অনিয়ম
উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে: ইসি
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও কোনো অনিয়ম হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো কুণ্ঠাবোধ করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছি, সেভাবে উপজেলাও হবে। কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে নিচে নামার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল পদ্ধতি চালু করেছে ইসি
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর পিটিআই ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আওতায় কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে সেটি সবাই দেখবে। উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো দলীয় প্রার্থী থাকছে না এবং দলীয় প্রতীকও নেই। আশা করছি ভোটারের সংখ্যা বাড়বে। এবং নির্বাচন যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এভাবে কখনো প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। ওইদিন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাতিল করার মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানকে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপিও তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখনই আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা এবারও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। আমাদের একটাই চাওয়া- নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। যেখানেই কোনো অনিয়ম হবে, কারচুপি বা অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, আইনের স্বপক্ষে সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। এতে যদি কোনো রকমের বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না নির্বাচন খারাপ হোক। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিভিন্ন বক্তব্যে বিষয়টি উল্লেখও করেছেন। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সব করবেন।’
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম শাখার অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: নারীদের আইসিটিতে দক্ষ করে তুলতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
আইসিএমএবির প্রাক-বাজেট গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়ম, জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বিভিন্ন জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় পৌরসভার নারায়ণপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সকে ক্রেতাদের কাছে রশিদ সরবরাহ না করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনিয়মের অভিযোগে ২ ক্লিনিককে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা
বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স মাহাদী এন্টারপ্রাইজ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়া, অধিক মূল্যে সিলিন্ডার বিক্রির দায়ে আরেক খুচরা বিক্রেতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া খোলা দোকানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিশু খাদ্যে কেমিক্যাল পাওয়ায় চাঁদপুরে ব্যবসায়ীর জরিমানা
যশোরে জেলি ভরা ৩৪০ কেজি চিংড়ি জব্দ, দুই বাস মালিককে জরিমানা
কাজে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
ভাঙন ঠেকাতে যমুনা নদীর বাম তীর বরাবর ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত জিও ব্যাগ দিয়ে নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
দীর্ঘদিন টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ, বলরামপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকা এবং মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে ছিল।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন অনেক কষ্ট করেছেন। নিশ্চিন্তপুর একটি গ্রাম ছিল সেই গ্রাম এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর, জমি হারিয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। আজ তাদের খুশির দিন।
এসময় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে শুরু করে আরিচা ঘাট পর্যন্ত একটি রিংরোড করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) যমুনা পাড়ে জিও ব্যাগ দ্বারা নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাট ও চামড়া খাতে বিনিয়োগে ইইউ ও যুক্তরাজ্যের প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়িত এই প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কাজে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। কেউ অনিয়ময়ে জড়িত থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, আজকে স্থায়ী বাঁধের কার্যক্রম শুরু হলো নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার মাধ্যমে। এরপর সিসি ব্লক দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের শুরু হতে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করার জন্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলায় রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণসহ অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলমান উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই বাঁধের কাজ শুরু করতে না পারা আমার একটা অপূর্ণতা ছিল। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে স্থায়ী বাঁধের কাজটা শুরু করতে পারলাম। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ মোচন হতে চলেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, নদীর পাশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে হয়তো অনেকের জমি লাগতে পারে। যাদের জমি সরকারি কাজে লাগবে ইউএনও'র মাধ্যমে তাদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কাউকে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ করে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
তিনি জানান, করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে পণ্য পরিবহনে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। সরকার সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালে রাখার চেষ্টা করছে।
আহসানুল ইসলাম বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে অতি মুনাফার লোভে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
আসন্ন রমজান মাসে চিনি-তেল এবং খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পবিত্র এই মাসে বিশ্বের সব মুসলিম দেশ পণ্যের দাম কমিয়ে দেয় আর আমরা বাড়িয়ে দেই।
এই প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।
টিটু বলেন, চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলমান রয়েছে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
অনিয়ম-কম ভোটার উপস্থিতির মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ, নিহত ২
দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যালট বাক্স ভর্তি,নানা অনিয়ম ও বিক্ষিপ্ত সহিংসতার মধ্যে দিয়েই রবিবার বিকালে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লায় দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ভোট শেষ হওয়ার পরপরই ভোট গণনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী: ভোট দেওয়ার পর সাকিব
সহিংসতা, ভোটকেন্দ্র দখল ও ব্যালট বাক্স ভর্তি করার অভিযোগে তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
সিলেটের দুই ভোটকেন্দ্রের সামনে 'নির্বাচনবিরোধী স্লোগান' দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ঢাকা সিটি কলেজে ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম জানান, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আগুন
আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
এর মধ্যে ঢাকায় ২৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২৭ শতাংশ, খুলনায় ৩২ শতাংশ, সিলেটে ২২ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২৯ শতাংশ, রাজশাহীতে ২৬ শতাংশ, রংপুরে ২৬ শতাংশ এবং বরিশালে ৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তিনি ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ভাবছেন না। তার দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
ইউএনবির ঢাকা, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, ভোলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনাসহ সারা দেশের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে ভোটকেন্দ্রগুলোতে।
রাজধানীর গুলশান-২ এর গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করে ইউএনবির প্রতিবদেক জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথম তিন ঘণ্টায় ১৩ হাজার নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৫ জন ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম-৩ আসন: জালভোট দেওয়ায় যুবকের ৫ বছর কারাদণ্ড, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি
তবে সকাল ১০টার পর হঠাৎ ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ভোটারের লাইন দেখা যায়।
ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনের উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রথম দুই ঘণ্টায় মাত্র ৫০টি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার লিটন দাস।
তিনি বলেন, 'সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।’
ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-৮ আসনের তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রথম চার ঘণ্টায় মাত্র ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এদিকে ঢাকা-১২ আসনের তেজগাঁও আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুটি বুথে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ৮৯৮ জন ভোটারের মধ্যে ৫০ জন ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা, ২ জনের কারাদণ্ড
ঢাকা-১৮ আসনের উত্তরা হাই স্কুল ও কলেজ এলাকায়ও একই অবস্থা।
ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার তোফাজ্জল হোসেন জানান, পুরুষ ভোটারদের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্র-৩-এ মোট নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ১৫৮ জন হলেও দুপুর ১২টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাত্র ১২০টি ভোট পড়েছে।
তবে ঢাকা-১৬ আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে।
ভোটের প্রথম চার ঘণ্টায় রাজধানীর বাইরেও কম ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সকাল ১০টা পর্যন্ত দিনাজপুরের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তবে নির্বাচন কর্মকর্তারা আশ করছেন কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রভাব কমে গেলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।
এদিকে প্রার্থীদের সমর্থকরা কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
নির্বাচনের প্রথমার্ধে কুমিল্লা, বাগেরহাট, বরিশাল ও হবিগঞ্জে প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সারা দেশে বিক্ষিপ্ত সহিংসতায় একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: সিলেট-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মীরকাদিমের টেঙ্গরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এক সমর্থককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের একাধিক স্থানে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের কালশী-পাহাড়তলী এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
যশোরে ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টা আগে একটি ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণে বাংলাদেশ আনসারের এক সদস্য আহত হয়েছেন।
বরিশাল-৫ আসনেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: আড়াইহাজারের ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ, ভোট গ্রহণ স্থগিত
বরিশাল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে এবং ভোট গ্রহণে বাধা দিচ্ছে।
অনিয়মের অভিযোগ
অনিয়মের অভিযোগে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) আসনের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. বদিউল আলম জানান, ব্যালট জালিয়াতির অভিযোগে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ব্যালট বইয়ের অসংখ্য পাতায় নৌকা প্রতীক দেখানো হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মকর্তারা জানান, কিছু লোক এসে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল দিয়ে চলে যায়।
এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও আসনে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং নরসিংদী-২ আসনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থী অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন 'অবাধ ও সুষ্ঠু', 'কম ভোটদান' আসলে 'ভুল ধারণা': মার্কিন পর্যবেক্ষক
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন দিপু ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী কায়সার আহমেদ জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের জোর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ায় তারা ভোট বর্জন করেছেন।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নরসিংদী-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাকিকুল আলম সেলিম।
বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
দেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন: নরসিংদী-৪ আসনে ভোট কারচুপির অভিযোগে আ.লীগ প্রার্থীর ছেলেকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইসির
বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেছেন আদালত।
এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিমানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সিভিল এভিয়েশনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যুক্ত করতে বলেছেন আদালত।
রবিবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।
আরও পড়ুন: সুজনের হাফিজ-বদিউলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার আবেদন
একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে রবিবার রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করেছে, এমন অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কমিটি গঠন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
জনস্বার্থে গত ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিটটি করা হয়।
রিটে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।
রিটে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতি চরম লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে।
পাইলট হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে বিমানের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যকে। বিমানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এই নিয়োগের তদন্ত চায় বাপা।
এর আগে বিষয়টি তদন্তের দাবি করে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর একটি চিঠি জমা দেয় বাপার নির্বাহী কমিটি। একইভাবে এর প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বিমানের প্রশাসন ও ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের পরিচালকদের কাছে।
পাইলট নিয়োগে অনিয়ম তুলে ধরে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রিকায় বিমানের পাইলট নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
বাপার পর্যবেক্ষণেও দেখা গেছে, নিয়ম ভেঙে পাইলট নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়োগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের প্রধানকে। যার নিজের স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এটি নিয়মের চরম লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: আদালত পরিবর্তন চেয়ে জাপানি দুই শিশুর বাবার আবেদন খারিজ
এদিকে বাপা বলেছে, পাইলট নিয়োগে বিমান ও বাপার মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। তবে নিয়োগের সময় এই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। নিয়োগের সময় বাপার মতামতকে পাত্তা দেওয়া হয়নি।
বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালনার জন্য নতুন করে কোনো পাইলট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে বিমানের পক্ষ থেকে এই উড়োজাহাজের জন্য ক্রু নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়। ক্রুদের বাছাই করে ট্রেনিং দেওয়ার মেইল পাঠানো হয়েছে।
একজন ব্যক্তি ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে বিমানের ফার্স্ট অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি সিম্যুলেটর ট্রেইনিং করেননি। পরবর্তী সময়ে বিমানের খরচে তাকে ট্রেনিং করতে পাঠানো হয়েছে যা সম্পূর্ণ অপচয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিমানের চরম গাফিলতির কারণে বোয়িং-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি এবং পিপিসি নামের দুইটি ট্রেনিং রিটেক করতে হচ্ছে, যা বিমানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ের অন্যতম কারণ। বোয়িং-৭৭৭ এর জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে যা অনৈতিক। এটি সিনিয়র পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অনিয়মের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে বিমান বাংলাদেশ সতর্কতা চিঠি (ওয়ার্নিং লেটার) পেয়েছে। এটি একটি এয়ারলাইনসের জন্য বিব্রতকর বিষয়।
বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মেয়েকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্রেনিংয়ের সময় ওই নারী পাইলটের সাধারণ জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭ এর ট্রেনিং নেওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
বাপা জানায়, বাপা চায় বিমানে দক্ষ পাইলট নিয়োগ দেওয়া হোক। পাইলট নিয়োগে সব নিয়মনীতি মানা হোক, যা বিমানকে উচ্চমানের একটি এয়ারলাইনসে পরিণত হতে সাহায্য করবে। এ জন্য বাপা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করছে।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম, তবে অনিয়মের অভিযোগ নেই: পর্যবেক্ষক দল
সার্ক হিউম্যান মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবিদ আলী জানিয়েছেন, ঢাকা-১৭ আসনের বনানী বিদ্যানিকেতন বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে আশানুরূপ ভোটার উপস্থিত দেখতে পাননি। তবে কোনো প্রার্থীর কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। যারা ভোট দিতে এসেছেন তাদের কোনোভাবে প্রভাবিত করা হয়নি।
সোমবার দুপুরে কেন্দ্রটি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ আবিদ আলী।
তিনি বলেন, আশানুরূপ ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করিনি। যেটা আশা করেছিলাম সেই অনুপাতে হয়নি। তবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়নি।
এই পর্যবেক্ষক বলেন, বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্টের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকেও কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। কোনো প্রার্থী এজেন্টকে ভয়ভীতি দেখানো হয়নি বলে আমাদের তারা জানিয়েছেন।
ঢাকার অভিজাত এলাকার এই আসনটিতে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকালে চারটা পর্যন্ত চলে। তবে সকাল থেকেই ভোটারদের সাড়া কম।
আারও পড়ুন: ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন: হিরো আলম শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন বর্জন করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল
সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন ও ২ পৌরসভার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে ইসি
নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধর, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগে মেম্বারদের মারধর, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের আটজন সদস্য।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা হলেন-১নং ওয়ার্ডের সদস্য পান্না বিশ্বাস, ২নং ওয়ার্ডের সদস্য খন্দকার মঈন উদ্দিন, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য গাজী হাফিজুর রহমান, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আলী ইমাম সরদার, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম, ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য সাধন কুমার বিশ্বাস, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য হোসনে আরা বেগম ও রাজিয়া বেগম।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফখরুল হাসানের কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন: হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতির অভিযোগে শাল্লার ইউএনও প্রত্যাহার
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক গত এক বছর ধরে ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত এলজিএসপি, এডিবি, টিআর, কাবিটা, টিসিবি, ভিজিডি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছাচারিতা করে নিজের ইচ্ছামতো ও পছন্দের লোক দিয়ে বাস্তবায়ন করছেন এবং এসব প্রকল্পের অর্থ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব কাজে পরিষদের আটজন সদস্যকে কখনও ডাকা হয় না। মাসিক মিটিং বা রেজুলেশনও করা হয় না। পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্সের ট্যাক আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব সদস্যদের সই জাল করে নিজ স্বার্থ হাসিল করে থাকেন।
মেম্বার আলী ইমাম সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘এসব অন্যায়ের প্রতিবাদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার ( ৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রুখালী বাজারে আলমের চায়ের দোকানে কয়েকজন মেম্বার কথা বলছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা মারধর করে। এ সময় মেম্বার সাধন বিশ্বাসের মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনায় আমরা সবাই সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। পরদিন আটজনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করি। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করে যাচ্ছি। অভিযোগকারী মেম্বাররা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে আর্থিক ভাগবাটোয়ারার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি ভোগ করতে রাজি আছি। মেম্বারদের ওপর হামলার বিষয়ে বলেন, তাদের অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দল বা মাদককে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ তারা যেখানে ছিল সেটা মাদকের আখড়া। হামলার বিষয়টি ভালো জানা নেই।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বরত উপ-পরিচালক মো. ফখরুল হাসান বলেন, ‘বিছালী ইউনিয়নের আটজন সদস্য উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দুদকের তলব
ফখরুলের টিকা দুর্নীতির অভিযোগ কাল্পনিক: কাদের
দুর্নীতি, অনিয়ম করে নিয়ন্ত্রণহীন সরকার দুর্ভিক্ষের কথা বলছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার আগামী বছর দেশে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, কারণ তার সরকার ‘অনিয়ম’ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনসহ কিছুই এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই।
মঙ্গলবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফখরুল বলেন, আমরাও বুঝতে পারছি না তিনি কেন এমন বলছেন এবং সমস্যাটা কোথায়?
তিনি বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে সরকার দাবি করেছিল দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ‘এখন আবার কী ঘটেছে যার জন্য তারা আশঙ্কা করছে যে দেশ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হবে? আসল কথা হল প্রতিটি সেক্টর এবং সব জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি। এবং তারা এখন আর এটা সামাল দিতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের
নবীনগরে পাড়ের মাটি কেটেই খাল খনন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল বাজারে খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খালের তলদেশ খনন না করে শুধু পাড়ের মাটি কেটে প্রস্থ বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খালপাড়ের বাসিন্দারা।
সেই মাটি আবার খালের পাড়েই ফেলার কারণে আসন্ন বর্ষায় মাটি ধ্বসে ফের খাল ভরাট হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে কোন লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন: সালথায় পাউবোর খাল পুনঃখনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ
বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, 'দেশের ৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় আমাদের এখানে খাল খনন করতে প্রায় ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বড়াইল, খারঘর ও জালশুকা এই তিনটি গ্রামের প্রায় ৩০ একর কৃষি জমিতে পানি সেচ এবং খরা মৌসুমে খালে পানি সংরক্ষণের জন্য এই খালটি পুনঃখনন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু খাল খননের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের এম/এস এম রহমান এন্টারপ্রাইজ নিজেরা কাজ না করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আল-আমিন নামের এক ঠিকাদারের সঙ্গে এটি খননের ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হন।
তিনি বলেন, ভৈরবের ঠিকাদারও নিজেরা কাজ না করে স্থানীয় খারঘর গ্রামের ব্যবসায়ি মুজিবুর রহমানকে খাল খননের দায়িত্ব দেন। এভাবে হাত বদলের পর দায়সারাভ খনন কাজ করে নদীর পানি খালে ছেড়ে দেয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টদের নির্লিপ্ততা ও খামখেয়ালির কারণে খননকাজ ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, 'সরকারের এই টাকা যে জলে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে অসময়ে যমুনার ভাঙনে বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালটি খননের ক্ষেত্রে নিয়মের ধার-ধারেনি ঠিকাদার। পাউবোর লোকজন সঠিক সময়ে খনন কাজও তদারকি করেনি। বড় আকারের ভেকু মেশিনের সাহায্যে খনন করার কথা থাকলেও ছোট মেশিনে খনন করে মাটি উত্তোলন করে দূরে না ফেলে পাড়েই রেখে দেয়ায় সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই কিছু কিছু অংশের মাটি ধ্বসে গেছে।
গত ২৭ মে খাল পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রঞ্জন কুমার দাসসহ অন্য দুজন প্রকৌশলী।
রঞ্জন কুমার দাস বলেন, 'স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সার্ভে করা হয়। খাল খনন প্রকল্পের শিডিউলে ২০০০ ঘনমিটার মাটি কাটার কথা উল্লেখ আছে, কিন্তু সার্ভেতে ১৬০০ ঘনমিটার পাওয়া গেছে। মাটি কম কাটার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।'
আরও পড়ুন: দাকোপে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে নদী-খাল খননের দাবি
বড়াইল গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, 'যারা কাম করছে তারা কইছিল পরে পাড়ের মাডি দূরে সরাইয়া খাল আরও গভীর কইরা দিবে। কিন্তু তারা এইডা না কইরা নদীরপানি হালে (খাল) ছাইড়া দিছে।'
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে খনন কাজে নিয়োজিত মুজিবুর রহমান বলেন, ‘খাল খননের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।’
এলাকার একটি কুচক্রী মহল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।
সালথায় পাউবোর খাল পুনঃখনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ
ফরিদপুরের সালথায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতায় দুটি খাল পুনঃখননের কাজ শুরু হলেও কাজের মান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
খনন যন্ত্র নিয়ে (এসকেবেটর) খাল খনন করে মাটি ফেলানো হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমিতে। এতে সোনলি আশ নামে খ্যাত জমিতে থাকা পাটের ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পাট চাষিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, খরা মৌসুমে খালে পানি সংরক্ষণ ও কৃষি জমিতে পানি সেচের জন্য ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সমন্বিত পানি ব্যবস্থা প্রকল্প’র অধীনে গত ২৯ এপ্রিল থেকে পাউবোর উদ্যোগে এ দুটি খালের পুনঃখনন কাজ শুরু হয়।
উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের সিংহপ্রতাপ এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িদিয়া নদী থেকে বাইনাখালি পর্যন্ত ১ হাজার ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট রাজাবাড়ি খাল এবং মোড়হাট এলাকা দিয়ে বয়ে যওয়া কুমার নদী থেকে দীঘের বিল পর্যন্ত ১ হাজার ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্য কেষ্টখালি খালের খননকাজ চলছে। এ খনন কাজ বাস্তবায়ন করছেন কুমিল্লার ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স সারা এন্টারপ্রাইজ।
খাল দুটি পুনঃখনন কাজের জন্য ৬৩ লাখ ৬২ হাজার ৪০২ টাকায় বাস্তবায়ন করার কথা তাকরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ৪১ ভাগ ছাড়ে কাজটি নিয়েছেন ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৮১৮ টাকায়। এ খনন কাজ আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা। তবে গতকাল ৩০ মে পর্যন্ত ওই কাজের ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন এ কাজের তদারকিতে নিয়োজিত পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।
গট্টি ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য দ্বয় মোশাররফ হোসেন ও শাহজাহান মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, রাজাখালি ও কেষ্টখালি খাল খনন কাজ করা হচ্ছে দুটি খনন যন্ত্র দিয়ে। কাজের সাইডে প্রকল্পের ঠিকাদার বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো তদারকি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায় না। কেষ্টখালি ও রাজাবাড়ি খাল খননে উপরে প্রস্থ ৪৪ থেকে ৪৫ ফিট করে কাটার কথা থাকলেও বাস্তবে কোথাও কোথাও ২৫ থেকে ৩৫ ফিট করে কাটা হচ্ছে। খালের তলায় প্রস্থ ১৩ থেকে ১৬ ফিট করে কাটার কথা থাকলেও এটিও ১০ থেকে ১২ ফিট করে কাটা হচ্ছে। খাল দুটির গভীরতা সাড়ে ৩ ফিট থেকে ৮ফিট করে খনন কথা থাকলেও বাস্তবে গভীর করা হচ্ছে ২ থেকে ৪ ফিট।
উভয় খালের দুই পাড়ে বসবাসরত বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারা গোছের কাজ করে খালের মাটি ফসলি জমিতে ফেলানোয় পাট, বেগুন-মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। খালের পাড় অত্যন্ত খাড়া করে কাটা হয়েছে। খননের শুরুতেই খালের পাড়ে এলোমেলো করে মাটি রাখা হয়েছে। তাতে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধসে আবার খাল ভরে যাবে।
অভিযোগ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজন সঠিক সময়ে তা পরিদর্শন করছেন না।
গট্টি ইউনিয়নের কাউলিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক এসকেন মাতুব্বর (৩৯) কেষ্টখালী খালের পাড়ে কৃষকদের ২০ বিঘা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১০ বিঘা জমির পাট খালের কাটা মাটির কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
মেম্বার গট্টি গ্রামের বাসিন্দা মো. ওহেদুজ্জামান (৩১) জানান, তার দুই বিঘা জমির ফসল কেষ্টখালী খাল কাটার মাটির নিচে চাপা পড়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেষ্টখালী খালের মাটি রাখার জন্য ওই এলাকার অন্তত ১০ বঘিা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
একই অভিযোগ এসেছে রাজাবাড়ী খাল খনন এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে।
সিংহ প্রতাপ গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম (৪৩) বলেন, রাজাবাড়ী খালের মাটির কারণে তার ১৪ কাটা জমির বেগুন গাছ চাপা পড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ওই খালের মাটি রাখার জন্য ওই এলাকার অন্তত আট বিঘা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
খাল দুটির খনন কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, খালের গভীরতা শিডিউল অনুযায়ী শতভাগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে খালের পাশের কিছু জায়গায় ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় শিডিউল অনুযায়ী চওড়া করা যায়নি। কোন কোন জায়গায় কিছু কম করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ কাজ তদারকি করে ওয়াটার বোর্ড টাক্স ফোর্স। আমি একশ ভাগ কাজ করলেও তারা ৯৫ ভাগের বেশি বিল দেয় না।’
কম টাকায় কাজ নেয়ার বিষয়ে ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি ব্যবসার দিকে তাকিয়ে কাজ নেইনি, জেদ করে এবং অন্যকে নিতে দেব না এই মনোভাব নিয়ে কাজ নিয়েছি। খালের মাটি রাখায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। কেননা এ খাতে কোন টাকা বরাদ্দ নেই।’
এই প্রসঙ্গে ফরিদপুর পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অতনু প্রামাণিক বলেন, ‘পাউবো কাজের তদারকি করছে না এ অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি নিজে, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পাউবোর কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, আপাত দৃষ্টিতে খালের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা সঠিকভাবে করা হচ্ছে বলে তাদের মনে হয়েছে। তবে বিল দেয়ার আগে শিডিউল অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়া হবে। কাজ সিডিউল অনুযায়ী না হলে বিল দেয়া হবে না।
অতনু প্রামাণিক বলেন, খালের মাটি পাশের জমিতেই রাখাতে হবে। তবে মাটির পরিমাণ কম বলে আমরা ইউএনকে দিয়ে জমি ইজারা নেয়ার উদ্যোগ নেইনি।’