শেখ হাসিনা
আগামী ১ ডিসেম্বর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধন
ঢাকা-বুড়িমারী রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বলে সোমবার (২০ নভেম্বর) রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ওই তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
পর্যটক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজনের চলাচল সহজ করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন সার্ভিস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
ইতোমধ্যে দুই দফায় ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের পাঁচটি বগি রবিবার ও সোমবার লালমনিরহাটে পৌঁছেছে।
লালমনিরহাটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর পাটগ্রাম জসিম উদ্দিন সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর অঙ্গীকার করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, লালমনিরহাট থেকে একটি ট্রেন ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ জেলায় চলাচল করলেও তা বাসিন্দাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
জেলার চার উপজেলার বাসিন্দা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াতকারীরা দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন সেবা থেকে বঞ্চিত। ফলে তাদের যোগাযোগের জন্য বাসের ওপর নির্ভর করতে হয়।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার চট্টগ্রামে উম্মোচন হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
বুড়িমারী চিলার বাজারের বাসিন্দা আব্দুল মমিন বলেন, আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু হলে মানুষের দুর্ভোগের অবসান হবে।
নিয়মিত ভারতে যাতায়াতকারী সুমন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘অনেক পাসপোর্টধারী ও ব্যবসায়ী এই রুটটি ব্যবহার করেন এবং ট্রেন সার্ভিস দুই দেশের ব্যবসা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
লালমনিরহাট রেলওয়ের সহকারী কমার্শিয়াল অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে ট্রেনের পাঁচটি বগি লালমনিরহাট স্টেশনে পৌঁছেছে এবং বাকিগুলো শিগগিরই চলে আসবে।
বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশন ছেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসে ককটেল হামলা
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চালু হলো বিআরটিসির বাস
দু-একদিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে এবং নির্বাচন কমিশন দু-একদিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে।
তিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন, যেহেতু আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি, তাই তারা নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দেবেন।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামো উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
এসময় সারাদেশের ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ১০১টি প্রান্ত ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ৯৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই গতিকে ধরে রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা অপরিহার্য।
বিএনপির উল্লেখ না করে তিনি বিরোধী দলকে কটাক্ষ করে বলেন, তারা (বিএনপি) আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগ দিতে চায় না, কারণ ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো খারাপ ফলাফল হতে পারে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৩টি আসন পেয়ে ভূমিধস জয় লাভ করে, যেখানে বিএনপি মাত্র ৩০টি আসনে জয়লাভ করে।
বিএনপির নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান না। (এটা স্বাভাবিক) যারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো আকাঙ্খা থাকবেই না। তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা ও ভোট বানচালের চেষ্টাকে কাটিয়ে জয়লাভ করে।
আমরা বারবার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে (ক্ষমতায়) এসেছি। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সরকার গঠন করেনি।
আরও পড়ুন: মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রবর্তন পর্যন্ত সব নির্বাচনী সংস্কার আওয়ামী লীগের প্রস্তাব অনুসরণ করেই করা হয়েছে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচনা করেছে যাতে মানুষ গ্রামে থেকেও নগর সুবিধা ভোগ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল; ঠিক সেই সময়ে এই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস-জালাও পোড়াও। গাড়িতে আগুন বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা ঠিকভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা বিএনপি শাসনামলে ছিল মাত্র ৪৫ শতাংশ।
তিনি আশা করেন, শুভবুদ্ধির জয় হবে এবং ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগ সহিংসতার অবসান হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও দেশবাসীকে তাদের নিজেদের জানমাল রক্ষার স্বার্থে অগ্নিসংযোগের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন বা উদ্বোধনের পাশাপাশি ৪৬টি জেলার ১৩২টি উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৫ হাজার ৩৯৭টি বাড়ি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও ১১টি জেলা ও ৬০টি উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ ঘোষণা করেন।
এ পর্যন্ত মোট ৩২টি জেলা ও ৩৯৪টি উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে।
৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে ২০২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, ১ হাজার ৮০০টি মাদরাসা ভবন, ২৯৯টি একাডেমিক ভবন এবং ৪০টি প্রশাসনিক ভবন; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৯৫২টি একাডেমিক ও গবেষণা ভবন; ১২টি ছাত্র ছাত্রাবাস ভবন; ২২২টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র; ১২৮ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন; ৪৬ জেলায় সাব-রেজিস্টার অফিস ভবন; ১১০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র; ২৫টি মুজিব কিল্লা; ২০টি সেতু; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২২টি কমপ্লেক্স; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে ৩৪টি ভবন; ৭টি ছাত্র মেস; ১৬টি ছাত্রাবাস; ২৩টি আইসিইউ; ৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক; ৪৬টি মেডিকেল কলেজ ভবন; ২৪টি নার্সিং কলেজ ভবন; ২৫টি জেলায় টেনিস অবকাঠামোগত উন্নয়ন; ১৩টি ক্রীড়া বিদ্যালয় ভবন; ২৬টি বিকেএসপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র; ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র; ডাবল পাইপলাইনসহ ৩৮ এসপিএম; ১০টি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ; ২৬টি পরিশোধন ইউনিটের কিস্তি; ২৪টি খনি খনন; ১৪০ গ্যাস প্লান্ট ক্রয় ও কিস্তি; ৩৩টি পাইপলাইন নির্মাণ; শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৮টি অবকাঠামো; ১১ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট অবকাঠামো; ৪০টি প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১৪টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভবন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
মঙ্গলবার ২০২৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
বিরোধী দল বিএনপিকে নেতৃত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, দলটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা জানে যে তাদের কোনো নেতৃত্ব নেই। তারা মুণ্ডুহীন দল মাত্র। একজন পলাতক, আরেকজন কারাগারে রয়েছে। ওই দল কোনো নির্বাচন করতে চায় না। তারা শুধু একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’
সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন এবং ভোটের সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জানে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল।
তিনি আবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, যে হাত যানবাহনে আগুন দেয়, সেই হাত একই আগুনে পুড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘তাদের একটি উচিৎ শিক্ষা দিন, যাতে কেউ আর দেশের কারো ক্ষতি করার সাহস না পায়। এই ধরনের ঘটনা ফের ঘটতে দেওয়া উচিত নয়।’
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দেশের জনগণকে নিরাপত্তা দিতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে; দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের কল্যাণ হয়।
তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক, বিএনপি সন্ত্রাসের সমার্থক। বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র কাজ অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করা।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
এ প্রসঙ্গে তিনি গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা নির্দয়ভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ৪৫জন পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে এবং তাদের কর্মসূচি কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর মতো হাসপাতাল আক্রমণ করেছে। তারা অ্যাম্বুলেন্সও ভাঙচুর করে। আমি মনে করি না তাদের একটুও মানবতা আছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, মানুষ হত্যা করাই বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র কাজ।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে আমরা ছাড় দেব না।
তিনি বলেন, ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশকে ব্যাপক উন্নয়ন করতে সাহায্য করছে, যা সবার কাছে দৃশ্যমান।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার দলকে দেশ ও জনগণের সেবা করতে এবং দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সবাইকে তার দলকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং দলের নেতা শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সারহান নাসের তন্ময়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
অসম্পূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: শেখ হাসিনা
মঙ্গলবার ২০২৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
সারাদেশে ২ হাজার ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এগুলো উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে নির্মাণ সম্পন্ন করা ২ হাজার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫তলা বিশিষ্ট প্রধান কার্যালয়, কক্সবাজারস্থ ১০ তলা বিশিষ্ট লিডারশিপ ট্রেনিং সেন্টার এবং ৪টি প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) নবনির্মিত মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আমরা যা গড়ি বিএনপি ও তাদের মিত্ররা তা ধ্বংস করে: প্রধানমন্ত্রী
নবনির্মিত স্থাপনাগুলোর তথ্যাদি ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হলো-
২ হাজার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পর্কিত তথ্য:
প্রায় ১ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ বিদ্যালয়গুলোতে ৬ লাখ শিক্ষার্থী নতুন ও আকর্ষণীয় শ্রেণিকক্ষে পাঠ গ্রহণের সুবিধা পাবে।
এছাড়া, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবক কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট অংশিজন নবনির্মিত এ বিদ্যালয়সমূহের সুবিধা পাবেন।
নবনির্মিত বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য জেন্ডারের ভিত্তিতে পৃথক ওয়াশ ব্লক ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫ তলা বিশিষ্ট প্রধান কার্যালয় ভবন সম্পর্কিত তথ্য-
প্রায় ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১ লাখ ৭৮ হাজার বর্গফুটবিশিষ্ট ভবন নির্মিত হয়েছে; প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ৫ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে ৪ লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সেবা দেওয়া সম্ভব হবে; বেইজমেন্ট ও ক্যাম্পাসে ৪৪টি গাড়ি রাখার সুবিধা রয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
কক্সবাজারস্থ লিডারশিপ ট্রেনিং সেন্টার ভবন সম্পর্কিত তথ্য:
প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলা আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক ট্রেনিং সেন্টারটি নির্মিত হয়েছে। নবনির্মিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের সব স্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাহিদাভিত্তিক, আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে; প্রতি ভবনে ১৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীর (৮০ জন পুরুষ ও ৮০ জন নারী) আবাসনের সুব্যবস্থাসহ প্রশিক্ষণের আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।
৪টি পিটিআই এ মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম নির্মাণ (সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও যশোর) সম্পর্কিত তথ্য-
প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি পিটিআই এ আধুনিক মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। ৩৫০ আসনবিশিষ্ট প্রতিটি অডিটোরিয়ামে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণসহ শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রত্যেক পিটিআই এ প্রতি বছর ২ শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী দীর্ঘ মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে। এ ছাড়াও, সেখানে বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
খুলনায় একদিনের সফরে ২ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেন।
গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হলো: গণহত্যা ও নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ভবন, সিভিল সার্জন অফিস ভবন ও বাসভবন, পাইকগাছা উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ অফিসের সংস্কার ও আধুনিকায়ন, খুলনা বিএসটিআইয়ের আঞ্চলিক অফিসের ১০ তলা ভবন, ১০ তলা বিশিষ্ট মহিলা হোস্টেল ভবন, পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণকাজ (সিভিল, স্যানিটারি ও ইলেকট্রিক্যাল) এবং দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৪ তলা বয়েজ হোস্টেল নির্মাণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত অন্যান্য ১১টি প্রকল্প হলো: ৫তলা বিশিষ্ট ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ একাডেমিক কাম ৪তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, সরকারি এলবিকে ডিগ্রি মহিলা কলেজের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, তালিমুল মিল্লাত রহমতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ৬ তলা একাডেমিক ভবন, তালিমুল মিল্লাত রহমতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ৬ তলা একাডেমিক ভবন, নজরুল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, আগর ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা একাডেমিক ভবন, পাইকগাছা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ তলা একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ভবন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) কর্তৃক খালিশপুর বিআইডিসি সড়কের ড্রেন, ফুটপাথ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত ডুমুরিয়া উপজেলার বসুন্দিয়াডাঙ্গা বাজার-মুগুর খালি ইউপি অফিস সড়কে ভদ্রা নদীর উপর সেতু (৩১৫.৩০ মিটার), সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের শেখেরটেক ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কর্তৃক নবনির্মিত ৬ তলা খুলনা আঞ্চলিক অফিস।
কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল, ইইডির দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ তলা একাডেমিক ও ৪ তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন, বিআইডব্লিউটিএ’র সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় রাজা বোহ্যংতো রায়ের স্মৃতিসৌধ এবং এলজিইডির কুরুলিয়া নদী সেতু (৭৪৮.৯০ মিটার)।
আরও পড়ুন: স্থানীয়ভাবে কুষ্ঠ রোগের ওষুধ উৎপাদন করুন: ওষুধ কোম্পানিগুলোকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীতে ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করবেন রবিবার
ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বের বীজ বপন করতে হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বের বীজ বপন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
রবিবার (১২ নভেম্বর) দিনাজপুরের বোচাগঞ্জস্থ সেতাবগঞ্জ পৌরসভা প্রাঙ্গণে সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন ১৯টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ৪৪টি উন্নয়ন কজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ড. সালিমুল হকের মৃত্যুতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর শোক
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে নেতৃত্ব তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বের বীজ বপন করতে হবে। নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। এই ভূখণ্ডে আমরা অনেক নেতা পেয়েছি, অনেক সংগ্রাম হয়েছে। অনেক রক্ত দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। কারণ নেতৃত্বের দুর্বলতা ছিল, নেতৃত্ব সঠিক ছিল না, পরিকল্পনা ভুল ছিল। সঠিক নেতৃত্বই সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেকেই ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেকেই আসবেন; তবে বদলে দেওয়া বাংলাদেশের রূপকার একজন শেখ হাসিনাকে হাজার বছরেও পাওয়া যাবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এই বাংলাদেশে অনেক নেতৃত্ব এসেছে, সরকার প্রধান হয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশের এই পরিবর্তনটা কিন্তু কেউ দিতে পারেনি। আজকে বাংলাদেশ কোথায় চলে গেছে।
তিনি বলেন, মাতারবাড়ি থেকে কক্সবাজার যেতে দেড় ঘণ্টা লাগে, চট্টগ্রাম থেকে মাতারবাড়ি আড়াই ঘণ্টা লাগে সমুদ্রপথে। শনিবার বিকাল ৫টায় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন শেষে রাত ১১টায় দিনাজপুরে এসে আমি নিজের বাড়িতে ভাত খেয়েছি। এটা কল্পনা করা যায়? এটা হচ্ছে শেখ হাসিনার উন্নয়ন। এই বাংলাদেশ বদলে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিশ্বাস্য দেশপ্রেমের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি নেতৃত্বে থাকলে ২০৪১ সালের অনেক আগেই দেশ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হবে।
তার নির্বাচনী এলাকার সেতাবগঞ্জ পৌরসভায় পরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আমরা সকলে মিলে উদযাপন করলাম।
এ সময় সেতাবগঞ্জে আরও একটি মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম, শিল্পকলা কমপ্লেক্সসহ জনবান্ধব আরও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন দিনাজপুর গড়তে নাগরিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
সেতাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. আসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সৈয়দ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডালিম সরকার, বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুবক্কর সিদ্দিক রাসেলসহ উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের আবিষ্কারক প্রধানমন্ত্রী: নৌপ্রতিমন্ত্রী
জিনাতুন নেসা তালুকদারের মৃত্যুতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর শোকপ্রকাশ
বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
জনগণকে যেকোনো পরিস্থিতি সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করি সেভাবেই অগ্নিসংযোগের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশকে অবশ্যই এগিয়ে নিয়ে যাব। আমি দেশবাসীকে যেকোনো পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে বলছি।’
রবিবার (১২ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীতে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরির (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির মতো বহিরাগত কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে।
তিনি আবারও জনগণকে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানান। যাতে বাংলাদেশকে কখনই খাদ্যের জন্য কারো কাছে হাত পাততে না হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এই দেশ আরও এগিয়ে যাবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। যেখানে থাকবে স্মার্ট জনসংখ্যা, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ তার উন্নয়ন যাত্রায় বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু কেউই এর অগ্রগতি ঠেকাতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে আর কেউ আটকাতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার কারখানার উদ্বোধন
নরসিংদীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার কারখানার উদ্বোধন
রবিবার (১২ নভেম্বর) নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার কারখানা।
আশা করা হচ্ছে, এই কারখানা দেশের সার আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নরসিংদীতে পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক সার কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন। সে হিসেবে কারখানাটি দৈনিক ২৮০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম।
ইউরিয়া সারের স্থানীয় চাহিদা বার্ষিক প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। নবনির্মিত এই কারখানাটি পুরোদমে উৎপাদনে গেলে দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করা যাবে।
তাই ইউরিয়া সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে, কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে, আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারখানাটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১০ একর জমিতে 'ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার প্রকল্প' বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ২০২০ সালের ১০ মার্চ শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীতে ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করবেন রবিবার
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ৫৮০ দশমিক ২১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি), ব্যাংক অব টোকিও-মিতসুবিশি ইউএফজি লিমিটেড (এমইউএফজি) এবং হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি) থেকে বাণিজ্যিক ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে, শিল্প মন্ত্রণালয় বিদ্যমান দুটি সার কারখানা- ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (ইউএফএফএল) এবং পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (পিইউএফএফএল) বদলে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে একটি নতুন দানাদার ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।
মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এমএইচআই) এবং চায়না ন্যাশনাল কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং নম্বর সেভেন কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসি-সেভেন) যৌথভাবে কারখানাটি নির্মাণ করেছে। যার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৯ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন।
নতুন কারখানার দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা আগের দুটি সার কারখানার তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি।
জিপিইএফএফ বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা, যেখানে প্রাথমিক সংস্কারক ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশ দূষণকারী কার্বন-ডাই-অক্সাইড (সিও২) ধারণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা সিও২ ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)।
প্রধানমন্ত্রী কারখানার উদ্বোধন উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারখানা পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: অসম্পূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের অগ্রগতি এখন সবার কাছে দৃশ্যমান: শেখ হাসিনা
অসম্পূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: শেখ হাসিনা
অসম্পূর্ণ উন্নয়ন কর্মসূচি সম্পন্ন করতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে এবং আমি চাই আপনারা নৌকায় (আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক) ভোট দিন। যাতে আমরা আবার আপনাদের সেবা করতে পারি এবং অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারি।’
এদিন বিকালে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের টাউনশিপ মাঠে আওয়ামী লীগের মহেশখালী উপজেলা শাখার আয়োজনে এক জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসে টানা তিন মেয়াদে সরকার গঠন করেছে।
তিনি ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এটা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। আমরা মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছি এবং খুব শিগগিরই মূল্যস্ফীতির হার কমবে। মানুষ আরও ভালো জীবনযাপন করতে পারবে।’
তিনি সবাইকে তাদের জমির প্রতিটি ইঞ্চি কৃষিকাজে ব্যবহার করার এবং যতটুকু সম্ভব উৎপাদন করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে এক ইঞ্চি জমিও কৃষি উৎপাদন ছাড়া খালি রাখবেন না। আমাদের নিজেদেরই দেশের উন্নয়ন করতে হবে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন করা তার দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অগ্রগতি এখন সবার কাছে দৃশ্যমান: শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়েছিলেন এবং তার আদর্শ ও পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সে লক্ষ্যে জনগণকে নৌকায় ভোট দিতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগই পারে, আর কেউ পারবে না। অন্যদের দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
সাধারণ মানুষের ওপর ফের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপি ও তার সহযোগীদের কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের মধ্যে যদি মানবতা থাকে, তাহলে সে কাউকে জীবন্ত পোড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘তাদের একমাত্র কাজ হলো মানুষকে জীবন্ত পোড়ানো এবং সম্পত্তি ধ্বংস করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাই জনগণকে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি জানান, গণমানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণে যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে আমার বাবার মতো রক্ত দিতে প্রস্তুত আমি। আমার একমাত্র কাজ হলো আপনাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা।’
মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং মহেশখালী ও কুতুবদিয়া আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির আসল চরিত্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরুন: সাংবাদিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অগ্রগতি এখন সবার কাছে দৃশ্যমান: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বলেছেন, গত ১৫ বছরে অর্জিত অগ্রগতি সবার কাছে দৃশ্যমান হওয়ায় এখন সবাই বাংলাদেশকে সম্মান করে।
তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ১৫ বছর আগে যা ছিল তার থেকে বদলে গেছে। এখন সবাই একে সম্মান করে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের অগ্রগতি সবার কাছে দৃশ্যমান।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার কাছ থেকে অনুদান গ্রহণকালে একথা বলেন।
আসন্ন শীত মৌসুমে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল ও অন্যান্য গরম কাপড় বিতরণের জন্য এ অনুদান গ্রহণ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে কাজ করতে বলেন, যাতে ভবিষ্যতে দেশের অগ্রগতির ধারা বজায় থাকে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশ ও জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে শেখ হাসিনা যে সাফল্য দেখিয়ে আসছেন তা অনেক মহল ভালোভাবে নেয় না।
তিনি বলেন, ‘আমি একজন নারী হয়েও টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে দেশ পরিচালনা করছি… আমি সফলতার সঙ্গে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। আমি দেশকে বদলে দিয়েছি (আমূল)। সবাই এটিকে (এই সাফল্য) ভালোভাবে নেবে না।’
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হুমকি দেওয়ায় আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সম্প্রতি অগ্নিসংযোগ ও অবরোধের নামে আন্দোলন আবার শুরু হয়েছে। ‘আমি জানি না কে কতটা লাভবান হয়। কিন্তু কিছু মানুষ; বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ঘুমন্ত কর্মীদের গাড়ির ভেতরে রেখেও বাসে আগুন দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি না কেন এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী অতীতের মতো আসন্ন শীত মৌসুমের আগে তার ত্রাণ তহবিলের জন্য অনুদান দেওয়ার উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে (বিএবি) আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মজুদ ধরে রাখতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি রোধ করতে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মতো পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনীতিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে বিএবির সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসংযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: দলীয় সদস্যদের প্রতি শেখ হাসিনা