পরিবহন
সিলেট-জকিগঞ্জ রুটের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
জকিগঞ্জ সড়কে সরকারি বিআরটিসি বাস চলাচলের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৯মার্চ) থেকে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার (৮ মার্চ) বিআরটিসি বাস চলাচল নিয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভার পর পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ জানান, জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনায় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিলেট-জকিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস আপ-ডাউন পাঁচটি ট্রিপ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিভাগের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার, যান চলাচল শুরু
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ রুটে বিআরটিসির এই চারটি বাস (নাম্বার ঢাকা মেট্রো-ব-১৫- ৪৫৭৯, ১৫-৪৭৮০, ১৫-৫৪২৯ ও ১৫-৫৪৩১) চলাচল করবে।
যদি কোন গাড়ি নষ্ট হয় তা হলে ওই বাসের পরিবর্তে ঢাকা-মেট্রো ব-১৫-৪৬০৭ গাড়িটি চলাচল করতে পারবে। সভায় দুই পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে এসব সিদ্ধান্ত হওয়ায় সিলেট-জকিগঞ্জ রুটে মালিক-শ্রমিক আহুত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে গত ৫ মার্চ সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বিআরটিসি বাস চলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দেয় জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
বিআরটিসি বাস বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের পূর্ববর্তী আশ্বাস ৮ মার্চের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে ৯মার্চ থেকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের আগাম ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
রবিববার (৫ মার্চ) জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে মালিক-শ্রমিকদের জরুরি সভা থেকে নেতারা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তখন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা বলেন, সিলেট-জকিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচলের শুরু থেকেই বাসগুলো আসা-যাওয়া চারটি ট্রিপের পরিবর্তে সাত থেকে আটটি ট্রিপ দিতে শুরু করে। এতে যাত্রী সংকটে ক্ষতির মুখে পড়ে বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
এ অবস্থায় জেলা মালিক ও শ্রমিক নেতারা গত ১০ জানুয়ারি ও ২৩ জানুয়ারি বিভাগীয় কমিশনার বরাবর দুটি স্মারকলিপি দেন। পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় কয়েকদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সমাধান দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সুরাহা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে ৫ মার্চ রবিবার জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে জেলা মালিক-শ্রমিকদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, ৮ মার্চের মধ্যে বিআরটিসি বাস চলাচল নিয়ে ষে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসন না করা হলে ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট-জকিগঞ্জ রুটে সব ধরনের বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
এরআগে গত ৩০ জানুয়ারি একই দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক সমিতি ও জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
তবে শুরুতেই ভেস্তে যায় সেই ধর্মঘট।
এর মাস পেরুতেই একই দাবিতে ফের সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিলেন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা।
এদিকে সিলেট-জকিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধের দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা একাট্টা হলেও বিআরটিসি বাস চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, যাত্রীসেবা না বাড়িয়ে দীর্ঘদিন থেকে ওই রুটের যাত্রীদের জিম্মি করে আসছিল পরিবহন ব্যবসায়ীরা।
বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু হওয়ায় যাত্রীরা সেই জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫ ঘণ্টা পর সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি: ওবায়দুল কাদের
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনেক রাস্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এজন্য সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসিদের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনদিনব্যাপী জেলাপ্রশাসক সম্মেলনের আজ ছিল দ্বিতীয়দিন।
ওবায়দুর কাদের বলেন, আমি ডিসিদের বলেছি, সরকারের যেসব উন্নয়নমূলক অবকাঠামো হয়েছে। যেমন–পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, শতসেতু, শতরাস্তা, ওভারপাস, ফ্লাইওভার, এগুলো দৃশ্যমান। এগুলো নিয়ে সময় নষ্ট করতে চাই না। এগুলো সবাই দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে আরও বেশি করে সবার জানান সুযোগ মিলবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তাদের বলেছি, আমি এখন আর নতুন কোনো রাস্তা করতে চাই না। আগামী নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো রাস্তা হবে না। যে রাস্তাগুলো আছে, সেগুলো মেরামত ও সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’
আরও পড়ুন: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিজেরাই সমাধান করবো: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আরেকটি বিষয় বলেছি, মোটরসাইকেলের মতো ছোটো ছোটো যানগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, ৯৫ শতাংশ। ঢাকায় একটি মোটরসাইকেলে দুজন থাকলে তাদের মাথায় হেলমেট থাকে, কিন্তু মফস্বলে তিনজন থাকলেও কারও মাথায় হেলমেট থাকে না।
তিনি জানান, আর আমি সচিবকে একটা কথা বলেছি, গরিব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আছে। ওদের জীবিকার চাকা তো আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। কাজেই এগুলোকে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা প্রণয়ন করতে হবে।
কাদের বলেন, ‘ডিসিদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব গাড়িগুলো শহরে ও মহাসড়কে যে যানজটের সৃষ্টি করে, দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেখা গেল, একটি ইজিবাইক দুর্ঘটনা ঘটলে ১০-১২ জন মারা যান। সেটাও বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার হার কমলেও এতে মৃত্যুর হার কমছে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমার কথা হচ্ছে, আমি পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এতে আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। অনেক রান্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না হলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এ ক্ষেত্রে ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।
নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা বলতে সবকিছুকেই বোঝায়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি না: কাদের
নেতার দরকার নেই, চৌকস কর্মী চাই: ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের
নভোএয়ার এর এক দশক পূর্তি
যাত্রী পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় দেশের সেরা দশটি ট্রাভেল এজেন্সিকে নভোএয়ার পুরস্কার প্রদান করেছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নভোএয়ার এর দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্কার প্রাপ্ত এজেন্সিগুলো হলো- শেয়ারট্রিপ লিমিটেড, বিফ্রেশ লিমিটেড, গোজায়ান লিমিটেড, এইচআইএস ট্রাভেল লিমিটেড, ট্রিপলাভার লিমিটেড, সায়মন ওভারসিজ লিমিটেড, ফ্লাইট এক্সপার্ট, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশন, ট্রাভেল চ্যানেল ও ট্রাইওটেল ট্রাভেল লিমিটেড।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব টিপু মুনশি বলেন, নভোএয়ার সময়ানুযায়ী ভ্রমণ নিশ্চিত করে দেশের ব্যাবসা-বাণিজ্যের প্রসারে একটি বিশেষ অবদান রাখছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে বেশি ফ্লাইট পরিচালনায় ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রসার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমি আশা করি, নভোএয়ার সুনাম ধরে রেখে অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ সংযোজনের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করে একটি বিশ্ব মানের এয়ারলাইন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, নভোএয়ার শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। যাত্রীর নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নভোএয়ার কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সচেষ্ট।
আরও পড়ুন: নভোএয়ারের যশোর-কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট চালু
নভোএয়ার এর চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান বলেন, একটি বিশ্বমানের সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। যাত্রী সেবার মানের ক্ষেত্রে কখনোই আপোষ করেনি। প্রতিনিয়তই চেষ্টা করছি নতুন নতুন সেবা সংযোজনের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধি করতে।
নভোএয়ার এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, সময়ানুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনা ও নিরাপদ ভ্রমন নিশ্চিত করাই আমাদের ব্যবসায়িক দর্শনের সর্বোচ্চ প্রাধিকার। নিরাপত্তা ও সেবা, এই দুই মুল মন্ত্রকে আমরা সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। নানাবিধ চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকুলতা জয় করে নভোএয়ার সবার কাছে বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য এবং আস্থার এয়ারলাইন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
নভোএয়ার এর পরিচালক ও চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার আরশাদ জামাল বলেন, আমরা সম্মানিত যাত্রীদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্য সম্প্রসারণ, বহরে আরও উড়োজাহাজ সংযোজন এর মাধ্যমে উন্নত যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিক বৃন্দ ও নভোএয়ার এর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট,যশোর ,সৈয়দপুর, রাজশাহী এবং আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতায় ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এছাড়া যশোর থেকে কক্সবাজার রুটে ও রাজশাহী থেকে কক্সবাজার রুটে সরাসরি যাত্রী পরিবহন করছে। নভোএয়ার ১০ বছরে ১ লাখেরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে সাড়ে ৫৫ লাখেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করেছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার রুটে নভোএয়ারের ফ্লাইট চালু হচ্ছে বৃহস্পতিবার
নভোএয়ারের বিশেষ ফ্লাইটে গোহাটি গেল ১৬ ভারতীয়
মেট্রোরেলের ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানোর দাবি আইপিডি’র
মেট্রোরেলকে গণপরিবহন হিসেবে কার্যকর করতে এবং পর্যাপ্ত যাত্রী নিশ্চিত করতে ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট অব প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। এছাড়া মেট্রোস্টেশনের সঙ্গে বহু মাধ্যমভিত্তিক পরিবহন গড়ে তোলার ব্যাপারে মত দিয়েছেন তারা।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) আইপিডি আয়োজিত ‘রাজধানীর টেকসই পরিকল্পনায় মেট্রোরেল: প্রেক্ষিত ও করণীয়' শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ দাবি জানিয়ে আলোচকরা মতামত পেশ করেন।
আলোচকরা বলেন, ঢাকার যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থায় মেট্রোরেল এর সংযোজন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যদি সাধারণ গণমানুষের জন্য এটার ভাড়া সাশ্রয়ী এবং মেট্রো স্টেশনে আসা যাওয়ার পথকে সুগম করা হয়। মধ্যবিত্তরাই এই গণপরিবহন বেশি ব্যবহার করবে। ফলে মেট্রোরেলের পর্যাপ্ত যাত্রীসংখ্যা নিশ্চিত করতে মেট্রোরেলের ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানো দরকার এবং মেট্রোলাইনকে কেন্দ্র করে বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, মেট্রো স্টেশনগুলোর আশেপাশে পথচারী চলাচল, বাস-প্যারা টানজিট-কমিউনিটি ভিত্তিক সার্ভিস, সিএনজি-রিকশা-ব্যক্তিগত গাড়ি প্রভৃতি বাহনগুলোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কিভাবে মেট্রো স্টেশনে আসবে বা স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাবে সে ব্যাপারে কার্যকর পরিকল্পনার মাধ্যমে মেট্রোরেলের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
‘আইপিডি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পর্যালোচনা’ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ বছর মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হলেও আগামী বছর উত্তরা থেকে আগারগাঁও হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি ছয় লাইনের পুরোটা চালু হয়ে গেলে বিপুলসংখ্যক যাত্রীকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে দ্রুত পরিবহন করা যাবে, যা নগরের পরিবহন ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি মেট্রোরেলকে সাধারণ জনগণের পরিবহন হিসেবে গড়ে তুলতে নিম্ন মধ্যবিত্ত, ন্যূনতম আয় শ্রেণি ও ছাত্রদের জন্য ৫০ ভাগ ভাড়ার ব্যবস্থা করা এবং পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সীদের জন্য বিনা ভাড়ায় মেট্রো পরিবহনের ব্যবস্থা করবার দাবি করা হয় আইপিডি’র পক্ষ থেকে।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে আইপিডি’র পক্ষ থেকে ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড.আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পাশাপাশি মেট্রোরেল ভূমি ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে।
মেট্রোরেলের কারণে স্টেশনের আশেপাশের এলাকার ভূমি ব্যবহারের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে, যার আলামত ইতোমধ্যেই উত্তরা থেকে আগারগাঁও এলাকায় চোখে পড়ছে। মেট্রোরেলের কারণে এই এলাকার ভূমির মূল্য বেড়ে গেছে এবং নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে। বৈশ্বিকভাবেই এই ধরনের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় মেট্রোরেল হওয়ার আগে যে ধরনের এবং যে আয়শ্রেণির লোকেরা এই সকল এলাকায় ইতোপূর্বে বসবাস করত, তারা নতুন ও তুলনামূলক উঁচু আয় শ্রেণির মানুষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়, নগর পরিকল্পনার ভাষায় যাকে বলে হয় ‘জেনট্রিফিকেশন’ বা বসবাসকারী জনসংখ্যার শ্রেণি পরিবর্তন। ফলে নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সঠিক নীতি কৌশল প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও যথাযথ উন্নয়ন নজরাদারি প্রয়োজন, যেন এই জেনিট্রিফিকেশন তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং মেট্রোরেলের সুফল সকল আয়-শ্রেণির মানুষ পেতে পারে ও সার্বিক জনকল্যাণ নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি ‘বেটারমেন্ট ফি বা ভূমির উন্নয়ন ফি’ আরোপের মাধ্যমে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় পুনরুদ্ধার, স্টেশন প্লাজা নির্মাণের মাধ্যমে মেট্রো স্টেশনকে কার্যকর করা, মেট্রো করিডোরের দুই পাশে ‘ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ তৈরি করা, মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটার এর মধ্যে টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক ‘ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ তৈরির প্রস্তাব করা হয় আইপিডি’র পক্ষ থেকে।
পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, উপদেষ্টা, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) ও অধ্যাপক, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বলেন, মেট্রোরেল ঢাকাবাসীকে সুশৃংখল গণপরিবহনের নতুন স্বাদ এনে দিবে। মেট্রোরেলের আশেপাশের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ছোট ছোট প্লট একত্রীকরণ বা ল্যান্ডকনসোলিডেশন করবার উদ্যোগ নেয়া দরকার।
মেট্রোরেল চালু হলে যত্রতত্র পোস্টার লাগানো বন্ধ করা, স্টেশন অপরিচ্ছন্ন করা এবং যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য মেট্রোব্যবহারকারীদের অনুরোধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: টিকিট কাটা থেকে শুরু করে আসনব্যবস্থা: ঢাকা মেট্রোরেলে প্রথম ভ্রমণের আগে যা জানা দরকার
রাজউক এর নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার শহরের অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে মেট্রো ব্যবস্থা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। তবে মেট্রোরেলকে কার্যকর করতে মেট্রোর পাশাপাশি সমন্বিত উপায়ে বাস সার্ভিস চালু করা এবং স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত পদচারী সুবিধা ও গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ করতে ঢাকার সঙ্গে কাছাকাছি দূরত্বের আঞ্চলিক শহরগুলোর দ্রুতযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলতে হবে। টিওডি ডেভেলপমেন্ট ও স্টেশন প্লাজার কার্যকর উন্নয়ন ও ব্যবহার নিশ্চিত করেমেট্রোরেলের ব্যয় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম – পরিচালক, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) বলেন, মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটার এর মধ্যে ভবনের আকার-আয়তন-ব্যবহার সুনির্দিষ্টকরণ করা দরকার, যেন এলাকাভিত্তিক জনসংখ্যা, উন্নয়নের মাত্রা এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট এলাকার জন্য টেকসই ও এলাকার ভারবহন ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটার প্রভাব বলয়ে বেসরকারি এপার্টমেন্ট ও ফ্ল্যাট প্রকল্পে বাধ্যতামূলক সাশ্রয়ী আবাসনের মাধ্যমে নিম্নবিত্তদের জন্য আবাসনের সুযোগ বৃদ্ধি করা দরকার।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) প্রকল্পের পরামর্শক ড. আফসানা হক বলেন, মেট্রোরেলের আশেপাশের ভূমি ব্যবহার এবং স্টেশনপ্লাজাকেন্দ্রিক পরিকল্পনার যে উদ্যোগ এখন নেয়া হচ্ছে, তাকয়েক বছর আগেই শুরু করা প্রয়োজন ছিল। এক্ষেত্রে সন্নিহিত নেইবারহুড বা পাড়া-মহল্লার বৈশিষ্ট্য ও ধরন অনুযায়ী স্টেশনগুলোর ডিজাইনে বৈচিত্র্য ও ভিন্নতা আনা দরকার।
উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ মো. রেদওয়ানুর রহমান বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মেট্রোরেল চালাতে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি দেয়া লাগে। বাংলাদেশে মেট্রোরেলে ভর্তুকীর পরিমাণ কমাতে এবং যাত্রীদের জন্য ভাড়া সহনীয় ও সাশ্রয়ী করতে মেট্রো স্টেশনে বিজ্ঞাপন এলাকা ও বাণিজ্যিক এলাকা সুনির্দিষ্ট করে লিজ দেয়াসহ বিভিন্ন আয়বর্ধক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
মেট্রোরেলকে কার্যকর করতে ও ঢাকার টেকসই পরিকল্পনায় আইপিডি’র পক্ষ থেকে নিম্নের আরও কয়েকটি প্রস্তাব দেয়া হয়:
- টিওডি নীতিমালা তৈরি করবার ক্ষেত্রে ‘লো ইমপ্যাক্ট ডেভেলপমেন্ট’ নীতি অনুসরণ করা যেন নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকে ট্রানজিট স্টেশনের আশেপাশে ধরে রাখা যায় এবং জেনট্রিফিকেশন প্রভাব সীমিত মাত্রায় রাখা যায়- মেট্রো করিডোর এ মাঝারি ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করা
- টিওডি ডিজাইন করার সময় সাশ্রয়ী আবাসন ও সামাজিক আবাসনকে অন্তর্ভূক্ত করা
- আরএসটিপি রিভিশন প্রকল্পে ঢাকার জন্য ব্যয় সাশ্রয়ী, অর্থনৈতিক ও পরিকল্পনাগতভাবে উপযোগিতার নির্মোহ বিচার বিশ্লেষণপূর্বক ঢাকার ভবিষ্যত যোগাযোগ পরিকল্পনার পথনকশা তৈরি করা
- মেট্রো রেল নির্মাণে অন্য দেশের তূলনায় আমাদের ব্যয় কেন কয়েকগুণ বেশি হল, সেটা বিশ্লেষণপূর্বক ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ী নীতিমালা গ্রহণ করা
- যোগাযোগ পরিকল্পনায় বিদেশি পরামর্শক নির্ভর প্রকল্প ও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প থেকে সরে এসে দেশীয় বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন
- ঢাকার যোগাযোগ পরিকল্পনার সঙ্গে ভূমি ব্যবহার ও নির্মিত এলাকার ভৌত বৃদ্ধি ও ব্যবহারের ধরনকে সমন্বয় করে সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে আন্তঃসংস্থা সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
- টঙ্গী-এয়ারপোর্ট-বনানী-তেজগাঁও-কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ এই রেল করিডোরে কমিউটার সার্ভিস চালু করে বিশালসংখ্যক যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা
- ঢাকার আশেপাশে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে ব্যয়সাশ্রয়ী লাইট র্যাপিড ট্রানজিট (এলআরটি)কে বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ
- বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ঢাকার পরিবেশগত দূর্যোগপূর্ণ অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নে ‘ধীরে চলো নীতি’ অনুসরণ ও বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সাহস, আন্তরিকতা, দৃঢ় ইচ্ছা মেট্রোরেল বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প নেয়ার আগে পেশাজীবী, অংশীজন ও সাধারণ জনগণের মতামত নেয়া
- মেট্রোরেল নির্মাণসহ যেকোন ধরনের যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ঢাকার পরিবেশগত প্রভাব, জনভোগান্তি, ঢাকার ভারবহন ক্ষমতা, নির্মাণ কাজের জনস্বাস্থ্যগত প্রভাব এবং সার্বিক অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও পরিকল্পনাগত উপযোগিতার নির্মোহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রকল্প নির্ধারণ করা।
আইপিডি অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মো. মিজানুর রহমান, ডেপুটি আরবান প্ল্যানার, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, (ডিটিসিএ); পরিকল্পনাবিদ এটিএম শাহজাহান, সহকারী অধ্যাপক, চটগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; মো. আসাদুজ্জামান, যোগাযোগ ও ভূমি ব্যবহার বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ উত্তরা ও মিরপুর এলাকার নাগরিকরা।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেল: বিশেষায়িত ইউনিট গঠন না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি
বাংলামোটরে সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে আগুন
রাজধানীর বাংলামোটরে সেন্টমার্টিন পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলে পাশের একটি গোডাউনেও ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পৌণে একঘন্টার চেষ্টায় ১০টা ৭ মিনিটে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আগুনে পুড়ে দম্পতির মৃত্যু
পুরান ঢাকার জুতার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে
চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
রাজনৈতিক সমাবেশের নামে পুলিশ কর্তৃক গণহারে বাস রিকুইজিশনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের উত্তর ও দুই পার্বত্য জেলায় ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাস মালিকদের সঙ্গে পুলিশের সমঝোতার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডে ধর্মঘট প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতা মনজুর আলম মঞ্জু।
এর আগে গতকাল রাতে তিন জেলায় সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হলে সকাল থেকে উত্তর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কে যাত্রীরা বেশ দুর্ভোগে পড়েন।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আশা করি এখন থেকে রিকুইজিশনের নামে হয়রানি বন্ধ করা হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামসহ ৩ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে
রাজশাহী বিভাগের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার, যান চলাচল শুরু
রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু বৃহস্পতিবার
রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু বৃহস্পতিবার
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতি।
গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগে পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন বিষয়টি ‘কাকতালীয়’। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের এই কর্মসূচির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বুধবার বিকালে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর এ ঘোষণা দেন।
গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) নাটোরে বিভাগীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভায় ১০ দফা দাবি আদায়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর তারা বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার কাছে তাদের দাবি পূরণে স্বারকলিপি দেয়।
সাফকাত মঞ্জুর বলেন, ‘মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তাদের দাবি পুরণ হয়নি। এ কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধর্মঘটের আওতায় থাকবে সব যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন। তবে এরই মধ্যে যদি দাবির পক্ষে আশ্বাস পাওয়া যায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন।’
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
১০ দফা দাবিগুলো হলো-
১। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করতে হবে।২। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি) চলাচল বন্ধ করতে হবে।৩। জ্বালানি তেল ও যন্ত্রাংশের মূল্য হ্রাস করতে হবে।৪। করোনাকালে গাড়ি চলাচল না করায় সে সময়ে ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে।৫। সব ধরনের সরকারি পাওনাদির (ট্যাক্স-টোকেন, ফিটনেস) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে।
৬। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসন করতে হবে।৭। পরিবহনের যাবতীয় কাগজ হালনাগাদ বা সঠিক থাকার পরও নানাবিধ পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে।৮। উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি চলাচল দ্রুত বন্ধ করতে হবে।৯। মহাসড়কে হাট-বাজার আয়োজন বা পরিচালনা করা যাবে না এবং চলমান হাটবাজার অতি দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে।১০। যাত্রী ওঠানামার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রত্যেক জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ও ট্রাক ওভারলোড বন্ধ করতে হবে।
এদিকে, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বিএনপি নেতাদের দাবি, অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতারা।
বুধবার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশ কমিটির সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘সমাবেশে যেন নেতাকর্মীরা আসতে না পারে সে জন্য রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। ধর্মঘট দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আটকে রাখা যাবে না। যে কোন মূল্যে এই গণসমাবেশ সফল করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাফকাত মঞ্জুর বলেন, ‘গণসমাবেশের সঙ্গে তাদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই। বিষয়টি ‘কাকতালীয়’। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের এই কর্মসূচির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের পরিবহন ধর্মঘট চলছেই, বাড়ছে যাত্রীদের দুর্ভোগ
সারাদেশে ২৬ নভেম্বর থেকে নৌ-যান ধর্মঘট
সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘটের ডাক
সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস মালিক সমিতি। এদিন নগরীর আলিয়া মাদরাসা মাঠে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথমে দুই দফা দাবিতে আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতি। ফলে বিএনপির গণসমাবেশের দিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে না বাস। বাস চলাচল বন্ধের খবরের কয়েক ঘণ্টা পর এবার সড়কে সব ধরনের গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ৪ দফা দাবিতে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বলে পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।
সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছেন। তবে সিলেটে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছেন।
তবে এসব পরিবহন ধর্মঘট সমাবেশে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদকে বিলুপ্ত, সরকারকে পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে বিভিন্ন বিভাগে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল বিভাগে এবং ফরিদপুর জেলায় গণসমাবেশ করেছে দলটি।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেটে দলটির উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠিতব্য এ গণসমাবেশকে সফল করে তুলছে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মাঠে কাজ চালিয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলেও হুট করে এসে বাঁধা দাঁড়িয়েছে ‘পরিবহন ধর্মঘট’।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন ডাকবো।’
আরও পড়ুন: শুক্রবার সকাল থেকে মৌলভীবাজারে ৩৬ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট
দাবিগুলো হচ্ছে-সিলেটের সবকয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদান, সিএনজি চালিত অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ, হাইওয়েতে টমটম ও নসিমন চলাচল বন্ধ করতে হবে।
তবে নতুন সিএনজি চালিত অটোরিকশার নিবন্ধন না দেয়াসহ দুই দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল কবীর পলাশ জানান, দুইদফা দাবিতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন করে সিএনজি চালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন না দেয়া এবং অটোরিকশায় তিন জনের বেশি যাত্রী পরিবহন না করা ও চালকের আসনের পাশে গ্রিল লাগানো।
পলাশ আরও বলেন, বিএনপির সমাবেশের তারিখ ছিল ২০ নভেম্বর। পরবর্তীতে তারা তারিখ পরিবর্তন করেছে ১৯ নভেম্বর। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতি এর আগেই তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাই বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে এই ধর্মঘটের কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত নন বিএনপি নেতারা। ধর্মঘট ডাকা হলে করণীয় ঠিক করে রেখেছেন তারা। নেতাকর্মীদের আগের দিন সিলেট শহরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে।
শহরে থাকা ও খাওয়ারও ব্যবস্থা করেছেন তারা।
ধর্মঘটের ব্যাপরে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্থ করতেই সরকার চাপ দিয়ে ধর্মঘট ডাকিয়েছে। তবে কোন ষড়যন্ত্রই গণজমায়েত বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন বাস ধর্মঘট
ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশ: ৩৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু
সিলেটে ৭ম বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি
‘সরকারি বাহিনীর গ্রেপ্তার ও হয়রানির’ হুমকি উপেক্ষা করে ১৯ নভেম্বর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সিলেট নগরীতে সপ্তম বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় সমাবেশের মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
জেলা বিএনপির নেতারা জানান, আগের অভিজ্ঞতা থেকেই নেতাকর্মীদের কৌশলগত নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্য জেলা থেকে যে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে আসবেন তাদের বাড়িতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
আগের মতো সমাবেশকে সামনে রেখে পরিবহন ধর্মঘটের আশঙ্কায় সদর উপজেলার নেতাকর্মীদের কয়েকদিন আগেই শহরে আসতে বলা হয়েছে। দলের উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও একই নির্দেশনা দেয়া হয়।
১৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেটে আসবেন। এ জন্য ওই দিন থেকে নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেবেন।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ জানান, ১৯ নভেম্বরের আগে জেলায় কোনো ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের খবর তিনি পাননি। এখন পর্যন্ত তিনি পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কোনো খবর পাননি।
আরও্র পড়ুন: সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ একদিন এগিয়ে ১৯ নভেম্বর
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হলে গণমাধ্যমকে আগেই জানানো হবে।’
সিলেট মহানগরের সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারাও সমাবেশ সফল করতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনের নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সিলেটের জনসভা সফল করবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এখানকার বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।
এছাড়া ১০ নভেম্বর সমাবেশ সফল করতে ছয়টি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান আব্দুল কাইয়ুম।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেছেন, সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশের অভিযানের অভিযোগ সত্য নয়।
এসএমপি কমিশনার বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তার করা পুলিশের একটি নিয়মিত কাজ। অহেতুক কাউকে হয়রানি করা পুলিশের উদ্দেশ্য নয়।’
চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
আরও্র পড়ুন: বরিশালে বিএনপির সমাবেশ শুরু
বরিশালের বঙ্গবন্ধু পার্কে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল
কুড়িগ্রামে পরিবহন ধর্মঘটের ২য় দিন: যাত্রীদের চরম ভোগান্তি
রংপুর মোটর মালিক সমিতির ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে শনিবারও কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে কুড়িগ্রাম থেকে এসব পরিবহন ছেড়ে না যাওয়ায় চরম ভোগান্তি পড়েছেন যাত্রী সাধারণ।
অনেকেই বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়ায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকসাসহ অন্যান্য যানবাহনে করে রংপুর কিংবা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
এছাড়া ভোগান্তি বেড়েছে সাপ্তাহিক ছুটি শেষে অন্য জেলায় কর্মস্থলে ফেরা কর্মজীবী মানুষেরও।
কুড়িগ্রাম বাস টার্মিনালে আসা রংপুরের যাত্রী রুহুল আমীন জানান, এ রকম ধর্মঘটের কারণে আমি হতাশ হয়ে পড়েছি। আমার রংপুর যাওয়াটা জরুরি। কিন্তু কিভাবে যাবো সেটা ভেবে পাচ্ছি না।
আরেক যাত্রী সাহাব উদ্দিন জানান, দিনাজপুর যাবো। অটোতে করে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে। কত সময় ও কত টাকা লাগবে জানি না।
আরও পড়ুন: রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক
এছাড়া এগুলো মানুষকে হয়রানি করার ধর্মঘট।
মহাসড়কে থ্রিহুইলার, নসিমন, করিমনসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কে প্রশাসনের হয়রানি বন্ধে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
একই দাবিতে কুড়িগ্রাম জেলা মোটর মালিক সমিতি আনুষ্ঠানিক ধর্মঘট আহ্বান না করলেও শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস, মিনিবাস ও কোচ চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট শেষ হলে বাস, মিনিবাস ও কোচ চলাচল শুরু হবে।
এছাড়া আমরা ধর্মঘট আহ্বান না করলে গাড়ির মালিকরাই গাড়ির ক্ষতির আশঙ্কা করে সড়কে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবহন বন্ধ থাকায় রংপুরে বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কুড়িগ্রাম থেকে মোটরসাইকেল ও অটোতে করে শুক্রবার বিকাল থেকে যেতে শুরু করেন।
এমনকি জেলার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন পথে সমাবেশে যোগ দিতে রংপুরে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
সিলেটে ৩১ অক্টোবর থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা