আত্মহত্যা
ফারদিন নূর: র্যাব, ডিবি'র তদন্তে আস্থা প্রকাশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পুলিশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সঠিক বিশ্লেষণের পরই নিশ্চয় বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করেছে।
শুক্রবার বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনের শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ফারদিনের আত্মহত্যার বিষয়ে ডিবির প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলায় র্যাব ও ডিবি পুলিশ কাজ করছে। তারাই ভালো বলতে পারবে।’
আরও পড়ুন: ফারদিন আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছে: বাবার দাবি
ফারদিনের মৃত্যুতে বুশরার যোগসূত্র নেই, আদালতকে অবহিত করবে ডিবি: হারুন
অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!
বগুড়ার শেরপুরে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিতে আত্মহত্যা করেছে এক স্কুলছাত্রী।
এ ঘটনায় আব্দুল মানিক নামে একজনকে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২ বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, স্থানীয় স্কুলের নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে আব্দুল মানিক প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের দৃশ্য গোপনে ধারণ করে মানিক।
আরও পড়ুন: হাজারীবাগে ২ সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা!
এছাড়াও ১৮ নভেম্বর মানিক ওই ছাত্রীর বাড়িতে গোপনে এসে আবারও মেলামেশা করতে চায় এবং ওই ছাত্রী বাধা দিলে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে ও বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়।
মানিকের এমন ব্যবহারে মানসম্মানের ভয়ে ওই ছাত্রী ১৮ নভেম্বর বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বগুড়ার শেরপুর থানায় ২৯ নভেম্বর মামলা করেন এবং র্যাব-১২ বগুড়া অফিসে অভিযোগ করেন।
পরে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সারিয়াকান্দি থানা এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত আব্দুল মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
আব্দুল মানিক জিজ্ঞাসাবাদকালে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও নজরুল ইসলাম জানান।
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা, ৯৯৯-এ কল পেয়ে উদ্ধার
ফারদিন আত্মহত্যা করেছে: ডিবি
বুয়েটের ছাত্র ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
আর পড়ুন: নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ায় ফারদিনকে হত্যা করা হয়নি: পুলিশ
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা।
নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পর ৭ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে একটি কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ময়নাতদন্ত করা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ ফরহাদ জানান, ফারদিনের মাথায় ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই দিনই ফারদিনের বাবা কাজী নুরুদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করেন এবং পরে মামলাটি গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আর পড়ুন: এটা হতাশাজনক, এক মাসেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই: ফারদিনের বাবা
ফারদিন হত্যার তদন্তে অগ্রগতি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: র্যাব
কেরানীগঞ্জে প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে স্ত্রীর আত্মহত্যা
ঢাকার কেরানীগঞ্জের রামের কান্দা এলাকায় সৌদি প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে স্ত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার এই অপমৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে।
আত্মহননকারী মৌসুমী(২২) প্রবাসী আক্তার হোসেনের স্ত্রী।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: প্রাইভেট না পড়ায় ফেল করানোর অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা
পুলিশ জানায়, সোমবার ২১ নভেম্বর প্রবাসী আক্তার তার শশুর বাড়িতে ফোন দিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি জানালে মৌসুমির স্বজনরা রুমের দরজা ভেঙে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রায় ১০ বছর পূর্বে রোহিতপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে মৌসুমি ও প্রতিবেশী রউফ মিয়ার ছেলে আক্তার হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে পাঁচ ও আড়াই বছর বয়সী দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাদের কারণে গত ২০ নভেম্বর দিবাগত রাতে দুই মেয়েকে ঘুমিয়ে রেখে স্বামীকে ভিডিও কল দিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের বারান্দার আড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে মৌসুমী।
সন্ধ্যায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সোমবার রাতে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা!
আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
নাটোরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইউইটি) এক শিক্ষার্থীর লাশ বুধবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত মেজবাউল জারিফ আইনের (এলএলবি) ছাত্র ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মেজবাউল জাফরের ছেলে।
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, জারিফ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাগাতিপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে জারিফের ঘরের ছাদ থেকে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দিলে তারা লাশ উদ্ধার করে।
জারিফ আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় গড়াই নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
দরজা ভেঙে শিক্ষিকার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার!
যশোরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
গোয়ালন্দে গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা!
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের ভাগলপুর এলাকার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবার দাবি করেছে।
রিমন শেখ (১১) গোয়ালন্দের ভাঘলপুর এলাকার মো.আব্দুর রাজ্জাক শেখ এর ছেলে। সে স্থানীয় ভাগলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, রিমনের বাবা ঢাকায় পোশাক কারখানার ঝুট এর ব্যবসা করেন। রিমন পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট। সে তার মায়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকে।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
নিহতের পরিবারের স্বজনরা জানান, সোমবার সকালে রিমনের ফুপু ও ফুফাতো বোন রাজবাড়ী শহরে কেনাকাটার জন্য যেতে চাইলে রিমনও তাদের সঙ্গে যাবে বলে বায়না ধরে। কিন্তু রিমনের ফুপু ও ফুফাতো বোন তাকে না নিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে কেনাকাটা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর পাশের বাড়ির লোকজন ওই ঘর থেকে একটা শব্দ শুনতে পেয়ে দরজা ভেঙ্গে দেখতে পায় রিমন নিজেদের ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুঁলে আছে। তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় নামিয়ে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এসময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো.রবিউল ইসলাম বলেন, রিমন গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে আনার পর জানায়। আমরাও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। তার গলায় দাগ রয়েছে। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: ‘বাড়ি বাঁচাতে না পেরে’ প্রেসক্লাবের সামনে নারীর আত্মহত্যাচেষ্টা
বাগেরহাটে ৩ বছরের ছেলেকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা
আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক মাদরাসাছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচণা মামলায় তাহাবুর রহমান নামের এক যুবককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান এ দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
দণ্ডিত তাহাবুর রহমান কালীগঞ্জ উপজেলার কামারাইল গ্রামের জবেদ আলী মণ্ডলের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় চাচাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ভাতিজার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মামলার বিবরণে জানা যায়, কামারাইল গ্রামের মাদরাসাছাত্রী শিরিনা খাতুনকে উত্যক্ত করত একই গ্রামের তাহাবুর রহমান। ২০০৭ সালের ১ আগস্ট বাড়ির পাশের নদীতে গোসল করতে যাওয়ার সময় তাকে লাঞ্ছিত করে তাহাবুর রহমান। এই অপমান সইতে না পেরে পরেরদিন গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে শিরিনা খাতুন।
এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর তাহাবুর রহমানকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে শিরিনা বাবা আখের আলী।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত মঙ্গলবার এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত তাহাবুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাল্যবিয়ে: কুড়িগ্রামে নানা-নাতির কারাদণ্ড
ঠাকুরগাঁওয়ে বাবাকে মারপিটের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড
বাগেরহাটে ৩ বছরের ছেলেকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে তিন বছরের শিশু ছেলেকে হত্যার পর বাবা নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বড়গাওলা গ্রাম নিজ বাড়ি থেকে বাবা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিশু জিসান মোল্লাহ (৩) ও তার বাবা মো. হায়দার মোল্লা (২৮)।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাশ বলেন, ‘আমরা লাশের কাছে একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি।’
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা!
ওসি সোমেন দাশের তথ্য মতে, সুইসাইড নোটে লেখা আছে, জিসানকে গলাটিপে হত্যা করেছি। এরপর আমি আত্মহত্যা করেছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। দু’জনকে একই জায়গায় কবর দেবেন।
স্থানীয়রা জানায়, দাম্পত্য কলহের জের ধরে আট মাস আগে হায়দার ও তার স্ত্রী জোবায়রা খাতুনের বিচ্ছেদ ঘটে।
তারপর থেকে জিসান তার দাদীর সাথে তাদের গ্রামের বাড়িতে থাকতেন এবং তার বাবা ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
বৃহস্পতিবার হায়দার ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরেন। শুক্রবার রাতে তার কক্ষে লাশ দুটি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।
ওসি সোমেন বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হত্যা ও অপমৃত্যুর দুটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর অফিসের সামনে রোহিঙ্গা যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
ঠাকুরগাঁওয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া গ্রামে গলায় ফাসঁ দিয়ে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার রাত ১১টার সময় নিজ বাড়ির একটি পেয়ারা গাছে রশি দিয়ে গলায় ফাসঁ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে নারীসহ আটক ৭
নিহত মনোয়ারা পারভীন (৫৫) একই গ্রামের আমজাদ আলীর স্ত্রী।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনোয়ারা পারভীন র্দীঘদিন টিউমার ও ক্যান্সারসহ একাধিক রোগে ভুগছিলেন। সম্ভবত যন্ত্রণা সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাইজুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: একদিনে ৯২২ জন শনাক্ত, মৃত্যু আরও ২
সাংবাদিক রায়হান চৌধুরী মারা গেছেন
আত্মহত্যার প্রবণতা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
সাম্প্রতিক কিছু দুঃখজনক আত্মহত্যার ঘটনা পৃথিবীর উচ্চ আত্মহত্যা প্রবণতার দেশগুলোর তালিকায় নিয়ে এসেছে বাংলাদেশকে। ব্যাধিটা যখন মনের তখন স্বাভাবিকভাবেই তা সবার অলক্ষ্যে থেকে যায়। শারীরিক রোগ-বালাইয়ের মত তেমন গুরুত্বের সাথে নেয়া হয় না নিরাশা অথবা ভয়ের মত মানসিক অবস্থাগুলোকে। কিন্তু আত্মহত্যার মত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কমাতে হলে এ নিয়ে প্রচুর আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। তাই সতর্ক হতে চলুন জেনে নেই আত্মহত্যার কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্বন্ধে।
তরুণ প্রজন্মের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির কারণ
নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার ধারণাটা গভীর হয়ে উঠতে পারে, যখন ব্যক্তি মনে করেন, যে তিনি তার চারপাশের অপ্রতিরোধ্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আর সক্ষম নন। হতে পারে এটি আর্থিক সমস্যা, প্রিয়জনের মৃত্যু, কোন সম্পর্কের অবসান বা কোন জটিল রোগ বা শারীরিক সীমাবদ্ধতা।
যে কারণগুলো তরুণ প্রজন্মকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে সেগুলো হলো-
· পরিবারের কোন সদস্য/সদস্যদের সাথে মনোমালিন্য
· শারীরিক নির্যাতন, অবহেলা বা মানসিক আঘাত
· জন্ম থেকেই কোন মানসিক সমস্যা
· আত্মহত্যা করেছে এমন কাউকে জানা, এবং তাকে নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করা
· নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের সাথে চলাফেরা করা
· বেপরোয়া বা অতি আবেগপ্রবণ হওয়া
· সার্বক্ষণিক নির্জনতা বা একাকীত্ব অনুভব করা
· মানসিক সমস্যাগুলোর জন্য কারো মনোযোগ না পাওয়া
· কর্ম বা শিক্ষা ক্ষেত্রে ভয়াবহ জটিলতা বা ক্ষতিসাধন
· বন্ধু-বান্ধব বা প্রিয়জনের বড় কোন ক্ষতিসাধন
· শারীরিক অসুস্থতা বা জন্মগত কোন স্বাস্থ্য সমস্যা
· ভয় বা কলঙ্কের কারণে সাহায্য চাইতে লজ্জাবোধ
· জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণ বৈষম্যের শিকার হওয়া এবং কুসংস্কারের কারণে দুশ্চিন্তা
· সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধ্বংসের কারণে ঐতিহাসিক ট্রমার মধ্যে থাকা
· মাদকাসক্ত থাকা
· আইনি ঝামেলা বা ঋণগ্রস্ততা
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
আত্মহত্যা প্রবণ ব্যক্তিকে শান্ত করার উপায়
· তাৎক্ষণিকভাবে তার আবেগ ও অনুভূতি সম্পর্কে সরাসরি জিজ্ঞাসা করতে হবে। এমন সময় যদিও অনেক ক্ষেত্রে এটা কাজ না করতে পারে। কিন্তু মনপ্রাণ দিয়ে তার যা বলার আছে তা শোনা হলে এবং গুরুত্ব সহকারে নেয়া হলে অবস্থার উন্নতি হতে পারে।
· তাকে উন্মু্ক্তভাবে যোগাযোগের জন্য একটি আরামদায়ক জায়গা দিতে হবে। তার লজ্জা, অপরাধবোধগুলোকে ইতিবাচক দিক দিয়ে তার কাছে তুলে ধরতে হবে। কারণ আত্মহত্যার চেষ্টা করতে যাওয়া ব্যক্তিরা এমনিতেই ভেতরে ভেতরে অনেক লজ্জিত, অপরাধী বা বিব্রত বোধ করেন। দোষ-ত্রুটি ধরে নয়; সমর্থন দিয়ে সহজ ভাষায় তাকে বোঝাতে হবে। মতামত প্রকাশের সময় তার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। এ সময় যে কোন ধরনের বিতর্কে জড়ানোটা এড়িয়ে যেতে হবে।
· তার আবেগ-অনুভূতির ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তবে অনুভূতিগুলোর মূল্য দিতে যেয়ে তাকে পৃথিবীর একমাত্র দুঃখী মানুষে পরিণত করা যাবে না। বরং আবেগগুলোর গঠনমুলক প্রয়োগের ব্যাপারে কথা বলতে হবে। আর এ সময় সেই প্রায়োগিক কার্যক্রমের সাবলিলতা ফুটিয়ে তুলতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, যে আত্মহত্যা প্রবণ ব্যক্তি যৌক্তিকভাবে চিন্তা না করলেও, তার আবেগগুলো বাস্তব। সেগুলো কোন ভাবেই মূল্যহীন হিসেবে প্রকাশ করা যাবে না। এতে পারস্পরিক যোগাযোগ ব্যাহত হতে পারে এবং ব্যক্তিটি নিজেকে নিজের মধ্যে আরো গুটিয়ে নিতে পারে।
আরও পড়ুন: চোখ উঠা রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
· আবেগের মূল্য দিয়ে যেয়ে তার আত্মহত্যার অনুভূতি গোপন রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া যাবে না। কারো জীবন বিপদের মধ্যে থাকলে এমন প্রতিশ্রুতি রাখা অবান্তর। বরং আরো কারো জানার ফলে যদি উপকার হয় তবে তা করাই উত্তম। এ বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। এমনকি এ কাজে তাকেও সহযোগিতা করার অনুরোধ করতে হবে।
· যখন কেউ আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়, তখন তার মনে হয় এ থেকে উত্তরণের সব পথই বন্ধ। এ অবস্থা থেকে তাকে বের করার জন্য পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সমূহ উপায়ের কথা তাকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে যারা ইতোমধ্যেই এই অবস্থা থেকে উতড়ে যেতে পেরেছে তাদের জীবনের গল্পকে অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যক্ত করা যেতে পারে। সহজ রাস্তা পাওয়ার ফলে সে আবার জীবন নিয়ে চিন্তা শুরু করতে পারে।
· তাকে মাদক ব্যবহার এড়াতে উৎসাহিত করতে হবে। এ অবস্থায় ড্রাগ বা অ্যালকোহল ব্যবহার করা বেদনাদায়ক অনুভূতিগুলোকে সহজ করে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু দিন শেষে তা সবকিছুকে আরও খারাপ করে তোলে। ফলে তা বেপরোয়া আচরণ বা আরও বিষণ্ন বোধের দিকে ধাবিত করতে পারে। এক্ষেত্রে তাকে তার জীবনের সবথেকে প্রিয় কাজগুলো করার দিকে প্রলুব্ধ করা যেতে পারে। সে কাজগুলো করার সময় ধৈর্য্য ধরে তার সাথে পুরোটা সময় থাকতে হবে। সে যেন কিছুতেই ড্রাগ ব্যবহারের সুযোগ না পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে এখানে তার প্রিয়জনদের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গায়ে আগুন দিয়ে রিকশাচালকের আত্মহত্যা!
· সম্ভব হলে তার হাতের কাছ থেকে আত্মহত্যার জন্য সম্ভাব্য বিপজ্জনক আইটেমগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। যেমন ছুরি, ক্ষুর, বন্দুক বা মাদক। এমনকি সাধারণ ওষুধও সরিয়ে ফেলতে হবে। তার শারীরিক উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধগুলোর সঠিক ডোজ সরবরাহের জন্য তার সাথে বেশি সময় নিয়ে থাকতে হবে। এর জন্য তার প্রিয়জনদের সাহায্য এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে করণীয়
আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না করাটাই এর প্রতিরোধের উপায়। এর জন্য সামগ্রিক ভাবে তার চারপাশটা তার জন্য আরামদায়ক করে তোলা জরুরি। এর জন্য যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে তা হলো-
· পরিবার এবং সমাজের সবার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখা
· যে কোন সমস্যা সমাধান এবং বিরোধ মোকাবেলা করার উপায়গুলোর সহজলভ্যতা
· এমন বিশ্বাসের ভিত স্থাপন করা, যা আত্মহত্যাকে নিরুৎসাহিত করে এবং নিজেকে ভালবাসার প্রতি উৎসাহিত করে
· আত্মসম্মানবোধ এবং জীবনের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নির্ধারণে সাহায্য করা
· সমাজের অন্যান্যদের প্রতি যত্নশীল হতে শেখানো। এতে সে অন্যান্যদের পক্ষ থেকেও যত্ন পাবে।
· তার চারপাশে এমন পরিবেশ গড়ে তোলা যেন ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে সে কোন রকম দ্বিধা বোধ না করে
· মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো ব্যাপারে সচেতন করা
· নিয়মিত ব্যায়াম করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
· নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি অনুপ্রাণিত করা
· প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমের জন্য উৎসাহিত করা
· গান শোনা বা ভ্রমণের ব্যাপারে উৎসাহিত করা|
আরও পড়ুন: গলায় ফাঁস দিয়ে চাঁদপুরে শিশুর আত্মহত্যা!
আত্মহত্যা প্রতিরোধে সাংগঠনিক উদ্যোগ
মানুষকে আত্মহত্যা থেকে বিরত রাখতে সদা তৎপর ইয়েশিম ইকবালের সংগঠন ‘কান পেতে রই’। বাংলাদেশে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকা আত্মহত্যার প্রবণতাকে কমাতে ২০১৩ এর ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এদের নির্দিষ্ট কিছু হেল্পলাইনের মাধ্যমে হতাশাগ্রস্ত মানুষের কল গ্রহণ করে শোনা হয় তাদের দুঃখের কথাগুলো। অতঃপর কল রিসিভ করা প্রশিক্ষিত পরিশ্রমী তরুণ স্বেচ্ছাসেবী তাদের কথাগুলো শুনে তাদের নিরাশা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা দূর করতে পরামর্শ দেন। এই কাউন্সেলিং-এর জন্য কোন রকম ফি নেয়া হয় না।
আন্তর্জাতিকভাবে কাউন্সিলিং-এর স্বীকৃত মডেল বিফ্রেন্ডিং-এর মাধ্যমে মানুষের নানা জটিলতার সমাধান দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় কর্মরত স্বেচ্ছাসেবীদের কলকারীদের পরিচয় সম্পর্কিত কোনো তথ্য জিজ্ঞাসা করার কোন নিয়ম নেই। কাজ শুরুর পূর্বে স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে অত্যন্ত কঠোর গোপনীয়তা সংরক্ষণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হয়।
কলকারি ব্যক্তিটি আবেগের বশে কোন ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে ফেললেও তা নোট না করার জন্য প্রশিক্ষকরা স্পষ্ট নির্দেশনা থাকে। মূল কথা এখানে ব্যক্তি নয়; সমস্যা সমাধানই আসল। তাই কান পেতে রই’য়ের গ্রাহকদের মধ্যে কোন রকম অস্বস্তি নেই। বরং গ্রাহকদের রীতিমত নির্ভরতার জায়গা গড়ে উঠেছে সংগঠনটিকে ঘিরে।
আরও পড়ুন: স্মার্ট ফোন কিনে না দেয়ায় স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা!
পরিশিষ্ট
আত্মহত্যার প্রবণতাই যেখানে গোপন রয়ে যায়, সেখানে গোড়াতেই ধামা চাপা পড়ে যায় আত্মহত্যার কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্বন্ধে সতর্ক থাকার বিষয়গুলো। প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জনসংখ্যা সংক্রান্ত জটিলতার পাশাপাশি পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে জীবন ধারণে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই অতিরিক্ত আবেগের বিড়ম্বনা ও নিরাশাকে রুখতে পরস্পরের মাঝে নৈতিকতার শিক্ষা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের প্রথা গড়ে তোলা জরুরি।