সাভার
সাভারে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
সাভারে অজ্ঞাত এক যুবকের (২৫) ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের মোগড়াকান্দার একটি নির্জন স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সকালে মোগড়াকান্দার নির্জন স্থানে ওই অজ্ঞাত যুবকের লাশ দেখে স্থানীয়রা সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশের ধারণা, অজ্ঞাত ওই যুবককে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য নির্জন স্থানে ফেলে গেছে। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভাকুর্তা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শাহ্ আলম বলেন, অজ্ঞাত ওই যুবকের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় নৌকা থেকে দম্পতির লাশ উদ্ধার
পাবনায় পদ্মা নদী থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা
সাভারের আশুলিয়ায় পূর্বশত্রুতার জেরে পিটুনিতে আহত পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত রাকিবুল ইসলাম উজ্জল (২৪) বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি থানার চন্দনবাইশা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে নতুন ইপিজেডে প্যাক্সার বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন তিনি।
এর আগে, রবিবার রাতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আশুলিয়ার ভাদাইলের মধ্যপাড়া এলাকায় রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রাকিবকে।
নিহতের স্বজনরা জানান, অনেক দিন আগে উজ্জলের বন্ধু গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে মেয়েঘটিত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। একই কারণে উজ্জলের সঙ্গে জুয়েল নামে আরেকজনের মারামারিও হয়। এ ঘটনার জেরে গতকাল (রবিবার) রাতে জুয়েল ফোন দিয়ে বাসার পাশে উজ্জলকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে গেলে জুয়েলসহ আগে উপস্থিত থাকা পাঁচ-সাতজন উজ্জলকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে আহত অবস্থায় উজ্জলকে উদ্ধার করে প্রথমে নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় এনাম মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন ডাক্তাররা। সেখানে সোমবার সকালে উজ্জল মারা যায়।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: জিতু ৫ দিনের রিমান্ডে
সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: প্রধান আসামির বাবা গ্রেপ্তার
কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: জিতু ৫ দিনের রিমান্ডে
সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতুর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) তাকে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে পাঠানো হয়।
এসময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক।
শুনানি শেষে ঢাকা সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে আশরাফুল আহসান জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে জিতুর বাবা উজ্জ্বলকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বুধবার (২৯ জুন) ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালত জিতুর বাবা উজ্জ্বলের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৫ জুন স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে স্ট্যাম্প শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতু। পরে আহতাবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৭ জুন) ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমারের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
পড়ুন: সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: প্রধান আসামির বাবা গ্রেপ্তার
কলেজ শিক্ষক হত্যার প্রধান আসামি গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার
সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: প্রধান আসামির বাবা গ্রেপ্তার
সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনূস আলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার চার দিন পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা উজ্জল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদ হোসেন মামলার অন্যতম আসামি উজ্জল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে।
তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
এর আগে ছাত্রের ক্রিকেট স্টাম্পের আঘাতে গুরুতর জখম হওয়া কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সোমবার ভোররাতে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান।
নিহত ৩৫ বছর বয়সী শিক্ষক উৎপল সরকার সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
পড়ুন: সাভারে ছাত্রদের ক্রিকেট স্টাম্পের আঘাতে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সাভারে নাটোরগামী বাসে ডাকাতি, আহত ৪০
সাভারে নাটোরগামী যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতদের মারধর ও ছুরিকাঘাতে ৪০ যাত্রী আহত হয়েছেন। এ সময় দুই ডাকাতকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভারের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন- ফিরোজ ও হৃদয়।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসা নাটোরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় পৌঁছলে সেখান থেকে নাটোরগামী আরও পাঁচ যাত্রী বাসে উঠেন। এসময় বাসে আরও ৪০ জন যাত্রী ছিল। পরে বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় পৌঁছলে বাইপাইল থেকে উঠা পাঁচ যাত্রীবেশি ডাকাত বাস চালক ও চালকের সহকারীসহ যাত্রীদের অতর্কিতভাবে ছুরিকাঘাতে ও মারধর করে আহত করে এবং সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুটপাট করে।
আরও পড়ুন: নাটোরে গণপিটুনিতে সন্দেহভাজন ডাকাত নিহত
পরে এক ডাকাত বাস চালিয়ে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মোড় ঘুড়িয়ে আবারও সাভারে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে বাসটি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে থামালে যাত্রী চিৎকারে মহাসড়কের পুলিশের টহল টিম সেখানে গেলে ডাকাত দলের তিন জন মালামাল নিয়ে পালিয়ে গেলেও দুই ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হন। পরে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত তিন জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খামারের আড়ালে ডাকাতি: ৪১টি গরু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান বলেন, পালিয়ে যাওয়া অপর ডাকাতদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের হয়েছে।
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে রিকশা ভ্যানচালকদের সংঘর্ষ, আহত ১২
সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশ ও অটো রিকশা-ভ্যান চালকদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে শহরের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার ‘আমার স্কুলের’ সামনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মহাসড়কে অটোরিকশা ও ভ্যানচালকেরা গত শনিবার থেকে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় রিকশা-ভ্যান চালকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দুপুরের দিকে ‘আমার স্কুলের’ কাছে মহাসড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালনকালে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় আশুলিয়া থানা পুলিশ এসে অবরোধে বাধা দিলে অটোরিকশা ও ভ্যান চালকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের প্রতিহত করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অটোরিকশা চালক মোতালেব, রিপন, সুবাস, দ্বীন ইসলাম ও সিরাজুলের নাম জানা গেছে। তাদেরকে স্থানীয় একাধিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
তাৎক্ষণিকভাবে অন্য আহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার এক পর্যায়ে থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। মহাসড়কে অটোরিকশা ও ভ্যান চালকদের জরিমানার নামে থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি এবং হয়রানির অভিযোগ তুলে তা বন্ধে ওই এলাকার দুই শতাধিক শ্রমিক তিনদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। সোমবার ছিল কর্মসূচির শেষ দিন।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, মহাসড়ক অবরোধের ব্যাপারে আশুলিয়া থানা পুলিশসহ আমাদের টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও হয়রানির বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, পুলিশ আহতের ঘটনায় এক মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষে আহত ৩৫
ভোলা-বরিশাল সীমান্তে চর দখল নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০
সাভারে ছাত্রদের ক্রিকেট স্টাম্পের আঘাতে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সাভারে কিছু ছাত্রের ক্রিকেট স্টাম্পের আঘাতে গুরুতর জখম হওয়া কলেজ শিক্ষক সোমবার ভোররাতে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা গেছেন।
নিহত উৎপল কুমার সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা।
এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন জানান, সোমবার সকাল ৬টার দিকে উৎপল কুমার চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি আরও জানান, উৎপল আশুলিয়ার জামগোড়ার কাঁঠালতলা এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু
পুলিশ জানায়, প্রতি বছরের মতো শনিবার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়। দুপুর ২টার দিকে, পূর্ব শত্রুতার জেরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন উৎপলকে হঠাৎ করে কিছু ছাত্র ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।
পরে উৎপলকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পলাতক আছে।
আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ভ্যান-মোটর সাইকেল সংঘর্ষে শিক্ষকের মৃত্যু
পূজাও নেই, জন্মদিনের আয়োজনও নেই
নজমুল হুদা শাহীন
আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে বড় বিজ্ঞানী হতো। আমার মেয়ের মতো আর কারও যেন এমন মর্মান্তিক মৃত্যু না হয়। সম্ভামনাময়ী মেধার যেন অকালে ঝরে যেতে না হয়। ছয় বছর বয়সে সে তার মাকে হারিয়েছে। তখন ওর মায়ের বয়স ছিল ২৯ বছর। প্রায় একই বয়সে মেয়েও মারা গেলো। ১১ জুন তার জন্মদিন। উদযাপনের জন্য আয়োজন শুরু করা হয়েছিল। তা আর করা হলো না।
এই কথাগুলো বলছিলেন এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকারের বাবা অতুল সরকার।
ইউএনবিকে মুঠোফোনে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পূজা ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
তিনি বলেন, এ কারণে অনেক আশা ছিল আমাদের পুরো পরিবারের। সে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাবে। ওই সময় আমাদের কাছে বেড়াতে আসবে। অফিসে ব্যস্ততা, তাই জামাই ষষ্টির দাওয়াতে আসতে পারেনি তারা।
রুটিন মতো গত ৫ জুন অফিসের বাসে করে পূজা সরকার অন্যদের সঙ্গে ঢাকার হাটখোলা রোডের বাসা থেকে সাভারে কর্মস্থল আনবিক শক্তি কমিশনে যাচ্ছিলেন। বাসটি বলিয়ারপুর এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা সেইফ লাইন পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজন অতিক্রম করে আনবিক শক্তি কমিশনের বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পূজা সরকার, আরও দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী- এই চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাস চালক রাজীব ওইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের বহনকারী বাসটিকে ধাক্কা দেয়া সেইফ লাইন পরিবহনের চালক মারুফ হোসেন মুন্না মারা যান দুইদিন পর ৭ জুন। এছাড়া ৮ জুন রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাদের প্রতিষ্ঠানের আরেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম। ফারহানা ও পূজা সরকার দুইজন সহপাঠি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন।
অতুল সরকার জানান, স্ত্রী আলপনা সরকার দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর মেয়ে পূজাকে মায়ের স্নেহ দিয়ে বড় করেন। তিনি বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়ত। ভাল রেজাল্ট করেছিল। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্সে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে কৃতিত্ব অর্জন করে পূজা। ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আটমাস শিক্ষকতা করে সে। এরই মধ্যে আনবিক শক্তি কমিশনে চাকরি হয় তার।
জনতা ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে থাকা (পিআরএল) অতুল সরকার বলেন, আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে বড় বিজ্ঞানী হতো। তার অনেক আশা ছিল।
তিনি আরও বলেন, যে যন্ত্র দানব আমার মেয়েকে হত্যা করলো তার কোন ফিটনেস ছিল না। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বাসটির রুট পারমিট ছিল না। চালক কিভাবে এ গাড়িটি নিয়ে সড়কে বের হলো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশে কি আইন কানুন নেই। সড়কে আর কত প্রাণ ঝরলে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে ?
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দেশে কোন প্রতিবাদ হলো না। কেউ তেমন কথা বললেন না। যা মিডিয়াতেই এসেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে। কারও সন্তানের যেন এমন মৃত্যু আর না হয়।
আরও পড়ুন: গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
সাভারে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের ৩ কর্মকর্তা নিহত
সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের তিন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪০জন। এদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রবিবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের বলিয়ারপুর এলাকার শ্যামলী সিএনজি প্যাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা প্রকৌশলী কাওছার হোসেন রাব্বি, পরীক্ষণ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পুজা সরকার।
পুলিশ জানায়, সকালে রাজধানী ঢাকা থেকে আশুলিয়ার গণকবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকৃত একটি বাস সাভারের গনকবাড়ি অফিসে যাচ্ছিল। এসময় বাসটি বলিয়ারপুর এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের রোড ডিভাইডারের ওপরে উঠিয়ে দিলে বাসটি দুমুড়ে মুচড়ে যায়। একই সময়ে সাভারের দিক থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগতির একটি গরু বোঝাই ট্রাক ওই বাসটির পিছনে ধাক্কা দেয়। এসময় সাভার থেকে ছেড়ে আসা অপর একটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী বাসও ওই বাস ও ট্রাককে ধাক্কা দেয়। এ দুর্ঘটনায় দুটি বাস ও ট্রাকের ৪০ আরোহী গুরুতর আহত হয়।
খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা প্রকৌশলী কাওছার হোসেন রাব্বি, পরীক্ষণ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পুজা সরকারকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত বাস চালক রাজীব ও হেলপার বাবুলসহ কয়েকজনকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা সেবা চলছে হাসপাতালে। এদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সবুর খান।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় ২ মোটরসাইকেলের আরোহী নিহত
দিনাজপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর আজ
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে সর্বকালের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ‘রানা প্লাজা’ ধসের নয় বছর পূর্তি রবিবার। এই দিনটি স্মরণে মানবাধিকার সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, বামপন্থী রাজনৈতিক দল এবং রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
রবিবার সকালে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নিহতের স্বরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও গার্মেন্টস এর মালিকদের ফাঁসির দাবি ও ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। পরে বিভিন্ন সংগঠন রানা প্লাজার সামনে নানান দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
অবৈধভাবে নির্মাণ করা রানা প্লাজা ভবনটি ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে। এই দুর্ঘনায় ভবনটিতে থাকা পাঁচটি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যায়। প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়।
রানা প্লাজা মামলায় অগ্রগতি সামান্যই
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি সাক্ষীদের জবানবন্দির মাধ্যমে।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এস এম কুদ্দুস জামান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং বিচার শুরুর আদেশ দেন।
আপিলের শুনানি শেষে ৩১ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন
মামলার প্রধান আসামি রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা বর্তমানে কারাগারে এবং বাকি ৪০ জন জামিনে রয়েছেন।