সুন্দরবন
ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছেন।
পুতুল তার ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বনভিাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক থেকে দুপুর ১টার দিকে করমজল ত্যাগ করেন তিনি। লঞ্চযোগে তিনি সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। তিনদিন ধরে তিনি বনের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে আলোচিত পুতুল হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আসার আগাম কোনো খবর আমাদের কাছে ছিল না। এখানে আসার পর তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকন্যা করমজলে একঘণ্টা অবস্থান করে দুপুর ১টায় চলে যান।
সুন্দরবনে অবস্থানকালে সায়মা ওয়াজেদ করমজলের বিভিন্ন স্পট এবং সেখানকার বন্যপ্রাণী ঘুরে দেখেন বলে ওসি।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম জানান, বুধবার বেলা পোনে ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিলাসবহুল পাগমার্কের লঞ্চ এমএল বাওয়ালি যোগে মোংলা থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। বনের কটকা, করমজল ও কচিখালীসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা তিনি ঘুরে দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে মেয়েসহ ছয় জন ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে জয়-পুতুলের সঙ্গে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাইরাল
সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে ভ্রমণের ভরা মৌসুম চলছে এখন। কিন্তু কাঙ্খিত পর্যটকের দেখা মিলছে না। করোনা মহামারি শুরুর আগের বছর গুলোতে এই সময় প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখোরিত ছিল সুন্দরবন।
পর্যটনের ভরা মৌসুমে পূর্ব সুন্দরবনে এবার পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে। পর্যটকদের জন্য বন বিভাগের অতিরিক্ত হারে ভ্রমণকর নির্ধারণ ও জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকরা সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়েছে। কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না পাওয়ায় পর্যটনের সঙ্গে জড়িত বিপুল সংখ্যক মানুষ বেকার সময় পার করছেন বলে ট্যুর অপারেটররা জানিয়েছেন।
সেই হিসেবে এবছর সুন্দরবনে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এমনকি বহুল পরিচিত স্পটগুলোতেও পর্যটকদের তেমন দেখা মিলছে না। পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবর্তে কমে যাওয়ায় সুন্দরবন ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে জড়িতরা হতাশায় ভুগছে। পর্যটকের সংখ্যা কেন হৃাস পেয়েছে তার সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছে না।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষনীয় স্থান। সুন্দরবনে ভ্রমণে আসা অধিকাংশ পর্যটক করমজলে আসেন। করোনার আগের বছর গুলোতে এই সময়ে প্রতিদিন করমজলে কয়েকশত পর্যটকের দেখা মিলেছে। সেই করমজলে মাত্র ২০ জন পর্যটককে ঘুরতে দেখা গেছে। অনেকটাই ফাঁকা ছিল করমজল।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
সুন্দরবন থেকে অপহৃত ১১ জেলে উদ্ধার
সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার ১১ জেলেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া জেলেদের মধ্যে শরণখোলা থানা পুলিশ তিনজনকে এবং মোংলা থানা পুলিশ বাকিদের উদ্ধার করেছে।
তবে অপহরণের সঙ্গে জড়িত কোনো দস্যুকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারডুবি: ১৭ জেলে উদ্ধার
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর বিকালে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের বেড়ির খাল ও হরমল খালে জেলেবহর থেকে ১১ জনকে অপহরণ করে দস্যুরা।
পরে একেকজন জেলের মুক্তির জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করে তারা।
শরণখোলা থানা পুলিশের অভিযানে উদ্ধার করা জেলেরা হলেন-হানিফ হাওলাদার (৪৮), সোহেল মল্লিক (২৮) এবং আসাদুল শেখ (৩২)।
মোংলা থানা পুলিশের উদ্ধার করা জেলেরা হলেন-মো. আকরাম হোসেন (৪২), আনিচ শেখ (২২), মো. মিলন শেখ (২৩), মো. রফিকুল ইসলাম খান (৩৫), শুকুর আলী বেপারি (৩০), মো. মনির বেপারী (৩৬), মো. অলি শিকদার (৪৮) ও মো. বকতিয়ার বেপারী (৩৫)।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম জানান, অপহৃত জেলেদের উদ্ধার এবং দস্যুদের ধরতে মঙ্গলবার সকালে শরণখোলা ও মোংলা থানা পুলিশ যৌথ ভাবে সুন্দরবনে বিশেষ অভিযান শুরু করে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হকের নেতৃত্বে ওই বিশেষ অভিযান সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় চলতে থাকে। পুলিশি অভিযান চলাকালে দস্যুদের কবল থেকে ১১ জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর থানায় রেখে জেলেদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম আরও জানান, সুন্দরবনে কয়েক দফায় দস্যুদের হাতে মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ১১ জেলের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। দস্যুদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।
তবে কোন জেলে দস্যুদেরকে অর্থ দিয়েছে কি না সে বিষয়ে পুলিশের কিছু জানা নেই।
এদিকে জেলেদের সুত্র জানায়, দস্যুরা সুন্দরবনে জেলেদের অপহরণ করার পর তাদের স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে টাকা দাবি করে। স্বজনদের প্রাণ বাঁচাতে তাদের মধ্যে কেউ কেউ দস্যুদেরকে মুক্তিপণ হিসেবে টাকা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগর থেকে ৪৪ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে ভোলার ৬ ট্রলারডুবি: নিখোঁজ ৫৯ জেলে উদ্ধার
অর্থসংকটে সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত মৌয়ালদের পরিবার
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যতিন্দ্রনগর গ্রামের হালিমা খাতুন।
২০০৬ সালে বন বিভাগ থেকে পাশ দিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য যান তার স্বামী গোলাম গাজী। দু’দিন পরে খবর আসে গোলাপ গাজী বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। এর কয়েকদিন পরে তার ছিন্ন-বিছিন্ন লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে তার সঙ্গে যাওয়া অন্য মৌয়ালরা।
সেই থেকে হালিমা খাতুন তার ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে বাস করছেন। বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তার ছেলে।
স্বামীকে হারিয়ে ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন হালিমা খাতুন।
সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের হাতে প্রাণ হারানো অপর ব্যক্তি শ্যামনগরের গাবুরা গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন।
মোশাররফের মা খালেদা বেগম ইউএনবিকে জানান, ২০১২ সালে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হন মোশাররফ।
একই উপজেলার হরিনগর গ্রামের সুন্নত আলী শেখের স্ত্রী কোহিনূর বেগম জানান, ২০১৪ সালে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি তার স্বামী সুন্নত আলী শেখ।
তিনি জানান, পরে শুধু তিনি শুনেছেন, তার স্বামীকে বাঘে খেয়েছে। আর কোনো সন্ধান তিনি পাননি তার প্রিয় স্বামীর।
অন্যদিকে নিহত মৌয়াল শ্যামনগরের কাউসার গাইনের ভায়রা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি বছরের ২০মে বাঘের আক্রমণে মারা যান কাউসার।
একইভাবে ২০২১ সালে প্রাণ হারান হাবিবুর মোল্লা ও জিয়াউল ইসলাম নামের দুজন মৌয়াল।
গত এক দশকে ছয়জন মৌয়াল সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। এরা সকলেই সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বাসিন্দা।
নিহতদের কোন পরিবার আর চায়না তাদের পরিবারের কেউ আর সুন্দরবনের সঙ্গে জড়িত থাকুক।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী
সুন্দরবন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন। দেশের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা নিয়ে বিস্তৃত এ বন। সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার, আর ভারতের পশ্চিম বাংলায় রয়েছে প্রায় ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য সুন্দরবন বিখ্যাত। এ ছাড়া হরিণ, বানর, কুমির সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও রয়েছে এ বনে।
সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার মাছ। আর রয়েছে মধু, এ বনের মধু পৃথিবী বিখ্যাত।
পর্যটকদের জন্য বরাবরই সুন্দরবন একটি আকর্ষণীয় জায়গা। আর পদ্মাসেতু হওয়ার পর পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুধু পর্যটন নয়, এই বনকে ঘিরে কয়েক লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। কেউ বনজীবী, জেলে বা মংস্য সংগ্রহকারী আবার কেউ মৌয়াল বা মধু সংগ্রহকারী।
এই সুন্দরবনকে ঘিরে অনেকে যেমন জীবিকা নির্বাহ করে তেমনি অনেকে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের শিকার হয়েছেন বা আক্রমণে মারা গেছেন। এদের অধিকাংশই ছিল মৌয়াল।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো খুলনায় মৌয়াল, চাষি, বণিক, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোটের উদ্যোগে বাঘের আক্রমণে নিহত মৌয়ালদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এসময় মেয়র বলেন, মৌয়াল, চাষি, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোট বাঘের আক্রমণে নিহতদের পরিবারকে অর্থিক সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, মৌয়াল, চাষি, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোটের এই সহযোগিতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. মো. মোহসীন হোসেন বলেন, মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে যারা নিহত হন, বন বিভাগ তাদের বিষয়ে সচেতন।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগ সবসময়ই তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনে বাঘের হামলায় নিহত জেলের মরদেহ উদ্ধার
শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
শীতকাল মানেই ভ্রমণের মৌসুম। যে সময়ে নেই ভয়াবহ গরমে ক্লান্ত হবার ভয়, নেই বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত সড়কের ঝামেলা। ক্রমাগত উষ্ণ হতে থাকা বাংলাদেশ, শীতকালে তার চিরাচরিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ফিরে পায়। সেই সৌন্দর্যের মোহে আবিষ্ট হয়ে দীর্ঘ শিশির ভেজাপথ হেটে গেলেও ভর করবে না কোনো ক্লান্তি। তাই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির সময়টিতে দেশ জুড়ে পড়ে যায় বনভোজনের ধুম। চলুন, শীতকালে নিরাপদে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি জনপ্রিয় স্থান সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
এই শীতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের ১০টি জনপ্রিয় স্থান
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কথা যখন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ নিয়ে, তখন সেখানে কোনো সময়ের বাধাই মানা যায় না। তাই বছরের পুরোটা সময়ই দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ থাকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অখণ্ড সৈকতে শুধু উত্তাল ঢেউয়ের দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দেয়া যায় সারাটা দিন।
ঢাকা থেকে স্থলপথে বাসযোগে ও আকাশপথে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়। ট্রেনে যেতে হলে আগে চট্রগ্রাম পর্যন্ত যেয়ে সেখান থেকে বাসে করে কক্সবাজার যেতে হবে। চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ অথবা দামপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কক্সবাজার যাওয়ার বাস পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন: সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, কক্সবাজার
বাংলাদেশের এই একমাত্র প্রবাল দ্বীপকে স্থানীয়া নারিকেল জিঞ্জিরা বলে ডাকে। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সর্ব দক্ষিণের মাত্র ১৭ বর্গ কিলোমিটারের এই ক্ষুদ্র দ্বীপটির অবস্থান কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে। একদিকে নিঃসীম নীল দিগন্তের কোণে ফেনিল সমুদ্রের মিশে যাওয়া, অন্যদিকে সারি সারি নারিকেল গাছ ঘেরা সাধারণ জীবন ভ্রমণ পিয়াসী মানুষকে অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে।
সেন্টমার্টিন যেতে হলে ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি টেকনাফ পৌঁছে সেখান থেকে জাহাজে চড়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক। জাহাজগুলো সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন চলাচল করে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে জাহাজগুলো। আর ফেরত আসে বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে।
কুয়াকাটা, পটুয়াখালী
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ দর্শনীয় স্থান কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতের অবস্থান পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার অন্তর্গত লতাচাপলি ইউনিয়নে। কক্সবাজারের মত অভিজাত না হলেও, এখানকার নিরিবিলি বেলাভূমি এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল কুয়াকাটাকে করেছে অনন্য।
আরো পড়ুন: পাহাড় ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা
ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার উপায় হচ্ছে নদী ও সড়ক পথ। পূর্বে সবাই ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে পটুয়াখালী বা বরিশাল হয়ে বাকি পথ বাসে কুয়াকাটা যেতো। তখন লঞ্চ ও বাস যোগে পুরো অর্ধেক দিন লেগে যেতো। তবে এখন পদ্মা সেতুর কারণে মাত্র ৫ ঘন্টায় বাসে করে সরাসরি পৌছনো যায় কুয়াকাটায়।
সুন্দরবন, খুলনা
বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বরগুনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী এবং ভারতের কিছু অংশ নিয়ে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বন। বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ইউনেস্কো স্বীকৃত এই বনাঞ্চলটি বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাণের আধার। এখানে জন্মান সুন্দরী বৃক্ষের কারণে সুন্দরবন নামেই বিশ্বখ্যাতি পেয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের এই প্রধান বিচরণক্ষেত্রটি।
এখানে ঘুরতে যেতে হলে অবশ্যই বন অধিদপ্তরে নির্ধারিত ফি দিয়ে অনুমতি ও সাথে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে নিতে হয়। এর সবগুলো দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ ও ছোট জাহাজ।
আরো পড়ুন: নারীর একাকী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ১০ শহর
সুন্দরবন সাধারণত সবাই খুলনা বা মোংলা হয়ে যেতো। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে এখন সড়কপথেই সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে পারছে দেশের হাজারো মানুষ।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মৌলভীবাজার
এক হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলটির অবস্থান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও আংশিক শ্রীমঙ্গল নিয়ে। দেশের ট্রপিকাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত এই জাতীয় উদ্যানটি জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর নান্দনিক সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন। ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ২৪০ প্রজাতির পাখির আশ্রয়স্থল এই লাউয়াছড়া। বিশেষ করে বিলুপ্ত প্রায় উল্লুকের সবচেয়ে বড় বিচরণ এলাকা হিসেবে এর সুখ্যাতি রয়েছে।
বনের ভেতরে আছে তিনটি ট্রেইল; যেগুলো ট্রেকিং করার সময় খুব কাছ থেকে দেখা যায় বনের সৌন্দর্যকে।
আরো পড়ুন: কাতার ভ্রমণ: বিভিন্ন শহরের শীর্ষস্থানীয় ১০ দর্শনীয় স্থান
ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে করে শ্রীমঙ্গল পৌছে লাউয়াছড়া ভ্রমণ করা যায়।
কুতুবদিয়া দ্বীপ, কক্সবাজার
বাংলাদেশে বাতিঘর দেখতে হলে চলে যেতে হবে কক্সবাজার জেলার ছোট উপজেলা কুতুবদিয়ার এই দ্বীপটিতে। এখানকার প্রাচীন বাতিঘরের ধ্বংসাবশেষটি এখনো যেন ভাটার সময় পুরানো ইতিহাসের গল্প বলে। ২১৬ বর্গ কিলোমিটারের ছোট এই দ্বীপে আছে নির্জন সমুদ্র সৈকত এবং কুতুব আউলিয়ার মাজার।
বাংলাদেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও প্রাকৃতিক ভাবে লবণ চাষের জন্য এ জায়গাটি বেশ প্রসিদ্ধ। এই দ্বীপ ভ্রমণের জন্য কক্সবাজার থেকে প্রথমে চকরিয়া বাস স্ট্যান্ড আসতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি করে মগনামা ঘাট পৌছে ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে নেমে পড়তে হবে কুতুবদিয়া চ্যানেলে। আর এই কুতুবদিয়া চ্যানেলই পৌছে দিবে কুতুবদিয়া দ্বীপে।
আরো পড়ুন: সমুদ্রে স্নানের সময় সতর্ক থাকতে করণীয়
মনপুরা দ্বীপ, ভোলা
ভোলা জেলার এই বিচ্ছিন্ন ভূমিটি সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত এবং হরিণ দেখার জন্য পর্যটকদের প্রিয় স্থান। মেঘনা নদীর ভেতরে ৫০০ মিটার পর্যন্ত স্থাপন করা মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশনে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের ভীড় থাকে। দ্বীপ ভ্রমণে এসে দর্শনার্থীরা চৌধুরী প্রজেক্টের মাছের ঘের আর সারি সারি নারিকেল গাছের বিস্তৃত এলাকাতেও ঘুরতে আসেন। নদীর ধারে সাইক্লিং কিংবা সবুজের মাঝে ক্যাম্পিং-এর জন্য সেরা জায়গা মনপুরা দ্বীপ।
মনপুরা দ্বীপে যাওয়ার জন্য ঢাকার সদরঘাট থেকে বিকেল ৫টায় লঞ্চে উঠে পড়তে হবে। এছাড়া ঢাকা থেকে থেকে সড়ক পথে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে এসে সি-ট্রাকে করেও মনপুরা দ্বীপে আসা যায়। সি-ট্রাক ছাড়ার সময় বিকাল ৩টা।
নিঝুম দ্বীপ, নোয়াখালী
নোয়াখালীর হাতিয়া অঞ্চলে বঙ্গপসাগর ঘেরা ছোট্ট এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ১৪,০৫০ একর। শীতের মৌসুমে পুরা নিঝুম দ্বীপ ভরে যায় অতিথি পাখিতে। এখানকার সবচেয়ে সেরা আকর্ষণ হচ্ছে চিত্রা হরিণ। একসাথে এত চিত্রা হরিণের দেখা দেশের আর কোথাও পাওয়া যায় না। নিঝুম দ্বীপের নামা বাজার সৈকত থেকে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে ৩০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার ১৪ পাহাড়
সড়ক পথে যে যানবাহনই ব্যবহার করা হোক না কেন, নিঝুম দ্বীপ যেতে হলে প্রথমে পৌছতে হবে চেয়ারম্যান ঘাটে। এখানকার হাতিয়া যাওয়ার সি-ট্রাক বা ট্রলারগুলো নলচিরা ঘাটে নামিয়ে দেবে। এবার মোটর সাইকেল দিয়ে পৌছতে হবে হাতিয়ার অন্য প্রান্ত মোক্তারিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ট্রলারে চড়ে নিঝুম দ্বীপ।
তবে সবচেয়ে সেরা উপায় হচ্ছে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার লঞ্চে উঠে পড়া। হাতিয়ায় পৌছার পর তমুরদ্দী ঘাট থেকে পাওয়া যাবে সরাসরি নিঝুম দ্বীপের ট্রলার।
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য, হবিগঞ্জ
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা অবস্থিত সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়। প্রায় এক হাজার ৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এই বনভূমিকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় ১৯৮২ সালে। এটি প্রায় ৬৩৮ প্রজাতির উদ্ভিদ, প্রায় ৬২ প্রজাতির প্রাণী এবং প্রায় ১৬৭ প্রজাতির পাখির আবাস।
আরো পড়ুন: ভারতের টুরিস্ট ভিসা কীভাবে পাবেন: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রসেসিং ফি
এই অভয়ারণ্যে আছে অপরূপ সুন্দর তিনটি ট্রেইল, গোটা বনকে এক নজরে দেখার জন্য আছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।
ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌছে টমটমে চড়ে যেতে হবে নতুন ব্রীজ। সেখান থেকে সিএনজিতে চুনারুঘাট মধ্যবাজার পৌছে আরেকটি সিএনজিতে করে কালেঙ্গা বাজার নামতে হবে। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটলেই অভয়ারণ্যের প্রধান ফটক।
মালনীছড়া চা-বাগান, সিলেট
উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা-বাগান এই মালনীছড়া চা-বাগান। এক হাজার ৮৪৯ সালে লর্ড হার্ডসনের তত্ত্বাবধানে এক হাজার ৫০০ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় এই চা-বাগান। বর্তমানে বেসরকারী তত্ত্বাবধানে থাকলেও চা-বাগানপ্রিয় ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ পছন্দের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে। কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ানো যায় বাগানে।
আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম ভ্রমণ গাইড: ঘুরে আসুন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্দর নগরী
বাস, ট্রেন অথবা বিমান; এই তিন রুটের যে কোনটি ব্যবহার করে ঢাকা থেকে প্রথমে আসতে হবে সিলেটে। অতঃপর শহরের যেকোন জায়গা থেকে রিক্সা কিংবা সিএনজি যোগে সহজেই পৌছা যাবে মালনীছড়া চা-বাগানে।
শেষাংশ
শীতকালে বাংলাদেশ ভ্রমণের জনপ্রিয় এই ১০টি স্থান হিম শীতল প্রকৃতিকে দারুণ ভাবে উপভোগ্য করে তোলে বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে। তবে এই আনন্দটা ফিকে হয়ে যেতে পারে যদি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা না হয়। এ সময় যাত্রা শুরুর সময় অবশ্যই সাথে গরম কাপড় নিয়ে নেয়া আবশ্যক। নিয়মিত ওষুধপত্রের সাথে ডেটল, স্যাভলন, ব্যান্ডেজ, তুলার মত কিছু ফার্স্ট এইড সামগ্রি সঙ্গে রাখা উচিত। একটি সুপরিকল্পিত পূর্বপ্রস্তুতিই পারে একটি ভ্রমণকে নিরাপদ নির্ঝঞ্ঝাট করে তুলতে।
সুন্দরবনে জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে বহুমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সরকার সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বহুমূখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। প্রাকৃতিক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় মানুষের জানমাল রক্ষায় সরকার উপকূলজুড়ে ব্যাপক বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি করছে। উপকূলীয় এলাকায় এ যাবত দুই হাজার ২৭৭ বর্গকিলোমিটার চর বনায়ন করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব মিলনায়তনে সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবন সুরক্ষায় এর ৫২ শতাংশ এলাকাকে রক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ও সেখান থেকে সকল ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুন্দরবনের বাঘ, হরিণ, ডলফিন, কুমিরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষায় অভয়ারণ্য ঘোষণাসহ বিবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্প বা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বনজীবী, বনকর্মী ও বন্যপ্রাণীর খাবারের পানির জন্য চারটি নতুন পুকুর ও ৮৪টি পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে।’
বনমন্ত্রী বলেন, সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করলেই কেবল আমরা সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম হবো।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা-দুই আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। সংলাপে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, দাতা সংস্থা, গবেষক, সুশীল সমাজ, সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: বায়ুমান উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে বন সংরক্ষণে সফল হবে বাংলাদেশ: পরিবেশমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: সুন্দরবনে জেলে বাওয়ালীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে
ধেয়ে আসছে সাতক্ষীরা উপকূলের দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। কয়েক ঘন্টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাতক্ষীরায় বিরাজ করছে গুমোট আবহাওয়া।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। আকাশে প্রচন্ড মেঘ। দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বৃষ্টির মাত্রা বাড়ছে। সাতক্ষীরা উপকূলের নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুই ফুট জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন লোকালয়ে পানি প্রবেশের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: লক্ষ্মীপুরে ১৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬৬ মেডিকেল টিম প্রস্তুত
ইতোমধ্যে সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালীদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জেলায় ৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি পয়েন্টে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন এড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ২০ হাজার জিও ব্যাগ মজুদ রাখা হয়েছে।
এছাড়া জেলার আশাশুনি উপজেলায় ১০৮টি, শ্যামনগর উপজেলায় ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দূর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ, সুপেয় পানিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
সুন্দরবন ঘেষা দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম বলেন, নদী সাঙ্গাতিক উত্তল। নদীর পানি বেড়েছে প্রায় দুই ফুট। একাধিক স্থান যে কোন সময় ধ্বসে পড়বে। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বইছে। কখনও ভারী আবার কখনও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
মানুষের মধ্যে আতংক রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে। সন্ধ্যার আগেই মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়েছে।
আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, আম্পানের ক্ষতি এখনও মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে সিত্রাং এর খবর শুনে মানুষ আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধের অবস্থা আগে থেকেই নাজুক। এছাড়া জলোচ্ছ্বাস হলে এলাকায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বাগেরহাটে ৩৪৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
বরিশালে বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব
সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হতে যাচ্ছে
নানা জটিলতার শেষে এবং অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হতে যাচ্ছে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত অর্থ ছাড়ের চেষ্টা চলছে। অর্থ ছাড় হলে প্রথমেই সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের একটি অংশে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা দিয়ে বাঘ গণনা করা হবে। চলতি অক্টোবর মাস থেকে এই কাজ শুরুর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন: খুলনা মাতিয়েছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মহসিন বলেন, গত সপ্তাহে পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৩ কোটি টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে। এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করলেই অর্থ পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রথমেই বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে। মন্ত্রণালয়ের কাজে কতো সময় লাগবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এজন্য কোন মাস থেকে বাঘ গণনা শুরু হবে-সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী বছরের শুরু থেকেই শুমারির কাজ শুরু করা যাবে, সবই নির্ভর করছে অর্থছাড়ের ওপর।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, বর্তমানে বাঘ সারা বিশ্বে একটি বিপন্ন প্রাণী। বিশ্বের ১৩টি দেশে তিন হাজার ৮৪০টি বাঘ টিকে আছে।
২০১৮ সালের জরিপ মতে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০০৯-২০১৭), ২০১০ সালের বিশ্ব বাঘ সম্মেলনের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৬-২০২৭) ও গ্লোবাল টাইগার ফোরামের সিদ্ধান্তের আলোকে দেশে বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ এবং সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও এর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের অন্য কাজের মধ্যে রয়েছে-বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সে জন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায় সেজন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা হবে। সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণসহ বনে আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায় সেজন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
‘সুন্দরবনকে র্যাবের দস্যুমুক্ত করাই মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা’
সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাতায়াত সহজ হওয়ায় সুন্দরবন ও ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান ভিড় নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনে আরও চারটি ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার খুলতে যাচ্ছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: মৌসুমের শেষ পর্যায়ে বৃষ্টি: বাগেরহাটে আমন চাষে আশার আলো
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সুন্দরবনে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। ভিড় সামলাতে নতুন করে আলীবান্দা, আন্দারমানিক, শেখেরটেক এবং কালাবগিতে আরও চারটি ইকোট্যুরিজম সেন্টার চালু করা হচ্ছে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সুন্দরবনের করমজল, হারবারিয়া, কলাগাছিয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলা এবং হিরোনপয়েন্ট এলাকায় সাতটি ইকোট্যুরিজম সেন্টার রয়েছে।
নিম্নচাপে প্লাবিত সুন্দরবন, বন্যপ্রাণী নিয়ে শঙ্কায় বনবিভাগ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপের পরিণত হওয়ায় মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে,টানা বৃষ্টি আর বৈরি আবহাওয়ার কারণে পশুর চ্যানেল ও বনের নদ-নদীতে ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত তিন দিন যাবত প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবনের সরকারি বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটক স্পট এবং গোটা সুন্দরবন। করমজলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সুন্দরবনে ভ্রমনে আসা দর্শনার্থীদের।
বন বিভাগ বলছে, রক্ষিত সকল প্রাণীই নিরাপদে রয়েছে, তবে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে কেন্দ্রে রাখা প্রাণীসহ বনের গহিনের বন্যপ্রাণীর ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
জানা যায়, পানি বৃদ্ধির কারণে বন্দরের বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে নদী ও খাল পাড়ি দিয়ে চলাচল করছে কর্মজীবী সাধারণ মানুষ।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে।
জানা গেছে,বনের করমজলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষনের জন্য ১২টি আধা পাকা সেড রয়েছে। যার মধ্যে বাচ্চাসহ ৩৬ টি হরিণ, ৯১ টি ছোট বড় কুমির ও বিলুপ্ত প্রজাতির ৪৩৬টি বাটাগুর বাস্কা কচ্ছপ রযেছে। এছাড়াও এর আশপাশে উম্মুক্তভাবে রয়েছে হরিণ, বানর, গুইসাপ ও আজগর সাপ, তক্ষকসহ নাম না জানা বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও হরেক রকমের পাখি রয়েছে। এদিকে নদীতে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে আর জোয়ারের পানিতে বন্যপ্রাণী সম্ভাব্য চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বন বিভাগ।
বনবিভাগ বলছে, গত শনিবার থেকে এবারের পূর্ণিমার গ্রহণের কারণে সুন্দরবনে এবার বেশি পানি হয়েছে। গত তিন দিন প্রায় চার ফুট পানিতে তলিয়েছে বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ পুরো বন। এতে যে সকল বন্যপ্রাণী গাছে উঠে বসবাস করতে পারেনা এবং মাটিতে ডিম পাড়ে সে সকল বন্যপ্রাণী বা তাদের বাচ্চাগুলো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে জানান তারা।
তারা আরও বলেন, বনে পানি ঢুকে যাওয়ায় উম্মুক্ত ভাবে থাকা বিভিন্ন বন্যপ্রাণীকে বনের মধ্যে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। করমজলেও এসে আশ্রয় নিয়েছে বনের হরিণ, বানর, শুকরসহ অন্যান্য প্রাণী। তবে এখন পর্যন্ত বনের কোথাও তেমন কোন প্রাণীর মৃত্যু বা ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সুন্দরবনে পর্যটক আসতে পারছেনা। ফলে গত তিন দিনে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা-কচিখালী, দুবলা, নিলকমলসহ অন্যান্য পর্যটক স্পটগুলো।
তবে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীদের আসার আগ্রহ রয়েছে বলে জানায় কমরজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার হওলাদার আজাদ কবির।
অপরদিকে, বন্দরে অবস্থানরত বিভিন্ন পণ্য বোঝাই দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। জাহাজের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চললেও সার ও খাদ্যবাহী জাহাজের পণ্য খালাস-বোঝাই কাজ বৃষ্টির সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
বন্দরকেন্দ্রিক চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান ও সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। মোংলা বন্দরের ও পশুর নদীর দুই পাড়ে কয়েকশ’ পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ ও ট্যুরিস্ট বোর্ডও নিরাপদে ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া বন্দর সংলগ্ন আশপাশের বিভিন্ন খালেও নৌযানগুলো নিরাপদে নোঙ্গর করে রয়েছে।