তারেক
তারেকের বিরুদ্ধে রায় বাস্তবায়নে যা কিছু করা সম্ভব্ সবই করবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের রায় বাস্তবায়নে যা কিছু করা সম্ভব যথা সময়ে সরকার সবই করবে।
তিনি বলেন, 'প্রত্যেক দণ্ডিত ব্যক্তির রায় কার্যকর নিশ্চিত করতে চায় আমাদের সরকার। তারেক রহমানের ইস্যুতে সরকার উপযুক্ত সময়ে সম্ভাব্য সবকিছুই করবে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে মহাসচিবের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়নে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
আদালতের রায় কার্যকর করতে সরকার বিএনপির দণ্ডিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেককে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে যুক্তরাজ্য সরকারের ওপর।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী বিশ্বব্যাংক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত বছর ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘তিনি সেখানে (যুক্তরাজ্য) আছেন। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে ফিরিয়ে এনে তাদের সাজা কার্যকর করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে এখন বিষয়টি পুরোপুরি ব্রিটিশ সরকারের ওপর নির্ভরশীল। তারা কি তাকে সেখানে রাখবে নাকি শাস্তি কার্যকর করতে দেবে? এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের ওপর নির্ভর করছে।’
তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, অস্ত্র চোরাচালান, দুর্নীতি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে অনেকে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, এই প্রক্রিয়া সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ শীর্ষ সম্মেলন: ঐক্য, সংহতি ও সহযোগিতার ডাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
তিনি স্বীকার করেন, যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এমন অনেকে আছেন।
নেতৃত্ব অন্যের হাতে চলে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন চায় না তারেক: কৃষিমন্ত্রী
নেতৃত্ব অন্যের হাতে চলে যাওয়ার ভয়ে তারেক নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, আগামী মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল। অনেক চেষ্টা করেছি, নির্বাচনে আনার জন্য কিন্তু বিএনপি আসেনি। তাদের নেতা তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত; তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সেমিনার, সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ও মৃত্তিকা দিবস পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, কাজেই বিএনপি যদি নির্বাচনে জিতেও, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া নেতা থাকতে পারবে না। নেতৃত্ব চলে যাবে দলের অন্যদের কাছে। তাই নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে তারেক জিয়া কিছুতেই চায় না নির্বাচন হোক, বিএনপি নির্বাচনে আসুক।
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে কম সময়ে অধিক ফলনে গুরুত্ব দিচ্ছি: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, দেশটায় শান্তি দরকার, উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হচ্ছে। এটিকে, বানচাল করার জন্য আবারও সহিংসতা ও বর্বরতার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। তারা ভুল পথে রয়েছে, নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে তারা আরও জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের কথা শুনে সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যেখানে যাই, কথা বলি সারা পৃথিবীর মানুষই আমাদের প্রশংসা করে। সবাই আমাদের কথা শুনতে চায়। বাংলাদেশের সফলতার কথা যখন আমরা বলি, সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে, কীভাবে বাংলাদেশের এত সাফল্য।
এবারের বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘মাটি ও পানি: জীবনের উৎস’।
মন্ত্রী বলেন, জমি কমছে, পানির উৎসও কমে যাচ্ছে। মাটির গুণাগুণও হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা আমাদের মেটাতে হবে।
তিনি বলেন, বর্ধিত জনসংখ্যার খাবার জোগাড় করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ আগে খাবার পেতো না, ভাত পেতো না। দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে বার বার। ২০০৪-০৫ সালে উত্তরাঞ্চলে আমি দেখেছি মানুষের হাড্ডিসার চেহারা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন খাদ্যাভাব নেই, খাদ্যের কষ্ট আর নেই।
তিনি আরও বলেন, মাটি ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমি লবণাক্ত। প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর জমি উপকূলীয়। লবণাক্ত জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে পারলে সব ফসলে উদ্বৃত্ত হওয়া যাবে। উন্নত জাতের ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে চালে উদ্বৃত্ত হওয়া সম্ভব।
পরে মন্ত্রী সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩, সয়েল অলিম্পিয়াড এবং মৃত্তিকা দিবসের পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং 'ল্যান্ড অ্যান্ড সয়েল রিসোর্সেস ইউটিলাইজেশন গাইড'- বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, পানি ও মৃত্তিকা সম্পদের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে পানি ও মাটি আজ অবক্ষয়ের সম্মুখীন।
তিনি আরও বলেন, ভূমির যথাযথ ব্যবহার ও মাটির অবক্ষয় রোধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিএআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল হক পাটওয়ারী, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জালাল উদ্দীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তাদের মোকাবিলা করবে যুবসমাজ: কৃষিমন্ত্রী
বিএনপির শান্তিপ্রিয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না: কৃষিমন্ত্রী
বিএনপিতে যারা তারেকের নেতৃত্ব মানছেন না, নির্বাচনে আসতে তারা নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তারা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন।
তিনি বলেন, মানুষ যখন তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, তারা নিশ্চিত নির্বাচনে আসতে পারবে না কোনোদিন। তাই তারা কুৎসা রটাচ্ছে, অবান্তর কথা বলে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি না এলে নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে কিনা— এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তার নেতৃত্ব মানতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তারা কিন্তু এরই মধ্যে নির্বাচনে আসবে বলে আমরা জানি। এছাড়া, নির্বাচনে আসার জন্য তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছেন।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন বিএনপির যে নেতৃত্ব, তা দলটির অনেকের পছন্দ না। তাই তারা নতুন দল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার বিএনপিরও অনেকেই প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ দেশের মানুষও একটা উৎসবমুখর পরিবেশে চলে এসেছে। সবাই নিজেদের প্রার্থীকে কীভাবে জয়ী করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করছেন। কে নির্বাচনে আসলেন না, বা কে কী বললেন, তা নিয়ে মানুষের কোনো উদ্বেগ নেই।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির কথিত চেয়ারপারর্সন তারেক রহমান রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন। আবার রাজনীতির মাঠ গরম করছেন। একেক সময় একেক ঘোষণা দিচ্ছেন। ২৮ অক্টোবর সরকার পরিবর্তন হবে, তারপর বিএনপি যেভাবে চাইবে, সেভাবে দেশ চলবে। এমন ঘোষণাও দিয়েছিলেন। সেদিন তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর করেছে, হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে।
লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আছে কিনা আপনারা দেখবেন। রাজনৈতিক দলগুলো তো প্রচার করবেই। সবাই প্রচারে নামবে। নিজেদের প্রার্থী নিয়ে তারা আনন্দ করবে, উৎসব করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাদের যতগুলো নেতা কারাগারে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা আছে। তারা ভাঙচুর করেছেন, বাস জ্বালিয়েছেন, মানুষ পুড়িয়েছেন। এসব ঘটনা আমরা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি এবং তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড করেছে। বিনাকারণে কাউকে ধরা হয়নি।
নির্বাচন ঘিরে নাশকতার শঙ্কা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। কেবল বাংলাদেশের মানুষই না, বিশ্বের কোনো সভ্য দেশের মানুষই নাশকতা পছন্দ করেন না। তাই তারা যত নাশকতা করবে, ততই জনবিচ্ছিন্ন হবে। এতে জনসমর্থনের চেয়ে ধিক্কার জুটবে তাদের ভাগ্যে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষ সেটাই চাচ্ছে। সেই আলোকিত বাংলাদেশ থেকে কেউ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চাচ্ছে না। আগামী নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের মানুষকে নির্বাচিত করবেন বলে মানুষ তৈরি হয়ে আছে।
বিএনপির কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেই কঠোর আন্দোলন কী আমি জানি না। আমরা তো দেখলাম, ট্রেনের লাইন কাটার জন্য তারা গিয়েছিল, এ দেশের জনগণ তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ তাদের ধরে পুলিশে দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয়, এ দেশের মানুষ সহিংসতা পছন্দ করে না। যেখানে জনসমর্থন নেই, সেখানে এ ধরনের চিন্তা কাম্য না।
তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি, নির্বাচনে পরাজিত হবে জেনেই তারা আসছে না। ২০০৮ সালে তারা ৩০টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে আসেনি। সারা বাংলাদেশে তারপরে জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।
আরও পড়ুন: ফখরুলের জামিন নামঞ্জুরে সরকারের কোনো প্রভাব নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সব দল সম্পৃক্ত করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তারেক ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ: রিজভী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-বিরোধী দল ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘বেপরোয়া, প্রতিহিংসাপরায়ণ ও অবমাননাকর’ মন্তব্যের মাধ্যমে তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,‘নরসিংদীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনে দেশের মানুষ হতবাক ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’
সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ নভেম্বর সংসদে বিএনপি নেতাদের ‘পশু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা রবিবার আরও অনেক মন্তব্য করেছেন, যা শুধু মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষই বলতে পারেন। তার অশ্লীলতা সম্প্রতি প্রায় মহামারি পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি সব ধরনের শিষ্টাচার, রীতিনীতি, সুরুচি ও সৌজন্যবিহীন বক্তব্য দিয়েছেন এবং সবচেয়ে নিকৃষ্ট বেফাঁস, উস্কানিমূলক ও অস্বাভাবিক ভাষা ব্যবহার করেছেন।’
তিনি বলেন, কোনো সভ্য দেশের সরকারপ্রধান এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না। ‘মনে হচ্ছে তিনি রাস্তার গুন্ডা ও সন্ত্রাসীদের মতো হুমকি দিচ্ছেন। এটা বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক, এমন একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। একজন প্রধানমন্ত্রীর উচিত তার বক্তব্যে বিনয়ী হওয়া। কিন্তু তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অশালীন শব্দ ব্যবহার করে তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন।’
এর আগে রবিবার নরসিংদীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে এই নভেম্বরে শিক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষায় বসবে এমন এক সময়ে বিএনপি অবরোধ ও হরতাল নিয়ে আসায় মানুষ পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তুলেছিলেন।
সেসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি অগ্নিসংযোগ করতে যায় এবং বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, তাহলে তাদের ধরে আগুনে নিক্ষেপ করুন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (তারেক) দেশ থেকে পালিয়ে লন্ডনে আছেন এবং সেখানে বসে অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছেন। সাহস থাকলে বাংলাদেশে ফিরে আসুন। কিছুক্ষণের জন্য দেখা হবে।’
তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আসতে বলায় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘রক্তপিপাসু’ মনের অধিকারী শেখ হাসিনার শাসনামলে তারেক ফিরে এলে তার পরিণতি কী হতে পারে তা দেশের জনগণ ভালোভাবেই জানে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি তারেক রহমানকে হত্যা করতে চান। এ কারণে তাকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। জনগণের বিজয়ের পর তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।’
তিনি বলেন, তারেকের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, অকল্পনীয় জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শেখ হাসিনা ভীত হয়ে পড়েছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারেক রহমানকে নিয়ে তার বক্তব্য শুনে মানুষ বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে এ ধরনের বক্তব্য শুধু শপথভঙ্গই নয়, আইনের গুরুতর লঙ্ঘনও বটে। এটি সরাসরি হত্যার হুমকিও বটে।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সমাজে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রপন্থী মানুষ প্রধানমন্ত্রীর আগুনে নিক্ষেপের সহিংস হুমকিতে আতঙ্কিত। তিনি দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু করতে চান।’
তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৪৮০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১১ হাজার ২৫০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ দলটির।
আরও পড়ুন: ইইউ’র পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর ওপর নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যারা প্রধান বিচারপতির বাড়ি অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থার ওপর হামলা চালায়, যারা হাসপাতালে হামলা, অ্যাম্বুলেন্স পোড়ানো, পুলিশ হত্যা করে, তারা কখনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তাই বিএনপি এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে আমন্ত্রণ প্রমাণ করে বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার পাশে আছেন: তথ্যমন্ত্রী
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু ৭ম খণ্ড’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রাজনৈতিক সংলাপ বিষয়ে প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, আলোচনা হবে অবশ্যই আওয়ামী লীগ যে কারো সঙ্গে আলোচনা করতে পারে রাজনৈতিক দল হিসেবে। যারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে, যারা দেশের সংবিধান মানে, আইন ব্যবস্থাকে মানে, বিচার ব্যবস্থাকে মানে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি সারাদেশে হরতাল ডেকে সেই হরতালকে সফল করার জন্যে সেই আগের পুরোনো ঘৃণ্য আগুন সন্ত্রাসের তাণ্ডবে ফিরে গেছে। আপনাদের মনে আছে, ২০১৩-১৪-১৫ সালে কীভাবে গাড়ি চালকদের হত্যা করা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ২৮ অক্টোবর সারাদেশে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলাম। ঢাকা শহরে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে আমাদের, সবাই আমাদের নেতা-কর্মী।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের নারীকর্মী থেকে শুরু করে অনেককে মারধর করেছে, নারীদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছে।
মন্ত্রী বলেন, লালমনিরহাটে আমাদের নেতা-কর্মীরা শান্তি সমাবেশ করছিল, সেখানে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজন শ্রমিক লীগ কর্মীকে কুপিয়ে তারা হত্যা করেছে। আবার ঢাকায় মোহাম্মদপুর বাসে আগুন দিতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির কর্মী একটি বিল্ডিংয়ে উঠে সেখান থেকে লাফ দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ একজন দুষ্কৃতিকারী মারা গেছে, আর বিএনপির ভাষায় ‘শহীদ’ হয়েছে। এই হচ্ছে বিএনপি।
মঙ্গলবার থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা স্পষ্টত এই নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তিন দিনের অবরোধ ডেকেছে। তাদের উদ্দেশ্য অবরোধ করা নয়, তারা জানে তাদের পক্ষে দেশে অবরোধ কার্যকর করা সম্ভবপর নয়। কিন্তু চোরাগোপ্তা হামলা, নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা অবরোধ ডেকেছে।
আরও পড়ুন: ‘বাইডেনের উপদেষ্টা’ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি ইসরাইলের এজেন্ট: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি ‘ভার্চুয়ালি’ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতারা কত ভীতু। ২৮ তারিখ কর্মীরা যাওয়ার আগে নেতারা পালিয়ে গেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতার নিন্দা জানানো প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি তাদের এই নিন্দা সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভিসা নীতি নিয়েও ভাববে।’
মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করব তাদের (অগ্নিসংযোগ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত) বিরুদ্ধে সেই ব্যবস্থা তারা (যুক্তরাষ্ট্র) গ্রহণ করবে, আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং বিদেশি চিকিৎসকরা ফিরে গেছেন এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলেছিল যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি, তাকে রক্ষা করা যাবে না। আমেরিকান চিকিৎসকরা এসে এখন বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি আগের তুলনায় ভালো আছেন। এ জন্য আমিও স্বস্তি প্রকাশ করছি এবং প্রার্থনা করি তিনি যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, মার্কিন চিকিৎসকদের আসার ব্যবস্থা সরকারই করে দিয়েছে। বিএনপির বক্তব্যে প্রমাণিত হয় তারা খালেদা জিয়াকে রাজনীতির গুটি বানিয়েছে এবং তার স্বাস্থ্যকে নিয়ে রাজনীতিটাই করে, মিথ্যাচার করে, আসলে স্বাস্থ্য ভালো করার চেষ্টাটা করে না।
আরও পড়ুন: দেশে গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করতে দেওয়া হবে না: তথ্যমন্ত্রী
আদালতের কপি হাতে পেলে তারেকের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেব: মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, আদালতের আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে অনুরোধ করা হবে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সচিবালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা এবং অবৈধ ও যাচাইবিহীন আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: নগদ-এর অর্জন মানে ডাক বিভাগের অর্জন: মোস্তাফা জব্বার
সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আদালতের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পরে আমরা আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী যা করতে পারি তা করব, তবে ডিজিটাল অঙ্গনে কী বিষয়বস্তু খোলা রাখা উচিত বা কী নয় তা নিয়ে বিশদ আলোচনার প্রয়োজন।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট থেকে তারেক রহমানের সব ভিডিও কনটেন্ট ও বক্তৃতা অপসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিনি আরও বলেন, আমরা তারেক রহমানের বিষয়বস্তু অপসারণের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব। আমরা যতদূর জানি, আদালতের আদেশ উপেক্ষা করার মানসিকতা সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর নেই।
আরও পড়ুন: প্রচলিত গণমাধ্যমের বিদ্যমান ধারা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে: মোস্তাফা জব্বার
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারকারীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়: মোস্তাফা জব্বার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তারেকের বক্তব্য মুছে ফেলতে বিটিআরসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব বক্তব্য ও ভিডিও কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এসময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উচ্চস্বরে আদেশের প্রতিবাদ করায় আদালত কক্ষে বিশৃঙ্খল দেখা যায়। একপর্যায়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম হট্টগোলের মধ্যে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।
বিচারপতিরা যখন আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে চিৎকার করছিলেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত বিচারপতিরা আদালতে ফিরে আসেননি।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেঞ্চের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা আপিল জমা দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ করার জন্য ২০১৫ সালে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরীন সিদ্দিকী লিনা।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি চলাকালে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। আদেশে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক এবং তারেক রহমান নিজেসহ একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
সাড়ে আট বছর পর চলতি বছরের ২ আগস্ট রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী কামরুল ইসলাম শুনানির আবেদন করেন।
৮ আগস্ট মামলার শুনানি চলাকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
তারেকের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার রুলের শুনানি বুধবার
গণমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নে জারি করা রুল বুধবার শুনানির কার্যতালিকায় থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সাড়ে আট বছর শুনানি না হওয়া রুলটি রিটকারীদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি শুনানির আবেদনের প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে রুলের নোটিশ রিটে উল্লেখিত তারেক রহমানের গুলশানের ঠিকানায় পাঠানো হয়। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ বোর্ডে এবং একটি জাতীয় দৈনিকে প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
তবে এক্ষেত্রে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, গুলশানের যে ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে সেটি তারেক রহমানের সর্বশেষ ঠিকানা না। তিনি এখন লন্ডনে তাই তার ঐ ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হবে।
তবে আদালত বলেন, আইন অনুযায়ী আবেদকারীরা নোটিশ পাঠিয়েছে বলেছেন। আগামীকাল এই রুল শুনানির কার্যতালিকা থাকবে। এর আগে সকালে এই শুনানিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কয়েক মিনিটের বাকবিতণ্ডা হয়।
আদালতে বুধবার রিটের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী কামরুল ইসলাম, আইনজীবী সানজিদা খানম ও আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা।
অন্যদিকে ছিলেন- ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান (ওই সময়ের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান) তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১৫ সালে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ রুল জারিসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
অন্যদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে হাইকোর্ট তারেক রহমানের অবস্থান জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ মহাপরিদর্শককে তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
পরবর্তীতে ঠিকানা ভুলের প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান বাদে রিট আবেদনের অন্য সকল বিবাদীদের বরাবর রুলের নোটিশ জারি হয়। অবশেষে সাড়ে আট বছর পর শুনানি না হওয়া সেই রুল শুনানির জন্য গত ২ আগস্ট আবেদন করেন রিটের পক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় খালেদা, তারেক ও তাদের লোকজন জড়িত ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই: প্রধানমন্ত্রী
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এই ২১ আগস্ট দিনের বেলায় আইভি রহমানসহ আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়। বিচার হয়েছে। এর (ট্রায়াল কোর্ট) রায় দেওয়া হয়েছে। এই রায় শিগগিরই কার্যকর করা উচিত।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল রুট ২০ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হামলায় ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ১ হাজার জন আহত হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও বারবার গ্রেনেড বিস্ফোরণে তার শ্রবণশক্তি বিঘ্নিত হয়।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান।
এরই মধ্যে ঢাকার একটি আদালত ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ১৮ দণ্ডিত আসামি পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে।
আজকের আলোচনায় সভাপতিত্ব করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রেনেড হামলা মামলার কিছু সাজাপ্রাপ্ত আসামি এখন কারাগারে থাকলেও মূল হোতা দেশের বাইরে আছেন।
তারেক রহমানের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, তিনি বন্ডে সই করে বিদেশে গেছেন। সাহস থাকলে সে ফিরে আসে না কেন? আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছি। সে এখন এর সুবিধা নিয়ে বড় বড় কথা বলছে। তার সাহস থাকলে ফিরে আসা উচিত। বাংলাদেশের জনগণ সেই খুনিকে রেহাই দেবে না।
আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মৃতি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং সে সময় তিনি কী ভূমিকা পালন করেছিলেন সেটাই প্রশ্ন। তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন খালেদা পুলিশকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে বাধা দিয়েছেন এবং কেন হামলার প্রমাণ রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেননি। এটা কী প্রমাণ করে? এই গ্রেনেড হামলায় খালেদা, তারেক ও তাদের লোকজন যে সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তদন্তে তাও বেরিয়ে এসেছে।
১৫ আগস্টের পেছনে জিয়া, ২১ আগস্টের পেছনে তারেক: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, '১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছিল জিয়াউর রহমান। আর বেগম খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছিল তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসের সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের সমাধিতে দলীয় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে দলীয় শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশ নেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। জাতির ইতিহাসে এতো বেদনাবিধূর দিন আর কখনও আসেনি।
আরও পড়ুন: বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যেই প্রমাণ হয় তারা জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসেনকে যখন জবাই করে হত্যা করা হয়, তখনও নারী এবং শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাত্রিতে ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, ৪ বছরের শিশু সুকান্ত বাবু, ৮ বছরের শিশু আরিফ সেরনিয়াবাত, ১২ বছরের শিশু বেবি সেরনিয়াবাত, অন্তঃসত্ত্বা আরজু মনিকে হত্যা করা হয়েছিল। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ নাসেরসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাউকে ঘাতকেরা রেহাই দেয়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। হত্যার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা দখল করেন এবং খুনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন।’
দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি এখনও সেই হত্যা-খুনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'তারা ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতি করে, ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করে, কেক কাটে। দেশে যদি সুস্থ রাজনীতির ধারা চালু রাখতে হয়, তাহলে বিএনপির এই অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় বিএনপি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী