চুয়াডাঙ্গা
টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ জেলায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানায়, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, হিট অ্যালার্ট জারি
এর আগে বেশ কিছুদিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার বিকেলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
অর্থাৎ গত মঙ্গলবার থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত একটানা চার দিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হচ্ছে।
এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের জনজীবন। রোদের তাপের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছে না।
শোচনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন দিনমজুররা। কাজ না করলে পেটের বাত জুটে না। আবার তীব্র গরম ও কাঠফাঠা রোদে দুপুরের আগেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যানচালক আজগর হোসেন ও রিকশাচালক লিয়াকত আলী জানান, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে রোজার মাসে যাত্রী পাননি তারা। আবার সেই গরম শুরু হয়েছে একেবারেই যাত্রী নেই। সংসার চালানোই দায়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা লতিফুন নাহার বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তাই বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে। আবার ৩ বছর বয়সী বাচ্চাটাও গরমজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে যে তাপ উঠছে তাতে দোকানে বসার অবস্থা নেই। পুরো দোকান দিয়ে মনে হচ্ছে আগুনের ভাপ বের হচ্ছে। এরাম গরমে বেচাবিক্রি ক্যামনে হবে।’
চলমান দাবদাহে সব শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করে পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান। তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে তীব্র গরম, তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
অপরদিকে, চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, আজ শুক্রবার বেলা ৩টায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। এনিয়ে টানা চার দিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হলো চুয়াডাঙ্গায়।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়া সতর্কবার্তা (হিট ওয়েভ এলার্ট) জারি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা জানান, এই তীব্র তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য সতর্কতায় নানা নির্দেশনা জানিয়ে তথ্য অফিসের মাধ্যমে প্রচার অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। তিন-চার দিন আরও তাপমাত্রা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর। এমন প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস চুয়াডাঙ্গাবাসীর।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি
চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, ২ যুবকের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কায় ২ যুবক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।
শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার পারলক্ষীপুর গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বোড়াই গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলের খালিদ হোসেন (১৮) ও একই গ্রামের আরিফুল ইসলামের ছেলে তামিম হোসেন (১৮)। আহত সজিব আলী (১৯) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিন্দুরিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে যুবক নিহত, আহত ৩
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে কুষ্টিয়ায় একটি কনসার্টে গিয়েছিলেন ওই ৩ যুবক। পরে একই মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। এ সময় পারলক্ষীপুর গ্রামে পৌঁছালে তাদের মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান খালিদ ও তামিম। গুরুতর আহত হন সজিব। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৩
তাপপ্রবাহে চুয়াডাঙ্গাবাসীর ঈদ আনন্দে ভাটা
ঈদের তৃতীয় দিন আজ। এখনো মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ বিরাজ করছে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গাবাসীর ঈদ আনন্দে বাধ সেধেছে তীব্র গরম।
চুয়াডাঙ্গায় শনিবার বিকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এপ্রিলের শুরু থেকেই চুয়াডাঙ্গায় মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। যদিও মাঝে দুদিন তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে আসে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি
টানা এই তাপপ্রবাহে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দাবদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন।
একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে সব শ্রেণির মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদরের সরিষাডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এত তাপ সহ্য করা কঠিন। ঈদে একটু ঘোরাঘুরি করব, এত রোদে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।’
একই গ্রামের আকরাম আলী বলেন, ‘ঈদের দুদিন হয়ে গেল। এখন দোকান খুলব, কিন্তু এত তাপে দোকানে বসা অসম্ভব ব্যাপার। শিগগিরই বৃষ্টি হলে আবহাওয়া সহনীয় হতো।’
চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চালান কুদ্দুস মিয়া। তিনি বলেন, ‘ঈদের ঘোরাঘুরি থাকলেও মানুষজন বাইরে আসছে না। তাই ভাড়াও হচ্ছে না, দুপুর হয়ে গেছে এখনো তেমন ভাড়া হয়নি। ভাড়া পেতে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, ‘এপ্রিলের শুরু থেকেই মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ চলেছে। মাঝে কয়েক দিন আবহাওয়া সহনীয় পর্যায়ে আসলেও আবার মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। আজ চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্বাভাসে নেই।’
আরও পড়ুন: ৭ জেলায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, হিট অ্যালার্ট জারি
চুয়াডাঙ্গায় বৃহস্পতিবার ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এই তাপপ্রবাহ টানা পাঁচ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে।
বুধবারও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে চুয়াডাঙ্গাসহ চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গত কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। গত সোমবার চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার যৌথভাবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তীব্র রোদ আর গরমে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে দিনমজুররা। রাস্তাঘাটে, বাজারে লোকজনের চলাচল খুবই কম। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রে। তারা এই তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে বাইরে অবস্থান করছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বৃদ্ধ রিকশাচালক সমীর আলী বলেন, 'কী আর বলব, এই রোদ-গরমে রোজা থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আবার বসেও থাকতে পারছি না। বসে থাকলে পেটে ভাত জুটবে না।’
সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ এখনো অব্যাহত। আগামী ৩দিন এই তাপমাত্রার পারদ আরও বাড়বে। এ সময় তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠতে পারে। আপাতত বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড়ের বিষয়ে আগে থেকে বোঝা যায় না। দুই-এক ঘণ্টা আগে ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গায় স্বামী ও স্ত্রীকে খুনের মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আরেক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
রায় ঘোষণার পর দণ্ডিতদের চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসান নগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক, একই গ্রামের শেষপাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন এবং আসাননগর গ্রামের মাঝেরপাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী।
এছাড়া আসাননগর গ্রামের স্কুলপাড়ার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে শাকিল হোসেনকে দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য শেষে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী আসামির উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন।
মামলার এজাহারের বিবরণ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ায় বাস করতেন নজির মিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন। ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে যেকোনো সময় গলা কেটে হত্যা করেন আসামিরা।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২৫ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীন তদন্ত শেষে হত্যায় সরাসরি জড়িত সাহাবুল হক, রাজিব হোসেন, বিদ্যুৎ আলী ও ভিকটিমের মোবাইল কেনায় জড়িত শাকিল হোসেনের নামে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় শিশু ধর্ষণের পর হত্যা: যুবকের মৃত্যুদণ্ড
বোনের প্রেমিকাকে হত্যা: ভাইসহ দুই যুবকের মৃত্যুদণ্ড
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই
গ্রীষ্মকাল শুরু না হতেই চুয়াডাঙ্গায় সোমবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
সোমবার (১ এপ্রিল) জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কাঠফাটা রোদে জনজীবন অতিষ্ঠ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কর্মজীবীরা, বিশেষ করে দিনমজুররা। পাকা রাস্তায় হাঁটার সময় তীব্র গরমে নাক-মুখ জ্বলছে। গতকাল বৃষ্টিপাত হলেও অসহ্য গরম থেকে মুক্তি পায়নি জেলাবাসী। ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা উঠানামা করেছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেড়েছে, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে রাতে
সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হলেও, তা রোদ উঠলে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ভ্যাপসা গরমের সৃষ্টি করছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম বাতাস অনুভূত হচ্ছে। রাস্তায় চলাফেরা কমে গেছে মানুষের এবং মাথার উপর কোনো আচ্ছাদন দেওয়া ছাড়া হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না।
চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছে দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক ও কৃষকেরা। তীব্র রোদে মাঠে টিকতে পারছেন না কৃষক ও দিনমজুরেরা।
রিকশাচালক রহিম আলী বলেন, গরম পড়ায় রিকশা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে সংসার খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে আবার রোজার মাস। মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় ভাড়া নেই বললেই চলে।
আখের রস বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম বলেন, বছর জুড়ে আখের রস বিক্রি হলেও রোজা আসার পর তাপমাত্রা বাড়ায় এর চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। এমনিতেই পাড়া মহল্লায় আখের রসের ভালো চাহিদা রয়েছে। তার ওপর রোজা আসায় বিক্রি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
শরবত বিক্রেতা জাফর মল্লিক বলেন, রোজার মাসে স্বাভাবিকভাবে অন্য সময়ের মতো শরবত বিক্রি হয় না। ইফতারির সময় সারাদিনের বিক্রি একবারে হয়ে যায়। তারপরও তাপমাত্রা বাড়ায় বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, এ সময়ে দেশের সর্বত্র মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু কয়েক দিন থেকে মৌসুমি বায়ুর প্রবাহ কমে গেছে। গরমে অস্বস্তি আরও বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হলেও তা রোদে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়াচ্ছে। এতে করে ভ্যাপসা গরমের সৃষ্টি করছে।
রকিবুল হাসান বলেন, সোমবার বিকালে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ২১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ৫ বিভাগে তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি বাড়তে পারে: আবহাওয়া অফিস
অস্তিত্ব রক্ষায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দিনমজুরের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টা শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বশির আলী নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার মদনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত বশির আলী পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের আফসার আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
ইউপি সদস্য শামসুল হক জানান, মদনা গ্রামের উত্তর পাড়ার ইলার উদ্দীনের বাড়ির ছাদে ভুট্টা শুকানোর কাজ করছিলেন বশির আলী। ছাদের পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে তার শরীরে স্পর্শ করলে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে যান। বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ডা. সাদিয়া তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা জানান, ঘটনা জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বউ-শাশুড়ির মৃত্যু
ফরিদগঞ্জে গাছ কাটার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, যুবক আটক
চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত থেকে স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে মো. আল মামুন মন্ডল (২৮) নামে একজনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ সময় তার কাছ থেকে ১ কেজি ১৬৬ গ্রাম ওজনের ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজিবি।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সীমান্ত মেইন পিলার ৭৮/৮-আর থেকে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাস্তিপুর পাকা রাস্তার মোড় এলাকা থেকে ওই যুবককে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রবাসী বন্ধুর প্রতারণা, ২৩ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করল পুলিশ
আটক যুবক মো. আল মামুন মন্ডল মো. মুজিবর মন্ডলের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, সীমান্ত এলাকা থেকে আল মামুন মন্ডল নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করে বিজিবি। তিনি শুক্রবার সীমান্ত দিয়ে যাচ্ছিলেন।
তিনি আরও জানান, পরে ওই চোরাকারবারিকে তল্লাশি করে ১০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও বাইসাইকেল জব্দ করা হয়। স্বর্ণের বারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ১১টি স্বর্ণের বার জব্দ, নারী আটক
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ২.২২৮ কেজি স্বর্ণ জব্দ, ২ যাত্রী আটক
চুয়াডাঙ্গায় ১১টি স্বর্ণের বার জব্দ, নারী আটক
চুয়াডাঙ্গা দর্শনা থানার ছয়ঘড়িয়া থেকে স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে তাছলিমা খাতুন (২৫) নামে একজন নারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। এ সময় তার কাছ থেকে ১১টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজিবি।
রবিবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিজিবির চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ৩
আটক তাছলিমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন কামাড়পাড়া এলাকার রেজাউল করিমের মেয়ে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে সীমান্তে যাওয়ার পথে তাছলিমা খাতুন নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করে বিজিবি।
তিনি বেলা ১১টার দিকে ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইকে করে সীমান্তে যাচ্ছিলেন। পরে ওই ইজিবাইক তল্লাশি করে ১ কেজি ৩২০ গ্রাম (১১৩.১৬ ভরি) ওজনের ১১টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
এসব স্বর্ণের আনুমানিক দাম ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আটক নারীকে দর্শনা থানায় হস্তান্তরসহ বিজিবির পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া জব্দ করা স্বর্ণের বারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, স্বর্ণের বারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। আটক নারীকে দর্শনা থানায় হস্তান্তরসহ বিজিবির পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পেট্রাপোল সীমান্তে ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, ৩ বাংলাদেশিকে আটক
শাহ আমানত বিমানবন্দে ওমান ফেরত উড়োজাহাজ থেকে ৬৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গায় পিকনিক বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় পিকনিক বাসের ধাক্কায় মফিজ মিয়া নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের তালসারি মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত মফিজ মিয়া উপজেলার নাটুদহ ইউনিয়নের চন্দ্রবাস গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ট্রাক্টর উল্টে চালক নিহত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে মফিজ মিয়া মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে তালসারি নামক স্থানে পৌঁছালে একটি দ্রুতগতির পিকনিকের বাস পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় স্থানীয়রা আহতাবস্থায় মফিজ মিয়াকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর জানান, বাসটি আটক করা হয়েছে, চালক পলাতক রয়েছে।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরা থেকে মুজিবনগরে পিকনিকের উদ্দেশে যাচ্ছিল বাসটি। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে পথচারী নিহত
ময়মনসিংহে বাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষে ৭ জন নিহত