শেখ হাসিনা
৩৭ লাখ মামলার জট, ২০২২ সালে ৬ লাখ কমানোর পরিকল্পনা: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘৩৭ লাখ মামলার জট রয়েছে। ২০২২ সালে ৬ লাখ কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রায় ৩৭ লাখ মামলার জট তৈরি হয়েছে। এটা নতুন করে তৈরি হয়েছে তা নয়, অতীতের পুঞ্জীভূত সমস্যা। এ জট নিরসন করতে হবে। ২০২২ সালে ৬ লাখ মামলা কমানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিচারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
রবিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারি জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারকরা হলেন বিচার বিভাগের প্রাণ। বিচার বিভাগের প্রধান চালিকা শক্তি। তাই তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিচারকদের দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আজ প্রথমবারের মতো এ ইনস্টিটিউটে একই সাথে দুটি ব্যাচের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা সম্ভব হলো। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘মামলার জট কমানোর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি বিগত কয়েক বছরে এক হাজার ১৫২ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও বিচার নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এখন কোন পদ শূন্য হওয়ার সাথে সাথে তা পূরণ করা হচ্ছে।’
কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সারা বিশ্ব বদলে গেছে এবং এখন প্রতিনিয়ত বিশ্ব বদলে যাবে। তার সাথে তাল মিলাতে বাংলাদেশকেও বদলাতে হবে। বাংলাদেশ বদলে গেলে বিচারকদেরকেও বিচারিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বদলাতে হবে।’
আরও পড়ুন: বর্তমানে ৩৭ লাখ মামলা জট রয়েছে: আইনমন্ত্রী
আনিসুল হক বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ নতুনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পুরনো বাংলাদেশ কিন্তু আর নেই। যেখানে ২১ বছর বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিরাজমান ছিল। অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে কি-না সে বিষয়ে মানুষের যথেষ্ঠ সন্দেহ ছিল। সেই সংস্কৃতি বদলে গেছে। এখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে বিচারপ্রাপ্তির সংস্কৃতিতে এসেছি। সেজন্য বিচারকদের প্রয়োজনীয়তা ও মর্যাদা দুটোই বেড়েছে। এই দুটো ধরে রাখার অবিচ্ছেদ্য অংশীদার হলেন বিচারকরা।
বিচারকরা সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করলে আদালতের প্রতি জনগণের আশা ও আস্থা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী বছরই দেশের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে ই-রেজিস্ট্রেশন চালু হবে
১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকা দেয়ায় মোদিকে অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর
ভারত ১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকা পরিচালনা করে ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রবিবার মোদির উদ্দেশ্যে এক বার্তায় এই অভিনন্দন জানান। তিনি ১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকাদানকে মানবজাতির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই অর্জন ভারত ও এই অঞ্চলকে স্বাভাবিকতার পথে যেতে একটি বড় ভূমিকা রাখবে।
বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর আরও জানান, তার সরকারও বাংলাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে একাধিক উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করে ছয় কোটিরও বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে ভারত টিকাদান কর্মসূচির শুরু থেকেই বাংলাদেশের জন্য কোভিড-১৯ টিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভিশিল্ড টিকার রপ্তানি পুনরায় শুরু করার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান যে এটি আগামী দিনে নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: মোদিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
মোদির উপহারের ৩০ অ্যাম্বুলেন্স শিগগিরই ঢাকায় আসছে
মোদির জন্য আম পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়: প্রধানমন্ত্রী
সরকার সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে চায় জানিয়ে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করবে। কেননা আমাদের সংবিধানে সেই নির্দেশনা দেয়া রয়েছে।’
মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ এর এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ সভায় যোগদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামও সব ধর্মের রীতিনীতি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের উপদেশ দেয়। আমাদের নবীও (সা.) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। আমরাও চাই কেউ যেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে।’
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
শিশুদের ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী
মোংলা ও পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে নেপাল: প্রধানমন্ত্রী
শিশুদের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, শিশুদের জন্য সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শেখ রাসেল দিবস ২০২১ উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয় এবং সকল বাবা-মা যেন তাদের সন্তানদের নিয়ে গর্ব করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়নে সারাদেশে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন করেছে। ফলে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। স্কুলগুলোতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা আধুনিক প্রযুক্তি শেখার সুযোগ পাচ্ছে। শেখ রাসেল দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে কোন শিশু যেন স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে।
তিনি বলেন, আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই শিশু। তারা যেন উন্নত দেশের শিশুদের মতো উন্নত জীবনের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে সে জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
আরও পডুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস উদযাপিত
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু বার্ট্রান্ড রাসেলের একনিষ্ঠ অনুরাগী ছিলেন। তিনি নিজের পুত্রকেও প্রগতিশীল, মানবিক ও মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা নিয়ে কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রেখেছিলেন রাসেল। বঙ্গবন্ধুর প্রভাবেই শিশু শেখ রাসেলের মধ্যে এসব গুণাবলীর বিকাশ ঘটেছিল। ঘাতকদের হাতে শেখ রাসেল নিহত না হলে আমরা হয়তো বার্ট্রান্ড রাসেলের মতো আরও একজন বড় মানুষ পেতাম।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম খান।
এছাড়া পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আরও পড়ুন: কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে শেখ রাসেলের জন্মদিন উদযাপিত
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস উদযাপিত
শেখ রাসেল: অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার প্রতীকী নিশান
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেই হত্যাযজ্ঞে বাদ যায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র ১০ বছর বয়সী শেখ রাসেলও। আজ ৫৮ বছর আগে ১৯৬৪ সালের এই দিনটিতে জন্ম গ্রহণ করে শেখ রাসেল।
যুদ্ধ, প্রতিহিংসা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। তাই স্বাধীনতার অর্ধশত বর্ষপূর্তির সান্নিধ্যে এসেও শেখ রাসেলের মৃত্যু বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার হাতছানি দিয়ে ডাকে। আজকের এই স্মৃতিচারণ ফিচারটি সেই নিষ্পাপ প্রাণকে উদ্দেশ্য করেই।
দেশে সংকটপূর্ণ মুহূর্তে শেখ রাসেল-এর বেড়ে ওঠা
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসার কোল জুড়ে শেখ রাসেলের আগমনের সময় বাবা স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কাজে চট্রগ্রামে ছিলেন।
সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু রাসেলকে বড় বোন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোলে তুলে দেয়া হয়। দেশের চরম দুরবস্থার মধ্যেও বড় চার ভাই-বোনসহ আত্মীয়দের মাঝে শিশু রাসেল যেন এক শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল।
১৯৬৬ সালের ৮ মে যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন শেখ রাসেলের সবে মাত্র দেড় বছর। মায়ের কোলে করে কেন্দ্রীয় কারাগারে বাবাকে দেখে আসার সময় বাবাকে নিয়ে আসার জন্য রাসেল কান্না জুড়ে দিতো। এক সময় তাকে বোঝানো হয়েছিল যে ওটাই বাবার বাড়ি। পুরো এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর রাসেল মাকেই আব্বা বলতে শুরু করে আর কারাগার থেকে আসার সময় বাবাকে নিয়ে আসার জন্য কাঁদে না। ‘কারাগারের রোজনামচা’য় বঙ্গবন্ধু তাঁর ছোট্ট ছেলে রাসেলকে নিয়ে ঠিক এভাবেই লিখেছিলেন।
পড়ুন: শিশুদের ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেখ মুজিবুর রহমান যখন বঙ্গবন্ধুর উপাধি পান তখন রাসেলের বয়স সাড়ে চার বছর চলছিল।
মোংলা ও পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে নেপাল: প্রধানমন্ত্রী
নেপালকে বাংলাদেশের মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বংশিধর মিশ্র প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ প্রস্তাব দেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদেরে এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করছে এবং নেপাল সেটি ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।
এ সময় নেপালের রাষ্ট্রদূত দেশটির কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্বারা চালিত হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সব উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি।
নেপাল যে কোনো প্রয়োজনে সব সময় বাংলাদেশকে পাশে পায় এবং সে জন্য দেশটির রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ ছাড়া দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশের পাঠানো চিকিৎসা সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: খাদ্য অপচয় বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
উপহার হিসেবে হাড়িভাঙ্গা আম পাঠানোর জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নেপালের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ সময় অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উঁচু ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক কারণ আছে। কিন্তু আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার। বৈশ্বিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে তার অবদান আমরা অস্বীকার করতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু আমাদের মা। আমরা সন্তানরা মাকে আদর করতে হবে তাহলে মা তার সন্তানকে স্নেহ করবেন। আমাদের দৈনন্দিন নানা আচার আচরণের মাধ্যমে আমরা মায়ের ক্ষতি করছি জলবায়ু তার সুবিচার চায়। এজন্য আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।’
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৬ উপলক্ষে শনিবার সিলেটে জলবায়ু সুবিচার সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এই সংলাপ অনুষ্ঠান যৌথভাবে ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এবং ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়তে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের আওয়াজকে শক্তিশালী ও সোচ্চার করতে হবে এবং ন্যায় বিচারের চাওয়াকে অব্যাহত রাখতে হবে। সবার সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠা সম্ভব।’
শনিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেটের হোটেল স্টার প্যাসিফিকে উক্ত অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলার তরুণ জলবায়ু আন্দোলন কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৩ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কমনওয়েলথ উন্নয়ন অফিস, বাংলাদেশের পরিচালক জুডিথ হার্বার্টসন, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আকমল শরীফ।
খাদেমুল রাশেদ ও হুমায়রার সঞ্চালনায় সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান। শুরুতে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু সুবিচারের বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণদের অভিপ্রায় তুলে ধরেন ইসলামিক রিলিফের প্রকল্প সমন্বয়কারী মঈন উদ্দিন আহমদ।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অতিথিরা বিভিন্ন প্র্রশ্নের উত্তর দেন। আনন্দ নিকেতন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মুনতাহা রেজা পরিকল্পনা মন্ত্রীর কাছে জানতে চায় এভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অব্যাহত থাকলে ৩০ বছর পর সে কি সুনামগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে থাকতে পারবে, নাকি একটি উঁচুভুমির খুঁজে মাছের মতো সাঁতার কাটতে হবে? উপস্থিত তরুণরা হাওরের জন্য জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারকদের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হাওর এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাওরে বছর বছর ফসলহানীর দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এড়িয়ে যেতে পারে না। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করতে না পারলে হাওরের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন সম্ভব নয়।' আরেক প্রশ্নে সাবিহা নামের আরেক ছাত্রী জানায়, গত ১৫ বছরে সিলেটে একশত টিলা কাটা হয়েছে। সিলেটে আর কোনো টিলা কাটা হবে না মর্মে অতিথিদের কাছে প্রতিশ্রুতি চায়।
আরও পড়ুন: গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
উঁচু ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সবাইকে উঁচু ভবন নির্মাণের সময় অগ্নি ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল প্রোগ্রামে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি বলেন,যে কোনও উঁচু ভবন নির্মাণের সময়, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে আমরা ধীরে ধীরে উদ্ধার সরঞ্জামও সংগ্রহ করছি।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৫০ বছর এবং আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ সময় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন এবং কক্সবাজারের মুক্তিযুদ্ধ মাঠ থেকে দর্শকরা যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার আগুন ও অন্যান্য দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে কাজ করছে, এটি ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষকেও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের নিজেদেরই কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। যখনই আপনি ঘরবাড়ি, অফিস বা ব্যবসায়িক স্থাপনা নির্মাণ করবেন, তখন আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আগুনের ঘটনা, ঘূর্ণিঝড় বা বন্যা হতে পারে। সুতরাং, আপনাকে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে হবে এবং আগাম চুক্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ভবন নির্মাতা ও ব্যবহারকারীদের অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
পাট খাতে রুশ বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার খাত প্রসারিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পাট খাতে রুশ বিনিয়োগের আহ্বান করেছেন।
বুধবার বাংলাদেশে নব নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেনতেভিচ মান্তিতস্কি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দু’জনই বাংলাদেশের কৃষি খাতে সম্ভাবনা আবিষ্কার ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতা প্রসারিত করতে ঐক্যমতে পৌঁছান।
বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য ও সহযোগিতার কথা স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের আদর্শ: প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়ায় বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কঠিন সময়ে যারা সহযোগিতা করেছেন এ দেশের মানুষ তাদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ খুশি হবে যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ দেশ সফরে আসেন।
এ সময় রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেনতেভিচ মান্তিতস্কি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন বিশাল ও চমকপ্রদ।
১৯৭১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার বন্ধুত্বের শুরু হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন রুশ রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ ও রাশিয়া জাতিসংঘে নিবিড়ভাবে কাজ করছে এবং দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।
রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ সম্পন্নের পর আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
দুই দেশের মধ্যে হওয়া বিভিন্ন চুক্তির বিষয়ে তিনি জানান, সেগুলো হালনাগাদ করতে হবে এবং প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর সততা ও সাহসের সুফল পাচ্ছে দেশ: সালমান এফ রহমান
দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাশিয়ার রোসাটম স্টেট আণবিক শক্তি করপোরেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ সহয়তা চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সম্পন্ন হলে আমরা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি নির্মাণ করবো। এই জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে আমাদের নিরবিচ্ছিন্ন সহায়তা প্রয়োজন।’
এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ব্রিফ করেন। বাংলাদেশের শক্তি খাতে রাশিয়া সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছেন রোসাটম মহাপরিচালক।
শেখ হাসিনা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এটি রাশিয়ার সহযোগিতা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যথাযথ নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতে রোসাটম মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে দেখালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য রাশিয়ার প্রশংসা করেন তিনি।
করোনার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সব দিক দিয়েই করোনা মহামারি কিছুটা কমেছে এবং বাংলাদেশ এ থেকে রিকভার করছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে রুশ ফেডারেশনের সাহায্য ও সহযোগিতা কৃতজ্ঞার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।