রুহুল কবির রিজভী
ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল-সমর্থিত সিন্ডিকেটের ইন্ধনে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্যের কারণে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোপলিটন শহর থেকে মানুষ তাদের প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে ফিরছে। কিন্তু সরকারের সিন্ডিকেটের ভাড়ার নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ তাদের ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে। ঈদ আসলেই আওয়ামী সরকারের পরিবহন ও টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে।’
শুক্রবার বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পরিবহন সিন্ডিকেট ঘরমুখো মানুষের কাছ থেকে দুই-তিন গুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা এই টাকার একটা অংশ পান। নজরদারির অভাবে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি, যানজট ও হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।’
ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জনদুর্ভোগের জন্য সরকারের সমালোচনাও করেন বিএনপি নেতা। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা এই সরকারের আমলে আমরা এখন কেন ভয়াবহ লোডশেডিং অনুভব করছি?
আরও পড়ুন: এক হাজার পদ্মা সেতু করেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না আ.লীগ: বিএনপি
পদ্মা সেতুতে এত বাতি জ্বালানোর বিষয়ে রিজভী বলেন, মন্ত্রীরা এখন বলছেন কোনো আলোকসজ্জা ছাড়াই সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।
বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এখন অফিসের সময় কমানোর সুপারিশ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সুতরাং, কোন সন্দেহ নেই যে দেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে যাচ্ছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, মানুষ যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দাম সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন সরকার পানির দাম পাঁচ শতাংশ বাড়িয়েছে। ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আগেই বলেছেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। এর আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতিটি খাতে দুর্নীতি করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছেন। দেশ এখন ক্ষমতাসীন দলের কবলে।
বিএনপি নেতা দেশকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সরকারের অবহেলায় দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: বিএনপি
ভোট চুরি করে আবারও ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না: আবদুল আউয়াল
সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় বন্যার্তরা ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষ তাদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বন্যা কবলিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবিতে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় ভয়াবহ বন্যার জন্য হাওর অঞ্চলে সরকারের অপরিকল্পিত বাঁধ ও সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার মানুষ ভাত ও খাবারের জন্য হাহাকার করছে। চারপাশের সবকিছু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা খাবার পাবে কোথায়? তাদের কাছে খাবার পৌঁছাবে কী করে?’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকার দেশের ৫০ লাখ বন্যা কবলিত মানুষের জন্য মাত্র এক দশমিক পাঁচ টাকা বরাদ্দ করেছে। অথচ ভারতীয় শিল্পী মিমি চক্রবর্তীকে তিন কোটি টাকায় বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
বন্যার জন্য সরকার দায়ী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এখন রঙিন আলোয় পদ্মা সেতু দেখবেন এবং মানুষকে ক্ষুধার্ত, অনাহারে ও জলমগ্ন রেখে আনন্দে মনের আনন্দে ক্ষমতায় থাকবেন। দেশের জনগণ এটা আর মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাতিল করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিএনপির
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যার কারণ জানার চেষ্টা করেছেন কি? আমরা জানি, রাষ্ট্রের প্রভাবশালী এক কর্মকর্তার আত্মীয়-স্বজন হাওর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও একটি সড়ক নির্মাণ করেছেন; যা রাষ্ট্রপতির বাড়ি বলে পরিচিত।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ৫০-৬০ লাখ মানুষ এখন বন্যার পানিতে আটকা পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ পানিতে তলিয়ে গেছে, কিন্তু আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদ্মা সেতু নিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত। আপনি পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছেন।’
রিজভী রাত ৮টার পরে দোকান ও শপিং মল বন্ধ করার পদক্ষেপের জন্যও সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করে আসছে। ‘তবে আপনারা কেন রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছেন? কোথায় গেল আপনাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ?’
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি পদক্ষেপ নেয় এবং আইন ও নীতিমালা তৈরি করে। তারা এটা করে শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তাদের অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করতে।
আরও পড়ুন: বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি বিএনপির
অর্থমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংবিধান ও নৈতিকতার সংযোগ নেই: ফখরুল
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাতিল করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিএনপির
বন্যার্তদের জন্য অর্থ ও ত্রাণসামগ্রীর অপর্যাপ্ত বরাদ্দের জন্য সরকারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বন্ধ করে দুর্যোগ কবলিত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে মনোনিবেশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। কিন্তু দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও উত্তরাঞ্চলের প্রায় এক কোটি বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল।
তিনি বলেন, সরকার বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ১০০ টন চাল, ৩০ লাখ টাকা ও পাঁচ হাজার টাকার শুকনো খাবার দিয়েছে। ‘তারা ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দেরও আশ্বাস দিয়েছেন। মানে জনপ্রতি মাত্র এক দশমিক পাঁচ টাকা।’
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জনসভাস্থলে ৫০০ অস্থায়ী টয়লেট বসানোর খরচের এক দশমাংশও বন্যার্তরা পাননি।
আরও পড়ুন: বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি বিএনপির
সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। আপনারা দয়া করে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য লোক দেখানো প্রদর্শন বন্ধ করুন।’
বিএনপি নেতা বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘দুর্গত অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর জন্য তাদের দলের দাবি পুনরায় ব্যক্ত করেন।
তিনি দাবি করেন, তাদের দলের নেতাকর্মীরা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন এবং বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সহায়তা করছেন।
দেশের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ব্যাপক পরিকল্পনার জন্য সরকারকে কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, একমাত্র স্বৈরাচারী সরকারই এমন কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজেই তার দলের নেতাকর্মীদের পদ্মা সেতুর দুই পাশে লাখো মানুষের সমাগম উদযাপনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েক হাজার বাস ও ৩০০টি লঞ্চ রিক্যুজিশন করা হয়েছে এবং জনসভাস্থলে পাঁচ শতাধিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট লম্বা দুটি ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে।’
এছাড়া সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, এসব দেখে দেশের মানুষ মনে করে শেখ হাসিনার শাসন প্রাচীন মিশরের ফারাওদের শাসনকে ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আমরা জানতাম কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে এমন হবে: ফখরুল
অর্থমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংবিধান ও নৈতিকতার সংযোগ নেই: ফখরুল
তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ: বিএনপি
খাদ্য ঘাটতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশ ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,পুরো জাতি গুরুতর উদ্বেগ নিয়ে তাদের দিন পার করছে। এক ভয়াবহ সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সোমবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ ‘দেউলিয়াত্বের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে। এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ নীরবে কান্নাকাটি করে শান্তি পাবে না।
আরও পড়ুন: এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষের অবস্থা খুবই দুর্দশাগ্রস্ত ও করুণ।
রিজভী বলেন,বড় দেশগুলো রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় গম আমদানি করা যাচ্ছে না। চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেলের অদৃশ্য হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে আটা কেনা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এসময় তিনি ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের জঘন্য খেলার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ে সরকারের সমালোচনা করেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের ব্যাপক সংকটে রয়েছে। উজান থেকে আসা পানির কারণে বিভিন্ন বাঁধের ক্ষতির কারণে বাংলাদেশের একটি বিশাল এলাকার ধান খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে যা কৃষকদের দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: দেশ এখন দুর্নীতির আখড়া: আবদুল আউয়াল
শ্রীলঙ্কার মতো বিএনপি নেতারা আগেই পালিয়ে গেছেন: তথ্যমন্ত্রী
সয়াবিন তেলের সংকটের জন্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দুষছে বিএনপি
বাজারে হস্তক্ষেপ এবং সরকারের জবাবদিহিতার অভাবের জন্য দেশ সয়াবিন তেলের ‘কৃত্রিম’ সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার থাকলে বাজারে হস্তক্ষেপ করত এবং বাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটদের গ্রেপ্তার করত। কিন্তু তা হচ্ছে না, ফলে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।
রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরস্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: হারানো অধিকার ফিরে পেতে সোচ্চার হউন: মির্জা ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, সয়াবিন তেল, চাল, ডাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি এর অন্যতম কারণ। এই ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ও শ্রমিকদের আয় একেবারেই বাড়েনি।
রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই অনেক কষ্টে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় বাড়ি যাওয়ার পথে অনেক গৃহমুখী যাত্রী, প্রধানত শ্রমিকরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ইলিয়াস আলীর পরিবার অনেক বিপদে আছে: ফখরুল
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে আ.লীগ সরকারের অপকর্ম, চরম দুঃশাসন তুলে ধরা হয়েছে: বিএনপি
বিএনপি বাংলাদেশে মানবাধিকার চর্চার ওপর মার্কিন প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছে। দলটি বলেছে, এই প্রতিবেদনে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্ম এবং 'চরম দুঃশাসন' তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ সরকারের হাতে থাকা অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেয়া হয়েছে এবং দেশের নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে, বিরোধীদের নির্মূল করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
‘আমি বলতে চাই, এই প্রতিবেদনে আওয়ামী সরকারের অপকর্ম প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনটি আরও পরামর্শ দেয় যে সরকার হাজার হাজার ডলার ব্যয় করে লবিস্ট নিয়োগ করেও কোনও অপকর্ম এবং চরম দুঃশাসনকে ধামাচাপা দিতে পারেনি,’ বিএনপি নেতা বলেছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০২১ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিস প্রকাশ করেছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন।
এই প্রতিবেদনে অধিকার বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কঠোর এবং জীবন-হুমকিপূর্ণ কারাগারের অবস্থা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, রাজনৈতিক বন্দি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে গুরুতর সমস্যা এবং গোপনীয়তার সঙ্গে স্বেচ্ছাচারী বা বেআইনি হস্তক্ষেপ।
সরকার অবশ্য বুধবার মার্কিন প্রতিবেদনটিকে প্রত্যাখান করে বলেছে, মার্কিন প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে ‘সরকারবিরোধী প্রচারণা মেশিন’ থেকে সংগ্রহ করা কিছু ‘ভুল তথ্য’ রয়েছে।
আরও পড়ুন: গুম, নিপীড়ন বন্ধে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে: ফখরুল
রিজভী বলেন, রাতভর ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে কবর দিতে দেশের আইন আদালতকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করেছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান, যিনি একেবারেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন, তাকেও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সরকারের প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি কাল্পনিক মামলায় জড়ানো হয়েছে।
‘বেগম খালেদা জিয়া সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে গণতান্ত্রিক বিশ্ব বিভ্রান্ত নয়,’ রিজভী বলেন।
তিনি বলেন, এই সরকার যতই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করুক না কেন অন্যায়, দুঃশাসন ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতি তদন্তে দুদকের প্রতি বিএনপির আহ্বান
সরকার আবারও গুম, অপহরণে লিপ্ত হচ্ছে: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার আবারও ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী কর্মীদের গুম করার মতো জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘সাবেক এবং বর্তমান সাতজন র্যাব কর্মকর্তার ওপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থার তীব্র চাপের ফলে জোর করে গুম ও হত্যার ভয়ে থাকা পরিবারগুলোতে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। কিন্তু, সরকার আবারও বলপ্রয়োগের মতো জঘন্য অপরাধে জড়াতে শুরু করেছে।’
উদাহরণ টেনে এই বিএনপি নেতা বলেন, খুলনা জেলা শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (জেসিডি) সাধারণ সম্পাদককে কয়েকদিন আগে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বরগুনা উপজেলা শাখার আরেক জেসিডি নেতাকে গুম করে থানায় সোপর্দ করা হয়। এই সরকার বারবার অমানবিক আচরণ করছে, যা অগ্রহণযোগ্য।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
রিজভী অভিযোগ করেন, গুমের ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবকে ব্যবহার করছে সরকার।
তিনি বলেন, অতীতেও সরকারের নির্দেশে র্যাবের সদস্যরা জঘন্য অপরাধে জড়িত ছিল এবং এলিট ফোর্সকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাহিনীতে পরিণত করেছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘তারা (সরকার) পরে গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে অপহরণ, গুম এবং মানুষ হত্যা করেছে। এখন এই ধরনের অপরাধে সিআইডিকে ব্যবহার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে তুলে নিয়ে চিরতরে গুম করে দেয় অথবা অস্ত্র উদ্ধারের নামে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলে। কখনও কখনও নিহতদের লাশ রাস্তার ধারে বা নদীতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের হামলায় ৩০০ জন আহত হয়েছে: রিজভী
বিএনপির এই নেতা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, অপহরণ ও গুম করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের হারানো অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের পর অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান রিজভী।
অন্যথায় বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করতে তারা আবারও রাজপথে আন্দোলন শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘মধ্যরাতে ভোটের সরকারের বিদায়ের গণনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়ঙ্কর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে চায়, জনগণের এমন তীব্র আন্দোলন দেখে সরকার আতঙ্কিত।’
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ভোটের পরিস্থিতি বাংলাদেশ থেকে নিরুদ্দেশ: রিজভী
সার্চ কমিটি সরকারের আরেকটি 'আজ্ঞাবহ' ইসি গঠনে কাজ করছে: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, সার্চ কমিটি বিদায়ী কমিশনের মতো সরকারের আজ্ঞাবহ আরেকটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম ৩২২ জনের তালিকা। কথাটা হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশনে যারা যাবেন তারা অত্যন্ত যোগ্য দক্ষ লোক হবেন। আগে দেখেছি, নাম প্রস্তাব করা হয়, তাদেরকে বলা হয়, তারপর তারা রাজি হন। এখন সব একেবারে মিছিল করে যাচ্ছেন সার্চ কমিটির কাছে নির্বাচন কমিশনে সদস্য হওয়ার জন্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য। এ যে আবেগীপনা। এই লোকগুলো নির্বাচন কমিশনে এলে আমরা সহজেই বুঝতে পারব দেশে গণতন্ত্র, ভোট ও নির্বাচনের পরিণতি কী হবে ?’
সোমবার এক আলোচনা সভায় রিজভী এসব কথা বলেন। আগামী সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপিপন্থী প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রকল্প ৭১’ জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, বিদায়ী কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসির চেয়েও খারাপ হবে এমন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি কাজ করছে। আগের সার্চ কমিটি হুদাকে (কেএম নুরুল হুদা) খুঁজে পেয়েছিল। এবারের সার্চ কমিটি হুদার চেয়েও খারাপ আরেকজনকে খুঁজে পাবে।
সেই হুদাকে দিয়ে ভোট ডাকাতির নির্বাচন, কেন্দ্র দখলের নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন, নিশিরাতে নির্বাচন হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা আশঙ্কা করেন, এবার সরকারের প্রতি অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হবে যারা গভীর রাতের পরিবর্তে সন্ধ্যায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটি ‘নাটকের’ অংশ: বিএনপি
তিনি বলেন, ‘বর্তমান 'অবৈধ' সার্চ কমিটির সুপারিশ নিয়ে গঠিত ইসিকে তাদের দল আগাম প্রত্যাখ্যান করছে। অবৈধ সরকারের সব কর্মকাণ্ডই বেআইনি। এর সঙ্গে জনগণ ও স্বচ্ছতার কোনো সম্পর্ক নেই।’
রিজভী জানান, আওয়ামী লীগ শাসনের পতন নিশ্চিত করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে তাদের দল আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানাবে।
এর আগে সোমবার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের জন্য সার্চ কমিটিতে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংস্থা এবং ব্যক্তিদের প্রস্তাবিত ৩২২টি নাম প্রকাশ করেছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইন-২০২২’-এর অধীনে ছয় সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। নতুন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ১০টি নাম প্রস্তাব করবে সার্চ কমিটি।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির নামে ‘আওয়ামী খাস কমিটি’ গঠিত: বিএনপি
সার্চ কমিটি একটি অর্থহীন চর্চা: বিএনপি
সার্চ কমিটির নামে ‘আওয়ামী খাস কমিটি’ গঠিত: বিএনপি
সরকার সার্চ কমিটির নামে ‘আওয়ামী খাস কমিটি’ গঠন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমরা আগেই বলেছিলাম, আওয়ামী বাকশালী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ ‘মুজিবকোট’ পরা লোকেরাই সরকারের সার্চ কমিটিতে থাকবেন। নবগঠিত এই সার্চ কমিটি সেই অনুমানেরই নিরেট বাস্তবতা। এটাকে সার্চ কমিটি না বলে বরং ‘আওয়ামী লীগের খাস কমিটি’ বলাটাই যুক্তিযুক্ত মনে করি।”
রবিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, এই সার্চ কমিটি এবং ইসি গঠন করতে তারা যাদের খুঁজে আনবে তারা সবাই একই নৌকার যাত্রী। তারা একই ঝাঁকের কৈ।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের সার্চ কমিটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সার্চ কমিটি যাদের নাম প্রস্তাব করবে তারা সবাই আওয়ামী পরিবারের সদস্য হবে।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষিত আওয়ামী লীগ পরিবার দ্বারা আরেকটি নীলনকশার ভোট ডাকাতির নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করতে নিখাদ আওয়ামী লীগের চেতনার মানুষদের অনুসন্ধান করাই এই সার্চ কমিটির অভীষ্ট লক্ষ্য।’
এর আগে শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান (সভাপতি) করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
সার্চ কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটি একটি অর্থহীন চর্চা: বিএনপি
সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে।
সার্চ কমিটির সদস্যরা কীভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত তা বর্ণনা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটির বর্তমান প্রধান ওবায়দুল হাসান আগের দুই সার্চ কমিটির সদস্য ছিলেন এবং পরীক্ষিত আওয়ামী পরিবারের সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে সাংসদ পদপ্রার্থীও ছিলেন। তিনি বাকশাল ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞ ছহুল হোসাইন সার্চ কমিটির সদস্য হয়েছেন। ২০১৮ সালে সিলেট-১ আসন থেকে সাংসদ পদের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।’
তিনি বলেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান রাজবাড়ীর আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম হামিজ উদ্দিন সেখের ছেলে। তাঁর ভাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আরেক সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক জন্মান্ধ আওয়ামী লীগার হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের একান্ত অনুরাগী ও দৃঢ় সমর্থক প্রয়াত লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী তিনি। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধের পুরোটা সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মেডিকেল সেন্টারে চাকরি করেছেন। হাসিনা মার্কা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এরা বিশেষজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন
রিজভী বলেন, ‘এই সার্চ কমিটি অথবা নির্বাচন কমিশন নিয়ে দেশের জনগণ বা বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই। জনগণ বিশ্বাস করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতা ছেড়ে আগামী নির্বাচন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয় সে ব্যবস্থা করুন।
জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২ দিনের কর্মসূচি বিএনপির
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী ১৯ জানুয়ারি। এ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দলটি।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক দোয়া মাহফিলে বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের অসুস্থ নেতাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখা এর আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯ জানুয়ারি সকালে নয়াপল্টনে প্রধান কার্যালয়সহ দলের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনা: সমাবেশের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করবে বিএনপি
এছাড়া সকাল ১১টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়ার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জিয়ার স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
এছাড়া একই দিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
একই স্থানে ২০ জানুয়ারি বিএনপি বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করবে।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকায় বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশের উদ্যোগও নিয়েছে দলটি।
এছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোও জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচির অংশ হিসেবে আলোচনা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির প্রভু হলো পাকিস্তান: কৃষিমন্ত্রী
দলটির মহানগর, জেলা ও উপজেলা শাখাগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার বাগবাড়িতে জন্ম নেয়া জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি হন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল সেনা কর্মকর্তা জিয়াকে হত্যা করেন।