হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে নারীকে গলা কেটে হত্যা
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক নারীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের জারুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আয়েশা আক্তার পলি (৩০) ওই গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আক্তার মিয়ার স্ত্রী।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আক্তার মিয়ার সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে তার সৎ ভাই গাবরু মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে। সম্প্রতি আক্তার মিয়ার স্ত্রী আয়েশা আক্তার পলি একটি নারী নির্যাতন মামলা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সৎ ভাসুরের ছেলে মাসুক ও মামুন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মাসুক ও মামুন, বোন শেফা ও বোন জামাই শামীম পলির ঘরে যায়। তারা মামলা করার কারণ নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে পলিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে।
মায়ের ওপর এমন নৃশংসতা দেখে পলির আট বছর বয়সী সন্তান শহীদ একটি খাটের নিচে আশ্রয় নেয়। শাশুড়ী মালেকা বানু ভয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।
গাজিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খান জানান, আক্তার মিয়া ও পলি এক সময় টেইলারিং পেশায় ছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় তিন বছর আগে আক্তার মিয়া পলিকে বিয়ে করেন। পলির আগের ঘরের সন্তান শহীদ।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আশরাফ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছে। এখনও মামলা হয়নি।
ওসি আরও বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত পলির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে ট্রাক-বাস-মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, নিহত ৪
হবিগঞ্জে হাওরে নৌকাডুবি: ৪ নারী নিহত
হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত হবিগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন চা-শ্রমিকরা। এ ছাড়া জুড়ী উপজেলার কুলাউড়া-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কও ঘেরাও করেন তারা।
শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও টি এস্টেটের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে হাজারো চা-শ্রমিক। ফলে শতাধিক গাড়ি আটকে থাকে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ তালুকদার জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকেরা।
চা শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ বাগানে চলছে ধর্মঘট। গতকাল কয়েকটি বাগানে শ্রমিকরা পাতা উত্তোলন করলেও বুধবার সকাল থেকেই জেলার বালিশিরা, মনু, ধলাই, জুড়ী, লংলার অধিকাংশ বাগানে শ্রমিকরা কাজে আসেননি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কাজে নামার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
অন্যদিকে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
কালিঘাট চা বাগানের চা-শ্রমিকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে তাদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছে। তারা এ সিদ্ধান্ত মানেন না।
তারা বলেন, নেতাদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে, আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭ চা বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এই সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক সমাধানে যায়নি এই সংকট।
কুলাউড়া লোহানী চা বাগানের শ্রমিক নেতা অজিদ কৈরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে চাই যে আমাদের মজুরি বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না।’
আরও পড়ুন:সিলেটে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেটে ২৩ চা বাগানে কর্মবিরতি পালন
সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল শুরু
দুই জেলার বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে টানা ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে সিলেট-ময়মনসিংহ সড়কে রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
রবিবার বিকাল ৪টার দিকে হবিগঞ্জে হোটেল হাইওয়ে ইন-এ বৈঠক শেষে বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত আসেন সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলার বাসা মালিক ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব: ১৩ দিন সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে ময়মনসিংহের ৭০টি বাস চলাচল করে। সম্প্রতি এই রুটে সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতি পাঁচটি নতুন বাস নামান। কিন্তু সিলেট জেলার বাসগুলো চলাচলে নিষেধ করে ময়মনসিংহ জেলা বাস মালিক সমিতি। এই নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট থেকে এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে যাতায়াতকারীরা বিপাকে পড়েন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিআরটিসি বাস চলাচলে পরিবহন শ্রমিকদের বাধা
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম জানান, দুই জেলার বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে দ্বন্দ্বের সমাধান হয় এবং এই রুটে উভয় জেলার বাস চলাচলের সিদ্ধান্তের ফলে সকল সমস্যার অবসান ঘটে।
হবিগঞ্জে ট্রাক-বাস-মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, নিহত ৪
সিলেটের মাধবপুরে সোমবার ঢাকাগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে সিলেটগামী একটি বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- দিলনাহার (৫৫), হেলেনা (২২) ও মুরাদ মিয়া (২২)। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত আরেকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আহতরা হলেন-মহিউদ্দিন (৩৫), ইমরুল (৩৫), আকাশ (২৫), আতিকুর (৩৫), আনোয়ার (২৫), ফয়জুল (৩০) ও কামরুল (২৬)।
তাদের সবার বাড়ি নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামে।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে জানান, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ।
ওসি জানান, হাসপাতালে নেয়ার পথে দিলনাহার ও হেলেনার মৃত্যু হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুরাদের মৃত্যু হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সারাদেশে দুই হাজার ১৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯১ নারী ও ৩৮১ শিশুসহ অন্তত দুই হাজার ৩২৯ জন নিহত এবং চার হাজার ৩৬১ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১৫
সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া সেই শিশুর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবিতে রিট
হবিগঞ্জে হাওরে নৌকাডুবি: ৪ নারী নিহত
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওরে বুধবার ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় চার নারী নিহত হয়েছেন।
বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম খান জানান, বিয়ের দাওয়াত দিয়ে স্নানঘাট গ্রামের আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রউয়াইল গ্রামের কাছে তাদের নৌকাটি ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: নৌকাডুবি: ছেলে-ভাতিজা উদ্ধার করে নিখোঁজ হলেন হযরত আলী
নিহতরা হলেন- কনে তৃনার মা জরিনা বেগম (৪৫), চাচি লেদি বেগম (৬০), আয়তুন্নেসা (৫০) ও হুর বানু (৫৫)। তারা সবাই হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা শিশুসহ চারজনকে নিরাপদে উদ্ধার করেছেন বলেও জানান ওসি।
হবিগঞ্জে মোবাইল কেনা-বেচা নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মোবাইল ফোন কেনা-বেচা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে উপজেলার আলমপুরে কমপক্ষে দুই ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নিহত মামুন মিয়া (৩৫) আলমপুর গ্রামের আমির হামজার ছেলে।
হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ জানান, বৃহস্পতিবার রিপন মিয়া ও সোহেল মিয়া নামে দুই যুবকের মধ্যে মোবাইল ফোন কেনা-বেচা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন দুই যুবককে শান্ত করেন। শুক্রবার বিকালে ওই বিষয় নিয়ে আবারও দুই যুবকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর ও বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘন্টাব্যাপী চেষ্টার পর টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মামুন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ভোলা-বরিশাল সীমান্তে চর দখল নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ২০
হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
হবিগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, কালনী কুশিয়ারা নদীর ভাটিতে পলিমাটি জমা হওয়ায় ও হাওড় অঞ্চলে বন্যার পানি হ্রাসের পরিমাণ কম হওয়ায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এছাড়া অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে চলতি মাসে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা করছেন তিনি।
পাউবো সূত্র মতে, বন্যায় হবিগঞ্জ সদরের গোপালপুরে ২০ মিটার, বানিয়াচঙ্গের সুজাতপুর এলাকায় ৬০ মিটার খোয়াই নদীর বাধ ভেঙে গেছে। এদিকে আজমিরিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বাধের নিকলীরঢালা এলাকায় ২০ মিটার, বদলপুর বাজারের কাছে ১০ মিটার দীর্ঘ এবং নবীগঞ্জের চরগাওয়ে বিবিয়ানা নদীর বাধের ৮০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। এসব ভাঙন মেরামতে প্রায় ২ কোটি টাকা লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমেছে, বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, হবিগঞ্জ, বানিয়াচঙ্গ আজমিরিগঞ্জ নবীগঞ্জ উপজেলায় এই পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক মেরামতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭ কিলোমিটার রাস্তা, ৬৮ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছির জানান, সড়ক মেরামতে ৮২ কোটি ৭৪ লাখ, পাঁচটি ব্রিজের জন্য পাঁচ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক মো.আশেক পারভেজ জানান, বন্যায় ১৫ হাজার ৬২৮ হেক্টর আউশ, ১৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর বোনা আমন ধান, ১ হাজার ৭৪৩ হেক্টর শাকসবজি, ও ৪৫ হেক্টর অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৮৮ হাজার ৫৪ মেট্রিক টন ধান ও সবজি এবং ২২৫ মেট্রিক টন অন্যান্য ফসল বিনষ্ট হয়েছে। জেলায় এক লাখ তিন হাজার ১৩০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলায় ১৭৮টি গবাদিপশুর খামারের ১ হাজার ৩০৮টি পশু, ৭৩টি খামারের ৫৪ হাজার ৪৬৭টি হাঁস মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস জানান, বন্যায় ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় সাত হাজার ৯০১টি পুকুর দীঘি ও খামার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পাঁচ হাজার ৮৫৩ জন খামার মালিকের ১৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৩৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যায় প্লাবিত হয়।
জেলা শিক্ষা কমকর্তা মো. রুহুল্লাহ জানান, জেলায় ৯৪টি স্কুল কলেজ মাদরাসা বন্যা কবলিত হয়। এরমধ্যে ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ফের বৃষ্টি, বন্যার অবনতির আশঙ্কা
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৯টির মধ্যে সাতটি উপজেলায় ৫৪টি ইউনিয়নের ২৪ হাজার ৩৩০টি পরিবারের ৮৩ হাজার ৩৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১৯ হাজার ৩৪৫ জন ৩৫০টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এই পর্যন্ত ৪০ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা নগদ, আটশ মেট্রিক টন চাল, চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩০ হাজার ৪১৬ প্যাকেট ডানো দুধ বিতরণ করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় ৩০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
বন্যা: আরও ২ জনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪
শেরপুর ও হবিগঞ্জে বন্যার কারণে ২৪ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল পর্যন্ত) আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তারা দুজনই বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
১৭ মে থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত মৃত্যুর এ সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
বন্যা কবলিত মোট ৭০টি উপজেলার মধ্যে সিলেট বিভাগে ৩৩টি, রংপুর বিভাগে ১৬টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২০টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে একটি উপজেলা রয়েছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও কুড়িগ্রাম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা যেখানে যথাক্রমে ১৩, ১১, ১০ ও ৯টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
মোট এক হাজার ৯৪৪টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং দুই হাজার ৫১টি মেডিকেল টিম বন্যার্ত মানুষজনকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বন্যার পানিতে ডুবে সিলেটে কিশোরের মৃত্যু
হবিগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
হবিগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার হবিগঞ্জের নারীও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (১) এর বিচারক সুদীপ্ত দাশ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মনু মিয়া (৩০) বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বাবা হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি দিনমজুরের স্ত্রীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে মনু মিয়া। বিষয়টি কাউকে জানালে তার স্বামী ও তাকে হত্যার হুমকি দেন তিনি। ভুক্তভোগীর স্বামী বাড়িতে এলে ঘটনার বিষয় জানায় ধর্ষণে শিকার গৃহবধূ। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মনু মিয়াকে আটক করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে মনু মিয়াকে তার ভাই উস্তার মিয়া ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ: ৪ জনের যাবজ্জীবন
এদিকে এঘটনা দুদিন পর ১৭ জানুয়ারি রাত ১টায় মনু মিয়া ওই গৃহবধূর বসত ঘরের সিদ কেটে প্রবেশ করে ভয় দেখিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে আবারও ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নিজে বানিয়াচং থানায় মনু মিয়া ও উস্তার মিয়াকে আসামি করে এজহার দায়ের করে। তদন্ত শেষে পুলিশ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। মামলায় বাদীপক্ষের ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ করা হয়।
হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন
হবিগঞ্জে শাহজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় তিন ঘন্টা চেষ্টার পর দমকল বাহিনীর ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে কেন্দ্রের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মিহানুর রহমান প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।