আন্দোলন
কোন ঈদের পর বিএনপির আন্দোলন: প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
'বিএনপি কোন ঈদের পর আন্দোলন করবে' সেই প্রশ্ন রেখেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সরকারি কাজে ইউরোপ সফর শেষে ফিরে শুক্রবার সকালে মন্ত্রী রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রশ্ন তোলেন।
এ সময় মন্ত্রী সবাইকে পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা জানান ও নিরাপদ যাত্রা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম অনেক বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে: তথ্যমন্ত্রী
ঈদের পরে বিএনপি মহাসচিবের আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের পরে, শীতের পরে, গ্রীষ্মের পরে, স্কুল ছুটির পরে, কুরবানির পরে, বর্ষার পরে-এ সব কথা চৌদ্দ বছর ধরে শুনে আসছি।
মির্জা ফখরুল সাহেবের এ সব কথা মানুষ হাস্যকর বক্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আর তিনি 'ঈদের পরে' বলেছেন, কিন্তু কোন ঈদের পরে সেটি বলেননি। আমার প্রশ্ন- কোন ঈদের পরের কথা তারা বলছেন?'
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করার কথা বললেও তাদের নেতারা যে এতে অংশ নিতে চায়, সেটি স্পষ্ট। অন্য নির্বাচনেও তাদের নেতারা স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্যও নেতারা ছুটোছুটি করছেন,তাদের অন্দরমহলে নান আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচনে আসলে আমরা বিএনপিকে স্বাগত জানাই।
আমার ধারণা তাদের অনেকেই মুখোশ লাগিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। আমরা চাই, তারা মুখোশ ছাড়াই অংশ নিক।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ না নেয়, তাদের নেতাদের অংশগ্রহণ তারা ঠেকাতে পারবে না' উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন এবং আনন্দমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকার সকল সহযোগিতা দেবে, সব পর্যবেক্ষক নির্বাচন দেখবেন। এবং আমরা আশা করি, বিএনপি অংশ নেবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বর্জন করলে বিএনপি গুরুত্বহীন দলে পরিণত হবে: তথ্যমন্ত্রী
কারণ নির্বাচন থেকে এভাবে পালিয়ে যেতে এক সময় বিএনপি দলটাই পালিয়ে যাবে, তখন আর তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।
সদ্যসমাপ্ত ইউরোপ সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী জানান, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম সেরা আর্কাইভ ব্রিটিশ পাথে এবং ডাচ সংস্থা রেডঅরেঞ্জের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের অডিও-ভিজুয়াল ফুটেজ সংগ্রহের বিষয়ে দু'টি চুক্তি হয়েছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আর্কাইভের সমন্বয়কারী ব্রাসেলসভিত্তিক সংস্থা, এসোসিয়েটেড প্রেস এবং অন্যান্য সংস্থার কাছ থেকেও ফুটেজ সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যা, দেশের ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করবে ও বিকৃতি থেকে রক্ষা করবে।
এ সময় সাংবাদিকরা 'ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেজ থেকে র্যা পিড একশন ব্যাটেলিয়ন-র্যা বকে নিয়ে ডয়েচে ভেলের একটি সংবাদ শেয়ার করা বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর অবগত নয় এবং তারা ঢাকাস্থ দূতাবাসকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছে' -এ প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখানকার মার্কিন দূতাবাস যে বিভিন্ন ধরনের ছুটাছুটি করে, নানাজনের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে, যেগুলো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সেগুলোর সঙ্গে যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্রব নেই, সেটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বক্তব্যেই পরিস্কার। দূতাবাসের কোনো ব্যক্তিবিশেষ এটি শেয়ার করেছেন এবং বিরোধী দল এর প্ররোচনা দিয়েছে। আমাদের বিরোধী দলের লোকজন রাত-বিরাতে দূতাবাসে গিয়ে তাদের হাত-পা ধরে তাদেরকে যে প্ররোচিত করে, যেটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, এ ঘটনায় সেটিই স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না: তথ্যমন্ত্রী
২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা, আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিএনপি
দেশের সকল মহানগরী, জেলা শহর ও ইউনিয়নে তাদের সর্বশেষ সমন্বিত কর্মসূচির পর, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি (আগামী শনিবার) ৬৪টি জেলায় তাদের ১০ দফা দাবিতে মিছিল করবে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাবে দলটি।
১১টি মহানগরে আজকের পদযাত্রা করার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: পণ্যের বাজার, সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করে টাকা লুটপাট করছে আ.লীগ সিন্ডিকেট: বিএনপি
বিদ্যুত-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং কোনো শর্ত ছাড়াই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং দলের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ময়মনসিংহে পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন, একই কমিটির অন্যরা নারায়ণগঞ্জে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিলেটে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান, রাজশাহীতে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, খুলনায় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মোহাম্মদ শাহজাহান, গাজীপুরে এজেডএম জাহিদ হোসেন, ফরিদপুরে শামসুজ্জামান দুদু এবং রংপুরে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এছাড়া বিএনপির পুরনো ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসা ১২ দলীয় জোটও রাজধানীতে ফকিরাপুল পানির ট্যাঙ্কের কাছে মিছিল করেছে এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো সরকার পতনের জন্য যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে। অন্তত আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্ব-গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের বিধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে দলগুলো।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলা ও বাধার অভিযোগের মধ্যেও ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের সব ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে দলটি।
বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ইউনিট শুক্রবার পৃথক মিছিল করেছে এবং আজ (শনিবার) আরও ১১টি বিভাগীয় শহরে একই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে বরিশালে বিএনপির পদযাত্রা
মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর শাখার মিছিল
ছাত্রলীগের চাপে চট্টগ্রাম সিটি কলেজের ২ শিক্ষকের পদত্যাগ
চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে ছাত্রলীগের আন্দোলন ও চাপের মুখে দুই শিক্ষক নেতা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কলেজের বর্ষপঞ্জিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি না দেয়ার অভিযোগ তুলে দুই শিক্ষক নেতা শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আজম মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত ও শিক্ষক ক্লাবের সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে লরির সঙ্গে শিক্ষা সফরের বাসের সংঘর্ষ, ২৬ ছাত্র-শিক্ষক আহত
তাদের দাবির মুখে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও শিক্ষক ক্লাবের সম্পাদক কলেজের অধ্যক্ষ ড. সুদীপা দত্তের কাছে এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কলেজ মুদ্রিত একাডেমিক বর্ষপঞ্জি (আপন ভুবন) বের হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননার অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ নেতারা। গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে তারা। এ সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর উপস্থাপন করা হয়।
দাবিগুলো হল- শিক্ষক ক্লাব ও শিক্ষক পরিষদের দায়িত্ব থেকে দুই শিক্ষক নেতাকে অব্যাহতি প্রদান। মুদ্রণ কমিটির আহ্বায়ক মো. আলমগীর ও সদস্য সচিব আরিফ মঈন উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ। বর্তমান মুদ্রিত একাডেমিক বর্ষপঞ্জি (আপন ভুবন) ২০২৩ বাজেয়াপ্ত করে পুনঃসংস্করণ করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর শিক্ষকদের ভবিষ্যতে কলেজে অনুষ্ঠেয় জাতীয় দিবস ও অন্যান্য অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য গঠিত বিভিন্ন উপ-কমিটিতে যাতে দায়িত্ব অর্পণ করা থেকে বিরত রাখা।
সুদীপা দত্ত বলেন, ছাত্রলীগের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আজম মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত ও শিক্ষক ক্লাবের সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। তারা আমার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
এ ব্যাপারে পদত্যাগকারী দুই শিক্ষক নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আশীষ সরকার নয়ন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননাকারী আজম মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত ও মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে শুরু থেকেই আন্দোলন করে আসছি। আমাদের দাবির মুখে ওই দুই শিক্ষক তাদের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর কয়েকদির আগে চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ছাত্রলীগ নেতাকে নকল করতে বাধা দেয়ার কারণে কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈমের হাতে লাঞ্ছিত হন শিক্ষক মুজাহিদুল ইসলাম। ওই ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষককে মেরে বদলির হুমকি দেয় এবং গালাগাল করে।
সহকর্মীকে এমন লাঞ্ছনার ঘটনার প্রতিবাদ করেন ওই কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবীর দাশ। এ ঘটনার কোনো ধরনের সুরাহা না হওয়ায় পদত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির কাজ চলতি মাসে শুরু
ইবি শিক্ষকের গাড়ির ধাক্কায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ফের আন্দোলনে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীরা, মূলফটকে তালা
নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে আবারও মূলফটকে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
এক সপ্তাহ বিরতির পর ফের অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে ৮২ দিন আন্দোলনের পর গত ২৩ জানুয়ারি ক্লাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন: চবির শাটলে কথা কাটাকাটি, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩
২২ দফা বাতিল করে এক দফায় ফিরেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের একটাই দাবি, মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে চান তারা।
চারুকলার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আসার সাত দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোনো দৃশ্যমান ফলাফল না পাওয়ায় আমরা মঙ্গলবার আবারও মূল ফটক অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ সাত দিনের সময় নেয়ার পরেও কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা ২২ দফা থেকে পুনরায় ১ দফায় ফিরে এসেছি।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুফিয়া বেগম বলেন, গত ২৬ তারিখ শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে একটা প্রতিনিধি দল ইনস্টিটিউট সার্ভে করেছে।
তারা জানিয়েছেন, ভবনে সেরকম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নেই। করোনাকালীন সময় ইনস্টিটিউট বন্ধ থাকায় সিলিংয়ের আস্তরণ খসে পড়েছে। হালকা মেরামত করলে ঠিক হয়ে যাবে।
তাছাড়া কিছু দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেই দিয়েছেন, চারুকলা ইনস্টিটিউট এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর সম্ভব না। এর জন্য কিছু সময় দরকার। এই আন্দোলনের ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা চবির মূল ক্যাম্পাসে চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রত্যাবর্তনের আন্দোলন শিথিল করে ক্লাসে ফিরে। তবে রুম বর্জন করে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: চবিতে বিভিন্ন ঘটনায় ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ফের সংঘর্ষ, সহকারী প্রক্টরসহ আহত ৯
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় সুযোগের দাবিতে আন্দোলন, আটক ২
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় সুযোগের দাবিতে আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী দুইজন হলেন- নটরডেম কলেজের আলভী মাহমুদ ও মাইলস্টোন কলেজের মোহাম্মদ সানি।
শনিবার বিকালে আলভী ও সানিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান।
তারা জানান, বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন আলভী মাহমুদ ও মোহাম্মদ সানি। পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের ডেকে নিয়ে গেলেও আটক করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মহামারিকালীন অনলাইনে ক্লাস নেয়ায় প্রাইভেটের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে: প্রধানমন্ত্রী
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলছে ২৩ মে
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার ও তার দালালরা বিভিন্ন 'অশুভ' কৌশল অবলম্বন করে এবং বানোয়াট গল্প তৈরি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চাইছে। বিরোধী জোটের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট রয়েছে এবং তারা 'ফ্যাসিস্ট' সরকাকে উৎখাত করতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে (বিরোধী জোটের) কোনো সমস্যা নেই...স্বাভাবিকভাবেই সরকার ও তার দালালরা বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমন ও বানচাল করতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা অশুভ কৌশল অবলম্বন করছে এবং নানা রকম গল্প তৈরি করছে।’
বিরোধী দলগুলোর ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে তারা কম চিন্তিত বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস এখন মানুষকে আরও একত্রিত করা এবং ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করার জন্য আমাদের আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।’
বিকাল ৪টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।
বৈঠকে ফখরুল বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
‘আমাদের বৈঠকে আমরা বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের একযোগে আন্দোলনের আগের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছি’, তিনি বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তারা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গেও তারা একই ধরনের বৈঠক করবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আন্দোলনকে ধীরে ধীরে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার কৌশল ও নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার উপায় নিয়েও কথা বলেছেন। কেউ যেন কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আমাদের ঐক্যে কোনো ফাটল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
মান্না বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিরোধী জোটের তৎপরতা কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়েও তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ঢাকায় বিএনপি স্বতন্ত্রভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ‘আমরা মনে করি যে প্রোগ্রামগুলি কার্যকর হতে পারে। আমরাও কর্মসূচিতে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করব। আমরা আশাবাদী যে আমরা বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছি বলে আমরা বিজয়ী হব।’
খালেদাকে নিয়ে সেলিমের মন্তব্য 'ভিত্তিহীন'
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইলে ফখরুল বলেন, এটা একটি বানানো গল্প।
‘তিনি (সেলিম) হঠাৎ করেই এই গল্পটা তৈরি করলেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট মন্তব্য’, বিএনপি নেতা যোগ করেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারাভোগ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে আন্দোলন সফল করতে তারা বদ্ধপরিকর।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ১০ দফা দাবি পূরণের অঙ্গীকারও করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে এবং অবশ্যই আমরা সংসদ ভেঙে দিয়ে এবং নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জাতীয় নির্বাচন করতে বাধ্য করব।’
সেজন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাঁর অসাধারণ সাহস, তাঁর প্রজ্ঞা, তাঁর দূরদর্শিতা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
বিদেশে বাংলাদেশিদের সম্পদের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নতুন নেতারা জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে এসব সম্পত্তি ক্রয় করছে।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ বাংলাদেশি বিদেশে, বিশেষ করে লন্ডনে বাড়ি কিনেছেন। তারাই নব্য আওয়ামী লীগার যারা দেশের সম্পদ লুট করে এসব বাড়ি কিনছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সারাদেশের মানুষ জানে আপনারা (আ.লীগ) সম্পদ লুটপাট করছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা সফরে ডোনাল্ড লুর বক্তব্য নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে: ফখরুল
সব মোবাইল ফোনে বিজয় কীবোর্ড বাধ্যতামূলক করার সরকারের পদক্ষেপেরও নিন্দা করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, এই ‘বিজয় কীবোর্ড’-এর মালিক মোস্তাফা জব্বার, যিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। একজন মন্ত্রী কখনই তার কোম্পানিকে সরকারের কোনো লাভজনক কাজে সম্পৃক্ত করতে পারবেন না এটাই নিয়ম। এক্ষেত্রে তারা সরকারি ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে এমন কাজ করছে।
এর আগে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা।
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ জানুয়ারি থেকে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
আরও পড়ুন: জিয়ার জন্মবার্ষিকী: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল করার অঙ্গীকার বিএনপির
'আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সরকারকে পতনে বাধ্য করবে': ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার টিকে থাকার জন্য যতই দমন-পীড়ন করুক না কেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যখন একটি বর্বর ও দানবীয় শক্তি আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে... আমাদের প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, ছয় হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।’
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত কয়েকজন বিএনপি নেতার পরিবারকে সহায়তা প্রদানের জন্য এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, ব্যাপকভাবে মামলা ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড সত্ত্বেও তাদের দলের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখতে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত এবং নৈতিকভাবে শক্তিশালী রয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘যেকোনো ধরনের দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করে আমরা এই ভয়ঙ্কর দানবকে (সরকারকে) শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে পরাজিত করব। আমরা এখানে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব। আমরা যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি তাতে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।’
ফখরুল নিহত বিএনপি নেতাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, তাদের দল সব সময় তাদের পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তারা একটি আদর্শের জন্য এবং একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি করেছেন: ‘সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো আমাদের দেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত করা এবং বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি দাবি করেন, গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে চলতি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বা আওয়ামী লীগের ‘ক্যাডারদের’ নির্যাতনে এ পর্যন্ত বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করুন নতুবা রাজপথে নামবে জনগণ: সরকারকে বিএনপি
ফখরুল ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ‘তারা (নিহত বিরোধী নেতাকর্মীরা) শহীদ হয়েছেন কিন্তু বীরের মতো। পালানোর সময় তাদের কেউ মারা যায়নি, কারণ তারা সামনে দাঁড়িয়ে বুলেট নেয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছিল। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ তাদের আত্মত্যাগ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চলমান গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে প্রাণ হারানো বাগেরহাটের নুর আলম তনু, ঢাকার মকবুল হোসেন এবং পঞ্চগড়ের আবদুর রশিদ আরেফিনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কলে অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের ‘জনবিরোধী’ সিদ্ধান্ত: ফখরুল
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকবে আ.লীগ: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব। তারা যাতে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করিনি। আমরা রাজপথে আছি। রাজপথ আমরা ছাড়ব না। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করব।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, গতকাল বিএনপির বৈঠক অনেক বড় হয়েছে। আমাদের আলোচনা সভাও বড় সমাবেশে রূপ নেয়।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, পরের নির্বাচনে আমাদের নেতৃত্ব দেবেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তাদের নেতা কে? গত নির্বাচনে তারা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল কোনো সহিংস পরিস্থিতি কোথাও হয়নি। ফরিদপুরে তাদের মিটিং থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছে। তবে তা বেশিদূর গড়ায়নি।
তারা শোভাযাত্রা করলে আমরা শান্তি সমাবেশ করব বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদালতের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। আদালতের বিষয়ে দলীয় ভূমিকা যুক্তিসঙ্গত হবে না।
তার মতে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি শক্তিহীন। বিএনপি-জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জামায়াত ছাড়া তাদের চলা অচল। বেশি লোক আনতে হলে তাদের জামায়াত ছাড়া চলবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে একাত্তরের চেতনা বিলুপ্ত হয়ে যাবে: ওবায়দুল কাদের
ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়: কাদের
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত আ.লীগ: কাদের
ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলো ঢাকাসহ জেলার অন্যান্য বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিরোধী দল ও সংগঠনগুলো বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পৃথকভাবে চার ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করবে।
৩০ ডিসেম্বর ৩৩টি বিরোধী দলের গণমিছিলের পর এটি হবে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, ২০০৭ সালের ১/১১ এর কথা মাথায় রেখে ১১ জানুয়ারি এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করেন।
সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ডিএমপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ডা. জাহিদ জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন তারা।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তারা বিএনপিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে এর দায় তাদের (বিএনপি) নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতারা।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের পূর্ব পাশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং আরামবাগে গণফোরাম (মন্টু) কর্মসূচি পালন করবে।
যদিও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি এবং অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে গণমিছিল কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
দলের একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, কৌশলগত অবস্থানের কারণে জামায়াত অবস্থান কর্মসূচি পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অবস্থানের পর বিরোধী দল ও জোটগুলো যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির পরিকল্পনা অনুযায়ী সিলেট বিভাগে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আব্দুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান, রংপুরে মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু ও ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান।
এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৩২টি সমমনা বিরোধী দল যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে রাজধানী ও রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনসহ তাদের ১০ দফা দাবিতে চাপ দেয়ার জন্য তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে ১১ জানুয়ারি সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল কর্মসূচি ও রংপুর সিটি নির্বাচনের কারণে বিএনপি ঢাকা ও রংপুরে এই কর্মসূচির দিন ৩০ ডিসেম্বর পুনঃনির্ধারণ করে।
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের 'পূর্বশর্ত' প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: গয়েশ্বর