ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাবিতে শাটল বাস পুনরায় চালু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকদের জন্য ক্যাম্পাসে শাটল বাস সার্ভিস পুনরায় চালু করা হয়েছে। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।
এ সময় ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বাস সার্ভিস শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য এবং ক্যাম্পাসেই এ সেবা দেয়া হবে।
সময়সূচি অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টায় ও দুপুর ২টায় প্রশাসনিক ভবন থেকে কলাভবন, টিএসসি, কাজী মোতাহার হোসেন ভবন, মোকাররম ভবন হয়ে কার্জন হল পর্যন্ত যাবে শাটল বাস এবং সকাল ১১টায় ও দুপুর আড়াইটায় কার্জন হল থেকে মোকাররম ভবন, কাজী মোতাহার হোসেন ভবন, টিএসসি, কলাভবন হয়ে প্রশাসনিক ভবনে ফিরে আসবে।
এছাড়া অন্য রুটে শাটল বাস সকাল ১১টায় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট থেকে কার্জন হল পর্যন্ত যাবে এবং দুপুর ২টায় কার্জন হল থেকে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ফিরে আসবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (২) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘অনেক আগে এই সার্ভিস চালু থাকলেও কোনো কারণে বন্ধ ছিল। এখন আমরা আবার সেবাটি পুনরায় চালু করেছি।’
আরও পড়ুন: ঢাবিতে বিবাহিত ছাত্রীদের হলের সিট বাতিলের বিধান বাতিলে লিগ্যাল নোটিশ
ঢাবি গ্রন্থাগার: পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
সঞ্জীব চৌধুরীর কবিতা সমগ্র ‘তোমাকেই বলে দেব’ প্রকাশিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে অবস্থিত সঞ্জীব চত্বরে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলা ‘দশম সঞ্জীব উৎসব’। প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী ও সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে ২০১০ সাল থেকে এই আয়োজন করে আসছে ‘সঞ্জীব উৎসব উদযাপন পর্ষদ’।
এবারের উৎসবে প্রকাশিত হয়েছে সঞ্জীব চৌধুরীর গান কবিতা সমগ্র ‘তোমাকেই বলে দেব’। জয় শাহরিয়ারের সংকলন ও সম্পাদনায় বইটিতে সঞ্জীব চৌধুরীর প্রকাশিত সব লিরিক স্থান পেয়েছে এক মলাটে। বইটি প্রকাশ করেছে আজব প্রকাশ।
প্রতিবারের মতো এবার পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল গানের আয়োজন। উৎসবে গান করেছেন শুভযাত্রা, জয় শাহরিয়ার, সাবকনশাস, বে অফ বেঙ্গল, সাহস মোস্তাফিজ, লালন মাহমুদ, সুহৃদ স্বাগত, দুর্গ, ইন্ট্রোয়েট ও ব্যান্ড বিস্কুট।
আরও পড়ুন: ২০ বিভাগে দেয়া হলো ‘টিএম রেকর্ডস-সিজেএফবি পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২০’
সঞ্জীব উৎসবের অন্যতম আয়োজক সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ার। এই উৎসব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সঞ্জীবদা নেই আজ প্রায় ১৪ বছর। তাকে ভালোবেসে এই উৎসবের আয়োজন। আজ দশ বছর পেরেয়ে যা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। দাদাকে ভালোবাসার মানুষগুলো এক হওয়ার একটি জায়গা পেয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য দাদাকে যারা কাছে পায়নি, তাদের কাছে তার গান ও দর্শন পৌঁছে দেয়া।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন শিল্পী, লেখক ও সাংবাদিক। তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে, আমি তোমাকেই বলে দেব, রঙ্গিলা, সমুদ্র সন্তান, জোছনা বিহার, তোমার ভাঁজ খোলো, চাঁদের জন্য গান, স্বপ্নবাজি, গাড়ি চলে না, বায়োস্কোপ, কোন মিস্তরি নাও বানাইছে।
পড়ুন: ১৫ ব্যান্ডের জমকালো আয়োজনে শেষ হলো ‘ঢাকা রক ফেস্ট ২.০’
ঢাবিতে বিবাহিত ছাত্রীদের হলের সিট বাতিলের বিধান বাতিলে লিগ্যাল নোটিশ
অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না এবং বিবাহিত হলে তা কর্তৃপক্ষকে না জানালে ছাত্রীর হলের সিট বাতিল হবে-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলের এমন বিধান বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক এ সংক্রান্ত বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করা হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শিশির মনির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ও শামসুন নাহার হলসহ তিনটি ছাত্রী হলের প্রভোস্ট বরাবর বুধবার এই নোটিশ পাঠান।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রকে নির্যাতনের দায়ে সিফাতকে হল থেকে বহিষ্কার
শিশির মনির জানান, কে বিবাহিত আর কে অন্তঃসত্ত্বা, হলে থাকার অধিকার তো এটার ওপর নির্ভর করে না। এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও নারীদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক বিধান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা, হলে থাকার ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করে কিনা সেটাই বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু এখানে বিবেচ্য বিষয় যেটি করা হয়েছে, সেটা সিরিয়াসলি ডিসক্রিমেনেটরি। এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের ক্লিয়ার ভায়োলেশন।
এদিকে ছাত্রী হলের এই নিয়ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে এই নিয়মের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাবির উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
আইনজীবীর পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে তিনি জানতে পারেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার কারণে কতিপয় ছাত্রীর আবাসিক সিট বাতিল করা হয়েছে। আইনি নোটিশে বলা হয়, শামসুন নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও অন্যান্য শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ১৬ বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তাঁর সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না। নোটিশে আরও বলা হয়, ওই বিধানের কারণে কার্যত বিবাহিত ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
আরও পড়ুন: ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবাহিত ছাত্রীদের হল ছাড়ার নোটিশ স্থগিত
ঢাবি ছাত্রকে নির্যাতনের দায়ে সিফাতকে হল থেকে বহিষ্কার
ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সিফাত উল্লার কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম, সম্মান ও আইন বিরুদ্ধ হওয়ায় হল কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বলে রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যদি সিফাতকে পরবর্তী সময়ে হলে অবস্থান করতে দেখা যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে হলের ৩৫১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে কাজী পরশ মিয়া নামে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন সিফাত উল্লাহ।
ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী পরশ মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ ঘটনা তদন্ত করতে দ্রুত কমিটি গঠন করে হল কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দিন সন্ধ্যায় পরশ মিয়া মো. মাহমুদুর রহমান নামে এক ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীকে ৩৫১ নম্বর কক্ষে ফোনের চার্জার দিতে গেলে সিফাত তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে উদ্যত হন।
এ সময় মাহমুদুর সিফাতকে নিবৃত করেন এবং শাকিল হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী তাকে বাইরে নিয়ে আসেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ৭ জুলাই অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে--রোকেয়া গাজী লিনা ও আসাদুজ্জামান প্রান্ত-- নির্যাতনের দায়ে সিফাতকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর, সিফাত আরিফুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম নামে আরও দুই ছাত্রকে হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য নির্যাতন করেন এবং তা না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় বলেন জানা গেছে।
পরে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটাবে না বলে মুচলেকা দেয় সিফাত। তবে তিনি এ অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন বলে জানান হল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ঢাবির সূর্যসেন হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, অভিযুক্ত সেই সিফাতই
ঢাবির এফ রহমান হলে ৫ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
আলাদিনের প্রদীপ থেকে টাকা ফেরতের দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ই-কমার্স প্লাটফর্ম আলাদিনের প্রদীপ ডট কমে পরিশোধের পরও পণ্য সরবরাহ না করায় দ্রুত টাকা ফেরত দেয়ার দাবিতে রবিবার মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ শিক্ষার্থীরা এই ই-কমার্স প্লাটফর্মটির মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসা করছিলেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিতর্কিত এ ই-কমার্স প্লাটফর্মকে ক্রেতাদের পক্ষে তারা অর্থ পরিশোধ করেন। তবে টাকা নিলেও পণ্য সরবরাহ করেনি কোম্পানিটি।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আলাদিনের মাধ্যমে জমা দেয়া টাকা জব্দ করা হয়। এরপর থেকে কোম্পানিটির মাধ্যমে দেয়া টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় শিক্ষার্থীদের মাঝে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাওন সরকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা লকডাউনের মাঝে অর্থ উপার্জন ও পরিবারকে সহযোগিতা করতে এই ই কমার্স প্লাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হই।’
বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিক বিপু বলেন, ‘আমরা খুবই শোচনীয় অবস্থায় আছি।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যাংক হিসাব আনফ্রিজ এবং মার্চেয়েন্টদের দেয়ার জন্য তাদের পেমেন্ট দেয়ার দাবি জানান।
এছাড়া তারা আলাদিনের প্রদীপের টাকা গেটওয়ে থেকে মুক্ত করা এবং ই-কমার্সের জন্য সুষ্ঠু ব্যবসায় পরিবেশ করতে টেকসই নিরাপত্তা নীতি গ্রহণেরও দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন: আতশবাজির ঝলকানিতে শেষ হলো ঢাবির শতবর্ষ উদযাপন
করোনায় ঢাবি অধ্যাপকের মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংস্কৃত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ফয়েজুন্নেছা বেগম করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনা পজেটিভ আসার পর ১০ ডিসেম্বর থেকে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রবিবার এক শোক বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, অধ্যাপক ড. ফয়েজুন্নেছা বেগম ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, সজ্জন ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন একজন শিক্ষক ও গবেষক। সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ৪, শনাক্ত ১২২
ঢাবির সূর্যসেন হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, অভিযুক্ত সেই সিফাতই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা সূর্যসেন হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে না যাওয়ায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সিফাত উল্লাহ নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী কাজী পরশ মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হলের ৩৫১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান সিফাত উল্লাহ এবং সেখানে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।
পরশ বলেন, ‘দুদিন আগে সিফাত আমাকে ছাত্রলীগের এক কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য বলেন কিন্তু আমার সে দিন পরীক্ষা থাকায় যেতে পারিনি।’
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘সোমবার আমি তাঁর কক্ষে গেলে তিনি আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।’
আরও পড়ুন: ঢাবির আবাসিক হলের ক্যান্টিনের দেয়াল ধসে আহত ২
পরশ জানান, তিনি হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অনলাইনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি শুনেছি এ ঘটনা। তবে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’
সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তের জন্য জ্যৈষ্ঠ হাউস টিউটর অধ্যাপক আহমদ উল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
হলের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সিফাতের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ঢাবির এফ রহমান হলে ৫ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এর আগে ৮ নভেম্বর, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের ছাত্র সিফাত আরিফুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম নামে আরও দুই ছাত্রকে হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য নির্যাতন করে এবং তা না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় বলেন জানা গেছে।
তবে এটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ছিল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন ভুক্তভোগীরা।
তবে এখানেই শেষ নয় সিফাতের নির্যাতনের কাহিনী!
২০১৮ সালের ৭ জুলাই অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দুই শিক্ষার্থী রোকেয়া গাজী লিনা ও আসাদুজ্জামান প্রান্তকে নির্যাতনের দায়ে সিফাতকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাবির দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন!
দেশভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়: শাবিপ্রবি উপাচার্য
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। পরবর্তীতে ৭০'র নির্বাচনে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সকল আন্দোলনের সূতিকাগার। আর একাত্তরে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই অপারেশন সার্চ লাইটের নামে মাটিতে মিশিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।’
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, ‘দীর্ঘ নয়মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানিদের শেষ ষড়যন্ত্র ছিল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা। জাতিকে মেধাশূন্য করতে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পথ বেছে নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৯৫১ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের জীবনদানকে নতুন প্রজন্মের উচিৎ কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা।’ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগকে দেশপ্রেমে উৎসাহিত করে ভবিষ্যত বাংলাদেশকে স্বনির্ভরভাবে নেতৃত্ব দানে তরুণ প্রজন্মের সর্বদা কাজ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন: ‘টোটাল সাস্ট’ প্রকল্পে শাবিপ্রবি হবে পেপারলেস ডিজিটাল ক্যাম্পাস: উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহম্মদ মহিবুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. জহির বিন আলম, অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর প্রমুখ।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে দিবসটি পালন শুরু হয়। এরপর সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়া সন্ধ্যায় বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু চত্বর ও চেতনা-৭১ এ মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা: শাবিপ্রবি উপাচার্য
‘চিন্তাশীল চলচ্চিত্রের বিকাশে প্রয়োজন নতুন চলচ্চিত্র আন্দোলন’
চিন্তাশীল চলচ্চিত্র রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি করে। আর এ ধরনের চলচ্চিত্র বিকাশে নতুন একটি চলচ্চিত্র আন্দোলনের প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ।
এছাড়া এ জন্য সরকারি আগ্রহ প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে চিন্তাশীলতা ও রাজনৈতিক সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক জুনাইদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ চিন্তাশীল চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে কতখানি সফল তা বিশ্লেষণ করা জরুরি।
তিনি বলেন, চলচ্চিত্র তখনই চিন্তাশীল হয়ে ওঠে যখন একজন নির্মাতা নান্দনিকভাবে আকর্ষণীয় এবং নতুন নির্মাণশৈলী বা চলচ্চিত্র ভাষার মাধ্যমে ভাবনার গভীরতা আছে এমন একটি কাহিনী উপস্থাপন করেন। এ ধরনের চলচ্চিত্রে বিষয়বস্তু এবং নির্মাণশৈলী দুই দিকেই চিন্তার গভীরতা ও সৃজনশীলতার প্রয়োজন। গতানুগতিক কাঠামো ও পদ্ধতির ওপর নির্ভরতা রেখে এমন ছবি নির্মাণ করা যায় না। চিন্তাশীল চলচ্চিত্র তাই বাণিজ্যিক লাভ অর্জনের লক্ষ্যকে প্রাধান্য দেয়া হয় না।
তিনি বলেন, ‘এমনকি সত্যজিৎ রায়কে শুনতে হয়েছিল ৮০ বছরের বৃদ্ধা মহিলাকে ছবিতে দেখার জন্য কে আসবে- এমন নানা কথা। কয়েকবার অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল “পথের পাঁচালী” নির্মাণের কাজ। কিন্তু সত্যজিৎ রায় উঁচু শৈল্পিক মান অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেননি।’
বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা যেমন রাজনৈতিক দুর্নীতি, সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও অসহিষ্ণুতা, ইতিহাস জানার প্রতি অনাগ্রহ, নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ক্ষমতাধরদের লেজুড়বৃত্তি এসব বিষয় নিয়ে কোনো সিনেমা হচ্ছে বা রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে কি না এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আলমগীর কবিরের ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্যকন্যা (১৯৭৬), রূপালি সৈকতে (১৯৭৯) চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ করে ড. জুনাইদ বলেন, এ চলচ্চিত্রগুলোতে সে সময়ের দেশে বিদ্যমান দ্বিধা ও হতাশা, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর দুর্বল অবস্থান, সামরিক শাসনের অধীনে নাগরিকদের মত প্রকাশের সুযোগ না থাকা, রাজনৈতিক প্রতিবাদ প্রভৃতি পরিস্থিতি তুলে ধরে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
এ সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. জিয়া রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভুইয়া।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অগভীর স্ক্রিপ্ট থেকে সিনেমা নির্মাণ করে অর্থ উপার্জনের চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক সিনেমা নির্মাণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জের ফুয়াদের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত!
অনন্য মামুনের পরিচালনায় নিরব-মিথিলার চলচ্চিত্র ‘অমানুষ’-এর শুভমুক্তি ডিসেম্বরে
ক্যামেরার চোখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ
দেশের সবচেয়ে প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি এ বছর শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাস সেজেছে বর্ণিল সাজে। আয়োজিত হচ্ছে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারপার্সন হাবিবা রহমান বলেন, এ প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জমা দেয়া ১৮ শতাধিক ছবি থেকে বাছাই করা সেরা ১০০ ছবি স্থান পেয়েছে।
আর এ সেরা ১০০ ছবি থেকে আমরা ১০ টি ছবি নিয়ে আলোকপাত করেছি যা দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, প্রকৃতি ও আবেগের প্রতিনিধিত্ব করে।
আরও পড়ুন: ঢাবি কর্তৃপক্ষকে একাডেমিক মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
বাংলাদেশ
আলোকচিত্রী: মো. রবিউল হোছাইন, উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ
ছবিটি তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ডিন কার্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে। বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁক পরিবর্তনকারী কয়েকটি ঘটনার সাক্ষী এ স্থানটি। শিব নারায়ণ দাসের নকশা করা মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথম এ স্থানেই উত্তোলিত হয়। তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আব্দুর রব স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে এ পতাকা উত্তোলন করেন।