হাইকোর্ট
পরীমণির জামিন শুনানি দ্রুত করার বিষয়ে হাইকোর্টের রুল
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণির জামিন আবেদনের শুনানি ২১ দিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে দুই দিনের মধ্যে তার জামিন আবেদনের শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ওই দিন শুনানির দিন রেখেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) পরীমণির জামিন আবেদনের শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর ধার্যের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পরীমণির পক্ষে করা এক রিভিশন আবেদন শুনানি করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন।
আদালত বলেছেন, ‘২১ দিন পরে তারিখ দেয়ার কী আছে? অভিযুক্তের (পরীমণি) জামিন আবেদন শুনানির অধিকার আছে। কিন্তু মহানগর দায়রা জজ জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন রেখেছেন, যা আবেদনকারীর অধিকার ও স্বাধীনতাকে খর্ব করে।’
আরও পড়ুন: পরীমণির জামিন আবেদন, শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর
গত ২২ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ এই মামলায় পরীমণির জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন রাখেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমণি। এতে বিলম্বে জামিন আবেদন শুনানির দিন রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরীমণির অন্তর্বর্তীকালীন জামিনও চাওয়া হয়। এই আবেদনের ওপর আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর শুনানি হয়।
আদালতে পরীমণির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। এছাড়া পরীমণির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
এর আগে গত ২১ আগস্ট রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড শেষে পরীমণিকে আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে তাকে কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: পরীমণি জেলে, জামিন নাকচ
বিষয়টা পরীমণি, না অন্য কিছু ?
৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এ সময় পরীমণির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদক জব্দ করা হয়। ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে। এরপর একাধিকবার তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়।
পরীমণি, সাবরিনা, মুনিয়ার ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও সরানোর আদেশ চেয়ে রিট
মূলধারার গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমে মোসারাত জাহান মুনিয়া, সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও পরীমণিসহ বিভিন্ন ব্যক্তির, বিশেষ করে নারীর চরিত্র নিয়ে প্রচারিত-প্রকাশিত ‘অবমাননাকর ও ব্যক্তিগত’ ছবি, ভিডিও ও প্রতিবেদন অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন হয়েছে। এ ধরনের ভিডিও, ছবি বা প্রতিবেদনের প্রচার-প্রকাশ বন্ধেও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
মোসারাত জাহান মুনিয়া, সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও পরীমণিকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রকাশিত ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও ও প্রতিবেদন যুক্ত করে বুধবার এ রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়ল হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী এই আইনজীবী।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিবকে রিটে বিবাদি করা হয়েছে।
রিট আবেদনে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত-প্রকাশিত এ ধরনের প্রতিবেদন, ভিডিও এবং ছবি অপসারণ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পরীমণি-সাকলাইন ঘটনা তদন্তে কমিটি
আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ বলেন, দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ইনডিভিজুয়ালকে, বিশেষ করে নারীর চরিত্রকে টার্গেট করে অনেক প্রতিবেদন, ছবি, ভিডিও প্রচার-প্রকাশ হচ্ছে। আমরা যদি পরীমণির ঘটনাই দেখি, তিনি একজন মাদক মামলার আসামি। কিন্তু বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করছে। মুনীয়ার মৃত্যুর পর তার বোন যখন অভিযোগ আনলেন, তখন তার বেডরুমের ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে। এসবের পেছনে উদ্দেশ্য কী? সাবরিনা আরিফ চৌধুরী যখন কোভিড-১৯ এর জাল সার্টিফিকেটের মামলায় অভিযুক্ত হলেন, তখন আমরা দেখলাম যে তার অনেক ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও প্রচার-প্রকাশ করা হয়েছে। এগুলো ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার যেমন খর্ব করছে, তেমনি বিদ্যমান আইন সংবিধানকেও লঙ্ঘন করছে। অথচ এ বিষয়গুলো নিয়ে রাষ্ট্র বা সরকারের সংশ্লিষ্টরা কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন না। যে কারণে রুল ও নির্দেশনা চেয়ে এই রিট আবেদন।
রিট অবেদনে বলা হয়েছে, মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে ব্যক্তি বিশেষ করে নারীর সম্পর্ক ও ব্যক্তি জীবন নিয়ে চরিত্র ও মানহানিকর প্রতিবেদন, ভিডিও, ছবি প্রচার-প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব প্রতিবেদন, ভিডিও, ছবি ডিজিটাল নিরাত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। সেই সাথে তা সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৯ ও ৪৪ অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করছে। এছাড়া এসব প্রতিবেদন, ভিডিও ও ছবি ‘হলুদ সাংবাদিকতাকে’ উৎসাহিত করছে যা সাংবাদিকতার নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আরও পড়ুন: মুনিয়া আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা: আনভীরকে অব্যাহতি
হাইকোর্টে জামিন পাননি ডা. সাবরিনা
জাপানি ২ শিশুকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখার নির্দেশ
জাপানি দুই শিশুকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে উন্নত পরিবেশে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই সময়ের মধ্যে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাপানি মা এবং বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাংলাদেশি বাবা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।
৩১ আগস্ট শিশুদেরকে হাইকোর্টে হাজির করতে হবে। ওইদিন আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন। তবে আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের ৩১ আগস্টের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করতে ভূমিকা রাখতে বলেছেন।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েসন্তানকে ফিরে পেতে জাপানি নারী নাকানো এরিকো’র করা রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে দুই জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা এবং তাদের বাবা শরীফ ইমরানকে এক মাসের জন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই শিশুকে আগামী ৩১ আগস্ট আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে রবিবার (২২ আগস্ট) ১০ ও ১১ বছর বয়সী মেয়ে দুটিকে হেফাজতে নেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আদালতের আদেশে হাজির করার নির্ধারিত দিনের (৩১ আগস্ট) আগেই জাপানি দুই শিশুকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নেয়ার ঘটনাটি সোমবার সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন তাদের বাবার আইনজীবী ফাওজিয়া করিম। আদালতে শিশুদের জাপানি মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। পরে উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে শিশু দুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখার ওই আদেশ দেন আদালত।
আরও পড়ুন: বুলিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশ
গত ১৯ আগস্ট দুই কন্যা সন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে হেবিয়ার্স কর্পাস আবেদন করেন জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো (৪৬)। রিটে দুই কন্যা সন্তানকে নিজের জিম্মায় নেয়ার নির্দেশনা চান ওই নারী।
রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনিরের তথ্যমতে, নাকানো এরিকো পেশায় একজন ডাক্তার। জাপানি আইন অনুসারে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো (৪৬) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তাদের তিন মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর। তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ছিল। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।
আরও পড়ুন: সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে (১১ ও ১০) অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। গত ২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরিকো ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার জন্য আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। তবে এই আদেশ ভঙ্গ করে ইমরান শুধু একবার মায়ের সঙ্গে বড় দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর আইনজীবীর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরে আদেশ দেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। তবে ইমরান শ্রীলঙ্কা থেকে এরিকোকে ফিরে যেতে বলেন। এরিকো বাংলাদেশে এসে করোনা পরীক্ষা করান। ফলাফল নেগেটিভ আসে। তবে ইমরান এ ফলাফল অবিশ্বাস করে এরিকোর সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান। গত ২৭ জুলাই মোবাইল সংযোগ বন্ধ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় এরিকোকে তার মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়। একই অবস্থায় গাড়িতে তাকে পৌঁছে দেয়া হয়। এমন প্রেক্ষাপটে জাপানি এই মা তার দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে হাইকোর্টে রিট করেন।
বুলিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশ
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার দশম শ্রেণির ছাত্র ১৬ বছর বয়সী কিশোর আজওয়াদ আহনাফ করিম বুলিংয়ের শিকার হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার জেলা শিক্ষা অফিসারকে উক্ত ঘটনার তদন্ত করে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং রোধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা এবং খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি বুলিং রোধে কেন একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। শিক্ষা সচিবসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ।
এর আগে গত ৮ জুলাই ‘মোটা বলে সহপাঠী ও শিক্ষকের লাঞ্ছনার শিকার মৃত কিশোরের পরিবার যা বলছে’ শিরোনামে বিবিসি বাংলায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে কি করবেন?
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় অ্যানোরেক্সিয়া এবং বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরের মৃত্যুর পর তার পরিবার অভিযোগ করেছে, স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষকদের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার ফলস্বরূপ এই ঘটনা ঘটেছে। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট কয়েক হাজার মানুষ শেয়ার করেছেন, যাদের প্রায় সবাই বডিশেমিং, বুলিংয়ের মতো ইস্যুতে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
কিশোরের বাবা মো. ফজলুল করিম জানান, তাঁর ছেলের ওজন স্বাভাবিকের চাইতে বেশি হওয়ার কারণে স্কুলে তাকে প্রায় নিয়মিতই বুলিং ও উপহাসের শিকার হতে হতো। কিন্তু স্কুলে কখনো এ নিয়ে অভিযোগ জানাননি তারা। এখনও বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ জানাতে চান না তারা। তবে পরিবার চায় স্কুলে বুলিং বন্ধ করার জন্য যেন সরকার ব্যবস্থা নেয়। পরে ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের প্রতি একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তবে সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
আরও পড়ুন: মাই-রেসপন্স: সাইবার বুলিং বন্ধে ইউএনডিপির অন্যন্য উদ্যোগ
জাপানি মায়ের রিট: ২ মেয়েসহ বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাজিরের নির্দেশ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েসন্তানকে ফিরে পেতে জাপানি নারী নাকানো এরিকো’র করা রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত এ আদেশে দুই মেয়েসহ তাদের বাবা শরীফ ইমরান ও তাদের ফুপুকে আগামী ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ওইদিন আদালতে এদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুলশান ও আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থান করা ওই দুই মেয়েকে নিয়ে তাদের বাবা আগামী ৩০ দিন বিদেশ যেতে পারবেন না বলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুনঃ মাগুরায় আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীকে মারধর
দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে জাপানিজ ওই মায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এই আদেশ দেন।
নাকানো এরিকো পেশায় জাপানের একজন ডাক্তার। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শিশির মনিরের তথ্যমতে, জাপানি আইন অনুসারে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো (৪৬) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তাঁরা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তাঁদের তিন মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর। তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ছিল। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।
আরও পড়ুনঃ আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। গত ২৫ জানুয়ারি ইমরান তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরিকো ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে তাঁর সন্তানদের জিম্মার জন্য আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। তবে এই আদেশ ভঙ্গ করে ইমরান শুধু একবার মায়ের সঙ্গে বড় দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর আইনজীবীর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরে আদেশ দেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। তবে ইমরান শ্রীলঙ্কা থেকে এরিকোকে ফিরে যেতে বলেন। এরিকো বাংলাদেশে এসে করোনা পরীক্ষা করান। ফলাফল নেগেটিভ আসে। তবে ইমরান এ ফলাফল অবিশ্বাস করে এরিকোর সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান।
গত ২৭ জুলাই মোবাইল সংযোগ বন্ধ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় এরিকোকে তাঁর মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়। একই অবস্থায় গাড়িতে তাঁকে পৌঁছে দেয়া হয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে দুই মেয়েকে নিজ জিম্মায় চেয়ে হাইকোর্টে রিট (হেবিয়াস কর্পাস) করেন এরিকো।
২২ আগস্ট থেকে আগাম জামিন আবেদন শুনবেন হাইকোর্ট
আগামী ২২ আগস্ট থেকে হাইকোর্ট বিভাগে আগাম জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ২২ আগস্ট থেকে হাইকোর্ট বিভাগে সংশ্লিষ্ট ফৌজদারি মোশন বেঞ্চে আগাম জামিন শুনানি গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট ফৌজদারি মোশন বেঞ্চ শুনানির সময় নির্ধারণ করবেন।
আরও পড়ুনঃ পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ‘ক্ষতিকর গেম’ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সরকারের জারি করা বিধিনিষেধ চলাকালে দীর্ঘদিন হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদনের শুনানি বন্ধ ছিল।
সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সিনেমা-নাটকের দৃশ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিবাদীদের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। জনস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন মনিরুজ্জামান লিংকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিনেমা-নাটকের দৃশ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, মাদকবিরোধী সংগঠন ‘প্রত্যাশা’ এবং পপুলেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (পিডিও) এর পক্ষে আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন এ রিট দায়ের করেন।
অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জমান লিংকন বলেন, ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার সংক্রান্ত আইন থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা অকার্যকর। এজন্য প্রতিকার চেয়ে রিট করেছিলাম’।
আরও পড়ুনঃ বিয়ে তালাক ডিজিটালাইজেশন করতে হাইকোর্টের রুল
এর আগে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর ১৪(২) ধারা সংশোধন এবং আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য গত বছরের ১১ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করেন।
রিটে বলা হয়, ২০০৩ সালে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সম্মেলনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’ নামের কনভেনশনে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ওই কনভেনশনের বিধানাবলী বাংলাদেশে কার্যকর করার লক্ষ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করে সরকার।
আইনানুযায়ী প্রকাশ্যে ধূমপান দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনে পাবলিক প্লেস কিংবা গণপরিবহনে ধূমপান করলে তিনশ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ধারা ৫ (১)(ক) তে বলা হয়েছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনো বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করিবেন না বা করাইবেন না।’
একই আইনের ধারা ৫(১)(ঙ) তে বলা আছে, ‘বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত, বিদেশে প্রস্তুতকৃত কোনো সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্য চিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মঞ্চ অনুষ্ঠান বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে প্রচার, প্রদর্শন বা বর্ণনা করিবেন না বা করাইবেন না।’
রিটের আইনের ১৪(২) ধারাটি সংশোধনের আবেদন জানানো হয়।
আইনজীবী বলেন,’ আইনের ১৪(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোনো আদালত এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করিবেন না। যা সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্তরাও যেন মামলা করতে পারেন এজন্য আইনের ১৪(২) ধারা সংশোধন চেয়েছি।‘
গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়নে হাইকোর্টের রুল
সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও সাংবাদিকদের উচ্চ মানসম্পন্ন পেশাদারিত্ব নিশ্চিতে একটি ‘নৈতিক আচরণবিধি’ প্রণয়ন নিয়ে হাই কোর্ট রুল জারি করেছেন।
প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ এর ১১(২)(খ) অনুযায়ী গণমাধ্যমের জন্য কার্যকর ও উপযুক্ত একটি নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তাকে কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না জানতে চাওয়া হয়েছে এই রুলে।
এর পাশাপাশি পত্রিকা ও অন্যান্য সংবাদ সংস্থা, সাংবাদিকদের উচ্চ মানসম্পন্ন পেশাদারিত্বের জন্য একটি নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়ন করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে ।
সোমবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
এছাড়াও রুলে অনুমোদনহীন ও অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রচার-প্রকাশ বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং নিবন্ধনের জন্য বিবেচনাধীন অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোকে নিবন্ধন দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, ন্যাশনাল ব্রডকাস্ট পলিসি-২০১৪ অনুযায়ী একটি ‘ব্রডকাস্টিং কমিশন’ গঠনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: কিছু সংস্থা বিবৃতি বিক্রি করে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে সাত দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নীলু ও জারিন রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে গত ৫ মে যেকোনো সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়ন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের দুই জন নারী আইনজীবী ব্যারিস্টার জারিন রহমান ও অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী নীলু। নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি রাজধানীতে ২১ বছরের এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর মধ্যে বিশেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে অগ্রহণযোগ্য সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ এসব সংবাদ পরিবেশনা বন্ধে বিটিআরসি কিংবা প্রেস কাউন্সিল কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই আইপি টিভির অনুমোদন দেয়া শুরু: তথ্যমন্ত্রী
নোটিশে বলা হয়, এমতাবস্থায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে দেশে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো চালু থাকার পরও বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই এসব পোর্টালগুলোর রেজিস্ট্রেশনও জরুরি। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন ওই দুই আইনজীবী।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না: হাইকোর্ট
পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ‘ক্ষতিকর গেম’ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ সকল প্রকার ক্ষতিকর গেমস অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একই সাথে সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম, লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম ও অ্যাপস বন্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না: হাইকোর্ট
রিটের বিবাদী ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর, বিকাশ, নগদসহ ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১০ দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব।
এর আগে গত ২৪ জুন দেশের অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম, লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম ও অ্যাপ বন্ধ করে অবিলম্বে অপসারণের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছিল মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন।
রিটে বলা হয়, পাবজি ও ফ্রি ফায়ারের মতো গেমে দেশের যুবসমাজ ও শিশু-কিশোরেরা আসক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন।
আরও পড়ুন: জমজ ১৯ শিশুকে ভিকারুননিসায় ভর্তি করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
অন্যদিকে টিকটক ও লাইকির মতো অ্যাপ ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর এবং যুবসমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। দেশে কিশোর গ্যাংয়ের সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে।
সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং দেশের বাইরে টিকটক, লাইকি ও বিগো লাইভের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়েছে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না: হাইকোর্ট
এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারী কোনো ব্যক্তি নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। তবে তারা নামের পাশে কোন কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন তা উল্লেখসহ বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এর আগে হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিধারীরা নামের পূর্বে ডাক্তার ব্যবহারের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট গত বছরের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে রায় প্রদানকারী বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের রায় শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
৭১ পৃষ্ঠার এই রায়ে বলা হয়েছে, দুঃখজনকভাবে এটি লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুযায়ী বিএমডিসি এর নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিগত ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তারিখের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ‘অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার’ শীর্ষক অপারেশনাল প্লানের বিভিন্ন পদে কর্মরত হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি সংযোজনের অনুমতি প্রদান করেছে, যা এক কথায় আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত তথা বেআইনি।
এছাড়া বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কর্তৃক ইংরেজি ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন শাখায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদেরকে তাদের নামের পূর্বে পদবি হিসেবে ডাক্তার ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করাও বেআইনি।
রায়ে বলা হয়, বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের আগে ইনটিগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন প্র্যাকটিশনার এবং কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন প্র্যাকটিশনার পদবি ব্যবহার করতে পারেন। পাশের দেশ ভারতেও বিকল্প ধারার চিকিৎসকরা ডা. লিখতে পারেন না।
রায়ে হোমিও-ইউনানি তথা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে, বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন। সুতরাং পাঁচ হাজার বছর ধরে পুরো পৃথিবীতে চলে আসা প্রাচীন বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির যথাযথ এবং সঠিকভাবে পঠন এবং প্রশিক্ষণ জনমানুষের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করবে। প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি তথা পশ্চিমা চিকিৎসা পদ্ধতি আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়া শুরু হয় আজ থেকে মাত্র ১৬২ বছর আগে। পৃথিবীর প্রথম প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির আইনটির নাম ‘দ্য মেডিকেল অ্যাক্ট, ১৮৫৮’ যা ইংল্যান্ডের সংসদ পাস করেছিল। অর্থাৎ ১৮৫৮ সালের আগে চিকিৎসা ব্যবস্থা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না। অপরদিকে পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে মানুষ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে আসছে।
বিকল্প ধারার কিংবা প্রচলিত চিকিৎসক হওয়ার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো প্রস্তুত করে দেয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব উল্লেখ করে রায়ে চার দফা পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পরামর্শ অংশে বলা হয়েছে, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে ‘কাজাখাস্তান ঘোষণা’ থেকে ‘আলমাআটা ঘোষণা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক পরিকল্পনা, নীতিমালা এবং প্রয়োজনীয় আইন দ্রুত প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরামর্শ দেয়া হলো।
সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় তথা প্রচলিত এবং বিকল্প ধারার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ‘রোগীকেন্দ্রিক চিকিৎসা সেবা’ নীতিমালা অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হলো। প্রয়োজনে বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পৃথক মন্ত্রণালয় তথা ‘মিনিস্ট্রি অব আয়ুশ গভর্নম্যান্ট অব ইন্ডিয়া’ এর আদলে বাংলাদেশের একটি পৃথক মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করার পরামর্শ দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: জমজ ১৯ শিশুকে ভিকারুননিসায় ভর্তি করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
ফোনে আড়িপাতা বন্ধ ও তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
চিকিৎসক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করবেন না হাইকোর্ট