নির্বাচন
সব দল সম্পৃক্ত করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চান প্রধানমন্ত্রী, সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি। কিন্তু বিএনপি হিংসার রাজনীতি করতে অভ্যস্ত এবং তারা সেটাই করছে।’
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকালে নাটোর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, শিগগিরই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন,‘এ দেশের ভোটাররা রক্তপাত ও সহিংসতা পছন্দ করে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, সেটা তাদের ব্যাপার। বিএনপি রাস্তা অবরোধ করে সহিংসতা করছে, তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
পরে মন্ত্রী নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং নবনির্মিত নাটোর পাসপোর্ট কার্যালয় ভবন উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সংলাপে উৎসাহ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
তিনি বলেন, 'নির্বাচন আসছে এবং এটি জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার রক্ষা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই সরকারের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের (এএলসিডব্লিউসি) সভায় সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আওয়ামী লীগের অবদান বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ক্ষআওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার দল জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারে বিশ্বাস করে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ বারবার জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সরকার গঠন করেছে এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরব থেকে আজ রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, যখনই মানুষ শান্তিতে বসবাস করে, তখনই বিএনপি আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, 'এই অস্থিরতা ও অগ্নিসন্ত্রাস থেকে জনগণকে বাঁচাতে হবে, এটাই মূল কাজ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার জন্য স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, তারা অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যার মাধ্যমে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সব দিক থেকে ষড়যন্ত্র করছে। এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
আগামী দিনগুলোতে কেউ যেন দেশের অগ্রযাত্রা থামাতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মাটিতে অগ্নিসন্ত্রাসী, জঙ্গি ও দুর্নীতিবাজদের অতীতের মতো প্রতিহত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালে জনগণই অগ্নিসংযোগকারী, দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গিদের প্রতিহত করেছিল।
ষড়যন্ত্রকারী, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী, অস্ত্র চোরাকারবারি ও অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়নে বিশ্বাস করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এই বিশ্বাস নিয়েই বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা জঙ্গিবাদ, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র চোরাচালান, দুর্নীতিবাজ ও এতিমদের অর্থ আত্মসাৎকারীদের চায়, নাকি তারা আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চায়।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসরাইলিদের মতো বিএনপি-জামায়াতও সাধারণ মানুষ, হাসপাতাল ও পুলিশের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমেনি, বরং জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও নির্ভরতা অনেক বেশি।
বিভিন্ন জরিপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের উসকানির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এক্ষেত্রে উগ্র ডানপন্থী জামায়াত ও কমিউনিস্টসহ উগ্র বাম সংগঠনগুলো একযোগে কথা বলছে।
এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আন্দোলনের নামে ভাঙচুরের কারণে কোনো কারখানা ধ্বংস হলে উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হবে, শ্রমিকদের রুটি-রুজি ও ভরণপোষণ ব্যাহত হবে।
তিনি বলেন, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ন্যূনতম ১২ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করলেও স্বার্থান্বেষী মহল গার্মেন্টস শিল্পকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নকে শুধু মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল বা বড় ফ্লাইওভারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি।
তিনি বলেন, 'আমরা শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছি।’
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি: বিশ্লেষকরা
চলমান রাজনৈতিক ও শ্রমিক অসন্তোষ দেশের অর্থনীতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় জোট সরকারকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিতে দেশব্যাপী হরতাল ও অবরোধ পালন করছে।
অন্যদিকে, মজুরি বৃদ্ধির জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের অব্যাহত বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, হতাহত ও যানবাহনে; প্রধানত বাসে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ দেশের অর্থনীতিতেও আঘাত হেনেছে। কোভিড-১৯ বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি এখন বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, টাকার মান ৩০ শতাংশের বেশি কমে যাওয়া, দুই অংকের মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ও শ্রমের উচ্চমূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং এর সাবেক গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
আলোচনাসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আমন্ত্রিত অর্থনীতিবিদরা মার্কিন ডলার সংকট, স্থিতিশীল বিনিময় হার ও মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনতে নীতি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন।
আলোচনায় উপস্থিত বিশ্লেষকেরা অভিমত দিয়েছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে উচ্চ মজুরির জন্য শ্রমিক অসন্তোষও এই খাতের তৈরি পোশাক কারখানার মালিক ও নীতি নির্ধারকদের মাধ্যমে সমাধানযোগ্য।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আগামী নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমতের পরামর্শ দেওয়া ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে তাদের কিছু বলার নেই।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব অর্থনীতিকে বড় অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থার শান্তিপূর্ণ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতির ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিণতি হতে পারে।
মনসুর বলেছেন, ‘কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজনীতিবিদদের মনোভাবে নমনীয়তার কোনো লক্ষণ নেই। কয়েক দিনের জন্যও উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হলে, তা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মুদ্রাস্ফীতির চাপ, ডলারের সংকট ও কর্মসংস্থানের সুযোগের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান মনসুর বলেন, আমদানি-রপ্তানি, বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহ, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব সংগ্রহ এবং অন্যান্য সব খাত এই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তারা জানায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মূল উৎস রপ্তানি খাত। প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আসে পণ্য রপ্তানি থেকে।
তারা আরও জানায়, গত অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি ১৪ শতাংশ কমেছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৩ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালের অক্টোবর মাসে ৩ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের রপ্তানি আয় হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার কম।
আরও পড়ুন: আমদানি নিয়ন্ত্রণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, হরতাল-অবরোধে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। এতে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে অনেক জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা মনে করে যেভাবেই হোক রাজনৈতিক সমঝোতা হওয়া উচিত। সবাইকে দেশের অর্থনীতি ও স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান ইউএনবিকে বলেন, নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব ও সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
সময়মতো পণ্য হাতে না পাওয়ার অনিশ্চয়তার কারণে কিছু ক্রেতা ব্র্যান্ড রপ্তানির অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘ক্রেতারা উদ্বিগ্ন; তারা আমাদের পরিস্থিতি বুঝতে চায়। ঢাকায় ক্রেতা ফোরামের পক্ষ থেকে একটি বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, একদিনের হরতালে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
অবরোধের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতিও বিশাল। অবরোধ চলাকালে কিছু দোকানপাট খোলা থাকে, তবে ক্রেতা আসে গুটিকয়েক। বিক্রিতে দৈনিক পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত লোকসান হতে পারে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং অর্থনীতিকে বাঁচাতে সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সবাইকে দেশের স্বার্থ সব কিছুর ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।
কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন জানান, অবরোধে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
বিক্ষোভের দিনগুলোতে বাজারে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ ইউএনবিকে বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অর্থনীতির সব খাতে প্রভাব ফেলে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতেই এর সমাধান করা উচিত।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে অর্থনীতিতে দ্বিগুণ আঘাত আনবে।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে, উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অনিশ্চয়তার কারণে ক্রেতাদের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। উৎপাদনে ব্যবহৃত মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি হ্রাসের প্রবণতা বেশ উদ্বেগজনক। মূলধন আমদানি হ্রাস মানে আউটপুট হ্রাস পাবে। এতে রপ্তানি আরও কমবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বিভিন্ন আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস রপ্তানি খাত। কিন্তু এ খাত থেকেও আয় কমেছে।
পণ্য রপ্তানি থেকে মাসে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়। কিন্তু গত অর্থবছর ২০২২-২৩ সালের একই মাসের তুলনায় অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি ১৪ শতাংশ কমেছে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে।
পোশাক উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল তুলার আমদানি প্রায় ৩৯ শতাংশ কমেছে। সুতা, কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামালও প্রায় একই হারে কমেছে। পোশাক ছাড়া অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি ৩৬ শতাংশের বেশি কমেছে।
নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে নির্বাচন করতে প্রস্তুত: সাহাবুদ্দিনকে সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) আমাদের উপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর।’
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ইসির একটি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি।
তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে তাদের (ইসি) সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে তারা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তাদের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং প্রয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন সিইসি
হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'তিনি (রাষ্ট্রপতি) আশ্বস্ত করেছেন যে, অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে তিনি যেকোনো ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবেন।’
জবাবে ইসি বলেছে, প্রয়োজনে তারা তার (রাষ্ট্রপতির) সহযোগিতা চাইবেন।
সিইসি বলেন, 'তিনি (রাষ্ট্রপতি) বলেছেন, যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, তারা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন যে, তারা সব রাজনৈতিক দল, সরকার ও জনগণের কাছ থেকে নিরলস সহযোগিতা কামনা করে যাচ্ছেন।
সিইসি আরও বলেন, 'তাকে আশ্বস্ত করেছি, সবার সহযোগিতায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী যথাসময়ে সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সক্ষম হব বলে আমরা আশাবাদী।’
তফসিল প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, তারা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন নির্বাচন খুব আসন্ন। আগামী ২৯ জানুয়ারির আগে নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন, 'তবে আমরা এখনও (সূচি নিয়ে) সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত নিইনি।’
তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের (নির্বাচন কমিশনারদের) মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তফসিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। আমরা শিগগিরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব।’
রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সংলাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি নেতিবাচক জবাব দিয়ে বলেন, এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান সিইসির
আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবেন।
তিনি যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের নীতি খুবই পরিষ্কার। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা আসবে এবং আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, 'সংবিধান ও আইনের' ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত 'বিআরআই@১০: আশরিং ইন নেক্সট গোল্ডেন ডিকেড' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট একটি দেশ নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করলেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় : চীনা রাষ্ট্রদূত
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিইএবির প্রেসিডেন্ট কে চ্যাংলিয়াং। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা স্থিতিশীলতা চাই। আমরা আশা করি, চীনের জনগণ ও সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে। এখন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ বোধ করছি। যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ।’
তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের প্রাক-নির্বাচনের বছর। গণমাধ্যমের অনেক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করতে আসেন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চীনের পর্যবেক্ষণ কী। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতির বিষয় হিসেবে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী যে কোনো শক্তির বিরোধিতা করে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। চীন বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
আরও পড়ুন: জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বেইজিং ঢাকাকে সমর্থন করে: চীনা রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো সহিংসতা 'অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে' নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র প্যাটেল
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সহিংসতার যে কোনো ঘটনাকে তারা 'অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে' নিচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমরা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং তা চালিয়ে যাব।’
৬ নভেম্বর নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রতিবেদক যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতা বন্ধ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলবে কি না জানতে চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের
প্যাটেল পুনর্ব্যক্ত করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না।
প্যাটেল বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে অন্য দলের চেয়ে বেশি পছন্দ করি না। এই মুহূর্তে আমাদের ফোকাস জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা; সরকার, বিরোধী নেতা, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে যথাযথভাবে সম্পৃক্ত হওয়া যাতে তারা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।’
এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ঢাকা দূতাবাসে তাদের একটি 'অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান' দল রয়েছে। যার নেতৃত্বে একজন অভিজ্ঞ রাষ্ট্রদূত রয়েছেন, যিনি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিস্তৃত অঞ্চলেও কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র মিলার
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
১৯৭১ সালের পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নৃশংসতা ও দুঃশাসনের অনুকরণ করে সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য দেশে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (৪ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, আরেকটি একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকার বিএনপির 'শীর্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের' নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বল প্রয়োগ করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করছেন। ১৯৭১ সালের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশে বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭১ সালের দখলদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতা ও দুঃশাসনের অনুকরণ করছে। আওয়ামী লীগ এখন ১৯৭১ সালের পাকিস্তানপন্থী 'শান্তি' কমিটির মতো 'শান্তি' সমাবেশ করছে।
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে না পেয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, আজকের আওয়ামী পুলিশ সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে। ছেলেকে না পেলে তার ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয়, ভাইকে না পেলে তার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সারা দেশ থেকে প্রতিনিয়ত এ ধরনের অমানবিক খবর আমাদের পেতে হয়।
রিজভী বলেন, জাতি এখন নতুন মডেলের কাল্পনিক মামলা দেখতে পাচ্ছে। মামুন নামে এক যুবদল নেতাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে বরিশালে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা করা হয়।
আরেক বিএনপি নেতা কঙ্কনকে একটি ট্রাকে পেট্রল বোমা নিক্ষেপের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়, অথচ তিনি কারাগারে ছিলেন। তিনি বলেন, 'আপনারা সংবাদপত্রে এসব বিষয় উঠে আসতে দেখবেন। আমরা প্রায়ই গণমাধ্যমে এসব মজার গল্প ও কৌতুকের খবর দেখি ও শুনি।
আরও পড়ুন: আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের নেতা-কর্মীদের 'হাস্যকর' মামলায় নাম ও আসামি করে দমন-পীড়ন ও হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'দেশের জাতীয় নেতাদের থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা অবর্ণনীয়ভাবে চলছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যা করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ১৭৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে সারাদেশে ৫০৬টি নতুন মামলায় অন্তত ৭ হাজার ৭১৩ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ সময় পুলিশের গুলিতে ৫ হাজার ৭৮০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন এবং একজন সাংবাদিকসহ ৯জন নিহত হয়েছেন।
রিজভী দাবি করেন, কারাগারে সরকারের অসদাচরণের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ দলের নেতা-কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক, কারণ তিনি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার স্বাদ পেয়েছেন। ‘তিনি একতরফা নির্বাচন করবেন, এমনকি রক্তপাত হলেও।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু রবিবার
রিজভী নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে প্রধানমন্ত্রীকে তার গণতান্ত্রিক যোগ্যতা প্রমাণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জনগণই তার মূল শক্তি। তাহলে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করছেন না কেন? জনগণ যদি আপনাদের সঙ্গে থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে আপনারা ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন?
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে 'নৃশংসভাবে' হামলা চালানোর পর নির্বাচনের আগে সরকার কেন বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণ যদি আপনার পাশে থাকে, তাহলে কেন আপনি এই ধ্বংসাত্মক ও রক্তাক্ত পথ অবলম্বন করবেন? জনগণ যে সরকারকে ভয় পায়, সেটি হলো স্বৈরাচারী সরকার। এর পরিবর্তে যে সরকার জনগণকে ভয় পায়, তা হলো গণতান্ত্রিক সরকার।’
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০
যা কিছু হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই হতে হবে: আইনমন্ত্রী
আগামীতে নির্বাচন ও সরকার গঠন সবই সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকেই হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবারও পিছিয়ে পড়বে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) ‘জাতীয় সংবিধান দিবস ২০২৩’উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার দেওয়া সংবিধানে জনগণকে প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক বানিয়েছেন। এই সংবিধানের ২৬-৪৭ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে। সেখানে সব নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে সেটি প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, সংসদ কীভাবে গঠিত হবে, সরকার কীভাবে গঠিত হবে, নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে সবই সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামীতে যা কিছু হবে, সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকেই হতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবারও পিছিয়ে পড়বে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিগত অর্ধশত বছরের অভিজ্ঞতা বলে, যখনই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত সাংবিধানিক শাসন থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তখনই দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে। দেশে অরাজক ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতি স্বাধীনতার মাত্র ১০ মাসের মাথায় একটি গণমুখী ও বিশ্বমানের সংবিধান পেলেও এর পেছনের ইতিহাস অনেক বিস্তৃত। একটি গণমুখী সংবিধান পাওয়ার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান আমলে সামরিক ও স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন ও অনেক রক্ত দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা। তিনি নিজেকে কখনই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দেননি। তিনি তার প্রগাঢ় রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে ধাপে ধাপে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ভিত্তিকে মজবুত করেছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, একটি স্থায়ী সংবিধান তৈরির জন্য তিনি ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারি করা বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশের আওতায় ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান হতে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে গণপরিষদ গঠন করেছিলেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের খসড়া তৈরির জন্য তিনি গণপরিষদের ৩৪ জন সদস্যের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। এ কমিটির মাধ্যমে প্রণীত খসড়া সংবিধান দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আজকের দিনে গণপরিষদে গৃহীত হয়েছিল। তাই আজকের দিনটি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সেমিনারে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
স্বাগত বক্তব্য দেন- লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের মো. মইনুল কবির এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ।
আরও পড়ুন: ২৩ বছরে জাতিসংঘ মিশন থেকে সশস্ত্র বাহিনীর আয় ২৭,৯৪১ কোটি টাকা: আইনমন্ত্রী
পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার দ্রুত গতিতে করা হবে: আইনমন্ত্রী
সরকার পরিবর্তন করতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে: সালমান এফ রহমান
বিএনপিকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর মানুষ মারার রাজনীতি পরিহার করে নির্বাচনের পথে এসে জনপ্রিয়তা যাচাই করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান৷
তিনি বলেন, জ্বালাও-পোড়াও করে সরকার পরিবর্তন করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন সালমান এফ রহমান
শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে জয়পাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার মানোন্নয়নে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষক সমিতি এ সমাবেশের আয়োজন করেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, সরকার পরিবর্তন করতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। জনগণের ভোটে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন।
সরকার পতনে বিএনপির দেওয়া ডেডলাইনকে ভুয়া আখ্যায়িত করে সালমান এফ রহমান বলেন, তারা গত বছর বলেছিল ১০ ডিসেম্বরের পর সরকার থাকবে না। এরপর অনেকগুলো ডেট দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, সবশেষ ২৮ অক্টোবর ও ৩ নভেম্বরের ডেডলাইনের কথাও তারা বলল। কিন্তু আজ ৪ তারিখ এখনও দেখতাছি সরকার আছে। এ ভুয়া কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে লাভ হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষিখাতের পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের মান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার এ নিয়ে ব্যাপক কাজ শুরু করেছেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশে সালমান এফ রহমান বলেন, আপনারা হলেন শিক্ষিত সমাজ। আপনারা কালোকে কালো বলবেন, সাদাকে সাদা বলবেন। যদি তা না বলেন তাহলে আমি মনে করি আপনারা নিজেরা নিজেদের বিবেকের সঙ্গে বেইমানি করলেন।
আরও পড়ুন: অগ্নিসংযোগ করে নির্বাচন থামানো যাবে না: সালমান এফ রহমান
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায় নির্বাচন: বৈঠকে সালমান এফ রহমান ও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া
অগ্নিসংযোগ বন্ধ করে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির প্রতি মোমেনের আহ্বান
বিএনপিকে জনগণের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে সাম্প্রতিক হামলা, সম্পদ ধ্বংস, সম্পত্তি ও বাস পোড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনে অংশ নিন, অগ্নিসংযোগ ও সম্পদ ধ্বংস বন্ধ করুন।’
শনিবার (৪ নভেম্বর) সিলেটে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. মোমেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, বিএনপির উচিত তাদের বহিষ্কার করা।
মোমেন বলেন, একজন পুলিশ সদস্যকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা ছাড়াও বিএনপির সমর্থকরা প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিদের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দিয়েছে, বেশ কয়েকটি বাস পুড়িয়েছে, পুলিশ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিয়েছে।
তিনি বলেন, দায়িত্বরত সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিকদেরও ছাড় দেয়নি বিএনপি। বিএনপি কর্মীরা হামলা চালিয়ে অন্তত ২৫ জন গণমাধ্যমকর্মীকে গুরুতর আহত করে। বাংলাদেশ ফেডারেল জার্নালিস্ট ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রিমিয়াম সুপারস্টোর এবং ইউনাইটেড গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিমার্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এটি ঢাকার বাইরে সিলেটের আম্বরখানা পয়েন্টে প্রথম শাখা।
আরও পড়ুন: অগ্নিসংযোগ করে নির্বাচন থামানো যাবে না: সালমান এফ রহমান
তাদের জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ডগুলোকে এক সঙ্গে সরবরাহ করাই বিক্রয় কেন্দ্রটির উদ্বোধনের উদ্দেশ্য। এতে ইউনিমার্ট, শেফ'স টেবিল, ক্রিস্প, অ্যাপ্লিমেন্ট ও ফার্মাসি চেইন ওয়েল বিয়িং থাকছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন হাসান রশিদ ও ইউনিমার্টের সিইও মুর্তজা জামান।
সিলেট শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রায় এক লাখ বর্গফুট আয়তনের এই ওয়ান স্টপ গন্তব্যটি দেশীয় ও আমদানি করা পণ্যের সঙ্গে ইউনিমার্টের মৌলিক বৈশিষ্ট্য তুলে করবে ইউনিমার্ট।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন শেখ হাসিনা: খাদ্যমন্ত্রী