কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় ২ জনের আমৃত্যু ও ১ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার খোকসায় মোটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলাম ওরফে লতিফকে (৩০) গলা কেটে হত্যার দায়ে দুই আসামিকে আমৃত্যু ও এক নারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুনচি গ্রামের মৃত ফয়েজ শেখের ছেলে মজিবর শেখ (৩৭) ও কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া এলাকার তোফাজ্জেল আলীর ছেলে ফজলু (৩৫)।
দণ্ডপ্রাপ্ত খুশি বেগম কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উত্তর শ্যামপুর গ্রামের মজনু শেখের স্ত্রী।
জানা গেছে, রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খুশি বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজলু ও মজিবর পলাতক রয়েছেন।
অন্যদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় আজিম সর্দারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন:ড্রামট্রাকের ধাক্কায় কুষ্টিয়ায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলাম ভাড়ায় যাত্রী বহনের উদ্দ্যেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। সেদিন বিকাল থেকে তিনি নিখোঁজ হন। পরের দিন ১৭ জুলাই দুপুর ১টার দিকে খোকসা উপজেলার উত্তর শ্যামপুর গ্রামের মাঠে পাটখেতের মধ্যে মস্তকহীন নজরুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নজরুলের ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চুরি করতে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরের দিন ১৮ জুলাই নিহতের বড়ভাই ও রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সজিরদ্দিন শেখের ছেলে বিল্লাল শেখ বাদি হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে খোকসা থানায় এজাহার দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ জুন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৪ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী জানান, মোটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলামকে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় দুজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড সেই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামি আজিমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় ২ দিনব্যাপী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু
সাভার থেকে অপহরণের ৩ দিন পর কুষ্টিয়া থেকে শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১
কুষ্টিয়ায় গোয়ালঘর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি জব্দ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একটি বাড়ির গোয়ালঘর থেকে সাত রাউন্ড গুলিসহ একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। সোমবার রাত ১২টার পরে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামের শরিফুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে অস্ত্র ও গুলি জব্দ করা হয়।
শরিফুল ইসলাম ওই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কুমারখালীসহ বিভিন্ন থানায়, ডাকাতি, চুরি ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আকিবুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ফিলিং স্টেশনে আগুন, নিহত ২
তিনি জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত ১২ টার পরে পান্টি ইউনিয়নের শরিফুল ইসলামের গোয়ালঘরে অভিযান চালিয়ে গোয়ালঘরের ভেতর একটি পরিত্যাক্ত ব্যাগ থেকে একটি শুটারগান ও ৭ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে সেগুলো জব্দ করা হয়।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, রাতে মাদক ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে গোয়ালঘর থেকে গুলিসহ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যুবক কারাগারে
কুষ্টিয়ায় বয়লার মেশিন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ছুরিকাঘাতে কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান আহত
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দীন (৫৫) আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কালিদাশপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিলবোর্ড ভেঙে জবি শিক্ষার্থী আহত
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দীন ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে কালিদাসপুর বাজার থেকে হেটে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে দুজন দুর্বৃত্ত এসে তাকে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ সময় তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিযা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দীনের আঘাত খুব গুরুতর না হলেও কিছুটা রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত।
আরও পড়ুন: হালচাষকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে তীরধনুক নিয়ে সংঘর্ষ: আহত ৩
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাবিদ হাসান জানান, দুর্বৃত্তদের ছুরিকাগাতে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিসদের চেয়ারম্যান আহত হয়েছেন। তাঁকে কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনস্থলে আমরা আছি। কারা তাকে ছুরিকাঘাত করেছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কুষ্টিয়ায় শোক সভায় আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভা চলাকালে আ.লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার বিকালে গোস্বামী দুর্গাপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোকসভায় এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। পুলিশ ও তার সামনেই দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আগস্ট মাস উপলক্ষে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে পর্যায়ক্রমে শোক সভার কর্মসূচি পালন করে আসছে। সে হিসেবে রবিবার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভার নির্ধারিত দিন ছিল।
জানা গেছে, আসরের নামাজের পর গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজনে শংকরদিয়া বাজারের ওপর শোকসভার আয়োজন করা হয়। সভায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় যোগ দেন। তার সঙ্গে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের সামনেই দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আওয়ামীলীগ নেতারা বারবার থামানোর চেষ্টা করলেও নেতা-কর্মীরা একে অন্যের ওপর হামলা করতে থাকে। ভাংচুর করা হয় বসার চেয়ার। সংঘর্ষ চলাকালে শোকসভায় আসা লোকজন ভয়ে পালিয়ে যান। প্রায় ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ২০ জনের বেশি আহত হন। আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ঝেন্টুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন জানান, ‘ বিকালে অতিথিরা আসার পর শোক সভা শুরু হয়। আমি দুই হাজার মানুষের জন্য খাবার রান্না করি। বর্তমান চেয়ারম্যান লাল্টুর রহমান শতাধিক লোকজন নিয়ে মিছিল নিয়ে আসেন। তাদের অনেকের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। আমরা আগে থেকে বুঝতে পারিনি। তারা এসেই আমার সমর্থক ও সাধারণ নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। আমার কয়েকজন কর্মীর অবস্থা আশংকাজনক।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা লাল্টু রহমান দাবি করেন তার লোকজনের ওপর দবিরের লোকজন হামলা চালিয়েছে। এতে পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন। আমার তিন ভাইয়ের মাথা ফেটে গেছে। নেতাদের সামনেই হামলা করেছে। আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ সভা শুরু হওয়ার পর স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। আমাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে সভা শেষ করা হয়। বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননুর যায়েদ বলেন, ‘ আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
বরিশালে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আটক
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
কুষ্টিয়ায় শিশু ধর্ষণের দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়ায় পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত আবু হানিফ ওরফে হানিফ দর্জি নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু হানিফ ওরফে হানিফ দর্জি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার হাবাসপুর গ্রামের সোলাইমান ওরফে শলক মোল্লার ছেলে।
কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু হানিফ ওরফে হানিফ দর্জির দোকানের সামনে শিশুটি গেলে ধর্ষণের শিকার হয়।
বাড়ি ফিরে শিশুটি তার মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বললে তার মা অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার সেই পুরুষ শূন্য গ্রাম থেকে ৩৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, আটক ২
পরে ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আবু হানিফ ওরফে হানিফ দর্জিকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যুবক কারাগারে
যুবকের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত
যুবকের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত
কুষ্টিয়া সদরে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এক যুবক ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিকালে উপজেলার ঝাউদিয়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অবশ্য রাতে এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ, ওই যুবক ছুরিকাঘাতে সহায়তা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী জানায়, শনিবার বিকেলে ঝাউদিয়া বাজারের কালিতলা এলাকায় প্রাইভেট পড়তে গেলে এলাকার দূর সম্পর্কে দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম দেখা করার জন্য খবর দেন। পড়া শেষে আমি সেখানে গোলাপের হোটেলে দেখা করতে গেলে দেখি রানা সেখানে উপস্থিত আছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, আটক ১
আমাকে দেখে রানা বলে, আমি তার সঙ্গে কথা বলি না কেন? এক পর্যায়ে পকেট থেকে ধারালো বের করে আমার মুখে ও হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম জানান, ছাত্রীর শরীরে ব্লেড বা ছুরির মতো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে দুলাভাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালকের মৃত্যু
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন্নুর জায়েদ জানান, তারা ইতোমধ্যে ওই এলাকা থেকে সহযোগী আশরাফুলকে আটক করেছে।
প্রধান আসামি রানাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং মামলা প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
কুষ্টিয়ার সেই পুরুষ শূন্য গ্রাম থেকে ৩৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, আটক ২
কুষ্টিয়ার সেই পুরুষ শূন্য গ্রাম থেকে ঢাল, হাঁসুয়া, বল্লমসহ মোট ৩৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। এ সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- কুমারখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড বাটিকামারা এলাকার মো. মনির হোসেনের ছেলে মো. ফাহিম হোসেন (২৫) ও নন্দনালপুর ইউনিয়নের পুরাতন চুড়াইকোল এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে গালিব আশরাফ ওরফে সেতু (৩০)।
আরও পড়ুন:পিস্তল-গুলিসহ কুষ্টিয়ায় ছাত্রদল নেতা আটক
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার শনিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পুরুষ শূন্য চরপাড়া গ্রামে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ৩৫টি দেশীয় অস্ত্রসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জব্দ করা অস্ত্রগুলো আগের মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০২০ সাল থেকে চরপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন দুলাল মিস্ত্রি। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি সদস্য আনসার আলী। ২০২০ সালের ৬ মে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুলাল মিস্ত্রির সমর্থক হুমায়ুন মন্ডলকে (৪৪) কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় ৩৬ জনের নামের একটি মামলা করেছিলেন। মামলা নম্বর ৯।
এরপর গত সোমবার বদলা নিতে হুমায়ুন হত্যা মামলার ৪ নং আসামি সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের ভাই শাহীন আলী থানায় ২৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২।
জানা গেছে, হত্যা পাল্টা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষ হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ি-ঘরেই ভাংচুরের ক্ষত চিহৃ রয়েছে।
বর্তমানে গ্রামটি বলা চলে এক প্রকার পুরুষ শূন্য।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যুবক কারাগারে
কুষ্টিয়ায় বয়লার মেশিন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যুবক কারাগারে
কুষ্টিয়ায় চলন্ত আন্তঃনগর ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় আশারাফুল ইসলাম নামের এক ট্রেনে যাত্রী আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।
পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মনজের আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয়দের সহযোগিতায় রেলওয়ে পুলিশ পাথর ছোড়ার পরপরই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে পোড়াদহ জিআরপি থানায় নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি: নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কারাগারে
তিনি জানান, আটক ওই যুবকের নাম সুমন আলী (২৪)। তিনি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাসিন্দা। এ ঘটনায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে পোড়াদহ জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর সুমন নিজেকে মানসিক বিকারগ্রস্ত হিসেবে দাবি করলেও পুলিশ বলছে তার আচার-আচরণে এ রকম কোন লক্ষণ ধরা পড়েনি।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, অভিযুক্ত যুবক সুমন একজন ভবঘুরে। যেহেতু সে একটি গুরুতর অন্যায় করেছে এবং ওই ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন সেই সাথে তার নিক্ষেপ করা পাথরে ট্রেনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে সে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
পরবর্তীতে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৩ লাখ টাকাসহ আটক সার্ভেয়ার কারাগারে
ভোলায় শিশু নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, দাদি কারাগারে
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কুষ্টিয়ায় ৩ শিক্ষকসহ ৫ জনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ডিবি পুলিশের (গোয়েন্দা পুলিশ) পরিচয় দিয়ে তিন জন মাদরাসা শিক্ষকসহ পাঁচ জনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দুই ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
বুধবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ১টার মধ্যে উপজেলার যদুবয়রা, পান্টি, বাগুলাট ও জগন্নাথপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে তাদের তুলে নেয়া হয়।
নিখোঁজ শিক্ষকরা হলেন- উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রামের মৃত সালাউদ্দিনের ছেলে ও বাঁশগ্রাম কামিল মাদরাসার শিক্ষক মো. আইয়ুব আলী (৩৫), পান্টি ইউনিয়নের ওয়াসী গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে ও শৈলকুপা মাদাসার আইসিটি বিষয়ক শিক্ষক মো. মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭) এবং যদুবয়রা ইউনিয়নেরর বহলবাড়িয়া গ্রামের মো. আলতাফ হোসেনের ছেলে ও লক্ষ্মীপুর মসজিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশনে মসজিদ ভিত্তিক শিশু শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক মো. হাফিজুল রহমান (২৬)।
আরও পড়ুন: আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার ডিবি পুলিশ, থানায় মামলা
নিখোঁজ অপর দুজন হলেন- জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের মো. আব্দুল জলিলের ছেলে মো. হাসান আলী (৩৫) এবং মহেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আমজেদ আলীর ছেলে মো. হান্নান (৩০)।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিরা সবাই এসবিএসএল নামের একটি অনলাইন ভিত্তিক (এমএলএম) ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অনলাইন ব্যবসার তাদের প্রধান কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের মো. তফসের হোসেনের ছেলে মো. ইমরান হোসেন (তুষার)। তুষারের কার্যালয় ছিল পান্টি বাজার এলাকার নৌশের মোড়ে। গত ছয় মাস আগে এসবিএসএল কোম্পানি গ্রাহকের টাকা নিয়ে হওয়া হয়ে যায়। সেই থেকে বস তুষার পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে নিখোঁজ হাফিজুলের চাচা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ' বুধবার রাত ১১টার দিকে ১২ জন লোক বাড়িতে এসে হাফিজকে ডাকাডাকি করে। হাফিজ বাইরে গেলে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে থানায় জিডি আকারে অভিযোগ দিয়েছি।
আরও পড়ুন: ডিবি পুলিশ সেজে প্রতারণা, কুড়িগ্রামে আটক-২
নিখোঁজ আইয়ুব আলীর স্বজন ও বাগুলাট ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বর (সদস্য) বুধবার রাতে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে আইয়ুবকে তুলে নিয়ে গেছে। কুমারখালী থানায় খোঁজ নিয়েও কিছু জানতে পারিনি। পরে থানায় জিডি করেছি।'
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানা গেছে রাতে র্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকায় তারা কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে গেছে।
সাধারণ মানুষের জন্য দরজা খোলা রাখুন: ডিসিকে হাইকোর্ট
আদালত অবমাননার মামলায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) সতর্ক করে হাইকোর্ট বলেছেন, যেকোনো মানুষ যাতে আপনার কাছে অভিযোগ নিয়ে যেতে পারে সে জন্য দরজা-জানালায় কোনো ভারী পর্দা রাখবেন না। সাধারণ মানুষের জন্য আপনার (ডিসি) দরজা খোলা রাখুন। যাতে তারা অভিযোগ নিয়ে আপনার কাছে যেতে পারে। আদালত আরও বলেন, সেই দিন এ মামলায় অভিযোগকারী আপনার কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আপনার কাছ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। সেদিন যদি আপনি অভিযোগটি শুনতে পেতেন তাহলে হয়তো ঘটনা এত দূর আসত না।
আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও ১৩৩ কোটি টাকার সম্পত্তি ১৫ কোটিতে নিলামে বিক্রির ঘটনায় আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানিকালে সোমবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। ডিসিকে উদ্দেশ্য করে আদালত আরও বলেন, অভিযোগ শুনেই আপনাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো ধরনের উন্নাসিকতা দেখাবেন না। কারন একজন জেলা প্রশাসক সরকারের হার্ট। আপনাদের দায়িত্ব অনেক। সরকারের সব কাজ আপনাদের দিয়েই বাস্তবায়ন হয়। আপনাদের কাজের ওপর সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। জানি আপনারা অনেক কাজ করেন, কিন্তু তার পরও সাধারণ মানুষের জন্য আপনার দরজা খোলা রাখুন।
আরও পড়ুন: ওয়াসার এমডি’র বেতন-বোনাসের হিসাব চাইলেন হাইকোর্ট
সম্পত্তির নিমাল কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরও ওই সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে গত ১১ আগস্ট কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকসহ পাঁচজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। তলব আদেশে গত রবিবার হাইকোর্ট হাজির হন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসাইন, কুষ্টিয়ার ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, এসপি মো. খায়রুল আলম ও নিলামে সম্পত্তি নেওয়া ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদ। পরে তাঁদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান তাঁদের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীরা। কিন্তু অব্যাহতি না দিয়ে হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে সোমবার আদেশের দিন ধার্য রাখেন। ওই আদেশ অনুযায়ী ডিসি-এসপিসহ চারজন আজও হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন।
সকালে মামলার কার্যক্রম শুরুর পর ডায়াসে কুষ্টিয়ার ডিসি মো. সাইদুল ইসলামকে ডেকে নেয় হাইকোর্ট। তখন ডিসির উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট বলেন, সেই দিন এ মামলায় অভিযোগকারী আপনার কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আপনার কাছ পর্যন্ত পৌছতে পারেননি। আপনার অফিসের লোকজন অভিযোগ গ্রহণ করেননি। সেদিন যদি আপনি অভিযোগটি শুনতে পেতেন তাহলে হয়তো ঘটনা এত দূর আসত না। আদালত বলেন, আপনাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি। তবে সতর্ক করে দিচ্ছি। আদালত বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, ডিসি অফিসে সাধারণ মানুষ যেতে পারেন না। দরজা-জানালায় ভারী পর্দা দেয়া থাকে। যেকোনো মানুষ যাতে আপনার কাছে অভিযোগ নিয়ে যেতে পারে সে জন্য দরজা-জানালায় কোনো ভারী পর্দা রাখবেন না। আদালত বলেন, আপনারা বিলাসী জীবন-যাপন করেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আপনাদের তেমন যোগাযোগ থাকে না। লুঙ্গি পরেও যেন একজন মানুষ আপনার কাছে যেতে পারে, সেটাই দেখতে চাই। ভালো কাজ করুন। চুরি-ডাকাতি-গুন্ডামি, দখলবাজি যদি চলে আর এটা যদি আপনার নজরে আসে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভালো কাজ করলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।
এদিকে জারিকৃত আদালত অবমাননার রুলের ওপর ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। ওইদিন কুষ্টিয়ার এসপি মো. খায়রুল আলম, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন, রশিদ অ্যগ্রো ফুড লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ ও কুষ্টিয়ার সদর থানার ওসি সাব্বিরুল আলমকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। তবে ডিসিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিলেও মামলার রুল শুনানিতে তার আইনজীবীকে থাকতে হবে।
আদালতে ডিসি ও এসপির পক্ষে আইনজীবী মুন্সী মনিরুজ্জামান ও ইউসুফ খান, এমডির পক্ষে সৈয়দ মিনহাজুল হক, আব্দুর রশিদের পক্ষে নুরুল আমিন ও ব্যবসায়ী শফিকুলের পক্ষে রাগীব রউফ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গার্ডার দুর্ঘটনায় পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
রাগীব রউফ চৌধুরী জানান, ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন বিশ্বাস ট্রেডার্স, ভিআইপি রাইস মিল ও ভিআইপি ফ্লাওয়ার মিলসহ বসত-ভিটা আট একর জমির উপর অবস্থিত। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৪২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। পরে ৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার সম্পত্তির উপর নিলাম ডাকা হয়। আইনজীবী জানান, শফিকুলের সম্পত্তির মোট মূল্য ১৩৩ কোটি টাকা। যা নিলামে ১৫ কোটি টাকায় বিক্রয় করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, নিলামের প্রেক্ষিতে ৪ আগস্টের মধ্যে আমাদেরকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। পরে ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। গত ২ আগস্ট হাইকোর্ট নিলাম পরবর্তী সকল কার্যক্রম স্থগিত করে। একইসঙ্গে এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংককে ২০ কোটি এবং বছরে ৬ কোটি টাকা করে পরিশোধ করতে শফিকুলকে নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে ল ইয়ার্স সার্টিফিকেট দিয়ে অবগত করা হয়। কিন্তু সেই আদেশ না মেনেই নিলামকৃত সম্পত্তি দখলে নেয়ার অভিযোগে আদালত অবমাননার মামলা করেন শফিকুল।
আরও পড়ুন: ঢাকা ওয়াসার কর্মীদের উৎসাহ বোনাসে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা