মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
আ.লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে: বিএনপি মহাসচিব
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে এদেশের মানুষ যে সংবিধান রচনা করেছিলেন সেটাকে বারবার কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর একটা সংবিধান করেছে। বাহাত্তরের সংবিধানের মূল ভিত্তি নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিবের ত্রাণ বিতরণ
শুক্রবার (১০ মার্চ) দুপুরে সিলেট মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, এই সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। তাদের একটাও ভালো কাজ নেই, তারা এই দেশের সমাজকে পুরোপুরি বিভক্ত করে ফেলেছে এবং একটা দূষিত সমাজে পরিণত করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে আজ ভয়াবহ নির্যাতন নিপীড়ন চলছে। আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে গত আগস্ট থেকে। এ পর্যন্ত ১৭ জন নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন। জীবিত সকল নেতাকর্মী মামলার আসামি।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকির সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল আরও বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে লুট হচ্ছে। আদানির সঙ্গে চুক্তিতে দেড় লাখ কোটি টাকা লোকসান হবে। চুক্তির ফলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হবে।
তিনি বলেন, ৭০ টাকা মোটা চাল, মিহি চাল ১৭০ টাকা, ডিমের দাম ৩/৪ গুন বেড়েছে। জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। অথচ সরকার মুখে বাগাড়ম্বর করছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে।
সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম এ জাহিদ, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী, সিসিক মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল হাসপাতালে ভর্তি
হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নয়: কর্মীদের প্রতি বিএনপি মহাসচিব
আদানির সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি বাতিলের দাবি বিএনপির
ভারতীয় আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুত চুক্তিকে রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে বিএনপি অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ইতোমধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির একটি অনুলিপি পেয়েছে। এটি একটি চরম অসম চুক্তি, যা একটি হীন উদ্দেশ্য নিয়ে সাক্ষরিত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন পোস্ট আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুত চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ করায়, একটি দেশের সরকার কীভাবে এ ধরনের চুক্তি করতে পারে তা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘আদানির সঙ্গে এই চুক্তি দেশ ও জনগণের বিরোধী। আমি বলতে চাই এই চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ক্ষতিপূরণ আইন প্রত্যাহার করা উচিত।’
অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এইবি) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিদ্যুত খাতে বিপর্যয়: গভীর সংকটে অর্থনীতি’- শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে মূল বক্তব্য রাখেন এইবির মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার হাসিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারও শ্রীলঙ্কার মতো গণঅভ্যুত্থানের মুখোমুখি হবে: মোশাররফ
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কোনও সহানুভূতি ও দায়বদ্ধতা না থাকায় আওয়ামী লীগ সরকার আদানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে। বাংলাদেশের জনগণের কাছে এই সরকারের কোনও জবাবদিহিতা নেই। তারা টাকা চুরি করে বিদেশে বাড়ি তৈরি করে, ব্যবসা করে এবং আমাদের সাধারণ মানুষের পকেট কেটে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ব্যবহার করার জন্য জনগণের অর্থ লুটপাট করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা আবার টাকা দিয়ে নির্বাচনে কারচুপি করবে। তারা নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেবে... টাকা ভরা খাম প্রিজাইডিং অফিসার থেকে শুরু করে পুলিশ, বিজিবি, এমনকি যারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে তাদের সকল স্তরে যাবে। এটি ২০১৮ সালের মতোই সত্য।’
তিনি বলেন, তারা জানতে পেরেছে আগামী নির্বাচনে ভোট কারচুপির জন্য আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের ব্যবহার করতে সরকার নতুন কৌশল নিচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। ‘(মনিরুল হক) কুমিল্লার সাক্কু এদেরই একজন শিকার।’
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ‘লুট’ করেছে: নজরুল
জাতীয় নির্বাচনে আ.লীগকে আর প্রহসন করতে দেয়া হবে না: ফখরুল
চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিস্ফোরণের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিস্ফোরণের জন্য ‘সরকারের ব্যর্থতা’কে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) সীতাকুণ্ডে (চট্টগ্রামের) একটি বিস্ফোরণ হয়েছে এবং আজ (রবিবার) ঢাকায় আরেকটি বিস্ফোরণ হয়েছে... আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে কেন এসব বিস্ফোরণ ঘটছে?
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো মিল, কারখানা ও অফিসে অগ্নি নিরাপত্তা ও বিস্ফোরণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে এ ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ফখরুল বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা এবং পদক্ষেপ নিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সরকারের ব্যর্থতার কারণে এ ধরনের বিস্ফোরণ ঘটছে।’
রবিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারর্সনের কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনে আ.লীগকে আর প্রহসন করতে দেয়া হবে না: ফখরুল
ফখরুল বলেন, বিভিন্ন কারখানায় বারবার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বহু প্রাণহানির মূল কারণ উদঘাটন করা প্রয়োজন।
তিনি ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
রবিবার সকালে ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিস্ফোরণ ও পরবর্তীতে অগ্নিকাণ্ডে একটি ভবন আংশিক ধসে তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া, শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কদম রসুল (কেশবপুর) এলাকায় একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ছয়জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুত খাতে লাগামহীন লুটপাট চলছে: গয়েশ্বর
আ.লীগ দেশের সম্পদ লুট করতে মরিয়া: ফখরুল
আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি অপ্রয়োজনীয় ও অসম: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারতীয় আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তিকে অপ্রয়োজনীয় ও অসম আখ্যা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ এ প্রকল্প থেকে সুফল পাবে না।
তিনি বলেন, ‘সরকার ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে একটি বিদ্যুৎ চুক্তি সই করেছে। দেশে-বিদেশে সবাই বলছে এটা একটা অপ্রয়োজনীয় ও অন্যায্য চুক্তি।’
চুক্তি প্রত্যাহার না হলে বাংলাদেশকে টাকা দিতে হবে, কিন্তু খুব একটা লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, এ ধরনের চুক্তি ও প্রকল্পের মাধ্যমে তারা (আ.লীগ নেতা) বিপুল জনগণের টাকা লুটপাট করছে এবং বিদেশে সম্পদ অর্জন করছে।
মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সদ্য ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদের সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করা হবে: ফখরুল
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করায় জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ‘সবচেয়ে গুরুতর বিষয় হলো সরকারকে জবাবদিহি করার মতো কোনো সংসদ নেই। এমন একটি সংসদ আছে যা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয় না।’
১৪ বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকার একের পর এক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হাতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অর্থ লুটপাট করে এবং অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে বিভিন্ন দেশে সম্পদ গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের জনগণ যখন মারাত্মক অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সরকার তখন পিকনিকের মেজাজে রয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় তারা উৎসবে মেতেছে। তারা আজ (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের এলাকায় উৎসব করছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, দেশে অর্থনৈতিক সংকট এবং মূল্যস্ফীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে তা সরকার মানতে চায় না। দেশের সাধারণ মানুষ এখন চাল কিনতে পারছে না।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, সরকারের ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ করার পরিকল্পনা একটি ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ। ‘তারা কার্ডের মাধ্যমে চাল এবং প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করবে, যাতে তারা (আ.লীগ নেতাদের) দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়ার আরেকটি সুযোগ তৈরি করতে পারে।’
আরও পড়ুন: বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আ.লীগ সরকার জড়িত: ফখরুল
২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও সরকারের দুঃশাসন থেকে উত্তরণে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই। ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এই আন্দোলনে আমাদের ১৭ নেতা-কর্মীকে রাজপথে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অবশ্যই বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’
গত ২২ ফেব্রুয়ারি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে সভাপতি ও আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে দলটির যুবদল জাতীয়তাবাদী যুবদলের ২৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।
বাংলা একাডেমি কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অন্যায়ভাবে’ বিভিন্ন স্টল বন্ধ করে এবং বইমেলায় কিছু বই প্রদর্শনের অনুমতি না দিয়ে বাংলা একাডেমি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষার প্রসার ও চিন্তার অবাধ অনুশীলন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলা একাডেমি এখন অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্টল এবং কিছু বই প্রদর্শনের অনুমতি না দিয়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে।’
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বাংলা একাডেমির এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, কথা বলার অধিকার, মুক্তচিন্তা, লেখার এবং মানুষের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এই ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন করে শপথ নেব।’
ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধান’, জিয়া হাসান রচিত ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ এবং ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’-এই তিনটি বই নিয়ে আপত্তি তুলে বাংলা একাডেমি প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ প্রকাশনীকে চলমান অমর একুশে বইমেলায় অংশ নিতে দেয়নি।
আরও পড়ুন: একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধান’- গ্রন্থের লেখক ফাহাম আব্দুস সালাম মির্জা ফখরুলের জামাতা।
দেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও জাতি তার গণতান্ত্রিক ও অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং চিন্তা, বাক ও লেখার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশে এখন স্বৈরাচারী সরকার শাসন করছে যারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন করছে। সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে মিথ্যা ও ভুতুড়ে মামলায় ফাঁসানো অবস্থায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী এখনও কারাগারে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য মারাত্মক চক্রান্ত করছে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে এসে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘জাতিকে আবার ঐক্যবদ্ধ করতে এবং গণতন্ত্র ও সকল হারানো অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করতে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: ২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা, আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিএনপি
জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সংবিধান সংশোধন করতে হবে: ফখরুল
ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর: সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ফখরুলের
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ১২টি হিন্দু মন্দিরে ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে দোষীদের খুঁজে বের করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি শুধু আপত্তিকরই নয়, রহস্যজনক, পূর্বপরিকল্পিত এবং লজ্জাজনকও বটে। এর নিন্দা করার উপযুক্ত শব্দ নেই।’
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তারা নরকের পোকা।
তিনি বলেন, ‘বালিডাঙ্গীর ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। বালিয়াডাঙ্গীতে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরকারী অপরাধীদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১২টি হিন্দু মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে অজ্ঞাতনামারা।
ফখরুল বলেন, সামাজিক সম্প্রীতির পরিপন্থী এই নৃশংস ঘটনার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তার ধারের মন্দির ও প্রতিমা বেশি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সাধারণত রাতে এই এলাকায় টহল দেয়। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে দুর্বৃত্তরা তাদের (পুলিশের) অবহেলার কারণেই এত বড় মন্দির ও প্রতিমা সহজেই ভাঙচুর করতে পেরেছে। এক্ষেত্রে সরকার তার দায় এড়াতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশে চলমান দুঃশাসন একটি অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যেখানে প্রকৃত অপরাধীরা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অপরাধ করে পালিয়ে যায়।
ফখরুল বলেন, ‘ফলে, অপরাধীরা দ্বিগুণ উদ্যমে নতুন অপরাধ করে চলেছে। দেশ এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হওয়ায় মানুষ এখন এখানে অত্যন্ত নিরাপত্তাহীন।
দেশে অনিরাপদ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড চালাতে হয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, অতীতেও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, কিন্তু সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের মাধ্যমে দোষীদের বিচার করতে পারেনি।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং তাদের জমি-জমা, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের আগের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার অনুগত লোকজন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিই দখল করেনি, হামলা ও ভয়ভীতিও দেখিয়েছে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
ফখরুল অবিলম্বে সরকারি খরচে ভাঙচুর করা মন্দিরের পুনর্নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা: ফখরুল
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
হিরো আলমকে তাচ্ছিল্য করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি
বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, সর্বোপরি দেশের একজন সাধারণ নাগরিককে নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলের বা কারোরই এমন উপহাস করার কোনো অধিকার নেই বলে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে জানা যায় যে আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবমাননা ও উপহাসমূলক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
দেশের দুটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে।’ উল্টোদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘...এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার সঙ্গে জিততে হয়।’ দুই ক্ষেত্রেই সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলমকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্যসূচক বিবেচনায় পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন দুই নেতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক রীতি অনুযায়ী পরস্পরকে নিয়ে বিষোদ্গার নতুন কিছু নয়। কিন্তু সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলমের ব্যক্তি পরিচয় ও অবস্থাকে মানদণ্ড হিসেবে দাঁড় করিয়ে দুই দল একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। সেই মানদণ্ড যে ইতিবাচক কিছু নয়, বরং এর মাধ্যমে আলম এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।”
তিনি বলেন, “পাশাপাশি দেশের ‘সাধারণ’ একজন নাগরিকের প্রতি দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের এমন আচরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্থুলতাকেই জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করে।”
ড. জামান আরও বলেন, “সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বছর পূর্ণ হলে, কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত না হলে, দেউলিয়া না হলে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ না করলে বা আনুগত্য স্বীকার না করাসহ কিছু শর্ত পূরণে তিনি সংসদ সদস্য হতে পারবেন। সংবিধানের শর্ত পূরণের পরও আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারকেই ভুলুণ্ঠিত করে না, বরং তার সাংবিধানিক অধিকার অবজ্ঞার নামান্তরও বটে। ‘হিরো আলম নির্বাচিত হলে সংসদকে ছোট করা হতো’- এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তরে সংসদকে ছোট করা হয়েছে। কারণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের চেতনা ও চর্চায় মানুষে-মানুষে বৈষম্যের প্রকাশ অগ্রহণযোগ্য।”
আরও পড়ুন: নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতে আইনি সংস্কারের সুপারিশ টিআইবির
প্রস্তাবিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ
রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দশ দফা দাবির লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তিনি বলেন, তাদের দলের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবেন। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ আবুল হোটেল এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এদিকে ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।
এছাড়া সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তাদের পদযাত্রার কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার পতন এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে চলমান আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের যতই দমন করবে, ততই মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়বে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করবে।’
সোমবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, তাদের দলের আন্দোলন থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল আমাদের আন্দোলন নিয়ে এগিয়ে যাব এবং আমাদের গ্রেপ্তার হওয়া সকল নেতাকর্মীকে মুক্ত করব। এই শাসনকে পরাজিত করার জন্য আমাদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে হবে এবং আমাদের আন্দোলন সফল হবে।’
ফখরুল বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে চান। ‘আসুন আমরা বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত করতে এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এগিয়ে আসি। জেল থেকে বের হওয়ার পর আমরা নতুন করে শপথ নিচ্ছি যে আমরা সফল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সরকারের ছিল, কিন্তু তারা তা এড়িয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) ভেবেছিল আমরা নয়াপল্টনে আমাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ করব এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হব এবং তারা সহিংসতার জন্য আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক খেলা করবে।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সরকারকে সহিংসতার সুযোগ না দেয়ায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন ফখরুল ও আব্বাস।
বিএনপির কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এবং দুই দলের শীর্ষ নেতাদের স্বজনরা কারাগারের ফটকে দুজনকে বরণ করে নেন।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ফখরুল সরাসরি বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: এক মাস পর কারামুক্ত ফখরুল–আব্বাস
এর আগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ফখরুল ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাসের জামিনের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।
গত ৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনের শুনানির জন্য রবিবার দিন ধার্য করেন।
ওই মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে একই দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
এ মামলায় গত ৩ জানুয়ারি ফখরুল ও আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।
রাজধানীর বহুল আলোচিত সমাবেশের একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকার একটি আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
বিএনপি অবশ্য ফখরুল ও আব্বাসের অনুপস্থিতিতে সমাবেশের আয়োজন করে এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হবে: নজরুল ইসলাম খান
ফখরুল-আব্বাসের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই
নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিনের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ, তাদের জামিন বহাল থাকবে এবং মুক্তিতে থাকছে না বাধা।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রুল রক্ষণাবেক্ষণের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনের শুনানির জন্য রবিবার দিন ধার্য করেন।
ওই মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে একই দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
৩ জানুয়ারি এ মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসের হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আপিল শুনানি রবিবার
বিএনপির দুই নেতাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসাদুজ্জামান চতুর্থবারের মতো বিএনপি নেতাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।
পরে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকার একটি আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: ফখরুল-আব্বাসকে হাইকোর্টে ৬ মাসের জামিন
ফখরুল-আব্বাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের