মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্ত্রীদের ‘অপপ্রচার’ ফের কারাগারে নেওয়ার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
এসময়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন অসুস্থ… আজকে না বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। আপনারা জানেন একবার তাকে চার মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছে এবং তখনও আপনাদেরকে বার বার করে বলেছি যে, তিনি খুব জটিল কিছু রোগে ভুগছেন। তার মধ্যে আছে লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগের সংক্রান্ত জটিলতা, তার ডায়বেটিক জটিলতা আছে… এই বিষয়গুলো সবাই জানেন।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘এরপরেও যদি তারা এই সমস্ত কথাবার্তা বলে, অপপ্রচার করে…. এই কথা বলার অর্থই হচ্ছে তারা আবারও কোনো গভীর চক্রান্ত করছে। যে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে তারা আবার কারাগারে নিতে পারে কিনা, পরিকল্পনা-চক্রান্ত করছে কিনা সেটা আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বার বার করে বলেছি যে, তার চিকিৎসা পাওয়া একটা মৌলিক অধিকার। এজন্য ডাক্তারা বলেছেন, তার মেডিকেল বোর্ড বলেছেন যে, তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য বাইরে বিদেশে পাঠানো দরকার। বাংলাদেশে তার সেই উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘ কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার সে বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু এই ধরনের (অপপ্রচার) কথাবার্তা বলে অমানবিক আচরণ করছেন তারা আমাদের দেশনেত্রীর সঙ্গে এবং জনগণের সঙ্গে একটা তামাশা করছেন।’
৭৭ বছর বয়েসী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানে ‘ফিরোজা‘য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিল। গত ২০ এপ্রিল তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে এভারকেয়ারে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপি মহাসচিব।
‘অত্যবশ্যকীয় পরিষেবা বিল: জনগণের স্বার্থবিরোধী’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, একতরফা, নির্যাতনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ। এই আইনটি প্রণয়নে কোনো পর্যায়ই অংশীজনের মতামত নেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত বিলটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুন্ন করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের সংবিধান সম্মত প্রতিবাদের অধিকারের পরিপন্থি। বিএনপি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যেকোনো শিল্প, প্রতিষ্ঠা, পেশা ও সেবাকে এই আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই প্রস্তাবিত আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিলো তা এই আইন দিয়ে নাকচ করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশন নং ৮৭ ও ৯৮ অনুসমর্থন করেছে। যেখানে ধর্মঘটের অধিকারকে সংগঠিত হওয়ার অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্প, প্রতিষ্ঠান ও সেবা খাতকে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা’ চিহ্নিত করে শ্রমজীবী মানুষের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো তাদের সংগঠিত হওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহুমদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ
‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
সরকার আগুন নিয়ে খেলছে, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পুড়িয়ে দিচ্ছে: ফখরুল
সরকার আগুন নিয়ে খেলছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের 'সাজানো' ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দলকে চরম মূল্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার এখন আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। একদিকে তারা বাজারে আগুন দিচ্ছে, অন্যদিকে তারা জনগণের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা পুড়িয়ে দিচ্ছে।’
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ইফতার আয়োজনে দেওয়া বক্তৃতায় এই বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। ‘তাই আমি বলি তারা আগুন নিয়ে খেলতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, আগুন নিয়ে সরকার কোনো লাভ করতে পারবে না। ‘বরং আপনারাই (ক্ষমতাসীন দল) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন’।
এসময় নিউ সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের পেছনে ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস’- আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নির্দেশের নিন্দা করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা পরিষ্কার বলেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মার্কেটের সামনে ফুটওভার ব্রিজ ভাঙার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়।
আরও পড়ুন: মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে: ফখরুল
বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের কারণে দেশের জনগণ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
ফখরুল জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং জনগণের ভোট ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আরও অনেক বিরোধী দলের সঙ্গে একত্রে আন্দোলন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই যে যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্ন ও অর্জনকে ধ্বংস করেছে; তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এরমধ্যে দিয়ে জনগণের সত্যিকারের সরকার ও জনগণের সংসদ গঠন করতে হবে।’
তিনি সকল বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে এদেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে চায়। তারা তাদের ভোটের ন্যূনতম অধিকার ফিরে পেতে এবং প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রচণ্ড আঘাত করেছে: ফখরুল
সরকার দুর্যোগ সৃষ্টি করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আড়াল করতে চাচ্ছে: তাবিথ আউয়াল
মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার নিজেই মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (সরকার) ব্যর্থ (জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে), কারণ আপনারা কোনো কিছুরই নজরদারি করছেন না। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগছে। এই আগুনের পেছনে আপনাদেরই হাত রয়েছে।’
সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন ফখরুল।
এসময় ফখরুল বলেন, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও সারের দাম কমানোর এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের দাবি থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আপনারা (সরকার) বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রচণ্ড আঘাত করেছে: ফখরুল
নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে ফখরুল বলেন, সরকার বিরোধী দলের ঘাড়ে দোষ চাপাতে বিএনপিকে আগুনে জড়ানোর চেষ্টা করছে।
ফখরুল বলেন, নিউ সুপার মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা খোদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন লোক সকাল সাড়ে ৫টার দিকে মার্কেটের সামনের ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে ফেলছে। ‘ব্যবসায়ীরা বলেছেন যে তারা নিজেরাই দেখেছেন যে সেতুটি ভাঙার কাজে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের ব্যবহার করা বিদ্যুতের লাইন থেকে আগুন লেগেছে।’
তিনি বলেন, মার্কেটে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা পালিয়ে যায়। ‘আমি একা এটা বলছি না, এটা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কথা। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এখন আওয়ামী লীগের। তাই এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ ও এই সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী।’
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ফখরুল বলেন, পরিবেশগত ঝুঁকি ও ভুল নীতির কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে। ‘এই সরকার সর্বত্র বিল্ডিং নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছে এবং যে কোনো বিল্ডিংকে যে কোনো জায়গায় মার্কেটে পরিণত করছে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা চাঁদাবাজি করে মার্কেটগুলোতে অবৈধ দোকানপাট বসিয়েছে, মার্কেটগুলো মানুষের চলাচলের অনুপযোগী করে তুলেছে।
নিউ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় যেখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই সেখানে শতাধিক দোকান বসানোর অনুমতি কে দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘুষ দিয়ে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে এক বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এক হাজারের বেশি দোকান পুড়ে যায়।
আরও পড়ুন: সরকার দুর্যোগ সৃষ্টি করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আড়াল করতে চাচ্ছে: তাবিথ আউয়াল
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে: মঈন
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রবিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনী বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকের পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং একটি অহিংস রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দুপুর ১২টায় ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এক ঘণ্টার বৈঠক শুরু হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নিরাশ করতে তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন: বিএনপি
ডা. জাফরুল্লাহ অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন: বিএনপি
পাঁচ সিটি নির্বাচনে সরকারের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি: ফখরুল
ঈদের আগে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড রহস্যজনক: বিএনপি
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের বড় বড় মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুবই রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই জনগণ ও ব্যবসায়ীদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তা ও জবাবদিহিতার অভাবে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
নিউ সুপার মার্কেটসহ সব অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন বিএনপি নেতা।
একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বাংলাবাজার মার্কেট ও নবাবপুর মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ফখরুল বলেন, আজ আবারও নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লেগেছে। ‘এটা প্রমাণ করে যে অবৈধ আওয়ামী সরকারের অগ্নি প্রতিরোধে কোনো আগ্রহ নেই, কারণ তারা শুধু রাষ্ট্রক্ষমতা রক্ষায় ব্যস্ত।’
আরও পড়ুন: ‘আমার দোকান, আমার মালপত্র, আমার জীবিকা- সব শেষ'
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন মার্কেটে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও বহু ব্যবসায়ী ধ্বংসের ঘটনায় আওয়ামী সরকার সামান্যতমও মাথা ঘামায় না।
এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও প্রতিবেদনগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা হয় না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কাছে জনগণের জীবনের কোনো মূল্য নেই। একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও সরকার তা রোধ করতে পারছে না।’
আজ ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার নিউ মার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং ফায়ার সার্ভিস সকাল ৯টা ১০ মিনিটের দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করার সময় ঘন ধোঁয়ায় ৩০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: নিউ সুপার মার্কেটে আগুন: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল সরাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড: ঘন ধোঁয়ায় অসুস্থ ১৯
পাঁচ সিটি নির্বাচনে সরকারের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি: ফখরুল
চলতি বছরের জুনের মধ্যে পাঁচটি সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকে সরকারের ফাঁদ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দল এই চক্রান্তে প্রলুব্ধ হবে না।
তিনি বলেন, ‘এবার জনগণ ও বিএনপি সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে না...আমরা তাদের ফাঁদ উল্টে দেব।’
সোমবার রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় এই বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সংসদ নির্বাচন হতে পারে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, এই স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে তাদের দল আন্দোলনে রয়েছে।
ফখরুল আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি এক বৈঠকে বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট- এই পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নাটোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনকে দেখতে ডেল্টা কেয়ার হাসপাতালে যান ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ‘এখন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে দেখবেন আওয়ামী লীগ ত্রিশটি আসনও পাবে না। এটাই বাস্তবতা।’
এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি নস্যাৎ করে ক্ষমতায় বসতে চায়।
বর্তমান সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত দেশে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ফখরুল বলেন, নাটোরে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা আবুল হোসেনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে। ‘আসলে পুলিশ তাকে উদ্ধার না করলে তাকে হত্যা করা হতো। তারা (আ.লীগ ক্যাডার) তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।’
তিনি বলেন, নাটোরে বারবার এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। তারা শুধু নাটোরে নয়, খুলনা, হবিগঞ্জ ও যশোরসহ সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ পুলিশের সহায়তায় শনিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের দলের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মূলত একটি সন্ত্রাসী দল এবং বর্তমান সরকার পুরোপুরি সন্ত্রাসী শাসনে পরিণত হয়েছে। দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে এর যোগ্য জবাব দেবে।’
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে আ.লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সন্দেহ ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা জমি দখলের জন্য বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবাজার মার্কেট দখলের চেষ্টা করছে। সত্যিকার নিরপেক্ষ তদন্ত হলে জানা যাবে এই ঘটনা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে।’
শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারর্সনের গুলশান কার্যালয়ে ১২ দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের দল সত্য উদঘাটনের জন্য ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চায়।
মার্কেটের আগুনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সম্পৃক্ততার বক্তব্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ঘটনার একদিন পরই বঙ্গবাজারে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা বলা শুরু করেছে সরকার।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে এক বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং এটি আশেপাশের কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক হাজার দোকান, প্রধানত তৈরি পোশাক এবং জুতার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বিএনপি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল
বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন বৈধ হবে না
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার আগের মতো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো মঞ্চ-পরিচালিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সরকার আগের মতোই একতরফা নির্বাচন করতে চায়। এ কারণে তারা জাতিসংঘের প্রস্তাব (আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য) প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এর আগে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিণত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘের সাহায্য নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি ও জোটের শরিকরা নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচনের কোনো বৈধতা থাকবে না। এ কারণেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছেন, প্রধান দলগুলো অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে তারা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আগামী দিনে তারা আন্দোলন আরও জোরদার করবেন এবং সফল করবেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার মার্কেট নিয়ে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: ফখরুল
যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইছে।
সোমবার রাজধানীর ইস্কাটন এলাকার লেডিস ক্লাবে দেশের পেশাদার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য বিএনপি আয়োজিত ইফতার পার্টির আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন।
ইফতারের আগে ফখরুল আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সংক্ষিপ্ত ভাষণে ফখরুল বলেন, তাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রতি বছর রমজানে পেশাজীবীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করতেন। কিন্তু এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে মিথ্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তাকে গৃহবন্দি করে রাখায় তিনি এ কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে পবিত্র রমজান মাস পার করতে পারছে না। ‘দেশে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে এবং সরকার আমাদের সব অধিকার কেড়ে নেয়ায় মানুষ আর নিরাপদ বোধ করছে না।’
এই বিএনপি নেতা জানান, নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ভূমি অফিসের এক নারী কর্মচারীকে এলিট ফোর্স তুলে নেয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর র্যাবের হেফাজতে মারা যান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
দেশের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘৫২ বছর আগে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়ে ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু সেই গণতন্ত্র এখন দুর্ভাগ্যবশত সম্পূর্ণরূপে নির্বাসিত এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।’
রবিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, দেশের জনগণের এখন ভোটাধিকার নেই, কথা বলার ও লেখার অধিকার নেই।
ফখরুল বলেন, ‘এখানে কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত করে ফ্যাসিবাদী একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সরকারের নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করে ইসির চিঠি প্রত্যাখান ফখরুলের
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং গণতন্ত্র ও সকল হারানো অধিকার পুনরুদ্ধার করতে সর্বস্তরের জনগণ ও সব রাজনৈতিক দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ জেগে উঠেছে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, তাদের ভোট ও অন্যান্য অধিকার ফিরে পেতে এবং শান্তিতে বসবাসের আন্দোলন শুরু করেছে। সফলতা অর্জনের জন্য আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম এত বেড়ে গেছে যে মানুষ চরম অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের টাকা লুট করতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার দাম বাড়িয়েছে।
ফখরুল বলেন, তারা কোনো শর্ত ছাড়াই বিএনপি চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং ৩৫ লাখের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে বাধ্য করবেন।
বিএনপি মহাসচিব দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল ১০টার দিকে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে আসেন এবং ৫৩তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: রমজানে কর্মসূচি দিয়ে বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে
সেখানে তারা জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতও করেন।
এর আগে সকালে ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়।
তিনি বলেন, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন ও আশা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। দুর্ভাগ্যবশত, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও, মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করছে এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে ‘স্বৈরাচারী সরকার’ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় মানুষ তাদের কথা বলার ও ভোটের অধিকার হারিয়েছে এবং সাংবাদিকরা সত্য লেখার অধিকার হারিয়েছে।
তিনি শোক প্রকাশ করেন যে তাদের দলের চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়া ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ আন্দোলন শুরু করার কারণে কারাগারে বন্দী হয়েছিলেন এবং ৩৫ লাখের বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিনা পরোয়ানায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করতে ডিএমপিকে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি
ফখরুল বলেন, এই স্বাধীনতা দিবসে তাদের দলের নেতা-কর্মীরা শপথ নিয়েছেন যে তারা ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে এবং ঘুরে দাঁড়ানোর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বাংলাদেশ একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, দলের ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান প্রমুখ। -উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে বিএনপি।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
১৬ মার্চ দলটি স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য ১০ দিনের একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে।
আগামী ২৭ মার্চ বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা শাখা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধাদের গণসমাবেশ’ করবে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দলের বিভিন্ন ইউনিট ও সহযোগী সংগঠনও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা অনুযায়ী আরেকটি 'সাজানো' নির্বাচন করতে চায়।
শনিবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য প্রতিবেশি দেশের জন্য ঘুষ হিসেবে ভারতীয় আদানি গ্রুপের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রবিরোধী বিদ্যুত চুক্তি সই করেছে।
দেশের সব মহানগর ও জেলায় যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা। ফখরুলের নেতৃত্বে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মসূচিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
এসময় বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার সংবিধানকে ‘বিকৃত’ করেছে এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি নির্বাচন হয়েছে জনগণের ভোট ছাড়াই… এখন তাদের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা রয়েছে। সেই নীলনকশা নিয়ে তারা ২০২৪ সালেও একই পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে চায়।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে করে, আর জনগণ তার প্রজা।
আরও পড়ুন: ১৮ মার্চ সব মহানগরে সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির