রুহুল কবির রিজভী
গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ সোমবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিএনপি
৩১ ডিসেম্বর রাত ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কঠোর কোনো কর্মসূচি না দিয়ে চলমান গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি আরও দুই দিন বাড়িয়ে সোমবার পর্যন্ত করেছে বিএনপি।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলছে। আগামীকাল (রবিবার) বছরের শেষ দিন এবং পরের দিন আগামী বছরের প্রথম দিন...সাধারণত অনেকেই এই দুই দিনকে ভিন্নভাবে উদযাপন করেন।’
বাংলাদেশে জনগণের আনন্দের মেজাজে এই দিনগুলো উদযাপন করার মতো পরিস্থিতি না থাকলেও বিএনপি জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের জন্য গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দুই দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান রিজভী।
তিনি বলেন, তাদের দলের সমমনা বিরোধী দলগুলোও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন... জনগণের মনে আনন্দ নেই কারণ তারা দেশে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় না সরকার: মঈন খান
রিজভী বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ নজিরবিহীন কারচুপি এবং রাতের বেলা ব্যালট স্টাফিংয়ের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল। ‘আমরা এর নিন্দা জানাই এবং তাদের প্রতি আমাদের ঘৃণা প্রকাশ করি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার চলমান গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শনিবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে দলটি।
২৪ ডিসেম্বর দলটি ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে বাধ্য করতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় তিন ডজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে। কারণ এরপর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর থেকে ১২ দফায় ২৩ দিন দেশব্যাপী অবরোধ এবং চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল পালন করেছে।
অবশেষে ২০ ডিসেম্বর বিরোধী দল অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশ হস্তক্ষেপ করছে: রিজভী
শনিবার পর্যন্ত চলবে বিএনপির গণসংযোগ কর্মসূচি
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশ হস্তক্ষেপ করছে: রিজভী
সুস্পষ্টভাবে ভারতকে খোঁচা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ৭ জানুয়ারির ‘ডামি’ নির্বাচন করতে একটি দেশ বাংলাদেশে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে দেশে- বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারাই নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। একটি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে একটি ডামি নির্বাচন করতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।’
তিনি অবশ্য ভারতের নাম উল্লেখ করেননি।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দেশবাসীকে সাজানো নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান।
সরকার শুধু ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশকে একটি দালাল রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘মানুষ তাদের নীলনকশা সফল হতে দেবে না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ‘এটি আসন ভাগাভাগি ও বণ্টনের নির্বাচন। এটা একটা প্রহসনমূলক নির্বাচন।’
জনগণই দেশের মালিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনমত উপেক্ষা করে ডামি নির্বাচন করে বিদেশিদের ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন সরকার সফল হবে না।
আরও পড়ুন: ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিতে সরকারের 'মরিয়া' চেষ্টায় সাড়া মিলছে না: রিজভী
তিনি বলেন, ‘আমরা ভোটারদের এই ডামি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি... ভোটের দিন ঘরে থাকুন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এই অবৈধ নির্বাচনকে না বলুন।’
দলের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিজভী বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি-১৫-এর কাঁচা বাজারে লিফলেট বিতরণ করেন।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা না করার আহ্বানের পক্ষে জনসমর্থন জোগাড় করতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করছে।
বৃহস্পতিবার দলটি গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির মেয়াদ শনিবার পর্যন্ত আরও দুই দিন বাড়িয়েছে।
বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বাধ্য করতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় তিন ডজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে, কারণ এরপর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর থেকে ১২ দফায় ২৩ দিন দেশব্যাপী অবরোধ এবং চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল দেয়।
অবশেষে ২০ ডিসেম্বর বিরোধী দল অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন: ইসির আন্দোলন বন্ধ করতে চাওয়া নজিরবিহীন ও গণবিরোধী: রিজভী
ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী
রবিবার ফের বিএনপির অবরোধ
১০ দিন বিরতির পর আগামী রবিবার ফের সারাদেশে দিনব্যাপী সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
৩১ অক্টোবর থেকে এটি হবে বিরোধী দলগুলোর দ্বাদশ দফা অবরোধ কর্মসূচি এবং ২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর প্রথম দফা।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় অবরোধ শুরু হয়ে শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
গত সোমবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দেশবাসী এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
সংবাদপত্র পরিবহনকারী বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ পরিবহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতার বাইরে থাকবে।
রিজভী বলেন, নতুন করে অবরোধ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারকে পদত্যাগ করা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করা এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে চাপ সৃষ্টি করা।
আরও পড়ুন: আজ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ঘোষণা বিএনপির
তিনি বলেন, অন্যান্য বিরোধী দল যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে তারাও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে রিজভী সেসব বিরোধী দলগুলোর নেতাদের ধন্যবাদ জানান, যারা ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর দেশের জনগণকে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় 'একতরফা' নির্বাচন বর্জন করার এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্থানে প্রচার চালিয়েছেন।
এর আগে, বিরোধী দলগুলো সর্বশেষ ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ৩৬ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ কার্যকর করেছিল।
বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে বাধ্য করতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৩৫ টির বেশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির মহাসমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর থেকে ১১ দফায় ২২ দিন দেশব্যাপী অবরোধ এবং চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল দেয়।
অবশেষে বিরোধী দল ২০ ডিসেম্বর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন: ২১-২৩ ডিসেম্বর গণসংযোগ এবং ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী অবরোধের ঘোষণা বিএনপির
আ. লীগ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে: ড. মঈন খান
নির্বাচন নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণবিরোধী অবস্থানের অভিযোগ বিএনপির
বিএনপি অভিযোগ করেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার বিবৃতি দিয়ে গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছে এবং বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ এনেছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় লিফলেট বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, মন্ত্রণালয় একতরফা নির্বাচনের পক্ষে ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে যে বিএনপি ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করছে এবং তারা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য অবরোধ কার্যকর করার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ফেসবুকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা বিবৃতি সঠিক নয়। গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে বাংলাদেশে একটি একপেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নব্য রাজাকারের ভূমিকা নিয়েছে।’
তিনি বলেন, দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। ‘এটি একটি গণবিরোধী পদক্ষেপ। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।’
রিজভী দাবি করেন, ৬৩টি রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ একতরফা সাজানো নির্বাচন বর্জন করেছে। তারাও (বিএনপি) নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।
রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একতরফা নির্বাচন করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আজ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ঘোষণা বিএনপির
‘রাজ্জাকের বক্তব্য বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার-জেলে রাখার সরকারের পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ’
রাজ্জাকের বক্তব্য বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার ও জেলে রাখার সরকারের পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, কারাবন্দী বিএনপি নেতাদের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা আব্দুর রাজ্জাক যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বোঝা যায়, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ এবং বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার করে জেলে রাখার মতো রাজনৈতিক সহিংসতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্বপরিকল্পিত।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব অভিযোগ করেন।
এসময় তিনি বলেন, বিচার বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আসন ভাগাভাগির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে বিএনপির ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সত্য প্রকাশ করেছেন।’
রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, বিএনপিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করা হবে এবং তাদের সব নেতাকে রাতারাতি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু বিএনপি তাতে রাজি হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তি প্রমাণ করেছে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের জনসভা বানচাল করার পর পুলিশের সহিংসতা, হত্যা, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার ও বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাদের বাড়িতে চলমান অভিযান এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্য শেখ হাসিনার পরিকল্পিত।’
বিএনপির জেষ্ঠ এই নেতা বলেন, রাজ্জাক অবশেষে স্বীকার করেছেন দেশের আইন, আদালত, বিচার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রযন্ত্র সবই আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে।
আরও পড়ুন: শুধু সরকারপন্থী দলগুলোই 'পাতানো' নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে: বিএনপি
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ও আওয়ামী লীগ একই সত্তায় পরিণত হয়েছে। দেশে আলাদা কোনো সত্তা নেই, কোনো আইন নেই... সবকিছু শেখ হাসিনার নির্দেশেই চলছে।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও দেড় লাখ মামলা হয়েছে। ‘সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কারাগারে হত্যা করে বিচার বিভাগের অস্তিত্ব ধ্বংস করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ আইন অনুযায়ী চলছে না, শেখ হাসিনার নির্দেশে গণভবনের নির্দেশ অনুযায়ী চলছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জেল-জরিমানা ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্যের মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ, জনগণের বিচারের শেষ আশ্রয়স্থল, আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতাদের বিচার বিভাগে নিয়োগের পর থেকে কার্যত আওয়ামী লীগের একটি ইউনিটে পরিণত হয়েছে। ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ ও আইনের শাসনের আওয়ামী মডেলের বিষয়টি কৃষিমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট।’
তিনি দাবি করেন, বিনা বাধায় ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ২০ হাজারেরও বেশি ‘নিরপরাধ’ বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে, তাদের জামিনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার বর্তমান ‘স্বৈরাচারী’ সরকারের প্রশংসা করার জন্য সাংবাদিক ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরকে কটাক্ষ করেন রিজভী।
ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে (এফএসএ) এক সেমিনারে বক্তৃতায় এম জে আকবর হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তিদাতা, কারণ তিনি স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছেন।
রিজভী বলেন, ‘যারা তার সম্পর্কে জানতেন তারা তার বক্তৃতা শুনে হতবাক হয়েছিলেন...এম জে আকবর অন্ধ ব্যক্তির মতো স্বৈরাচারের প্রশংসা গেয়েছেন। এম জে আকবরের মতো একজন বিচক্ষণ সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একজন স্বৈরশাসকের পক্ষে কথা বলতে পারেন কী করে?’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ জানতে চায় জনসমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনা ভারতের কী স্বার্থ রক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ একতরফা আসন ভাগাভাগির নির্বাচন করছে: খোকন
বিএনপিকে বিজয় দিবসের সমাবেশের অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে পুলিশ: রিজভী
সোমবার বিএনপির হরতাল
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে আগামী সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সারাদেশে হরতাল পালন করবে বিএনপি।
২৯ অক্টোবর থেকে এটি বিরোধী দলের চতুর্থ দফার হরতালের ডাক। এছাড়াও, বিএনপির ১১ দফা অবরোধ পালনের ফলে দেশের জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও অর্থনীতি ব্যাহত করেছে।
শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি জানান, সোমবার সকাল ৬টায় শুরু হয়ে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে হরতাল।
আরও পড়ুন: ৭ সপ্তাহ পর বিজয় দিবসে নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ
রিজভী দেশবাসী এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, নতুন করে হরতাল কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তিদান।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন
শনিবার নয়াপল্টনে বিজয় দিবসের সমাবেশ করবে বিএনপি
আগামী ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করবে বিএনপি: রিজভী
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী ১০ ডিসেম্বর গুম ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগামী রবিবারের (১০ ডিসেম্বর) কর্মসূচি সফল করতে দলের প্রস্তুতির কথা বলেন।
রাজধানীতে বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবেন বলে জানান তিনি।
রিজভী দাবি করেন, ‘বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ইউনিট এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়েছে।’
এছাড়া এই বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরতে তাদের দলের সব জেলা ইউনিট একই দিনে একই সময়ে কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি কর্মসূচি পালনে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে তাদের দলের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
রিজভী বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তারা সফলভাবে কর্মসূচি পালন করতে চান।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
তিনি বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং যারা গুম এবং রাজনৈতিক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আদায়ে শুক্রবার সকাল ৬টায় শেষ হওয়া ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য তিনি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের মহাসমাবেশ পুলিশ বানচাল করার পর থেকে ১০ দফা অবরোধ ও তিন দফায় হরতাল পালন করে বিএনপি।
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরাচারী’ আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে মানবতা ও মানবাধিকারের কোনো মূল্য নেই।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকার এখন ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত হয়েছে… তারা চায় দেশের মানুষ সত্য ভুলে যাক এবং তারা সমাজ থেকে সত্যকে মুছে ফেলতে চায়। তারা দেশ থেকে ন্যায়বিচার দূর করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরও বলেন, সরকার এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে সত্য কথা বলা এবং মানবাধিকারের কথা বলা বা শান্তিপূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকে সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণভাবে সুশীল সমাজকে দমন করার চেষ্টা করছে, দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ বিএনপির ২১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের প্রায় ২০ হাজার ৪৯০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ধরে রাখতেই তৈরি পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার: রিজভী
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হচ্ছে বুধবার
বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ঘোষিত দশম দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল থেকে পিকেটারদের রাস্তায় চলাচলরত বাস ও অন্যান্য যানবাহনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রিজভীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জন পিকেটারকে রাস্তায় মিছিল করতে।
তারা ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল।
একপর্যায়ে পিকেটাররা রাস্তায় বসে থাকলেও বাস, গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনকে অবরোধ অমান্য করে চলাচল করতে দেখা যায়।
পিকেটাররা তখন একটি টায়ার এনে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিতে এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করে।
কিন্তু রাস্তার অপর পাশ দিয়ে যানবাহন চলতে থাকায় সেগুলোর দিকে পিকেটারদের ইট-পাটকেল ছুঁড়তে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ধরে রাখতেই তৈরি পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার: রিজভী
এর মাত্র একদিন আগে, এই বিএনপি নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, জনসাধারণের মনোযোগ সরাতে আওয়ামী লীগ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে পারে।
২৮ অক্টোবর থেকে দেশে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, হামলা, সহিংসতা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।
লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমান দেশের ভাগ্য নির্ধারণে তার দলের কর্মীদের ‘রাস্তায়’ নামার জন্য ডাক দিলে অনেক মানবাধিকারকর্মীও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংখ্যালঘু নেতারা এই আহ্বানকে ‘সহিংসতার প্ররোচনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার হবে : রিজভী
বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা বিএনপির
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ইসির শো-কজ জনগণের সঙ্গে তামাশা: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেশের জনগণের সঙ্গে ‘তামাশা’।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনই (ইসি) জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সংবিধানের অখণ্ডতা নষ্ট করেছে। এখন আওয়ামী ধাঁচের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নোটিশ দেওয়া মানে কমিশন জনগণকে নিয়ে মজা করছে।’
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি আরও বলেন, একতরফা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো তাৎপর্য নেই। যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নেই এবং ভোটারদের ভোট দেওয়ার আগ্রহ নেই।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এটি একটি একতরফা নির্বাচন, যেখানে একই দল এবং চার ভাগের এক ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কেউ এক নম্বর প্রার্থী, কেউ দুই নম্বর প্রার্থী আবার কেউ তিন নম্বর প্রার্থী। তবে সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে ইউএনও ও ওসিদের বদলির ইসির সিদ্ধান্ত আওয়ামী মতাদর্শী ইউএনও ও ওসিদের মধ্যে রদবদল মাত্র। ‘পুরো প্রক্রিয়াটি হাসি ও কৌতুকের একটি অভূতপূর্ব হাস্যরস-উদ্দীপক নাটক।’
আরও পড়ুন: হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
রিজভী বলেন, ৬০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল বর্জন করায় এই একতরফা নির্বাচন নিয়ে জনগণ কম উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে সরকারের পেশিশক্তি।
রিজভী বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তারা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট করছে এবং আলবদর ও রাজাকারদের মতো পুরুষহীন ঘরে নারীদের হয়রানি করছে।’
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু বিএনপি পরিবারই নয়, সাধারণ ভোটারদেরও ভয় ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে আবারও জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করছে।
রবিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২৩০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুটপাট করে নতুন দল তৈরি করছে সরকার: রিজভী
হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
শেখ হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ সরকারকে সমর্থন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার এবং তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত কেন বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন করে তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানী এলাকায় ঝটিকা মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের তা সমর্থন করা উচিত।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
সীমান্ত হত্যা ও বিভিন্ন অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় সমস্যার জন্যও ভারতের সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে।’
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে একতরফা বাণিজ্য করলেও বাংলাদেশকে তাদের দেশে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না ভারত। তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্নভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশকে যা যা প্রয়োজন সবই উদারভাবে দিয়ে গেলেও, ভারতের কাছ থেকে কিছুই পায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অনেক রক্তের বিনিময়ে একটি যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। কারো গোলাম হয়ে থাকার জন্য এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, রক্ত বিসর্জন দেয়নি।’
রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিরোধী দলগুলোর ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে সকাল ৭টার দিকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে মিছিল বের করেন রিজভী।
মিছিলটি বনানী মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলের বিভিন্ন সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী