রুহুল কবির রিজভী
আগামী ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করবে বিএনপি: রিজভী
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী ১০ ডিসেম্বর গুম ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগামী রবিবারের (১০ ডিসেম্বর) কর্মসূচি সফল করতে দলের প্রস্তুতির কথা বলেন।
রাজধানীতে বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবেন বলে জানান তিনি।
রিজভী দাবি করেন, ‘বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ইউনিট এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়েছে।’
এছাড়া এই বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরতে তাদের দলের সব জেলা ইউনিট একই দিনে একই সময়ে কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি কর্মসূচি পালনে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে তাদের দলের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
রিজভী বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তারা সফলভাবে কর্মসূচি পালন করতে চান।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
তিনি বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং যারা গুম এবং রাজনৈতিক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আদায়ে শুক্রবার সকাল ৬টায় শেষ হওয়া ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য তিনি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের মহাসমাবেশ পুলিশ বানচাল করার পর থেকে ১০ দফা অবরোধ ও তিন দফায় হরতাল পালন করে বিএনপি।
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরাচারী’ আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে মানবতা ও মানবাধিকারের কোনো মূল্য নেই।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকার এখন ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত হয়েছে… তারা চায় দেশের মানুষ সত্য ভুলে যাক এবং তারা সমাজ থেকে সত্যকে মুছে ফেলতে চায়। তারা দেশ থেকে ন্যায়বিচার দূর করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরও বলেন, সরকার এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে সত্য কথা বলা এবং মানবাধিকারের কথা বলা বা শান্তিপূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকে সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণভাবে সুশীল সমাজকে দমন করার চেষ্টা করছে, দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ বিএনপির ২১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের প্রায় ২০ হাজার ৪৯০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ধরে রাখতেই তৈরি পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার: রিজভী
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হচ্ছে বুধবার
বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ঘোষিত দশম দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল থেকে পিকেটারদের রাস্তায় চলাচলরত বাস ও অন্যান্য যানবাহনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রিজভীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জন পিকেটারকে রাস্তায় মিছিল করতে।
তারা ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল।
একপর্যায়ে পিকেটাররা রাস্তায় বসে থাকলেও বাস, গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনকে অবরোধ অমান্য করে চলাচল করতে দেখা যায়।
পিকেটাররা তখন একটি টায়ার এনে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিতে এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করে।
কিন্তু রাস্তার অপর পাশ দিয়ে যানবাহন চলতে থাকায় সেগুলোর দিকে পিকেটারদের ইট-পাটকেল ছুঁড়তে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ধরে রাখতেই তৈরি পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার: রিজভী
এর মাত্র একদিন আগে, এই বিএনপি নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, জনসাধারণের মনোযোগ সরাতে আওয়ামী লীগ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে পারে।
২৮ অক্টোবর থেকে দেশে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, হামলা, সহিংসতা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।
লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমান দেশের ভাগ্য নির্ধারণে তার দলের কর্মীদের ‘রাস্তায়’ নামার জন্য ডাক দিলে অনেক মানবাধিকারকর্মীও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংখ্যালঘু নেতারা এই আহ্বানকে ‘সহিংসতার প্ররোচনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার হবে : রিজভী
বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা বিএনপির
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ইসির শো-কজ জনগণের সঙ্গে তামাশা: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেশের জনগণের সঙ্গে ‘তামাশা’।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনই (ইসি) জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সংবিধানের অখণ্ডতা নষ্ট করেছে। এখন আওয়ামী ধাঁচের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নোটিশ দেওয়া মানে কমিশন জনগণকে নিয়ে মজা করছে।’
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি আরও বলেন, একতরফা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো তাৎপর্য নেই। যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নেই এবং ভোটারদের ভোট দেওয়ার আগ্রহ নেই।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এটি একটি একতরফা নির্বাচন, যেখানে একই দল এবং চার ভাগের এক ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কেউ এক নম্বর প্রার্থী, কেউ দুই নম্বর প্রার্থী আবার কেউ তিন নম্বর প্রার্থী। তবে সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে ইউএনও ও ওসিদের বদলির ইসির সিদ্ধান্ত আওয়ামী মতাদর্শী ইউএনও ও ওসিদের মধ্যে রদবদল মাত্র। ‘পুরো প্রক্রিয়াটি হাসি ও কৌতুকের একটি অভূতপূর্ব হাস্যরস-উদ্দীপক নাটক।’
আরও পড়ুন: হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
রিজভী বলেন, ৬০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল বর্জন করায় এই একতরফা নির্বাচন নিয়ে জনগণ কম উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে সরকারের পেশিশক্তি।
রিজভী বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তারা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট করছে এবং আলবদর ও রাজাকারদের মতো পুরুষহীন ঘরে নারীদের হয়রানি করছে।’
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু বিএনপি পরিবারই নয়, সাধারণ ভোটারদেরও ভয় ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে আবারও জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করছে।
রবিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২৩০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুটপাট করে নতুন দল তৈরি করছে সরকার: রিজভী
হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
শেখ হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ সরকারকে সমর্থন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার এবং তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত কেন বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন করে তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানী এলাকায় ঝটিকা মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের তা সমর্থন করা উচিত।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
সীমান্ত হত্যা ও বিভিন্ন অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় সমস্যার জন্যও ভারতের সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে।’
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে একতরফা বাণিজ্য করলেও বাংলাদেশকে তাদের দেশে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না ভারত। তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্নভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশকে যা যা প্রয়োজন সবই উদারভাবে দিয়ে গেলেও, ভারতের কাছ থেকে কিছুই পায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অনেক রক্তের বিনিময়ে একটি যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। কারো গোলাম হয়ে থাকার জন্য এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, রক্ত বিসর্জন দেয়নি।’
রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিরোধী দলগুলোর ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে সকাল ৭টার দিকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে মিছিল বের করেন রিজভী।
মিছিলটি বনানী মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলের বিভিন্ন সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
নির্বাচনে কারচুপি করতে সরকার এজেন্সিগুলো ব্যবহার করে কিংস পার্টি গঠন করছে: রিজভী
বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকার বিভিন্ন এজেন্সি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভিত্তিহীন ও তথাকথিত কিংস পার্টি গঠন করছে এবং আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করার জন্য বিভিন্ন দলের লোক নিয়োগ করছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, কিছু লোক সামান্য অর্থ ও বিভিন্ন সুবিধার লোভে প্রহসনমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে আত্মা বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ মাফিয়া গোষ্ঠীর এই নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করায় ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা এখন তথাকথিত কিংস পার্টি তৈরি করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’
সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার বিভিন্ন সংস্থাকে মাঠে নামিয়েছেন তথাকথিত কিংস পার্টি গঠনের জন্য। বিভিন্ন দলের নেতাদের ভাড়া করতে গরুর হাটের মতো দর কষাকষি চলছে। অনেক দেশপ্রেমিক নেতাকে আওয়ামী লীগের কিংস পার্টিতে যোগদানের জন্য চাপ ও ভয় দেখানো হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, লুটপাটের টাকার ভাগ পাওয়ার অঙ্গীকারে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছেড়ে কিছু মানুষ তথাকথিত কিংস পার্টিতে যোগ দিয়ে বঙ্গভবন ও গণভবনে যাচ্ছে।
কোনো দল বা ব্যক্তির নাম সরাসরি উল্লেখ না করে রিজভী বলেন, বিশ্বাসঘাতকদের ইতিহাসের ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে। ‘এই রঙ পরিবর্তনকারী পরজীবী রাজনীতিবিদরা জনগণের সংকেত টের পাচ্ছেন না।’
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়েছে, গ্রেপ্তার করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হেলমেট পরা আন্দোলনে সক্রিয় থাকা নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, সরকারের নির্দেশে বিচার বিভাগ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা ও কাল্পনিক’ মামলায় সাজা দিচ্ছে।
বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির অন্তত ৫১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংকট চরমে, জনগণ প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত: রিজভী
বিএনপি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বলেছে, বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে। কারণ নাগরিকরা একতরফা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে প্রস্তুত।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও অভিযোগ করেন, সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশে 'ফেরাউনের রাজত্ব' প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লাগাতার আন্দোলন এবং রাজপথে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও রক্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফাভাবে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, দেশের সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিদেশি কূটনীতিকদের আবেদন উপেক্ষা করে সিইসি একটি স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের প্রধানের নির্দেশে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
রিজভী বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে জনগণ তাদের জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের ক্ষমতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন সব স্বৈরশাসকের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। দেশের দেড় দশকের রাজনৈতিক সংকট এখন এর ক্লাইম্যাক্সে আসছে।’
তিনি বলেন, জনগণ বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা এবং তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের অধিকারসহ তাদের সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক’ শেখ হাসিনার শোষণ-নিপীড়নের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে সমর্থন করছে। ‘বিশ্ব বিবেক এখন জাগ্রত।’
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমন করে 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদ' প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রপন্থী শক্তি এখন শেখ হাসিনার বুলেটের লক্ষ্যবস্তু। মূলত দেশে গণতন্ত্র মৃত।’
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা অভিযোগ করেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়িঘরে তল্লাশি ও পরিবারের সদস্যদের হয়রানি অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির অন্তত ৩৯৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রিজভী জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
তারেক ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার নির্বাচনের নামে উপহাস করতে চায় বলেই দেশে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঝড় বইছে।
রবিবার ভার্চুয়াল সংবাদ তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করতে চলমান ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের পর তারা আরও কর্মসূচি নিয়ে আসবেন।
রিজভী বিএনপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে পারে।
তিনি বলেন, 'সারা দেশে গ্রেপ্তারের ঝড় চলছে। এই গ্রেপ্তার অভিযানে আপনারা (সরকার) জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। যারা ক্ষমতায় আছে তারা ভয়ংকর ডাকাতের মতো আচরণ করছে।’
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে এবং টাকার বিনিময়ে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিচ্ছে। আবার অনেককে টাকা নেওয়ার পরও ছেড়ে দিচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের আত্মগোপনে চলে যাওয়া এবং ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করার জন্য সমালোচনা করেন।
রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করেন, বিএনপি নেতারা কোথায়? তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেন, আমরা গুহা থেকে ব্রিফিং করি। টিক্কা খান (১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডার) নির্মম সামরিক অভিযান ও অপারেশন সার্চলাইট চালানোর পর এ ধরনের মন্তব্য করতেন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারেনি কারণ তাদের ঘরবাড়ি, গ্রাম ছেড়ে দেশের সীমানা অতিক্রম করতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী কারাগারে
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সে সময় টিক্কা খান ও নিয়াজি ঠিক একই কথা বলেছিলেন। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্বৃত্ত বলে অভিহিত করে। ওবায়দুল কাদের এখন ঠিক একই ভাষা ব্যবহার করছেন।’
রিজভী বলেন, ১৯৭১ সালে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, এখন বাংলাদেশেও সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
ওবায়দুল কাদের এখন টিক্কা খান ও নিয়াজির ভূমিকা অনুসরণ করছেন এবং বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দল ও বিএনপিকে নির্মূল করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জনগণের রক্ত ঝরিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'তারা (সরকার) নীরব পরিবেশে নির্বাচনের নামে উপহাস করবে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ হাসিনার তালিকা অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, যে দেশে পুলিশ নিজেরাই দাঙ্গার গাড়ি থেকে ককটেল নিক্ষেপ করছে, সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
তিনি বলেন, 'কীভাবে পুলিশকে এ দেশের মানুষের বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা যায়। তারা (পুলিশ) শেখ হাসিনার পেশী হিসেবে কাজ করছে এবং জনগণকে শত্রু বানাচ্ছে।’
এমতাবস্থায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, 'সরকার নানাভাবে নাশকতার চেষ্টা করতে পারে এবং এর দায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে।’
তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৬১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ছাড়া একই সময়ে ১ হাজার ৬০ জনকে আসামি করে নতুন করে নয়টি মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ও হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলায় ১২২টি নতুন মামলায় বিএনপির ৫ হাজার ২৮৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩ হাজার ৪৯৮ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও অনুসারী আহত হয়েছেন। একজন সাংবাদিকসহ নয়জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাস ফের কারাগারে, ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য
টঙ্গী থেকে বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে র্যাব
বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে বিএনপির ঢাকা উত্তর শাখার সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ চারজনকে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ভোর পৌনে ৪টায় হোটেল আমারির পাশের একটি বাড়িতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
রিজভী বলেন, ডিবি পুলিশ যুবদলের ঢাকা উত্তর শাখার সদস্য সচিব মিরাজ, আরেক যুবদল নেতা পল্লব ও আমিনুলের গাড়িচালককে ওই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আব্বাস ও আলালের গ্রেপ্তারের নিন্দা রিজভীর
এই বিএনপি নেতা আরও বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ’ অবরোধ চলাকালে যাত্রাবাড়ী থেকে শিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় দে রিপন এবং ঢাকা নগর শাখার বিএনপি নেতা শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এক বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পুরো দেশকে কারাগারে পরিণত করেছেন’।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তারের ফলে দেশে একটি চরম অস্থিরতা ও ভীতির পরিবেশ বিরাজ করছে।’
আমিনুলসহ অন্যদের আটকের প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানান এবং বিএনপির গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও আলাল গ্রেপ্তার
ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানো হয়েছে
আব্বাস ও আলালের গ্রেপ্তারের নিন্দা রিজভীর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আইনজীবী রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রিজভী বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত করে আবারো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার গভীর মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই অবৈধ শাসক গোষ্ঠী বিএনপি'র সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ দেশব্যাপী সকলপর্যায়ের নেতা-কর্মীকে ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার শুরু করেছে। ক্ষমতালোভের পাশাপাশি চলমান গণআন্দোলনে ভীত হয়ে নিশিরাতের সরকার বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে গুলি চালিয়ে মানুষ হতাহতের নৃশংসতায় মেতে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও আলাল গ্রেপ্তার
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে বলতে চাই- এভাবে গ্রেপ্তার ও নানা কায়দায় জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে চলমান গণআন্দোলনকে দমন করা যাবে না। জনগণ বুঝে গেছে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়ে অন্যের ওপর দোষারোপ আওয়ামী লীগের নোংরা রাজনীতি।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়- বিশ্বের বড় বড় স্বৈরাচারেরাও জনগণের নিকট পরাজিত হয়েছে। বর্তমান আওয়ামী দখলবাজ সরকারকেও জনগণের ন্যায্য আন্দোলনের কাছে মাথা নত করে বিদায় নিতে হবে।’
রিজভী মির্জা আব্বাস ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানান এবং দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তিরও আহ্বান জানান।
এ ছাড়া তাদের মুক্তির আহ্বানে সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুল আটক
আ. লীগ নেতারা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে একতরফাভাবে আগামী নির্বাচন করতে পারবে না ভেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, 'পুলিশকে ব্যবহার করে দেশে আর নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ তা হতে দেবে না। আমরা শুনেছি তাদের (আওয়ামী লীগের) অনেক নেতা-কর্মী দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। ’
তারেক-জুবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির সমাবেশ
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের আরও অনেক নেতা যেকোনো সময় দেশ ছাড়ার জন্য পাসপোর্টে ভিসা সংগ্রহ করেছেন।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা খুব ভালো করেই জানেন যে, জনগণ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট দেবে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে শুধু পুলিশই ভোট দিতে পারে, কিন্তু ভোটাররা তা করবে না।
আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় বিএনপির সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে: রিজভী
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পুলিশের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) আগামী দিনগুলোতে এ ধরনের নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এবার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে না। জোর করে আগামী নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে যে কোনো সময় দেশ ছাড়তে পারে বলে তাদের ভিসা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, একতরফা নির্বাচন করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য।
তিনি বলেন, দেশের মালিকানা ফিরে পেতে এবং আওয়ামী লীগের ছিনিয়ে নেওয়া ভোটাধিকার ফিরে পেতে জনগণ জেগে উঠেছে।
বিএনপির সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান খন্দকার মোশাররফের
রিজভী বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছে যে বুধবার রাজধানীতে দলের জনসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, সরকার আমাদের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অপকৌশল নিয়েছে। কিন্তু তারা কী অর্জন করেছে? গতকাল (বুধবার) নয়াপল্টনে সরকারের সব বাজে কৌশল ব্যর্থ করে গণজোয়ার সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন।