গণমাধ্যম
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিকাশ ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিকাশ ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
তিনি বলেন, সব বাস্তবতায় আমরা গনমাধ্যমকে পূর্ণাঙ্গভাবে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। যতক্ষণ না গণমাধ্যম শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে আমরা সঙ্গে আছি।
শুক্রবার (১ মার্চ) বিকালে চাঁদপুর প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে প্রেস ক্লাবের ২০২৪ সালের কার্যকরী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সেক্ষেত্রে আমরাও আপনাদের কাছ থেকে একই ধরনের সহযোগিতা চাই।
আরও পড়ুন: সত্য তথ্য দিয়ে অপতথ্য ও ভুল তথ্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, কীভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থাৎ গণমাধ্যম এবং সরকারের মধ্যে একটি সহযোগিতার মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা এবং আরর শক্ত ভিত্তির এই গণমাধ্যমকে দাঁড় করানোর জন্য চেষ্টা করতে পারি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম কীভাবে সরকারকে সঠিক তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে জবাবদিহিয় আনতে পারে, এমনকি সমালোচনাও করতে পারে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে আমি যে কথাটি গত কিছুদিন ধরে বলে আসছি এবং এখনো বলছি- আপনাদের সঙ্গে নিয়ে তথ্য প্রচারের মাধ্যমে গুজব ও অপ্রপ্রচার প্রতিরোধ করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আজকে পেশাদার সাংবাদিকরাই তাদের এই পেশায় শৃঙ্খলার দাবি তুলছেন। আমরা তুলছি না। আপনাদের কাছ থেকেই বার বার দাবি আসছে। কিন্তু আমরা শৃঙ্খলা কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কারণ বিষয়টি আমাদের উপরে চলে আসবে। তখন বলা হবে শৃঙ্খলার নামে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার। শৃঙ্খলা আপনাদের দাবি, আমরা তার সঙ্গে একমত হলাম। অন্য পেশায় ও অপেশাদার লোক চলে আসে। এক্ষেত্রে আমরা সকলের পরমার্শ নিয়ে কাজ করতে চাই।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিকতা পরাজিত হচ্ছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রতিরোধে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ-তুরস্ক: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে এবং বাংলাদেশে বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরিতে সহযোগিতা করবে কাতার।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত কাতার মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা শেখ আবদুল আজিজ বিন থানি আল-থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আল জাজিরার মতো বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরির অভিজ্ঞতার আলোকে কীভাবে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী ও কাতারের মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ সময় গণমাধ্যম সেক্টরে দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ব্যাপারে তার উভয়ে একমত পোষণ করেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
অনলাইন গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য বিজ্ঞাপন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
তিনি বলেন, অনলাইন পত্রিকা ও নিউজ পোর্টালের জন্য সরকারি বিজ্ঞাপন হার নির্ধারণে নীতিমালা থাকা দরকার। এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর তথ্য ভবনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমে আরও পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বর্তমান সরকারের সময়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত দিনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার যে বাস্তবতা ছিল, সে জায়গা থেকে সংখ্যাগত এবং গুণগত দিক থেকে আমরা কতটুকু এগিয়েছি, কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে- এগুলোর তুলনামূলক বিষয়গুলো নিয়ে প্রকাশনা বের করতে হবে।
আরাফাত আরও বলেন, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম দেশের মানুষ এবং বিশ্ববাসীর কাছে আরও কার্যকরভাবে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এখন প্রযুক্তি অনেক অগ্রসর হয়ে গেছে। মানুষের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে অধিদপ্তরের কাজে নতুন নতুন বিষয় সংযোজন করতে হবে।
ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন ১৯৭৩ প্রয়োজনবোধে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ক্যাবল সেবা ডিজিটাইজেশনে শিগগিরই নির্দেশিকা তৈরি করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
এর আগে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র, জাদুঘর ও গ্রন্থাগার পরিদর্শন করেন তিনি।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নিজামুল কবীর, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগমসহ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরে অবিশ্বাস্য উন্নয়নের নজির সৃষ্টি হয়েছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিং: সাংবাদিকতার আড়ালে আবারও গণমাধ্যমের স্বীকৃতির অপব্যবহার
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করার অজুহাতে বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক এক প্রেস কর্মকর্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে একটি মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
শিক্ষাবিদদের একটি অংশ বলছে, এ ধরনের সংবাদ সম্মেলনে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতির বিষয়টিই তুলে ধরেছে এ ঘটনা।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক হিসেবে প্রশ্ন করার আগে মুশফিকুল ফজল আনসারি দুটি অনুচ্ছেদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন। সাংবাদিকরা মনে করেন, ওই পর্যবেক্ষণে বস্তুনিষ্ঠতার অভাব রয়েছে এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি যেকোনো পেশাদার সাংবাদিকেরই এড়ানো উচিত।
আনসারি বলেন, 'শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়ও প্রকাশ পেয়েছে। জয়ের জন্য ভারতের সমর্থন নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাস্তবে বাংলাদেশের নির্বাচনে যেসব দেশ জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু তাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন।’
সিনিয়র সাংবাদিকরা আরও বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় হস্তক্ষেপের অভিযোগকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেওয়ার চেষ্টা একটি পুরোনো তৎপরতা। এটিকে কোনোভাবেই সাংবাদিকতা বলা যায় না, কারণ তিনি এই প্রশ্নগুলোর জবাবও চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে ১৩৯ অনিয়মিত বাংলাদেশির প্রত্যাবাসন
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- তিনি যে পোর্টালটি প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন, তা দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী সমর্থিত প্রচারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভ্যানগার্ড হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।
জাস্টনিউজ নামে পরিচিত ওই পোর্টালের বিষয়বস্তু মিথ্যা বিবরণের আরেকটি উদাহরণ এটি। অগ্নিসংযোগকারীদের রক্ষা করার চেষ্টা, ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন ও তারেক রহমানকে তার অপরাধ থেকে অব্যাহতি দিতে তারা বিভিণ্ন প্রতিবেদন করে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করার চেষ্টা করে।
এর আগেও, আনসারি প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। তখন শিক্ষাবিদরা মিথ্যার উপর ভিত্তি করে এবং রাজনৈতিক এজেন্ডায় চালিত হয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, সেই আনসারিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের মিথ্যা দোষারোপ করতে এবং সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে দাবি করতে দেখা যায়। যা বিরোধীরা তাদের অগ্নিসংযোগের সহিংস কাজ এবং নির্বাচনি প্রচার বর্জনের মতো অগণতান্ত্রিক দাবির ন্যায্যতা দেয়।
নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমের মালিক ও সাংবাদিকদের 'বিরোধীদের পক্ষে' কাজ করানোর উদ্দেশ্যে আনসারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ব্রিফিংয়ে 'স্বাধীন গণমাধ্যম আউটলেটগুলোকে' 'সরকারপন্থী' হিসেবে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
অধ্যাপক তাবিউর রহমানের মতে, এই কৌশলটি খুবই অশুভ।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তার সামনে তিনি সরকারের ভুল উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের কক্ষ থেকে বের হয়ে লোকটিকে মার্কিন কর্মকর্তাদের ভুল উদ্ধৃতি দিয়ে মিথ্যা প্রচার করতে দেখা যায়।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবেই সাংবাদিকতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না বলে দাবি তাবিউরের।
তাবিউর রহমান বলেন, 'অগ্নিসন্ত্রাসে ইন্ধন জোগাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের লম্বা লম্বা দাবি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সুযোগলাভের এ ধরনের নির্লজ্জ অপব্যবহার অব্যাহত থাকা উচিত নয়।’
আনসারির অতীতের একের পর এক মিথ্যা বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, 'এ ধরনের প্রচারণাকে সাংবাদিকতার কাজ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়- কেবল কর্মীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালাতে পারে। এ ধরনের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য স্বাধীন সাংবাদিকতা একটি ভালো হাতিয়ার।’
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরামে শুক্রবার যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণমাধ্যমে আরও পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, গণমাধ্যমে আরও পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন। এ বিষয়গুলোতে অনতিবিলম্বে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের অপব্যবহার কখনোই কাম্য নয়। এ বিষয়ে মালিক-সাংবাদিক সব পক্ষেরই সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: অপপ্রচার ও গুজবকে জবাবদিহির আওতায় আনতে চান তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয় সেটি যাতে টিকে থাকে, একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে যারা কাজ করে তারাও যাতে টিকে থাকে সে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাহলে এক ধরনের ভারসাম্য থাকবে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে ভালো একটি জীবনযাপন করতে পারে সেটাও জরুরি। বাস্তবতার মধ্যে থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা-জবাবদিহি আনার চেষ্টা করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
এ সময় মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব কাজ হয় সেখানে পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা হবে। মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তরগুলো থেকে যেন কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় সে চেষ্টা থাকবে।
দেশের বিরুদ্ধে যেসব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করার প্রত্যয়ও এ সময় ব্যক্ত করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে যেসব অপপ্রচার আছে তা মোকাবিলা করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার কৌশলগত পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অপতথ্যকে জবাবদিহির আওতায় আনতে চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের 'হস্তক্ষেপ' নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, কোনো দেশ যদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করবে এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, বাংলাদেশের উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ডব্লিউআইওএনের কূটনৈতিক প্রতিবেদক সিধান্ত সিবালকে তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, প্রতিটি দেশেরই তাদের অধিকার বা এখতিয়ার রয়েছে এবং তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা ২+২ ভারত-মার্কিন বৈঠকের পর ভারতের অবস্থান কী তা আগেই বলেছেন।
তিনি বলেন, 'তিনি আমার কাছে এ কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং এই অবস্থানের প্রশংসা করেছেন যে নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের প্রতিষ্ঠান ও জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সমর্থন করবে: মোমেন
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে এবং সরকারও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'বর্তমানে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সব রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাইয়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেছে।’
আশা করে তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানোর জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যাতে তারা এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং দেখতে পারে যে তারা কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বলেন, কিছু কিছু কৃষিপণ্য আছে যেখানে ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা যদি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কিছু নিশ্চয়তা পেতে পারি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো বাংলাদেশে সরবরাহ করা যেতে পারে, যদি না ভারতে কিছু অভ্যন্তরীণ বাধ্যবাধকতা যেমন ঘাটতি থাকে। সুতরাং, আপনি জানেন, যদি সেই আশ্বাস দেওয়া হলে আমরা তাতে নীতিগতভাবে একমত হব। তবে প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠান ও প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোকে বাছাই করার সমস্যা এবং এটি কীভাবে করা যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে নীতিগতভাবে এটি দুর্দান্ত।’
আরও পড়ুন: এফওসি: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা
মাসুদ বলেন, শুক্রবার তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে খুব ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন এবং অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা ২০২৩ সালে সংঘটিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং কীভাবে আমরা নিকট ভবিষ্যতে অর্থাৎ ২০২৪ এবং তার পরেও নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতে চাই।’
বাংলাদেশ সফলভাবে এলডিসি উত্তরণের মানদণ্ড পূরণ করেছে এবং ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করায় তারা সিইপিএ নিয়ে আলোচনা করেন।
মাসুদ বলেন, 'সুতরাং, সমস্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হবে, যদিও কিছু দেশ স্বতন্ত্রভাবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে কিছু রূপান্তর ব্যবস্থা দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: দিল্লিভিত্তিক কূটনীতিকদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত সাফটা'র বিধানসহ বিভিন্ন সহায়তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে সার্কের অধীনে স্বল্পোন্নত দেশগুলো নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।
তাই ২০২৬ সালের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘তাই আমরা সিইপিএ বা কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট নিয়ে আলোচনা করছি এবং দুই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, তারা একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, 'আমরা সিইপিএ চালু করতে পারি, বিশেষ করে ২০২৬ সালের নভেম্বরের মধ্যে।’
পররাষ্ট্র সচিব নয়া দিল্লিতে তার ভারতীয় সমকক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র সচিব কানেক্টিভিটি, রোহিঙ্গা সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোটাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ও রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠক সম্পর্কে মস্কোর 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যা' সম্পর্কে অবগত যুক্তরাষ্ট্র: ওয়াশিংটন
দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হলে ব্যয় বৃদ্ধি পায় উল্লেখ করে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও স্থানীয় নেতৃত্ব তৎপর হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সিলেটের খাদিমপুরে সুরমা গেটে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের কাজের উদ্বোধনকালে এই আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, নির্মাণাধীন মহাসড়কটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করবে। এতে দেশে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে নতুন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. মোমেন।
প্রকল্পের তথ্যমতে, ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে সিলেট-তামাবিল অঞ্চলে একটি নিরাপদ ও টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠবে। প্রকল্পটি ওই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবন-জীবিকার মান ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি দেখা উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ প্রকল্পের আওতায় ৫টি সেতু, ২২টি কালভার্ট, ১১টি ফুটওভার ব্রিজ, ৭টি বাসস্ট্যান্ড, ৬টি ইউলুপ এবং একটি টোলপ্লাজাও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ায় কথা রয়েছে। এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় মহাসড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট সদর উপজেলা পরিষদে উপজেলার ১২টি উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সড়ক, স্কুল ভবন, সেতু ও মসজিদ নির্মাণসহ এসব উন্নয়ন কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৪০ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে ড. মোমেন সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ২ হাজার ৩১৫ জন কৃষকের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রবি শস্যের বীজ ও সার বিতরণ করেন। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনের আগে বড় কোনো বৈশ্বিক উদ্যোগে যোগ দেবে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে গণমাধ্যম অনবদ্য ভূমিকা পালন করতে পারে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে এবং একইসঙ্গে মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর কাজে গণমাধ্যম অনবদ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সমাজের তৃতীয় নয়ন ও উন্মোচিত নয় এমন বিষয় উন্মোচন করতে পারে, যেখানে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি পড়ে না, সেখানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারে।
সোমবার সন্ধ্যায় দৈনিক কালবেলা পত্রিকার প্রথম বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই: হাছান মাহমুদ
তিনি বলেন, ‘আমি কালবেলাকে অসংখ্য অভিনন্দন জানাই যে অত্যন্ত অল্প সময়ে, প্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যে এটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। পত্রিকাটি শতবর্ষী হোক।’
তিনি আরও বলেন, দৈনিক কালবেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করে, একইসঙ্গে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী বলেন, সবার আগে সংবাদ পরিবেশনার প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে অস্থিরতার অবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এ সময় কালবেলার সম্পাদক আবেদ খান, নির্বাহী সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, প্রকাশক নজরুল ইসলাম, সম্পাদকীয় দল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সম্পাদক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা হাছান মাহমুদের
ফিলিস্তিনের বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে ইউরোপীয় দেশগুলো : ড. হাছান মাহমুদ
মার্কিন ভিসা বিধিনিষেধ: পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র আবারও গণমাধ্যমের বিষয় উল্লেখ থেকে বিরত
যুক্তরাষ্ট্র পুনর্ব্যক্ত করেছে, তারা কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না এবং বাংলাদেশে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিশ্চিত করতে চায়, বাংলাদেশের জনগণ যেন অবাধে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে।
সোমবার (২ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ওয়াশিংটনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সুতরাং, আমি গত সপ্তাহে যা বলেছিলাম তা কিছুটা ভিন্ন ভাষায় পুনরায় বর্ণনা করতে বা বলতে চাই, যা বাংলাদেশিরাও চায়: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’
তবে তিনি আবারও গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকেন। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্প্রতি এক টিভি সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের ওপর সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতি নিয়ে এডিটরস কাউন্সিলের উদ্বেগ, ব্যাখ্যা দিলেন রাষ্ট্রদূত হাস
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে একজন প্রশ্নকর্তা বলেন, বাংলাদেশে 'তালেবান স্টাইলের শাসন' সমর্থনকারী উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো এবং বিরোধী নেতারা গণমাধ্যমকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তারা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকি দিয়েছে ও উগ্রবাদী দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচক সাংবাদিকদের একটি তালিকা প্রচার করেছে।
প্রশ্নকর্তা আরও বলেন, অন্যদিকে মানবাধিকার কর্মী, যুদ্ধাপরাধবিরোধী আন্দোলনকারী, সম্পাদক, লেখক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা গণমাধ্যমের ওপর সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিবৃতিকে 'গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অবমাননা' বলে মনে করেন।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ বিশিষ্ট নাগরিকদের
তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে জিজ্ঞেস করেন, যুক্তরাষ্ট্র কি রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে সমর্থন ও উদারপন্থীদের এত বড় গ্রুপের উদ্বেগকে অস্বীকার করে কি না।
মিলার সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যম সবাই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে, ‘যেমনটা আমরা চাই’।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছি তা এই উদ্দেশ্য এবং বাংলাদেশের জনগণের অবাধে তাদের নেতা নির্বাচন করার আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির সঙ্গে ভিসা নীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্তির নিন্দা শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের প্রকাশ্য ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
তারা এটিকে ‘একজন বিদেশি কূটনীতিকের দ্বারা দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নজিরবিহীন আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এই বিষয়ক একটি প্রশ্নের জবাবে ‘গণমাধ্যম’র বিষয় উল্লেখ করেননি। অথচ রাষ্ট্রদূত হাস এক টিভি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গণমাধ্যমও নতুন ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় পড়তে পারে।
রাষ্ট্রদূতের গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করা এই মন্তব্যকে কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার প্রাক্তন প্রেস কর্মকর্তা মুশফিক ফজল আনসারী ‘স্বাধীন গণমাধ্যমকে’ ‘সরকারের হাতিয়ার’ হিসেবে বর্ণণা করায় তার তীব্র সমালোচনা করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদরা।
তারা আরও বলেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের আগে ‘বিরোধীদের পক্ষে’ কাজ করানোর জন্য মিডিয়া আউটলেট মালিকদের ও সাংবাদিকদের আরও বেশি ভয় দেখানো।
সব ধরনের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড- একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘সাংবাদিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার এবং গণমাধ্যমের উপর অদৃশ্য সেন্সরশিপ আরোপ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যা গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রধান স্তম্ভ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগের বক্তব্য ও পরের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যম অন্তর্ভুক্ত 'সঠিক সিদ্ধান্ত' নয়: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে ‘গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া বা ভয় দেখানোর জন্য দায়ী’ অর্থাৎ, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা ভিসা বিধিনিষেধের মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত হাসের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও তারা আগে বলেছিল গণমাধ্যমের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে, এখন আমরা তাদের আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ইউ-টার্ন দেখতে পাচ্ছি। এটি বাস্তবায়িত হলে, স্বাধীন সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটি।’
কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ সাংবাদিক বলেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এই বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করে। এখন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হাসের ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব দেখা বাকি আছে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তবিউর রহমান প্রধান প্রশ্ন রেখেছেন, ‘একইসঙ্গে আপনারা কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্যদের পরামর্শ দিতে পারেন এবং গণমাধ্যমকে ভিসা বিধিনিষেধের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন?’
অন্যদিকে, মানবাকারকর্মী সুলতানা কামাল একজন টিভি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, ‘একটি দেশের ভিসা বাতিল করার অধিকার আছে। তবে তারা ভিসা দেবে না- এমন একাধিক পূর্ব ঘোষণার পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘোষণা জারি করার এই ধরনের পদক্ষেপ কি সত্যিই কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে সমর্থন করে?’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঘোষণার পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ও নেতা কিছু মিডিয়া আউটলেটের সমালোচনা করেন এবং দলগুলোর সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্যও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নামও উল্লেখ করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ও তাদের সমর্থকদের শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে তারা ভিসা বিধিনিষেধে গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিএনপি বর্জন করেছে এমন বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের নাম উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়াও, জামায়াতে ইসলামের একটি এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট ‘বাঁশেরকেল্লা’তে পোস্ট করা একটি টুইটে বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু।’
এই বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টটি সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ চালানোর জন্য সংবাদ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: কোনো নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনাকে থামাতে পারবে না: কাদের
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেননি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র