মাস্ক
লকডাউন লঙ্ঘন: নেত্রকোনায় ১১৪টি মামলা, জরিমানা আদায়
নেত্রকোণায় লকডাউন লঙ্ঘনের দায়ে ১১৪টি মামলা ও ৮১ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই মামলাগুলো দায়ের ও জরিমানা আদায় করা হয়।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করলেও প্রথম দিন নেত্রকোণায় সকাল থেকে ঢিলেঢালা ভাব চলছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জেলা শহরে জন-সাধারণের ভিড় ছিল লক্ষনীয়। প্রতিদিনের মতোই হাট-বাজারগুলোতে ছিলো না কোন সামাজিক দূরত্ব। বাজার করতে আসা লোকজনের মধ্যে ছিল না কোন সচেতনতা। খুব অল্প সংখ্যক মানুষের মুখে ছিল মাস্ক। জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও সকাল থেকে লকডাউন উপেক্ষা করেই স্বল্পসংখ্যক অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, ব্যাক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় একদিনেই সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যু
বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাল্টে যায় দৃশ্যপট। লকডাউন সফল করতে প্রশাসন ও আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে। জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি, বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া, সেনাবাহিনীর মেজর লেলিন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সেলিম মিয়া, পৌর মেয়র আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম খানসহ প্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় লকডাউন পালনে কিছুটা উন্নতি হতে থাকে।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজি মোঃ আবদুর রহমানের নির্দেশে বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত লকডাউন লঙ্ঘনের দায়ে ১১৪টি মামলা দায়ের করে ৮১ হাজার ৮ শ ৫০ টাকা জরিমানা আদায় করে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলা: বাংলাদেশকে আরও ৯০ কোটি টাকা দেবে সুইজারল্যান্ড
এদিকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও রেড ক্রিসেন্ট থেকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এবং এই ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে মানুষকে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন।
লকডাউন: বাগেরহাটে মাস্ক ব্যবহার না করায় ৪৯ জনের জরিমানা
বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের লকডাউন চলছে। এছাড়া মাস্ক ব্যবহার না করায় ৪৯ জনের জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে জেলার ৯ উপজেলার সর্বত্রই সাত দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত বাগেরহাটে এই লকডাউন চলবে।
আরও পড়ুন: নকল মাস্ক: শারমিনকে অব্যাহতির আবেদন করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, বিধি নিষেধ ভঙ্গ করলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, জেলার প্রবেশদারগুলোতে পুলিশি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। অতিজরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে প্রবেশ ও বাহির হতে দেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকা এবং সড়ক ও মহাসড়কে পুলিশ টহল দিচ্ছে। জারি করা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ কাজ করছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যলয় সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য বিধি ভঙ্গ এবং মাস্ক ব্যবহার না করায় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৪৯ জনকে অর্থদন্ড করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ২৪ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ প্রতিরোধে শেরপুরে মাস্ক বিতরণ, জরিমানা
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজন ও উপসর্গ নিয়ে দুই জন মারা গেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনায় মোট মারা গেছে ৭৪ জন। জেলায় নতুন করো করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ৭৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২,৮৬৬ জন। আক্রন্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ২০৩৪ জন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে ১৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪৬ শতাংশ।
নকল মাস্ক: শারমিনকে অব্যাহতির আবেদন করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা থেকে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানকে অব্যাহতির আবেদন করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: করোনা: মাস্ক পরা নিশ্চিতে রাজধানীতে শিগগির ভ্রাম্যমাণ আদালত
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মোর্শেদ হোসেন খান গত ২৮ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: গুলশানে ডিএনসিসি’র ভ্রাম্যমাণ আদালত, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
এর আগে বিএসএমএমইউয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালীন) উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার নির্দেশে গত বছরের ২৩ জুলাই রাতে শাহবাগ থানায় শারমিনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন প্রক্টর মোজাফফর আহমেদ।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বরিশালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
মামলা থেকে জানা যায়, বিএসএমএমইউয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয় গত ৪ জুলাই থেকে। সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচে যারা মাস্ক সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের দেয়া এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
নেত্রকোণায় সীমান্তবর্তী দুই উপজেলায় কঠোর বিধিনিষেধ
করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তবর্তী দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় নেত্রকোণায় ১৮ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে দূর্গাপুরেই ৯ জন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার থেকে ৭ জেলায় ‘লকডাউন’
রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বিধিনিষেধ জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েকদিন ধরে সীমান্তের দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, সীমান্ত এলাকায় ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর বন্ধ রাখতে হবে। দুই উপজেলার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ নিজ বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়া জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা
মৃতদেহ সৎকার বা জরুরি চিকিৎসা সেবায় মাস্ক পরে, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ জীবাণুনাশক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দিনের বেলা কাঁচাবাজারগুলো উম্মুক্ত স্থানে নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য আমরা কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলায় বিধিনিষেধ দিয়েছি। কোথাও করোর করোনা শনাক্ত হলে আমরা তাকে দ্রুত হোম কোয়ারেন্টাইন অথবা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করছি। আশপাশের এলাকায় বিধিনিষেধ দিচ্ছি, যাতে এটা বেশি না ছড়াতে পারে।’
খুলনায় এক উপজেলা ও তিন থানায় ৭ দিনের ‘কঠোর লকডাউন’
খুলনার রূপসা উপজেলা ও খুলনা মহানগরীর তিনটি থানা এলাকায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
খুলনায় সার্বিকভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে জনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনসমাগমের স্থানসমূহ বিবেচনায় নিয়ে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে করোনা সংক্রমণের আধিক্য বিবেচনায় রূপসা উপজেলা, খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা এবং খালিশপুর থানায় জরুরি সেবা ব্যতীত সকল দোকান এবং জনসমাবেশের স্থান ৪ জুন থেকে আগামী এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
রূপসা উপজেলাসহ খুলনা মহানগরীতে সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, হোটেলগুলোতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং যত্রতত্র একাধিক লোকের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেবে।
এসময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায়, স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং জোরদার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে প্রচার-প্রচারণা চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
সভায় সিটি মেয়র বলেন, 'সার্বিকভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে খুলনার স্বাস্থ্যবিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্ধ্যার পর একাধিক লোকের জনসমাগম বন্ধ করতে হবে।'
তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সর্বক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মসজিদের ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগ
উল্লেখ্য, রূপসা উপজেলাতে করোনা সংক্রমণের হার শতকরা ৪ দশমিক ১৮। কিন্তু অন্যান্য উপজেলাতে এই হার শতকরা প্রায় এক ভাগ। এছাড়া খুলনা মহানগরীর সদরে সংক্রমণ হার শতকরা ৩৫, খালিশপুরে ২৫ এবং সোনাডাঙ্গাতে এই হার শতকরা ১৭। তবে অন্যান্য স্থানে সংক্রমণের হার নিম্নগামী।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন এবং খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুরে ৭ দিনের লকডাউন
এছাড়া খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল হাসান, মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইউসুপ আলী, সরকারি কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগ
দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও খুলনা জেলাসহ বিভাগে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে ও ভারতে করোনা প্রকোপ থাকায় এ বিভাগকে করোনা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
সার্বিকভাবে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে খুলনা অন্যান্য বিভাগ থেকে ভালো অবস্থানে আছে বলে দাবি স্বাস্থ্য বিভাগের। কিন্তু ব্যবসায়ী ও নাগরিকদের দাবি ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এখনও মাস্ক ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যায়নি।
খুলনার ব্যবসায়ী আজমল উল্লাহ বলেন, ‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে কেনাকাটা নিয়মিত থাকতো। সেক্ষেত্রে একসঙ্গে চাপ পড়তো না। বন্ধ রাখার পর হঠাৎ খুলে দেওয়ায় চাপ বেড়ে যায় যা করোনা ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: দেশে আরও ৩৮ প্রাণহানি, শনাক্ত ৭.৯১ শতাংশ
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর খুলনার আহ্বায়ক এডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, ‘সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে লোকজনের খুলনায় আসা, প্রতিরোধে দায়িত্বশীল বিভাগের মধ্যে সমন্বয় না থাকা এবং অসচেতনতার কারণে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাজার, দোকানপাট সব কিছু খুলে দিয়ে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ওয়ার্ড ও এলাকাভিত্তিক তালিকা করে একদিন এক এক ওয়ার্ড বা এলাকার লোকজনকে বের হতে না দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা কিন্তু ঘরে আটকে নেই। তাহলে এভাবে কী লাভ হচ্ছে। করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্তগুলো সমন্বিত হওয়া দরকার।’
আরও পড়ুন: ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকার সুযোগ আছে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ড. রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘খুলনা বিভাগ রাজশাহী বিভাগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। শুধু ভারতের করোনা প্রকোপের কারণে সীমান্ত সংলগ্ন কয়েকটি জেলা থাকায় খুলনাকে ঝুকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। বাস্তবে খুলনা বিভাগে করোনা পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে আছে।’
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘এপ্রিল মাসে খুলনা জেলায় গড়ে ২৩ শতাংশ করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। কিন্তু মে মাসে এখনও করোনা পজিটিভ ২০ শতাংশ পার হয়নি। এ হিসাবে খুলনা জেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। মাঝে মাঝে পজিটিভ শনাক্তের হার সামান্য বেড়ে যায়। সেটা অসচেতনতার কারণে হয়। এখনও বাজার, দোকান, সড়কে মাস্ক ছাড়া লোকজনকে ঘুরতে দেখা যায়। আমরা এ বিষয়ে কঠোর হচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ কোটি ৯২ ছাড়ালো
তিনি বলেন, ‘খুলনায় স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে চমৎকার সমম্বয়ে রয়েছে। ফলে খুলনায় এখনও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আরও ১০৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা জানান।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন খুলনার ২ জন, সাতক্ষীরা , চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুরে একজন করে।
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ২৯ মে সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৫৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩৩ জনে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১ হাজার ২০৩ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা য়ায়, বিভাগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১১৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ হজার ১০৫ জন।
এছাড়া বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫১৩ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪০৬ জন। সাতক্ষীরায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৪৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৩১৫ জন। যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৩০ জন, মারা গেছেন ৭৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৭৮ জন। নড়াইলে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৬৮ জন, মারা গেছেন ২৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ৮১৫ জন। মাগুরায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৫৩ জন, মারা গেছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৯ জন। ঝিনাইদহে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৯৮ জন, মারা গেছেন ৫৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হজার ৭২৬ জন। কুষ্টিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৯০০ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১১০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২৩৫ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৫৬ জন, মারা গেছেন ৬০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮১১ জন। আক্রান্তের দিক দিয়ে সর্বনিম্নে রয়েছে মেহেরপুর। এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৬ জন। মারা গেছেন ২২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮৩৫ জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনায় করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৯১ জন। যার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় দুজন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেন।
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও কঠোর লকডাউন আসতে পারে: কাদের
আবারও সারাদেশে কঠোর লকডাউন দেয়া হতে পারে বলে জনগণকে সতর্ক করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণপরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরায় লকডাউন দেয়ার কথা জানান মন্ত্রী।
রবিবার নিজ বাসভবনে নিয়মিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: লকডাউনেই খুলেছে বিপণীবিতানের দরজা, সড়কে চাপ
মন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউনের পর যখন গণপরিবহন চালু করা হবে, তখন দেশের সকল নাগরিককেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’
এর আগে শনিবার (২৪ এপ্রিল) লকডাউন শেষে গণপরিবহন চালু করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় প্রাইভেট কারের চলাচল বৃদ্ধি
সামনে ঈদ ও জনগণের চাহিদা বিবেচনায় সরকার লকডাউন শেষ হওয়ার পর পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহন পুনরায় চালু করার কথা চিন্তা করছে।
লকডাউন শেষ হওয়ার পরও জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: ২৮ এপ্রিলের পর লকডাউন শিথিল করতে পারে সরকার
এদিকে গত ৩১ মার্চ থেকে গণপরিবহন, এমনকি আন্তজেলার বাসের ভাড়াও ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে সরকার। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার।
করোনা: খুলনা বিভাগে আক্রান্ত ৩০ হাজারের বেশি, মৃত্যু ৫৪২
খুলনায় বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। বিভাগে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। একই সাথে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪২ জনে।
এ অবস্থায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় শনাক্ত হয়েছে ৩০ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ১৫৬ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কমলেও মৃত্যু বেড়েছে
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪২ জনে। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ হাজার ৮৪৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৬৩ জন।
বিভাগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ হজার ৫৩৯ জন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না: মন্ত্রী
এছাড়া বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩১ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ১৭১ জন। সাতক্ষীরায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৪৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪০ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ১৬৪ জন।
যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৯ জন। মারা গেছেন ৬৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৫ হজার ১৬৯ জন। নড়াইলে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৫০ জন। মারা গেছেন ২২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ৬৫৫ জন।
মাগুরায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৯৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ৯৪ জন। ঝিনাইদহে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৩ জন। মারা গেছেন ৫০ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হজার ৪৪৯ জন।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার দাবি অটোরিকশা, হালকা যানবাহনের কর্মীদের
কুষ্টিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১০৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪ হজার ১৮২ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৩৬ জন। মারা গেছেন ৪৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হজার ৬৬৬ জন।
সর্বনিম্মে রয়েছে মেহেরপুর। এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯১ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭৫৭ জন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, করোনায় সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চললে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা কমবে বলে তিনি আশাবাদী।
বিনামূলে ‘অক্সিজেন সেবা’ চালু করল স্বেচ্ছাসেবক লীগ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা চালু করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
মঙ্গলবার কলাবাগান স্পোর্টস ক্লাব প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রধান অতিথি হিসেবে এ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: লকডাউন ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি, প্রজ্ঞাপন জারি
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘সবাইকে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে করোনা থেকে নিজেদের সুরক্ষা করতে হবে।’
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগকে একটি মানবিক সংগঠন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংগঠনটি জন্মগতভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভিড ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জামায়াত, বিএনপি ও হেফাজত ইসলাম একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, আমাদের জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধে, জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়।
তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর আগে ১০টি ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স এবং দুটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেছে এবং ৪৩ জন ডাক্তারের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সেবা সরবরাহ করছে। এর পরিধি প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড
তিনি বলেন, আজ ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসের মাধ্যমে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ যেভাবে দাঁড়াচ্ছে এটি অত্যন্ত মহৎ উদ্যোগ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা একে স্বাগত জানাই।
যে কেউ ০৯৬১১৯৯৭৭৭ হটলাইন নম্বরে ফোন করলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ম রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম মাহবুবুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর সহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িগ্রামে হাট বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বেহাল অবস্থা
কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রশাসন থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হলেও হাট বাজারগুলোতে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। নিরাপদ দুরত্ব না মেনেই ক্রেতারা বাজারগুলোতে ঘোরাফেরা করছেন। বেশ কিছু মানুষ মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হয়েছেন। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
বুধবার সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনে বিশেষ করে শহরের জিয়াবাজার, পৌরবাজার, খলিলগঞ্জ বাজার, ত্রিমোহনী বাজারে লেজেগোবরে অবস্থা। এসব এলাকায় অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মত ক্রেতারা বাজারে ভিড় করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন মোড়ে জটলা করে লোকজন রাস্তায় অবস্থান করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ীর শব্দ পেলেই তারা গলিতে গিয়ে লুকাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু; প্রজ্ঞাপন জারি
এদিকে দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিকদের নিয়ে ছেড়ে আসা ট্রাক লকডাউনে আটকে পরায় ভোগান্তিতে পরেছে বাড়ি ফেরা শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংয়ের কিশোরগঞ্জ থেকে ৩০জন ইট ভাটার শ্রমিক নিয়ে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক (ট-১৩৪১৪৪) বুধবার দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম শহরে আটকে পরেছিল। হোটেল বন্ধ থাকায় পেটে খাবার পরেনি তাদের। অনুমতি ছাড়াই শ্রমিক নিয়ে লকডাউনে শহরে ঢোকায় শাস্তি স্বরুপ গুণতে হয়েছে জরিমানা।
আরও পড়ুন: লকডাউনে ৮টি বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলবে: রেলপথ মন্ত্রী
ট্রাকে আসা শ্রমিক ছানোয়ার হোসেন, রায়হান মিয়া ও আফজাল হোসেন জানান, তারা ৬ মাস আগে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ডাওকিয়া মোড় সাদুল্লা বাজারের কাছে অপু মিয়ার ইট ভাটায় কাজ করছিল। লকডাউনে ভাটা বন্ধ হওয়ায় সর্দার
ট্রাক ভাড়া করে তাদেরকে বাড়ি পাঠায়। তারা জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানাধীন তরীরহাট এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
ট্রাকচালক ফজলু মিয়া জানান, ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় মঙ্গলবার দুপুরে ৩০ জন ইট ভাটার শ্রমিককে নিয়ে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। প্রশাসনের অনুমতি না নেয়ায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হলো। এখন পর্যন্ত কারো পেটে ভাত পরেনি বলে তিনি জানান।