হাইকোর্ট
আইডিয়াল কলেজ কেলেঙ্কারি: আগাম জামিন পেলেন মুশতাক আহমেদ
ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে প্রলুব্ধ করে তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
তবে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বয়স নির্ধারণ করতে বলেছেন আদালত। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সেফ কাস্টডিতে (নিরাপদ হেফাজত) রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে মুশতাকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মুশতাক, গতকাল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আবেদনটি ফেরত দেন। এই অবস্থায় মুশতাকের জামিন আবেদন ওই বেঞ্চে জমা দেন তার আইনজীবী। আজ বিকালে আবেদনের উপর শুনানি হয়।
জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আদালতে হাজির হন তিনি।
আদালত ছাত্রীরও বক্তব্য শোনেন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলে আদালতে বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দুদকের তলব
আদালত বলেছেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই তার বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রী নারী ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
এসময় বিচারক আইডিয়ালের সেই ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনাকে কোনো ধরনের ভয়ভীতি কেউ দেখিয়েছে কি না, কোনো ভয় পেলে আমরা আপনাকে খাস কামরায় নিয়ে জিজ্ঞেস করি।
এসময় আইডিয়ালের সেই ছাত্রী বলেন, আমি সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় তাকে (খন্দকার মুশতাক আহমেদকে) বিয়ে করেছি। আমাকে কেউ কোনোপ্রকার ভয়-ভীতি দেখায়নি।
এর আগে ১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলা করেন কলেজছাত্রীর বাবা।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
আরও পড়ুন: মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ওড়না পরা নিষিদ্ধ নয়: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ইকবালের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে তার বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে ইকবাল তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তিনি তার স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
গত ৩১ জুলাই কুবি’র উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২ আগস্ট ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।
ইকবাল দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিক সমিতির অর্থসম্পাদক।
ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ৯ আগস্ট আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যসহ ৮ জনকে ইকবালের পক্ষে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছিল, তিন দিনের মধ্যে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে উচ্চ আদালতে যাবেন ইকবাল।
নোটিশে আরও বলা হয়, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়া তার সংবাদে উল্লিখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর থেকে প্রতীয়মান হয়, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
এছাড়া গত ৬ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়ে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে উপাচার্যের নিকট চিঠি দিয়েছেন ইকবাল। এখন পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোন বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় কুবি প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইকবাল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন, যার সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কার্যক্রমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে।
তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধু উপাচার্যের হুবুহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ (২) (খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ইকবাল।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
রোগের বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৩ আগস্ট) এ রায় দেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আহ্বানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাশার সুপারিশসহ বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আজ মামলাটি নিষ্পত্তি করে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন এবং সিটি করপোরশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘমেয়াদে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার করতে আদালত সরকারকে বলেছেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। এর মধ্যে বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর-প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেসব খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সম্পূরক আবেদন করেন আইজীবী তানভীর।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
এ আবেদনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বেবিচককে নির্দেশ দেন। বেবিচকের চেয়ারম্যানকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এ নির্দেশনার পর সিটি করপোরেশন ও বেবিচক একাধিকবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
গত ৬ মার্চ সেসব প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ আদালত বিমানবন্দর এলাকার মশা নিধনে কবিরুল বাশারসহ তিনজনের মতামত জানতে তাদের ডেকেছিলেন।
সে অনুযায়ী কবিরুল বাশার আদালতে বিমানবন্দর এলাকার চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকা মশামুক্ত রাখা নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধান’র বিভিন্ন বিধি ও আটটি সুপারিশ প্রতিবেদনে তুলে ধরেন। কবিরুল বাশারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৯৭৫ সালে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে বাহক বাহিত রোগ ও বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা যাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে এখন পর্যন্ত ১২৬ প্রজাতির মশা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে ১৬ প্রজাতির মশা। আর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাওয়া গেছে ৯ প্রজাতির মশা।
এগুলো হচ্ছে- কিউলাস কুইনকিউফেসিয়েটাস, কিউলেক্স ট্রিটাইনায়োরিঙ্কাস, কিউলাস গেলিডাস, এডিস ইজিপটি, এডিস অ্যালবোপিকটাস, ম্যানসোনিয়া অ্যানুলিফেরা, ম্যানসোনিয়া ইউনিফর্মিস, আর্মিজেস সাবলবাটাস ও টক্সোরিঙ্কাইটস স্প্লেডেনস।
এ কীটতত্ত্ববিদ তার প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রজাতিভেদে মশার প্রজনন স্থল, প্রজনন ঋতু ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভিন্ন। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতার জন্য এর জীবনাচরণ সম্পর্কে জানা দরকার। মশার বায়োলজি, ইকোলজি, স্বভাব পর্যালোচনা করে নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
বিমানবন্দর এলাকায় মশার প্রজননস্থল হিসেবে দুটি বড় খাল, ছোট-বড় পাঁচটি জলাশয়, খোলা ড্রেন, পরিত্যক্ত টায়ার, ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের পাত্র, গাছের কোটর এবং বিমানবন্দর ঘিরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচটি ওয়ার্ড (১, ১৭, ৪৯, ৫০ ও৫২), এয়ারফোর্স এরিয়া, প্রিয়াঙ্কা হাউজিং ছাড়াও রাজউকের কিছু জায়গার কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে এ শিক্ষক বলেন, যেহেতু মশা চার কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে, তাই বিমান বন্দরকে মশামুক্ত করতে হলে এর চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মশার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কাজটি করা কঠিন নয়।
আদালত আজ শুনানি গ্রহণ শেষে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে একটি রিসার্চ সেন্টার করতে বলেছেন।
সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর: খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৪ আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ৪ আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, মো. রবিউল আলম সৈকত, নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান (রায়হান) ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানালে সোমবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপাররিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। তবে সেদিন বিএনপি সমর্থক এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি শাহবাগ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দু’পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতা-হাতি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অন্তত ১০ মিনিট। এরই মধ্যে আইনজীবীরা সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থাকা নেমপ্লেট খুলে ফেলেন।
পরে সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন। সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া দেশের বাইরে অর্থ পাঠানোর মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়েছে কি না, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে অর্থ বাইরে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে গত ৪ আগস্ট ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রবিবার (৬ আগস্ট) হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এরপর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে মানি লন্ডারিং রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের অভিযোগ অনুসন্ধানে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
আদালতে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটি তুলে ধরে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সায়েদুল হক। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টার ‘এস আলমের আলাদিনের প্রদীপ’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কোনো রেকর্ড নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক জায়ান্ট এস আলম গ্রুপ সেই তালিকায় নেই।
এতে আরও বলা হয়, তবে আলম সিঙ্গাপুরে গত এক দশকে কমপক্ষে দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পত্তি কিনেছেন। সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ‘ ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে, এই পরিমাণ অর্থ ২০০৯ সালের পর সিঙ্গাপুরে এস আলমের কেবল দুটি হোটেল ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনা ৪১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিতে আরও দেখা যায় এখন পর্যন্ত কয়েকটি কোম্পানি বৈধভাবে সিঙ্গাপুরে মোট ১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে এবং সেগুলোর একটিও আলমের মালিকানাধীন নয়।’
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে রুল ২ সপ্তাহে নিষ্পত্তির নির্দেশ
দুর্নীতি মামলায় তারেকের ৯ বছর, জোবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড
৩০ দিনের মধ্যে রেলের জায়গা দখলকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ
দেশের বিভিন্ন জেলায় যারা রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করে তা ৩০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষে সোমবার এ আবেদন করা হয়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে সারাদেশে রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন জেলায় থাকা সম্পত্তি অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
দুই সপ্তাহের মধ্যে রেলওয়ে সচিব ও মহাপরিচালক, পরিচালক, সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, বিভিন্ন জেলায় রেলওয়ের কী পরিমাণ জমি অবৈধ দখলে আছে, তা রেলওয়ের সচিব ও মহাপরিচালককে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত, পাশাপাশি দখলকারীদের তালিকা তৈরি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় শত শত একর জমি অবৈধভাবে দখল করা আছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তিনি আদালতে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে হাজার হাজার একর সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে, যা মূলত জনগণের সম্পত্তি এবং এগুলো উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন। আদালত হস্তক্ষেপ না করলে এসব জনগণের সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মামলা বাতিল চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার (২৩ জুলাই) এই রুল জারি করেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ জুন এই মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক।
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
অন্য যে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় তারা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা নিয়ে ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত মাসে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। এই আবেদনের ওপর ১৭ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময়ের আরজি জানালে আদালত রবিবার শুনানির দিন ঠিক করেন। শুনানি নিয়ে আজ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আজ আদালতে ড. ইউনূসসহ আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
আদালতের আদেশ টেম্পারিং করে কক্সবাজার জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল ভুল নয়, অপরাধ করেছেন বলে জানিয়েছেন উচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই)বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, ‘আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম (অপরাধ) করেছেন।’
শুনানিতে জেলা জজের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা আদালতকে বলেন, ‘আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত।’
এ সময় হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ভুলে এটা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, আপনি ভুল করেননি। আপনি জেনে বুঝে ক্রাইম করেছেন।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়।
পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন নির্ধারণের আদেশ দেন।
এর আগে গত ২১ জুন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একই দিনে জামিন দেওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজকে তলব করেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হলে বুধবার জেলা জজ হাজির হন।
এ সময় প্রথম দিনের শুনানিতেও হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্মানজনক বিদায় চাইলে এমন কাজ করতে পারতেন না। পরে আদালত আজ বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন খোদেস্তা বেগম নামে এক নারী। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন তিনি। এই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ চুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আদালত ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন খোদেস্তা বেগম।
আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, ২১ মে দুপুর ১২টার দিকে ৯ আসামি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন।
এক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশসহ অন্য কাগজপত্রের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা প্রত্যায়িত অনুলিপির ফটোকপি দাখিল করা হয়নি। আসামির কারাগারের মেয়াদসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়— আদেশে উল্লেখ করেছেন জেলা জজ।
অথচ ৯ আসামি এক মুহূর্তও কারাগারে ছিলেন না। শুনানিতে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের কীভাবে জামিন দিলেন—এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেন আদালত। মামলার কোনো সার্টিফাইড কপি ছাড়াই একই দিনে জেলা ও দায়রা জজ কোন আইনে, কীভাবে জামিন দিয়েছেন, সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় হাইকোর্টের ৩ নির্দেশনা
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য বিকৃত করার অভিযোগ আইন অনুসারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
প্রকাশিত রায়ে আদালত ৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শীর্ষ মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ডিজি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে (বিবাদী নম্বর -২) শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি, সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বিকৃত করে এমন কোনো ভবন/স্থাপনা আছে কিনা তা তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
২. তদন্তে শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সৌন্দর্য বিকৃত করে এমন কোনো ভবন/স্থাপনা পাওয়া যায় তবে সেসব ভবন/স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
৩. শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও পবিত্রতা রক্ষার্থে ডিজি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নিকটস্থ জমি ও ভবনের ব্যাপারে যথাযথ ও উপযুক্ত ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে গ্রহণ করতে পারবে।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, গত বছরের ১৬ আগস্ট সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি এলাকার সৌন্দর্য বিকৃত করার অভিযোগ আইন অনুসারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির প্রত্নতত্ত্বের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পুরা কীর্তি সংরক্ষণ বিধি অমান্য করে ভবন নির্মাণ করার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে হাইকোর্টের রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে একই বছরের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুলজারি করে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। ওই রুলের শুনানি শেষে এ রায় দেন হাইকোর্ট।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন- রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে এবং অভিযোগ আছে এর সৌন্দর্য বিকৃত করা হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
আদালত নির্দেশনায় বলেন- ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইন এবং সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সৌন্দর্য বিকৃত করার জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে হলে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে ড. ইউনূসের রিট নিষ্পত্তির নির্দেশ আপিল বিভাগের
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের চাকরিচ্যুত ১০৬ জন কর্মচারীকে লভ্যাংশ দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে করা রিট দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
একই সঙ্গে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।
আদালতে শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ।
ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে তিনি জানান, রিট মামলাটি দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা আদালত স্থগিত রেখেছেন।
জানা যায়, ১০৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০১৩ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে। এই লভ্যাংশ না পাওয়ার কারণে প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
কিন্তু লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা শ্রম আদালতে মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস।
এ রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৩০ মে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করা হয়।
গত ২২ জুন শ্রমিকদের আবেদনের শুনানি করে শ্রমিকদের লভ্যাংশ দিতে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকীর আদালত এই স্থগিতাদেশ দিয়ে শ্রমিকদের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুযায়ী আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদন
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট