মামলা
মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা
বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ের সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতিকালে দলের নেতারা বলছেন, আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যে সরকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু বিচারাধীন মামলা পুনরুজ্জীবিত করছে।
কিছু বিএনপি নেতা ও আইনজীবী বলছেন, সরকার বিরোধী দলকে একটি বার্তা দিতে কিছু দলের নেতাদের কারাগারে পাঠাতে পারে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
কিন্তু সরকার অতীতে বারবার বিএনপির এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা আদালতকে প্রভাবিত করে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ থাকলেও সরকার সামগ্রিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সতর্ক সুসংঘবদ্ধ বাধা সত্ত্বেও সরকার আমাদের সমাবেশে জনগণের অংশগ্রহণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই, সরকার আমাদের দমন করতে তাদের দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে আরও জোরদার করতে মরিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমাদের সাম্প্রতিক সফল সমাবেশ থেকে এটা স্পষ্ট যে এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল কাজ করবে না।’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতের বিচার চালিয়ে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০০১-২০০৬ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে ২০১৪ সালে মামলাটি করে দুদক।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ আরও নয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মামলার বিচার ঢাকাসহ অন্যত্র নিম্ন আদালতে চলছে।
আরও পড়ুন: খুলনার সমাবেশে খারাপ কিছু হলে সরকার দায়ী থাকবে: ফখরুল
বিএনপি বলছে, বর্তমানে প্রায় ৩৬ লাখ বিএনপি নেতাকর্মী এক লাখের বেশি মামলার মুখোমুখি। তারা বলছেন, এই অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার প্রায় ১৪ বছর ধরে হত্যা, গুম, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাসহ বিভিন্ন দমনমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিয়ে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে এবং আমাদের কর্মীদের নিরাশ করার জন্য বারবার আমাদের আক্রমণ করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পাল্টে যাবে।’
মোশাররফ সতর্ক করে বলেন, ‘এটা হলে আমাদের নেতারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন জোরদার করতে আরও উৎসাহিত হবেন। এটি সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করবে এবং দেশে ও বিদেশে শাসনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে সাহায্য করবে যা এর ক্ষমতাচ্যুতকে ত্বরান্বিত করবে।’
এই নেতা বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা এখন বাঁচা-মরার আন্দোলনে থাকায় জেলে যেতে ভয় পান না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপার্সন চার বছর আগে জেলে গেলেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। তা সত্ত্বেও আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে তারা যখন বিএনপির ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন দলের আরও কয়েকজন নেতাকে কারাগারে রেখে তারা দলকে দুর্বল করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের কাঠামো দুর্বল নয় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালানোর জন্য দলটির অনেক ‘বিকল্প নেতা’ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই সরকারের কৌশল হিসেবে কিছু নেতা বা কর্মীদের জেল দিয়ে কোনো লাভ হবে না।’
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা
মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
রবিবার(২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে মাদক রাখার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
বিকালে ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী শাহ মো. আবু জাফর এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ফরিদপুর শহরের উত্তর আলীপুর মহল্লার পান্নু বিশ্বাস(৫৪) ও সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের রিপন গাজী(৩৮)।
রায় ঘোষণার সময় পান্নু বিশ্বাস আদালতে হাজির থাকলেও অপর আসামি রিপন গাজী পলাতক রয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৭ মে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় র্যাবের ডিএডি মো. ফিলিপ্স আলি বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ মে সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদরের গঙ্গাবর্দী বেইলি সেতু এলাকায় একটি মোটরসাইকেল থেকে ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া তাদের চালিত একটি ওয়ালটন মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। আসামিরা ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিল সংগ্রহ করে ফরিদপুর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: নারায়ণগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
বিশ্বজিৎ হত্যা মামলা: যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ায় সাত বছরের শিশু তাবাসসুমকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চারজনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রবিবার বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বগুড়ার ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ (২৪), দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে কামাল পাশা (৩৭), ছানোয়ার হোসেনের ছেলে শামিম রেজা (২৪) এবং মৃত সাহেব আলীর ছেলে লাভলু শেখ (২৩)।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মুনিয়াকে ধর্ষণ-হত্যা: আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ
মামলা সূত্রে জানা যায়, ধুনটের নশরতপুর গ্রামের বেলাল হোসেন খোকন ও তার স্ত্রী মরিয়ম ডেইজি ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তাদের মেয়ে মাহী উম্মে তাবাসসুম দাদা আবদুস সবুরের বাড়িতে থেকে স্থানীয় পাঁচথুপি-নশরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর গ্রামের জান্নাতুল ফেরদৌস কবরস্থান চত্বরে দুই দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শিশু তাবাসসুম তার দাদা ও ফুফুর সঙ্গে প্রথম দিনের তাফসির শুনতে গিয়ে রাত ১০টার দিকে মিষ্টি কিনতে মঞ্চের পাশের দোকানে যায়। সেখানে খোকনের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ থাকা কলেজছাত্র বাপ্পী আহমেদ তাফসিরে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছিল। বাপ্পী শিশুটিকে দেখতে পেয়ে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। সে বাদাম কিনে দেয়ার প্রলোভনে তাবাসসুমকে স্থানীয় হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে বাপ্পী তার তিন বন্ধু কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শিশু তাবাসসুম নিস্তেজ হয়ে যায়। এ সময় বাপ্পী তাকে গলাটিপে হত্যা করে। এছাড়া তাকে কোনো প্রাণী কামড়ে হত্যা করেছে এমন প্রমাণ করতে কাটিং প্লাস দিয়ে হাতের একটি আঙুল কেটে দেয়। এরপর লাশটি কাঁধে তুলে মঞ্চের কাছে বাদশা মিয়ার বাঁশঝাঁড়ে ফেলে দেয়।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
পরেরদিন ১৫ ডিসেম্বর নিহত তাবাসসুমের বাবা খোকন অজানা কয়েকজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাপ্পীর সঙ্গে পারিবারিক বিরোধকে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করে। সন্দেহভাজন বাপ্পী ও তার তিন বন্ধুকে পর্যবেক্ষণে রাখে পুলিশ। ২৫ ডিসেম্বর রাতে প্রথমে বাড়ি থেকে শামীম রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তার স্বীকারোক্তিতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে বাপ্পী, রেজা ও লাবলুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে চারজনই শিশু তাবাচ্ছুমকে ধর্ষণ এবং হত্যার কথা স্বীকার করে।
এরপর ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর চারজনকে আসামি করে ধুনট থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাহিদুল হক আদালতে চার্জশীট জমা দেন। পরে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আশিকুর রহমান সুজন জানান, তাবাসসুম হত্যা মামলায় আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে তারা সন্তুষ্ট।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে চাকরির সন্ধানে বের হয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী!
হাটহাজারীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড
খুলনায় হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনায় হত্যা মামলায় জসিম নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের আইনজীবী সাব্বির আহমেদ। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিল।
বাদীর দায়ের করা মামলা থেকে জানা গেছে, নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন হাজী ইসমাঈল লিংক রোড ইসলাম কমিশনার মোড়ের বাসিন্দা হেলাল উদ্দীনের ছেলে। তিনি শেরে বাংলা রোড বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের সাহায্যকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হেলালের বাড়ির নিচতলায় জনৈক রবিউল ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস ও ঘরের সঙ্গে মুদি দোকানের ব্যবসা পরিচালনা করত।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে নির্বাচনী সহিংসতার মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
আসামি জসিম পেশায় একজন রিকশা চালক ছিলেন। তিনি রবিউলের প্রতিবেশি ছিলেন। ঘটনার ছয়দিন আগে রবিউলের দোকান থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। জসিম মোবাইল ফোন উদ্ধার করা বাবদ মুদি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা নেয়। কিন্তু মোবাইল ফোন উদ্ধার করে না দিয়ে জসিম টালবাহানা শুরু করে দেয়।
এ নিয়ে ওই এলাকায় একটি শালিসীর আয়োজন করে মুদি ব্যবসায়ী রবিউল। ২০১৫ সালের ১৯ মে শালিসীর পর জাহাঙ্গীর জসিমকে মোবাইল ফোন চুরির জন্য সন্দেহ করে এবং তাকে ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য বলে।
এ ঘটনায় জসিম বাড়ির মালিক জাহাঙ্গীরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। ওই দিন বিকাল ৫টার দিকে জাহাঙ্গীর মুদি দোকান ব্যবসায়ীর বেঞ্চে বসে বাড়ির কাজ দেখাশুনা করছিলেন। আসামি জসিম পেছন থেকে জাহঙ্গীরের গলায় ও ঘাড়ে সজরে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এসময় আসামিকে ধাওয়া দিলে তিনি পালিয়ে যায়।
পরে জাহাঙ্গীরকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাতে জাহাঙ্গীরের বড় ভাই বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানা একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা থানার এসআই জি এম নজরুল ইসলাম ঘাতক জসিমকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: নারায়ণগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
দুদকের মামলায় সম্রাটের চার্জ শুনানি পিছিয়ে ৮ নভেম্বর
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের চার্জ শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ৮ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ আদালত- ৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে মামলাটি চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ধার্য ছিল।
কিন্তু আসামিপক্ষের আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ পারভীন হিরা চার্জ শুনানি পেছানোর সময় আবেদন করে। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে চার্জ শুনানির এ তারিখ ধার্য করেন।
এদিন সম্রাট আদালতে হাজিরা প্রদান করেন। গত ২২ আগস্ট সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: সম্রাটের জামিন বাড়লো ২০ অক্টোবর পর্যন্ত
দুদকের আবেদনে সম্রাটের জামিন কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে দুদকের আবেদন
চট্টগ্রামে ৪ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে চারটি ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার মহানগরীর সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি সাহেবপাড়া বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. জাবেদ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকার মো. বাবুল মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: সিলেটে হোটেলে দুই তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি সাহেবপাড়া বাজার এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মো. জাবেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে সাক্ষীদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তার অপকর্মের কথা স্বীকার করে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার জাবেদের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় তিনটি এবং মীরসরাই থানায় একটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তার আসামিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তার করা হয়েছে বলেও জানায় র্যাব।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ডাকাত দলের ৭ সদস্য গ্রেপ্তারের অভিযোগ
জঙ্গিবাদে জড়ানোর জন্য বাড়ি ছাড়া পাঁচজনকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার: র্যাব
সিরাজগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কড্ডার মোড় এলাকায় পুলিশের গাড়িতে ছিনতাইয়ের দু’দিন পর মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়ার সোনাতলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল খালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে সোনাতলা থানার একদল পুলিশ ঢাকা থেকে একটি মামলার ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে মাইক্রোবাসে করে বগুড়া যাচ্ছিলেন। এ সময় সাদা রংয়ের মাইক্রেবাসাটি উল্লেখিত এলাকায় পৌঁছলে ছিনতাইকারীরা এলোপাথারি ঢিল ছুঁড়ে ওই গাড়ির গতিরোধ করে এবং এতে মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙ্গে যাওয়ায় চালক রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে দেয়। এ সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী মাইক্রোবাসে থাকা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে একটি ওয়াকিটকি, নগদ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন ও র্স্বনের গহনা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই কিশোর কায়েসকে হত্যা!
ওসি জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়ার সোনাতলা থানার এসআই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় মামলা করেন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডলের নির্দেশনায় পুলিশের বিশেষ কয়েকটি টিমের অভিযান চলছে।
খুব শিগগিরই লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই: ২ মাস পর প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
বাগেরহাটে ‘ছিনতাইকারী’ চক্রের ৪ সদস্য আটক
খালেদা জিয়া ও তারেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার: শিল্পমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে মামলা করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই মামলায় তাদের সাজা হয়েছে। এছাড়া মামলা তো আওয়ামী লীগ সরকার করেনি, আওয়ামী লীগ যদি মামলা দিতো, তাহলে তারা বলতে পারতো এটা প্রতিহিংসামূলক।
সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির ইছানীল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক-শিক্ষার্থী সমন্বয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে অবদান রাখছে প্রবাসীরা: শিল্পমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। পদ্মাসেতু ও পায়রা বন্দর করেছে শেখ হাসিনা। পায়রা তাপ বিদ্যুতকেন্দ্র করা হয়েছে। এর সুবিধা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ পাবে।
তাই সারা জীবন এ অঞ্চলের মানুষ শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। আগামী নির্বাচনে এর প্রতিদান স্বরূপ নৌকায় ভোট দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে।
ইছানীল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. কামাল শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, পৌর মেয়র মো. লিয়াকত আলী তালুকদার ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান।
আরও পড়ুন বিএসটিআইয়ের বৈশ্বিক মানকে শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করছে: শিল্পমন্ত্রী
দেশের কোন চিনিকলই স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়নি: শিল্পমন্ত্রী:
ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ সদস্য আদালতে হাজির
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে করা মামলায় গ্রেপ্তারের একদিন পর শনিবার বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ জন পদাধিকারী ও কর্মীকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ জানান, ‘শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মো. নাজিম উদ্দিন ছাত্র অধিকার পরিষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত ছাত্র অধিকার পরিষদ সদস্যদের ওপর দ্বিতীয়বার হামলা চালায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
পরবর্তী অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের নিজেদের হেফাজতে নেয়।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১২
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ স্মরণে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্র অধিকার পরিষদের সমাবেশে ছাত্রলীগের সদস্যরা হামলা চালালে কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়।
বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্যরা নির্দয়ভাবে পেটালে ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা মামলার রায়ে ন্যায়বিচার করা হয়েছে: আইনমন্ত্রী
আবরার হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামির জেল আপিল গ্রহণ
রহিমা বেগম ‘অপহরণ’ মামলায় ৪ জনের জামিন
খুলনায় রহিমা বেগম ‘অপহরণ’ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে চারজন জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা বেগম শুনানি শেষে তদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কে এম ইকবাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, মো. জুয়েল ও রফিকুল ইসলাম পলাশ। তবে এ মামলার আরও দুই আসামি হেলাল শরীফ ও রহিমা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী বেলাল ঘটক বর্তমানে কারাগারে আছেন।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বাসা থেকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রহিমা বেগম। এরপর আর বাসায় ফেরেননি তিনি। খোঁজ নিতে গিয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত জুতা, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান মেলেনি।
আরও পড়ুন: রহিমা বেগমের নিখোঁজ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয়: পিবিআই
এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন তার ছোট মেয়ে আদুরি আক্তার।
এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। সে মামলা থেকেই জামিন পেলেন চারজন।
নিখোঁজের ২৯ দিন পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরও পড়ুন: খুলনার রহিমাকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর
পিবিআইকে যা বললেন রহিমা