আদালত
বরিশালে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা
গ্রাহকের চেকের স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের বরিশাল ব্রাঞ্চ ইনচার্জসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ মামলাটি আমলে নিয়ে উপ-পরিদর্শক সমমর্যাদা সম্পন্ন কোনও গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনারকে আদেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া এলাকার বাসিন্দা ও তিশা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর মনিরুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন: চেক জালিয়াতি: মাগুরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ২.৬৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ
মামলার বিবাদীরা হলো, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড বরিশালের ব্রাঞ্চ ইনচার্জ সাইফুর রহমান সরদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার ফয়সাল আলম ও সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. অসিউদ্দিন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর প্রিমিয়ার ব্যাংক বরিশাল শাখায় বাদী একাউন্টে ১৪ লাখ টাকা জমা দেওয়ার পরবর্তীতে একাউন্টে ব্যালেন্স অনুসন্ধানে গিয়ে একাউন্টে কোনো টাকা না থাকায় বাদী বিবাদীদের কাছে বিষয়টি জিজ্ঞাস করলে তারা কোনও উত্তর না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। এরপর চলতি বছরের ১৪ জুন বাদী নিয়োজিত কৌশুলীর মাধ্যমে বিবাদীদের লিগ্যাল নোটিশ করে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর ব্যাংকে জমা দেওয়া ১৪ লাখ টাকা একাউন্টে জমা না হওয়ার কারণ জানতে চায়।
পরে বিবাদীরা তাদের নিয়োজিত কৌশুলীর মাধ্যেম জবাব দেয় যে, বাদীর নোটিশের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং বাদীর ১৪ লাখ টাকা ভুলক্রমে ক্রেডিট হওয়ায় তা ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে।
বিবাদীদের এই জবাবের পর বাদী ব্যাংক একাউন্টের হিসাব বিবরণী উত্তোলনের পর দেখা যায়, মনিরুল ইসলামের একাউন্টের চেকের বরাতে তার স্বাক্ষর, টাকার পরিমাণ ও বাহকের নাম জাল করে বাদীর একাউন্ট থেকে ১৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের জামিন জালিয়াতির ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ১৬ জন কারাগারে
বিবাদীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীর হাতে রক্ষিত অক্ষত চেকের বরাতে চেকে বাদীর স্বাক্ষর টাকার পরিমাণ, তারিখ ও বাহকের নাম জাল করে ওই চেকটি ব্যবহার দেখিয়ে বাদীর টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করে অপরাধ সংগঠন করায় বাদী বাধ্য হয়ে মামলাটি দায়ের করে বলে জানায়।
সিলেটে ২ নারীকে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই নারীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান।বৃহস্পতিবার দুপুরে মখলিছ (৫৫) নামের ওই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এবং তার স্ত্রী রাহেলা বেগম (৪৮) কে তিন বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মখলিছ গোয়াইনঘাট উপজেলার পাংথুমাই গ্রামের আছকর আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড বহালসিলেটের গোয়াইনঘাটের মালেকা বেগম (৫০) ও হাসিনা বেগম (৪৫) নামে দুই নারীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মখলিছ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে মামলা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় হয়।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: জুলহাজ তনয় হত্যা: ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ডতিনি জানান, ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল গোয়ইনঘাট উপজেলার পিয়াইন নদীর তীরে মুর্তা বেতের বাগানের জায়গার বিরোধ নিয়ে উপজেলার পাংথুমাই গ্রামের জমসু মিয়ার স্ত্রী মালেকা বেগম (৫০) ও আজির উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা বেগমকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মখলিছ। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী রাহেলা বেগম।তিনি বলেন, এই মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার মখলিছকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়। এছাড়া তার স্ত্রী রাহেলা বেগমকে তিন বছরের কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। উল্লেখ্য জরিমানা না দিলে তাকে আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
আদালত সূত্র জানায়, মালেকা বেগম ও হাসিনা বেগমকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত হাসিনা বেগমের ছেলে আব্দুস সবুর চারজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোয়াইনঘাট থানার তৎকালীন উপ পরিদর্শক মশিউর রহমান ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেন। তদন্তে অপর দুইজনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
দেশের সব কারাগার ও থানায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর নির্দেশ
ভুলের শিকার হয়ে নিরপরাধ ব্যক্তির কারাভোগ ঠেকাতে এবং প্রকৃত আসামি শনাক্ত করতে দেশের সব কারাগার ও থানায় ক্রমান্বয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সাথে নাশকতার মামলায় ভুল আসামি জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষকে যে তিন দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- ১. বিদ্যমান ব্যবস্থার সাথে সব থানায় আসামির হাতের আঙুল ও তালুর ছাপ, চোখের মণি, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রচলন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সচিবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
২. গ্রেপ্তারের পর আসামির সম্পূর্ণ মুখের ছবি ধারণ ও কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষণ।
৩. দেশের সব কারাগারে আঙুল ও হাতের তালুর ছাপ, চোখের মণি সংরক্ষণের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ সিস্টেম চালু করা।
জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভুল পরোয়ানা জারির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণসহ রুল চূড়ান্ত ঘোষণা করেছেন। আবেদনকারী জহির উদ্দীনের বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা অবৈধ এবং আইন বহির্ভূত হিসেবে ঘোষণা করে কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে তিন দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর বসুরহাটের মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নয় মর্মে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস।
আরও পড়ুন: লকডাউন: সারাদেশে আদালতে স্বাভাবিক বিচার কাজ বন্ধ থাকবে
গত বছরের ১০ মার্চ হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এক আদেশে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করেন। একই সাথে নোয়াখালীর জহির উদ্দিন ওই মামলার প্রকৃত আসামি কি না, তা তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, জহির উদ্দিনকে খিলগাঁও থানার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি হিসেবে চিহ্নিত করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জহির উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাধারী ব্যক্তি নয়। প্রকৃত আসামি মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস।
অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের শাহজাদপুর গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন:সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আজগর আলী মোল্লা বাড়ি মসজিদ রোড এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন। এরপর ওই বছরের ৩১ অক্টোবর মোদাচ্ছের জামিন পেয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যান। তিনি জহির উদ্দিন নামেই আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
এদিকে, পুলিশ তদন্ত শেষে জহির উদ্দিনসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ অবস্থায় জহির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন।
সিনহাকে হত্যা করতে দেখেছেন ইমাম শহীদুল!
কক্সবাজারের বায়তুল নূর জামে মসজিদের ছাদ থেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যা করতে দেখেছেন ইমাম শহীদুল ইসলাম। তিনি আদালতকে এ তথ্য জানান। বুধবার সিনহা হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণের চতুর্থ দিনে সাক্ষী হিসেবে তার সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা শেষ হয়েছে।
তৃতীয় দফায় বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা হবে আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর। মামলায় আরও ৭৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলা: ৫ম সাক্ষী হাফেজ আমিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন
আদালত থেকে বেরিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, ঘটনাস্থলের কাছে বায়তুল নূর জামে মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ আপাতত শেষ হয়েছে। শহীদুল মসজিদের ছাদ থেকে দেখা পুরো ঘটনা আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন। এতে আমরা সন্তুষ্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, সকাল ১০ টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা শেষ হয় দুপুর ২ টার দিকে।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলা: সাক্ষ্য দিলেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক কামাল
আসামি পক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, মসজিদের ছাদ থেকে মেরিনড্রাইভ সড়কের দূরত্ব অনেক। মাঝখানে অনেক গাছপালা আছে। এই দূরত্ব থেকে কোন ঘটনা স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব নয়। মূলত অশুভ অপরাধী চক্রের প্ররোচনায় কিছু সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
এর আগে সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজন ভ্যানে করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলা: দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
পরীমণির দায়ের করা মামলায় চার্জশিট দাখিল
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় চিত্রনায়িকা পরীমণির দায়ের করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
সোমবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত অপর আসামি হলেন শাহ শহিদুল আলম।
এ বছরের ১৩ জুন রাতে ফেসবুক পোস্টে পরীমণি অভিযোগ করেন, ৯ জুন উত্তরার বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা চালান ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় তিনি সাভার থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: মুক্তি পেয়ে কী বার্তা দিলেন পরীমণি
পরীমণির মামলা দায়েরের পর উত্তরায় তুহিন সিদ্দিকী অমির বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। অমির বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়।
এরপর ১৪ জুন রাত ১২টা ৫ মিনিটে ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় নাসির, অমিসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: পরিমণির মামলায় জামিন পেলেন নাসির-অমি
মাদকের মামলায় কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
নেত্রকোণায় চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারসহ আসামি গ্রেপ্তার
নেত্রকোণায় দোকানের সিন্দুক ভেঙে চুরি যাওয়া ৩ লাখ টাকা উদ্ধারসহ আসামি মো. শফিকুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত শফিকুল পূর্বধলা উপজেলার নাগাইন গ্রামের মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে। সে নেত্রকোণা শহরের ছোট বাজারস্থ ‘নেত্রকোণা হার্ডওয়্যার’ নামে এক দোকানে কাজ করতো।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নেত্রকোণা পৌরসভাধীন ছোট বাজারস্থ নেত্রকোণা হার্ডওয়্যার নামীয় দোকানে সিন্দুক ভেঙে নগদ তিন লাখ টাকা চুরি করে করে নিয়ে যায় শফিকুল।
আরও পড়ুন: কবরের কঙ্কাল চুরি করতে গিয়ে গাজীপুরে যুবক আটক
এ ঘটনায় শনিবার দোকানের মালিক হারুন্নাহার কাইয়ুম বাদী হয়ে মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে ওসি খন্দকার শাকের আহমেদের দিক নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ সোহেল রানার নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুজ্জামান ঘটনায় জড়িত আসামিকে শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তার অভিযানে নামে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে কম্পিউটার ল্যাব থেকে র্যাম ও প্রসেসর চুরি
এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিকে শফিকুল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য মতে, পূর্বধলা থানাধীন নাগাইল এলাকা হইতে চুরি হওয়া টাকার মধ্যে নগদ ২ লাখ ৩৪ হাজার নয় শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পার্থ গোপালের জামিন বাতিল, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
সিলেটের সাবেক কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিককে ঢাকার নিম্ন আদালতের দেয়া জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে তাকে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে এসব আদেশ দিয়েছেন।
আদেশে ঢাকার বিশেষ জজ মো. ইকবাল হোসেনকে সতর্ক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মামলাটি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ কে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউএনও’র বাসায় হামলা: ১২ আ’লীগ নেতাকর্মীর জামিন
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। পার্থ গোপাল বণিকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির বিপ্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে হাইকোর্টে দু’বার পার্থ গোপাল বণিকের আবেদন খারিজ হয়। ওই সময়ে হাইকোর্ট পৃথক আদেশে প্রথমে ৬ মাসের মধ্যে ও পরে একবছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পরও নির্ধারিত সময়ে মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এ অবস্থায় পার্থ গোপাল বণিক গত ১৯ জুন জামিন পান। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন আদেশ নিয়ে তার পরদিনই তিনি জেল থেকে বের হন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নাশকতা মামলায় বিএনপির ১৫ নেতার জামিন
পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দেয়ার ও কারামুক্তির বিষয়টি নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। এছাড়া তার জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করে দুদক। আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত ২৮ জুন হাইকোর্ট বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কোন যুক্তিতে ওই বিচারক পার্থ গোপালকে জামিন দিয়েছেন তার ব্যাখ্যা চান। এছাড়া এ জামিনের বিষয়ে চ্যানেল-২৪ এ প্রচারিত প্রতিবেদনের ভিডিও ক্লিপ দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি পার্থ গোপাল বণিকের জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী ওই জামিনের ব্যাপারে ভুল স্বীকার করে ব্যাখ্যা দাখিল করে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চান। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শুনানি করে হাইকোর্ট রায় দেন।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পার্থ গোপাল বণিককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
গত বছরের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপাল বণিকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮০ লাখ টাকা উপার্জন করে পাচারের উদ্দেশে বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন বলে প্রমাণিত হয়।
আরও পড়ুন: পার্থ গোপাল বণিকের জামিন: বিচারকের ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট
এতে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার এই বেতন স্কেলের সঙ্গে এত টাকা অর্থ উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। গত বছরের ৪ নভেম্বর পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
ইউএনও’র বাসায় হামলা: ১২ আ’লীগ নেতাকর্মীর জামিন
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবন ও পুলিশের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ১২ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে এই মামলায় আরও ৯ আসামির জামিন হয়। এনিয়ে এ মামলার ২১ আসামির জামিন আবেদনই মঞ্জুর হলো।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুনানি শেষে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে ইউএনও পুলিশের দুই মামলায় ১২ আসামির জামিন
অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোতোয়ালি থানার জেনারেল রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই খোকন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, দুই মামলায় গ্রেপ্তার ১২ আসামির জামিন চেয়ে গত ২৯ আগস্ট আবেদন করা হয়। তখন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মো. আনিছুর রহমান। তিনি জামিন আবেদন গ্রহণ করেন, ২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। আজ শুনানি শেষে আবেদন করা ১২ আসামির জামিন মঞ্জুর করা হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে গভীর রাতে প্রশাসন ও আ'লীগের সমঝোতা
জামিন প্রাপ্তরা হলেন, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাঈদ আহমেদ মান্না, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ, রূপাতলী বাস টার্মিনালের পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরিয়ার বাবু, লিটন ঘোষ, মো. রাকিব, শুভ হাওলাদার, শাহিনুল ইসলাম শাহিন, শুভ ঘোষ, মো.অলিউল্লাহ, মিরাজ গাজী ও হারুন অর রশিদ।
আরও পড়ুন: বরিশালের ভুল বোঝাবুঝি সমাধানের পথে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস জানান, এর আগে ২৫ আগস্ট দুই মামলায় গ্রেপ্তার ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এতে ইউএনও ও পুলিশের করা হামলা ও মামলায় গ্রেপ্তার ২১ আসামির মধ্যে দুই জন ছাড়া অন্য সবাই জামিন পেয়েছে। বাকী দুইজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় তারা জামিন পাননি।
১৫ দিন বাবা-মায়ের সাথে গুলশানে থাকবে সেই দুই শিশু
জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরানকে তাদের দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে গুলশানের একটি বাসায় আগামী ১৫ দিন একত্রে থাকার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই সময়ে ঢাকার সমাজ সেবা অধিদপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্ট শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশের বিষয়টি তদারকি করবেন। আর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
আলোচিত দুই শিশুর বিষয়ে আজ মঙ্গলবার দুই ধাপে শুনানির পর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এসময় আদালত বলেন, ‘সব বিষয়ে শুনে বাচ্চাদের ভালো থাকার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে আমরা এই আদেশ দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: জাপানি ২ শিশুকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখার নির্দেশ
আদালতে শিশু দুটির মায়ের পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির ও শিশুদের বাবার পক্ষে অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ শুনানি করেন। শুনানির এক পর্যায়ে ওই দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা বাবার কাছে নাকি মায়ের কাছে থাকতে চায় সে বিষয়ে তাদের সাথে একান্তে কথাও বলেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতিদের খাস কামরায় প্রায় আধাঘণ্টা শিশুদের সঙ্গে কথা বলার পর আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বলেন, ‘আমরা চাই শিশুরা পারিবারিক পরিবেশে থাকুক। আপনারা সবাই বিষয়টি পজিটিভলি দেখুন।’
দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে ঢাকায় এসে গত ১৯ আগস্ট জাপানি নারীর করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে দুই মেয়েসহ তাদের বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেন। এছাড়া ওই দুই মেয়েকে নিয়ে বাবা আগামী ৩০ দিন বিদেশ যেতে পারবেন না বলে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এরপর দুই মেয়েকে বাবার হেফাজত থেকে সিআইডি উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে। এ বিষয়টি গত ২৩ আগস্ট মেয়েদের বাবার পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সচিবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিশুদের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারেই রাখার নির্দেশ দেন। সে সময়ে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মা এবং বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাবাকে শিশুদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেন আদালত। সে অনুযায়ী বা-মা শিশুদের সাথে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে সময় দেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের আইনজীবী আদালতে এসে জানান শিশুদের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। তখন আদালত উভয় পক্ষকে বলেন কোথায় থাকলে ভালো হয় সে বিষয়ে সমঝোতা করে সিদ্ধান্ত জানাতে।
আগের দেয়া আদেশ অনুযায়ী, দুই মেয়েসহ তাদের মা-বাবা এবং ফুফু আজ হাইকোর্টে উপস্থিত হন। এরপর দুপক্ষের আইনজীবীর শুনানি শুরু হয়। একপর্যায়ে আইনজীবীসহ দুই মেয়ে এবং তাদের মা-বাবা ও ফুফুকে খাস কামরায় ডেকে সবার বক্তব্য শোনেন আদালত।
শুনানির শুরুতে মায়ের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতকে বলেন, শিশুদের মা ঢাকার বারিধারায় একটি বাসা ভাড়া করেছেন। আমরা চাই ওই বাসায় বাচ্চারা মায়ের সাথে থাকুক। বাচ্চাদের বাবাও তার মতো করে ওই বাসায় আসুক-থাকুক। কারণ, এই কদিনে বাচ্চাদের মধ্যে যে একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে তা কাটুক। তারপর আপনারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ঘোড়ার মাংস হালাল: আদালত
তবে বাবার পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম শুনানিতে বলেন, বাচ্চারা বাবার বাসায় থাকুক। মা বাচ্চাদের দেখতে আসুক কোনো সমস্যা নেই। মা যে বাসাটার কথা বলছেন সে এরিয়ায় বাচ্চাদের থাকার বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে।
শুনানিতে দুই পক্ষের এমন দ্বিমুখী অবস্থানের প্রেক্ষাপটে আদালত বলেন, আমরা চাই বাচ্চা দুটি পারিবারিক পরিবেশে থাকুক। আপনারা একটু পজিটিভলি ভাবুন।
এরপর বাবার পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া আদালতকে বলেন, আমরা তাহলে আবার দুই পক্ষ একটু বসে সিদ্ধান্ত নিই। তারপর আপনাকে জানাই। আপনি তখন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। এরপর আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য বেলা ৩টায় সময় নির্ধারণ করেন।
মাদক মামলায় জামিন পেলেন পরীমণি
মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকার একটি আদালত নায়িকা পরীমণিকে জামিন দিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা তাকে একদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার পর ২২ আগস্ট পরীমণিকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওইদিন তার পক্ষ থেকে কোনো জামিন আবেদন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: পরীমণি: পাবলিক মনে মনে জামিন দিয়ে দিয়েছে
পরে তার আইনজীবী মজিবুর রহমান নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান। আবেদনে তিনি অভিনেত্রীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনও চেয়েছিলেন।
গত ৪ আগস্ট বনানীর বাসা থেকে তাকে আটকের পর পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনবার রিমান্ডে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: পরীমণির জামিন শুনানির তারিখ এগিয়েছে
পরে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে তার বাড়িতে অবৈধভাবে মদ ও মাদক রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য জুন মাস জুড়ে ফেসবুক লাইভে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ এবং অন্যদের বিরুদ্ধে বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ এনে শিরোনামে ছিলেন পরীমণি।
আরও পড়ুন: বিষয়টা পরীমণি, না অন্য কিছু