বিচার বিভাগ
বিচারালয়কে যেন কোনভাবে রাজনীতিকরণ করা না হয়: সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আমি চাইব বিচার বিভাগ ও বিচারালয়কে যেন কোনভাবে রাজনীতিকরণ করা না হয়। এখানে বিচারক ও আইনজীবীদের সম্মিলিত ও মেধাপুষ্ট দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই কেবল সুবিচারের লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে এবং তবেই বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে।
তিনি বলেন, আমাদের সুপ্রিম কোর্টের এই বিচার অঙ্গন পারস্পরিক সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও ভালবাসায় আলোকিত হোক এটিই আমার প্রত্যাশা।
রবিবার (৮ অক্টোবর) আপিল বিভাগে নতুন প্রধান বিচারপতির বিচারিক কার্যক্রমের প্রথম দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনার জবাবে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতির জীবন তুলে ধরে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এদিকে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট নামের সরকার বিরোধী একটি আইনজীবী জোট সংবর্ধনায় অংশ না নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। বিক্ষোভ প্রদর্শনে ছিলেন ফ্রন্টের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সহ-সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে কবলেন, একটি কথা একটু অপ্রিয় হলেও বলতে চাই, কোন বিষয়ে ভালভাবে না জেনে বা যথেচ্ছভাবে বিচারক ও আদালত সম্পর্কে কটু মন্তব্য মোটেই সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করেনা।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা ইউএলএফ’র
সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমানের ভাষায় আমিও উচ্চারণ করতে চাই কোনো বিচারকই সমালোচনার ঊর্ধে নন।
সভ্য জগতে ভব্য সমালোচনার একটা অবকাশ রয়েছে। বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাকস্বাধীনতার এক অংশ বলে আমি মনে করি। আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সংবিধানে এই বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে যে মুক্ত সাংবাদিকতা বিরাজ করছে তার ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার জন্যে যথেচ্ছা সমালোচনার পরিবর্তে জেনে শুনে ওয়েল ইনফরমড হয়ে সমালোচনার প্রয়োজন। তবে কেউ যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে তা সংবাদ মাধ্যমই হোক, আইনজীবীই হোক বা যে কেউ হোক তাকে শায়েস্তা করার জন্য আদালতের হাত যথেষ্টই লম্বা।
দুর্নীতির বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধানের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিচার প্রশাসনকে রাখতে হবে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত, স্বাধীন এবং সোশ্যাল জাস্টিস তত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তিনি বলেন, একটি দুর্নীতিমূক্ত বিচার ব্যবস্থা দেশ ও জাতির জন্য গর্বের। আমার দায়িত্ব পালনকালে আমার সতীর্থ বিচারকবৃন্দ ও আইনজীবীদের সুচিন্তিত পথ ধরে একটি র্দুনীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। আমি আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে একটি দীর্ঘ মেয়াদী জুডিসিয়াল প্ল্যান তৈরী করতে চাই। আমার উত্তরসুরিগণ যেন এই প্ল্যান বা পরিকল্পনা ধরে আগামীতে এগিয়ে যেতে পারেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। গত ২৬ অক্টোবর তিনি শপথ নেন। শপথ গ্রহণের পর থেকে তার নিয়োগ কার্যকর হয়। আজ ছিল প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার প্রথম বিচারিক কার্যদিবস।
আরও পড়ুন: দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ওবায়দুল হাসান
শেষ কর্মদিবসে মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে কথা বললেন প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখুন: শেষ কার্যদিবসে প্রধান বিচারপতির আহ্বান
বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার মেয়াদের শেষ কার্যদিবসে আয়োজিত এক বিদায়ী সংবর্ধনায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক। এটি সংবিধানের রক্ষকও বটে।
তিনি বলেন, তাই বিচারকদের সাহসী ও ন্যায়পরায়ণ হতে হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ ব্যর্থ হলে বা আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ থেকে বিচ্যুত হলে রাষ্ট্র ও নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য।
তিনি বলেন, প্রকৃত অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন সংরক্ষণ, সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
বিচার বিভাগ যাতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব থেকে বিচার বিভাগকে রক্ষা করা বিচারক, আইনজীবী ও রাষ্ট্রের প্রত্যেক দায়িত্বশীল নাগরিকের দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন: আইনজীবী ও বিচারক একে অপরের পরিপূরক: প্রধান বিচারপতি
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা, আপনারা সবাই সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হই, প্রত্যেক নাগরিক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক বিভাজন রাস্তা পেরিয়ে আদালতের দিকে এলে তা বিচার বিভাগের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে আইনজীবীদের মধ্যে বিভক্তি ও মতবিরোধ এবং তাদের প্রতিক্রিয়া বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যে মহান চেতনায় আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল, তার প্রতি আমাদের সবার একটি মহান জাতীয় দায়িত্ব রয়েছে। দেশের সব আইন ও সব আইনি কার্যক্রম সাংবিধানিক চেতনার প্রতিফলন করবে, আমাদের অবশ্যই তা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ শান্তি চায়, কিন্তু সম্পূর্ণ শান্তির জন্য আমাদের এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।’
২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি অবসরে যাচ্ছেন। তবে আজই ছিল তার শেষ কার্যদিবস। প্রথা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কোর্টরুম-১ এ বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির ও সচিব আবদুন নূর দুলাল এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সংবর্ধনা দেন।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতি ও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগ দুর্বল হলে সে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী বলা যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বিরোধী দল দমন-পীড়নে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিচার বিভাগকে এর প্রধান ও বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।’
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে জনগণের মৌলিক, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী জনগণের আন্দোলন ও সংগ্রাম রুখে দিতে বিচার বিভাগের চরম হয়রানি ও দমন-পীড়নের শিকার হতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে জাতিকে সীমাহীন সহিংসতা ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘হামলার’ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের জানাল বিএনপি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং চলমান আন্দোলনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যেই আদালত তার বিরুদ্ধে 'নির্দেশিত' রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে এভাবে আন্দোলন কখনো দমন করা বা থামানো যাবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জনগণ ঘরে ফিরবে না।’
ফখরুল বলেন, জুবাইদা রহমানের রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও তাকে 'মিথ্যা' মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, সব মামলায় তারেক রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতারা খালাস পেয়েছেন।
২০০৭ সালের এক-এগারো’র রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৫টি দুর্নীতির মামলা বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির সমাবেশ
তিনি বলেন, ‘এ কারণেই আমরা বলছি, তারা (সরকার) আসলে তাদের ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আদালত ও বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করে ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটা বিস্ময়কর যে বিচারিক আদালত তাকে (খালেদা জিয়া) ৭ বছরের সাজা দিয়েছেন এবং উচ্চ আদালত তা বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা একই ধরনের মামলায় জামিন ও খালাস পেয়েছিলেন এবং এমনকি এখন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’
ফখরুল অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগের পাশাপাশি সরকার সত্যকে দমন করতে এবং তাদের বক্তব্যকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গণমাধ্যমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে ছাত্রলীগের ‘ক্যাডাররা’ নুরের উপর জঘন্য ও অমানবিকভাবে হামলা চালিয়ে তাকে আহত করেছে।
নুরের বাসভবনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো সভ্য দেশে এ ধরনের ঘটনা চলতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরুল হক নুরকে দেখতে যান ফখরুল। সেখানে তিনি নুরের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসকদের কাছে তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়েছে: অভিযোগ ছেলের
বিচার বিভাগকে স্মার্ট করতে পদক্ষেপ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এখন আমাদের ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। আমরা বিচার বিভাগকে স্মার্ট করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’ স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন এবং সুপ্রিম কোর্টের ১৪ তলা রেকর্ড ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের সমাবেশের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত
শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। তাই এক্ষেত্রে একটি স্মার্ট বিচারব্যবস্থা খুবই প্রয়োজন। আপনারা এরমধ্যে এ বিষয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে একটি আইন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে মামলাজট তীব্র হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থার কারণে আজ মামলাজট লাঘব হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ মামলাগুলো নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং জনগণ দ্রুত বিচার পাচ্ছে (ভার্চুয়াল আদালতের কারণে)।
তিনি বলেন, জনগণ তার সরকারের তৈরি ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ভোগ করছে।
এ ছাড়া ভার্চুয়াল আদালতের ব্যবস্থা করে মামলারজট হ্রাস করার জন্য বিচারকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, এখন তালিকা অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে এবং লোকেরা এটি তাদের বাড়িতে বসেই দেখতে পাবে।
তিনি বলেন, ভার্চুয়াল আদালতে বাংলায় রায় প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আদালতের রায় নিষ্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে দেওয়া হয়। প্রত্যেকেই তাদের মামলার আপডেট জানতে পারে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এই পদক্ষেপগুলো এদেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়া খুব সহজ করে তুলছে। তাই জনগণের মধ্যে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশ্বাস ও আস্থা ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক অধিকার, আর্থ-সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ তার নিজস্ব গতিতে দ্রুত এগিয়ে যাবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মমতাজউদ্দিন ফকির।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮০.৩৯ শতাংশ
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর সমাগম
বিচার বিভাগ দুর্বল হলে সে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী বলা যাবে না: প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচার বিভাগ যদি দুর্বল হয় তাহলে সে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী বলা যাবে না।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের যে তিনটি অঙ্গ; সেই অঙ্গের একটি হলো বিচার বিভাগ। যদি জুডিশিয়ালি (বিচার বিভাগ) দুর্বল হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রকে শক্তিশালী বলা যাবে না। আর তাই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে করে পাবলিক (সাধারণ জনগণ) ন্যায়বিচার প্রার্থনায় আদালতে আসেন।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে: প্রধান বিচারপতি
শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার ন্যায় কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জনগণ যাতে সহজে স্বল্প সময় ও খরচে ন্যায় বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে আমরা চেষ্টা করছি। বিচার বিভাগকে গতিশীল করে দ্রুততম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে বিচারকদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা হিসেব-নিকেশ করে দেখেছি যে ডিস্পোজালের (নিষ্পত্তি) রেট মোটামুটি ১২৫ শতাংশ করা যায় তাহলে এখন থেকে ৫-৭ বছরের মধ্যে বর্তমান যে মামলার জট রয়েছে তা আসতে আসতে কমে যাবে।
আরও পড়ুন: আইনজীবী ও বিচারক একে অপরের পরিপূরক: প্রধান বিচারপতি
দেশের কোর্টগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন: প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ইদানীং সবার মধ্যে কেমন যেন একটা অসহনশীলতা দেখা যাচ্ছে। এ অসহিষ্ণুতা বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, রাষ্ট্রের অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাহলে আমরা আইনের শাসনের জন্য যে সংগ্রাম করে যাচ্ছি, তা প্রতিষ্ঠা করতে পারব না।
আরও পড়ুন: স্বল্প সময়ে বিচারকাজ সম্পন্ন করা বিচারক ও আইনজীবীদের দায়িত্ব: প্রধান বিচারপতি
রবিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওহিদুজ্জামান। সভা পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনাদের ভাবতে হবে, আপনারা আদালতের অংশ। আপনাদের সাহায্য ছাড়া আদালত ঠিকমতো সচল রাখা সম্ভব নয়। আমরা আইনজীবী ও বিচারকেরা মিলে একসঙ্গে চেষ্টা করতে চাই, যেন মামলার জট ছেড়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি মনে করি জুডিশিয়ালিতে বিচারক যদি হয় ডান হাত, তাহলে আইনজীবী বাম হাত। এক হাত যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে কাজ ঠিকমতো হবে না।
তিনি বলেন, দেশের তিনটি স্তম্ভ বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগি ও আইন বিভাগ। এর কোনো একটা যদি দুর্বল হয় তাহলে সে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, গণতন্ত্র দুর্বল হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় না। তাই আসুন আমরা সকলে সম্মেলিত চেষ্টায় বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
এর আগে প্রধান বিচারপতি ফরিদপুরে জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামে একটি বিচার নিতে আসা ব্যক্তিদের জন্য একটি বিশ্রামাগার স্থাপনের জন্য ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেন।
এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশে ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় কমপক্ষে চার কোটি লোক জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে এ বিশ্রামাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এখানে পানি পান ও শৌচাগারের সুবিধা থাকবে। বিচার চাইতে এসে যেন কাউকে এলোমেলো ঘোরাফেরা করে দুর্ভোগে পড়তে না হয়, এজন্য এই ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, এসব বিশ্রামাগার নির্মাণের জন্য আইন মন্ত্রণালয় ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতিটি জেলা এ বিশ্রামাগার নির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকা পাবে।
এছাড়া কাজ যাতে ঠিক মত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঠিকাদার যেন চুরি না করে। কম লাভ করে তারা যেন এ কাজ করে দেয়।
প্রধান বিচারপতি ফরিদপুরের মামলার নিষ্পত্তির হার বেশি হওয়ায় বিচারক ও আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ফরিদপুরে ২৫ হাজার ৫৫৭টি মামলা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মামলা। নিষ্পত্তির হার ১১৪ শতাংশ। এ ঘটনা আমাদের আশা জাগায়।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় চাই শক্তিশালী বিচার বিভাগ: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, আসুন ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য জুডিশিয়ারিকে (বিচার বিভাগকে) শক্তিশালী করি। জুডিশিয়ারি যাতে মসৃণভাবে চলতে পারে, স্বাধীনভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করতে পারে, আপনারা বিচার বিভাগকে সহায়তা করবেন। তাহলে বিচার বিভাগ এগিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বাগেরহাটের পিসি কলেজের সাবেক ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বর্তমানে বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা বেড়েছে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে সবার আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। জুডিশিয়ারিকে গতিশীল করতে হবে। আমি বার বার বলি যদি জুডিশিয়ারি ফেল করে গণতন্ত্র ফেল করবে। আর গণতন্ত্র ফেল করলে রাষ্ট্র অকার্যকর হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি এই বিচার বিভাগের চাকাটা কীভাবে একটু সচল করা যায়।
তিনি বলেন, আমাদের পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ পরাজয়ই একজনকে জয়ী করার পথ সুগম করে দেয়।
বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সেই গ্রাম থেকে উঠে আসা। তারা যখন আদালতের বারান্দায় ঘোরে, আমাদের উচিত তাদের যত কম খরচে পারা যায় বিচার দেয়া। সকলের সহযোগিতা ছাড়া একা জুডিশিয়ারিকে এগিয়ে নেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন। তারা যখন আদালতের বারান্দায় ঘোরেন, আমাদের উচিত তাদের যত কম খরচে বিচার দেয়া। তাদেরকে যদি একদিন আগেও আদালতের বারান্দা থেকে বাড়ি ফেরাতে পারি তাহলে তারা একদিন ঘোরা থেকে বাঁচলেন।
প্রধান বিচারপতি বলে, ১৯৭১ সালে যে উদ্দেশ্য নিয়ে ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছেন, আমরা তার সুবিধাভোগী। যারা বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করে দিয়েছেন তাদেরকে বুকে ধারণ করতে হবে। এখন যদি আমরা কাজে গাফিলতি করি, কোনো প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করি, তাহলে তাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা হবে। আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। পি সি কলেজিয়ানস অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন-প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাজাফফর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে মো. নূরুজ্জামান
প্রতি বছর ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ প্রদানের সিদ্ধান্ত, নীতিমালা প্রণয়ন
২ বছরের মধ্যে বিচারিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাইজড করা হবে: পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আগামী ২ বছরের মধ্যে বিচারিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাইজড করা হবে।
তিনি বলেন, সারা দেশের জুডিশিয়াল সিস্টেমকে সম্পুর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর, আরও স্বল্পসময় ও খরচে যাতে মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেয়া যায় এবং বিচারক ও আইনজীবীরা সহজে বিচারিক কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে ২ হাজার ২শ’ ২৪ কোটি টাকার "ই-জুডিশিয়ারি" নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
শনিবার আইন ও বিচার বিভাগ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে অনলাইন কারণ তালিকা, বিচার বিভাগীয় মনিটরিং ড্যাশবোর্ড এবং মাই কোর্ট অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার নয়, সহযোগিতার: পলক
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার কোর্টরুম ডিজিটাইজ করা হবে। আদালতে অডিও রেকর্ডিং পুল সিস্টেম থাকবে। পাশাপাশি ভার্চুয়াল টার্মিনাল করা হবে। এছাড়া ১৪টি সেন্ট্রাল জেল ডিজিটাল করা হবে। আসামিরা যেন জেল থেকে শুনানীতে অংশ নিতে পারে এজন্য ৯টি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ৬৪টি জেলা কারাগারে ক্যামেরা ট্রায়াল রুম করা হবে।প্রতিমন্ত্রী বলেন, গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে বৈঠক অ্যাপস ব্যবহার করা হবে। বিচারিক তথ্যের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে জেআরপি’র অধীনে সুপ্রিম কোর্টে একটি ফোর ট্রায়াল ডেটাসেন্টার স্থাপন করা হবে। পলক বলেন, ডিজিটাল বিচারিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিচারকদের ২ হাজার ল্যাপটপ, অফিস স্ট্যাফদের জন্য ডেস্কটপ এবং ৭৫ হাজার আইনজীবী ও বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমসহ প্রত্যেকটি বার অ্যাসেোসিয়েশনে একটি করে সাইবার ক্যাফে প্রতিষ্ঠা করা হবে।প্রতিমন্ত্রী বলেন এটুআই, ইউএনডিপি ও আইসিটি বিভাগ মিলে এই অবকাঠামোগুলো তৈরির পর এই অর্থবছরে বিচার ও স্বাস্থ্য বিভাগে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে: পলক
বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে কার্পণ্য করবে না সরকার: আইনমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে কোন কার্পণ্য করবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের অবকাঠামো ও লজিস্টিক সমস্যা দূরীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এ সমস্যা দূর না হওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ নিতে থাকবে।’
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের জন্য আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী চলমান রিফ্রেসার কোর্সের আজকের (বুধবার) এক অধিবেশনে মামলাজটের কারণ ও তার সমাধানের সুপারিশ শীর্ষক দলগত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মানব নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি সন্ত্রাসবাদ: আইনমন্ত্রী
মামলাজট নিরসনের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য মামলাজট কমিয়ে এনে জনগণকে দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করা। তাই মামলাজট যে একটি বড় সমস্যা সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং এই চিন্তা মাঠ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমানে যে হারে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে মামলাজট কমে আসবে।
বিচার ও সালিস এক নয় এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, আইনের পরিসীমার মধ্যে থেকেই জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দিতে হবে এবং মামলা জট নিরসন করতে হবে। জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারলে বিচার বিভাগের সাফল্য সমৃদ্ধ হবে।
দলগত উপস্থাপনায় ছয়টি গ্রুপে বিভক্ত ৩০ জন বিচারক মামলাজটের কারণ ও তার সমাধানের সুপারিশ তুলে ধারেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, কোর্স পরিচালক মীর মো. এমতাজুল হক সহ আইন ও বিচার বিভাগ এবং ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় খালেদা জিয়াকে দাওয়াত দিতে আইনি বাধা নেই: আইনমন্ত্রী
সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এমন কোনো আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
বিচার বিভাগও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সব সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিচারকর্ম বিভাগও এ উন্নয়নের অংশীদার। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা প্রতিটি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য স্বীয়, মেধা, মনন ও কৌশল প্রয়োগ করবেন। কীভাবে হয়রানিমূলক মামলা কমিয়ে দ্রুত বিচারিক সেবা নিশ্চিত করা যায় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা বিচারকদের দায়িত্ব।শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ২৩ তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।নারী বিচারদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, একজন জজ (বিচারক) যখন মামলা পরিচালনা করেন তখন তিনি নারী বা পুরুষ থাকেন না, তখন তিনি জজ-ই থাকেন। তাই শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষের কথা চিন্তা না করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।আনিসুল হক বলেন, নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর দেয়া সংবিধানে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনুচ্ছেদ ১৯, ২০, ২৮ - এ সকল প্রকার কর্মে ও পেশায় সমতার বিধান যুক্ত করা হয়। সংবিধানে প্রদত্ত এ বিধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীদের বিচার বিভাগে অংশগ্রহণের সকল বাঁধা দূর করে বিচারকাজে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন। এরপর ১৯৭৫ সালে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথমবারের মত দু’জন নারী বিচারক বাংলাদেশের বিচার বিভাগে যোগদান করেন।
আরও পড়ুন: মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সেদিনের নারী মুক্তির অভিনব পদক্ষেপে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে এখন বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে নারী বিচারকের পদচারণা ঘটেছে। যার অগ্রপথিক ও জীবন্ত সাক্ষী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।
আনিসুল হক বলেন, আজ বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে নারীদের শুধু পদচারণাই ঘটেনি বিচার বিভাগে তাদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয় হারে বাড়ছে। বর্তমানে জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারী বিচারকের সংখ্যা ৫৪৪ জন যা মোট বিচারকের শতকরা ২৮ ভাগ। এ সংখ্যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও উৎসাহমূলক।তিনি বলেন, বিচার বিভাগে নারীদের সংখ্যাই শুধু বাড়েনি তারা সেখানে মেধা ও যোগ্যতারও স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তার প্রমাণ, ত্রয়োদশ বিজেএস পরীক্ষার মাধ্যমে ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের মেধা তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান দখল করেছে দু’জন নারী বিচারক।বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশনের সভাপতি হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, আইন সচিব মো. গোলাম সাওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম, এসোসিয়েশনের মহাসচিব জিনাত সুলতানা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: শ্রমিকের অধিকার ও কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: আইনমন্ত্রী
দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম কমে আসবে: আইনমন্ত্রী