রাষ্ট্রদূত
২০২৩ সালে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়ার অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে: রাষ্ট্রদূত হেরু
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হার্তান্তো সুবোলো বলেছেন, ৫১ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কে অগ্রগতি ও উন্নয়নে স্থিতিশীলতা ও দৃঢ়তা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া।
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে দুই দেশ একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে।’
রবিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস তার ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
গত মাসে জাকার্তায় সে দেশের প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময়, উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হন।
সেসসময় দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
তিনি আশা করেন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব বন্ধুত্বের চেতনায় ভাস্বর হবে এবং ভবিষ্যতে তা আরও শক্তিশালী হবে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র গং বাজিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশে হাসপাতাল স্থাপন, ভ্যাকসিন তৈরির শিল্প এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য খাতে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। কারণ উভয় দেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।
তিনি বর্ণিল কূটনৈতিক সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: জনগণের মধ্যে সংযোগের অভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ
নির্বাচন বর্জন কারো জন্য সমীচীন নয়: জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একটানা নির্বাচন বর্জন কোনো দলের জন্যই সমীচীন নয়।
রবিবার (১ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আলোচনায় আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি যে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হওয়ার নীতিকে সমুন্নত রাখবে; এর জন্য নির্বাচন কমিশন দায়বদ্ধ।’
তিনি নির্বাচন বয়কটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘অবশ্যই আমি তাকে জানিয়েছি আগামী নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার এন্ড ট্রান্সপারেন্ট হবে এবং ইলেকশন অনুষ্ঠান করা সেটি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এবং ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা যে কখনো কারো জন্য সমীচীন নয়, সেটি আমি তাকে বলেছি। একইসঙ্গে দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক ভায়েলেন্স না হয় যেটি ২০১৩-১৪-১৫ সালে হয়েছে এবং সময়ে সময়ে বিএনপি করে এবং এখনো করার চেষ্টা করছে, উস্কানি দিচ্ছে এ বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিক: তথ্যমন্ত্রী
হাসান মাহমুদ বলেন, ‘পাশাপাশি আগামী নির্বাচন জনগণ এবং অনেক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, সুন্দর সর্বমহলে কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, সেটি আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি।’
জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গত ৫২ বছরে জাপানের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত সহায়তার জন্য আমি জাপানি রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের কথোপকথন দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সম্ভাবনাকেও স্পর্শ করেছে।’
আরও পড়ুন: দেশটাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিণত করতে চায় বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে কারো পুলকিত হওয়ার কারণ নেই: তথ্যমন্ত্রী
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্তির নিন্দা শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের প্রকাশ্য ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
তারা এটিকে ‘একজন বিদেশি কূটনীতিকের দ্বারা দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নজিরবিহীন আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এই বিষয়ক একটি প্রশ্নের জবাবে ‘গণমাধ্যম’র বিষয় উল্লেখ করেননি। অথচ রাষ্ট্রদূত হাস এক টিভি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গণমাধ্যমও নতুন ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় পড়তে পারে।
রাষ্ট্রদূতের গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করা এই মন্তব্যকে কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার প্রাক্তন প্রেস কর্মকর্তা মুশফিক ফজল আনসারী ‘স্বাধীন গণমাধ্যমকে’ ‘সরকারের হাতিয়ার’ হিসেবে বর্ণণা করায় তার তীব্র সমালোচনা করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদরা।
তারা আরও বলেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের আগে ‘বিরোধীদের পক্ষে’ কাজ করানোর জন্য মিডিয়া আউটলেট মালিকদের ও সাংবাদিকদের আরও বেশি ভয় দেখানো।
সব ধরনের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড- একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘সাংবাদিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার এবং গণমাধ্যমের উপর অদৃশ্য সেন্সরশিপ আরোপ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যা গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রধান স্তম্ভ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগের বক্তব্য ও পরের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যম অন্তর্ভুক্ত 'সঠিক সিদ্ধান্ত' নয়: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে ‘গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া বা ভয় দেখানোর জন্য দায়ী’ অর্থাৎ, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা ভিসা বিধিনিষেধের মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত হাসের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও তারা আগে বলেছিল গণমাধ্যমের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে, এখন আমরা তাদের আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ইউ-টার্ন দেখতে পাচ্ছি। এটি বাস্তবায়িত হলে, স্বাধীন সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটি।’
কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ সাংবাদিক বলেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এই বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করে। এখন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হাসের ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব দেখা বাকি আছে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তবিউর রহমান প্রধান প্রশ্ন রেখেছেন, ‘একইসঙ্গে আপনারা কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্যদের পরামর্শ দিতে পারেন এবং গণমাধ্যমকে ভিসা বিধিনিষেধের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন?’
অন্যদিকে, মানবাকারকর্মী সুলতানা কামাল একজন টিভি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, ‘একটি দেশের ভিসা বাতিল করার অধিকার আছে। তবে তারা ভিসা দেবে না- এমন একাধিক পূর্ব ঘোষণার পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘোষণা জারি করার এই ধরনের পদক্ষেপ কি সত্যিই কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে সমর্থন করে?’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঘোষণার পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ও নেতা কিছু মিডিয়া আউটলেটের সমালোচনা করেন এবং দলগুলোর সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্যও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নামও উল্লেখ করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ও তাদের সমর্থকদের শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে তারা ভিসা বিধিনিষেধে গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিএনপি বর্জন করেছে এমন বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের নাম উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়াও, জামায়াতে ইসলামের একটি এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট ‘বাঁশেরকেল্লা’তে পোস্ট করা একটি টুইটে বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু।’
এই বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টটি সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ চালানোর জন্য সংবাদ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: কোনো নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনাকে থামাতে পারবে না: কাদের
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেননি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র
জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ নেতাদের আবেগ ও উদ্ভাবন অমূল্য সম্পদ: রাষ্ট্রদূত হাস
জলবায়ু ফ্রন্টে তরুণ নেতাদের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বিশ্বের সামনে উদ্ভূত জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
তিনি বলেন, ‘সবাইকে অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি আপনাদের নিজ নিজ দেশে কমিউনিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনাদের উত্সর্গের জন্য সমস্ত জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের প্রশংসা করি।’
২৬-২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস, একটি যুব-নেতৃত্বাধীন সামাজিক উদ্যোগ জেনল্যাবের সঙ্গে সহযোগিতায়, ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়ন্স নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) বাংলাদেশ কনক্লেইভের আয়োজন করে।
লক্ষ্য ছিল বায়ুর মান উন্নত করায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ৫০ জন জলবায়ু উদ্যমী তরুণ এই ইভেন্টে যোগ দেয়।
রাষ্ট্রদূত হাস সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি তরুণ প্রতিনিধিদের পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সীমানা পেরিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই তরুণ নেতারা তাদের সম্প্রদায়কে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে ভাগ করা সমৃদ্ধির জন্য তাদের একে অপরের প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আপনাদের আবেগ, উত্সর্গ ও উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি মোকাবিলার অমূল্য সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক কাজ চালিয়ে যান এবং জেনে রাখুন যে বিশ্ব আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখছে এবং সমর্থন করছে। একইসঙ্গে আমরা সকলের জন্য আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’
ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নস নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) হলো ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে আঞ্চলিক একটি উদ্যোগ। যার লক্ষ্য এই অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও ক্ষমতায়ন করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের অনেক নামকরা কোম্পানি: রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি এবং সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
সৌদি আরবের ৯৩তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘অনেক বিখ্যাত সৌদি কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান রাষ্ট্রদূত মুহিতের
২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সৌদি দূতাবাস দিবসটি পালন করবে। তবে সৌদি আরবের জাতীয় দিবস পালিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য বাড়ি, স্কুল, মসজিদ, এতিমখানা ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি হাসপাতাল, সেতু এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মতো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর এবং সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সৌদি মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের পর সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্ক গভীর ও অসামান্য।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে দুঃসময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা করে থাকে সৌদি আরব। বাংলাদেশ ইসলাম ও সৌদি আরবকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসে, যা সৌদি আরবকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।’
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বিশ্বের বৃহত্তম শ্রমবাজার হিসেবে স্বীকৃত সৌদি আরবে লাখ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘এই দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সৌদি আরব একটি দুর্দান্ত অবদান রেখেছে, কারণ অভিবাসী শ্রমিকরা ক্রমাগত তাদের প্রিয় পরিবারের সদস্যদের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যখনই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সৌদি আরব সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করতে পারে ঢাকা-ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: কূটনীতিকদের সঙ্গে রাখাইন সফরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমাতে হবে বাংলাদেশের: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, বাংলাদেশকে রিকন্ডিশন্ড সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ি আমদানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আরও মনোযোগ দিতে হবে, যা দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানা পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমানো। দেশীয়ভাবে তৈরি গাড়ি পরিবেশের জন্যও ভালো হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশ ইতোমধ্যে পুরোনো গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাংলাদেশও একই ধরনের নীতি গ্রহণ করতে পারে।
ফেয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব, ফেয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুতাসিম দাইয়ান, ডেইলি সান সম্পাদক ও ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস এবং ডিকাব সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েসসহ আরও অনেকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্ল্যান্ট পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যদি উৎপাদনের ক্ষেত্র প্রসারিত করে, তাহলে দেশে মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
তিনি দেশে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য উন্নত কর ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশের আরও উন্নতির ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তার একটি অনন্য উদাহরণ এই গাড়ি উৎপাদন কারখানা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে সামনের দীর্ঘ যাত্রায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের একসঙ্গে অনেক কাজ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুব বলেন, তাদের তরুণ মেধাবীদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে এবং দেশে আরও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতির সঙ্গে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
তিনি সরকারের কাছ থেকে যে সহায়তা পাচ্ছেন তা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা টাকা চাই না, সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চাই।’
মাহবুব বলেন, তারা পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টিসহ বাংলাদেশে উৎপাদিত হুন্দাই গাড়ির জন্য সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারা দেশে আমাদের পরিষেবা কেন্দ্রগুলো সম্প্রসারিত করছি।’
এই বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানার উদ্বোধনের কথা স্মরণ করে ডিকাব প্রেসিডেন্ট লোটাস বলেন, কারখানার উদ্বোধন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রূপকল্প ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ।
বর্তমানে প্ল্যান্টে বেশ কয়েকটি মডেল তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো হলো- ক্রেটা: ১৪৯৭সিসি ৫ সিটার ও ক্রেটা গ্র্যান্ড: ১৪৯৩সিসি, ৭ সিটার।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্ল্যান্টের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি বছর সাত হাজার।
তারা বলেছে, যদিও কোম্পানিটির ৩৫০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। বর্তমানে দেশীয় বাজারের দিকে মনোনিবেশ করছে। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তৈরি গাড়ি রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। শোরুমের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হবে এবং বর্তমান শোরুমের সংখ্যা ছয়টি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু ব্যবহারের হুমকি কিমের
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করছে, তারা কখনোই রাখাইন যায়নি: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন করার জন্য যৌথ বৈশ্বিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করে আসছেন, তারা কখনোই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যায়নি।
তিনি বলেন, ‘এটি বেশ অদ্ভুত। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য জীবনযাপনের জন্য কক্সবাজারের পরিস্থিতি উপযুক্ত কি না তারা এ প্রশ্নের উত্তর দেননি। এ বিষয়ে তাদের নিজেদেরই নিজেদের প্রশ্ন করা দরকার।’
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে এসেছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এর ষষ্ঠ বার্ষিকী ছিল।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে জর্জরিত করছে। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ এসব বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কক্সবাজার ক্যাম্পে হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ, অপহরণ, মাদক ও মানব পাচার চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বহিরাগত সহায়তাও কমছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য খাদ্য রেশন প্রতি মাসে ১২ থেকে কমিয়ে ৮ মার্কিন ডলার করা হয়েছে, যা টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়।’
চীনের রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেছেন, সব পক্ষই ক্রমবর্ধমানভাবে উপলব্ধি করেছে যে প্রত্যাবাসনই একমাত্র উপায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বারবার প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তার দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘যদিও রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিষয়, তবে উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিবেশী এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন দুই পক্ষকে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ নিষ্পত্তি করার বিষয়ে মত পোষণ করে। যাতে করে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়।’
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক ঋণ, জিডিআই ও সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন তহবিলের উপযুক্ত ব্যবহার করবে বাংলাদেশ: প্রত্যাশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে চীন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তিন ধাপের প্রস্তাব পেশ করেছে। এগুলো হলো-সহিংসতা বন্ধ করা, প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে চীন তার সামর্থ্যের মধ্যে অনেক রকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সুবিধার শর্ত উন্নীত করতে সাহায্য করেছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার ব্যবস্থা করেছি এবং দুই পক্ষকে উৎসাহিত ও সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত: সুইস রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে।
এসময় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
রবিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেঙ্গলির সঙ্গে বৈঠকে মোমেন এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় রেঙ্গলিকে অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন সুইজারল্যান্ডকে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং বাংলাদেশকে ‘প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে’ রূপান্তরের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা স্মরণ করেন।
অন্যান্য অনেক প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগের আয় বেশি বলে উল্লেখ করে মোমেন বাংলাদেশে আরও সুইস বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং কৃষি-খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মার্কিন সরকার পদত্যাগ করবে কি না সফররত কংগ্রেসম্যানদের মোমেনের প্রশ্ন
বাংলাদেশকে ‘সুযোগ ও প্রাণবন্ত অর্থনীতির দেশ’ উল্লেখ করে তিনি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধি বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
সুইস রাষ্ট্রদূত ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুইজারল্যান্ড সফরের কথা স্মরণ করেন।
গত বছর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে আরও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং বাংলাদেশে সুইস বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ এবং বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে সুইস রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনে তার সরকারের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তার জন্য সুইস সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে আরও সুইস সহায়তার প্রত্যাশা করেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য ওআইসি-ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদির উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ
সৌদি আরবে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দ্রুত দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলার বিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে সুযোগ দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদিস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
তিনি বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, যেসব বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পলায়নের মামলা (হুরুব) রয়েছে। এ ছাড়া যাদের আকামা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগ কর্মহীন বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন যা বিদেশে তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। এসব অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রদূত সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে কারারুদ্ধ রয়েছে।
যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই কারারুদ্ধ এসব অভিবাসীর পরিবারগুলো বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দি নন এসব বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, উদার ও শ্রমবান্ধব শ্রমিক নীতি হওয়ার পর বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এজন্য আমরা সৌদি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি।
এ সময় অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যা প্রতি বছরের মতো এ বছর আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমাদের শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।
সৌদি উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী ও তারা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন ও তা আশু সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে জানান।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল অ্যাটাচে নিয়োগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
যাতে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে আসতে পারে।
এছাড়া দক্ষ ও প্রফেশনাল অভিবাসী যারা সৌদি আরবে আসতে ইচ্ছুক তাদের সনদ দ্রুততার সঙ্গে সত্যায়িত করার জন্য সৌদি দূতাবাসে একজন কালচারাল অ্যাটাচে নিয়োগের অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে ১১৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
সৌদি আরবে ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৯ বাংলাদেশি নিহত
আ.লীগের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার পর দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এ বৈঠকে বসেন তিনি।
পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এছাড়াও দলটির নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ কর্নেল ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পৌঁছান ১১টা ১০ মিনিটের দিকে। এ ছাড়াও তার সঙ্গে আছেন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নামে টুইটার অ্যাকাউন্ট 'ভুয়া': মার্কিন দূতাবাস