সিলেট
সিলেটে তালাবদ্ধ ঘর থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, শিশু সন্তান হাসপাতালে
সিলেট নগরীর বালুচরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে ওমান প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে বালুচর ফোকাস-৩৬৪ নং বাসার তালা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ঘরের ভেতর থেকে ওই নারীর দুই বছর বয়সী এক শিশু সন্তানকে (মেয়ে) জীবিত উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত আফিয়া বেগম (৩১) গোয়াইনঘাট উপজেলার আজির উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফোকাস-৩৬৪ সিকান্দর মহলের পাঁচতলা বাসার নিচতলায় মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ওমান প্রবাসীর স্ত্রী আফিয়া বেগম। মঙ্গলবার রাতে বাসার ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। এসময় বাসার দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তালা ভেঙে ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন:সিলেটে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। পাশেই পড়েছিল তার শিশু সন্তান। কাছে গিয়ে দেখতে পাই শিশুটি নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
স্থানীদের বরাতে ওসি বলেন, লাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তিনদিন আগে ওই নারীকে হত্যা করে ফেলে যায়। ওই অবস্থায় শিশুটি না খেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়েছিল।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি জানান, এই ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। ঘটনা কারণ উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল শুরু
সিলেটে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
সিলেট ভ্যালির সকল বাগানের চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (২৪ আগস্ট) পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ১৬তম দিনে শ্রমিকরা বিভিন্ন বাগানে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করছে।
বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানগুলোতে চা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বাগানের বিভিন্ন স্থানে দলে দলে বিক্ষোভ করছে শ্রমিকরা।
এর আগে মঙ্গলবার চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। তাদের সাথে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে একমত পোষণ করেন ইউনিয়নের নেতারাও।
আরও পড়ুন: মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেটে ২৩ চা বাগানে কর্মবিরতি পালন
প্রসঙ্গত, ৩০০ টাকা মজুরি আদায়ে ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে শ্রমিকরা। পরে ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে কর্মকর্তারা বৈঠকে বসলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।
পরে ১৩ আগস্ট থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিকরা। এর মধ্যে দফায় দফায় সভা ও বৈঠক হয়েছে। অবশেষে ১২০ টাকায় কাজ যোগা দেয়ার কথা হলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি। পরিবর্তে তারা ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মঙ্গলবারও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে সাধারণ চা শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তারা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চৌমুহনী রেললাইন ও কুলাউড়া মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেছে। ফলে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এসময় সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেন সিলেটের দিকে আসছিল। অবরোধের কারণে আটকা পরে পাহাড়িকা।
অবরোধে অংশ নেয়া চা শ্রমিক স্বপন নাইডু বলেন, ‘এতদিন ধরে আমরা ধর্মঘট করছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেয়া হচ্ছে না। তাই আজ আমরা রেলপথ অবরোধ করেছি।’
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা তারা কোন টেলিভিশনে দেখেনি বা শোনেনি। নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নামে মিথ্যা নিদের্শনা দিয়ে আমাদের কাজে যেতে বলছেন। তাই ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে তারা আবারও আন্দোলন শুরু করেন।
চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এভাবে বিষয়টির সুরাহা না হলে গত শনিবার শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে এক বৈঠকে জানানো হয় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি দেশের বাইরে যাবেন। সেখান থেকে এসে গণভবনে শ্রমিকদের নিয়ে বসবেন এবং তাদের তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে বিষয়টি দেখবেন। প্রথমে চা শ্রমিক নেতারা এ কথা মানলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন:মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
চা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, আগের মজুরিতেই ফিরছেন কাজে
ধর্মঘট প্রত্যাহার করে পূর্বের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফিরছেন চা শ্রমিকরা। সোমবার থেকেই তারা কাজে যোগ দেবেন।
রবিবার রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ-সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, আপাতত আমরা পূর্বের মজুরিতেই কাজে যোগ দেব। তবে দ্রুততম সময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করে নতুন মজুরি নির্ধারণ করবেন। আর ধর্মঘট চলাকালীন ১০ দিনের মজুরিসহ সকল সুবিধাদি মালিকপক্ষ প্রদান করবে।
তবে শ্রমিক নেতাদের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা আজ বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, রবিবার রাতে নিজ কার্যালয়ে চা-শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ সময় চা- শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসকের প্যাডে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়- প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ২২ আগস্ট থেকে কাজে যোগদান করবেন। আপাতত চলমান মজুরি অর্থাৎ ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে।
আরও পড়ুন : মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে চা শ্রমিকরা
সিলেটে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের, দীর্ঘ যানজট
ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-মিছিল ও সমাবেশ করেন।
রবিবার সকাল ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:টানা তৃতীয় দিনের মতো পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
এদিকে আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। তিনি জানান, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। এছাড়া যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
সাভারে ঈদ বোনাসের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
মধ্যরাতে সিদ্ধান্ত বদল, চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত
দফায় দফায় সিদ্ধান্ত বদল করে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিক নেতারা। ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শনিবার (২০ আগস্ট) মধ্যরাতে এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, শনিবার বিকালে শ্রম অধিদপ্তরের সাথে আমরা বৈঠকে বসি। সেখানে আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর শেষে ফিরে আমাদের সাথে বসবেন জানিয়ে আমাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেই। তবে আমি কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করিনি।
তিনি বলেন, বৈঠক শেষে বেরিয়ে আমি সাধারণ চা শ্রমিকদের ক্ষোভ আঁচ করতে পারি। তারা ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান। আমরাও তাদের সাথে একমত। তাই আমি আমার আগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এর আগে বিকালে শ্রম অধিদপ্তরের সাথে বৈঠক শেষে বেরিয়ে নিপেন পাল বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে আমাদের সাথে বসবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে আমাদের দাবি-দাওয়া তাঁকে জানানো হবে। তাই তাঁর আশ্বাসে আমরা আপাতত ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। রবিবার থেকে সব শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা উন্নীতের দাবিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন চা শ্রমিকরা। ধর্মঘটের ৮ দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিপ্তর ও সরকারের প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে বসেন চা শ্রমিক নেতারা।
পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত, প্রত্যাহার নয়’
বৈঠক শেষে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ চা শ্রমিকরা। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তারা ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। এসময় নেতাদের বিরুদ্ধেও বিষেদগার করেন শ্রমিকরা।
অন্দোলন নিয়ে এই বিভক্তির প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে সিলেট ভ্যালির চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
বৈঠক শেষে রাত ১১ টায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করিনি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক পর্যন্ত স্থগিত করেছি। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে ফিরে আমাদের সাথে বসবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর সম্মানে আমরা ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রাজু গোয়ালা আরও বলেন, আমাদের মজুরি মাত্র ২৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে আমরা কেউই সন্তুষ্ট না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত থেকে ফিরে আগামী মাসে আমাদের সাথে বসবেন। আমাদের দাবি দাওয়া শুনবেন তাই আমরা তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্র্রী আমাদের দাবি দাওয়া শুনে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।
রাজু বলেন, সারাদেশের কথা জানি না। তবে আমাদের সিলেট ভ্যালির ২৩ বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে। এখন আমরা আবার সব বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাথে বসবো।
রবিবার থেকে শ্রমিকরা যথারীতি কাজে যোগ দেবে বলেও সেসময় জানান রাজু।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে রবিবার থেকে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে।
তবে এর কিছুক্ষণ পরই নিজের মত পরিবর্তন করেন এই চা শ্রমিক নেতা। রাত ১টার দিকে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে রাজু লিখেন, সিলেট ডিসি অফিসে মিটিং চলাকালীন সময়ে আমি কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবর্তনকৃত সিদ্ধান্ত অবগত ছিলাম না। সিলেট ভ্যালি কার্যকরী পরিষদ বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন বি ৭৭ এর প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তের সাথে ছিল, আছে, থাকবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রাজু গোয়ালা বলেন, আমাদের আন্দোলন চলবে।
এরপর রবিবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেন তারা।
মাত্র ২৫ টাকা মজুরি বাড়ানোতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ জানিয়ে চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি রিতেশ মোদী বলেন, শ্রমিকরা এই সমঝোতা মানে না। তারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায়। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
চা শ্রমিকদের মজুরি ২০১৯ সালেই বৃদ্ধি করা উচিৎ ছিল: গবেষক আশ্রাফুল
সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল শুরু
দুই জেলার বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে টানা ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে সিলেট-ময়মনসিংহ সড়কে রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
রবিবার বিকাল ৪টার দিকে হবিগঞ্জে হোটেল হাইওয়ে ইন-এ বৈঠক শেষে বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত আসেন সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলার বাসা মালিক ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব: ১৩ দিন সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে ময়মনসিংহের ৭০টি বাস চলাচল করে। সম্প্রতি এই রুটে সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতি পাঁচটি নতুন বাস নামান। কিন্তু সিলেট জেলার বাসগুলো চলাচলে নিষেধ করে ময়মনসিংহ জেলা বাস মালিক সমিতি। এই নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট থেকে এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে যাতায়াতকারীরা বিপাকে পড়েন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিআরটিসি বাস চলাচলে পরিবহন শ্রমিকদের বাধা
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম জানান, দুই জেলার বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে দ্বন্দ্বের সমাধান হয় এবং এই রুটে উভয় জেলার বাস চলাচলের সিদ্ধান্তের ফলে সকল সমস্যার অবসান ঘটে।
শাবিপ্রবিতে শোকদিবসে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস পালিত হয়েছে। এতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
সোমবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শোক দিবসের অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা উত্তোলণ ও কালো ব্যাজ ধারণ শেষে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণের পর শোক র্যালির আয়োজন করা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা মিললেও শোকর্যালিতে বেশিরভাগ জুড়েই ছিল বিএনসিসির উপস্থিতি। অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দেখা যায়নি, ছিল না শিক্ষক নেতাদের একাংশ। শাবিপ্রবিতে মূলত জাতীয় শোক দিবস পালন করে থাকে আওয়ামী সমর্থিত দু’টি শিক্ষক প্যানেল। প্রতি বছর যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোকদিবস পালন করে থাকেন উভয় প্যানেলের শিক্ষকেরা। কিন্তু এ বছর জাতীয় শোক দিবসের শোক র্যালি ও শোকসভায় শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
আরও পড়ুন: ‘ঝাড়ুর লাঠি’তে পতাকা: পাকিস্তানি ‘হাবিব ব্যাংকে’র বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ
দিবসটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চা ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ প্যানেলের শিক্ষকদের সকল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেলেও আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষক প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’ শিক্ষকদের অধিকাংশই ছিল অনুপস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক র্যালি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পরিবর্তে যেমন বিএনসিসির দখলে ছিল ঠিক শোকসভায় শিক্ষক কর্মকর্তাদের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়াম ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলে।
‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’র আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রোগ্রামে (ম্যূরালে পুস্পস্তবক) অংশগ্রহণ করেছি এবং নিজেদের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি।
শোকর্যালি ও শোকসভায় অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুপুরের ট্রেনে আমি ঢাকায় যাচ্ছি। এজন্য পুস্পস্তবকের পর সবাইকে বলে চলে আসা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের মাঝে নানা রকমের ব্যাপার-ক্ষোভ আছে সেইসব বলাও যায় না। আমরা আমাদের মতো অবজার্ব করলাম।
দিবসটিতে প্রশাসন কর্তৃক জানানো হয়েছে কিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে একটি চিঠি ইস্যু করে সবাইকে অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। আমরা ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ নিজেদের প্রোগ্রাম নিজেরাই করি।
আরও পড়ুন: সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, শাবিপ্রবিতে দুই আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগীতা সবসময় কাজ করে। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে দুই শিক্ষক গ্রুপ একসঙ্গে এই দিবসগুলো পালন করে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কাজে উপাচার্য ঢাকায় অবস্থান করায় জাতীয় শোক দিবসে একটি পক্ষ ম্যুরালে ফুল দিয়ে বাকি আনুষ্ঠানিকতাগুলোতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে উচিৎ ছিল বঙ্গবন্ধু ইস্যুতে সবাই একত্রে এই দিবসটি পালন করা।
শাবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করা হয়।
‘ঝাড়ুর লাঠি’তে পতাকা: পাকিস্তানি ‘হাবিব ব্যাংকে’র বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ
সিলেটে হাবিব ব্যাংকের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে পাকিস্তানি ওই ব্যাংককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সোমবার সকালে শোক দিবসের এই ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকালে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো হাবিব ব্যাংকের সিলেট শাখায়ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ উঠেছে এতে জাতীয় পতাকায় খুঁটির পরিবর্তে ঝাড়ুর লাঠি এবং পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়নি।
সমালোচনার মুখে ঝাড়ু সঙ্গে টানানো জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরে বিকালের দিকে ব্যাংকে নতুন একটি খুঁটির মধ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে লাগানো হয়।
আরও পড়ুন: সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
এ ঘটনার সমালোনা করে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'ঝাড়ুর মধ্যে জাতীয় পতাকা বেঁধে প্রদর্শন করে আমাদের আবেগের সর্বোচ্চ জায়গায় আঘাত করেছে। সিলেটের মাটিতে জাতীয় পতাকার এমন অবমাননা আমরা সহ্য করব না। প্রশাসনকে অবিলম্বে এই ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এই ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।'
জাতীয় শোক দিবসে হাবিব ব্যাংকের সিলেট শাখা বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপ করা সম্ভব হয়নি।
ব্যাংকটির সিলেট শাখার ক্যাশ ইনচার্জ বিদ্যুৎ কুমার দে বলেন, এটা ভুল হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীরা না বুঝে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে। নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে পতাকা অবমাননার খবর পেয়ে বিকেলে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাহ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি পতাকা উত্তোলকারী নিরাপত্তকর্মী ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান জানান, ঘটনাটি জানার পর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপকসহ ওই নিরাপত্তাকর্মীকে তলব করা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে এক নম্বর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে এক নম্বর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গরীবের বন্ধু, আর দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে এক নম্বর। দেশের যেকোন দুর্যোগে শেখ হাসিনার সরকার সবসময় জনগণের পাশেই রয়েছে।’
শনিবার (১৩ আগস্ট) সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বিগত বন্যায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যাতে সহায়তা নিশ্চিত করা যায় সেজন্য তথ্য দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রতিনিধি। আপনারা যদি আমাকে তথ্য দেন, তাহলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তা প্রদান করা সহজ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আকস্মিক বন্যায় যখন সিলেট প্লাবিত হলো, তখন মানুষের অসহায়ত্বের কথা জানামাত্রই আমি ব্যবস্থা নিয়েছি এবং সরকার সবধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমরাও সাথে সাথেই সরকারি সহযোগিতা নিয়ে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
ড. মোমেন বলেন, তবে বন্যায় আমাদের রাস্তাঘাটসহ অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং এগুলোর উন্নয়নেও সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ড সিলেট সদরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৫০ পরিবারের প্রত্যেক পরিবারকে ২ বান্ডিল করে ঢেউটিন ও ৬ হাজার টাকার চেক, সর্বমোট ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বেই বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে সরকার খুব চেষ্টা করছে জিনিসপত্রের দাম যেন সহনীয় মাত্রায় রাখা যায়। গরীব মানুষ যেন কষ্টে না থাকে সেজন্য এক কোটি পরিবারকে সরকারের পক্ষ হতে সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আগামীতে সিলেটে বন্যার প্রকোপ কমানোর লক্ষ্যে এবং সিলেটে নদী ভাঙন ঠেকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী নভেম্বরেই এ কাজ শুরু হবে। শেখ হাসিনার সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনগণের কল্যাণের জন্যই কাজ করে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ এবং সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা বক্তব্য দেন।
পড়ুন: উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে
বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর