কুড়িগ্রাম
৪৬ বছর বয়সে দাখিল পাশ করলেন কুড়িগ্রামের রহিমা
অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিবার ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় ৪৬ বছর বয়সে এসএসসি সমমানের দাখিল পরীক্ষায় পাস করে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন কুড়িগ্রামের মোছা. রহিমা বেগম নামের এক নারী।
তিনি পেশায় একজন ভাতাপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে কর্মরত আছেন।
তার বাবার নাম মো. আছর উদ্দিন। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খলিলগঞ্জ নাজিরা পাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল সরকার মজনুর স্ত্রী।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালে নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে: দীপু মনি
শুক্রবার ২৮ জুলাই এসএসসি সমমান পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে ৩.৬০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রহিমা বেগম চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর পড়তে পারেননি। সংসারে এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে মেয়ে দুজনে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন।
মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। মেয়ের ঘরে এক ছেলে আছে। দীর্ঘ সময় পর মেয়ের ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করার সময় তার মনে আবারও পড়াশোনা করার ইচ্ছা জাগে।
সবশেষে কুড়িগ্রাম কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ৩.৬০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।
এ বয়সে পাশ করায় পরিবার আত্মীয় স্বজন ও সহকর্মীদের অভিনন্দন ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন রহিমা বেগম।
রহিমা বেগম বলেন, ‘আমি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের একজন কর্মচারি। এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। এবার আমার স্বপ্ন আমি ইন্টারমেডিয়েটও পড়ব। আমার এসএসসি পাস করার পিছনে আমাদের কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারের অবদান রয়েছে। স্যার আমাকে সব সময় উৎসাহিত করতের পড়াশুনা করার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণেই আমি এসএসসিটা পাস করতে পেরেছি। আমি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই কলেজে কাজ করছি। সব স্যাররা আমাকে অনেক স্নেহ করেন। আমিও আমার কাজ সবসময় মনোযোগ দিয়ে করি। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে-মেয়েরা দুজনেই এই কলেজ থেকেই মাস্টার্স পাস করেছে।’
রহিমা বেগমের মেয়ে মজিদা আক্তার পপি বলেন, ‘মা এই বয়সে এসে সংসার ও চাকরি করার পরও পরীক্ষায় পাস করবে জানতাম না। আমার মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘রহিমা বেগম আমার কলেজের একজন কর্মচারি। তিনি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মাদরাসায় দাখিল শ্রেণিতে ভর্তি হন। এবছর এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৩.৬০ অর্জন করেছেন। বয়স বা কোনো বাধাই তাকে আটকাতে পারেনি। পড়াশোনা মাঝপথে কিংবা শুরুতে থেমে যাওয়া অন্য সব নার/পুরুষদের জন্য রহিমা একটি প্রেরণার উৎস। যেকোনো বয়সেই যে শিক্ষা অর্জন করা যায় রহিমা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রহিমাকে অভিনন্দন এবং তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।’
আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮০.৩৯ শতাংশ
প্রধানমন্ত্রীর হাতে এসএসসির ফলাফল হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে বাসচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী আঞ্চলিক মহাসড়কের আন্ধারীঝাড় এলাকায় দূর পাল্লার বাসচাপায় এক মোটরসাইকেলে থাকা ৩ আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এ সময় বাসটিকে আটক করা গেলেও চালক পলাতক রয়েছেন।
নিহতরা মোটামুটি সমবয়সী। তারা হলেন- নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা গ্রামের বাসিন্দা আফতাব হোসেনের পুত্র সাগর (২৪), সোহরাব আলীর পুত্র সুমন (২৩) এবং শাহিন (২৫)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে লরি থেকে কনটেইনার পড়ে ট্রাফিক পুলিশ নিহত, আটক ২
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী থেকে ঢাকাগামী এনা পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে চলছিল। এ সময় কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী আঞ্চলিক মহাসড়কের আন্ধারীঝাড় এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা ৩ আরোহীসহ একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জনের মৃত্যু হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন,বাসটি নাগেশ্বরী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। নিহতদের লাশ তাদের পরিবারের লাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে বাসচালককে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনার পর যান চলাচল এক ঘণ্টা বন্ধ থাকলেও বর্তমানে স্বাভাবিক আছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাইভেটকারের চালকসহ নিহত ২
কুড়িগ্রামে খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকালের দিকে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের পাথারী বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত দুই শিশু হলো- সাব্বির হোসেন (৪) একই এলাকার মাঈদুল ইসলামের ছেলে ও ইভা মনি (৩) একই উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের ফজলাল রহমানের মেয়ে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো ৩ জনের
স্থানীয়রা জানান, দুই শিশু বাড়ির পাশে একটি খালের ওপর খেলতেছিল। কোনো এক সময় খালটিতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায় তারা। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে খালে মেয়ে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে চিৎকার শুরু করেন এক ব্যক্তি।
পরে লাশটি উদ্ধার করতে গিয়ে ছেলেটিরও লাশও দেখতে পান। লাশ উদ্ধার করে দুইজনকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মেম্বার আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, একটি খালের পানিতে পড়ে দুই শিশু মারা গেছে। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগনি হয়। মেয়ে বাচ্চাটির বাড়ি ধরনীবাড়ী ইউনিয়নে।
উলিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাছভর্তি বালতির পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর
জামালপুরে পানিতে ডুবে ২ শিশুকন্যার মৃত্যু
কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
তবে পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপৎসীমা সীমার উপরে রয়েছে দুধকুমার নদ ও ধরলা নদীর পানি। এতে জেলার ৯ টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি তলিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষজন।
তিস্তা, ধরলা,দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার বানভাসি মানুষেরা আসবাবপত্র ও গবাদিপশু পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানগুলোতে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকটে ভুগছেন তারা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, জেলার ধরলা নদীর পানি কমে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার এবং দুধকুমার নদের নুন খাওয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়ন কদমতলা গ্রামের হোসেন আলী বলেন, গত দু’দিন ধরে পানি বেড়েই চলছে। পানি বাড়ার কারণে এলাকার অনেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ধানের বীজতলা ও পটলের খেত এখন পানির নিচে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া বের হওয়ার কোনো উপায় নাই।
কুড়িগ্রাম সদরের চর জগমন গ্রামের মো. হযরত আলী বলেন, পানি ঘরে ঢুকে খাট তলিয়ে গেছে। রান্নার চুলা পানির নিচে, ঘরে চাল থাকলেও আগুন জ্বালানোর কোনো উপায় নেই।
চর জগমন গ্রামের ছালেহা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে পানি উঠার সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে। এবার পানি বাড়ার ধরন আলাদা। ঘরের অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে। গত দু’দিন ধরে ঘরের জিনিসপত্র ও হাঁস-মুরগি নিয়ে তাবু টাঙিয়ে ব্রিজে আছি। কেউ আমাদের খোঁজ-খবর নেয় না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত উঠানামা করতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২হাজার পরিবার পানিবন্দী এবং নদী ভাঙনের শিকার ১৫০০ পরিবার। এসব বন্যাকবলিতদের জন্য সাড়ে ৮ লাখ টাকা, ২৭৫ মেট্রিক চাল এবং ৩০০ শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপবরাদ্দ দেওয়া হবে।
গত ১৪ জুলাই শুক্রবার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জেলায় ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
কুড়িগ্রামের সবকটি নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে দুধকুমার নদের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় সড়ক তলিয়ে গিয়ে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত ৩-৪দিন ধরে বন্যায় প্লাবিতরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
বাড়ির ভেতরে পানি ওঠায় তারা ঠিকমতো রান্নাও করতে পারছেন না। স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন বন্যাকবলিত এসব পরিবার।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যাকবলিত ৮ শতাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩ থেকে ৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র কোনো বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি বলে নিশ্চিত করে তিনি জানান, নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পাউবো। সেটির দুটি অংশ প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ইতোমধ্যে ৬৫ মেট্রিক টন চাল উপজেলাগুলোতে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের কাছে ৫৮৫ মেট্রিকটন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপবরাদ্দ দেওয়া হবে।
এদিকে, শুক্রবার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসন থেকে ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদের পানি বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) থেকে হু-হু করে বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পোড়ারচর গ্রামের শাপলা জানান, সকালে রান্নাঘরের মেঝে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করতে পারছেন না। জিনিসপত্র সরাতে দুপুর গড়িয়ে গেছে।
তার স্বামী বাবুল আলী এক সন্তানকে কোলে নিয়ে আছেন, অপর সন্তানটি তার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। শাপলা তখন চাল আর কাঁঠালের বিচি ভাজছেন। এই খেয়েই তাদের দিন পার করতে হবে। বন্যা হলেই এমন দুর্দশায় পড়ে এসব পরিবার।
পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ভগবতীপুর গ্রামের নার্গিস নামের আরেক নারী বলেন, চার দিন থেকে পানিবন্দী হয়ে আছি। কেউ খোঁজখবর নেয় না। ঘরের চৌকিতে পানি ওঠায় পাশের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। এই গ্রামে প্রায় ৪৫/৫০টি বাড়িতে পানি উঠেছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাফনা গ্রামের নুর বখত জানান, গতকাল থেকে পানির তোড় বেড়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের উভয়ের বয়স ২ বছর। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের খামার বেলদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু দু’টি হচ্ছে- জাবির ও আদিব। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত গরমে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে
জাবির খামার বেলদহ গ্রামের আব্দুল হামিদ বাবুর ছেলে এবং আদিব একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন ভুট্টুর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খেলতে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে মারা যায় শিশু দু’টি।
পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে মাদক জব্দ, ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এসব নদ নদীর পানি।
পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হয়ে পড়ছে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলো। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষেরা।
তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলায় নদী ভাঙনের তীব্রতা অনেকটা কমেছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) বিকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিস জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজারের ছড়ার পাড় এলাকার নওশাদ আলী বলেন, ‘কিছুদিন আগে বন্যা এসে রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছিল। যাতায়াতে আমাদের খুব কষ্ট ছিল। পানি কমার পর কয়েকদিন ভালোভাবে যাতায়াত করছি। আবারও পানি বাড়ার কারণে রাস্তায় হাঁটু পানি হয়েছে। আমাদের ফির চলাচলে কষ্ট শুরু হইলো।’
ওই এলাকার রুবেল মিয়া বলেন, বাড়ির চারিদিকে পানি ঠিকমতো বাহির হওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি থেকে হাট বাজার করারও সমস্যা হয়েছে। এদিকে আবার ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়েও চিন্তার শেষ নাই। কখন যে পানিতে চলে যায় ভয়ে থাকি আমরা। গত বন্যায় সবজির খেত নষ্ট হওয়ার পর কিছু ছিল তাও এই পানিতে শেষ।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আজ দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
কুড়িগ্রামে মাদক জব্দ, ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
কুড়িগ্রামের উলিপুরের কাতলামারী সীমান্ত এলাকা থেকে ৫০০ ইয়াবা এবং ৮৪ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে। এসময় সাইফুল শেখ (২৪) নামে এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে সাইফুলকে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মো. রুহুল আমিন।
গ্রেপ্তার সাইফুল শেখ (২৪) ভারতের হাড়-সিংমারী জেলার শুকচর থানার বাসিন্দা।
তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের কাতলামারী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাইফুল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছে থেকে ৫০০ ইয়াবা এবং ৮৪ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
রুহুল আমিন জানান, তার বিরুদ্ধে কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে উলিুপর থানায় মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: কড়া নজরদারিতে কুড়িগ্রামের হাটে নেই ভারতীয় গরু
৬০ টাকায় থমকে আছে দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় ৪০ টাকা
চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত
কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ শিশুর মৃত্যু, আহত ১
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বিদ্যুৎচালিত মোটরের পানিতে গোসল করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরও এক শিশু আহত হয়েছে।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত
মৃতরা হলো- সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুল ইসলামের মেয়ে মাহি আক্তার (৮) ও বদ্দু মিয়ার মেয়ে বিন্দু আক্তার (৯)। আহত অপর শিশু ফজলুল হকের মেয়ে মারিয়া আক্তার (৮)। তাদের বাড়ি সোনাপুর গ্রামে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, দুপুরে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে কয়েকজন শিশু গোসল শেষ করে বাড়ি এসে বিদ্যুৎচালিত পানির পাম্প (বিদ্যুৎচালিত মটর) দিয়ে দ্বিতীয় বার গোসল করতে গিয়ে মাহি প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এসময় তাকে ছাড়াতে গিয়ে আরও দুই শিশু বিদ্যুৎতায়িত হয়।
পরে শিশুদের চিৎকারে পরিবারের লোকজন ছুটে এসে আহত শিশুদের উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক সাবরিনা ছাত্তার দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত শিশুকে স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপকুমার সরকার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে ‘অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে’ গ্যারেজ মালিকের মৃত্যু
তেজগাঁওয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু