আত্মহত্যা
কোম্পানীগঞ্জে বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী পলাতক
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে রুবিনা বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূ বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী জুবের আহমদ পলাতক রয়েছেন।
রবিবার (৩১ মার্চ) রাতে উপজেলার টুকেরগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের আবুল হোসেনের বাসায় ভাড়া থাকতেন এই দম্পতি।
রুবিনা বেগম গোয়াইনঘাট উপজেলার রাউতগ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে। তার স্বামী একই উপজেলার লাবুগ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ১২টার পর থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঘরের দরজা না খোলায় প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অন্য ঘর দিয়ে তার রুমে প্রবেশ করেন। তারা রুবিনাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত কোম্পানীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সোমবার সকাল ৯টায় কোম্পানীগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ জানান, নিহতের পরিবারকে খবর দিয়ে গোয়াইনঘাট থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্বামীকে আটক করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।
অবন্তিকার আত্মহত্যা: জামিন পাননি দ্বীন ইসলাম, রিমান্ড শেষে জেলে আম্মান
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরোজ সাদাত অবন্তিকার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার আসামি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন বাতিল করেছেন আদালত।
এদিকে অবন্তিকার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার অপর আসামি রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে রিমান্ড শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ডে জবি’র সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে আইনজীবীদের শুনানি শেষে চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক এ নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে আজ দুপুরে দুই দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ রায়হান সিদ্দিক আম্মানকে আদালতে হাজির করলে জেলে পাঠানো হয়। এরআগে মঙ্গলবার একদিনের রিমান্ড শেষে দ্বীন ইসলামকে জেলে পাঠান আদালত।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৫ মার্চ) অবন্তিকা সহকারী প্রক্টর দীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেইসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মানের নাম উল্লেখসহ বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, ৩ কারারক্ষী বরখাস্ত
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ইব্রাহিম নেওয়াজ (৩০) নামে এক কয়েদির আত্মহত্যার ঘটনায় ৩ কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া অপর ৩ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সাময়িক বরখাস্ত কারারক্ষীরা হলেন- এরশাদ উল্লাহ, হাবিবুর রহমান ও আল আমিন। এছাড়া প্রধান কারারক্ষী মো. জসিম, সহকারী প্রধান কারারক্ষী আবদুল লতিফ এবং কারারক্ষী মাসুদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে কারাকর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
এর আগে সোমবার রাতে ইব্রাহিম নেওয়াজ নামে ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এই কয়েদি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে গলায় ফাঁস দেয়। উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত ইব্রাহিম নেওয়াজ রাঙামাটি সদর উপজেলার আলম ডক এলাকার আলী নেওয়াজের ছেলে। চট্টগ্রামের রাউজান থানার এক অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে কারাবন্দি ছিলেন তিনি।
কারা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতরে বন্দি গণনার সময় একজন কম পাওয়া যায়। তাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর খাদ্য গুদামের সামনে চৌবাচ্চার টিনশেডের রডের সঙ্গে প্লাস্টিকের বস্তা ও কম্বলের বর্ডারের অংশ দিয়ে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু
নিহত ইব্রাহিম নেওয়াজের মামাতো ভাই নাইমুর রহমান তুর্য বলেন, ‘আমার ভাইকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর মধ্যে জেল সুপার হঠাৎ ফোন করে জানান আমার ভাই মারা গেছেন। এরপর সকালে আমরা কারাগারে যাই। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।’
চট্টগ্রাম কারা বিভাগের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে এক কয়েদি আত্মহত্যা করেছে। ওই বন্দির আত্মহত্যার চেষ্টা ও পরে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কারো বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. রেজা মো. সরোয়ার আকবর বলেন, ‘বন্দির গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। আমাদের কাছে আনার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এক দিনের রিমান্ড শেষে কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার মৃত্যু: আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিএমপি
সোমবার অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের দুইদিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে রবিবার (১৭ মার্চ) বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে থেকে তাদেরকে গ্রহণ করে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল।
শুক্রবার (১৫) মার্চ রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ডে জবি’র সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী
নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
একটি সুস্থ জীবনের জন্য দৈহিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই যত্নশীল হওয়া জরুরি। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা নারী ও পুরুষ দুজনের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই বিপজ্জনক। প্রচন্ড হতাশায় এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে এই সমস্যা। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই পরিস্থিতির নিত্যতার পাল্লা পুরুষদের দিকেই বেশি ভারী। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার আধিক্য থাকলেও নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি। এই সমস্যার শিকড় কোথায়, চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বজুড়ে নারী ও পুরুষের আত্মহত্যা
নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকলেও, সেটি পুরুষদের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়। জেন্ডার প্যারাডক্স হিসেবে পরিচিত এই অসঙ্গতির জন্য বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় বেশি।
২০০৮ সালে আত্মাহুতির মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। ৭ বছর পর ২০১৫ সালেও আনুপাতিক হারটা প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল, যা ১ দশমিক ৭। পশ্চিমা দেশগুলোতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুতে নারীদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা হরহামেশাই তিন থেকে চার গুণ বেশি থাকে। এই বৃহৎ পরিসরটি পরিলক্ষিত হয় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
১৯৫০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের আত্মহত্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ২০১৯ সালে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার নারীদের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি ছিল। ২০২১ সালে এই আনুপাতিক হার বেড়ে ৩ দশমিক ৯০- এ দাঁড়িয়েছে। মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশই পুরুষ, আর এই হিসাবে আত্মহত্যা জনিত কারণে পুরুষের মৃত্যুর হার দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ।
কিশোর এবং তরুণদের আত্মাহুতির হার অন্যান্য বয়সের তুলনায় কম। তবে আত্মঘাতী বিষয়টি এখনও মার্কিন তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
অন্যদিকে, আত্মহত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটে নারীদের মধ্যে বেশি, যা পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ। পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৩৩ গুণেরও বেশি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা। শিক্ষার্থীদের মাঝেও এমন প্রবণতা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ১ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
আশঙ্কাজনক আত্মহত্যার হারে পশ্চিম ইউরোপের একমাত্র দেশ হলো বেলজিয়াম। সেখানে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যা করে ১৮ দশমিক ৩ জন, যার মধ্যে প্রতি লাখে ২৪ দশমিক ৯ জন পুরুষ এবং ১১ দশমিক ৮ জন নারী।
২০১৯ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার ছিল আফ্রিকার দেশ লেসোথোতে। সেখানে প্রতি লাখে আত্মাহুতির রেকর্ড ছিল ৭২ দশমিক ৪ জনের, যাদের মধ্যে প্রতি লাখে পুরুষ সংখ্যা ১১৬ জন এবং নারী ৩০ দশমিক ১ জন।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০০০ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যায় পুরুষের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভরে ক্ষেত্রে এই হার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত কমতে থাকে। অতঃপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিছুটা ওঠা-নামার পর আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৯ সালে পুরুষ মৃত্যুহার ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা নারীদের ক্ষেত্রে ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?
ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ফেসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেনারেল হাসপালের আবাসিক সার্জন ডা. আব্দুল করিম খন্দকার।
নিহত ফাইরোজ কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে। কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাও ফায়ার সার্ভিস পুকুরপাড়ের নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুর আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে অবন্তিকা লিখেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী। আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন-অনলাইনে থ্রেটের ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় দূতাবাসে কর্মরত স্প্যানিশ নাগরিকের আত্মহত্যা
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম।’
সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘আমি মেয়েটিকে দেখেছি প্রায় দেড় বছর আগে। তাদের কয়েকজন সহপাঠী প্রক্টর অফিসে এসেছিল। সে সময় তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার, আমি ও আরও কয়েকজন সহকারী প্রক্টর অফিসে ছিলাম। মেয়েটি ফেক আইডি ব্যবহার করে তার বন্ধুদের মেসেজ পাঠাত। আমাদের বলা হয়েছিল যে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে মেয়েটি তার দোষ স্বীকার করে। তখন তার পরিবারের সদস্যরা জিডি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন।’
আরও পড়ুন: স্ত্রী ও ২ মেয়েকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সবাই বৈঠক করে তাকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কোনো সমস্যা না থাকলে জিডি প্রত্যাহার করা হবে। আমি কখনো মেয়েটির সঙ্গে একা কথা বলিনি। দয়া করে ঘটনার তদন্ত করুন। আমি দোষী হলে আমাকে শাস্তি দিন। কিন্তু দয়া করে আমাকে আগে থেকে দোষী বানাবেন না। নইলে আমাকেও আত্মহত্যা করতে হবে।’
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। নিহত শিক্ষার্থী তার মৃত্যুর জন্য আমাদের প্রক্টর টিমের এক সদস্যকে দায়ী করেছেন। মাননীয় উপাচার্য মৌখিকভাবে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে সারাদেশে আত্মহত্যা করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী: আঁচল ফাউন্ডেশন
ঢাকায় দূতাবাসে কর্মরত স্প্যানিশ নাগরিকের আত্মহত্যা
ঢাকায় স্পেনের দূতাবাসে কর্মরত এক স্প্যানিশ নাগরিক আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার (৩ মার্চ) গুলশানের পিংক সিটির কাছে এক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, তার নাম ইসমাইল গিল সেরানো (৫৮)। তিনি গুলশানের ১০৩ নম্বর রোডের একটি ছয়তলা ভবনে বসবাস করতেন।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহানুর ইউএনবিকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ওই স্প্যানিশ নাগরিক মানসিক চাপে ভুগছিলেন এবং অন্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন।
দুপুর ২টায় ভবনের ছাদের তালা ভেঙে সেখানে গিয়ে লাফ দিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বলে জানান তিনি।
তবে দূতাবাসে তিনি কোন দায়িত্বে ছিলেন সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: স্ত্রী ও ২ মেয়েকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
স্ত্রী ও ২ মেয়েকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার পর ছুরি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন আশিকুর রহমান মোল্লা।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের টেক্সটাইল এলাকার মোল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২ সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা!
নিহতরা হলেন— আশিকুর রহমান মোল্লার স্ত্রী তহুরা বেগম (৩৫), তার দুই মেয়ে আয়শা আক্তার (৮) ও জেরিন আক্তার (৫)।
পুলিশ জানায়, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার পর ছুরি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আশিকুর। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার গোলাম সবুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, মাদকাসক্ত ও ঋণগ্রস্ত ছিলেন আশিকুর রহমান মোল্লা। এ কারণেই হয়তো তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করেন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা
২০২৩ সালে সারাদেশে আত্মহত্যা করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী: আঁচল ফাউন্ডেশন
খুলনায় ২ সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা!
খুলনার ডুমুরিয়ায় মা তার দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন- ডুমুরিয়া উপজেলার কমলপুর গ্রামের মান্নান সরদারের স্ত্রী ডলি বেগম, তার কন্যা ফাতেমা (৬) ও ৭ মাস বয়সী ছেলে ওমর।
আরও পড়ুন: খুলনায় আরও দুই দিন বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে যেকোনো সময়ে নিজ বাড়িতে পারিবারিক কলহলের কারণে ডলি বেগম তার দুই সন্তানকে হত্যা করে তিনি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, সবকিছু দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি- মা ডলি বেগম আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার আগে তিনি তার দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করেন। এ ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে সঠিক তথ্য জানানো যাবে।
আরও পড়ুন: হাতীবান্ধায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীর আত্মহত্যা!
এনজিওর ঋণের চাপে রাবি কর্মচারীর আত্মহত্যার অভিযোগ
তাসনিয়া রহমানের জীবনের কেন এই করুণ পরিণতি?
ধানমণ্ডির বাসা থেকে শুক্রবার সকালে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মডেল তাসনিয়া তানজিম ওরফে তাসনিয়া রহমানের লাশ। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় আত্মহত্যা করেছেন তাসনিয়া।
বেপরোয়া ও বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্ত তাসনিয়া রহমান আত্মহত্যার পথ কেন বেছে নিলেন তা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন।
আরও পড়ুন: অভিনেতা ও প্রযোজক সাজু মুনতাসিরের বিশেষ দিন
জানা গেছে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন তাসনিয়া।
গত বছর যখন তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে প্রকাশ্যে আসতে থাকে, তখন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে ও কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে কথা বলেন তাসনিয়া।
এসব লাইভে তাসনিয়া প্রকাশ করেন তার সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল এবং কাদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: যেভাবে ‘ওস্তাদ’ হয়ে ওঠেন রশিদ খান
তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন তাসনিয়া। পরে পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয় এই মামলা। উঠে আসে বেশ কয়েকবছর ধরে চলা তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি।
মাত্র চার মাস পর একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ইফতেখারুল আলম নামের এক ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্ণ ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্ত সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ইফতেখারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাসনিয়ার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময়ে তার থেকে অন্তত বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এবং পরে মিথ্যা মামলা করেন ইফতেখারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: বলিউড স্টাইল আইকন হৃত্বিক রোশনের যে সিনেমাগুলো ২০২৪ সালে মুক্তির অপেক্ষায়
সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাসনিয়া পেশাদার ব্যাকমেইলিং এ জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা।
আরেক তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র।
এছাড়াও শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জরিয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একটি কলরেকর্ড ফাঁস করেন তিনি।
আরও পড়ুন: টুয়েলভথ ফেইলের মতো অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ১০ সিনেমা
সেইসঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।
এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর গেল বছর তাসনিয়া রহমান নির্মাতা জসীম আহমদকে তা ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করে তাদের মধ্যকার ২০২০ সালের একটি পুরনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে অনলাইনে মানহানিকর বক্তব্য দিতে থাকেন।
এসময় জসীম আহমেদের আইনজীবিরা সংবাদ সম্মেলন করেন সাইবার আইনে মামলার আবেদনের কথা জানান।
আইনজীবি ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম গণমাধ্যমে বলেন, ‘তাসনিয়া সিরিয়ালি ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করেন।’
আরও পড়ুন: ফুলের মালা দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে: ফেরদৌস
একের পর এক বিতর্কে জড়ানোর পর বেশকিছুদিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেইসবুক ও ইন্সটাগ্রাম আইডি ডিএক্টিভেট করে আড়ালে চলে যান।
সম্প্রতি ইউ ল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে লিভিং রিলেশনে ছিলেন তিনি। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্য আসতেই সেই ছাত্র তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন তাসনিয়া।
শোবিজে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে এসে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বেপরোয়া জীবনের নিয়ন্ত্রণ টানতে না পেরে করুণ পরিণতি বরণ করে নিতে হলো তাসনিয়া রহমানকে। অর্থসংকট ও সর্বশেষ প্রেমিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন তাসনিয়া, এমনটাই ভাবছেন শোবিজ অঙ্গনের মানুষরা।
আরও পড়ুন: ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস