃহত্তম ‘পদ্মা সেতু’ শনিবার যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এই শুভ উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের সার্বিক উৎপাদন (জিডিপি) এক দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং বার্ষিক শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ১০০ টাকার স্মারক নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা ও রাজধানীর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘বিপুল সম্ভাবনাময় এ অঞ্চলের বহুমুখী উন্নয়নের জন্য এ সেতুটির অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। এ অঞ্চলের উন্নয়নে, বিশেষ করে এখানকার শিল্পায়ন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।’
তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি, সুন্দরবন ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ এ অঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৈসর্গিক স্থান বিপুল সংখ্যক পর্যটককে আকৃষ্ট করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নদী বিধৌত উপকূলীয় এলাকার কৃষি ও মৎস্য সম্পদের আহরণ এবং সারাদেশে দ্রুত বাজারজাতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পদ্মা সেতু মোংলা সমুদ্রবন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, বড় বড় নদীর ওপর অন্যান্য সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পের পূর্ণ ক্ষমতা কাজে লাগাতে সাহায্য করবে; যা এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলে অবস্থিত বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। সেতুটি দুই প্রান্তের মধ্যে বিদ্যুৎ, গ্যাস, অপটিক্যাল ফাইবার ও অন্যান্য ইউটিলিটি পরিষেবার সংযোগ স্থাপন করবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জামিলুর রেজার অনুপস্থিতি অনুভূত হবে
তিনি বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে মামলা করলে আদালত সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দেয়।
এরপর সরকার বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয়, তখন আমরা জনগণের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি।’
‘দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনে আজ উন্নয়নের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আগামী দিনেও জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।’
শেখ হাসিনা চ্যালেঞ্জিং ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনা সদস্য ও নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য শুভেচ্ছা জানান।
প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি ও বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদানের জন্য সেতুর দুই প্রান্তের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
আগামী নির্বাচন অধিকতর গ্রহণযোগ্য করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সব রাজনৈতিক দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে তার সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার ঢাকা থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় গর্ব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সরকারের নেয়া ১১টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
ঢাকা-৪ (ডেমরা-শ্যামপুর) আসনের জাপার এই সংসদ সদস্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এতে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জাতির পিতার কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চান।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের ১১৮ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক সংস্থা।
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা সংবিধান ও আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেন। সরকার নির্বাচন কমিশনকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা করে।’
তিনি বলেন, ‘আশা করি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ইসি তার কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাধীন থাকবে এবং এটি কেবল সংবিধান ও আইনের আওতাধীন থাকবে।
তিনি বলেন, ‘ইসির কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা সরকার ও নির্বাহী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন: জনগণের নিরাপত্তার শেষ অবলম্বন হিসেবে আস্থা অর্জন করুন, পুলিশকে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই দেশের গণতন্ত্রের বিকাশ ও অগ্রগতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
তিনি বলেন, তাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্তরিক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি অপরিহার্য উপাদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামী লীগের ভূমিকা ঐতিহাসিক ও অনস্বীকার্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষভাবে স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ছবি সম্বলিত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন চালু করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় গর্ব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পদ্মা সেতুকে জাতীয় গর্বের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাওয়া বহুমুখী পদ্মা সেতুর মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
বুধবার তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন,পদ্মা সেতু নির্মাণে আমরা মান নিয়ে কোনো আপোস করিনি। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সম্পন্ন হয়েছে।
সেতু ইস্যুতে সরকারের কিছু সমালোচকের মন্তব্যের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি পদ্মা সেতুর মান নিয়ে কেউ কোনো সমালোচনা করতে পারবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার পর সাহসী পদক্ষেপে নিজস্ব অর্থায়নে দেশের দীর্ঘতম সেতু
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তাদের (বিশ্বব্যাংক) ধন্যবাদ জানাই। ওই ঘটনা ঘটার কারণেই আমরা সাহসের সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি; আজ বাংলাদেশ তার মর্যাদা ফিরে পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী