হাইকোর্ট
টুকু ও আমানের সাজা বহাল হাইকোর্টে
ওয়ান ইলেভেনের সময় দায়ের করা পৃথক দুর্নীতির মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের আপিল খারিজ করে বিচারিক আদালতের সাজার রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড, আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক আপিল খারিজ করে এ রায় দিয়েছেন।
একইসঙ্গে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
গত ১৭ মে দুর্নীতির মামলায় সাজার বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর আপিলের রায়ের জন্য মঙ্গলবার (৩০ মে) দিন ধার্য করা হয়।
অন্যদিকে গত ১৪ মে দুর্নীতির মামলায় বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানি শেষ হয়।
আদালতে আমান ও তার স্ত্রীর আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও নাজমুল হুদা। টুকুর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি এবং অ্যাডভোকেট সাইফুল্লাহ মামুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট সেই আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ সে রায় বাতিল করে হাইকোর্টকে মামলাটির আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, গত ১৭ মে দুর্নীতির মামলায় সাজার বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর আপিলের রায়ের জন্য মঙ্গলবার (৩০ মে) দিন ধার্য করা হয়। চার কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী ২০০৭ সালের মার্চে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করেন। কমিশনের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ওই বছর ২৮ জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন কেসিসির মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর
যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
যমুনা নদী ছোট করার প্রকল্পের যাবতীয় নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ জুনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) এসব নথি আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুবউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
‘যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা’- শিরোনামে গত ১১ মার্চ প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতয়ি দৈনিক। এই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করা হয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী।
যমুনা নদী ছোট করার প্রকল্প নেওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ -এর বিধি ২ অনুসারে অসদাচরণ করেছেন। তাই বিধি ৩ অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে। সেই সঙ্গে রুল চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: হাইকোর্ট বেঞ্চে ‘বকশিশ’ নিষিদ্ধ, নির্দেশনা জারি
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ বিদান অনুসারে এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা অসদাচরণ করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়েছিলাম। গত ২১ মে হাইকোর্ট প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা চান। সেই সঙ্গে প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হয়েছে কিনা এবং প্রকাশিত প্রতিবেদনটির সত্যতা কতটুকু, তা জানতে চেয়েছিলেন। রবিবার রাষ্ট্রপক্ষ এসব তথ্য জানাতে সময় চাইলে হাইকোর্ট প্রকল্পের নথি তলব করেন।’
প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কিভাবে অসদাচরণ করেছেন, জানতে চাইলে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ -এর ২ বিধিতে অসদাচরণের সংজ্ঞা দেওয়া আছে। সে সংজ্ঞা অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা সরকারের নির্দেশ অমান্য করলে অসদাচরণ হয়। আর কোনো কর্মচারীর অসদাচরণ প্রমাণ হলে বিধি ৩ অনুসারে সে কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘নদী খনন করে প্রবাহ ঠিক রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, একনেকের সিদ্ধান্ত আছে। আরেকটা সিদ্ধান্ত আছে নদী-খাল-জলাশয় দখল করে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না। ফলে যেসব কর্মকর্তারা এই প্রকল্প নিয়েছেন তারা সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন। এটা অসদাচরণ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা নদীকে ছোট করতে চায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। আপাতত দেশের দু’টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রোয়েন বাঁধ দিয়ে নদী ছোট করা হবে।
যমুনা নদীকে ছোট করার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে পাউবো বলছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদী চওড়া হচ্ছে। নদী কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত হচ্ছে। এতে নদীভাঙন বাড়ছে।
পাউবো মনে করে, এত চওড়া নদীর প্রয়োজন নেই। এটি সংকুচিত করে সাড়ে ছয় কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হবে। যমুনা নদী ছোট করলে দু’টি সুফল পাওয়ার কথা বলছে পাউবো। একটি হলো, নদীর ভাঙন কমবে। অন্যটি বিপুল পরিমাণে ভূমি পুনরুদ্ধার করা যাবে।
নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীকে ছোট করার চিন্তা নির্বুদ্ধিতার। যাদের মাথা থেকে এসব চিন্তা আসে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কোনো যুক্তিতেই যমুনাকে সংকুচিত করা যাবে না। এটি বিশ্বে এক অনন্য নদী। এ নদীকে নিয়ে যেকোনো ধরনের পরীক্ষা যেন সাবধানে করা হয়। তবে বিস্তারিত সমীক্ষা না করে গ্রোয়েন প্রযুক্তির প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতিদের সাক্ষাৎ
হাইকোর্টের নির্দেশে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন কেসিসির মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) বাতিল হওয়া মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান এর রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জাফরুল্লাহ ও বিচারপতি বশিরউল্লার দ্বৈত বেঞ্চ রবিবার এক আদেশে আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে তার প্রার্থীতা ফিরিয়ে দেওয়ার এবং তাকে প্রতীক দেওয়ার জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেন।
এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এসএম মুশফিকুর রহমান।
স্বতন্ত্রপ্রার্থী মুশফিকুরের হাইকোর্টের আইনজীবী এস এম মাহবুবুর রহমান জানান, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমার মক্কেলের যে ভুলের কারণে প্রার্থীতা বাতিল করেছিল রিটার্নি অফিসার তার বিরুদ্ধে আমার মক্কেল বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপিল করেছিলেন, সেখানেও আমার মক্কেলকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। আজ (রবিবার) আদালত আমার মক্কেলের অধিকারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।
আরও পড়ুন: কেসিসি নির্বাচন: প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু
কেসিসি নির্বাচন: ২৮৯ কেন্দ্রের মধ্যে ১৬১ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
এবি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ওঠা নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ মে) একটি জাতীয় দৈনিকে ‘খেলাপির তথ্য লুকিয়ে আরও বড় জালিয়াতি’- শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুর ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
এই ঋণ অনুমোদেনের অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব, বিএফআইইউ, সিআিইডি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের আগে স্বপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশনার বিরোধিতা করেন উপস্থিত আইনজীবী আহসানুল করিম, মাহবুব শফিক ও মইনুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজিম।
আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে বলেন, এ ঋণের বিষয়টি জানতে পেরে এরই মধ্যে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউ আটকে দিয়েছে।
যেহেতু ঋণটি আটকে দেওয়া হয়েছে, এ অবস্থায় রুল জারির প্রয়োজন দেখছি না। রুল, আদেশ হলে ব্যাংকটির আমানতকারীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে।
আদেশ হলে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যাবে। যে কারণে বলছি, স্বপ্রণোদিত রুল-আদেশ সবসময় মঙ্গলজনক নাও হতে পারে।
আইনজীবী মাহবুব শফিক বলেন, রুলসহ আদেশ দেওয়ার আগে প্রতিবেদনটির সত্যতা যাচাই করার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবেদনটির বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করা জরুরি।
দেখা যাক, এবি ব্যাংক এই প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ দেয় কি না। আদেশের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা যেতে পারে।
আইনজীবী মইনুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই ব্যাংকিং খাতের অবস্থা টালমাটাল। এ অবস্থায় রুল আদেশ দিলে এ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। সারা বিশ্বেই ব্যাংকিং খাতে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন দেশে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ তার বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে বলেন।
তবে আইন কর্মকর্তা রুল জারি বা অন্তবর্তী আদেশ দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
যে কোম্পানির অনুকূলে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক তার মালিকানায় দুই জনের নাম উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এর সুবিধা নিতে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী হায়দার রতন।
যিনি কিছুদিন আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে রাতে ঋণের টাকা তুলে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
যদিও জালিয়াতির এই ঋণের তথ্য জানতে পেরে এরই মধ্যে তা আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ফিইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীকে পদাধিকার বলে জামুকা'র চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ব্যাখ্যা চেয়েছে তারা।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলী হায়দার রতনের নামে পাঁচ ব্যাংকে বর্তমানে ৫৫৯ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কাজের কার্যাদেশের বিপরীতে সন্দেহজনক উপায়ে নেওয়া এসব ঋণ এখন খেলাপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে একটি নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ সম্প্রতি অনুমোদন করে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। গত ১০ জানুয়ারি ব্যাংকটির গুলশান শাখায় ঋণের আবেদন আসে।
আবেদনে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেখানো হয় মোহাম্মদ আতাউর রহমান ও মো. মামুন রশিদকে। তবে এর ঠিকানা দেওয়া হয়েছে রতনের মালিকানাধীন ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশনের, যার কার্যালয় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে। আর আবেদনপত্রের প্যাডে যে ই-মেইল ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হয়েছে তা-ও তারই মালিকানার ব্র্যান্ডউইন নামে আরেকটি কোম্পানির।
এ কোম্পানির নামে দ্রুত ঋণ ছাড় করতে আবেদনের দিনই এবি ব্যাংকের গুলশান শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তা গ্রাহকের ধানমন্ডির অফিস ও বাড়ির ঠিকানা পরিদর্শন করে একটি পরিদর্শন প্রতিবেদন দেন।
গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের নামে কখনও কোনো আমদানি না হলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহক প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি, নির্মাণসামগ্রী, রাসায়নিক পদার্থ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানি করেন।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি তো দূরে থাক, কোম্পানিটির নিবন্ধন নেওয়া হয় গত বছরের জুনে। এরপর গত নভেম্বরে ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে এবি ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি হিসাব খোলা হয়।
এর বাইরে কোনো লেনদেনও নেই। অথচ ভুয়া পরিদর্শন প্রতিবেদন দিয়ে একেবারে নতুন নিবন্ধিত কোম্পানিকে বড় কোম্পানি দেখানো হয়। পরদিন ঋণপ্রস্তাবটি শাখা থেকে প্রধান কার্যালয়ের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটিতে পাঠানো হয়। আবেদনের এক মাস পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের ৭৫৫তম পর্ষদ সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জোর চেষ্টায় তা অনুমোদন হয়।
আবার ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে ঋণ অনুমোদন হলেও সব ধরনের ব্যাংকিং রীতিনীতি অমান্য করে ইনফ্রাটেকের অনুকূলে ১৬ কোটি ১৩ লাখ টাকার গ্যারান্টি ইস্যু করে ব্যাংক।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে পাঁচ ব্যাংক থেকে নেওয়া রতনের ঋণের বেশিরভাগই এখন খেলাপি। যে কোনো খেলাপিকে নতুন করে ঋণ দিতে পারে না ব্যাংক।
যে কারণে ভিন্ন কৌশলে আলী হায়দার রতনকে ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করে এবি ব্যাংক। আগের সব ঋণই নেওয়া হয় সরকারি রাস্তার কার্যাদেশের বিপরীতে।
সরকারি কার্যাদেশের বিপরীতে নেওয়া ঋণ সরাসরি ব্যাংকের হিসাবে জমা হয়। সেখান থেকে ব্যাংক টাকা কেটে লাভের অংশ গ্রাহককে পরিশোধ করে।
তবে ন্যাশনাল, ইউসিবিএল, এসআইবিএল, জনতা ও বেসিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬০৯ কোটি টাকার কোনো বিল সরাসরি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি। ফলে এসব ঋণ এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া আদৌ কার্যাদেশ পেয়েছেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংকগুলোতে। যদিও এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি না দেওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীকে পদাধিকার বলে জামুকা'র চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে পদাধিকার বলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান এবং সচিবকে সদস্য পদে নিযোগ সংক্রান্ত আইনের বিধান কেন বাতিল নয় তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রিট আবেদনকারী নওয়াব আলী মণ্ডলের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করেন। তার ভাতা অব্যাহত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম। তাকে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট অনিক হোসেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সেলিম আজাদ।
আরও পড়ুন:হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
উল্লেখ্য, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বীরমুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলী মণ্ডল ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান পুলিশে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি অস্ত্র লুট করে সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর গৌরবগাঁথা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের প্রকাশিত বইয়েও স্থান পায়।
বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার গত ২০০৫ সালে তাকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করেন এবং ওই বছরেই তার নাম গেজেটভুক্ত হয়। তিনি নিয়মিত সম্মানী ভাতাও পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু ১৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে জামুকা'র ৮১ তম সভায় তার গেজেটটি বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়।
ওই সুপারিশ অনুসারে মন্ত্রণালয় এবছর ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখে তার গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তিনি তার গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন, ভাতা বন্ধ ও জামুকা'র চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসাবে মন্ত্রী ও সচিবের নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট মামলাটি করেন।
ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম আদালতে বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ২০২২ সালের আইন দ্বারা গঠিত একটি পৃথক সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এই আইনের ৫(১) (ক) ও ৫(১)(খ) ধারা অনুসারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও সচিব পদাধিকার বলে যথাক্রমে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)'র চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং মন্ত্রণালয়ে যদি প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকেন, সেক্ষেত্রে তারা পদাধিকার বলে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি না দেওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
জামুকা আইন ২০২২ এর ৬ ধারা অনুসারে জামুকা'র অন্যতম প্রধান কাজ হলো- গেজেটভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় মর্মে তদন্তে আসলে তার গেজেটটি বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয় বরাবরে 'সুপারিশ' করা এবং নতুন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সুপারিশ করা।
যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং সচিব একইসঙ্গে জামুকা'র সর্বোচ্চ পদে আসীন, ফলে তারা জামুকা'র নির্বাহী প্রধান হিসেবে যে সুপারিশ করেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব হিসেবে সেটাই ‘মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত’- হিসেবে প্রকাশ করেন।
তাছাড়া, জামুকা যখন একজন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয় বরাবরে সুপারিশ করে, মন্ত্রণালয় কিন্তু গেজেট বাতিলের আগে তাকে কোনো ধরনের অভিযোগ খন্ডানোর বা শুনানির সুযোগও দেয় না; শুধুমাত্র জামুকা'র সুপারিশ মোতাবেক গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। জামুকা আইনের ৮ ধারা অনুসারে জামুকা'র চেয়ারম্যান অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জামুকা'র সকল নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী, অন্যদিকে মন্ত্রণালয়েরও প্রধান তিনি।
সে কারণে প্রকৃত অর্থে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একই প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে তদন্তকারী এবং বিচারক একই ব্যক্তি। এটা প্রতিষ্ঠিত ন্যায়বিচার নীতির পরিপন্থী। ফলশ্রুতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি, মর্যাদা ও সম্মানী মন্ত্রীর একক ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মন্ত্রী ও সচিবকে বাদ দিয়ে জামুকা'র বাকি সদস্যদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নিয়োগের বিধান রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় রায় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে বহাল
প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি না দেওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি দেওয়ার বিষয়ে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৮ মে সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ মে) বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: দণ্ডপ্রাপ্ত ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদের হাইকোর্টে জামিন
তলবের আদেশটি বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে রাজউকের চেয়ারম্যানকে পাঠানোর জন্যে বলেছেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গোলাম রসূল। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার নুরুল আজিম।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার নুরুল আজিম।
আইনজীবীরা ব্যারিস্টার নুরুল আজিম জানান, ২০০৪ সালের পূর্বে ফরিদা বেগম নামে এক ব্যক্তি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে নিকুঞ্জ এলাকায় প্লট বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেন। পরে তিনি (ফরিদা বেগম) তার নামে নেওয়া প্লটটি (নিকুঞ্জ আবাসিক মডেল টাউনে ফারুক সরণির নং ১৯ প্লটে ২ কাঠা ৮ ছটাক জমি) অপর একজনের নামে (খালেদ মাহমুদ) হস্তান্তর (বিক্রি) করেন।
এরপর খালেদ মাহমুদ সব নিয়ম মেনে রাজউকের সমুদয় পাওনা অর্থ পরিশোধ করেন। তবে এ বিষয়ে রাজউক একটি চিঠি দিয়ে খালেদ মাহমুদসহ ১১ জনের প্লট বরাদ্দ বাতিল করে।
বাতিল করা ওই ১১ প্লটের মধ্যে খালেদ মাহমুদের প্লটটি ছিল।
পরে রাজউকের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে হাইকোর্টে রিট করেন রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসিন্দা খালেদ মাহমুদ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ হাইকোর্টের ওই প্লট বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে রাজউকের দেওয়া চিঠির সিদ্ধান্ত ও কার্যকারিতা স্থগিত করেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন।
ওই রুলের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজউক চেয়ারম্যানকে প্লট বরাদ্দ বাতিল সংক্রান্ত চিঠির নথি প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সে আদেশ প্রতিপালন না করায় রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
সেই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রাজউক চেয়ারম্যানকে তলব করে আদেশ দেন।
আগামী ১৮ মে তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাত হারানো শিশুটিকে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
হিন্দু নারীদের বিবাহ নিবন্ধন, বিচ্ছেদ, ভরণপোষণ ও উত্তরাধিকার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রুলে এসব ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না জানতে চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া হিন্দু নারীদের অভিভাবকত্ব ও দত্তক গ্রহণে কেন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন।
রবিবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহাবুবুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আরও পড়ুন: হিন্দু নারীদের উত্তরাধিকার আইন বিষয়ে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত শুনবেন হাইকোর্ট
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব, আইন সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, শাহীনুজ্জামান, সৈয়দা নাসরিন, এসএম রেজাউল করিম।
গত (২ মে) আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, অভিযান এবং উজ্জ্বল পাল, পলি ব্যানার্জি ও বিথীসা বাগচী হাইকোর্টে রিট করেন।
সে রিটে হিন্দু নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদ, নিবন্ধন, ভরণপোষণের অধিকার, অভিভাবকত্ব, দত্তক গ্রহণ, সমান উত্তরাধিকার এবং তাদের মৌলিক অধিকার, জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করা সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যার সমাধানের আর্জি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: হাইকোর্টে দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির জামিন
ইমরান খানকে ২ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের একটি হাইকোর্ট শুক্রবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য অব্যাহতি দিয়ে জামিন দিয়েছেন।
খানের আইনজীবী বাবর আওয়ান বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার একদিন পর শুক্রবার আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, খান এখন ‘মুক্ত মানুষ’ এবং আদালতের এ রায় ন্যায়সঙ্গত।
খানকে আদালতে উপস্থিত করার পর তাকে ফের পুলিশ হেফাজতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, নাকি তাকে জামিন দেওয়া হবে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
আদালতের এই রায়ের পর কয়েকদিন ধরে সরকার এবং খান সমর্থকদের মধ্যে চলা সহিংস সংঘর্ষ প্রশমিত হয়।
৭০ বছর বয়সী খান দেশটির একজন জনপ্রিয় বিরোধী নেতা, গত মঙ্গলবার একই আদালতে তিনি হাজির হন; যেখান থেকে তাকে টেনে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তাকে গ্রেপ্তারের ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তার সমর্থকরা সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর লুট করে। এর প্রতিক্রিয়ায় সরকার প্রায় তিন হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবারের আদালতের অধিবেশন জটিল আইনি কৌশলের একটি সিরিজের অংশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেন, খানের গ্রেপ্তার বেআইনি ছিল, কিন্তু তারপরেও ইসলামাবাদ হাইকোর্ট একটি নিম্ন আদালতকে গ্রেপ্তার বহাল রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, শুক্রবার ইসলামাবাদের আদালত যা রায় দেবে তা তারা মেনে নেবেন।
সরকার বলেছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তার আগের আদেশ বহাল রাখলে তারা ফের দ্রুত খানকে গ্রেপ্তার করবে।
শুক্রবার ইসলামাবাদ আদালতের একটি প্রাথমিক সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে, বিচারকরা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার থেকে সুরক্ষা চেয়ে খানের একটি অনুরোধের শুনানি করেন। আদালত কক্ষে খানের সমর্থকরা স্লোগান দেওয়ায় বিচারক অধিবেশন দুই ঘণ্টার জন্য স্থগিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, খানকে দুর্নীতির মামলায় জামিন দেওয়া হলেও অন্যান্য অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেন তিনি।
সরকারের দাবি, খানের মুক্তি জনতার সহিংসতাকে উৎসাহিত করবে।
শুক্রবার আদালতে খানের প্রধান আইনজীবী বাবর আওয়ান সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে অনড় বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
হাইকোর্ট বেঞ্চে ‘বকশিশ’ নিষিদ্ধ, নির্দেশনা জারি
মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকশিশের নামে কোনো ধরণের সুবিধা নেওয়া ও দেওয়া নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
বুধবার (১০ মে) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চের কর্মকর্তার সই করা একটি বিজ্ঞপ্তি এজলাস কক্ষের বাইরে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাত হারানো শিশুটিকে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
বেঞ্চ কর্মকর্তা মো. সিফাতউল্লাহ খানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কার্যতালিকায় মামলা ওঠার আগে বা পরে, মামলার রায়, জামিন আদেশ বা অন্য যেকোনো আদেশ হওয়ার আগে বা পরে বা অন্য যেকোনো সময় এই কোর্টের বেঞ্চ অফিসার, সহকারী বেঞ্চ অফিসার, বিচারপতির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, কোর্টের জমাদার, কোর্ট বা চেম্বারের এমএলএসএস, বিচারপতির ড্রাইভার এবং গানম্যানসহ অত্র কোর্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বকশিশ বা টিপ্স নেওয়ার নামে কোনো প্রকার অর্থ, উপহারসামগ্রী, গাড়ি সেবা বা অন্যকোনো নামে কোনো ধরণের সুবিধা গ্রহণ করলে দুর্নীতি বলে গণ্য হবে।
এছাড়া এই কোর্টের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ ধরণের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত পাওয়া গেলে আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইনজীবী, আইনজীবীর সহকারী এবং এই কোর্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া গেল।
আরও পড়ুন: বকশিশ না পেয়ে ডিম নষ্ট করার ঘটনায় বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি প্রত্যাহার
নাটোরে ‘বকশিশ’ না পেয়ে ৩৫ হাজার ডিম নষ্ট, ছয় পুলিশ প্রত্যাহার
'পাকিস্তান' শব্দ যুক্ত থাকা আইনের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
দেশের প্রচলিত আইনে যেগুলোর মধ্যে ‘পাকিস্তান’, ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’ ও ‘ইস্ট পাকিস্তান’ শব্দ যুক্ত রয়েছে সেগুলোর তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এক আইনজীবীর করা রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মুহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এসব আইনের তালিকা করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি বিরোধী ভাষণগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে রুল জারি হাইকোর্টের
আর ৬০ দিনের একটি তালিকা দাখিল করত নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া রুলে আইন অনুসারে দেশের প্রচলিত আইন থেকে পাকিস্তান, ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান এবং ইস্ট পাকিস্তান শব্দ বাদ দিয়ে সংশোধন করতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রবিউল আলম।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দেশ স্বাধীনের পর প্রচলিত (পাকিস্তান আমলের) আইনগুলো অ্যাডাপ্ট করা হয়। তখন ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ লজ (রিভিশন ও ডিক্লারেশন) অ্যাক্ট এ পাকিস্তান, ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান এবং ইস্ট পাকিস্তান শব্দগুলো বাদ দিতে বলা হয়।
এরপর কিছু আইনে বাদ দেওয়া হয়। তবে এখনও অনেক আইনে শব্দগুলো রয়েছে।
যেমন-দ্য ক্যাটল (প্রিভেনশন অব ট্রেসপাস) অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯, দ্য ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১, দ্য এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১, দ্য এগ্রিকালচারাল পেস্টস অর্ডিন্যান্স ১৯৬২, দ্যা ইনডিসেন্ট অ্যাডভার্টাইজমেন্টস প্রভিহিশন অ্যাক্ট ১৯৬২, দ্য সেন্সরশিপ অব ফিল্মস অ্যাক্ট ১৯৬৩, দ্য পাইলটেজ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এবং দ্য গভর্নমেন্ট লোকাল অথরিটি ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংস (রিকভারি অব পজেশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৭০ উল্লেখযোগ্য।
এগুলোয় এ সব শব্দ থাকাটা ১৯৭৩ সালের আইনের লঙ্ঘন বিধায় আইনজীবী মো. রবিউল আলম রিট করেন।
আদালত শুনানি নিয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাত হারানো শিশুটিকে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
সিলেটে রাস্তার পাশ থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার